১৫ আগষ্ট মুজিব হত্যাকান্ডের পর পর প্রথম যে রাষ্ট্রীয় পরিবর্তন ঘটানো হয় তা হলো বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তন ।
ইতিহাসের আগ্রহী পাঠক মাত্রই জানেন, হত্যাকান্ডের কয়েক ঘন্টা পর সকাল বেলা রেডিওতে মেজর ডালিম যে ঘোষনা দেয়,সে ঘোষনাতেই 'পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ' এর নাম বদলে 'ইসলামিক রিপাবলিক অব বাংলাদেশ' ঘোষনা করা হয় ।
খুনী চক্র মোশতাককে প্রধান করে যে সরকার ঘোষনা করে,তাকে সর্বপ্রথম স্বীকৃতি দান করে 'ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তান' । শুধু নিজে স্বীকৃতি দেয়া নয়, পাকিস্তান মধ্যপ্রাচ্য সহ সকল মুসলিম রাষ্ট্রকে অনুরোধ করে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য এবং তারা স্বীকৃতি দান করে । উল্লেখ্য যে,এর আগ পর্যন্ত সৌদী সহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় কোন দেশই পৃথিবীর দ্বিতীয় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি ।
[ এই তথ্য জানানোর পর আমার এক বন্ধু দুটো প্রশ্ন করেছিলোঃ- ১)মুসলিম দেশগুলো কি তাহলে এই হত্যাকান্ডের জন্য অপেক্ষা করছিলো? ২) ৭২-৭৫ সময় পর্যন্ত বাংলাদেশ পাসপোর্ট নিয়ে কি হজ্জ্ব করা সম্ভব হয়েছিলো?
আমি ঠিক জানিনা, পাঠক কেউ জানলে শেয়ার করতে পারেন
]
স্বীকৃতি ছাড়া ও পাকিস্তান তৎক্ষনাৎ ক্ষুদ্র অস্ত্রের একটি বিরাট চালান পাঠায়(গেরিলা প্রতিরোধের আশংকা করেছিলো কি?)
অপর দিকে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির শর্তানুযায়ী ভারত দায়বদ্ধ ছিলো বাংলাদেশকে বহিশত্রু মোকাবেলা এবং সরকারের উপর কোন আঘাত আসলে তা প্রতিরোধে সহায়তা করতে ।
কিন্তু নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে সপরিবারে হত্যা করা হলে ও ভারত চুক্তির শর্ত উপেক্ষা করে রহস্যজনক ভাবে নীরব থাকে । যদি ও অনেক পরে কোন কোন ভারতীয় কুটনৈতিক মন্তব্য করেন যে, ভারত চুক্তির শর্ত ভংগ করেনি কারন ব্যক্তি মুজিব ও তার পরিবার হত্যাকান্ডের শিকার হলেও অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার তো আওয়ামী লীগেরই ছিলো! এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয় কারো পক্ষ থেকে সাহায্যের আবেদন জানানো হয়নি ।
মুজিব হত্যাকান্ডে চুপ থাকলে ও বাংলাদেশকে 'ইসলামিক রিপাবলিক' ঘোষনা এবং দৃশ্যপটে অভিভাবক হিসেবে পাকিস্তানের আবির্ভাব ভারতের জন্য মেনে নেয়া সম্ভব ছিলোনা । অপরদিকে ক্লিনম্যান(!) জেনারেল জিয়াউর রহমান ততক্ষনে 'চান্স মোহাম্মদ' থেকে ' ব্যালেন্স মোহাম্মদ' হয়ে গেছেন । সেনাপ্রধানকে হটিয়ে নিজেকে সেনাপ্রধান ঘোষনা করেছেন । হতবিহবল আওয়ামী লীগের মুল ধারার অনুপস্থিতিতে প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠা জাসদ ও তার সমর্থনে ( সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে কর্নেল তাহের ও অন্যান্য জাসদ নেতারা স্বপন দেখছেন জিয়াকে ব্যবহার করে তারা বিপ্লব ঘটাবেন)। কিন্তু জেনারেল ঠিকই জানেন তার লক্ষ্য আরো সামনে আর লক্ষ্য পুরনে ভারতকে অখুশী করা যাবেনা ।
তাই 'ইসলামিক রিপাবলিক' থেকে বাংলাদেশের আবার 'পিপলস রিপাবলিক' এর প্রত্যাবর্তন ঘটলো এবং কলম্বো কনফারেন্সে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল জিয়াউর রহমান ঘোষনা করলেন :- ' ভারত বাংলাদেশের আদি অকৃত্রিম পরীক্ষিত বন্ধু । অতীতের মতোই ভারত বর্তমান সরকারের ও পাশে আছে'
মন্তব্য
চলুক।
হ্যা, চলুক।
এই প্রজন্মের জন্যে অন্যেরাও বলবেন আশা করি, যাঁরা সেই সময়ে ছিলেন।
আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
চলুক...
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
দারুন সিরিজ হচ্ছে। চলুক। ৫ ইস্টার দাগানো হইল।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ধন্যবাদ । মুল লেখাটা পরের পর্বে আসবে । একসাথেই দেয়া যেতো আসলে ।
বড় লেখা লেখতে আলসেমী লাগে
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আরো পড়তে ও জানতে আগ্রহী। চলুক।
হ চলুক।
==============================
আমিও যদি মরে যেতে পারতাম
তাহলে আমাকে প্রতি মুহূর্তে মরে যেতে হত না।
চলুক.......
লেখতে চাই ..কিন্তু কি লিখবো?
আরো জানতে চাই । চলুক
মাহবুবুল হক
এই জাতিয় তথ্যসমৃদ্ধ লেখা নিয়া আর্কাইভ করলে কি খুব মন্দ হইবো ? এমনি অনেক লেখার ভীড়ে যে নাইলে এইগুলা হারায়া যাইবো... টেকনিকাল ব্যাপার স্যাপার না জাইনাই কইলাম...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশীরা হজ্জ্ব করার সুযোগ পায় সম্ভবত ১৯৭৪ সালে। । প্রথম হজ্জ্ব ফ্লাইট ছিলো ২৫শে নভেম্বর।
ধন্যবাদ আশিক গুরুত্বপুর্ন তথ্যের জন্য । তাহলে কি শেখ মুজিবের ও আই সি সম্মেলনে যোগ দেয়ার বিনিময়ে বাংলাদেশীরা হজ্জ্ব করার অনুমতি পায়?
৭২, ৭৩ এ বাংলাদেশীদের হজ্জ্ব করতে দেয়া হয়নি? কিংবা শেখ মুজিব ও আই সি তে যোগ না দিলে আদৌ হজ্জ্ব করতে দেয়া হতোনা বাংলাদেশীদের?
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
দুঃখিত, এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানা নেই।
তবে ও.আই.সি তে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে মুসলিম দেশগুলো আগ্রহী ছিলো মনে হয়। সৌদি বাদশাহ ফয়সাল বঙ্গবন্ধুকে সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করেছিল। আর পাকিস্তান, লাহোর গমনের আগেরদিন (২২শে ফেব্রুয়ারী) বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করে। এই সম্মেলনে যোগদান কে সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো বিবেচনা করে নিজেদের সাফল্য হিসাবে ।
[সুত্রঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ - এম.এ.ওয়াজেদ মিয়া]
পড়তাছি
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
নতুন মন্তব্য করুন