[
এই পোষ্ট টা সাদিক মোহাম্মদ আলমের জন্য ।
অন্য যে কেউ পড়তে পারেন এবং অবশ্যই মন্তব্য করতে পারেন ।
তবে শুরুতেই অনুরোধ, মন্তব্য করতে হলে অবশ্যই পুরোটা পড়বেন এবং দয়া করে প্রাসংগিক মন্তব্য করবেন ।
]
পৌত্তলিক পুলিন বাবুর যেভাবে বেহেশত নসীব হলো
প্রিয় সাদিক ,
বাকী বিল্লাহর এই পোস্টে 3 ন ং মন্তব্যে দেখা যাচ্ছে আপনি নিশ্চয়তা দিচ্ছেন বাকি বিল্লাহর প্রিয় পুলিন দার নরক বাসী হবার আশংকাটা মিথ্যে ।
যেহেতু তার পোষ্ট থেকে ধারনা পাওয়া যাচ্ছে কথিত পুলিন'দা একজন হিন্দু, পেশায় মুচি সেহেতু পৌত্তলিক । মুসলিম পরিবারে জন্ম নেয়া, মুসলিম পরিবেশে বেড়ে উঠা আমি এই তথ্যটা ই পেয়েছি যে পৌত্তলিকদের কোনো ক্ষমা নেই । এমনকি হযরত ইব্রাহিমের পিতা পৌত্তলিক আজর আল্লাহ তাকে ও ক্ষমা করবেন না ।
সেকারনে আপনার এই মন্তব্য আমাকে অনেকটা কৌতুহলী করে এবং 14 ন ং মন্তব্যে আমি আপনাকে ও ই প্রশ্নটা করি , 'ইসলামের প্রথা না মেনে ও যদি বেহেশতে যাবার চান্স থাকে তাহলে মানুষ কেনো ধর্ম পালন করবে?'
খেয়াল করুন , প্রশ্নটা আপনাকে করা ।
কিন্তু উত্তর টা এলো আস্তমেয়ে র কাছ থেকে । না ,আমি তার কাছ উত্তর প্রত্যাশা করিনি কারন কোরান হাদীসের কিছু আয়াত এবং কয়েকজন স্কলারের মন্তব্য কোট করা ছাড়া , তার নিজস্ব প্রজ্ঞার কোনো প্রমান আমি পাইনি এখনো ।
আমার প্রশ্ন এবং তার জবাবের ধারাবাহিকতাটুকু খেয়াল করুন ।
কয়েকটা মন্তব্যের পর তার একটা দীর্ঘ মন্তব্যের অংশ দেখুন :
'' আমি বলব পুলিন দা অনেক তথাকথিত মুসলিমের চেয়ে ও বেশী মুসলিম "
ঠিক এই জায়গাটাতে এসে আলোচনার মোড় ঘুরে গেছে । কারন তার এই মন্তব্যের পর আমি আরো দুবার তাকে জিজ্ঞেস করেছি তার এই মন্তব্য ঠিক আছে কিনা ? ... এবং তিনি কনফিডেন্ট ।
এ সংক্রান্ত আপনার পোষ্ট পড়লাম । আপনি শিরকের ফিলসফিকেল ব্যখ্যা দিয়েছেন । চমৎকার । ভালো লাগলো ।
কিন্তু একজন পৌত্তলিক কি করে 'বেশী মুসলিম' হয়ে গেলো সেটা কিন্তু এখনো বোঝা গেলোনা ।
আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে ক্ষমা করবেন--সর্বশক্তিমান হিসেবে সেই ক্ষমতা তার আছে । বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও এক ফাঁসীর আসামী কে ক্ষমা করে দিয়েছেন তার ক্ষমতা ব্যবহার করে । এগুলো কিন্তু স্পেশাল কেস । এটা এতো জেনারেলাইজ হয়ে গেলো তো পাবলিকের নামাজ রোজা করার ইচ্ছে নষ্ট হয়ে যাবে । ধর্মের আর দরকার কি শুধু কর্ম দিয়েই কতোজন বেহেশতে চলে গেলো -- এরকম আর কি । ব্লগার পথিকের মন্তব্য দেখুন । বেচারা এখনই এসব ভাবতে শুরু করেছে । আপনার মরমী ব্যখ্যা আমি বোঝিনি ।
আপনি কি আরেকটু স হজ ভাষায় জানাবেন ধর্মের কোথায় আছে একজন পৌত্তলিক 'বেশী মুসলিম' ? যদি বলেন যে আগে ভাবেননি পুলিন'দা পৌত্তলিক ছিলো, তাহলে এবার তো জানলেন । এবার কি আপনার বক্তব্য বদলে যাবে?
আপনার যদি ভালো না লাগে আপনি না ও বলতে পারেন । কোনো বাধ্যবাধকতা নেই । কিন্তু যেহেতু আপনি এবং আস্তমেয়ে ধর্মাচার কে একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় হিসেবে দেখেননা( যে কারো ইসলাম বিষয়ক সংশয় আপনারা স্বেচ্ছায় দূর করার জন্য যুক্তি ও তথ্য প্রদান করেন) সে জন্য ই আপনার কাছ থেকে জানতে চাওয়া ।
যুক্তিবোধ থেকে যে সব সংশয় তৈরী হয় সে গুলো দূর করানোর উদ্দেশ্যে প্রথমে যুক্তি দেয়া এবং শেষে গোছাতে না পেরে আস্তমেয়ের মতো 'পোষাইলে মানেন না পোষাইলে নাই' টাইপের গোজামিল আশা করি দেবেন না । ************************************************
নীতির ফল কি শুধু ধর্মের গাছেই ধরে?
'ন্যায় নীতি বোধ ধর্মের শিক্ষা না । মানুষের সাধারন বিবেকবোধ' আমার এই কথাটা আপনি মানতে পারেননি ।
দু:খিত আমি ও মানতে পারলাম না আপনি যেমন বলেছেন - ' ধর্মকে বাদ দিয়ে মানুষ যদি নিজে বিবেকবান হতে চায়, তাহলে সাধারন বিবেকবোধ ভোঁতা হয়ে যায়' মানুষের ইতিহাস তো স্যার পুরোটাই ধর্মের ইতিহাস না ।
ধর্মটা মানুষের ইতিহাসের একটা অংশ, পুরোটা নয় । আমাদের নীতিবোধের শুরুটা কখন থেকে ?
' সদা সত্য কথা বলিবে' 'সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি, আমি যেন সারাদিন ভালো হয়ে চলি' -- এগুলো তো পাইনি ' আলিফ জবর আ, বে জবর বা' এর মধ্যে ? কোথায় সত্য আর মিথ্যের পার্থক্য হুজুরের ওয়াজে? বড় হয়ে যখন বাংলায় কোরান শরীফ বোঝে পড়লাম, দেখলাম ওখানে যে সব নীতিবোধের কথা বলা হয়েছে, তেমন নতুন কিছুই না । কোরান বোঝার আগেই তো ওসব জেনে ফেলেছি , মানি আর না মানি ।
যদি শুধু ইসলামের কথা বলি সেটা অন্যায় হবে । হিন্দু ধর্মের সতীদাহ প্রথার মতো অন্যায় শংকরাচার্য বা স্বামী বিবেকানন্দ বন্ধ করেননি, করেছিলেন রাজা রামমোহন রায় আর বিদ্যাসাগরের মতো সংস্কৃতিবান রা । মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অন্যায় দাসপ্রথা চলে এসেছে কয়েক হাজার বছর ধরে । কোন ধর্মপুরুষই এটা নিষিদ্ধ করেননি? কেনো ? তাদের কাছে এটা অন্যায় মনে হয়নি? যীশুর 70 বছর আগে অধার্মিক স্পাটর্াকাস যুদ্ধ করেছে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে । যীশু নিশ্চুপ । জানি উদাহরন দেবেন ইসলাম দাসপ্রথা কে নিরুৎসাহিত করেছে । অবশ্য ই করেছে কিন্তু নিষিদ্ধ করেনি । মদ খাওয়া কে কিন্তু নিষিদ্ধ করেছে? কেনো ? ইসলামের ধর্মের ন্যায় বোধে দাসত্বপ্রথা মদ খাওয়ার চেয়ে লঘু অন্যায়? সব ধর্ম যে অন্যায় কে পাশ কাটিয়ে গেলো সেই অন্যায় বন্ধ হলো একজন রাজনীতিবিদের হাতে ।
ইউরোপে সাম্য ,মৈত্রী, স্বাধীনতার ধারনা কোনো ধর্মের হাত ধরে আসেনি । এসেছে ফরাসী বিপ্লবের মাধ্যমে - রুশো , ভলটেয়ারের মতো দার্শনিকদের ভাবনা থেকে । মুসলমানদের নীতিবোধ যদি 1400 বছর আগের ইসলামের শিক্ষায় আটকে থাকতো, তাহলে এখনো দাসীর সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন টা অন্যায় মনে হতোনা । ধর্ম এলাউ করলে ও একজন মুসলিম ব হুবিবাহকে জোর গলায় আর সমর্থন করছে না । দ্্বিতীয় বিয়ে করতে গেলে প্রথম স্ত্রী র অনুমতি নিতে হবে - ধমর্ীয় আইনে এটা নেই । কিনতু সময়ের প্রয়োজনে রাস্ট্র এটা তৈরী করেছে । ধর্মের আইনে চুরির শাস্তি হাত কাটা , বিবাহ ব হিভূত যৌনতার শাস্তি পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা , নবীকে অপমানের জন্য রুশদী কে হত্যার ঘোষনা( আয়াতুল্লাহ খোমেনী ও কে কি কাঠমোল্লা বলবেন?) এসব ধমর্ীয় নীতিবোধে ঠিক আছে । কিন্তু ধার্মিক আপনি ও কিন্তু মনে মনে এসব সমর্থন করেন না । কেন? কারন ধর্মের নীতিবোধ আটকে আছে সেই 1400 বছর আগে । আপনি ধারন করছেন আজকের সময়কে । ব্যক্তি মানুষের এই যে উত্তরন এখানে ধর্মের অবদান কতটুকু?
নীতিবোধের সাথে ধর্মের সম্পর্ক টানতে গেলে আপনাকে সাবেক সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোকে উদাহরেন আনতে হবে ।
সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর অনেক সমস্যা ছিলো কিন্তু মানুষ গুলোর নৈতিকতায় সমস্যা ছিলো এমন অপবাদ খোদ আমেরিকান রা ও দিতে পারেনি । সমাজতন্ত্র বিদেয় হলো । বন্ধ হওয়া গীজর্া ও মসজিদ গুলো খুলে গেলো । ধর্ম ঢুকলো , সাথে ঢুকলো ভোগবাদ, ডিসকো বার, মেকডোনালড সেক্সসপ । গোকর্ী আর অস্ত্রভস্কির উপন্যাসের সেই টানটান নৈতিকতার নায়িকারা এখন পশ্চিম ইউরোপের যৌনবাজারের প্রধান সাপ্লাই । সেই সময় ধর্ম ছিলনা , এখন আছে কিন্তু ।
*********************************************
ধর্ম ঘুমিয়ে পড়ুক ।
কিচ্ছু যায় আসেনা ।
কিন্তু একজন মানুষ, একজন সাদিক মোহাম্মদ আলম ঘুমালে অনেকটুকু ।
ইশ্বর এসে মানুষের পাশে দাড়ান না ।
ওসব মিথ্যে গল্প । দু:সময় থেকে সুসময়ে মানুষ পৌঁছে দেয় মানুষকে -- আর কেউ না !
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন