এই মুহুর্তে পাকিস্তান বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজ চলছে। এর আগে হয়েছে ওয়ানডে সিরিজ ও একটি টি২০ ম্যাচ। টেস্টে ড্র করলেও ওয়ানডে ও টি২০র সবক'টি ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে। সাফল্যের কিছু দিক দেশি ও আন্তর্জাতিক রেকর্ডবইতে কয়েকটি কীর্তি জায়গাও করে নিয়েছে। বাংলাদেশের মিডিয়া, সামাজিক মাধ্যম এই খেলা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। বেশ কয়েকটি ফিচার রিপোর্ট, ম্যাচ প্রিভিউ, পোস্ট-ম্যাচ রিপোর্ট, টুকরো সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে এই খেলাগুলো উপলক্ষ্যে।
উপরের প্যারাগ্রাফটা যেভাবে লেখা হয়েছে তাতে এই ইভেন্টগুলোর খবর না জানলেও যে কেউ আন্দাজ করতে পারবে এখানে বাংলাদেশের পুরুষ ক্রিকেট দলের কথা বলা হচ্ছে। অন্যান্য দেশের প্রধান খেলাগুলোর মতোই বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা বলতে পুরুষ দলের খেলা বোঝায়। ধারণা হিসেবে এই ধরণের বোঝাবুঝির সমস্যা হলো এতে করে খেলা পুরুষদের কাজ এরকমটা প্রতিষ্ঠিত হওয়া। টিভি, সংবাদপত্র এই ধারণা জনগণের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করে এবং প্রতিষ্ঠিত করার পর সেটা যাতে টিকে থাকে সেটার জন্য কাজ করে (Devitt, 2002; Lind & Salo, 2002)।
টিভি, সংবাদপত্র বা অধুনা নতুন মিডিয়া এই হেজেমনিক চর্চার বাইরে নয়। পশ্চিমা বিশ্বে প্রকাশিত খবরের আধেয় বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে সেখানে পুরুষেরা প্রচারে অগ্রাধিকার পায় ও সেখানে পুরুষতান্ত্রিক ধ্যানধারণা প্রচারিত হয়। পশ্চিমা বিশ্বের মতো আমাদের দেশেও ধারণা করা যায় খেলাধুলার খবর প্রচারের ক্ষেত্রে এই একই ধরণের বৈষম্যের প্রচলন রয়েছে। বাংলাদেশের মিডিয়া নিয়ে এই বিষয়ে কোন কাঠামোগত এ্যাকাডেমিক পাঠ আমার চোখে পড়েনি। এই লেখায় আমরা উদাহরণ হিসেবে ক্রিকেট খেলার খবর প্রচারে নারী ও পুরুষের বৈষম্য রয়েছে কিনা সেটা দেখার চেষ্টা করবো।
খেলার খবর প্রচারে বাংলাদেশের মিডিয়া কীভাবে নারী পুরুষের বৈষম্য তৈরি করে সেটা মাপার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। তর্কপ্রিয়রা প্রশ্ন তুলতে পারেন যে নারী দলের খেলা তো কম সেজন্য তাদের গোনাগুনতি কভারেজও কম। দ্বিতীয়ত, নারী দল নিয়মিত বড় বড় দলের সাথে খেলে না। একারণে তাদের চোখে পড়ে কম। তাছাড়া তাদের খেলা টুর্নামেন্টের সংখ্যাও অনেক কম বলে তাদের নিয়ে পত্রিকায় কভারেজ কম। তর্কপ্রিয়রা আরো বলতে পারেন নারী দল তেমন একটা সাফল্য পায়নি তাই তাদের নিয়ে হৈচৈ কম। একটা দিক দিয়ে দেখলে এই সকল প্রশ্ন ভ্যালিড ও কেন পুরুষ দলের খেলার কভারেজ পত্রিকায় বেশি সেই তর্কে নারীপক্ষ একটু বেকায়দায় থাকবেন এই প্রশ্নগুলোর মুখে। এই জটিল তর্কের সমাধান করা যায় নারী ও পুরুষ উভয় দলেরই সমান সংখ্যক ম্যাচে অংশগ্রহণ রয়েছে এবং তারা কাছাকাছি ফলাফল করেছে এরকম কোন পরিস্থিতি খুঁজে পেলে। সাম্প্রতিক সময়ে এশিয়ান গেমস এরকম একটা টুর্নামেন্ট। এখানে পুরুষ ও নারী দল সমান সংখ্যক খেলা খেলেছে। এর মধ্যে নারী দল দ্বিতীয় হয়েছে এবং পুরুষ দল তৃতীয় হয়েছে। টুর্নামেন্টে কাছাকাছি সময়ে নারী ও পুরুষ দল তাদের ম্যাচগুলো খেলেছে এবং তখন এরকম কোন গুরুত্বপূর্ণ কিছু চলছিলো না যেটাতে এই দুই দলের কভারেজে পার্থক্য দেখা দেবে।
নারী ও পুরুষ দলের কভারেজ তুলনা করার জন্য নমুনা হিসেবে আমি প্রথম আলো, সমকাল ও কালের কণ্ঠে ছাপা হওয়া খবরগুলোকে নিয়েছি। বাংলাদেশের মিডিয়াতে সাধারণত কোন ক্রিকেট খেলার আগে ম্যাচ প্রিভিউ ও ম্যাচের পরে পোস্ট ম্যাচ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এছাড়া খেলাচলাকালীন সময়ে খেলোয়ারদের সাক্ষাৎকার, মন্তব্য, ক্রিকেট বোর্ডের কোন সভা, কোন খেলোয়াড়ের সম্পর্কে খবর ইত্যাদি প্রকাশিত হয়। নমুনাতে সব ধরণের খবরই নেয়া হয়েছে। সবগুলো পত্রিকা ঘেটে খবরের সংখ্যার চেহারাটা মোটামুটি এরকম দাঁড়ায়,
এখানে লক্ষ্যনীয়, নারী দল পুরুষ দল থেকে ভালো ফল করলেও তাদের জন্য প্রথম আলো এবং কালের কণ্ঠে কোন ম্যাচ রিভিউ লেখা হয়নি। সমকাল ১৯৭ শব্দের ছোট্ট একটি রিপোর্ট শুধু করেছিলো একটি ম্যাচের আগে। ম্যাচ রিভিউয়ের অনুপস্থিতি নারী দল কবে খেলছে, তাদের দলের বর্তমান অবস্থা কী, কেউ ইনজুরিতে পড়েছে কিনা বা তাদের সম্ভাব্য লাইনআপ কী এই সকল বিষয়ে পাঠককে অন্ধকারে রেখেছে। ফলশ্রুতিতে তাদের খেলার প্রতি পাঠকের আগ্রহ তৈরি হবার সম্ভাবনাটাকেই এখানে মেরে ফেলা হচ্ছে। এই অবস্থাটা আরো পরিস্কার হয় সাংবাদিকেরা নারী ও পুরুষ দলের জন্য কতোগুলো শব্দ বরাদ্দ করেছে সেটা গণনা করলে।
উপরের টেবিলে দেখা যাচ্ছে নারী দলের খেলা সম্পর্কে শতাংশ হিসেবে সবচাইতে কম শব্দ খরচ করেছে প্রথম আলো। এরপর কালের কণ্ঠ এবং সবশেষ সমকাল। গোটা চেহারা মোট শব্দের মধ্যে পুরুষ দল নিয়ে লেখা ৭১ শতাংশ এবং নারী দল নিয়ে ২৯ শতাংশ শব্দ। এ থেকে এটা পরিস্কার যে মিডিয়া একই পর্যায়ের খেলা ও তাতে নারী দল ভালো করলেও তাদের পাওয়া কভারেজ পুরুষ দলের তুলনায় নগন্য।
শব্দসংখ্যা ছাড়াও রিপোর্টে কীসব শব্দ ব্যবহৃত হয় সেগুলোর দিকে একটু নজর দেয়া যাক। স্যাম্পলে নেয়া খবরগুলোতে নারীদলকে কোনভাবে ছোট করা হয়েছে এরকম মনে হয়নি। এসত্ত্বেও খবরে নানাভাবে পুরুষদলের পারফরমেন্সকে টেনে আনা হয়েছে। নারী দলের ম্যাচ রিপোর্ট নিয়ে খবরগুলোর টেক্সট করপাস ও পুরুষ দলকে নিয়ে ম্যাচ রিপোর্ট টেক্সট করপাস থেকে ওয়ার্ডক্লাউড প্লট করলে কিছু আগ্রহউদ্দীপক জিনিস চোখে পড়ে। এই টেক্সট করপাস থেকে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের শব্দদু'টো বাদ দেয়া হয়েছে। প্লট করতে করপাসের ফ্রিকোয়েন্সি টেবিল থেকে প্রথম ৫০০ শব্দ গণনায় নেয়া হয়েছে।
দুটো ওয়ার্ডক্লাউডের মধ্যে প্রথম যে পার্থক্য চোখে পড়ে সেটা হলো একটার আকার চৌকোনা আরেকটা বৃত্তাকার। এই পার্থক্যের কারণ হলো পুরুষদলের খবরগুলোতে বিভিন্ন শব্দের ব্যবহার অনেকটা সমভাবে হয়েছে। বিপরীতে নারী দলের ক্ষেত্রে অল্প কয়েকটি শব্দই ঘুরেফিরে এসেছে। অল্পকয়েকটা শব্দ বাদে বাকিগুলো খুব কম সংখ্যকবার এসেছে (ফ্রিকোয়েন্সি কম)। নারী দলের ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত ও অর্থপূর্ণ শব্দগুলো রান/রানে, উইকেট, ওভার, বলে, ব্যাটিং। অর্থাৎ সংখ্যাজর্জরিত খেলার ফলাফল বর্ণনাটা এখানে প্রধান। খেলোয়াড়দের মধ্যে একমাত্র সালমার নামই সর্বাধিকবার লেখা হয়েছে। পুরুষদলের ক্ষেত্রে মাশরাফির সাথে সাকিবও আছেন সর্বাধিক উল্লেখ্য খেলোয়াড়ের তালিকায়। নারী দলের ক্ষেত্রে মহিলা শব্দটা বারবার লেখা হয়েছে। পুরুষ দলের ক্ষেত্রে পুরুষ শব্দটি প্রথম ৫০০ হাইফ্রিকোয়েন্স শব্দের তালিকায় নেই। এছাড়া নারীদের ক্ষেত্রে অধিনায়ক শব্দটি অনুপস্থিত। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই শব্দটির উপস্থিতি বেশ চোখে পড়ার মতো করেই রয়েছে।
নারীদের ক্ষেত্রে এই অধিনায়ক শব্দ ব্যবহারে সচেতন/অবচেতন অনীহা বেশ আগ্রহউদ্দীপক। বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে এরকম অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীর পুরো জীবনটাই নারী রাষ্ট্রপ্রধানদের শাসনামলে কেটেছে। অর্থাৎ একটা গোটা প্রজন্ম বেড়ে উঠেছে নারী শাসনের আওতায়। আগামী বছরেই এই নারীনেতৃত্বের ২৫ বছর পুর্তি হবে। পৃথিবীতে এরকম দৃষ্টান্ত আর আছে কিনা জানা নেই। এসত্ত্বেও নারী দলের খবরে অধিনায়ক শব্দটি বহুল ব্যবহৃত শব্দতালিকায় জায়গা পায়নি।
অধিনায়ক সংক্রান্ত আলাপে নারী দলের অনুপস্থিতি পত্রিকাগুলো যখন অধিনায়কদের নিয়ে রিপোর্ট করেন তখনও দেখা যায়। যেমন, এশিয়ান গেমস চলাকালেই প্রথম আলো চার নেতার বাংলাদেশ শিরোনামে একটি রিপোর্ট করেছে। সেখানে খবরটা শুরু হয়েছে এভাবে,
গত ফেব্রুয়ারি থেকেই বাংলাদেশ দলের কোনো সহ-অধিনায়ক নেই। সদ্য সমাপ্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও ছিল এক অধিনায়ক। সেই বাংলাদেশই এখন হঠাৎ করে চার নেতার দল!
কোন সে চার নেতা? প্রথম আলো জানাচ্ছে,
সেই অর্থেই বাংলাদেশ দলের নেতা এখন চারজন। অনুমিতভাবেই বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক করা হয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজাকে, তাঁর সাবেক ডেপুটি সাকিব আল হাসানকে আবার পেয়েছেন সহ-অধিনায়ক হিসেবে। টেস্টে আপাতত অধিনায়ক থাকছেন মুশফিকুর রহিমই। তিনিও ফিরে পেয়েছেন তাঁর সাবেক ডেপুটিকে। নেতৃত্বের এই পালাবদলে সবচেয়ে চমকপ্রদ ও বিস্ময়কর নাম এটিই—তামিম ইকবাল!
এখানে লক্ষ্যনীয়, এই খবর প্রকাশের দুদিন আগেই নারী ক্রিকেট দল টুর্নামেন্টে রানার আপ হলেও সেই দলের অধিনায়কের কোন উল্লেখ এই খবরে নেই। নেতৃত্ব পুরুষদের কাজ এই ধারণারই ছাপ পাওয়া যায় এই নিউজটাতে। একই দিনে সমকাল মাশরাফি-সাকিবে ওয়ানডে রাজ্যপাট শিরোনামের খবরটাতেও নারী দলেও কোন উল্লেখ করা হয়নি।
একই টুর্নামেন্টে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে হওয়া ম্যাচগুলোতে পুরুষদল থেকে ভালো ফল করেও নারী দল পুরুষ দলের তুলনায় নগন্য কভারেজ পত্রিকায় পায়। তাদের খবরগুলো সংখ্যা দিয়ে ভর্তি থাকে, অধিনায়কের আলোচনায়ও তাদের কথা আসে না। এই অবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে না পারলে বাংলাদেশে নারী দলের জন্য ক্রিকেটার পাওয়া যাবে না।
এই অবস্থা পরিবর্তনের জন্য তাহলে কী করা? বাংলাদেশের মিডিয়া হাউসগুলোতে স্পোর্টস সেকশনে নারী রিপোর্টারের সংখ্যা হাতে গোনা। কর্মস্থলে লিঙ্গ ভারসাম্য আনা গেলে অবস্থার পরিবর্তন আসতে পারে। স্পোর্টস সেকশনে নারীর সংখ্যা বাড়িয়ে কাজ হবে এটাও নিশ্চিত নয়। কাজ হয়েছে (Hardin, 2005) এবং কাজ হয়নি (Hardin & Shain, 2005; Zoonen, 1994) দুই ধরণের অভিজ্ঞতাই গবেষণায় উঠে এসেছে। সম্পাদক পদে নারী নিয়োগ দিয়েও কাজ না হওয়ার যথেষ্ট নজির রয়েছে (Pedersen, Whisenant, & Schneider, 2003) কাজ না হবার একটা কারণ হতে পারে নারী পুরুষের জায়গায় নিয়োগ পেলেও তারা আসলে পুরুষের বানানো কাঠামোটাকেই সঠিক কাঠামো ধরে কাজ করে। এই ধারণায় পরিবর্তন আনতে হলে আমাদের বৈষম্যের কথা বেশি বেশি করে বলা, বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালানো ও বৈষম্য কমাতে পত্রিকাগুলোর/মিডিয়া হাউসগুলোর সম্পাদকীয় নীতিমালায় দৃশ্যমান পরিবর্তন আনতে হবে।
সূত্র
মন্তব্য
দারুণ একটা কাজ করেছেন। বাংলাদেশের কোনো পুরুষ ক্রিকেটার বিপিএল-এ গিয়ে খেললে যেভাবে পত্রিকার পাতায় শিরোনাম হয়ে উঠেন ও তাঁর জন্য যতোগুলো শব্দ বরাদ্দ থাকে, একজন নারী ফুটবলার মালদ্বীপের ফুটবল লিগে গিয়ে হালি হালি গোল দিলেও তার জন্য শিরোনাম ও শব্দের সংখ্যা তেমন বড় হয় না- খবরটা আসে বড়জোড়, সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাই নিয়ে!
অট: কোন সফটওয়্যার দিয়ে টেক্সট করপাসের কাজটা করেছেন?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
অসম্ভব রকমের ভাল ও জরুরী একটি পোস্ট। একসঙ্গে অনেক গুলো তথ্যের একটি আর্কাইভের মতন। খুবই ভাল। ওয়ার্ডক্লাউডের টাইপোগ্রাফি দুটোও চমৎকার হইছে। চমৎকার ভাবে ফুটে উঠেছে নারী খেলোয়াড়দের প্রতি অবজ্ঞার একটি উদাহরণ।
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
চমৎকার পোস্ট।
আলুপেপারের সামগ্রিক ক্রিকেট কাভারেজ নিয়ে ওয়ার্ডপ্লট করা গেলে তাদের পাকিমেহনের চিত্রটা উঠে আসতো বলে ধারণা করছি।
আলুপেপারের পাকিমেহনের প্রকৃত চিত্র বের করতে সঠিক পদ্ধতি হলো কোন কোয়ালিটেটিভ এ্যানালাইসিসের জন্য তৈরি করা সফটওয়্যারে প্রতিটা লাইন টেক্সট কোডিং করা। কাজটা আজ হোক কাল হোক করবো।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আলুর পাকিপ্রেমের প্রকৃত চিত্র উঠে আসুক আপনার হাত ধরে।অপেক্ষায় থাকলাম
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
পোষ্টে পাঁচতারা।
আমার কিছু ব্যাক্তিগত অভিমত আছে, প্রশ্ন আছে। প্রথম কথা হলো কেন পুরুষদের ক্রিকেট-ফুটবল জনপ্রিয়? শুধু কি প্রচার? শুধু প্রচার জনপ্রিয়তার মূল কারণ মনে হয় না আমার। আমি মনেকরি খেলাধুলায় (ফুটবল-ক্রিকেটে) পুরুষদের শারীরিক শক্তি আর স্কিল অনেক বেশি। এই শক্তি আর স্কিল সেই খেলাকে যে মানে উন্নীত করেছে সেখানে তারচেয়ে কম শক্তিধর আর স্কিলের খেলোয়াড়দের (মেয়েদের) খেলা দর্শকদের কতটুকু টানবে?
বাংলাদেশে আমি যতটুকু দেখেছি তাতে খেলাধুলা বেশিভাগ মেয়েদের প্রধান বিনোদন নয়। পত্রিকা থেকে টেলিভিশন কোথাও তারা খেলাধুলাকে ছেলেদের মতো করে পড়ে না, দেখে না। মেয়েদের মাঝে খেলাধুলাকে জনপ্রিয় করতে কি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে?
পত্রিকা-টেলিভিশন দুটোই পুরো মাত্রার বাণিজ্যিক। যা লিখে, যা দেখিয়ে ব্যবসা করা যাবে তারা সে পথেই ছুটবেই।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
স্কিল মানে কী? মানে কে কতো জোরে দৌড়ায়? যতোগুলো পুরুষ খেলার সুযোগ পায়, ততোগুলো মেয়ে কি খেলার সুযোগ পায়? তাদের জন্য সমান বরাদ্দ দেয় সরকার বা বাণিজ্যিক সংস্থাগুলো? এতো সহজে স্কিল বেশি এটা কীভাবে বললেন? এই কথার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কোন?
আপনি যেই রাস্তায় ভাবছেন সেই ভাবাভাবিটা পুরুষতান্ত্রিক মিডিয়া আমাদের মনের মধ্যে গেড়ে বসিয়েছে। তারা আমাদের ভাবতে শিখিয়েছে মেয়েরা খেলতে পারে না। এই প্রস্তুত করে বেড়ে দেয়া সম্মতিটাই সবচে বড় বাধা মেয়েদের খেলাধুলার।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
দু:খিত, আমি বোধহয় বুঝাতে সক্ষম হইনি। আমার মন্তব্য ছিলো কেন পুরুষদের খেলা বেশি প্রচারিত হয় সেই প্রসঙ্গে। স্কিল বলতে শারীরিক সক্ষমতা বুঝিয়েছি এবং আমরা জানি চর্চার মাধ্যমে এই সক্ষমতা বৃদ্ধি সম্ভব। মেয়েদের সম পরিমান সুযোগ এবং প্রচারের আলোয় নিয়ে আসলে তারাও তাদের খেলার মান উন্নতি করতে পারবে এটা আমিও বিশ্বাস করি।
দ্বিতীয় পয়েন্টটি সম্পর্কে আপনার মতামত কি? অর্থাৎ মেয়েদের মাঝে খেলাধুলাকে কিভাবে আরো বেশি জনপ্রিয় করা যায়?
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
চমৎকার পোস্ট। এইসব বৈষম্য নিয়ে কথা বলাটা খুব জরুরি।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
হাজার হাজার বছর ধরে গড়ে ওঠা পুরুষতান্ত্রিকতা রাতারাতি মোছা যাবে না। সবদিকে এখনই এই বিষয়ে আওয়াজ তুলতে পারলে হয়তো অবস্থা একসময় পরিবর্তিত হবে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
দারুণ হাসিব ভাই!
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
থেংকু। লেখা নামান জলদি। গত কয়েকমাসে লেখেন নাই।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
চমৎকার কাজ!
"একই পর্যায়ের খেলা ও তাতে নারী দল ভালো করলেও তাদের পাওয়া কভারেজ পুরুষ দলের তুলনায় নগন্য।"
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
দারুণ কাজ এবং পরিশ্রমের জন্য হ্যাটস অফ। ফলাফলের ধরণ যদিও এক্সপেক্টেড, কিন্তু গুণগত ফলাফলের সাথে সাথে সঠিক পরিসংখ্যান সমস্যাকে কোয়ান্টিফাই করতে সুবিধা করবে। তাহলে পরবর্তীতে কোনো উন্নতি হলো কিনা বা কোনো পরিবর্তন হলো কিনা সেই বিষয়টা অনেক বেশি অবজেকটিভলি পরিমাপ করা যাবে।
শুধু পত্রিকা না, টিভি চ্যানেল থেকে শুরু করে আমাদের ব্যক্তিগত জীবনকে অ্যানালাইসিসের আওতায় আনলেও সম্ভবত একই ধরণের ফলাফল উঠে আসবে। পুরুষ আর নারীদের ক্রিকেট বা ফুটবল খেলার সময় আমার বন্ধুদের (যাদের অনেককেই এই বিষয়ে সচেতন বলে মনে করি) বা আমার ফেসবুক ওয়াল ঘুরে আসলেও সম্ভবত একই ধরণের পরিসংখ্যান পাবেন। এখন এটা অবশ্যই একটা আলোচনার বিষয় যে, আমাদের মিডিয়ার কারণে আমাদের (আমি স্পেক্ট্রামের সচেতন অংশের কথাই বলছি) আচরণ এরকম নাকি আমাদের কারণেই আমাদের মিডিয়ার আচরণ এরকম।
তবে এই দৃশ্য সম্ভবত শুধুমাত্র আমাদের দেশের না (যদিও আপনি এটা বলেনও নি কোথাও)। পশ্চিমা বিশ্বেও পুরুষদের খেলাধূলা যে পরিমাণ কাভারেজ পায় তার সামান্যও নারীদের খেলাধূলা পায় না। যদিও কিছু ক্ষেত্রে সম্ভবত কিছুটা ব্যতিক্রম আছে। যেমন আমি টেনিস খেলার ক্ষেত্রে পুরুষ এবং নারীদের খেলার খবরের ভিতর তুলনামূলক সাম্য দেখতে পেয়েছি। এমনকি আমাদের দেশের পত্রিকাগুলোতেও মেয়েদের টেনিস খেলার (আমাদের দেশীয় টুর্নামেন্টের কথা বলছি না) বেশ ভালো কাভারেজ দেখেছি একসময় (যখন খেলার পাতা খুব ভালোভাবে পড়া হতো, এখনকার অবস্থা বলতে পারব না)। এটা যদি সত্যি হয় তাহলে এটাও একটা ইন্টারেস্টিং পর্যবেক্ষণ হতে পারে। মেয়েদের ফুটবল বা অন্যান্য খেলার সাথে তুলনা করলে টেনিস খেলাকে আমার তুলনামূলক জনপ্রিয় মনে হয়েছে। এখন তুলনামূলক জনপ্রিয়তা যদি খবরের পরিমাণ বা খবরের বিষয়বস্তুর ওপর প্রভাব ফেলে তাহলে আসলে কাজটা কোন দিক থেকে শুরু করতে হবে সেটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। মিডিয়াই হয়ত টেনিসকে তুলনামূলক জনপ্রিয় করে তুলেছে নাকি টেনিসের তুলনামূলক জনপ্রিয়তা টেনিসকে অধিক হারে মিডিয়ায় নিয়ে এসেছে? অবশ্য এই ক্ষেত্রে মিডিয়ার দায়িত্বশীল ভূমিকা আমারা আশা করতেই পারি। কিন্তু আমাদের বাণিজ্য নির্ভর মিডিয়া সেই দায়িত্বশীলতার পথে সম্ভবত হাঁটবে না, এ কথা খুব বেশি চিন্তা ভাবনা না করেও বলে দেয়া যায়।
একই ধরণের আরেকটি কাজ ব্লগের ক্ষেত্রেও করা যেতে পারে। ব্লগ অনেক ক্ষেত্রেই তুলনামূলক অজনপ্রিয় বিষয় নিয়ে কথা বলেছে বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে আমরা যদি কয়েকটি ব্লগে পুরুষ এবং নারীদের খেলা নিয়ে আসা লেখাগুলো নিয়ে একটা তুলনামূলক বিশ্লেষণ করি তাহলে পরিসংখ্যান কি খুব ভিন্ন আসবে? যদি আরও কাজ করেন এই বিষয় নিয়ে তাহলে এই দিকটাও চাইলে ভেবে দেখতে পারেন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
সঠিক (Daddario, 1994) (Vincent, Imwold, Masemann, & Johnson, 2002)
এটা সামাজিক বিজ্ঞানের টপিক। সামাজিক বিজ্ঞানে অবজেকটিভি পরিত্যক্ত ধারণা। অবজেকটিভি সম্ভব এরকমটা স্বীকার করেন না এ্যাকাডেমিকরা এটা প্রায় ১০০ বছর হতে চললো।
সাধারণভাবে প্রথমটা স্বীকৃত। মিডিয়া আইডিয়া পুশ করে (framing theory) । সেই আইডিয়া পুশ করে সে সেটাতে চালু রাখে (reinforcement)। এটা করে সে জনমানসে এক পক্ষের ওপর আরেক পক্ষের আধিপত্যশীল পুরুষতন্ত্র (hegemonic masculinity, (Gramsci, 1971; Pedersen, 2002)) বজায় রাখে। এই সমস্ত প্রক্রিয়ায় জনগণ গ্রহতীরা ভূমিকা। মিডিয়া সরবরাহকের ভূমিকায়।
উপরে হিমুর মন্তব্যের জবাবে সঠিকতর পদ্ধতি বিষয়ে বলেছি। সবসময় শব্দ গুনে পুরো জিনিস বোঝা যায় না। এর জন্য লাইন লাইন ধরে বিশ্লেষণ করতে হয়। টেনিস নিয়েও অনেক স্টাডি আছে। একটা উদাহরণ দেই। এলএটাইমস, নিউ ইয়র্ক টাইমস, ইউএসএ টুডে এবং ইএসপিএন, ফক্স, স্পোর্টস ইলাস্ট্রেটেডের খবর বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে মিডিয়া নারী টেনিস খেলোয়াড়দের খেলাধুলায় দ্ক্ষতা নিয়ে ফোকাস না করে তাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সময় দেয় বেশি। নারী খেলোয়াড়দের যৌনপন্য হিসেবে তুলে ধরার প্রবণতাও লক্ষ্যনীয়।
সূত্রঃ
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
হ্যাঁ, সামাজিক বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতে অবজেকটিভ সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না সেটা জানি। আমি এখানে অবজেকটিভ বলতে বোঝাচ্ছিলাম, একেবারে কোনো হিসাব-কিতাব ছাড়া জেনারালাইজড কমেন্ট না করে পরিসংখ্যান ব্যবহার করে তুলনামূলক আলোচনাকে। শব্দচয়নের ভুল।
নারী খেলোয়ারদের গ্ল্যামারের ব্যপারটাও ঠিক। মনে আছে র্যাঙ্কিংএর অনেক নিচে থাকা আনা কুর্নিকোভা র্যাঙ্কিংশীর্ষে থাকা খেলোয়ারদের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রেই বেশি গুরুত্ব পেতেন। খেলার পাতায় স্টেফিগ্রাফ, কুর্নিকোভাদের খেলার চেয়ে বর্তমান বয়ফ্রেন্ড আর আবেদনময় ছবিই বেশি গুরুত্ব পেত। এই ট্রেন্ডটাও একেবারে পশ্চিমা পত্রিকা থেকেই ধার করা। এইসব খবর আমাদের সাংবাদিকরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিদেশি পত্রিকাগুলো থেকে কপি পেস্টই করে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
এত চমৎকার লাগলো পড়ে!
ঠিক এই বিষয়ে লেখার ভাবনা অন্য কারো মাথায় এসেছিল কিনা জানবার কৌতুহল হচ্ছে।
নারীনেতৃত্ব থাকার পরও মেয়েদের কোণঠাসা থাকবার নজিরটাও মনে হয় পৃথিবীতে বিরল। পহেলা বৈশাখের ন্যাক্কার জনক ঘটনা নিয়ে নারীনেতৃত্ব প্রতিবাদ না করেও বিরল দৃষ্টান্ত রেখেছেন। ঐ যে তর্কপ্রিয় মানুষ এসে গেছেন খোমাবইতে
নারীরা ড্রাইভিং সিটে বসলেই সমাধান হবে এরকমটা ভাবা ঠিক নয়।। পোস্টে নারী সাংবাদিক নিয়োগ দিয়েও অবস্থার পরিবর্তন করা যায়নি এরকম স্টাডির রেফারেন্স আছে। নারীনেতৃত্বের কিছু সুফল আমরা অবশ্যই পেয়েছি। বিভিন্ন সূচকে প্রতিবেশিদের তুলনায় আমাদের একটু ভালো অবস্থা আমি নারী নেতৃত্বকে দেই।
আর বাংলাদেশে নারী ইস্যুটা মূলত এনজিওর পেটে অবস্থান করে। তারা ফান্ডিং না দেখলে কোন বিষয়ে রা কাড়ে না।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আমরা এবং আমাদের মিডিয়া যখন সাকিব আল হাসানের দুনিয়া সেরা অলরাউন্ডার হবার খবর নিয়ে মাতামাতি করেছি ঠিক তখন আমাদের সালমা খাতুন মেয়েদের ক্রিকেটে T20-তে দুনিয়া সেরা অলরাউন্ডার ছিল। কিন্তু তিনি কতোটা মিডিয়া কাভারেজ পেয়েছেন? আমরাই বা তাঁকে নিয়ে কতোটা আলোচনা করেছি?
http://thedailynewnation.com/news/39184/salma-khatun-best-t20i-all-rounder-of-world-cricket.html
মিডিয়া চাইলে মেয়েদের খেলাকে সামনে নিয়ে আসতে পারে। মেয়েদের সাফল্যগুলোকে যথাযথভাবে তুলে ধরতে পারে। স্পন্সররা পারে মেয়েদের খেলাকে আরো প্রমোট করতে। তবে সেসবের আগে আমাদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। মেয়েদের খেলাধুলা করাটাকে পজিটিভলি নিতে হবে। মেয়েদের খেলার দিন গ্যালারী ভর্তি দর্শক দিয়ে গ্যালারী মাতিয়ে তুলতে হবে। টি-শার্টে সাকিব বা তামিমের ছবির মতো সালমা বা রুমানার ছবি লাগানোটাও অ্যাপ্রিশিয়েট করতে শিখতে হবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সালমার কভারেজের বিষয়টা খেয়াল করেছি। স্যাম্পল সাইজটা বড় করা গেলে এই সবগুলো নিয়ে একটা সলিড গবেষণা দাঁড় করানো যেত। এই কাজটা এক্সটেন্ড করার ইচ্ছা আছে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এইসব ক্ষেত্রে মিডিয়ার একটা কমন এজাম্পশন আছে বলে আমার ধারণা। তাদের যুক্তি হতে পারে যেহেতু পাবলিক ডিমান্ড নাই, তাই লিখি না। অথচ আমার মনে হয় পাবলিকের চোখ এড়ায়ে যায়, এমন সব নিউজই মিডিয়ায় প্রাধান্য পাওয়া উচিৎ।
এবং সাথে সাথে গ্ল্যামার আমাদের মিডিয়ার খুব পছন্দের বিষয়। খেলার কিছুই না পারা কুর্নিকোভার বন্ধু কে এইটা নিয়েও রেগুলার নিউজ হইতে দেখা যায়, অথচ সালমা খাতুনকে নিয়ে খুব কমই পড়া হয়েছে পত্রিকায়।
শুধু পত্রিকায় না আসার কারণে প্রচুর মহিলা অ্যাথলিটদের একাগ্রতা একসময় ক্ষয়ে আসে। খেলবে কার জন্যে, যদি লোকে না-ই জানে সে কী খেলছে ?...
দারুণ পোস্ট
এটা অজুহাত হিসেবে মিডিয়া উপস্থাপন করে। আদতে কী হয় সেটা সম্পর্কে উপরে ত্রিমাত্রিক কবির কমেন্টের জবাবে বলেছি। পত্রিকা খুব বাছাই করে তাদের এ্যাজেন্ডা ঠিক করে। তারা তাদের রাজনৈতিক মতামত প্রচার করার জন্য কলামিস্ট বাছাই করে, সম্পাদকীয় দল ঠিক করে। খেলার পাতায় যা হয় সেখানেও এইধরণের হিডেন এ্যাজেন্ডা থাকা বিচিত্র না।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
কি চমৎকার একটা লেখা।
মেয়েদের খেলা বোধহয় সারা পৃথিবীতেই আন্ডার রিপোর্টেড, ভারতে তো বটেই। যেগুলোতে তেমন ভাল নয় সে তো ছেড়েই দিলাম, যেগুলোতে রীতিমত ভাল সেগুলোও হয় কাগজে খুঁজেই পাওয়া যায় না নয়ত খুব ছোট করে ইনসিগনিফিক্যান্টভাবে।
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
কোনটাতে কে ভালো সেইটা কিন্তু একটা ইন্টারেস্টিং আলাপ। আমরা কি পুরুষদের যেভাবে খেলে, যেভাবে একটা পারফর্মেন্সকে ভালো বলে আমরা কি সেই দাঁড়িপাল্লা দিয়েই মেয়েদেরকে মাপবো? নাকি ভিন্ন কিছু করা যায় এক্ষেত্রে?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
জরুরি একটা লেখা।
নিয়মিত espncricinfoডটcom এবং goalডটcom পড়ি। বিশেষ করে goalডটcom প্রতিদিনই পড়া হয়। কিন্তু খুব কম সময়েই নারীদলের খবরাখবর এবং নারী খেলোয়াড়দের পারফর্মেন্স নিয়ে কোনো খবর দেখতে পাই।
_________________
[খোমাখাতা]
পুরষাধিপত্যকে স্বীকার্য ধরে নেওয়া সামাজিক আবহে বসবাস করলে যতই নারী নেতৃত্ব থাকুক, যতই ক্ষমতার পদ ও অবস্থানে নারী নিযুক্ত হোক, পরিস্থিতি বদলাবে না। পরাধীনতাকে শণাক্ত, বর্ণনা ও সুরাহা করার ভাষাটাই যদি আয়ত্তে না থাকে, তাহলে নারীও দিনশেষে পুরুষতন্ত্রকেই দৃঢ়ীকরণ করে যাবে। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ নারী নেতৃত্বের ঐতিহ্য সত্ত্বেও পুরুষতান্ত্রিক ও নারীবিদ্বেষী মনোভাব টিকে থাকার কারণ বোধকরি এটাই(অবশ্য প্রধান দু'টো দলের কত শতাংশ নারী তৃণমূল থেকে রাজনীতি করে শীর্ষ নেতৃত্ব পর্যন্ত্য পৌছুতে পেরেছে সেটাও একটা বিবেচ্য বিষয়, হাসিনা-খালেদার ক্যারিয়ারের পেছনে dynastic প্রভাব অনস্বীকার্য)।
এই লেখার মতো এসব বিষয় নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত করাটাই বিদ্যমান শিশ্নকেন্দ্রিক হেজিমনি ফুটো করবে। এই একাধিপত্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন না হলে মেয়েরা বেশি বেশি করে ক্ষমতার আসনে আবিষ্ট হয়ে ওই আগের status quoটাই প্রচার করে যাবে।
Big Brother is watching you.
Goodreads shelf
খুব চমৎকার আর গুরুত্বপূর্ণ একটা লেখা।
রাসিক রেজা নাহিয়েন
প্রথমে সরল স্বীকারোক্তি, এই ব্লগটা না পড়লে বিষয়টা মাথাতেই আসতো না।
ভাবনার এই দরজা খুলে দেবার নামই সম্ভবত ব্লগিং। এই পোস্টটা, ব্লগিং ঠিক কোন পর্যায়ে উঠে গেছে সেটার নির্দেশনা হয়ে থাকবে।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
কথা সইত্য!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
দুর্দান্ত পোস্টের জন্য ধন্যবাদ হাসিব ভাই।
কাছাকাছি একটা বিষয় নিয়ে কদিন আগে মান্নার সাথে আলাপ করছিলাম। আমার জানামতে একমাত্র টেনিস ছাড়া পুরুষ দল বা পুরুষ টুর্নামেন্ট বলে কোন বস্তু নেই।
বিশ্বকাপ ক্রিকেট কিংবা বিশ্বকাপ ফুটবল বলতে আমরা ধরে নেই যে এটা পুরুষ দল আর প্রমীলা দলের জন্য আলাদা করে বলা হয় মহিলা বিশ্বকাপ। এটা বাংলাদেশে নয়, সব দেশের জন্যই সত্য।
ডিসক্রিমিনেশনের প্রথম ধাপ বোধহয় এখান থেকেই শুরু হয়।
পুরো লেখাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে অধিনায়কের অংশটা। ক্রিকেটে অধিনায়কের হাতে রীতিমতো বাঁচা মরা নির্ভর করে, সেখানেই যদি রিপোর্টাররা মহিলা দলের জন্য অধিনায়ক গুরুত্বপূর্ণ ভাবতে না পারেন, সেখানে নারী নেতৃত্ব নিয়ে তাদের সর্বোপরি চিন্তাভাবনা কী সেটা নিয়ে ভাবতে অস্বস্তি লাগে।
এই লেখার সাথে জড়িত অসম্পূর্ন কাজগুলোও সম্পুর্ন হোক, খুব ভাল একটা কাজ হবে।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
দারুণ একটা পর্যালোচনা!
দুর্ধর্ষ পোস্ট... স্যালুট
নিধিকে স্কুল থেকে আনতে যাওয়ার সময় রাস্তায় পড়ে ইন্দিরা রোড ক্রিড়াচক্রের মাঠ। সেখানে এখন ছেলে মেয়ে একসাথে ক্রিকেট প্র্যাকটিস করে। শখের না, প্রফেশনাল। ভালো লাগে।
মিডিয়া সবসময়ই একটা অদ্ভুত দোলাচলে থাকে। তারা চেষ্টা করে পাবলিক খাবে এরকম রিপোর্ট বেশি দিতে, কিন্তু পাবলিক কোনটা খাবে সেই বিষয়ে তাদের কোনোদিন কোনো জড়িপ নাই। এই খাওয়া খাওয়ির বিষয়টা সম্পূর্ণভাবেই নিজস্ব ধারনার উপর প্রতিষ্ঠিত। নিজের চিন্তার সীমাবদ্ধতা আর ইয়ার দোস্ত ভক্তকুলের প্রশংসারেই মানদণ্ড ভেবে নেয়। ফলে কখনোই জানতে পারে না পাঠক আসলে কী পড়তে চায়। আর পাঠকও একসময় অভ্যস্ত হয়ে যায়।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দারুণ পোস্ট। এমন চোখে দেখিনি তো আগে!
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
চুপ।।। কেন এমন হয়?
কোয়ান্টিটেটিভ বিশ্লেষণে দারুণভাবে উঠে এসেছে পার্থক্যগুলো। তথ্যে ও পরিবেশনে পোস্টটা একটা ভাল গবেষণাপত্রের থেকে কোন অংশে কম যায় না। তবে এই বিষয়গুলোর আশু পরিবর্তন সম্ভব নয় বলেই মনে করি। আমার অনার্সের মনোগ্রাফের বিষয় ছিল নারী ও ক্রীড়া, এবং সেটা করতে গিয়েই দেখেছি পুরুষতন্ত্রের শেকড় কত গভীরে কাজ করে নারী ও পুরুষের সম যোগ্যতা তৈরিতে বাধা প্রদান করে পদে পদে। মিডিয়ার ভূমিকা এখানে যতটা না মুখ্য তার থেকে বেশি জরুরি এই বৈষম্যগুলো সমূলে বিনাশ করা। নইলে শতকিছু সত্ত্বেও থেকে যায় পার্থক্য, সমতা-বিধানের চেষ্টাগুলো হয়ে পড়ে গৎবাঁধা বুলি-মাত্র, পর্যবসিত হয় নিষ্ফলতায়।
মনোগ্রাফটার একটা সংক্ষেপিত আকার দিয়ে সেটা পোস্ট করতে পারেন।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
করা যায় বৈকি। গুছিয়ে উঠতে পারলে একটা সংক্ষেপিত রূপ দেব সচলে।
কিছুদিন আগে পাকিস্তান ক্রিকেটে বাংলাদেশী বাঁশ খাবার সময় সালমা এসেছিলেন কোনও এক খেলা রিলেটেড শো তে। সেখানে দেখে আব্বুকে জিজ্ঞেস করলাম যে একে নিয়ে একটু মাতামাতি হয়না কেন? টি২০তে সর্বসেরা অলরাউন্ডার সালমা কেবল ফেয়ার এন্ড লাভলি মাপকাঠিতে পড়েনা বলেই কি আমাদের এতো অনীহা?
খেলার বিশ্লেষণ নিয়ে আমার বড়বোন-বন্ধু শ্রাবণ্য আপুর একটা অনুষ্ঠান হতো কোন জানি চ্যানেলে, আব্বু প্রথম দিকে দেখতোনা, কোনও মেয়ে আর কি কথা বলবে ক্রিকেট নিয়ে, মন্দিরা বেদী টাইপ কিছু একটা ধরে বসে ছিলো! শ্রাবণ্য আপু আগে একসময় ক্রিকেট খেলতো, ও খেলাটা ভালোই বুঝে, আব্বুকে দুইতিন দিন বেশ জোর করেই দেখাইসি, এরপরে আর মিস করেনাই।
মেয়েদের খেলার কভারেজ তো দূরের কথা, মেয়েদের স্কুলে হ্যান্ডবল ছাড়া বোধহয় কিছু খেলার অপশনও থাকে না বেশীরভাগ সময়ে। আমাদের স্কুলে অবশ্য মেয়েদের কৃষিবিজ্ঞান পড়া নিয়েও সময়সা ছিলোনা, খেলা নিয়েও। আজকালকার কি অবস্থা কে জানে!
অনেক বকবক করলাম। শেষকথা এই যে খুব ভালো একটা লেখা হয়েছে, এরকম জিনিস নিয়ে এতো সুন্দর ব্যাখ্যা করে লেখা যায় এইটাই আমার মোটা মাথায় আসেনাই!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
ঢাকাশহরে মোট কয়টা স্কুলের বিপরীতে কয়টা স্কুলের মাঠ আছে সেটা একটা ইন্টারেস্টিং গবেষণা হতে পারে। আমি স্কুলে থাকতে দেখতাম ট্রেইনার পুরুষ। ছেলেদের নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন। মেয়েদের শিফটে কোন ট্রেইনার নেই। অবস্থা এখনও ওরকম বা ওর থেকে খারাপ হয়েছে ধারণা করি।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
অসাধারণ বিশ্লেষণ।
অট: আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড কি পরিসংখ্যান অথবা বর্তমানে পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করছেন ?
R এ আপনার দক্ষতায় ।
আমি তোমাদের কেউ নই -> আতোকেন
গণিতশাস্ত্রে হালকা পাতলা পড়াশোনা আছে। আর আমি কাজটা জোড়াতালি দিয়ে করেছি। এরকম জোড়াতালি মেরে কাজ নামানো কঠিন কিছু না। কাজটা আরো দক্ষতার সাথে করা সম্ভব। সময়ের অভাবে ওটা করতে পারিনি।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
ভালো হলো পোস্টটা সামনে পেয়ে গেলাম। সেদিন প্রথমালুর একটা খবরে চোখ আটকে গেলো।
আগে ক্রিকেটের খবর লেখা হলে সেখানে ক্যাপ্টেনের নাম যেমন মাশরাফি/মুশফিক/সাকিব নামটা উল্লেখই যথেষ্ট ছিল তাদের জন্য। কিন্তু এই খবরে দেখলাম অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির নাম উল্লেখ করার পরও ব্র্যাকেটে পুরুষ শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে। সেটা কী আপনার এই লেখা পড়ে কিনা কে জানে! এখানেলিংক
নতুন মন্তব্য করুন