মার্কিন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সমকামিদের বিয়ে বৈধ ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়াতে এই বিষয়ে ঝড় বয়ে গেছে। মার্কিন দেশের রায়ে বাংলাদেশের আদার ব্যাপারিদের কার্যত লাভ না থাকলেও এসব ইস্যুতে আলোচনা হয় এবং সেই আলোচনায় নিজেদের চেহারাটা আয়নায় আরেকবার দেখে নেবার সুযোগ ঘটে। বলাবাহুল্য আয়নায় দেখা চেহারাটা সুখকর অন্য অনেক ক্ষেত্রের মতোই সুখকর অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়ায় না।
সমকামিরা বিয়ে করতে পারবে কি পারবে না এই প্রস্তাবনা ও আন্দোলনগুলো LGBT [১] (লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল ও ট্রান্সজেন্ডার) ইস্যু/আন্দোলন হিসেবে পরিচিত।
এলজিবিটির বাকি তিনটি অক্ষর, অর্থাৎ এলজিবি যৌনসম্পর্ক সংক্রান্ত। এই যৌনসম্পর্ক সমলিঙ্গের মধ্যকার যৌন সম্পর্ক নির্দেশ করে। বাংলাদেশের আইনে এই ধরণের সম্পর্ক প্রকৃতিবিরুদ্ধ বা অপ্রাকৃতিক (unnatural) ও সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ১৮৬০ সালের দন্ডবিধির ৩৭৭ ধারা বলছে [২],
377. Whoever voluntarily has carnal intercourse against the order of nature with any man, woman or animal, shall be punished with imprisonment for life, or with imprisonment of either description for a term which may extend to ten years, and shall also be liable to fine.Explanation. Penetration is sufficient to constitute the carnal intercourse necessary to the offence described in this section.
অর্থাৎ, সমকাম প্রমানিত হলে যাবজ্জীবন কারাদন্ড পর্যন্ত হতে পারে এই দেশে।
পার্শ্ববর্তী দেশ ইন্ডিয়াতে বেশ কয়েকবছর ধরে এই আইনটি ঘুরে ফিরে আলোচিত হচ্ছে। বাংলাদেশে এই unnatural শব্দটি নিয়ে কোন আইনি আলোচনা চোখে পড়েনি। তবে ইন্ডিয়াতে এই শব্দটি নিয়ে একটি আলোচনায় বলা হচ্ছে, [৩]
Lacking precise definition, Section 377 became subject to varied judicial interpretation over the years. Initially covering only anal sex, it later included oral sex and still later, read to cover penile penetration of other artificial orifices like between the thighs or folded palms. The law made consent and age of the person irrelevant by imposing a blanket prohibition on all penile-non-vaginal sexual acts under the vague rubric of ‘unnatural offences’।
অর্থাৎ, শিশ্নযোনিসম্পর্ক ছাড়া অনেক ধরণের যৌনক্রীড়া কাউকে যাবজ্জীবন দন্ডে দন্ডিত করতে পারে। আদালতে রেফারেন্স হিসেবে ইন্ডিয়ান কোর্টের অবজারভেশন নিলে এই আইনটা একটা বিপদ হিসেবে দেখা দিতে পারে অনেকের জন্যই।
সমকাম বিষয়ক আইন পরিবর্তনের পথে সবচাইতে বড় বাধা হলো ধর্মীয় বিধি থেকে উত্থিত নৈতিকতা। ইন্ডিয়াতে ২০০৯ সালে হাইকোর্ট এই আইনটি অসাংবিধানিক ঘোষণা করলেও ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট সেই সিদ্ধান্ত রদ করে বিষয়টি আইনপ্রণেতাদের উপর ছেড়ে দেয় [৪]। বিষয়টি এখনও ওভাবেই আছে। যৌনক্রীড়া সংক্রান্ত নৈতিকতা ধর্মীয় অনুভুতির ওপর ছেড়ে দিলে সেটা কাটিয়ে উঠে এই আইনটি বাতিলের সম্ভাবনা সুদুর ভবিষ্যতে কম।
বাংলাদেশে ২০১৩ সাথে হেফাজতে ইসলাম কর্তৃক উত্থাপিত ১৩ দফা দাবির প্রথমটি ছিলো, [৫]
সংবিধানে ‘আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন এবং কোরান-সুন্নাহ বিরোধী সকল আইন বাতিল করতে হবে।
সরকার এই ধারাটার সাথে কখনোই বিরোধীতা করেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২রা জানুয়ারী ২০১৪ সালে সরকার কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন করবে না বলে নিশ্চিত করেছেন। [৬]
এই একই কথা আজকে আইনমন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন। [৭]
এটা সত্য হলে আওয়ামী লীগ সরকার সমকামি বিয়ে তো দুরের কথা সমকামি যৌনচর্চা সংক্রান্ত আইনটিও বাতিল করবে এরকম সম্ভাবনা নেই।
এলজিবিটির শেষ অক্ষর ট্রান্সজেন্ডার বা হিজড়া (সঠিক অনুবাদ হলো?) নীতিগতভাবে আলাদা লিঙ্গ হিসেবে বাংলাদেশে স্বীকৃতি পেয়েছে প্রায় বছর দুয়েক আগে। তখন সিদ্ধান্ত হয়েছিলো অফিসিয়াল কাগজপত্রে লিঙ্গ হিসেবে পুরুষ ও নারীর পাশাপাশি হিজড়া লিঙ্গ হিসেবে থাকবে। প্রায় দুই বছর পার হয়ে গেলেও এই নীতিমালা বাস্তবায়িত হয়েছে কিনা জানা যায়নি। বাস্তবায়িত কবে হবে এবং সেটার রোডম্যাপ কী সেই বিষয়টিও অজানা।
সূত্র
১। এলজিবিটি (উইকিএন্ট্রি)
২। দন্ডবিধির ৩৭৭ ধারা।
৩। লয়ার্স কালেক্টিভ
৪। ইন্ডিয়ার ৩৭৭ ধারা বিষয়ক উইকি এন্ট্রি
৫। হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা।
৬। যুগান্তর ২রা জানুয়ারী ২০১৪
৭। প্রথম আলো, ৩০শে জুন, ২০১৫
৮। হিজড়াদের স্বীকৃতি, ১১ই নভেম্বর ২০১৩
মন্তব্য
চায়নার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ১৯৯৭ সাল থেকে সমকামীতাকে আঈনী স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে । মানে দাড়াচ্ছে মুসলিম প্রধান দেশগুলাতে ( এবং ভারতে ) এই আঈন এখনো বেশ ভালোভাবেই বলবত এবং সব যায়গাতেই "প্রকৃতিবিরুদ্ধ" শব্দটা ব্যবহার করা হচ্ছে ।
প্রকৃতিবিরুদ্ধ শব্দটার আঈনী বেসিস কি ? সিম্পল উইকির রেফারেন্স থেকেই দেখা যাচ্ছে যে, সোশাল সিকিওরিটি এবং বাক স্বাধীনতার লিস্টে উপরে থাকা দেশ গুলার অধিকাংশেই ২-৪% এর কাছাকাছি এল.জি.বি.টি পপুলেশন রয়েছে । তার পরেও এই সার্ভের একটা কমন ক্রিটিসিজম হচ্ছে সামাজিক অবস্থানের কথা মাথাও রেখে এসব উন্নত দেশেও ( আঈনী স্বীকৃতি থাকা স্বত্ত্বেও ) অনেকে নিজেদের সেক্সুয়াল প্রেফারেন্সের কথা স্বীকার করতে লজ্জ্বা পায় [১] । তার মানে দাড়াচ্ছে এই সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি । পৃথিবীর ১-২% পপুলেশন যদি সমকামী হয়, তাহলে কি এই বিষয়টা কে আর প্রকৃতিবিরুদ্ধ বলা আইনসিদ্ধ ??
১। http://www.nber.org/papers/w19508
প্রথমত, সমকামীদের বিরোধীতায় মুসলিমদের একচেটিয়া আধিপত্য নেই। অমুসলীমপ্রধান যেসব দেশে এর বিরোধীতা করা হয় বা হয়েছে সেগুলোও ধর্মীয় ভিত্তিতে বিরোধীতা করা হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, আদালতে প্রকৃতিবিরুদ্ধ শব্দটার অর্থ বিচারক যেভাবে ব্যাখ্যা করবেন সেভাবেই হবে। বাংলাদেশে এটা ভারতের বিচারকদের রায় রেফারেন্স ব্যবহার করবে অথবা নিজেদের ব্যাখ্যা দাঁড় করাবে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
তারমানে বিবাহিত দম্পতি যদি পারস্পরিক সম্মতিক্রমে নিজেদের মধ্যে ওরাল/এনাল সেক্সে লিপ্ত হয়, ভারতীয় আদালতের এই মত অনুযায়ী তারাও অপরাধী! আর এই আইন এনফোর্স করবে কে/কারা?
Emran
ধরা যাক কাউকে আটকানো দরকার। সেই লোকের একটা গোপন ভিডিও বের করা হলো। তারপর তাকে আটকানোর জন্য এই আইনটার ব্যবহার করা হলো। সাউন্ডস ফ্যামিলিয়ার?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
দেশে কোনও প্রকৃতি নাই! প্রকৃতি মিডিয়ার সৃষ্টি!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
প্রকৃতি শব্দটাই নাসারাধর্মী। আই ব্লেম হুমায়ূন আহমেদ ফর দিস।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
যেসব দেশে সমকামি বিয়ে বৈধ হলো বা হয়েছে সেসব জায়গায় আগে বিয়ে বৈধ না থাকলেও সমকামি সম্পর্ক বৈধ ছিল। সামাজিকভাবে একটা পর্যায় পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য ছিল। সেটার ফলস্বরূপ তারা বিয়ে করার অধিকার পেয়েছে। আমাদের এখানে সম্পর্কই স্বীকৃত তো নয়ই বরং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ক্ষেত্রে অধিকার প্রতিষ্ঠা আর গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হওয়া তো অনেক দূরের ব্যাপার।
প্রকৃতির মাথায় কাঠাল রেখে যে কত লোক কতভাবে ভেঙ্গে খাচ্ছে ভাবলেই অবাক লাগে। এই শব্দটাও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বামাতিদের সাম্রাজ্যবাদ, হেজিমনি এই ধরণের শব্দের মতো অর্থহীন অর্থ ধারণ কয়রে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
সব সমাজের বিবর্তন হয় এবং এই বিবর্তনগুলো বিভিন্ন সংঘাতের মধ্য দিয়ে হয়। এই পরিবর্তনের ধারায় বিভিন্ন সমাজ বিভিন্ন স্তরে রয়েছে। কেউ একটু বেশি বিবর্তিত হয়েছে কেউ একটু পিছিয়ে রয়েছে। পিছিয়ে পড়া সমাজগুলোতে রাতারাতি বিপ্লব হবার কোন সম্ভাবনা নেই।
সাম্রাজ্যবাদ, হেজেমনি দর্শনশাস্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। সাম স্টুপিড এইসব নিয়ে লিখতে গিয়ে লেজেগোবরে করে ফেলেছে মানে এই না যে ঐ ধারণাগুলো অর্থহীন।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
****************************************
যেমন তুরষ্কে LGBT সম্পর্ক আইনত "স্বীকৃত" বা অনুমোদিত নয়, কিন্তু অবৈধ বা বাংলাদেশের মতো শাস্তিযোগ্যও নয় যদ্দুর জানি। কিন্তু কয়েকদিন আগে দেখলাম গে প্রাইড প্যারেড বা LGBT-দের মিছিলে পুলিশ আর সরকারি গুণ্ডারা পিপার স্প্রে আর পিটাপিটি করলো।
****************************************
সংঘাত মানে শুধু মারামারি সেরকমটা নয়। মতাদর্শিক সংঘাতও ধরতে হবে এর মধ্যে। সমাজে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা, তর্কবিতর্ক হয় এবং সেটার মাধ্যমে সিনথেসিসে পৌঁছানো সম্ভব।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
খিয়াল কইরা
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
এই কথাটা কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে খাটে না । কারন সনাতন ধর্মে এবং হিন্দু পূরানে সমকামীতাকে প্রমোট না করা হলেও কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় নি । নিচের লেখা দুটোর অথেনটিসিটি কনফার্ম করতে পারছি না, কিন্তু খুব ভুল কিছু কিন্তু বলা হচ্ছে না ।
দেখা যাচ্ছে সমকামীতাকে প্রকৃতিরই একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবে গন্য করে মেনে নেয়া হচ্ছে সনাতন ভারতে । আধুনিক ভারতে এসে বিজেপি ঘরানার দলগুলা হিন্দুইজমকে ( যা আসলে বিভিন্ন দর্শন আর সংস্কৃতির মিশেল ) আব্রাহামিক ধর্মগুলোর মত করে বাঁধাধরা নিয়মে আনতে চাইছে ।
১। http://history-of-hinduism.blogspot.com/p/homosexuality-and-hinduism.html
২। http://devdutt.com/blog/did-homosexuality-exist-in-ancient-india.html
============
মামুনুর রশীদ
Lesbian, gay, bisexual and transgender (LGBT) people in India face legal and social difficulties not experienced by non-LGBT persons. Sexual activity between two persons of the same sex is criminalised,[4][5] and is punishable by incarceration. India does, however, legally recognise Hijras as a gender separate from men or women, making the country one of the few in the world to legally recognize a third gender.
Homosexual intercourse was made a criminal offence under Section 377 of the Indian Penal Code, 1860. This made it an offence for a person to voluntarily have "carnal intercourse against the order of nature." In 2009, the Delhi High Court decision in Naz Foundation v. Govt. of NCT of Delhi found Section 377 and other legal prohibitions against private, adult, consensual, and non-commercial same-sex conduct to be in direct violation of fundamental rights provided by the Indian Constitution.
দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ আর ভারতে সেই ১৮৬০ এর আইন, একই আইন। পুরানের সৃষ্টি নৈতিকতা দিয়ে তো আর আধুনিক ভারত চলে না।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আমাদের দেশে চিহ্নিত করার পরের সমস্যা সামাজিক বৈষম্য ও অবহেলা। বিশেষত শিক্ষিত অংশের মাঝে এটা প্রকট। (প্রসঙ্গ তৃতীয় লিঙ্গ)
অলস সময়
অশিক্ষিতরা সুযোগের অভাবে সত অথবা আপনি তাদের কথা জানেন না। অশিক্ষিতরা শিক্ষিতদের চাইতে ভালো কিছু এটা মনে করার কোন কারণ নেই।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
সমকামীতা ব্যাপারটা যে মানসিক বিকৃতি না, প্রকৃতিগত ভাবেই আসে এই জিনিসটা বেশীরভাগ শিক্ষিত মানুষই জানেনা। আইনতো অনেক দূরের জিনিস, আইন করলেইতো আর সামাজিক স্বীকৃতি আসবেনা!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
জানেনা, না মানেনা? না জানলে জানতে একদিন লাগতো, না মানতে পাড়লে কিছু করার থাকেনা।
নতুন মন্তব্য করুন