ধর্মানুভূতির ইতংবিতং ও সংখ্যাধিক্যের ষাঁড়ামী

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: শুক্র, ০৮/০৬/২০০৭ - ৪:৩৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই যুক্তি আগেও শুনেছিলাম । সম্ভবতঃ আস্তমেয়ের(অধূনা সন্ধ্যাবাতি) লেখায় ।
নতুন করে আবারো দেখলাম কর্কটের মন্তব্যে ।
যুক্তিটা এরকম-- 'মুসলমান রা তাদের ধর্মের অন্যান্য বিষয়ে সমালোচনা মেনে নেন । কিন্তু হযরত মোহাম্মদ(দঃ) এর কোনো সমালোচনা বা তাকে নিয়ে কোনো ব্যাংগ-বিদ্রুপ সহ্য করতে পারেননা । সালমান রুশদীকে হত্যার ফতোয়া, ডেনিশ কার্টুনকে কেন্দ্র করে দুতাবাস পুড়ানো এসব থেকে শুরু করে সামহোয়ার ব্লগে সাম্প্রতিক পোষ্ট ডিলিট এসব কিছুর কারন সেই একটাই--মোহাম্মদ(দঃ) এর সমালোচনা ।
প্রতিক্রিয়াটা এরকম হওয়াটা স্বাভাবিক যেহেতু শেষনবী মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত সম্মানিত,সকল সমালোচনার উর্ধ্বে । মা-বাবার সমালোচনাই আমরা সহ্য করতে পারিনা তো রাসুলের সমালোচনা সহ্য করবো কি করে?'

যুক্তি ঠিক আছে। খুবই ভালো যুক্তি । মোহাম্মদ(দঃ) সর্ব্বোচচ সম্মানিত,সকল সমালোচনার উর্ধ্বে । কিন্তু কার কাছে? মুসলমানদের কাছেই তো?
দুনিয়াতে কি কেবল মুসলমানই আছে? অমুসলিম একজন ও শেষনবী কে একই সম্মান দেখাতে বাধ্য নাকি? তার কি সমালোচনার অধিকার নাই? সে সমালোচনা করলেই মুসলমানের অনুভূতি আহত হয়ে যাবে?সমালোচকের ঠুটি চেপে ধরতে হবে? তাকে হত্যার ফতোয়া দিতে হবে? তার পোষ্ট মুছে ফেলতে হবে?

একজন ধার্মিক হিন্দুর কাছে কৃষ্ণ কিংবা রাম ধর্মাবতার । আমার কাছে চতুর শাসক ছাড়া আর কিছু নয় । রাম অনার্য সিংহলীদের পরাস্ত করে আর্য সাম্রাজ্য স্থাপন করেছিলেন । রাম ছিলেন বহিরাগত । বিজয়ীদের লিখিত ইতিহাসে নিজদের তারা দেবতা বানিয়েছেন আর অনার্যদের বানিয়েছেন রাক্ষস ।
যেখানে হিন্দু আধিক্য সেখানে আমি আমার এই ভাবনাগুলো প্রকাশ করতে পারবোনা? তাদের অনুভূতি আহত হবে সেই দায় আমার? আমার ভাবনা, আমার জানা আমাকে গিলে রাখতে হবে?

এই সব সংখ্যাধ্যিকের ষাঁড়ামী যতোদিন চলে,মানুষ ঠিক ততোদিন অন্ধকারেই থাকে-- যেমন অন্ধকারে ছিলো ইউরোপ গির্জার শাসনকালে ।

[ জানি কেউ কেউ অতিযুক্তিবিদ আছেন, প্রশ্ন তোলবেন-- তাহলে স্বাধীনতাবিরোধীদের কথা বলতে দেয়া হবেনা কেনো?
কেনো? সেটা বলা যেতে পারে আরেক পোষ্টে । ইদানিং এই ব্লগে বেশী সময় দিতে ভাল্লাগেনা]


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।