কিছুদিন আগে ফেসবুক হুট করে আমাকে ১ দিনের জন্য মন্তব্য, স্ট্যাটাস, মেসেজ থেকে ব্লক করে দেয়। কারণ হিসাবে তারা আমার একটা মন্তব্যের কথা উল্লেখ করেছে যেটা নাকি তাদের কমিউনিটি স্টান্ডার্ডের সাথে যায় না। মন্তব্যটি দেখে আমি স্মরণ করতে পারিনি কবে মন্তব্যটি করেছি। তবে "মালাউন" শব্দটা দেখে ধারণা করি এটা গত বছর নাসিরনগরে সাম্প্রদায়িক হামলার সময়কার ঘটনা। তখন মন্ত্রী ছায়েদুল হকের বিরুদ্ধে হিন্দু সম্প্রদায়কে মালাউন গালি দেবার অভিযোগ ওঠে। আমার মন্তব্যটি সম্ভবত তখনকার সেই আলোচনার সূত্রে করা।
আমি প্রথমে ভেবেছিলাম আমি আপত্তিকর কিছু না বললেও ফেইসবুকের কোন স্ক্রিপ্ট হয়তো মালাউন শব্দটা আছে দেখেই মন্তব্য মুছে আমাকে এক দিনের জন্য ব্লক করেছে। আমার এই ধারণার সত্যতা যাচাই করতে ফেসবুকে মালাউন শব্দটা সার্চ করে প্রথমেই দুটো পোস্ট [১][২] পেলাম।
পোস্ট দুটির মন্তব্য অংশে ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত ও সাংবাদিক অভিজিৎ ভট্টাচার্য্যকে মালাউন বলা হয়েছে অনেক বার। সেসব মন্তব্য যেহেতু বহাল তবিয়তে আছে সেহেতু কোন স্বয়ংক্রিয় স্ক্রিপ্ট আমার মন্তব্য মোছেনি এই সিদ্ধান্তে আসা যায়।
বাঁশেরকেল্লার পোস্টদু'টি জামায়াতে ইসলামীর প্রচারণা কার্যক্রম ও তাদের সমর্থক গোষ্ঠীর দর্শন ও কার্যক্রমের একটি ছোট নমুনা বিধায় এখানে পোস্টদুটি ও সেখানে করা মন্তব্যগুলোর একটি ব্যবচ্ছেদ তুলে রাখছি।
শ্যামল দত্ত ও অভিজিৎ ভট্টাচার্য্যকে নিয়ে ২০ ও ২১ তারিখে জামায়াতে ইসলামী পরিচালিত বাঁশেরকেল্লা পেইজে সম্প্রতি পোস্টদুটি করা হয়েছে। দুটি পোস্ট মিলে প্রায় ১০ হাজার লাইক, সাড়ে সাতশত মন্তব্য এবং সাড়ে ছয় হাজারের বেশি শেয়ার। শ্যামল দত্ত ও অভিজিৎ ভট্টাচার্য্যকে নিয়ে যে দুইটি পোস্ট এসেছে সেগুলো ভোরের কাগজে ২০শে ডিসেম্বর তারিখে প্রকাশিত [৩] একটি সংবাদকে কেন্দ্র করে আনা হয়েছে। সেই খবরে মাদ্রাসা বইয়ে অশ্লীলতা এবং সেই বই সংশোধনে সরকারের ১৪ কোটি টাকা গচ্চা গেছে এমনটা বলা হয়েছে। মাদ্রাসা বইয়ের এই সংশোধনী নিয়ে কালের কণ্ঠও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে [৪] গত ২৯শে নভেম্বরে। কালেরকণ্ঠের খবর প্রকাশের পর বাঁশেরকেল্লায় সে পত্রিকার সম্পাদক বা রিপোর্টারকে নিয়ে কোন পোস্ট আসেনি। শ্যামল দত্ত ও অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য-এর নাম উল্লেখ করে পোস্ট দেবার সাম্প্রদায়িক দিকটি সহজেই অনুমেয়। এই অনুমান সঠিক প্রমাণিত হয় পোস্ট দুটির মন্তব্য অংশ ঘাঁটলে।
বাঁশেরকেল্লার পোস্ট বিধায় যথারীতি সেখানে সাম্প্রদায়িক গালাগালি, বিভিন্নভাবে হত্যার হুমকি দিয়ে মন্তব্য সেকশন ভরপুর। ফেইসবুকে নির্দোষ মন্তব্য করে ব্লক খেলেও দেখা যাচ্ছে বাঁশেরকেল্লার এসব পোস্ট/মন্তব্য ফেসবুক অ্যাডমিনদের চোখ এড়িয়ে যায়। এই বিষয়টা সাজিয়ে গুছিয়ে লিপিবদ্ধ করতে এই পোস্টে আমি নমুনা হিসাবে শ্যামল দত্তকে নিয়ে পোস্ট দুটির মন্তব্য অংশের আধেয় বিশ্লেষণ করবো। প্রায় সাড়ে সাতশত মন্তব্য থেকে যেকোন সুস্থ বিবেচনাতেই আপত্তিকর এরকম মন্তব্য/মন্তব্যের অংশ খুঁজে বের করে আপত্তিকর কন্টেন্টে ফেসবুকের সহনশীলতার একটা মাত্রা সম্পর্কে ধারণা দেয়াই এই পোস্টের উদ্দেশ্য। এটা করতে Facebook API ব্যবহার করে পোস্ট দুটির সমস্ত কন্টেন্ট ডাউনলোড করা হয়েছে।
সাড়ে সাতশতের অধিক মন্তব্য পড়ে মন্তব্যগুলোর আপত্তিকর অংশগুলো কয়েকটা ভাগে ভাগ করে দেখা যায়।
১। প্রথম ক্যাটাগরিতে অপেক্ষাকৃত নিরীহ মন্তব্যগুলো পড়ে। এই জাতীয় মন্তব্যে প্রচলিত বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা রেখে বিচার চাওয়া হয়েছে। যেমন Alam Husen নামে এক ভদ্রলোক বলেছেন,
অপরাধী শ্যামল দত্তের নামে ও রিপোর্টার অভিজিৎ এর নামে সারা দেশ ব্যাপী প্রত্যেক থানায় ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানার দায়ে মামলা করা হউক।অন্তত এই প্রতিবাদ টুকু মুসলিম হিসেবে করি
২। দ্বিতীয় প্রকার মন্তব্য এসেছে গালিসহ। এখানেও ভোরের কাগজের সম্পাদক ও সাংবাদিকের অনুমিত ধর্মবিশ্বাসের কারণে গালি দেয়া হয়েছে। যেমন মেসার্স এসএস বিজনেস নামের আইডি বলেছে,
বাঘের লেজ দিয়ে কান খাজজানুর পরিনাম জানিস শ্যামল কুওা তোর মুখ ছিরেফেলব তোর মার আচল কয়দিন তোকে ডেকেরাকবে বল বেশিদিন নাই তোমায় কেয়ামত এপর্যন্ত বেছে থাকবেনা মনেরাখিস তোদের এটুকু মনে করে দিলাম তোর সাহস কত
সাম্প্রদায়িক গালির একটা নমুনা দেখিয়েছেন Forat Al Hasan Fuad,
মালুর বাচ্চারা সময় থাকতে তোদের জন্মভূমি রেন্ডিয়ায় চলে যা।পরে কিন্তু.....
৩। তৃতীয় প্রকার মন্তব্যে সাংবাদিক এবং সম্পাদকের নাম হিন্দু ধর্মানুসারিদের মতো হওয়ায় ইন্ডিয়া চলে যাবার আহবান জানানো হয়েছে। এখানে স্মর্তব্য, কালের কণ্ঠে মাদ্রাসা পাঠ্যপুস্তক নিয়ে একটি নিউজ করলেও সেটা নিয়ে হৈ চৈ হয়নি। ভোরের কাগজের সাংবাদিকদের উপর আক্রমণের কারণ হিসাবে এই সাম্প্রদায়িক দিকটা কাজ করতে পারে। এরকম একটা মন্তব্যের উদাহরণ দেয়া যাক।
Abdul Mannan Jowel বলেছেন,
অাল্লাহর জমিনে থেকে প্রকাশ্যে কুরঅান হাদিসের বিরোধিতা করছ,সময় হলে তোদের মত বেয়াদব গুলোরে কোপাইয়া দেশ ছাড়া করা হবে ইন্ শাঅাল্লাহ্ ৷
৪। এরপরের প্রকারটি চিহ্নিত করা যায় শারীরিক আক্রমণের হুমকিসহ মন্তব্য। যেমন Mokter Howlader বলেছেন,
মালাউনের বাচ্চায় ইসলামের কি জানে।জুতা মার সালারে।
বলাবাহুল্য উপরের মন্তব্যটি সবচাইতে "ভদ্র" ভাষায় শারীরিক হুমকির উদাহরণ।
৫। শারীরিক হামলার ছাড়িয়ে সরাসরি হত্যার হুমকির সংখ্যাও কম নয় বাঁশেরকেল্লার পোস্টদুটিতে। এসব হত্যার হুমকি কীভাবে হত্যা করা হবে সেটার উল্লেখসহ করা হয়েছে। পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই এ ধরণের হুমকি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবার কথা।
জবাই, কুপিয়ে হত্যার হুমকির উদাহরণ দেয়া যায় Sheikh Israfilর মন্তব্য উল্লেখ করে,
কেউ না নিলে আমাদের নিতে হবে।ওদের গেটির রগ মোটা হয়ে গেছে।চা-পাতি বসাতে হবে।
একইভাবে Md Aiub Hossain বলেছেন,
এদের বিচার সরকার করবেনা,জনগণকেই এদের জবাই করে টুকরো টুকরো করে বিচার করতে হবে
চাপাতি, কোপের হুমকি ছাড়াও ফাঁসির দাবি অনেকেই তুলেছেন। যেমন Shahjahan Shobuj বলেছেন,
এই কুত্তার ফাঁসি চাই
ফাঁসি, জবাই, কুপিয়ে হত্যার হুমকির সাথে আগুণ দিয়ে পুড়িয়ে মারা হুমকিও বেশ কয়েকজনে দিয়েছেন। যেমন, Shihab Uddin Sobuz বলেছেন,
অভিজিৎ. অমল, বিমল. আর শ্যামলের মা হাসিনা সহ এই কাফের দের কে জ্যান্ত আগুনে পুড়িয়ে মারা উচিত।
উপরের যেসব মন্তব্যের প্রকার উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো কোন বিচ্ছিন্ন মন্তব্য নয়। প্রতিটা ধরণের মন্তব্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যক্তি করেছে। একটা চার্ট এঁকে কতো সংখ্যক ব্যক্তি বিভিন্ন প্রকার মন্তব্য করেছে সেটা দেখা যায়।
বাঁশেরকেল্লা শুরু থেকেই এই ধরণের হিংস্র সাম্প্রদায়িক জনগোষ্ঠীর একটা জোট হিসাবে ফেসবুকে নির্বিঘ্নে তাদের কাজকর্ম চালাচ্ছে। স্মরণ করা যেতে পারে এই পেইজ থেকেই বিএনপি জামায়াত জোটের জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন সংঘটিত হয়েছে। পেট্রোল বোমার রেসিপি, কীভাবে রেল লাইন উপড়ে ফেলতে হবে সেটার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ সত্ত্বেও ফেসবুক মডারেশন এসব সাম্প্রদায়িক, সন্ত্রাসী ও আক্রমনাত্মক পেইজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখছে।
১। ২০শে ডিসেম্বর, ২০১৭ তারিখে ফেইসবুকে বাঁশেরকেল্লার পোস্ট [ড্যাটা]
২। ফেইসবুকে বাঁশেরকেল্লার পোস্ট ২ [ড্যাটা]
৩। অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য, মাদ্রাসার বইয়ে অশ্লীলতা, ২০শে ডিসেম্বর, ২০১৭
৪। শরীফুল আলম সুমন, ২৪ লাখ বই বাতিল গচ্চা ১০ কোটি টাকা, কালের কণ্ঠ, ২৯শে নভেম্বর ২০১৭
আজকে আমার ব্লগিঙের ১ যুগ হলো। এ পর্যন্ত যারা আমার লেখা পড়েছেন তাদের সবাইকে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
মন্তব্য
ব্লগিং এর এই মাইলস্টোনের জন্যে শুভেচ্ছা।
আপনি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন। আপনি কি ফেসবুকে অভিযোগ জানিয়েছেন? উপরের পোস্টটির সারাংশের ইংরেজি অনুবাদ করে তাঁদের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন। এরকম বৈষম্যমূলক উদাহরণ আছে অজস্র। সম্প্রতি শুনলাম এক কানাডিয়ান ফ্রেন্ডের কাছে - সে একটি বর্ণবাদী গ্রুপ সম্পর্কে ফেসবুকে রিপোর্ট করার পর সেই গ্রুপে সেই অভিযোগটি প্রকাশিত হয়ে যায় - এর পর ট্রলরা তার জীবন দুর্বিষহ করে তোলে।
এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে পাবলিকভাবে সোচ্চার হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় মনে হয় নাই। গনবয়কটের মত কিছু করলে হয়ত কোনদিন তাঁদের টনক নড়বে।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
১। ধন্যবাদ।
২। ফেইসবুকে বিস্তারিত অভিযোগ জানানোর কোন ব্যবস্থা কি আছে? তারা একতরফা রায় দিয়ে দিচ্ছে। এখানে মুফতি সাইফুল্লাহ নামে একজনের একটা স্ট্যাটাস শেয়ার করি। এই স্ট্যাটাসটা একজন রিপোর্ট করেছিলেন। কাজ হয়নি।
ফেইসবুক উত্তর দিয়েছে এটা -
এরকম চর্চা আমার ধারণা ফেইসবুকে সিস্টেম্যাটিক।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
পোস্ট দুটো রিপোর্ট করেছিলাম। উত্তরগুলো তুলে রাখি।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
১ দিন-এর জন্য ব্লক করার পর যে ব্লক তুলে নিল, সেটাই কি স্বাভাবিক পদ্ধতি, মানে সতর্কীকরণ জাতীয় কোন ব্যবস্থা? না কি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আরো অনুসন্ধান চালিয়ে ব্লক তুলে নেয়? আপনি ফেসবুক-কে কিছু জানিয়েছেন?
"আজকে আমার ব্লগিঙের ১ যুগ হলো।" - অভিনন্দন!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
হ্যাঁ। একদিন ব্লক, এক মাস ব্লক। তারপর একেবারে ব্লক। এভাবেই চলে।
ধন্যবাদ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
অভিনন্দন।
তারমানে ফেসবুক মডারেশন প্রচুর ‘ম্যানুয়েলি’ করা হয়। ধারনা করি – ব্যবসা একটা ব্যাপার। ‘বাশের কেল্লায়’ লাইক বেশি – সুতরাং মাফ।
পোস্ট দুটো রিপোর্ট করেছিলাম। একদিন পর উত্তর এসেছে। বলাবাহুল্য পোস্টে উনারা আপত্তিকর কিছু খুঁজে পাননি।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
সারা বিশ্বে ২.২ বিলিয়ন অ্যাক্টিভ ব্যবহারকারীদের (পৃথিবীর জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ) জন্যে ৭৫০০ মডারেটর আছে ফেসবুকের - যাদের কাজে ধারাবাহিকতা নেই - মডারেটরদের সিদ্ধান্তের উপর কোন আপীল চলে না। https://www.propublica.org/article/facebook-enforcement-hate-speech-rules-mistakes
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
ফেসবুক আইএসের কন্টেন্ট মোছে। এটা প্রমাণ করে তাদের একটা কার্যকর মডারেশন আছে। কিন্তু তারা আল কায়েদার কন্টেন্ট মোছে না। জামাতের কন্টেন্টও তারা মোছে না। ৩ বছর আগে এটা নিয়ে একটা পোস্ট লিখেছিলাম নিজের ব্যক্তিগত ব্লগে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
জার্মানিতে মিলিয়ন ডলার জরিমানার ব্যবস্থা হচ্ছে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
ব্লগিং এর এক যুগ!! অভিনন্দন!!! আপনার ক্ষুরধার লেখনি আরও যুগ যুগ চালু থাকুক এই কামনা করি।
সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামত মানেই সেটা যে সঠিক নাও হতে পারে ফেসবুকের জমানায় এই বোধটুকু পুরোপুরিই লোপ পেয়েছে। জনপ্রিয়তা ফেসবুকের মূলচালিকাশক্তি, তাই ফেসবুকের কাছে কোন নৈতিক প্রতাশা করা যায়না । আপনার দেয়া বার চার্টটা আমার একবার করতে ইচ্ছা হইছিলো, অভিজিতদার মারা যাবার পর বিডিনিউজে বন্যা আপার লেখাটার নিচের ফেসবুক কমেন্টগুলা নিয়ে। আমার ধারনা শতকরার হিসাবে তা আপনার দেয়া ড্যাটার সাথে সামঞ্জস্যপূর্নই হতো।
-আতোকেন
লিংক
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
লিঙ্ক
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নতুন মন্তব্য করুন