তারিক আলি, আপনাকে আমাদের প্রয়োজন নেই

হাসিব এর ছবি
লিখেছেন হাসিব (তারিখ: রবি, ১৭/১১/২০১৩ - ৩:৫০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রথম আলো অদ্ভুদআরো অদ্ভুদ তাদের পাকিরাও ভালো প্রজেক্ট
আনপড় পাঠকেরা এই প্রজেক্ট সম্পর্কে না জানতে পারেন। তাদের জন্য একটা ছোট্ট সূচনা।

পাকিরাও ভালো প্রজেক্ট প্রথম আলো ঘোষিত অফিসিয়াল কোন প্রজেক্ট নয়। সবকিছু নিয়ে প্রশ্ন তোলা ব্লগজগত থেকে এইরকম প্রজেক্ট বাস্তবে আছে এরকম অনুমানের সূচনা। প্রথমআলো গ্রুপ নিয়মিত বিরতিতে পাকিস্তান থেকে বুদ্ধিজীবী ভাড়া করে আনে। এরা হাবিজাবি মিশিয়ে পাকিস্তানের হাতেগোনা কিছু লোকের বাংলাদেশ সম্পর্কে ভালোমন্দ কথা বলে এরকম লোকেদের হাজির করে। নিয়মিত এরকম পাকিস্তানি ভালো লোক মিডিয়াতে হাজির হলে, এবং সেইসাথে সেখানকার লোকেদের একাত্তর প্রশ্নে অবস্থান চেপে গেলে জনমানসে সব পাকিস্তানি আসলে খারাপ না এরকম একটা ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য হয়। পুনর্মিত্রতার এই প্রজেক্ট বেশ কিছুদিন ধরে চলছে।

পাকিরাও ভালো প্রজেক্টে সর্বশেষ সংযোজন পাকিস্তানী বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ বুদ্ধিজীবি তারিক আলি। আজ বেশ বড়সড় আকারে প্রথম আলোতে তারিক আলির সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছে। (১) তারিক আলি বেশ বিখ্যাত লোক। ইনি নিয়মিত গার্ডিয়ান, কাউন্টার পাঞ্চ ইত্যাদিতে লেখেন। বেশ কয়েকটা বইও আছে তার। বিবিসির হয়ে একটি স্কৃনপ্লেও লিখেছিলেন তিনি। সেখানে জুলফিকার আলী ভুট্টোকে চিতাবাঘ ও জেনারেলদের শেয়াল বলা হয়েছিলো। (২)

তো এই রাজনৈতিক ওরিয়েন্টেশন তালেবান এ্যাপলোজেটিক বামপন্থা। এই তালেবান এ্যাপলোজিস্ট বামপন্থীরা আমেরিকা যেহেতু খারাপ সেহেতু আমেরিকার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো সবার সাথে (সেটা তালেবান হলেও) মিত্রতা বোধ করেন। তারিক আলি যুদ্ধ পরবর্তী তালেবানদের সম্পর্কে কয়েক বছর আগে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন (৩),

Ali: "I have, just recently, written of the previous Taliban regime in Afghanistan as a 'malignant social order' and for that reason insisted on a national coalition government in that country following the NATO withdrawal. Given the massive increase in support for the new version of the Taliban that is the result of the war and occupation, any government has to include their representatives."

কোন গোষ্ঠির ম্যাসিভ সাপোর্ট থাকলে সেই দলকে সরকারে রাখতে হবে এটা একটা চমকপ্রদ থিওরী। আরোও চমকপ্রদ বিষয় উনার বক্তব্য থেকে জানা গেল যে তালেবানদের আগেকার ভার্সন ম্যালিগন্যান্ট সোশাল অর্ডার হলেও বর্তমান তালেবানদের (অর্থাৎ যারা মেয়েদের পড়ালেখার দাবি তোলার কারণে মালালার মাথায় গুলি করেছিলো) massive increase in support ঘটেছে এবং এজন্য তাদের সরকারে রাখতে হবে। তো এই সাক্ষাৎকারটা প্রকাশের বছরেই বিবিসি আফগানিস্তানে একটা জরিপ করেছিলো। সেখানে ৪% লোক তালেবানদের সমর্থন করে জানা গেছে। (৪) তারিক আলি কোথায় এই ম্যাসিভ ইনক্রিজ ইন সাপোর্ট দেখতে পেয়েছিলেন সেটা এক গবেষণার বিষয়।

তো এহেন জ্ঞানী লোক তারিক আলি সম্প্রতি ঢাকা এসেছেন পুঁজিবাদি চরিত্রের সাহিত্য সম্মেলন হে ফেস্টিভাল উপলক্ষে। রিভিশনিস্ট চলচ্চিত্র মেহেরজানের পক্ষে জান লড়ে দেয়া রিকনসিলিয়েশন তত্ত্বের প্রবক্তা ফারুক ওয়াসিফ দৌড়ে গেছেন পাকিরাও ভালো প্রজেক্টে আরো একটা নতুন মুখ যোগাড় করতে। তারিক আলি সাক্ষাৎকারে বলছেন,

মানুষ যদি ক্ষুধার্ত থাকে, মানুষের যদি নিরাপত্তা না থাকে, তারা যদি মজুরি না পায়; তাহলে ধর্ম বা সেক্যুলারিজমে কিছুই যাবে আসবে না মানুষের।

ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি যে জনসংখ্যার অর্ধেকটাকে পর্দার আড়ালে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড থেকে দুরে সরিয়ে রাখে এবং সেটা যে ক্ষুধার্ত লোকের সংখ্যা বাড়ায় এটা সাধারণ জ্ঞান। রাজনীতিকে সেকুলার করলে সেটা ক্ষুধার ওপর কী প্রভাব ফেলতে পারে এই বিষয়ে বোধকরি উনি ধারণা রাখেন না।

বাংলাদেশের নারী পুরুষ সমতা নিয়েও তারিক আলি দুই পয়সা দিয়েছেন। উনি বলছেন,

আমরা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে দেখতাম রাজনীতির পথপ্রদর্শক হিসেবে। সে সময় বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের মান ছিল খুবই উঁচু, নারী-পুরুষের মধ্যে ভেদাভেদ কম ছিল। নারীরা অনেক মুক্তভাবে কথা বলত, চলাফেরা করত। সে সময়ের বাংলাদেশের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা করলে গভীর বেদনা হয়।

তারিক আলীর কাছে কয়েকটা প্রশ্ন করা যেতে পারে। যেমন.
১. স্বাধীনতা আগে এবং বর্তমানে কতো সংখ্যক নারী সরাসরি অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতো?
২. শিক্ষাখাতে নারীপুরুষের অনুপাত স্বাধীনতা আগে কতো ছিলো এবং স্বাধীনতার ৪০ বছর কতো হয়েছে?
৩. নারী প্রজনন স্বাস্থ্য, রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ স্বাধীনতার আগে কতো ছিলো এবং এখন কীরকম অবস্থায় আছে এগুলো?

তারিক আলি সম্ভবত জবাবে তালিবানদের জনপ্রিয়তা বাড়ার মতো তথ্য বের করে আমাদের দেবেন। আমরা সেটার অপেক্ষায় থাকলাম।

তারিক আলি বাংলাদেশের এহেন দুরাবস্থার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন। উনি বাংলাদেশ কেন মুক্তিকামী প্রগতিশীল রাষ্ট্র হয়নি সেটার ব্যাখ্যা হাজির করেছেন এভাবে,

বলতেই হচ্ছে, এর কারণ সে সময়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের একের পর এক ভুল। তারা একদলীয় রাষ্ট্র গঠন করেছিল, কর্তৃত্ববাদী শাসন চালু করেছিল। মতপ্রকাশের অধিকার খর্ব করেছিল, ভিন্নমতাবলম্বীদের আটক করছিল। তাহলে অতীতের সঙ্গে আর পার্থক্য কী থাকল? তাই স্বাধীনতার পরের প্রথম চার-পাঁচ বছরের ইতিহাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একসময় যখন স্বাধীনতার উচ্ছ্বাস কমে এল, তখন মানুষ চাইছিল বাস্তব পরিবর্তন। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি। কিন্তু যা তারা চেয়েছিল, তা তারা পায়নি। মনে রাখতে হবে, যে রাজনীতিবিদেরা জনগণকে সন্তুষ্ট করতে পারেন না, মানুষ তাঁদের জন্য আর জীবন দেয় না।

তারিক আলি আওয়ামী লীগের সাড়ে তিন বছর টেনে চার পাঁচ বছরে টেনে নিয়ে গিয়ে যাবতীয় দোষ আওয়ামী লীগের ঘাড়ে চাপিয়েছেন। এরপর একটা বিধ্বস্ত দেশে যেখানে খাবার সংস্থান পর্যন্ত নেই সেখানে আরোও কী কী করা যেতে পারতো সেই বিষয়ে তার বক্তব্য অনুপস্থিত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যার পর পাকিস্তানি প্রেতাত্মার আছর বাংলাদেশের ঘাড়ে চেপে বসে সকল প্রগতির সম্ভাবনা বিনাশ করেছিলো সেটার সম্পর্কেও কোন বক্তব্য নেই।

সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে গিয়ে ভাসানি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেছেন ফারুক ওয়াসিফ। তারিক আলি
ভাসানি প্রসঙ্গে একটু ঠিক বলেছেন যে ভাসানি পাকিস্তানি রাষ্ট্রের সংকট বুঝতে পারেননি। তবে শেষে তিনি "স্বাধীনতাসংগ্রাম যদি মুজিব ও ভাসানীর যৌথ নেতৃত্বে পরিচালিত হতো, তাহলে হয়তো ইতিহাস অন্য রকম হতো।" বলে উল্লেখ করেছেন।

পাকসেনাপতি আইয়ূব খান সমর্থক ভাসানি বাংলাদেশের রাজনীতির মূল মঞ্চে আসার সুযোগ পাননি এটা একদিক দিয়ে ভালো। এই লোকের গুরুত্ব বঙ্গবন্ধুকে অপছন্দ করার মধ্যে নিহিত। এর বেশি নয়।

সাক্ষাৎকার শেষ হয়েছে তারিক আলির নিজস্ব এ্যাপলজির মধ্য দিয়ে। উনি হে ফেস্টিভাল বৈশ্বিক কর্পোরেট কালচারের অংশ বলে উনি এটা পছন্দ করেন না। কিন্তু তবুও তিনি এসেছেন কারণ তিনি "ঢাকায় আসতে চেয়েছি"লেন। ভাবখানা এরকম যে হে ফেস্টিভালের মাধ্যমটা না থাকলে উনি ঢাকা আসতে পারতেন না। চরিত্র ও কাজকর্মে সততা থাকলে উনি হে ফেস্টিভাল বাদ দিয়েই টিকেট কেটে ঢাকা ঘুরে যেতে পারতেন। সেটার বদলে উনি উনার উনার কর্পোরেট স্পনসর্ড কলোনিয়াল সাহিত্যচর্চা সম্মেলনে আসা হালাল করতে চাচ্ছেন "ঢাকায় আসতে চেয়েছি" এই বলে!

বাংলাদেশ সম্পর্কে এহেন বকলম ধারণার ভিনদেশী যোগাড় করে মাথায় তোলার মধ্যে প্রথম আলোর রাজনীতি আছে। এই রাজনীতি চিহ্নিত করে প্রতিরোধ করাই হবে প্রথম পদক্ষেপ। বাংলাদেশ এইসব ভিনদেশী বুদ্ধিজীবী ছাড়াই এগিয়ে যাবে। সেটা ওরা স্বীকার করুক আর না করুক।

সংযোজন

১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় জনসভায় আমিই প্রথম স্বাধীনতার ডাক দিয়ে বলেছিলাম, ‘স্বায়ত্তশাসন তোমাদের কিছুই দেবে না, তোমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামের দিকেই যাওয়া উচিত। নইলে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী তোমাদের ধ্বংস করে দেবে।’ এটাই আমি বলেছিলাম। সাংবাদিকেরা এতই নার্ভাস হয়েছিল শুনে, তারা আমার বক্তৃতার পুরোটা প্রকাশ করেনি।

এটা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ইতিহাস পাঠে এক নবতর সংযোজন। তারিক আলীর রেফারেন্স মেনে নিয়ে আওয়ামী লীগ বিএনপি স্বাধীনতার ডাক বিষয়ে ঝগড়া এখনই মিটিয়ে ফেলতে পারবে। অভিনন্দন হে তারিক আলি।

সূত্রঃ

১.
বিশেষ সাক্ষাৎকার: তারিক আলি
নতুন রাজনীতি ছাড়া পরিবর্তন আসবে না
প্রথম আলো লিংক

২. The Leopard and the Fox: A Pakistani Tragedy

৩. Tariq Ali on Obama: Imperialism with a human face

৪. বিবিসি জরীপ ফলাফল। প্রশ্ন ১০ দ্রষ্টব্য


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

পাকিস্তান আমলটা যে কী ভীষণ ভালো ছিলো, সেটা প্রথম আলোতে বছর বছর নাদেরালি তারেকালিদের সাক্ষাৎকার না পড়লে বোঝার কোনো উপায় নাই।

হাসিব এর ছবি

সেইকালে মারখোর এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগার এক সাথে বসে খেজুর দিয়ে ডিনার করে নালায় পানি খেতে যেতো।

পুতুল এর ছবি

কোথা থেকে আমদানী হয় এই সব ছাগল! দেশী ছাগলের জন্য কাঠাল পাতা যোগাড় করাই অসম্ভব, আবার আমদানীকৃত এত ছাগলের জন্য আমরা কাঠাল পাতা পাব কোথায়!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

হাসিব এর ছবি

মারখোরেরা মনে হয় কাঠাল পাতা খায় না।

চরম উদাস এর ছবি

আলুর লেখা পড়ে যা বুঝলাম প্রথম স্বাধীনতার ডাক শেখ মুজিব না পাইক্কা তারিক আলিই দিয়েছিলেন সে হিসেবে মুজিব জাতির পিতা হলে তারিক্কা আমাদের জাতির দাদা -

১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় জনসভায় আমিই প্রথম স্বাধীনতার ডাক দিয়ে বলেছিলাম, ‘স্বায়ত্তশাসন তোমাদের কিছুই দেবে না, তোমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামের দিকেই যাওয়া উচিত। নইলে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী তোমাদের ধ্বংস করে দেবে।’ এটাই আমি বলেছিলাম। সাংবাদিকেরা এতই নার্ভাস হয়েছিল শুনে, তারা আমার বক্তৃতার পুরোটা প্রকাশ করেনি। কিন্তু কথাটা শেখ মুজিবের কানে গিয়েছিল এবং তিনি সন্ধ্যায় তাঁর বাসায় দেখা করতে বললেন। সেখানে তিনি আমাকে বললেন, ‘আমি শুনেছি তুমি কী বলেছ। কিন্তু তুমি কি নিশ্চিত, তুমি কি নিশ্চিত?’

হাসিব এর ছবি

কতোকিছু জানা যায় প্রথম আলো পড়লে ম্যাঁও

পুতুল এর ছবি

আলু যে একটা নতুন ওহি নাজিল করসে সে কথা আপনাকে মানতেই হবে। স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া-র আর একজন শরিক পাও গেল। বলুন আলহামদুলিল্লাহ।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

হাসিব এর ছবি

তারিক আলি মারফত বাংলাদেশে দীর্ঘদিন চলে আসা একটা বিতর্কের সমাধান হলো আজ। মাভৈ!

চরম উদাস এর ছবি

তারিক আলিকে জাতির স্বীকৃত দাদা মানলে তার কথা নিয়ে চিল্লাপাল্লা করা উচিৎ না। দাদা হিসেবে আমাদের নাতিদের তিনি যা খুশী বলতেই পারেন। কারণ কবি বলেছেন,
দাদায় কইছে ইয়ের ভাই
আনন্দের আর সীমা নাই

হাসিব এর ছবি

অবিলম্বে জ্ঞানকীর পোলা তারেক আলিকে জাতির দাদা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাই! আমাদের দাবি মানতে হবে, মেনে নাউ!

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি

বিদেশী কুতুব পাইলেই প্রথমেই প্রথম আলোর প্রশ্ন কর্তার `ডাক্তার সাব রোগী কেমন দেখলেন? বাঁচবো তো?´ টাইপ একটা প্রশ্ন থাকবেই।

বাংলাদেশে নির্বাচন ঘিরে যে ক্রান্তিকাল যাচ্ছে, তা রাজনীতি ও সমাজকে আদর্শিকভাবেও বিভক্ত করছে। এমন পরিস্থিতি মিসর ও পাকিস্তানেও দেখা গেছে। আপনি কীভাবে দেখছেন?

চরম উদাস এর ছবি

হো হো হো

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এই লোক যে তথ্য দিলেন সেগুলো কি এর আগে কোথাও প্রকাশিত হয়েছে নাকি এবারই প্রথম নাযিল হলো?

হাসিব এর ছবি

তারিক আলি বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রথম ডাকক এরকম কোন তথ্য আমার চোখে পড়েনি। তবে যেহেতু প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছে সেহেতু ডেভিড বার্গম্যান ও অন্যান্য মানবাধিকারবারিদের দৌলতে বিদেশী মিডিয়া অচিরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা সংক্রান্ত ইতিহাসকে ডিসপিউটেড ইত্যাদি ইংরেজি শব্দ বসিয়ে প্রচার করবে।

Emran  এর ছবি

তারিক আলীর Will Pakistan Survive বইটা পড়ে দেখতে পারেন; এটা ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। যতদূর মনে পড়ে, সেখানে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলমান স্বায়ত্তশাসন এবং স্বাধীনতা আন্দোলন নিয়ে কথা বলেছিলেন। কিন্তু ১৯৬৯ সালে যখন তিনি এসব কথা বলেছিলেন, এবং "স্বাধীনতার ডাক" দিয়েছিলেন, তখন পরিষ্কার হয়ে গেছে যে পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতা সময়ের ব্যাপার মাত্র। অর্থাৎ he was merely stating the bleeding obvious। এ কারণেই মনে হয় তারিক আলীর ডাকটাকে কেউ তেমন গুরুত্ব দেয়নি। আর তিনি আদৌ এই ডাক দিয়েছিলেন কিনা, সেটা independent source থেকে যাচাই করা অসম্ভব হওয়ার কথা না। ১৯৬৯ সালে ছাত্র আন্দোলন নিয়ে যত লেখা/স্মৃতিচারণ প্রকাশিত হয়েছে, কোথাও কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তারিক আলীর এই ভাষণের কথা উল্লেখ আছে? সেই সময়ের পুলিশ রিপোর্টেও এ ঘটনার উল্লেখ থাকা উচিৎ, কারণ তারিক আলী ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক সূত্রে পশ্চিম পাকিস্তানে বেশ prominent ছিলেন।

তারিক আলীর লেখা/বক্তৃতা পড়তে এবং শুনতে একসময় ভালই লাগত। কিন্তু এই বক্তৃতায়* যখন তিনি উনবিংশ শতকের ফরাসী প্রতিবাদী শ্রমিকদের সঙ্গে তালিবানদের তুলনা এবং তালিবান সন্ত্রাসী হামলার "কনটেক্সট" খোঁজার চেষ্টা করলেন (সুশীল ছাগু ফর্মুলা অনুসরণ করে যথারীতি অনেকবার "but" শব্দের ব্যবহারসহ) , তারপর থেকে তার লেখা এবং বক্তৃতা বর্জন করেছি।

অনেকেই দেখলাম ফেসবুকে লিখেছে তারিক আলীর এই সাক্ষাৎকারে তো অনেক ভাল কোথাও আছে; সেগুলিকে কেন তুলে ধরা হচ্ছে না। আবারও, তারিক আলীর সেই ভাল কথাগুলি এতই bleeding obvious যে সেগুলি বলার জন্য তারিক আলীর দরকার নেই। আর Hay Festival নামক corporate capitalist mutual masturbation-এর মেলায় তার অংশগ্রহণের কথা বলাই বাহুল্য, এবং হাসিব ভাই সেটা বলেও দিয়েছেন।

* আমি সরাসরি ইউটিউব ভিডিওর লিঙ্ক দেয়ার চেষ্টা করছিলাম। আমাকে একটা ক্যাপচা ফিলাপ করতে বলল, কিন্তু ক্যাপচা কোথাও দেখতে পেলাম না। ইউটিউবে tariq ali festival of dangerous minds অথবা tariq ali what we can learn from terrorists দিয়ে খুঁজলে ভিডিওটা পাওয়া যাবে।

হাসিব এর ছবি

এরকম অনেক তালেবর তালেবান এ্যাপলোজিটিক বামপন্থী আশপাশে ঘুরে বেড়ায়। মার্কিনিদের তুলো ধুনে দিতে এরা সবকিছুর সাথে দাঁড়াতে রাজি।

আর ফেইসবুকে যারা আরো অনেক ভালো কথার রেফারেন্স দিচ্ছে তাদের জিজ্ঞেস করবেন মার্কিন দেশও অনেক ভালো ভালো কাজ করে। তাদের খারাপ কাজগুলোর বেইল তারা ভালোকাজগুলো দিয়ে দিচ্ছে না কেন?

 মেঘলা মানুষ এর ছবি

সে সময়ের বাংলাদেশের সাথে আজকের বাংলাদেশের তুলনা করলে গভীর বেদনা হয়

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

আপনাকে বেদনা দিতে পেরে আমরা বিশেষভাবে আনন্দিত।
আগে যাদের ইনফিরিয়র কালা দুব্বল আদমি ভাবতেন, তারা যে সামনে এতদূর এগিয়েছে এটা দেখলে যে বেদনা হবে এটাই তো স্বাভাবিক।

চরম উদাস এর ছবি

 মেঘলা মানুষ এর ছবি

একাত্তরের আগের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশের দিকে তাকালে,
শিক্ষা (+ নারী শিক্ষা), খাদ্য নিরাপত্তা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, জীবন যাত্রার মান (আর যা যা মেট্রিক আছে) কোনটায় খারাপ করেছে বাংলাদেশ?

পাকিস্তানের উন্নতি তো একটা সূচকেই মাপা যায়: "এই মাসে ফুটিত বোমার সংখ্যা "

অতিথি লেখক এর ছবি

উত্তম জাঝা!

শব্দ পথিক
নভেম্বর ১৭, ২০১৩

সাইফ এর ছবি

তারিক আলি, কিভাবে পারো?

মন মাঝি এর ছবি

এইটা একটা ১০০% বুদ্ধিমারানি!

****************************************

ইমরান খান  এর ছবি

এই ব্লগের বেশির ভাগ ব্লগারেরই পরমত সহিষ্ণুতা নেই!!! একটু মতের অমিল হলেই বেশিরভাগেরই গায়ে চুলকানি শুরু হয়ে যায়!!!

পাকিস্তানে যোগ দেবার ভোট এ অঞ্চলের মানুষরাই দিয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ এর আগে স্বাধীনতাই চাননি - ওটাই বাস্তবতা ছিল।

এখনই শুরু হয়ে যাবে - আমাকে ছাগু ট্যাগ দেওয়া কিংবা এই মন্তব্য আদৌ ছাপা হবে কিনা সন্দেহ হাসি আমার অভিজ্ঞতায় বলে, যাদের পরিবারে মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ যোদ্ধা নেই তারাই বেশি লাফালাফি করে হাসি যাদের বাবা-চাচা সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল তাদের এসবের (দ্বিতীয় মুক্তিযোদ্ধা হবার) প্রয়োজন পড়েনা।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এই পোস্টের সমালোচনা করার অধিকার এবং সুযোগ কিন্তু আপনার রয়েছে। এখনো আছে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১৯৪৭ সালের বাস্তবতা আর ১৯৭১ সালের বাস্তবতা কি এক? ১৯৪৭ সালে তো পশ্চিম পাকিস্তান-পূর্ব পাকিস্তান ছিলোনা, ঔপনিবেশিক শোষনও ছিলোনা। ১৯৪৭-১৯৭১-এর সময়কার পশ্চিম পাকিস্তানীদের ঔপনিবেশিক আচরণ পূর্ব পাকিস্তানকে যদি স্বাধীনতা সংগ্রামের দিকে ঠেলে দেয় তাহলে ১৯৪৭ সালের (আসলে ১৯৪৬-এর ভোট) কথা ভেবে তারা কি নিশ্চুপ থাকবে?

যদি দুটো মতের উভয়েই যার যার কনটেক্সট থেকে যুক্তিকে ধারণ করে তাহলে সেটাকে মতের অমিল বলা যায়। তারিক আলী এবং তার মাধ্যমে প্রথম আলো গ্রুপ যেটা করছে সেটা হচ্ছে মিথ্যার বেসাতি। এখানে যুক্তি নেই, আছে সত্যের সাথে মিথ্যার মিশেল দেয়া এক বটিকা। সেই বটিকাটি কী সেটা পোস্টের লেখক বিস্তারিত ভূমিকা ও কারণ ব্যাখ্যাসহ প্রথমেই বলে দিয়েছেন। আমার অভিজ্ঞতায় বলে, যাদেরকে ছোটবেলায় আয়োডিনযুক্ত লবন খাওয়ানো হয়নি তাদের যথাযথ জ্ঞান-বুদ্ধির বিকাশ ঘটেনি। তাই তারা পরিষ্কারভাবে কিছু ব্যাখ্যা করলেও সেটা বুঝতে সমর্থ হয় না।

"যাদের পরিবারে মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ যোদ্ধা নেই তারাই বেশি লাফালাফি করে হাসি যাদের বাবা-চাচা সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল তাদের এসবের (দ্বিতীয় মুক্তিযোদ্ধা হবার) প্রয়োজন পড়েনা।"

- নূন্যতম জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ বুঝবেন এমন সুইপিং কমেন্ট করাটা হচ্ছে দুই ধরনের চরিত্রদের যে কোন এক ধরনের কাজ। প্রথম ধরন হচ্ছে যারা আয়োডিনজনিত অভাবে ভুগছে। দ্বিতীয় ধরন হচ্ছে যারা পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া বাঁধিয়ে মজা লুটতে চায়। তবে পায়ে পারা দেয়াটা তারা খামাখা করে না। এর পেছনে 'অর্থবোধক' কারণ থাকে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

এক লহমা এর ছবি

১ম কথাঃ আপনি লেখা শুরুই করলেন "এই ব্লগের বেশির ভাগ" ব্লগারকে দোষ দিয়ে! বেশ, বেশ!
২য় কথাঃ এ বিষয়ে ষষ্ঠ পান্ডব সুন্দর করে বলেছেন। আশা করি পড়ে নিয়েছেন।
৩য় কথাঃ "আমার অভিজ্ঞতায় বলে, যাদের পরিবারে মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ যোদ্ধা নেই তারাই বেশি লাফালাফি করে যাদের বাবা-চাচা সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল তাদের এসবের (দ্বিতীয় মুক্তিযোদ্ধা হবার) প্রয়োজন পড়েনা।"
হুম। ব্যাখ্যাটাকে আরো এক স্তর প্রসারিত করলে পাওয়া যাচ্ছে - যাদের পরিবারে পাকিস্তান তৈরীর লড়াইয়ের (সে ভোট দিয়ে বা অন্য কোন ভাবে) প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী নেই তারাই বেশী লাফালাফি(!) করেছিল। যাদের বাবা-চাচা পাকিস্তান তৈরীর লড়াইয়ে অংশ নিয়েছিল তাদের এসবের (দ্বিতীয় যুদ্ধের যোদ্ধা হবার অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধা হবার) প্রয়োজন পড়েনি। কি, ঠিক আছে?

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ঘটনা সত্য। এই ব্লগের ব্লগারদের ছাগুমত সহিষ্ণুতা নেই।

ছাগুমত কাকে বলে?
ছাগুমতের সরল বঙ্গানুবাদ হচ্ছে আইলাবিউ পাকিস্তান মত। অথবা, জামাত কোন দুষ করেনাই' মত।

আপনার বক্তব্য থেকে ছাগুমতের গন্ধ পাওয়া যায় কীভাবে?

আপনি বললেন, ""পাকিস্তানে যোগ দেবার ভোট এ অঞ্চলের মানুষরাই দিয়েছিল''। আর কোন ব্যাখ্যা নাই, বক্তব্য নাই। ভাবখানা এমন যেন, বিয়ের পর স্বামী শিক গরম করে পাছায় ছবি আঁকলেও কিছু বলা যাবেনা। কারণ বিবাহের সময় কন্যা কবুল বলেছিল! তাই নাকি জনাব? ৪৬শে বাংলাদেশের জনগন কী সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিল সেই সিদ্ধান্তের জন্য পাকিস্তান বাংলাদেশের ছাল তুলে ফেললেও ভাইয়ে ভাইয়ে মিলে মিশে সহ্য করে থাকতে হবে, নাকি?

আমার এরকম মন্তব্য হচ্ছে "গায়ে চুলকানি' হওয়ার লক্ষণ, নাকি? বরং পরমত সহিষ্ণু বাঁশেরকেল্লা পেইজের পোস্টগুলো পড়তে থাকুন। এই ব্লগ সহ্য করা সকলের পক্ষে সম্ভব নয়। এটা দুষ্টু ব্লগ।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সবজান্তা এর ছবি

আপনার কথা শুনে একটা ব্যাপার মাথায় আসলো। প্রাচীনকালের সামহোয়্যারইন ব্লগ থেকে শুরু করে আজ অবধি যারা পাকিরাও ভালু এমন তত্ব দিয়েছেন, তাদের সবার পরিবারেই "বিরাট" বড় মুক্তিযোদ্ধা ছিলো।

আমি কিন্তু আপনারে ছাগু বলি নাই, গোস্বা কইরেন না আবার।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

আরেকটু বলেন। তাহলে সুবিধা হয়।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

হাসিব এর ছবি

নতুন কিছু বলেন। ব্লগের প্রথম থিকাই দেইখা আসতেছি সব ছাগুর বাবামাচাচাখালুশ্বশুর মুক্তিযুদ্ধা আছিলো।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

বিভিন্ন ঘটনা পর্যবেক্ষন করে সুনিদ্রিষ্ট কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন ব্লগ লেখক। গয়রহ এই ব্লগের সবার সহিষ্ণুতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন, অথচ ব্লগের বক্তব্য বিষয়ে যুক্তিসংগত কোন বিরোধীতা করলেন না, কেন ? বোঝাই যায়, সে হ্যাডম নাই, মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত, খান সাহেবদের দৌড় কি তবে বাঁশেরকেল্লা পর্যন্ত?

১৯৬৯ সালের অনেক আগে, ১৯৬২ সালে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লীগের গুরুত্বপূর্ন তিন নেতা সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক ও আরেফ আহমেদের মাধ্যমে গঠন করা হয় "নিউক্লিয়াস" বা "স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ"। তারও আগে লেঃ কমান্ডার মোয়াজ্জেম, শওকত আলি প্রমূখ সামরিক অফিসারদের একটি দল সামরিক পন্থায় স্বাধীনতা অর্জনের একটি পরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধুর প্রচেষ্টার সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। স্বাধীকারের আন্দোলনকে ধাপা ধাপে স্বাধীনতার আন্দোলনে রুপান্তরিত করতে নেপথ্যে থেকে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেছে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ, এসব ইতিহাস তারেক আলি হয়তো জানেও না ঠিকমত। আলু পত্রিকা তাকেই নিয়ে এসেছে স্বাধীনতার বয়ান দানের জন্য, আর কতিপয় খান সাব তাতেই গদগদ হয়ে ভাবছেন আহা, কত্ত জ্ঞানী লোক!

অতিথি লেখক এর ছবি

আব্দুল্লাহ ভাই কারে কি কন? মাথা ঘুরে পড়ে যাবে তো? কার থেকে কি বালছাল শুনছে আর এইখানে আইসা ছাইড়া দিছে, ভাবছে সবাই উনার মতো খালি কলসি, চিলে কান নেওয়া পাবলিক। অবুঝ পোলাপাইন, এখনো কাঠালপাতা খাইয়া হজম করতে শিখে নাই। আল্লাহ এদেরকে বেহেস্তে নসিব করুক, বলেন আমীন। গুল্লি

মাসুদ সজীব

হিমু এর ছবি

আমার অভিজ্ঞতা বলে, যাদের বাপমা ছেলের নাম ইমরান খান, জাভেদ মিয়ান্দাদ, ইনজামামুল হক, জুলফিকার আলী ভূট্টো, গোলাম আজম, আইয়ূব খান, ইয়াহিয়া খান রাখে, তারা বেশিরভাগই গান্ধা ছাগু হয়।

তীরন্দাজ এর ছবি

অকাট্য যুক্তি হিমুর!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সুবোধ অবোধ এর ছবি

হাইলা!!
তা,আপনের আব্বু,চাচ্চু মুক্তিযুদ্ধের সময় কোন পক্ষের হয়ে সম্মুখ যুদ্ধ করেছিল???
পাকিদের নিশ্চই????

সুবোধ অবোধ এর ছবি

"১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় জনসভায় আমিই প্রথম স্বাধীনতার ডাক দিয়ে বলেছিলাম, ‘স্বায়ত্তশাসন তোমাদের কিছুই দেবে না, তোমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামের দিকেই যাওয়া উচিত। নইলে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী তোমাদের ধ্বংস করে দেবে।’ এটাই আমি বলেছিলাম। সাংবাদিকেরা এতই নার্ভাস হয়েছিল শুনে, তারা আমার বক্তৃতার পুরোটা প্রকাশ করেনি। কিন্তু কথাটা শেখ মুজিবের কানে গিয়েছিল এবং তিনি সন্ধ্যায় তাঁর বাসায় দেখা করতে বললেন। সেখানে তিনি আমাকে বললেন, ‘আমি শুনেছি তুমি কী বলেছ। কিন্তু তুমি কি নিশ্চিত, তুমি কি নিশ্চিত?’

এইটা পড়ে হাসতে হাসতে আমার ট্রাউজার ঢিলা হয়ে গেছিল!!!!!
বলদ কি গাছে ধরে নাকি পাকিদের পেটে ধরে???!!!

অতিথি লেখক এর ছবি

এতদিন মিথ্যা অজুহাতে তারেক জিয়ার মত একজন সৎ, নির্ভীক, দেশপ্রেমিক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে এই বাকশালি সরকার নির্যাতনের যে ষ্টিমরোলার চালিয়েছে তার প্রায়শ্চিত্ত সরুপ এই মহান ব্যাক্তিকে দুর্নীতি বিমোচনে বিশেষ ভুমিকা রাখায় ২০১৪ সালের একুশে পদক এবং ১৯৬৯ এ আরেক তারিক আলী স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছে সেইজন্যে ২০১৪ সালের সাধীনতা পুরষ্কারে ভুষিত করা হোক। আর এতদিন পরে সেই সত্য উদ্ভাবন করে প্রথম আলু জাতীয় জীবনে যে শান্তির সু-বাতাস নিয়ে এলো তার জন্যে প্রথম আলুকে মেরিল প্রথম আলু চ্যানেল আই অ্যাওয়ার্ড ২০১৪ দেয়ার প্রস্তাব করছি। ইমরান ভাই এইবার খুশি?

এক লহমা এর ছবি

চলুক
স্বাধীন, সার্বভৌম, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ ত নিছকই একটি দেশ নয়, তার অস্তিত্বটা একান্ত ধর্মের ভিত্তিতে তৈরী হওয়া রাষ্ট্র পাকিস্তানের অস্তিত্বের যৌক্তিক ভিত্তিটার পক্ষেই চ্যালেঞ্জ-বিশেষ। কাজেই এই দেশকে তার নিজস্ব বিকাশের পথ থেকে সরিয়ে নিজেরই আর এক রূপ বানানোর জন্য পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সদা-সর্বদা সর্বাঙ্গীন চেষ্টা জারী থাকবে এটাই মনে হয় নির্মম সত্য। এইসব ফারুক-তারিকেরা এই প্রচেষ্টারই অঙ্গ। বাংলাদেশকে নিয়ে এদের প্রত্যেকটি কাজের ঐটিই উদ্দেশ্য।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

হাসিব এর ছবি

আমার ধারণা এইরকম কিছু বলবে এইটা আগে থেকেই জানে বলে এই তারিক আলির আমদানি।

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথম আলুর পাপিস্তান প্রীতি নুতন কিছু নয়। হামিদ সাহেবকে নিয়ে কিছু দিন পাপিস্তানিও যে উদার জাতি সেটা প্রমাণের চেষ্টা চালিয়েছে মতিচোরা। তবে এইবারের উদ্দেশ্যটা দারুন লাগলো আমার। কিভাবে আওয়ামিলীগকে মানুষের কাছে আরো ছোট করা যায়, খারাপ প্রমাণ করা যায়, নতুন প্রজন্ম ভাববে একজন ভিনদেশী যখন বলছে আওয়ামিলীগ ৭১ পরবর্তীতে সময়ে অনেক ভুল আর অন্যায় করেছে তখন সেটা ঠিক। এগুলোতো তারা এতদিন বিএমপি জামায়েত এর কাছে শুনে আসছিলো। এখন দেখছি বিদেশীরা ও বলছে, না তাহলে বোধহয় আসলেই ঠিক। নতুনরাতো ঠিক বুঝে উঠবে না মতিচোরার এই সুকৌশল।

তারিক আলির চোখে সদ্য স্বাধীন দেশের স্থপতিকে হত্যা করে ক্ষমতায় আসা এক স্বৈরাশাসকের শাসনক্ষমতা দখল অন্যায় ছিলো না। তার হাতে সংঘটিত এতো হত্যা, রাজকারদের পূর্ণ প্রতিষ্ঠা, রাজনীতিতে ধর্মের অনুপ্রবেশ, কালোটাকা, ক্রু, অস্ত্রের ঝংকার কিছুই বাংলাদেশকে ভুল পথে নিয়ে যায়নি শুয়োরটার চোখে, শুধু ভুল মনে হয়েছে শুধু শেখ মুজিবরের কর্মকান্ডকে। হুম শেখ মুজিব ভুল করেছিলেন তাদের কাছ থেকে স্বাধীনতাটা ছিনিয়ে নিয়ে আসার নেতৃত্ব দিয়ে, ভুল করেছেন পাপিস্তানিদের মুখোশটা খুলে দিয়ে, ভুল করেছেন জিয়ার মতো পাপিস্তানিদের কাছে মাথা নত না করে।

তারিক আলির কাছে আজকের বাংলাদেশ দেখে খারাপতো লাগবেই, তার জাত ভাইদের আজকে ফাঁসিতে ঝুলানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে, তাদের রক্ত বয়ে চলে দলটা আজ রাজনৈতিকভাবে কোনঠাসা। তার দেশের মতো এইদেশে ঘরে বাইরে বোমা আতংক নেই, তালেবান নেই, ধর্মীয় ফতোয়া নেই, মসজিদে মসজিদে বোমা হামলা নেই, তাদের মতো নারীরা সব ঘরে বসে নেই। এগুলো দেখা তাদের জন্যে সত্যি কষ্টকর, এমনতো কথা ছিলো না, তারা তো এমন বাংলাদেশ চায়নি। কি লাভ হলো তাহলে তাদের জাত ভাইদের রেখে গিয়ে? সেই বেদনার কথাই বলেছেন তারিক আলী চুতমারানি।

মাসুদ সজীব

হাসিব এর ছবি

- বহুবার বলা মিথ্যা একসময় সত্য মনে হয়। আর প্রথম আলো পাকিস্তানি বুদ্ধিজীবী ভাড়া করে আনে এই মিথ্যা চালু করতে।
- এদের যাবতীয় রাগ শেখ মুজিবের ওপর। বহুত সমস্যা করে ফেলছে এই লোক। শেখ মুজিবের সাথে আরেকজনকে দাঁড় করাতে এরা ভাসানিরে আমদানি করে।
- আমি আশির দশকের কথা মনে করতে পারি। তখন রাস্তায় নারীরা ছিলো হাতে গোনা। এখন ঢাকা শহরে নারী পুরুষ সমানভাবে দেখা যায়। বিপরীতে তালিবান নিয়ন্ত্রিত সোয়াত অঞ্চলে নারীরা নিকতাত্মীয় পুরুষ সঙ্গী ছাড়া একলা বাসা থেকে বের হতে পারে না। এই তালেবানদের প্রমোট করে তারেক আলি। সেই তারেক আলিরে মাথায় তোলার চেষ্টা করে প্রথম আলো।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আলুর পেটে লাথি মারার জন্য তীব্রভাবে নিন্দা জানাইলাম, হাসিবের ফাঁসি চাই।

সোহরাব-মিজান-আনিসুল-ফারুকদের মতো দেশি প্রোডাক্টের সাথে সাথে হামিদ মীর-ইমরান-মালালা প্রোডাক্ট মিশাইয়া আলু যে মেহেরজান তত্ত্ব প্রচার করে আয়-উপার্জন করে, তা কয়েকমাস আগে চরম মার খেয়ে গেছে হামিদ মীর গোলাম আযমের মুক্তি দাবি করায়। মালালার কাস্টোমার আরো উঁচা লেভেলের দেশ। আর নমস্তে বাংলাদেশ ইমরানের নিজস্ব রাজনীতি আছে। মেহেরজান প্রোজেক্ট নিয়া সে খুব বেশি চিৎকার-চেঁচামেচি করলে পাকিদের ভোট না পাওয়ার হিসাব আছে। এ অবস্থায় আলু গত কয়েকমাস ধরে প্রায় এতিম অবস্থায় দিনযাপন করেছে। দেশি প্রোডাক্টের কোয়ালিটি যা-ই হোক, পাকি ট্যাগ না থাকলে মেহেরজান একা অসহায়।

এই ঘোর দুঃসময়ে তারা যে একটা তারিক আলী যোগাড় করেছে, সেখানেও বাম হাত ঢুকানোর দরকার কি? মানবতা বলে কি কিছু নাই দুনিয়ায়?

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

হাসিব এর ছবি

আমরা কি তাহলে এই পূর্ববাংলা চেয়েছিলাম? বাঙালি মুসলমান কি কিছুই বলবে না?

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
ধন্যবাদ হাসিব।
শুভেচ্ছা।

-------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

দুর্দান্ত এর ছবি

<<ভুলে করা মন্তব্য সরিয়ে নিলাম। দুঃক্ষিত।>>

নীড় সন্ধানী এর ছবি

তারেক বা তারিক নামের লোকজন মাসুম হয়। সেরকম এক মাসুমের নামে এরকম বেরহম পোষ্ট দেবার নিন্দা জানায়ে গেলাম।

পাকিস্তান আমল অবশ্যই ভালো ছিল। সব খানের আমলই ভালো, সেই চেঙ্গিস খান থেকে আয়ুব খান বা ইমরান খান পর্যন্ত সকলেই মহান। তবে তারকালি আরো যা বলতে পারতো পাকি আমলে ১ টাকায় ১ সের চাল পেতো, এক গরু দুই বাঁটে দুধ দিত, এক ছাগলে তিনটা বাচ্চা দিত, সেই বাচ্চা দুধ না খেয়ে হাজির বিরানী খেতো, শীতকালে মাথা মুখে ক্রিম না দিয়ে সরিষার তেল দিত, গায়ে সাবান না দিয়ে কাদা দিয়ে গোসল করতো....... ইত্যাদি ইত্যাদি। পুরা লিষ্টি দিলে কেঁদে বুক ভাসায়ে ফেলবে অনেকেই, তাই দিলাম না

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অতিথি লেখক এর ছবি

ইমরান খান নামত ভালই লইসেন খান সাহেবগো লাহান তয় কতা হইল আপনে এইহানে কি করেন ? সহি-সালামতে এইহানে বইয়্যা আজাইরা প্যাচাল না পাইরা যান না পারলে আপনার পেয়ারের দেশে , নাকি ডর লাগে আপনের ভাই-বেরাদাররা ডেইলি যেমনে জন্তু-জানোয়ারগো লাহান খুনাখুনি করতাসে হেইডা দেইখ্যা। এই দেশে থাকেন বইল্যা এগুলি কওনের সাহস হইছে জাগা মোতন থাকলে এতক্ষনে ব্লাসফেমী,শিয়া-সুন্নী,তালেবান কোন না কোন উছিলায় আল্লাহর পেয়ারা বান্দা হইয়্যা যাইতেন। এই ব্লগ ভাল না হইলে পইরেনন্যা বেহুদা ঘোট পাকাইয়েনন্যা।

অভিমন্যু .
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি

আজাদ এর ছবি

তারিক আলির বক্তব্য হিসেবে যা ছাপা হয়েছে আসলেই তা তিনি বোঝাতে চেয়েছেন কিনা সন্দেহ করার কারণ আছে।অনুবাদ ও সম্পাদনায় অনেক কিছু হারায় আবার অনেক নতুন অর্থও তৈরি হয়, যদিনা অনুবাদক/সম্পাদক তার কাজে সৎ হন।

হাসিব এর ছবি

আপনার সন্দেহ হবার কারণ কী? প্রথম আলোর পাকিরাও ভালো প্রজেক্ট, তারিক আলির তালেবান প্রমোশন, রিভিশনিস্ট হিস্টোরি সবকিছু তো খাপে খাপে মেলে। আর এরকম কন্ট্রোভার্সিয়াল কথা ডাবল চেক না করে প্রথম আলো ছাপবে কেন?

আজাদ এর ছবি

আমি জবাব দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু পোস্ট করতে গেলেই বলে To complete this form, please complete the word verification below. কি করব?

অতিথি লেখক এর ছবি

সময় পেলে লিখব। আপাতত কিছু উদ্ধৃতি দিয়ে রাখি।
১৯৭০ সালের সেপ্টেম্বরে তারিক আলি লিখেছিলেন: For one whole week the structure of authority in Dacca, the capital city of East Pakistan, had completely collapsed. All initiative lay in the hands of the Students Action Committee (SAC). Instead of mobilizing the masses and starting to implement some of its 11-point demands or at least posing the question of their implementation, instead of declaring Dacca a liberated city, the SAC took over the role of the bourgeois state and its main triumph was to prevent the disruption of the cricket Test match between Pakistan and the MCC. No effort was made by any grouping to set up a People’s Council to govern the city with representatives from SAC, the Peasant Associations and the factories. The latter was clearly a possibility, as many militants admitted in private discussions afterwards, and if steps had been taken in that direction it would have transformed the situation overnight, so that when the bourgeois parties united under the framework of DAC (Democratic Action Committee) to start negotiating with Ayub, a People’s Council would have been the alternative present to the masses.
বাঙালিদের উপর পূর্ব পাকিস্তানী শাসন যে নয়া-ঔপনিবেশিক ধরণের তার স্বীকৃতি সেই লেখায় ছিল: …As mentioned above the Bengali bourgeoisie has not been allowed to develop economically: instead, West Pakistani capitalists have been allowed to exploit East Bengal in a neo-colonial fashion. Much of the profits from East Pakistan have contributed to the faster rate of industrialization in West Pakistan. This situation has gone from bad to worse, and it was bound to produce a nationalist response from the Bengali petty bourgeoisie, which has a much higher level of political consciousness than its Western counterpart. This is also true historically. Bengal was without doubt the most politically conscious segment of the Indian sub-continent during the days of the Raj and it was not an exaggeration to say that ‘what Bengal thinks today, India thinks tomorrow’. Not only has the Bengali bourgeoisie been dispossessed economically, but it has never been allowed adequate representation in either the Civil Service or the armed services. For instance, the number of Bengalis in the Army is infinitesimal: this is because the ruling élite in the West does not trust the Bengalis because of their superior political culture. The rationalization is racist: the Bengalis are short and weak and not capable of fighting. The latter view is widespread in the Army and the Civil Service. Unfortunately the left forces in West Pakistan have often shared these prejudices. The Bengali middle class has its own political party—the Awami League—which is committed to some extent to reversing the existing situation.
The national question, coupled with the combined and uneven development of political consciousness in the two parts of the country, could well lead to a situation where the revolution is successful in Bengal before it moves to the West. In this situation, revolutionary socialists will be faced with the possibility of protracted struggles in the East and the need to combat chauvinism in the West.

ভাসানীসহ বামপন্থীদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ও সুবিধাবাদিতার উল্লেখও আছে লেখাটিতে: Taking advantage of the opportunist policy of the Peking government towards the Ayub dictatorship, the pro-Peking NAP decided to cease opposing the régime, a course in which they were undoubtedly advised by Peking. [6] The pro-Moscow faction was only interested in bourgeois democracy and so opposed the régime from a liberal standpoint. The capitulation of the latter and the adaptation of the former to Chinese state policy meant that there was no left party capable of carrying out a struggle against the dictatorship.
It was in this vacuum that Zulfikar Bhutto, a former Foreign Minister of Ayub’s, set up the People’s Party, after he had been dismissed owing to State Department pressure. Bhutto’s radical demagogy and his outspoken attacks on the Ayub régime won him a certain following, and when the upsurge started he was the only politician who could support it and take advantage of it. The pro-Peking NAP continued to insist that the Ayub régime was anti-imperialist until it had no option but to be forced on to the streets by its rank and file. In the East, the pro-Peking faction was led by the peasant leader, Maulana Bhashani, whose political instinct was much sharper than that of his theoreticians. He realized the potential of the revolt and was the first leader in Bengal to issue a call for a general strike. But even there the Maulana’s opportunism and his veiled support for Ayub had had its effect, and the NAP in East Bengal could offer no leadership. It simply tail-ended the mass movement and failed to grasp the importance of the national question. In this situation the vacuum was filled by the leader of the Bengali middle class, Sheikh Mujibur Rehman, accurately nicknamed Chiang Kai Sheikh. Rehman’s opposition to the Ayub régime had resulted in his imprisonment. When he came out of prison there were a million people to welcome him at a giant rally. He stepped in and filled the vacuum with his party, the Awami League. Both Bhutto and Rehman are opportunist right-wing social-democrats, but both have mass followings in the urban centres of West and East Pakistan respectively. Their parties also contain some genuine left elements who are in a minority, but who will press their respective leaders to fulfil their promises if either of them assumes power after the general election.

It may be imagined that the Chinese line has greatly contributed to the disorientation of the Left in Pakistan itself.

১৯৭১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধকে মুক্তিযুদ্ধ এবং জনযুদ্ধ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। নিউ লেফট রিভিউয়ে লিখেছেন: The struggle in Bangla Desh between the Bengali liberation forces and the armed might of West Pakistani capital represents both a continuation of the mass movement which erupted in 1968–69 and a qualitative break. In that sense we can say that the present course of events in East Bengal was not unpredictable.
The war in Bangla Desh is an event of the greatest international significance. Its immediate effects extend well beyond the present frontiers of conflict and in the long term it may well be seen as a decisive phase of the Indian revolution. Together with the uprising in Ceylon, it signals the approaching demise of traditional bourgeois politics in the entire subcontinent and puts armed struggle on the agenda for the not-too-distant future. The implications of this for the politico-military strategy of imperialism in Asia are evidently very serious ones. It is therefore vital for Marxists to study in detail the present stage of the struggle and the path towards the ultimate liberation of the Indian subcontinent.
There have been two distinguishing features of politics in Eastern Bengal since the beginning of 1971: on the one hand, the enthusiastic participation of the masses in every level of an escalating social and national struggle; and on the other the political bankruptcy of the petty bourgeois notabilities of the Awami League, whose whole tradition of compromise and manoeuvre rendered them completely incapable of providing leadership in a real independence movement. Even before the formal invasion took place on March 25th, 1971, this tradition had led to the loss of hundreds of Bengali lives at the hands of the oppressor Army of General Yahya Khan. These earlier demonstrations of its brute power should have convinced the Awami League politicians of what was likely to follow unless they prepared the Bengali people for a protracted struggle. This they refused to do despite the evident desire of the masses, expressed in thunderous slogans at Awami League meetings, for a total break with Pakistan. The rising tide of popular political consciousness was already clear in the enormous meetings which took place throughout the province both before and after the General Election of 1970. At every stage the masses assimilated the lessons of the past much more rapidly than their parliamentarist leaders and showed their willingness to fight the colonial state in East Bengal. At every stage they were again and again checked by the visceral constitutionalism of the Awami League leadership. This conflict between the mass movement and the petty bourgeois outlook of its official guides was all the more tragic in that the existing organizations of the revolutionary left were localized and thus not in a position to influence the course of the struggle decisively. However, as we shall see, this situation is now beginning to change in favour of the revolutionary movement.
ইয়াহিয়ার প্রতি চীনের সমর্থনের পক্ষে এক মাও-অনুরাগীর যুক্তি খণ্ডন করেছিলেন এভাবে: A Maoist sympathizer, Dilip Hiro, recently suggested in New Society that the Chinese might have backed Yahya for ‘long-term motives’, namely to enable him to smash the Awami League and pave the way for the left in Bengal. The implication is that the murder of half a million people was simply part of this elaborate plan. With the same logic, it could be argued that the Chinese loans and weapons dispatched to Yahya are in reality a way of sending arms to the resistance, since this is doubtless where some of them will end up. In their refusal to face facts, many Maoist comrades who support the struggle in Bangla Desh are prepared to cling to straws in order to explain away the Chinese position. They should be cautious, since such fantasmagoria will only lead to greater demoralizations in the future.
There were two important reasons why the Awami League was able to win mass support and hegemonize the politics of East Bengal. The first was its success in grasping the importance of the national question. The second was the failure of the groups of the extreme left, which had followed an extremely opportunist course during the Ayub dictatorship because of the latter’s ‘friendship’ with China. Thus the Awami League could present itself as the only meaningful opposition force in the province. It constantly carried out propaganda in favour of its Six-Points; it called for free elections and it organized demonstrations against the Ayub dictatorship. Some of its leaders, including Mujibur Rehman were consequently arrested. The Maoist wing of the National Awami Party (NAP) had meanwhile shown complete blankness towards the national problem. Instead of joining popular agitation and deepening it by explaining to the masses that national and democratic tasks can today only be solved within a socialist framework, and thus preparing them for a long struggle, they entrenched themselves in sectarian isolation. In other words, they failed to see that uneven historical development would oblige Bengali revolutionaries to work out a strategy for their struggle independent of West Pakistan. Moreover, they insisted that the Ayub regime had ‘certain anti-imperialist features’ and was therefore in some ways to be preferred to bourgeois democracy. In these conditions, the Awami League did not have much trouble in establishing itself as a powerful mass force. The stupidity of the Ayub regime in persecuting its leaders, manufacturing conspiracy cases against them and throwing them into gaol could only help this process. Thus when the anti-Ayub upsurge resulted in the fall of the dictator and his replacement by the Yahya junta in early 1969, it was hardly surprising that the Awami League reaped the benefits. Yet it still could not disavow its heritage. In the weeks before the army persuaded Ayub to retire, the Awami League eagerly participated in the ‘constitutional’ talks at the Round Table Conferences called by Ayub to reach a compromise. It had fuelled the mass movement and witnessed the anger of Bengali peasants and workers; even so it remained tied to its parliamentarist past.

মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়ার সামর্থ্য নিয়ে সন্দেহ এবং বিপ্লবী বামদের ব্যাপারে অনেকটা বায়বীয় আশাবাদ এই লেখায় ছিল। বাস্তবের সাথে সম্পর্কহীন অক্সফোর্ডশিক্ষিত এলিট বাম বুদ্ধিজীবী হয়তো তার সূত্র হিসেবে কাজ করেছেন। তাই এমত ধারণা তৈরি হয়ে থাকবে। এখানে তার অপরাধ আমাদের দেশের একসময়ের পিকিংপন্থী বাম বুদ্ধিজীবীদের থেকে অধিক নয়।
তারিক আলির বাবা মাজহার আলি খান। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশে এসেছিলেন। একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি ও তার সাংবাদিক বন্ধু সৈয়দ নাজিউল্লাহ যুদ্ধোত্তর সময়ে জুলফিকার আলি ভূট্টোর কাছে গিয়েছিলেন একটা কনফেডারেশন করে বাংলাদেশের জন্যও পাকিস্তান নামটা বহাল রাখা যায় কিনা সেই চেষ্টায়। ভূট্টো তাদের উৎসাহ দিয়েছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী সেই দুই সাংবাদিককে সহায়তা করেছিলেন ঢাকায় আসার ব্যাপারে। কিন্তু তারা ঢাকায় আসার পর পাকিস্তানে পিপিপি প্রচার করে যে শেখ মুজিব তাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে গেছেন। এতে ঢাকা ক্ষুদ্ধ হয় এবং আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের হোটেলেই আটকে রাখেন। পরে তারা পাকিস্তান চলে যেতে বাধ্য হন।
পিতা ও পুত্রের পাকিস্তান দর্শন এক নয় মোটেই।

হিমু এর ছবি

মাজহার আলি খানের ওপর সেই "একটি প্রতিবেদন"-এর রেফারেন্স কি দেওয়া সম্ভব? ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

'After the independence of Bangladesh, Mazhar sahib went there, in a last ditch effort to work out some form of a confederation formula with Sheikh Mujibur Rehman. But the mission, supposed to be a low-key effort with the backing of ZA Bhutto, fizzled out.'
http://www.dailytimes.com.pk/default.asp?page=2010%5C05%5C20%5Cstory_20-5-2010_pg3_2

https://www.facebook.com/notes/syed-jaffer/analyzing-bhutto-on-historical-basis-and-on-personal-information/512835728743846

হাসিব এর ছবি
সাইফ এর ছবি

সপ্তাহখানেক আগের কথা, লাল রঙের চুল দাড়ি ওয়ালা এক ভদ্রলোক বাসে কইতাছিল 'যে যাই বলুক না কেন, পাকিস্তান আমলে দেশে শান্তি ছিল।'

আমি কইলাম হ, কথা সত্য, পাকিস্তান আমলে দেশে বহুত শান্তি ঘোষ, শান্তি রানি দাস, শান্তি দেবনাথ আছিলো, মাগার ৭১ এ আপনারা আর আপনাগো পাকিস্তানি বাপেরা সবগুলারে ুইদা গাং কইরা ইন্ডিয়া পাঠাইয়া দিছেন, শান্তি থাকবো ক্যামনে?

ভদ্রলোক এর হাতে এক কপি প্রথম আলো ছিল।

হাসিব এর ছবি

হ, মাঠে ঘাটে তেতুল পাওয়া যেত না। আর্মির ইয়ে খেয়ে খেয়ে সুখে শান্তিতে দিন কাটতো।

সাইফ এর ছবি

যাহ্‌ দুষ্টু!

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

৭১ এর পূর্বে এই ঢাকাতেই তারিক আলির বক্তৃতা শোনার ভাগ্য আমার হয়েছিলো। কিন্তু এ কথা কোনভাবেই স্মরণ করতে পারছিনা যে তিনি বলেছিলেন,

‘স্বায়ত্তশাসন তোমাদের কিছুই দেবে না, তোমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামের দিকেই যাওয়া উচিত। নইলে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী তোমাদের ধ্বংস করে দেবে।’

মেঘলা মানুষ এর ছবি

আপনি তাহলে ঘটনার একজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী! আপনি একাই তো এই মিথ ডিবাঙ্ক করে দিতে যথেষ্ঠ!

আরেকটা জিনিস, সাংবাদিকরা তখন সাহসী ভূমিকায় ছিলেন বলেই জানি (গুটিকয় বাদে),
তবে, তাঁরা কেন এই হামিদ আলির বক্তব্য ছাপাতে ভয় পাবেন?

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

তিনি যখন ঢাকায় এসেছিলেন তখন তিনি বামপন্থী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি পাকিস্তানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ছিলেন। তখন তাঁর সম্পর্কে যতটুকু জেনেছিলাম, তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলো তাঁকে অপছন্দ করতোনা। ছাত্রনেতারাও তাঁকে বেশ সম্মান করতেন। তবে তিনি বাংলার স্বাধীনতা সম্পর্কে কোন কথা বলেছিলেন, এমনটা আমার জানা নেই।

পার্থ এর ছবি

ছাগুদের একটি খুব কমন কথা হল তাদের পরিবারের বাপ,চাচা,মামা কেউ না কেউ মুক্তিযোদ্ধা ছিলো।

কড়িকাঠুরে এর ছবি

হামিদ মীর বটিকা পুরনো হয়ে গেছে। তাই আপাতত পাকিরাও ভালো মাহফিলে দরকার নয়া নওজোয়ান। নব জৌলুসে লাগাও সুরমা চোখে- হে মেহেরজান বুলবুলালী, এসেছে মেহেরবান- কদরজান- দাদাজান তারিক আলি।

কৌস্তুভ এর ছবি

সন্ন্যাসীদাকে স্মরণ হল...

বঙ্গবন্ধু তখন ছিলেন সকল কিছুর চার্জে
তারপরেও ঘোষক জিয়া - আইডিয়াটা কার যে!
চিনতো তখন কে তারে!
স্বাধীন বাংলা বেতারে
ছিলেন তিনি, খুব বড়োজোর, খণ্ডকালীন আরজে।

তিনি থাকলে তারিক মহাশয়কে কী বলতেন তাই ভাবছি।

অপর্ণা  এর ছবি

একটি প্রসংগেও ফারুক ওয়াসিফ পালটা শব্দ উচ্চারণ করে নাই। ফারুক ওয়াসিফ, কেমনে পারো !!!

অতিথি লেখক এর ছবি

বাংলাদেশের বাস্তবতা হচ্ছে এইসব 'ইমরান খান'। এরাই ২৫শে মার্চ,১৯৯২ এ 'নাপাকিস্তান' বিশ্বকাপ জিতলে রাস্তায় মিছিল বের করেছিলো। একবারও তাদের মনে হয়নি তারিখটার কথা। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আবাসিক হলের ছাত্রদের মানসিকতা দেখে লজ্জায় মুখ লুকাতাম। ছাত্রদলের এক 'পান্ডা' ছিলো যে কিনা বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলাতেও 'নাপাকিস্তান' এর পক্ষে গলা ফাটাতো। আইয়ুব খানের প্রশংসায় (!) পঞ্চমুখ কিছু বাঙ্গালী এখনো বর্তমান। কি এক দুঃসহ সময় আমাদের প্রজন্মের!!
আমার সহকর্মী, আমার সহপাঠী, আমার বন্ধু-স্বজনদের মধ্যে কেউ যখন এমন করে, তখন তার মুখ ভরে প্রস্রাব করে দিতে ইচ্ছে করে। আমার তাদের মুখে প্রাণভরে মূতে দিতে ইচ্ছে করে।

--------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

লেখায় উত্তম জাঝা!

কিঞ্চিত অফটপিকঃ ইমরান খান ভাইয়া মনেহয় পারিবারিক 'নিয়াজী' টাইটেলটা লাগাতে ভুলে গেছেন হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ঈয়াসীন এর ছবি

হাততালি

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

স্যাম এর ছবি

লেখাটির প্রথম পাঠকদের ২/১ জনের মধ্যেই আমার নাম থাকার কথা - নিয়তি মন্তব্যে এনে ফেলল প্রায় শেষে - মনে মনে তখনি নানা মন্তব্য লিখে ফেলেছিলাম বিশেষত যখন দেখছিলাম স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বানানো বিতর্কে একজন 'পাইক্কা' ও হাজির ... আসলেই অদ্ভুদ! একটা স্বীকৃত গণহত্যার বিচার এ ৪২ বছর এর সংগ্রাম আর অপেক্ষায় রাখা আমার এ দেশটাকে নানাভাবে বঞ্চিত রাখার ষড়যন্ত্রে বক্তিয়ারের ঘোড়ায় চড়ে আসা জ্ঞাঙ্কির পোলাদের তালিকাই দীর্ঘতর হল তারিকালির আগমনে - তার অতীত জানিনা, সাক্ষাতকারের অংশটুকু পড়ে আমার অনুভুতি - "তিনি অসত" - এমন বয়ান, এমন মানুষ আমাদের প্রয়োজন নেই।
হাসিব ভাই গুরু গুরু

অতিথি লেখক এর ছবি

"জনমানসে সব পাকিস্তানি আসলে খারাপ না এরকম একটা ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য হয়।" - সেরেছে! সব পাকিস্তানীই খারাপ, এরকম মত আপনার?

যদ্দুর প্রশ্ন তারিক আলীর, নিউ লেফট রিভিউ এ ১৯৭১ এর জুলাই-অগষ্ট এ ওনার একটা বেশ বড় লেখা বার হয়। সময়টা খেয়াল করুন। যুদ্ধ তখন পুরোদমে চলছে। ওপরে 'অতিথি লেখক' ও তার থেকে কোট করেছেন। উনি যে যে অংশগুলো কোট করেছেন সেটুকুই বাংলাদেশের প্রসঙ্গে যথেষ্ঠ। অর্থনৈতিক শোষণ, সামরিক জান্তার শাসন, আমেরিকার তাঁবেদারী, ভাসানী সহ বামপন্থীদের একটা বড় অংশের পাকিস্তানকে সমর্থন এবং পাঞ্জাবী শাসকগোষ্ঠীর বাঙ্গালীদের প্রতি জাতিবিদ্বেষ, সবকটাই আছে। এমনকি ভারতের সরাসরি ইনভল্ভমেন্টের সম্ভাবনারও পূর্বাভাস দিয়েছিলেন ওই ইস্যুটিতে। এগুলো আজ সবাই জানে, বলাবলি করে। উনি ৭১ এ বলেছেন। নুরুল আমিন যখন পশ্চিম পাকিস্তানে বসে। নুরুল আমিন বাঙ্গালীই ছিলেন যদ্দুর জানি। লিঙ্কটা এই। গুগল ক্যাশ থেকে নেওয়া। পড়ে ফেলুন। ঘন্টাদুয়েকের ব্যাপার। তারপর যা যা নিজে লিখেছেন আরেকবার পড়ুন।

Emran লিখেছেন ওনার লেখা "Will Pakistan survive" বইটির কথা। এটি ১৯৬৯ এ লেখা নয়। ১৯৮০-৮১ তে লেখা। ভুট্টোকে ফাঁসীতে ঝোলানোর পর জিয়া ক্ষমতা দখল করলে তারপর লেখেন। পাকিস্তান নিষিদ্ধ ছিল। বোধহয় আজও আছে।

এবার আসি তালিবানের কথায়। তালিবানের জন্ম ৯০এর দশকের প্রথম দিকে। আফগান যুদ্ধের ফলশ্রুতিতে। এই যুদ্ধকে ধর্মযুদ্ধ নাম দিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আফগানদের কাজে লাগানো হয়। কোন দেশ লাগিয়েছিল? জেনারেল নলেজের সোজা প্রশ্ন। তালিবানরা এই মুজাহিদদেরই উত্তরসূরি।

এই মূহুর্তে পরিস্থিতি কি আফগানিস্তানে? দেশটি পরাধীন। যা ঘটছে ওখানে (এবং তার স্পিলওভার হচ্ছে পাকিস্তানে) সেটা তার প্রতিক্রিয়ায়। আফগানদের চরিত্রগত দোষ, এরা পরাধীন থাকতে পছন্দ করে না। অনেক জাতিই খুশিমনে মেনে নেয়। হাতে গোনা দু'চারজনকে বাদ দিলে আমরা দুশ বছর গর্বের সঙ্গে ছিলাম। এবার যখন একটা দেশ পরাধীন তখন আমাদের পছন্দসই সোশ্যাল পলিসি না রাখলে কেউ স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারবে না এই থিওরীতে চলে না। তালিবানদের ম্যালিগন্যান্ট সোশ্যাল অর্ডারের বিরুদ্ধে আফগানদের মধ্যে নিজের থেকে উদ্ভূত লড়াই - একশোভাগ সমর্থন। কিন্তু বাইরের থেকে চাপানো একটি আপাদমস্তক দুর্নীতিপ্রবণ পাপেট সরকারকে যদি সেদেশের লোকে মেনে না নেয়, তাহলে তাদের চয়েসটাকে সন্মান না দিয়ে উপায় নেই। আলীর বক্তব্য এইটুকুই। একটা বহিঃশক্তির উপস্থিতি/অনুপস্থিতি কোন দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে পালটে দেয়, একেবারে উলটেও দিতে পারে। বাংলাদেশ/পাকিস্তান নিজেই তার উদাহরণ। ৪৭ এর আগে অবধি মূলত হিন্দু ডমিন্যান্সের বিরুদ্ধে এবং অংশত ইংরেজ রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে বাঙ্গালী-পাঞ্জাবী-ইউনাইটেড প্রভিন্সবাসীর লড়াই। ৪৭ এর পরের অঙ্ক আলাদা।

"কোন গোষ্ঠির ম্যাসিভ সাপোর্ট থাকলে সেই দলকে সরকারে রাখতে হবে এটা একটা চমকপ্রদ থিওরী।" আপনি সিরিয়াসলি লিখেছেন এটা? আর ম্যাসিভ সাপোর্ট আছে কি না সেটা আফগানিস্তানের হাল দেখেও আন্দাজ করতে পারছেন না? বিবিসির সার্ভে? রিয়েলী? ব্রিটেন কোন দলে সেটা জানা আছে তো? ইরাকের গণবিদ্ধংসী অস্ত্র সম্পর্কে রিপোর্টগুলোও বিশ্বাস করেছিলেন তো?

- দেবোত্তম

হিমু এর ছবি

"কোন গোষ্ঠির ম্যাসিভ সাপোর্ট থাকলে সেই দলকে সরকারে রাখতে হবে এটা একটা চমকপ্রদ থিওরী।" আপনি সিরিয়াসলি লিখেছেন এটা?

ম্যাসিভ সাপোর্ট নিয়ে সরকারের বাইরে বিরোধী দল বলেও একটা বা একাধিক দল থাকে। আপনি কি এই ধারণাটার সঙ্গে পরিচিত?

অতিথি লেখক এর ছবি

শাসক-বিরোধী দলের প্রসঙ্গ, গণতান্ত্রিক সরকারে আসে। কোন সরকারের কথা চলছে আফগানিস্তানে? অঙ্কটা বুঝতে পারছেন না এখনও?

আফগানিস্তান এই মূহুর্তে যেটা চলছে সেটা একটা পাওয়ার শেয়ারিং নেগোশিয়েসন। এইটুকুই। গণতন্ত্রের পতাকা ওড়ানোর প্ল্যান নিয়ে কেউ বসে নেই। গত দশ বছরে আমেরিকার হাতে থেকে আফগানরা প্রবল গণতান্ত্রিক হয়ে উঠেছে এরকম ভাবার কোন ব্যাপার নেই। তিরিশ বছর যুদ্ধ চলার পর ওটি রাতারাতি আসার কথাও নয়। নেপাল ২০০৬ থেকে শুরু করে এখনও মেজরিটি ভিত্তিক পার্লামেন্ট গঠন করতে পারেনি। মিসরের অবস্থাতো দেখছেনই। মুক্ত গণতন্ত্রের আশা এই মূহুর্তে আফগানিস্তানে অতি ক্ষীণ। এবং সেটা ইন্টারেস্টেড পার্টিরা জানেও। গণতন্ত্র বলতে আমরা যেটা বুঝি, নিয়মিত নির্বাচন, বাক স্বাধীনতা, সেটা আফগানিস্থানে এই মূহুর্তে কেউ আশা করছে না।

বেসিক্যালি একটা নেগোশিয়েটেড সেটলমেন্টের চেষ্টা হচ্ছে যাতে অন্তত দেশটা ঠান্ডা থাকে, কয়েক বছরের জন্য হলেও। আর এটা চলছে ২০১০-১১ থেকে। এবং তালিবান তাতে অলরেডি ইনক্লুডেড। কাতারে এদের অফিসও খুলতে দেওয়া হয়েছে। আমেরিকা, ভারত, ইরান, রাশিয়া এবং ফর দ্যাট ম্যাটার তারিক আলীও চান না ২০১৪ এ ন্যাটো বেড়িয়ে যাওয়ার পর দেশটা আবার তালিবানের দখলে যাক। ওনার একাধিক ভিডিও আছে ইউটিউবে এই ব্যাপার নিয়ে। এমনকি উনি চীন, রাশিয়া, ইরান ও পাকিস্তানকে নিয়ে একটি সন্মিলিত অবসার্ভার গ্রুপ তৈরী করার কথাও বলেছেন টু কিপ দা সিচুয়েশন ইন কন্ট্রোল। উনি প্রবল তালিবান ভক্ত হলে মুখে কুলুপ এঁটে থাকতেন। ২০১৪ এ ন্যাটো বেরোক, তারপর তালিবান আবার দেশটা দখল করবে এই আশা পাকিস্তানী এশট্যাবলিশমেন্টের অনেকেরই আছে। কিন্তু আবারও, উনি সাধারণ পাকিস্তানী নন।

এখন এই নেগোশিয়েসনের ফল কি দাঁড়ায় সেটা প্রশ্ন। তালিবানদের দাবী (টু বি নোটেড) ২০১৪ এর পর আমেরিকার কোন সেনা ওদেশে থাকবে না। আমেরিকা (এবং ভারতও) চায় একটা কনটিনজেন্ট থাকুক। এইসব নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া চলছে।

মোদ্দা কথা, চয়েসটা এখানে গণতন্ত্র বনাম তালিবানী স্বৈরাচার নয়। পুরো ক্ষমতাটাই তালিবানে দখলে যাওয়া বনাম অংশত যাওয়া নিয়ে। আলীর বক্তব্য যে তালিবানদের যা ক্ষমতা, বিশেষত পাকিস্তান যখন এদের পক্ষে, তখন এদের কোওপ্ট না করলে পুরোটাই জলে যাবে। এইটুকুই।

হিমু এর ছবি

তালিবান এই "আংশিক ক্ষমতা" কীভাবে এক্সারসাইজ করবে, সে ব্যাপারে আলি সাহেবের ধারণাটা কী?

আজাদ এর ছবি

'সর্বদলীয়' অথবা 'জাতীয় সরকার' হতে পারে এর ব্যতিক্রম। আলির লেখায় ইঙ্গিতটা সেদিকেই।

হাসিব এর ছবি

"জনমানসে সব পাকিস্তানি আসলে খারাপ না এরকম একটা ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য হয়।" - সেরেছে! সব পাকিস্তানীই খারাপ, এরকম মত আপনার?

শোনেন দেবোত্তম সাহেব,
মানুষ যেইভাবে ভাবে সেইটার একটা বড় অংশ মিডিয়া কনস্ট্রাক্ট করে। যেমন ধরেন, ইরাক আক্রমন করে সব ভাগবাটোয়ারার পর কাগুরা সব ইরান নিয়ে পড়লো। আমরা জার্মানিতে টিভিতে ইরানে কতো খারাপ অবস্থা সেইটা নিয়ে খবরে স্পেশাল রিপোর্ট দেখি, এক ডাচ না ফ্রেঞ্চ কি এক ডকু বানাইলো সেইটা সব টিভি চ্যানেলে হুমায়ূনের নাটকের মতো বারবার দেখালো। কথা হৈলো এগুলো এরা কেন করছে? ইরান আক্রমন করতে জনগণরে উদ্ধুদ্ধ করার জন্য? মোটেও তা না। ইরান আক্রমন হলেও সেটা ঠিকাছে - এরকম একটা মত প্রতিষ্ঠা করার জন্য। এসব ছাইপাশ টিভিতে দেখতে দেখতে একসময় হয়তো ইরান আক্রমন হলেও দেখা যাবে পাবলিক গোস্বা করতেছে ঠিকই, কিন্তু বেশি জোর গলায় সেইটা বলতেছেও না।

মিডিয়া প্রতিনিয়ত এইসব সোশ্যাল কনস্ট্রাকশন তৈরি করে।

বাংলাদেশে এক প্রজাতি আছে। এদের কাজ হলো সবকিছু ভুলে সামনে আউগায় যাওনের জন্য সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা। প্রথম আলো এদের হয়ে কাজ করে। পাকিস্তানের অপকর্ম ভুলতে এইজন্য এরা পাকিস্তানের হাগামুতাছাইপাশ যা তা এখানে এনে পরিবেশন করে। পুনর্মিত্রতার এই মিশনটা। ইরানের একটা ক্ষুদ্র অংশ দেখিয়ে ইউরোপিয়ানরা যেমন ইরান সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি করে জনমানসে। পাকিস্তান বিষয়ে সেরকম একটা ধারণা (পজিটিভ অর্থে) তৈরি করতেও এইসকল তারেক আলি, হামিদ মিরের লাবড়া প্রথম আলো পরিবেশন করে। অন্য পত্রিকা প্রথম আলোর মতো কনসিস্টেন্টলি এই কাজ করে না।

ঘন্টাদুয়েকের ব্যাপার। তারপর যা যা নিজে লিখেছেন আরেকবার পড়ুন।

বুঝি নাই কী বলতে চাইলেন। কাদের সিদ্দিকী ৭১এ কী করেছে এজন্য এখন তারে কিছু বলা যাবে এইরকম কিছু বললেন?

এবার আসি তালিবানের কথায়। তালিবানের জন্ম ৯০এর দশকের প্রথম দিকে। আফগান যুদ্ধের ফলশ্রুতিতে। এই যুদ্ধকে ধর্মযুদ্ধ নাম দিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আফগানদের কাজে লাগানো হয়। কোন দেশ লাগিয়েছিল? জেনারেল নলেজের সোজা প্রশ্ন। তালিবানরা এই মুজাহিদদেরই উত্তরসূরি।

কী বোঝা যায় এই প্রশ্নটার উত্তর করলে? মার্কিনিরাও খারাপ বুঝলাম। তাতে তারেক আলির কোন সুবিধা হয় কোন পক্ষ বাছতে?

আলীর বক্তব্য এইটুকুই।

আপনার তফসির আর আমার তফসির মেলে না। তারিক আলী জনসমর্থনের দোহাই দিয়ে তালেবানদের কোলে তুলতে বলছেন। এইটাই বুঝ আমার। ভুল থাকলে বলেন। শুদ্ধ করে নেই নিজেরে।

দ্বিতীয়ত, তারিক আলি জ্ঞানী লোক। বিবিসি জরিপ সম্পর্কে আপনি যেইটা বলছেন সেইটা সঠিক হতে পারে (আর প্লিজ দয়া করে কথা গুজে দিয়েন না আমার মুখে)। বিবিসি সম্পর্কে বুঝবার লোক আপনি কেন প্রথম আলোর মিশন সম্পর্কে বুঝদার হতে পারছেন না সেই আগ্রহটা জানালাম। বিবিসি জরিপ যদি ভুল হয় তাহলে তারিক আলিরও দায়িত্ব আছে আফগানে যে তালেবানেরা জনপ্রিয় সেইটা প্রমান করার। সেইটাতে কদ্দুর কে কী করলো? তিনি না পারলে প্রথম আলো এইবিষয়ে জরীপ চালাতে পারে। আর তারিক আলি সঠিক হলেও সবকিছু যদি জনপ্রিয়তার ওপর চাপায় দিয়ে পার পাওয়ানোর চেষ্টা করা যায় তাহলে বলা যায় মার্কিনিরাও আফগানিস্তানের হামলা করে ঠিক করেছে। কারণ তাদের দেশে এই বিষয়ে ব্যাপক জনসমর্থন ছিলো ও আছে এখনও।

এই ক্যাচাল বাদ দিয়ে একটা নর্ম্যাটিভ আলাপ পাড়ি চলেন। ধরা যাক বাংলাদেশে জামাত/শিবির কোন কারণে জনপ্রিয় হয়ে গেল। তারপর তারা সব মেয়েদের ঘরে ঢোকালো। দেশে শরিয়া আইন চালু করলো। বিধর্মীদের দেশ ছাড়া করলো। আপনি তাহলে জনসমর্থন আছে বলে তাদের সরকারে টিকে থাকা সমর্থন করবেন?

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর আমি হিমুর পোষ্টের উত্তরে অন্যভাবে দিয়েছি। মূল বক্তব্যটায় আসি।

প্রথম প্রশ্নটা হল - কাল যদি জামাত বাংলাদেশে ক্ষমতা দখল করে, যেভাবেই হোক, এবং ইসলামের নিজেদের ভার্সনটা চাপাতে শুরু করে তখন আমরা কি করব?

দ্বিতীয়টা হল - তারীক আলি কোন সাইডে থাকবেন?

ওনার লেখার সঙ্গে আমি খুব ভাল ভাবে পরিচিত। নিউ লেফট রিভিউ এ ওনার একাধিক লেখা আছে পলিটিক্স ও হিস্ট্রির ওপরে। শুধু ৭১এর ওই একটা লেখা নয়। গত পঞ্চাশ বছর ধরে উনি একই সাইডে। আমি আপনাকে নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি উনি জামাতের বিপক্ষে থাকবেন।

এবার সিচুয়েশন দুই। কাল আমেরিকা বাংলাদেশ দখল করল। এবং দেখা গেল শুধু জামাতই তাদের বিরুদ্ধে লড়ছে। সেক্ষেত্রে কিন্তু উনি জামাতের পক্ষে থাকবেন। বাইরের শ্ত্রু আগে, তারপর ঘরের। আফগানদের পরিস্থিতি এটাই।

মিডিয়ার প্রোপাগ্যান্ডা নিয়ে দ্বিমত কিছু নেই। প্রথম আলোকে ছাড় দেওয়ারও দরকার নেই। কিন্তু 'পাকিস্তান দোষ' নামক পদার্থটি ভারত-বাংলাদেশের শিক্ষিতমহলে বিলক্ষণ আছে। ব্যাটা পাকিস্তানী, আর শুনব না, এই জিনিসটি পরিহার্য। কে কি বলছে সেইটার বিচার হোক কন্টেন্টের ওপর।

শেষ কথা। উনি বামপন্থী। স্বাভাবিক ভাবেই বর্তমান বিশ্বে তথা বাংলাদেশের যে অর্থনৈতিক প্যারাডাইম কায়েম রয়েছে সেটাতে উনি খুশি নন। এটা ওনাকে আমি যে কটা লেকচার শুনেছি সবকটাতেই আইডেন্টিক্যাল কথাই বলতে দেখেছি। জায়গা বুঝে লোকের পিঠ থাবড়াতে হলে উনি গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রির শুধু প্রশংসাই করতেন। রিগার্ডিং ভাসানী বনাম মুজিব, আপনাকে এটা বুঝতে গেলে ৭১ এর আগের রাজনীতির দিকে দেখতে হবে। ভাসানী ঘোর বাম। মুজিব দক্ষিণপন্থী। উদার অর্থনীতিতে বিশ্বাসী, আমেরিকার সাথে ভাল সম্পর্ক। কাজেই সেই সময় ১৯৬০ এর দশকে ওনার সেন্টিমেন্ট ছিল ভাসানী সহ অন্যান্য বামপন্থী ফ্যাকশনগুলোর দিকে। মুজিবের আওয়ামী লিগের দিকে নয়। তখনও পাকিস্তানের ভেতরের চিরটা বাইরে আসেনি। ঘটনাচক্রে ভাসানী সহ চীনপন্থীরা একটা বড় ভুল করলেন এবং খেসারত গুনলেন। ৭১এ সব কটা এল্যায়েন্স উলটো পালটা হল। "স্বাধীনতাসংগ্রাম যদি মুজিব ও ভাসানীর যৌথ নেতৃত্বে পরিচালিত হতো, তাহলে হয়তো ইতিহাস অন্য রকম হতো" এই মন্তব্যটা আসলে একটা আক্ষেপ।

- দেবোত্তম

হাসিব এর ছবি

আপনি সিচুয়েশন ব্যাখ্যা করতে বাইনারিতে ঘুরপাক খাচ্ছেন। বাংলাদেশকে হিন্দি উর্দু মার্কিন তালেবান সব হুমকি একসাথে মোকাবেলা করতে হয়। এর মধ্যে কোনটা আগে কোনটা পরে না। আগপিছের আইডিয়া মানলে বহু রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে হবে এই কারণে যে ওগুলো হয়তো গুরুত্বপূর্ণ হলেও সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ না।

দ্বিতীয়ত, লেখার কন্টেন্ট বিচার করতে হবে এইটা তো প্রায় সেঞ্চুরি ওল্ড আইডিয়া। পুরনো বলে কিছু নেয়া যাবে না এমন না। তবে শুধু কন্টেন্ট না বিচার করে সেই লেখার উৎস, ইতিহাস, পারিপার্শ্বিকতা সবকিছু মাথায় নিয়ে বিশ্লেষণ করার রীতি বহুদিন ধরেই বামপন্থী তাত্ত্বিকদের কাছে স্বীকৃত। আমরা নারী অভিজ্ঞতা জানতে নারীদের স্মরণ করি, কলোনিয়াল কথা তুলে আনতে যারা কলোনিতে ছিলো তাদের কথা পড়ার চেষ্টা করি। পরবর্তীতে তারিক আলির সাথে দেখা হলে এইটা আলাপ করে নিতে পারেন তার সাথে। আর নিজে পড়াশোনা করতে চাইলে ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল ক্রিটিকাল থিওরি দাঁড় করানোর সময় পজিটিভিস্টদের সাথে তাদের কোথায় কোথায় পার্থক্য চিহ্নিত করেছিলো এবং সেই পার্থক্যেই ঐতিহ্য কোন কোন পন্ডিতেরা এখনো মেনে কাজকর্ম করেন সেটা দেখে নিতে পারেন।

আজাদ এর ছবি

দেবোত্তম, তারিক আলির দুটি লেখা থেকে আমি উদ্ধৃতি দিয়েছিলাম। প্রথমটা ১৯৭০ সালের সেপ্টেম্বরে লেখা। নিউ লেফট রিভিউয়ে। “অর্থনৈতিক শোষণ, সামরিক জান্তার শাসন, আমেরিকার তাঁবেদারী, ভাসানী সহ বামপন্থীদের একটা বড় অংশের পাকিস্তানকে সমর্থন এবং পাঞ্জাবী শাসকগোষ্ঠীর বাঙ্গালীদের প্রতি জাতিবিদ্বেষ” আপনি যে অংশে পেয়েছেন সেটা ১৯৭০ সালেই লেখা, ১৯৭১ সালে নয়।
"Will Pakistan survive" নামে আদতে তারিক আলি কোনো বই লেখেননি, লিখেছেন Can Pakistan Survive।
আফগান সরকারে তালিবানের অংশীদারি থাকা প্রসঙ্গে তারিক আলির বক্তব্যকে হাসিব সরল করে নিয়ে পাঠ করেছেন বলে মনে হয়। তারিক আলি বলছেন, ন্যাটো বিদায় নেবার পর ‘গৃহযুদ্ধোত্তর’ পরিস্থিতিতে ‘জাতীয় মতৈক্যে’র সরকারে তালিবানের প্রতিনিধিত্ব থাকা জরুরি। শুধু এ কারণে তারিক আলিকে ‘তালিবান অ্যাপলোজিস্ট’ বলা ঠিক নয়। একটা উদাহরণ দিচ্ছি। শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে খাটো করতে তারিক আলির লেখা থেকে শেখ মুজিবের একটা কথা প্রায়ই উদ্ধৃত করেন তথাকথিত চীনাপন্থীরা। সংবাদসংস্থা এএফপির সাথে সাক্ষাৎকারে শেখ মুজিব বলেছিলেন, ‘Is the West Pakistan government not aware that I am the only one able to save East Pakistan from communism? If they take the decision to fight I shall be pushed out of power and the Naxalites will intervene in my name. If I make too many concessions, I shall lose my authority. I am in a very difficult situation.’ [Le Monde, March 31st, 1971] এই উদ্ধৃতির জন্য শেখ মুজিবকে নকশাল অ্যাপলজিস্ট বলবেন হাসিব? আমার মনে হয় শেখ মুজিবের এই মনখোলা উক্তিকে তার দৃঢ় আত্মবিশ্বাসের অভিব্যক্তি হিসেবে পাঠ করা যায়। তার অনুপস্থিতিতে নকশালরা তার নামেই লড়াইয়ে নামবে এ কথা বলার মতো কোনো কমিউনিস্ট নেতা আজ পর্যন্ত জন্মেছেন পূর্ব বাংলায়। শেখ মুজিবের এই উক্তিকে কমিউনিস্টবিরোধী হিসেবে পাঠ করবেন, নাকি সত্যিকারের জাতীয় নেতার বক্তব্য [যিনি তার সবচেয়ে বিরোধী মতকেও আপন দাবি করতে পারেন] হিসেবে পাঠ করবেন, এটা আপনার উপর ছেড়ে দিলাম। দেবোত্তর, ‘কিন্তু বাইরের থেকে চাপানো একটি আপাদমস্তক দুর্নীতিপ্রবণ পাপেট সরকারকে যদি সেদেশের লোকে মেনে না নেয়, তাহলে তাদের চয়েসটাকে সন্মান না দিয়ে উপায় নেই। আলীর বক্তব্য এইটুকুই’—আলি এটা মনে করতে পারেন, কিন্তু প্রাসঙ্গিক উদ্ধৃতিতে এটা বলেননি। এটা পুরাপুরি আপনার কল্পনা।
দেবোত্তর, আপনি বলেছেন, ‘তালিবানরা এই মুজাহিদদেরই উত্তরসূরি’। কি অর্থে? কোন মুজাহেদিনদের উত্তরসূরি? তালিবানের উত্থান নিয়ে প্রথম বিশ্বস্ত বয়ান হাজিরকারী হিসেবে পরিচিত আহমদ রশিদ [পাকিস্তানি সাংবাদিক, এক সময় বেলুচিস্তানে সশস্ত্র সংগ্রাম করেছেন পাকিস্তানী শাসকদের বিরুদ্ধে, তারিক আলির এককালের পছন্দ আর এখন তার মতে ‘ন্যাটোর খাস লোক’]। তার বয়ান অনুসারে, তালিবানের জন্ম পাকিস্তানি বাহিনীর কোলে, আফগান মুজাহেদিনদের নয়। ১৯৮৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেগে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব আর পাকিস্তানের কেউ চায়নি মুজাহেদিনদের নানা গোষ্ঠিকে জায়গা করে দিয়ে এক ধরণের মতৈক্যের সরকার হোক। তারা চেয়েছে তাদের অনুগত সরকার আফগানিস্তানে চাপিয়ে দিতে। তাদের পছন্দ ছিল গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার। অন্য মুজাহেদিনরা এটা মানেনি। গৃহযুদ্ধ বাধে। হাজারারা ইরানের, আহমদ শাহ মাসুদ ফ্রান্সের, আর জেনারেল দস্তাম রাশিয়ার পৃষ্ঠপোষকতা পায়। কিছুদিন পর যখন বোঝা গেল হেকমতিয়ারের বাহিনী এদেরকে পরাজিত করতে পারবে না তখন পাকিস্তান তালিবানের প্রতি পৃষ্ঠপোষকতা দিতে থাকে। এই তালিবান মূলত ১৯৮০ এর দশকে পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্ত প্রদেশে সৌদি-মার্কিন অর্থায়নে গড়ে ওঠা মাদ্রাসার এতিম ছাত্র। এদের সিংহভাগের বাবা সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে জিহাদে শহীদ হওয়া। সোভিয়েতের বিদায়ের পর পাকিস্তান একদিকে এদেরকে নিজের জন্য আপদ হিসেবে দেখছিল, অন্যদিকে হেকমতিয়ারে ভরসা কমে যাওয়ায় আফগানিস্তানকে অস্থিতিশীল রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভাবছিল। এদেরকে পাকিস্তান ব্যবহার করেছে অ্যানিমেল ফার্ম-এর সেই নয়টি কুকুরের মতো। নেপোলিয়ান সেই কুকুরদেরকে ‘শিক্ষা’ দেবে নিজের হেফাজতে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে এদের বাবা-মার কাছ থেকে নিয়ে এসেছিল আর পরে খামারের সব প্রাণী থেকে একেবারে আলাদা করে রেখে তাদের গড়ে তোলে নিজের ব্যক্তিগত বাহিনী হিসেবে।
দেবোত্তর, আফগানিস্তানে যা ঘটছে ‘তার স্পিলওভার ঘটছে পাকিস্তানে’ বলে কিসের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন বোঝা গেল না। পাকিস্তানী তালিবান ও আফগান তালিবানের মধ্যে অধিনস্থতা কিংবা লেনদেনের কথা বলছেন?
দেবোত্তর আফগান [বহু]জাতি পরাধীনতাপ্রবণ নয় বলে মহান অথবা খাটো করতে গিয়ে ‘আমরা’ দুশ বছরের পরাধীনতা গর্বের সাথে মেনে নিয়েছিলাম বলে নিজেদের খাটো অথবা মহান করার জাত্যাভিমান না দেখালেই কি চলে না?

অতিথি লেখক এর ছবি

আফগানিস্তানের ইতিহাস সম্পর্কে ওয়াকিবহাল লোকজনদের যেরকম ধারণা হওয়া উচিত সেরকমই মনে হয়। ঘুরিয়ে বললে আমেরিকার কোন ফরেন পলিসি ডিপার্টমেন্টের থিঙ্কট্যাঙ্কেরও এব্যাপারে ধারণা আছে বলেই আশা করি। আফটার অল দে আর নেগোশিয়েটিং উইথ দেম।

এবার ভবিষ্যতে কি হবে বলা অসম্ভব। ডিল একটা কিছু হবে/হবে না। একটু ফিরে দেখলে আন্দাজ পাওয়া যেতে পারে। ২০১৪ সালের পরিস্থিতি, ১৯৮৮ এর সাথে প্রায় এক। ১৯৮৮ তে রাশিয়া বেড়িয়ে গেছিল। একটা তাঁবেদার কমিউনিষ্ট সরকারকে (এগেন, গণতান্ত্রিক নয়) ক্ষমতায় রেখে। এবং যাওয়ার সময় তাদেরকে বিপুল অস্ত্রসম্ভারে সজ্জিত করে ছেড়ে গেছিল। আমেরিকার সাথে ডিল হয়েছিল, যে রাশিয়া বেরোনোর পর, আমেরিকাও জঙ্গিগোষ্ঠীদের সাহায্য করা বন্ধ করবে এই সরকারের বিরুদ্ধে। গোদাবাংলায় দুই মহাশক্তিই আফগানিস্তান থেকে হাত গুটোবে। আমেরিকা প্লেড বল। পাকিস্তান ডিডন্ট।

যে সরকারকে রাশিয়া ছেড়ে গেল, তাদের বিরুদ্ধে আফগান জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিকে প্রক্সি হিসেবে ব্যবহার করে পাকিস্তান আঘাত চালিয়ে গেল। ৯২ এ তালিবান গোষ্ঠীটির জন্ম। পুরোপুরিই পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে। এরা ৯৬ এ ক্ষমতা দখল করল। ৮৮ থে ৯৬, ৮-৯ বছর টিকেছিল ওই সরকার।

২০১৪ তেও এই। আমেরিকা বেরোচ্ছে। একটা আফগান 'ন্যাশনাল' আর্মি তৈরী করেছে। আর্মড টু টিথ। লো অন মোরেল। ডিল হবে কি না নিশ্চিত নয়। ২০১৪ এল বলে। আমেরিকা কাটবার ধান্দায় আছে। 'ডেমোক্রেসী প্রোমোশনের' বুকনিগুলোকে সিরিয়াসলি নেবেন না। বেরোবে এবং ভুলে যাবে। পাকিস্তানের পজিশন আইডেন্টিকাল টু লাস্ট টাইম। যদি ডিল না হয় তা হলে একদম ৮৮ এর মতনই হবে পরিস্থিতি। গতবার ৮ বছর টিকেছিল। এবার ধরুন ৫।

যদি ডিল হয়? উই ডোন্ট নো। নির্ভর করছে পাকিস্তানের ওপর এবং সর্বোপরি আফগান সমাজের ওপর। তালিবান ও পাকিস্তান কদিন ডিলের ক্লজগুলোকে মানবে বলা অসম্ভব। যেটা নিশ্চিত সেটা হল আমেরিকা চিরকাল এখানে বসে পাহারা দেবেনা। এবার দেখুন কি হয় আগে।

অফটপিক। একটা আইডি বানিয়েছিলাম ২০১২ এ। দেবোত্তম(debottam) নামে। ব্যবহার না হয়ে ইন্যাক্টিভ হয়ে গেছে। কিছু করা যায়?

- দেবোত্তম

হিমু এর ছবি

পাসওয়ার্ড রিসেট করার ব্যবস্থা আছে তো। লগ ইন প্যানেলের ঠিক নিচেই।

ডিল হলে এই মডেলটা পরীক্ষায় উতরে গিয়ে এসে চাপবে বাংলাদেশের ওপর। তারিক আলির মতো লোকজন তখন বাংলাদেশের উগ্রবাদীদের ক্ষমতার তাঁবুর নিচে অর্ধেক শরীর ঢোকাতে দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে বলবে, আরে মোল্লাদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে দেখেনই না কী হয়, শান্তি হোলেও তো হোতে পারে।

অতিথি লেখক এর ছবি

তাই কি? ৭১ এ উনি কি প্রস্তাব দিয়েছিলেন? আল বদরের সামনে মাথা নোয়াতে? লিঙ্কটা পড়েই দেখুন না। শুধু ওনার ব্যক্তিগত চরিত্র কাটাছেঁড়ার ব্যাপার না, যথেষ্ঠ দামী ঐতিহাসিক ডকুমেন্ট।

হিসেবটা বার বার গোলাচ্ছে আমাদের। আবার বলি, এবং এটা আমার লেখা নয়, ওনারই কথা, "একটা অপ্রেসিভ সোশ্যাল অর্ডারের বিরুদ্ধে দেশের জনতার ভেতর থেকে উঠে আসা স্বতঃস্ফুর্ত আন্দোলন, ইয়েস। বোমা মেরে একটা দেশ দখল করে সেখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ভনিতা, নো"।

ভনিতা শব্দটা না বোঝার কোন কারণ নেই। গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতার প্রচন্ড অভাব এই মূহুর্তে একটি দেশে। সৌদি আরব। ওই রাজপরিবারটির সবচেয়ে বড় স্পনসর কে? আপনি কি সিরিয়াসলি আশা করছেন আমেরিকার আফগানিস্তানের জন্য উদ্বিগ্ন। আফগানদের ছাড়ুন, ৭১এ আমেরিকার কি রোল ছিল খেয়াল আছে?

আর সমাজের উন্নতি জিনিসটি চামচে করে খাওয়ানো যায় না। অনেকেই প্রিটেন্ড করে। ব্রিটিশরাও ভারতে সভ্যতার বিস্তার ঘটাচ্ছিল বলেই অনেক আবেগে মাখোমাখো দাবী করত। সেজন্যেই ছাড়তে চাইত না। ইয়ার্কি না, এসব গাদা লেখা হয়েছে এককালে, ব্ল্যাক অন হোয়াইট। আল্টিমেটলি ওটা নিজেদের রক্তেই করতে হয়। শাহবাগ এফ১৬এ করে আমদানী হয় না। তালিবানের বিরুদ্ধে, ধর্মীয় গোঁড়ামীর বিরুদ্ধে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, আমেরিকা, ভারতকে নিজের লড়াই নিজেই লড়তে হবে। আর সেখানে তারীক আলীকে একটি সাইডেই দেখতে পাবেন।

- দেবোত্তম

দেখছি রিসেট করা যায় কি না।

হিমু এর ছবি

একাত্তর সালে উনি হাতিঘোড়া মেরেছেন, এখন কী বলছেন দেখুন না। আপনি তালিবানেই আটকে গেছেন, এই পোস্টে ওনার অন্যান্য কথাগুলো নিয়ে আলোচনা মিস করেছেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

যাব্বাবা। হাতিঘোড়া ৭১ এ মারবেন না তো আর কবে মারবেন? ৭২ এ? ৭৩ এ? হাতিঘোড়া মারার বছর তো ওটাই ছিল। নাকি না?

যা বলেছিলেন তার উলটোটা বললে কি করতেন? বাঙ্গালীদের মেরে কচুকাটা কর এই জাতীয় কিছু বললে ছেঁচকি হতেন অ্যান্ড রাইটলি সো। সময় থাকতে যখন ঠিক কথাটা বলেছিলেন সেটাকে স্বীকার করতে এত আপত্তি কেন?

এখন কি বলছেন? নাথিং নিউ। ওনার পজিশন বরাবরই এই। তালিবান নিয়ে প্রশ্ন করেছেন তাই তালিবান নিয়ে উত্তর পেয়েছেন। অন্যান্য আলোচনাগুলো আমি দেখেছি। রাগ ওতরানোর পোষ্ট। একটা লোক কি বলল, লিখল কিছু খোঁজ না নিয়েই আউট অব কনটেক্সট কান নিয়ে গেছে চিলে টাইপের ব্যাপার হয়েছে।

- দেবোত্তম

হিমু এর ছবি

আমি তো বলি নাই উনি একাত্তরে ভুল বলেছেন। আমি বলছি উনি একাত্তরে ঠিক বলেছেন, ঐটা ধুয়ে দুই হাজার তেরো সালে পানি খেতে পারবেন না। ধর্ম আর সেক্যুলারিজম সম্পর্কে উনি মুখস্থ উগড়ে দিচ্ছেন বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে বালটাও না জেনে। সমস্যাটা সে জায়গায়। ওনার পজিশন যদি বরাবর এ-ই থাকে, তাহলেও আমার সমস্যা নাই। বরাবরই তাহলে ওনাকে সিটিএন।

আপনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানেন না দেখে আপনার কাছে চিলে কান নেওয়ার মতো মনে হচ্ছে। সে কনটেক্সট আপনি মিস করে গেলে কথা বলা বৃথা।

হাসিব এর ছবি

উপরে আপনাকে কাদের সিদ্দিকীর উদাহরণটা এই কারণে দিয়েছিলাম যে কারো অতীতে হাতিঘোড়াবাঘভাল্লুক হত্যার রেকর্ড থাকলেও সেই রেকর্ড অন্তত আদর্শিকভাবে মেনে চলার প্রয়োজনীয়তাটা পরিবর্তিকালে থাকে। এই একই জিনিস তারিক আলীর ক্ষেত্রেও খাটে।

অতিথি লেখক এর ছবি

সেকি? আওয়ামী লিগ খাচ্ছে তো। আরো অনেকেই আছে। ২০০৮ এ বলা কথা হলে চলবে? বা ২০১২? নাকি সব বিচারই তাৎক্ষণিক? নো কস্যাল লিঙ্ক উইথ পাষ্ট?

বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের সমাজ এক নাকি? কোন জায়গাটা মনে হচ্ছে মুখস্থ উগড়ানো? সম্ভব হলে গুছিয়ে লিখুন সময় পেলে। তারপর আবার কথা হবে।

- দেবোত্তম

হিমু এর ছবি

আওয়ামী লীগ খেতে পারছে আর কই?

আরো অনেকে থাকলে, আরো অনেকে থাকুক, তাতে করে তারেক আলির খাওয়া জায়েজ হয় না। ২০০৮ সালে বা ২০১২ সালে বলা কথার সমালোচনা এখানে হচ্ছে না, হচ্ছে ২০১৩ সালে হে ফেস্টিভ্যালে দেওয়া সাক্ষাৎকারের। নাকি সেটারও সমালোচনা করা যাবে না, যেহেতু সে ২০০৮ বা ২০১২ সালেও হাতিঘোড়া (অ্যালেজডলি) মেরেছিলো?

বাংলাদেশ আর আফগানিস্তানের সমাজ এক হবে কেন? আপনি বাংলাদেশের ব্যাপারটা বোঝেন না, আপনার কথা তাই বারবার ঘুরে ফিরে আফগানিস্তান আর তালিবানকে বাংলাদেশের জুতোয় গুঁজে দিয়ে তারেক আলিকে হালাল করার দিকে চলে যাচ্ছে। ব্যাপারটা ক্লান্তিকর।

অতিথি লেখক এর ছবি

সেটা খুলে না লিখলে কি করে বোঝা যাবে? এই থ্রেডে আপনার পয়েন্টটাতো ক্লিয়ার হচ্ছে না।

ওনার ইন্টারভিউ থেকে তুলে দিই -

১। "গণ-আন্দোলন হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু রাজনীতিটা স্পষ্ট হচ্ছে না। রাজনীতি ছাড়া বড় পরিবর্তন হয় না। রাজনীতিহীনতাই আরব জাগরণের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। ব্রাদারহুডের রাজনীতি ছিল, তাই তারা সামনে এসেছে।"

মিসরের আন্দোলন শুরু করেছিল উদারপন্থীরা। মূল ভূমিকাও ছিল এদের। লাভের গুড় খেয়ে গেল ব্রাদারহুড। ফর্ম্যাল পলিটিক্স ছাড়া কোন আন্দোলনই কনসলিডেট করা যাবে না। এই গেল এক।

২. আপনি সেকুলার। ভাল। পার্টি বানিয়েছেন। আরো ভাল। কিন্তু ক্ষমতায় না এলে কিস্যু লাভ নেই। ম্যান্ডেট পাবেন কি করে? শুধু 'আমরা উদারমনা" বললে হবে না। এইখানে দ্বিতীয় পয়েন্ট -"মানুষ যদি ক্ষুধার্ত থাকে, মানুষের যদি নিরাপত্তা না থাকে, তারা যদি মজুরি না পায়; তাহলে ধর্ম বা সেক্যুলারিজমে কিছুই যাবে আসবে না মানুষের।" খুব স্বাভাবিক। শুধু ধর্ম বা সেকুলারিজমের ভিত্তিতে যদি লোকে ভোট দিত তাহলে চিরকালই বিএনপি বা আওয়ামী লিগ ক্ষমতায় থাকত। সেটা হয়নি কারণ এগুলো পরে আসে। আগে পেট।

বাংলাদেশে এই মূহুর্তে যা চলছে তাতে মাথা ঠান্ডা করে কিছু ভাবা কঠিন। এগ্রিড। ধৈর্যচ্যুতি ঘটা স্বাভাবিক।

- দেবোত্তম

amader kotha এর ছবি

ভাইয়া আপনার লিংক ধরে মহামান্য তারিক আলীর ১৯৭১ সালের অসাধারণ লেখাটি পড়লাম। পড়ে এটুকু বুঝলাম যে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর মতই খারাপ ছিল আওয়ামী লীগ আর শেখ মুজিবতো ইয়াহিয়া বা আইয়ুব খানের থেকেও অনেক বেশি বদমাশ লোক ছিলেন। তারিক আলির ইংরেজির হাত দারুণ। তিনি অনেক সোজা সাপটা করে অনেক শক্ত কথা বলতে পারেন। ইশ তারিক আলীর এ লেখাটি আগে পড়লে আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে অনেক ভুল অনেক আগেই ভেঙ্গে যেত। আমার ইংরেজির দৌড় খুব বেশী না। তবুও মনে হল তারিক আলি যে সত্য ইতিহাস তুলে ধরেছেন তার সঙ্গে পাঠকদের কিছুটা পরিচয় করিয়ে দেই যাতে করে আমাদের ভুল ভেঙ্গে যায় এবং আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম ঘোষককে যথাযথ মর্যাদা দিতে কুণ্ঠা বোধ না করি।
১। এতদিন জানতাম আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মুসলিম লিগের প্রগতিশীল অংশের অনেক নেতা-কর্মীদের নিয়ে। তাই প্রথমে এর নাম আওয়ামী মুসলিম লীগ থাকলেও পরে মুসলিম অংশ বাদ যায়।
“The Awami League has been a party of reaction since birth. Its formative years were dominated by parliamentary manoeuvre and intrigue. Its main social roots have always been in the functionaries, teachers, petty traders and shopkeepers who proliferate in East Bengali society.”
যদিও আমার ইংরেজির দৌড় খুব সামান্য কিন্তু মনে হল- তারিক আলি বলছেন এখানে যে আওয়ামী লীগ জন্ম থেকেই প্রতিক্রিয়াশীল দল। এ দলটি চালাকি আর ধান্দাবাজিতে দক্ষ। আর আর এর মুল সমর্থক হল শিক্ষক, পাতি ব্যবসায়ী আর দোকানদার।
২। জানতাম যে শেখ মুজিব খুব ছোটবেলা থেকেই একজন নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিবিদ ছিলেন এবং একজন বলিষ্ঠ নেতা ছিলেন। তারিক আলি সার বললেন, “Sheikh Mujibur Rehman, had won prominence as a party organizer and hatchet man rather than as an astute politician.” মানে শেখ মুজিব মাস্তান গোছের (hatchet man) গোছের লোক ছিলেন। শুধু কি তাই কেউ যদি আমেরিকার বিপক্ষে কিছু বলতো তাহলে আওয়ামী লীগের লোকজন তাদের আক্রমণ করতো ও সভা ভেঙ্গে দিত।
৩। আগে জানতাম যে ছয়দফা বাংলার সব মানুষের প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়। তারিক আলি আমাকে শেখালেন, “The Six Points represented the charter of the aspirant Bengali bourgeoisie”। অর্থাৎ বুর্জোয়াদের দাবি।
৪। শুধু কি তাই। কলকাতায় তাজউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে যে সরকার ছিল তারা চলত আন্তর্জাতিক বুর্জোয়াদের দানের অর্থে। আর আওয়ামী লীগের নেতাগুলো সেই টাকায় বিভিন্ন দেশে আনন্দ ভ্রমণে গিয়ে বোঝাতো পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কত খারাপ। এরকম ফালতু কাজ করত আওয়ামী লীগের লোকজন।
“The bulk of the surviving Awami League leadership, led by Tajuddin Ahmed (Mujibur’s No 2), sits in Calcutta platonically relying on the international bourgeoisie for aid. The ‘Provisional Government’ of Bangla Desh exists by courtesy of the Indian ruling class. Its Ministers, all of them verbose parliamentarians, continue to behave in the same old way. They still preach the politics of pressure: Awami League envoys now tour the world telling their audiences that persuasion of their governments to halt aid to the Yahya regime should be considered as important as the opening of a ‘second front’. It is obvious that this sort of activity, in fact, constitutes the first front for the Awami League.”
এভাবে তারা (আওয়ামী লীগের সরকার) সময় ও সম্পদের অপচয় করে বেড়াত।
৫। আওয়ামী লীগ আসলে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নির্বিচার গণহত্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি ১৯৭১ সালে। আওয়ামী লীগ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল নিজেদের ভুল নীতির কারণে। তাছাড়া পাতি বুর্জোয়াদের দল কি কখনো জাতির স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা করতে পারে?
“The Awami League is already a much diminished force, as a consequence of its disastrous blunders. Its fate, and that of the movement it led, is a terrible indictment of the ideology it espoused. Once again, it confirms the fact that in this epoch the petty bourgeoisie is not capable of carrying through a real struggle for national independence.”
৬। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হবার পর আওয়ামী জনপ্রিয়তা একদম শেষ হয়ে যায় আর দলটির মর্যাদা সুনাম ধুলায় মিশিয়ে যায়- এ কথাটি কি আমরা কেউ আগে জানতাম।
“The Awami League has been deeply discredited and weakened by the onset of the war in Bangla Desh.”
তাই তারিক আলি ১৯৭১ সালের মাঝামাঝি আমাদের জন্য আবার আশার বানী নিয়ে এলেন, “ভাইসব আওয়ামী লীগ ডিস্ক্রেডিটেড হয়েছে তো কি হয়েছে- মাও সেতুং এর অনুসারী বামপন্থিরা জেগে আছে, মারক্সিস্ট বামপন্থীরা জেগে আছে। তারা তোমাদের আসল নেতা। আওয়ামী লীগ প্রায় শেষ হয়ে গেছে।“
৭। তারপর মহামান্য তারিক আলি বামপন্থী বিপ্লবীরা কোন কোন জেলায় কিভাবে যুদ্ধ করছে তার বিবরণ দেন। আর আওয়ামী লীগের গড়া মুক্তিবাহিনী যে কতটা অথর্ব তাও জানাতে ভুলেন নি। বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে হলে মুক্তি বাহিনী দিয়ে হবেনা। এর জন্য বামপন্থী বিপ্লবীদের লাগবে। ওইসব বুর্জোয়াদের দিয়ে কি কিছু হয় নাকি?
The task of the Bengali revolutionary groups is clearly two-fold: first to co-ordinate and unify their struggles on a national scale, and secondly to win the poor peasantry and proletariat firmly to the socialist road to independence. Only correct political practice and leadership can ensure ultimate military victory.
বামপন্থী বিপ্লবী নেতারা এসব জানেন বোঝেন তাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ তাদের হাতে। আওয়ামী লীগের নেতারা জানেন না বোঝেন না তাই আওয়ামী লিগে প্রায় শেষ হয়ে গেছে।
The revolutionary groups engaged in the struggle understand this and Awami league does not—that is why the future should belong to them.

হিমু এর ছবি

বেচারা তারিক আলি, ওনার মন মতো বাম বিপ্লব দুনিয়াতে কোথাও হচ্ছে না। শেষমেশ আফিম ব্যবসায়ী তালিবানের বন্দুকী মস্তানির মধ্যে উনি বাম বিপ্লবের ফোড়নের ঝাঁঝ পেয়েছেন।

ছাগুদের কনডম হওয়া ছাড়া বৃদ্ধ বামদের আর কোনো বিকল্প পরিণতি দেখি না।

মন মাঝি এর ছবি

কিন্তু কনডমেরও যে কনডম হয় এটা জানতাম না!

****************************************

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

দেবোত্তম বাবুর বারংবার আব্দার সত্বেও তারিকীয় প্যাচাল পড়বার জন্য দু ঘন্টা সময় অপচয়ের আগ্রহ অর্জন করতে পারি নাই, আপনি কি ভাবে ধৈর্য ধরে এই মহা বিরক্তিকর কাজটি করতে পারলেন, ভেবে খুব অবাক হচ্ছি।

হাসিব এর ছবি

শেখ মুজিব, আওয়ামী লীগ এরা হোল পিথিমির সবচেয়ে খ্রাপ দুইটা জিনিস।

মন মাঝি এর ছবি

চীনাবাদামের খোসা ফাটানোর ফুটফুটানি আওয়াজের মতই শোনাচ্ছে। চীনাবাদামরা ৭১-এর আগে থেকেই এই একই ধরণের ভাঙা রেকর্ড বাজায়ে চলতেসে। ফাঁটা রেকর্ড বাজানোর বেশি কামের কাম ভাল কিছু করার মুরোদ এদের কোনকালেই ছিল না - কাজির গরুর মতই এনাদের সব সুন্দর গোল গোল তত্ত্বকথার বাস্তবতা ও যথার্থতা কিতাবেই মিলে শুধু - গোয়াল থাকে ঢু-ঢু। তাই এনাদের বা সমগোত্রীয় অশ্বডিম্বপ্রসূ ধ্বজ্বভঙ্গ বুদ্ধিমারানি তারিক আলিদের কথা গায়ে নিতে নাই - বড়জোর তাৎক্ষণিক ও ওয়ান-টাইম কমেডি হিসেবে এনজয় করতে পারেন, অনেকটা কনডমের মত। ব্যবহারের পর ফেলে দিতে হয়।
-----------------------------------------------

পূণঃ তবে আলু ও সমমনাদের সমস্যাটা অতি বিকট ও বিখাউজ ধরণের। এরা কনডম ব্যবহার না, বরং ফেলে দেয়া ব্যবহৃত কনডম বেশি এনজয় করে মনে হয়!

****************************************

অতিথি লেখক এর ছবি

লিখাটা আগে চোখে পড়েনি। চমৎকার বিশ্লেষণ। হামিদ মীর প্রোজেক্ট মাঠে মারা যাওয়ায় তারেক আলীকে ইম্পোর্টের চেষ্টা আর কি !

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।