সকাল থেকে ফেসবুকে একটা "খবর" ঘুরছে জাগোনিউজ২৪ (১) নামে এক সাইটের বরাতে। নিউজের প্রধান আলোচ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের কিছু অংশ।
জাগোনিউজে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী রোববার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন প্রসঙ্গ এনেছেন ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান শেষে প্রেসক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে দুই সংগঠনের নেতা ও সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তার বক্তৃতায়। যেমন, সুলতানা কামাল উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন,
...‘ভাস্কর্য সরানোর ফলে অনেকে ধর্মনিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে ধর্ম গেল গেল বলে চিৎকার করছেন। আন্দোলন করছেন। কেউ কেউ ভাস্কর্য সরালে মসজিদও সরাতে হবে এমন কথাও বলছেন।’
এরপর ইমরান সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন,
তিনি বলেন, ‘যাদের তিনি জিরো থেকে হিরো বানিয়েছিলেন তারা এখন আন্দোলন করছেন। তারা কী ভুলে গেছেন শাহবাগে তাদের যখন হেফাজতিরা তাড়া করেছিল তখন তাদের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাঁচিয়েছিল।’
এছাড়া নিউজ থেকে জানা যায়,
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মকে অস্বীকার করা নয়। শূকরের মাংস, মদ ও গাঁজা খেয়ে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা যারা বলেন, তারা পারভারটেড।’প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি অনেক অপমান সহ্য করেছেন। এখন যারা এর বিরোধীতা করছেন আর যারা পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তিনি দু’পক্ষের কারও পক্ষে থাকবেন না। তারা আগে মারামারি ও মল্লযুদ্ধ করে শক্তির পরীক্ষা করুক। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও এ ব্যাপারে দু’পক্ষ মুখোমুখি হলে কিছু করতে মানা করেছেন। দু’পক্ষের শক্তির পরীক্ষায় যারা আহত হবেন তাদের চিকিৎসা দেবেন।
যেকোন সুস্থ্য স্বাভাবিক মানুষের কাছেই এ ধরণের বক্তব্য আপত্তিকর মনে হবে। নিউজটি শেয়ার দিয়ে ফেসবুক বিপ্লবে ঝাঁপিয়ে পড়ার পড়ে চিন্তা করলাম দেখা যাক অন্য সংবাদ মাধ্যমগুলো কী বলছে। অবাক হয়ে খেয়াল করলাম অন্য কোন পত্রিকা বা সাইটে এই নিউজ নেই। ইফতার পার্টির নিউজ আছে। কিন্তু এসব বিস্ফোরক মন্তব্যের কিছুই নেই সেখানে। একটু গুগল করে দেখলাম এই লাইনগুলোর সোর্স জাগোনিউজই। বাকি যেসব অখ্যাত সাইটে এই বক্তব্যগুলোর উল্লেখ আছে সেখানে এই জাগোনিউজ থেকেই কপি-পেস্ট করে "নিউজ" করা হয়েছে। এক পর্যায়ে দেখলাম বিস্ফোরক মন্তব্যগুলো জাগোনিউজ থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। জাগোনিউজের আপডেট হিস্টোরি দেখে এটা নিশ্চিত হওয়া যায়,
জাগোনিউজ যে এসব মুছে ফেলেছে সেটার প্রমাণ গুগল সার্চ করে পাওয়া গেল। যেমন, সুলতানা কামালকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্যটি এখন মূল "নিউজ"-এ নেই, কিন্তু গুগল সার্চ বলছে ওটা ওখানে ছিল।
মদ, গাঁজা, শূকরের মাংস প্রসঙ্গটিও মুছে ফেলা হয়েছে যেটা আগে ছিল।
মল্লযুদ্ধের উল্লেখটিও এভাবেই মুছে ফেলা হয়েছে,
জাগোনিউজে এসমস্ত লেখা মুছে দেবার পর বাদবাকি যা আছে তা পোস্ট শেষের লিংক থেকে জানা যাবে।
আগেই বলেছি জাগোনিউজের "নিউজ" থেকেই এই কথাগুলো বাকিরা কপি পেস্ট করেছে। বহুবার শেয়ার হওয়া সাইটগুলোর মধ্যে রয়েছে, সময়ের কণ্ঠস্বর (২), সম্পাদক (৩), আমাদের সময় (৪)। কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন এরা একজনের কথা শুনে হুবহু লিখেছে বলে এক রকম হতেই পারে। এটা ইংরেজি ভাষায় কিছু লেখা থাকলে বোঝা শক্ত। কিন্তু আমার ব্লগিঙের অভিজ্ঞতা বলে বাংলায় কপি পেস্ট ধরা অনেক সহজ। একই বাক্য, একই বাক্যে একই বানান ভুল, স্পেসিং, যতি চিহ্নের ব্যবহার দেখে কপি পেস্ট করা হয়েছে কিনা বোঝা সম্ভব। কিছু উদাহরণ দেয়া যাক।
১।
জাগোনিউজের একটা প্যারা খেয়াল করা যাক,
এখানে ব্রাকেটের অংশটি, অর্থাৎ "(দেশের অভিভাবক)" বিষয়টি পরিষ্কার করতে রিপোর্টারের যোগ করা এটা আন্দাজ করা যায়। সম্পাদক, আমাদের সময় একই ভাবে লিখেছে।
২।
জাগোনিউজ এক প্যারায় এক লাইনে কোলন চিহ্ন ব্যবহার করেছে। বাংলায় এই যতিচিহ্নটি খুব বেশি ব্যবহৃত নয়। কয়েকজন আলাদা আলাদাভাবে একজনের বক্তব্য শুনে একইভাবে একটি কম ব্যবহৃত যতি চিহ্ন ব্যবহার করবে এটা সম্ভাবনা খুবই কম। উপরে উল্লেখ করা প্রতিটা সাইট জাগোনিউজের পুরো প্যারাগ্রাফ যতিচিহ্নসহ ব্যবহার করেছে।
এছাড়া প্যারাটিতে দ্বিতীয় বাক্যের শেষে একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন ব্যবহার হয়েছে যেটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন হওয়া উচিত ছিল। মাছিমারা কীবোর্ড সাংবাদিকেরা নিজেদের সাইটে সব হুবহু তুলে দিয়েছেন।
৩।
জাগোনিউজ কারেকশন করার সময় অন্তত একটা বানান ঠিক করেছে। "শাড়ি পড়ানো"কে তারা "শাড়ি পরানো" লিখেছে। অন্য সাইটগুলো "শাড়ি পড়ানো"ই রেখে দিয়েছে। গুগল ক্যাশেতে জাগোনিউজের অরিজিনাল বানান পাওয়া যায় না। তবে আওয়ামী লীগের এক নির্বাচনী পেইজে এটার কপি পাওয়া যায়।
খুব ভাল করে খেয়াল করলে এরকম আরও অনেক ছোট ছোট মিল পাওয়া যাবে যেটা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে এই "নিউজ"টির উৎপত্তি জাগোনিউজ এবং তাদের এসব বিস্ফোরক মন্তব্যগুলো মুছে দেয়া সন্দেহজনক।
এতক্ষণ যে আলোচনাটা হলো সেটা প্রধানমন্ত্রী কি এসব বলেছেন কিনা সেটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবার জন্য করা হয়নি। উপরের আলোচনাটা প্রধানমন্ত্রী এসব আসলেই বলেছেন কিনা সেই প্রশ্নটা উত্থাপনের জন্য করা হয়েছে। এই প্রশ্নটার উত্তর হ্যাঁ হতে পারে আবার না-ও হতে পারে। ফেকনিউজের এই যুগে একটা সাইটে কিছু প্রকাশিত হতে দেখা গেলেই সেটা বিশ্বাস করে প্রচার করাটা বিপদজনক হতে পারে। ছাত্রলীগের অফিসিয়াল সাইট, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী পেজ আওয়ামী লীগ সমর্থকদের আরেকটি জনপ্রিয় পেইজ নৌকায় ভোট দিন এই "নিউজ" শেয়ার করেছে। আশা করি তারা বা তাদের পেছনের কর্তাব্যক্তিরা এসব কথা প্রধানমন্ত্রী এসব কথা আসলেই বলেছেন কিনা সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সহায়তা করবেন।
ডয়েচে ভেলে (৮) ওখানে উপস্থিত ছিলেন এরকম কয়েকজনের বক্তব্য নিয়ে একটা নিউজ করেছে।
দৈনিক সমকালের সিনিয়র রিপোর্টার অমরেশ রায়ের বরাতে ডয়েচে ভেলে জানাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,
‘‘এখন ইসলামী দলগুলো জোট বাঁধুক৷ প্রগতিশীলরা তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াক৷ মল্লযুদ্ধ হোক৷ সেখানে বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু যাবেন৷ সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরও যাবেন৷ আমি শেষটা দেখব৷ বিপদে পড়লে যাব৷ আমি আর কত অপমানিত হব!''‘‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে হেফাজতকে জড়িয়ে মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন৷ কিন্তু তাদের মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেই তো এসব কথা বলা উচিত ছিল৷ এখন সুযোগ পেয়ে অনেকে লম্বা লম্বা কথা বলছেন৷''
সুলতানা কামাল প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,
ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এক উপদেষ্টার সাম্প্রতিক এক মন্তব্য সম্পর্কে বলেন, ‘‘ভাস্কর্যের সঙ্গে মসজিদের তুলনা কেন?''
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল ডয়চে ভেলেকে হেফাজত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য কোট করে বলেছেন,
জঙ্গিদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হলে আমাদের সেই প্রস্তুতি নিতে হবে৷ এরা যদি জঙ্গিদের সঙ্গে যেতো, তখন কী হতো! এখন এরা জঙ্গিবিরোধী কথা বলছে৷ এটাই আমাদের অর্জন৷ কওমি মাদ্রাসার সনদকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও এ দেশের সন্তান৷ তারাও সমাজের অঙ্গ৷ আমরা তাদের মূলধারায় এনেছি৷''
তিনি মদ গাঁজা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কী বলেছেন সেটার সাক্ষ্যও দিয়েছেন,
‘ধর্মনিরপেতা মানে ধর্মহীনতা নয়৷ ধর্ম অস্বীকার মানেই মুক্তচিন্তা ও আধুনিক হয়ে গেলাম– এটি ঠিক নয়৷ প্রগতিশীল মানেই ধর্মকে অস্বীকার করা– এ কেমন কথা! আমি এসবে বিশ্বাস করি না৷ প্রগতিশীল মানেই মদপান, গাঁজা টানা! এটি বিকৃত মানসিকতা৷ আমি ধর্ম মেনেই প্রগতিশীল হতে চাই৷''
এই কোটেশনগুলো একদম হুবহু মেলে না জাগোনিউজের বক্তব্যের সাথে এবং অফ দ্য রেকর্ড মন্তব্য স্মৃতি থেকে লিখতে হলে পার্থক্য হবে এরকমটাই স্বাভাবিক। তো, প্রতিটা শব্দ একদম না মিললেও ডয়েচে ভেলের রিপোর্ট থেকে পরিষ্কার জাগো নিউজে প্রকাশিত বক্তব্যের সাথে ডয়েচে ভেলেতে প্রকাশিত বক্তব্যের মূল ভাব একই।
১। হেফাজত ও ভাস্কর্য ইস্যুতে অবস্থান পরিষ্কার করলেন প্রধানমন্ত্রী
২। “ভুলে গেলে চলবে না আমি সবার প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা”
৩। [url=http://shompadak.com/2017/06/05/54376/ ]ভাস্কর্যের পক্ষের শক্তিকে ভর্ৎসনা করলেন প্রধানমন্ত্রী[/url]
৪। শূকরের মাংস, মদ ও গাঁজা খেয়ে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা যারা বলেন, তারা পারভারটেড : প্রধানমন্ত্রী
৫। [url=http://purboposhchimbd.news/2017/06/05/%e0%a6%b9%e0%a7%87%e0%a6%ab%e0%a6... ]হেফাজত ও ভাস্কর্য ইস্যুতে অবস্থান পরিষ্কার করলেন প্রধানমন্ত্রী
[/url]
৬। ছাত্রলীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ
৭। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী পেজ নৌকায় ভোট দিন
৮। প্রধানমন্ত্রীর মুখে ‘মল্লযুদ্ধ', ‘তিন মন্ত্রীর পদত্যাগ'
মন্তব্য
হলুদ সাংবাদিকতা বন্ধ হবে কবে?
প্রধানমন্ত্রী সেদিন ইফতার পার্টির আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে জাগো নিউজে ছাপা কথাগুলো বলেননি। তিনি এই কথাগুলো বলেছিলেন সাংবাদিক নেতাদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে। সাংবাদিক শ্যামল দত্তর প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথাগুলো বলেছিলেন। সেটাই জাগো নিউজ ছেপেছে। লেখাটা লেখার আগে সেদিন উপস্থিত কোন সাংবাদিকের সাথে কথা বলাটা উচিত ছিল।
সেদিন সাংবাদিকদের ইফতার পার্টিতে প্রধানমন্ত্রীর যে বক্তব্য জাগো নিউজে ছাপা হয়েছিল তা অসত্য বানোয়াট- যে তিনজন মন্ত্রীর নাম নিউজে এসেছে- তাদের তিনজনের কেউ কি এমন দাবী করেছেন? স্বয়ং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে জড়িয়ে জাগো নিউজ যে সংবাদ পরিবেশন করেছে- সেই নিউজ অসত্য হলে তথ্যমন্ত্রী কি বসে থাকতেন?
মহা প্রতাপশালী আওয়ামী সাংবাদিক নেতারা সেদিন ইফতার পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন। অনলাইনে ভাইরাল হওয়া নিউজটি তাদের চোখ এড়ানোর কথা নয়। জাগো নিউজ কোন এলেবেলে নিউজ সাইট নয়। দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এই নিউজ সাইটটি এতখানি আষাঢ়ে নিউজ তৈরি করে ফেলবে- তাও আবার সাংবাদিকদের ইফতার পার্টি নিয়ে- আর সাংবাদিক নেতারা সেটা বসে বসে দেখবেন? ওয়াল্টন পণ্যকে ভেজাল বলেই এক নিউজ সাইট সম্পাদক জেলের ঘানি টেনেছে। সেখানে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বানোয়াট নিউজ করেও কোথাও কোন চৈ চৈ নেই! প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ফেইসবুক কোন ব্যঙ্গ কৌতুক হলেই দেশের আনাচে-কানাচে থেকে লোকজনকে গ্রেফতার করা হয়। সেখানে জাগো নিউজের ধড়ে কয়টা মাথা?
১।
বাংলাদেশে মন্ত্রী বলেন দেশে আইএস বা আল কায়েদা নেই। পত্রিকা হেডিং সাজায় মন্ত্রী বলেছেন দেশে জঙ্গি নেই। কন্টেক্সট ছাড়া একটা বিচ্ছিন্ন লাইন উল্লেখ করে হিটপিয়াসী নিউজ যেখানে ট্যাবলয়েড চরিত্র বলে বিশ্বে পরিচিত সেটা বাংলাদেশে মূলধারা। এসবের হাজারটা উদাহরণ দেয়া যাবে। এসব করেও পত্রিকাগুলো করে খাচ্ছে। এবং সেগুলো মন্ত্রী মিনিস্টারদের চোখের সামনে দিয়েই হচ্ছে। সুতরাং মন্ত্রী বা সাংবাদিক নেতারা বসে থাকবেন না এরকমটা জোর করে বলা যাবে না।
২।
জাগোনিউজ এলেবেলে কিনা আমি শিওর না। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার মান ও এই মানের প্রত্যক্ষ ফল সংবাদমাধ্যমের মান নিয়ে আমার খুব উচ্চ ধারণা নেই। সব পত্রিকার খবরই যাচাই করে নেয়া নিরাপদ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
জাগো নিউজ ২৪ এ.কে.সি. প্রাইভেট লি. এর মালিকানাধীন। আর এ.কে.সি. প্রাইভেট লিমিটেড হল প্রাণ আরএফএল এর অধীনে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রয়াত সি.ই.ও. মেজর জেনারেল আমজাদ খানের সম্ভাব্য যুদ্ধপরাধী হওয়ার কাহিনী মনে হয় সবাই জানেন। প্রসঙ্গত, বর্তমান সি.ই.ও. কিন্তু উনার ছেলে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোথাকার কোন যদুমধু একটা স্ট্যাটাস দিলে তাকে শ্রীঘরে যেতে হয়, আর প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে বানোয়াট নিউজ করলে এই নিউজ পোর্টাল বা প্রাণ গ্রুপের অবস্থা কি হবে তা সহজেই অনুমেয়। যেহেতু আওয়ামী লিগের কেউ এইটা নিয়ে কোন আপত্তি করে নাই, এবং প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পেছনে যে উদ্দেশ্য ছিল, তা বেশ সফল ভাবেই উদ্ধার করা গেছে বলে মনে হয় (যেমন ফেইসবুকে এবং ছাগুব্লগে হেফাজতিদের উল্লাস), আমার কাছে মনে হচ্ছে প্রতিবেদনের সত্যতা আছে।
সেদিন প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের নিয়ে দরজা বন্ধ করে যে বৈঠক করেছেন সেখানে ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত সাম্প্রতিক হেফাজতী উত্থান নিয়ে প্রশ্ন করলে প্রধানমন্ত্রী জাগো নিউজে ছাপা কথাগুলো বলেন। এটা প্রমাণ করার মত কোন উপায় আপাতত নেই। সেদিন সেই বৈঠকে উপস্থিত সব সাংবাদিকই সেটা জানেন। আপনার পোস্ট পড়ে তাই কেবল হেসেছি। ক্ষমা করবেন, আপাতত প্রমাণ করতে পারছি না।
হাসির কারণ কী? জাগোনিউজেই আসলো আর কোথাও আসলো না - এই কারণে সন্দেহ হওয়ায় প্রশ্ন উত্থাপন করেছি বলে?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
জাগোনিউজেই আসলো আর কোথাও আসলো না এটি একটি অতন্ত্য যুক্তিযুক্ত প্রশ্ন। এই প্রশ্নের একটা সম্ভাব্য উত্তর পাবেন এই লেখায় https://womenchapter.com/views/21106
ওটার সম্ভাব্য উত্তর ঐ পোস্ট যেখান থেকে উৎপত্তি সেখানে আছে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আপনার জবাবটা ঠিক বুঝলামনা। একটু বুঝিয়ে বলবেন?
একটা থিওরি ঘুরছিল। সেখানে বলা হচ্ছিলো পিএমের মুখে কথা বসানোর সাহস কেউ করবেনা। এই প্রসঙ্গে আমার যুক্তি ছিল সমর্থকেরা দলীয় রাজনীতি হিসাবে পিএমের এই ধরণের বক্তব্য থাকবে এমনটা মনে করেন। কেউ এতে অস্বাভাবিকতা দেখেননি। আপনি আওয়ামী লীগের পেজগুলোতে গিয়ে দেখবেন এই সমর্থন। এটা যদি এরকম হতো যে খুব আনেক্সপেক্টেড তাহলে হয়তো নড়ে চড়ে বসতো কেউ।
বাংলাদেশের মিডিয়াতে ভুয়া খবর, না বুঝে খবর, মিসরিপ্রেজেন্টেশ্ন খুব কমন ঘটনা। সবগুলোতে সরকার ঝাঁপিয়ে পড়ে এরকমটা নয় কোনমতেই। সংক্ষেপে বলতে গেলে, এই কথাগুলো চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় কোন বড় বিচ্যুতি তৈরি করেনি বলেই কোন আলোড়ন প্রতিবাদ হয়নি।
আমরা আসলে এখন কী নিয়ে আলাপ বাড়াচ্ছি এটা আমি বুঝতে পারছি না।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আমি বিশ্বাস করতে চাই যে মানণীয় প্রধানমন্ত্রী এই কথাগুলো বলেননি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে উনার অবস্থান দেখে , অনেকেই এই কথা গুলো উনি বলতে পারেন বলে বিশ্বাস করবেন। এইটাই হতাশার।
আপনার লেখার আপডেট থেকে যে সিধান্তে উপনীত হলেন তারপর শিরোনামে প্রশ্নবোধক চিহ্ন আর আর ক্যাটেগরি/ট্যাগ থেকে ফেকনিউজ অপসারণ করাটাই কি যুক্তিযুক্ত নয়?
শিরোনামে প্রশ্ন থাকা সমস্যা নয়। কারণ প্রশ্নটা ভ্যালিড। পোস্টে উত্তর দেয়া হয়েছে। আপডেট দেয়া হয়েছে ৩ বার। একবার উত্তর, দুইবার ভুল তথ্য সঠিক করে দেয়া হয়েছে। লক্ষ্য করে দেখবেন ভুল তথ্য মোছা হয়নি। আপনি পড়তে গিয়ে বুঝবেন ওটা কারেক্ট করা হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, এটা একটা ফেকনিউজ সঙ্ক্রান্ত ইনভেস্টিগেশন। সুতরাং ট্যাগ বদলানোর দরকার নেই।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
যুক্তি এক - সহমত
যুক্তি দুই- ফেকনিউজ সঙ্ক্রান্ত ইনভেস্টিগেশন না হয়ে নিউজ সঙ্ক্রান্ত ইনভেস্টিগেশন হলেই ভালো হত। ইনভেস্টিগেশন শেষ হবার আগেই ফেক বা রিয়েল যে কোন দিকের সিধান্তই ট্যাগ হিসেবে দিয়ে দেয়া যুক্তিযুক্ত বলে মনে হচ্ছে না।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নতুন মন্তব্য করুন