[লিখতে চাই না, লিখতে চাই নি। অনেক ইচ্ছে করে লেখার, কিন্তু লেখা হয়ে ওঠে না। যাক, এটাও এতোদিন পর লিখতে চাই নি, অন্য একটা কিছু লিখতে চেয়েছিলাম...কী হলো কে জানে। তারপরও, কিছু তো লিখলাম। লিখতে গিয়ে একজনের কথা মনে পড়লো, গল্পটা যখন প্রথমে পড়ে তাকে বলেছিলাম, "গল্পটা পড়ে তোমার কথা মনে পড়ছিলো।" ভ্যাট! তবে, হ্যাঁ, অনুবাদ করতে গিয়ে ব্রুক শিল্ড অভিনীত 'দ্য ব্লু লেগুন'-ও মনে পড়ছিলো...আহা, সেই স্বর্ণকেশী সুন্দরী...বয়েস হচ্ছে, বয়েস হয়...]
সোমবার--এই লম্বাচুলো নতুন কিসিমের জীবটা তো দেখছি চলাফেরা করতেই দেবে না। সারাক্ষণই শুধু আশেপাশে ঘুরঘুর, ঘুরঘুর আর আমার পেছন পেছন হাঁটাহাঁটি। এসব একদম আমার ধাতে সয় না; কাছাকাছি কেউ থাকলেই বিরক্ত লাগে। ওটা অন্য প্রাণীগুলোর সাথে থাকলেই ভালো...মেঘ করেছে দেখি, পুবালি হাওয়াও বইছে; মনে হয় আমরা বৃষ্টিতে পড়বো...আমরা? আমি এই শব্দটা কই পেলাম-এটাতো ওই নতুন চিজটার মুখেই শোনা যায়।
মঙ্গলবার--বিশাল জলপ্রপাতটা দেখছি। আমার মতে, এটাই এখানকার সবচে সুন্দর জিনিস। নতুন জীবটা এটাকে দেখি নায়াগ্রা প্রপাত ডাকে-কেন বলে, তা অবশ্য কইতে পারি না। বলে এটাকে নাকি দেখতে নায়াগ্রার মতো লাগে। এটা একটা যুক্তি হলো, স্রেফ খ্যাপামি আর মূর্খামি! নিজে কোন কিছুর একটা যে-নাম দেবো, তার কোনো সুযোগ নেই। সামনে যা-ই পাবে, ওই নতুন চিজটা তার সবকিছুর নাম দিয়ে দেবে, আমি পাল্টা কিছু বলতেও পারি না। আর সবসময় একই কথা-ওটা দেখতে এরকম লাগে। এখানে দেখছি একটা ডোডো আছে। ওটা বলে যে-কেউ নাকি একনজর দেখলেই বুঝে যাবে যে ওটা "একটা ডোডোর মতো দেখতে।" নামটা রাখতেই হবে, বুঝতে পারছি। ভুরু কুঁচকে কুঁচকে ক্লান্ত হয়ে পড়লাম, আর ওতে কোন লাভও হয় না। ডোডো! কোনোদিক থেকেই ওটা আমার কাছে ডোডোর মতো লাগে না।
বুধবার--বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে একটা ছাউনি বানিয়ে নিয়েছি, কিন্তু তাতেও কি শান্তি আছে। ঢুকে পড়লো নতুন জীবটা। যখন ওটাকে ধাক্কা দিয়ে বাইরে বের করে দিতে চাইছি তখন ওটা যে-গর্তগুলো দিয়ে দেখে সেখান থেকে জল গড়িয়ে পড়তে লাগলো, আর ওর থাবার উল্টোদিক দিয়ে ওটা সেগুলো মুছে ফেললো, আর অন্য প্রাণীরা বিপদে পড়লে যেমন শব্দ করে, তেমনি একটা শব্দ করলো। ইশ, যদি ওটা কথা বলা না-ই জানতো, সারাক্ষণই ওটা শুধু কথা বলেই চলেছে। ওসব শুনতে বেচারা প্রাণীটার সস্তা ছটফটানি মনে হয়, যেন গানের মতো; কিন্তু আসলে এটা বোঝাতে চাই নি। মানুষের গলা এর আগে কখনো শুনি নি, আর এই স্বপ্নিল নীরবতার পরম স্তব্ধতায় অন্য কোন নতুন কি অন্যরকম শব্দ ঢুকে পড়লে আমার কানে বড্ড বাজে আর বেখাপ্পা সুরের মতো লাগে। আর এই নতুন শব্দটা আমার এতো কাছাকাছি; ঠিক আমার কাঁধের ওপর, এক্কেবারে কানের কাছে, একবার একদিকে, আরেকবার অন্যদিকটায়, আর আমি কম-বেশি দূরাগত শব্দ শুনেই অভ্যস্ত।
শুক্রবার--নামকরণটা বাড়াবাড়ি রকমে বেড়েই চলেছে, যাই করি না কেন। এই জায়গাটার একটা দারুণ নাম ঠিক করেছিলাম, নামটা বেশ সাঙ্গীতিক আর মিষ্টি ছিলো--নন্দনকানন। আমি নিজের মনেই ওটা বলতাম, কিন্তু সবার সামনে কক্ষনো না। নতুন জীবটা বলে এটায় শুধু বন আর পাহাড় আর প্রাকৃতিক দৃশ্য, আর তাই এটার সাথে বাগানের কোন মিল নেই। বলে এটা নাকি দেখতে পার্কের মতো, আর এটা দেখতে পার্ক ছাড়া আর কোন কিছুর মতোই লাগে না। এরপর, আমার সাথে কোন সলাহ্ না করেই ফস এটার নতুন নাম দিয়ে দিলো নায়াগ্রা জলপ্রপাত পার্ক। আচরণটা যথেষ্ট উদ্ধত, অন্তত আমার তো তাই মনে হলো। আর, এরইমধ্যে একটা সাইনবোর্ডও উঠে গেছে:
দূরে থাকুন
ঘাসজমি
জীবনটা আর আগের মতো আনন্দের নেই।
শনিবার--নতুন প্রাণীটা বড্ড বেশি ফল খায়। স্পষ্ট দেখছি, কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের রসদে টান পড়বে। ওফ, আবারো 'আমরা'-ওটা তো ওটার কথা; বলতে কি, ওটা আমারও কথা হয়ে গেছে, শুনতে শুনতে। যা কুয়াশা আজ সকালে। আমি নিজে এই কুয়াশায় বেরুই না। ওই নতুন প্রাণীটা বেরোয়। সব ঋতুতেই ওটা বাইরে বেরুবে, আর কাদামাটিমাখা পা নিয়ে ভেতরে এসে ঢুকবে। আর কথা বলে চলবে। জায়গাটা আগে কী আরামের আর শুনশান ছিলো।
রবিবার--ঝামেলা শেষ। এই দিনটা দিনদিন আরো বেশি কষ্টকর হয়ে উঠছে। গত নবেম্বরেই দিনটা বিশ্রামদিবস হিসেবে আলাদা করে রাখা হয়েছে। আগে তো হপ্তায় ছটা করেই পেতাম। আজ সকালে দেখছি নতুন প্রাণীটা নিষিদ্ধ গাছ থেকে আপেল পাড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
সোমবার--নতুন প্রাণীটা বলছে ওর নাম নাকি ইভ। ঠিক হ্যায়, আমার কোন আপত্তি নেই। বললো যখন ওকে চাইবো, তখন যেন এই নামেই ওকে ডাকি। বললাম এটা বড্ড লম্বা হয়ে গেলো। শব্দটাই তো এমন; নিঃসন্দেহে শব্দটা বেশ বড়, ভালোও আর বারবার বললেও সমস্যা নেই। ওটা বললো ওটা নাকি এটা নয়, ওটা নাকি সে। ব্যাপারটা বোধহয় সন্দেহজনক; কিন্তু আমার কাছে সবই সমান; সে কী এটা আমার কাছে কোন ব্যাপারই না শুধু যদি সে একা একা বাইরে বেরোয় আর কথা না বলে চুপ থাকে।
মঙ্গলবার--পুরো জায়গাটা সে জঘন্য নাম আর আপত্তিকর নামফলকে ভর্তি করে রেখেছে:
এদিকে ঘূর্ণি
এটা ছাগদ্বীপের রাস্তা
এই পথে হাওয়াগুহা
সে বলে সুযোগ থাকলে এই পার্কটা দারুণ একটা গ্রীষ্মাবাস হতো। গ্রীষ্মাবাস-তার আরেক উদ্ভাবন-স্রেফ ছেঁদো কথা, কোন অর্থ নেই। গ্রীষ্মাবাসটা কী? না বাবা, জিজ্ঞেস না করাটাই ভালো হবে, কোন কিছু বুঝিয়ে বলতে গেলে সে যা রাগটা করে।
শুক্রবার--জলপ্রপাতের কাছে না যাওয়ার জন্যে সে রীতিমত আমার কাছে কাকুতিমিনতি করলো। ওতে ক্ষতি কী? বলে তাতে নাকি তার হাতপা কাঁপে। বুঝি না কেন; সবসময়ই তো কাজটা করে আসছি--অসম্ভব ভালো লাগে ওখানে ঝাঁপ-দেওয়া, আর ঠান্ডা ভাবটা। আমি তো মনে করতাম জলপ্রপাতগুলো এজন্যেই তৈরি। আর অন্য কোন কাজ তো ওগুলোর চোখে পড়ে না, আর নিশ্চয় ওগুলো কোন না কোনকিছুর জন্যে বানানো হয়েছে। সে বলে ওগুলো শুধু শোভার জন্যে বানানো হয়েছে--যেমন বানানো হয়েছে গন্ডার আর ম্যাস্টোডোনদের।
একটা পিপেয় করে জলপ্রপাতটা পার হলাম, ওর ভালো লাগলো না। একটা গামলায় চড়ে পেরুলাম-তাও খুশি হলো না। ডুমুরপাতার পোশাকে ঘূর্ণি আর তীব্র জলস্রোতে সাঁতার কাটলাম। এতে করে পোশাকের বারোটা বাজলো। তাতেও ক্রমাগত ঘ্যানঘ্যান, আমি নাকি বড্ড খরুচে। এখানটায় আমি খুব বাজে আছি। একটা পরিবর্তন দরকার।
শনিবার--গত মঙ্গলবার রাতে পালালাম, দুদিন ধরে হেঁটেছি, গোপন একটা জায়গায় এসে আরেকটা আস্তানা বানিয়ে নিয়েছি, পেছনের চিহ্নগুলো যথাসম্ভব ফেলেছিলাম মুছে, কিন্তু সে আমায় তার পোষ-মানানো নেকড়ে নামের একটা প্রাণীর সাহায্যে খুঁজে বের করেছে আমায়, আর আবারো শুরু করেছে সেই করুণ আওয়াজ, আর তার দেখার জায়গা দিয়ে জল-ঝরানো। ওর সাথে যাচ্ছি এখন ঠিক আছে, কিন্তু সুযোগ পেলেই ভাগবো। নানা হাবিজাবি জিনিসে সে ব্যস্ত; যেমন এখন; সে গবেষণা চালাচ্ছে কেন সিংহ আর বাঘ নামের প্রাণীগুলো ঘাস আর ফুল খেয়ে বাঁচে, যখন, তার মতে, তাদের দাঁতগুলো দেখলেই বোঝা যায় সেগুলো একে অন্যকে খাওয়ার উদ্দেশ্যে বানানো। গাধামির চূড়ান্ত, কারণ এর মানেই তো তাহলে তারা একটা অন্যটাকে মেরে ফেলবে, আর এর ফলে নেমে আসবে, আমি যেটা বুঝি, যাকে বলে 'মৃত্যু', আর মৃত্যু, আমি যেমনটা শুনেছি, এখনো পার্কে হাজিরা দেয় নি। ঘটনাটা কিছু কিছু ক্ষেত্রে দুঃখজনক বটে।
রবিবার--ঝামেলা সারলাম।
সোমবার--এখন বুঝলাম হপ্তার দিনগুলি কী জন্যে: রবিবারের ক্লান্তি থেকে বাঁচার জন্যে বাকি দিনগুলো। চিন্তাটা খারাপ ছিলো না...সে দেখি আবারো গাছটায় ওঠার চেষ্টা করছে। ওটা থেকে তাকে হিঁচড়ে নামালাম। সে বললো কেউ দেখছে না তো। মনে হয় এই যুক্তিতে সে যে কোন বিপজ্জনক কাজ করে ফেলতে পারে। বললাম তাকে কথাটা। যৌক্তিকতা শব্দটা তার নজর কাড়লো--আর, বোধহয় তার ঈর্ষাও হলো, আমি যতটা বুঝলাম। শব্দটা ভালো কিন্তু।
মঙ্গলবার--সে আমায় বললো যে আমার পাঁজরার একটা হাড় নিয়ে তাকে বানানো হয়েছে। এটা তো নিদেনপক্ষে সন্দেহজনক, আর কিছু যদি নাও হয়। আমার পাঁজরার কোন হাড় খোয়া যায় নি...বাজার্ডটা নিয়ে সে খুব ঝামেলায় আছে; বলছে ওটার সাথে ঘাসটা ঠিক মানায় না; ভয় পাচ্ছে ওটা সে ঠিক পুষতে পারবে না; ভাবছে ওটার জন্মই নাকি হয়েছে পচা মাংস খাওয়ার জন্যে। যা আছে বাজার্ডটাকে তার সাথেই মানিয়ে নিতে হবে। বাজার্ডের সুবিধের জন্যে তো পুরো ব্যবস্থাটা উল্টে দেওয়া যায় না।
শনিবার--গতকাল সে নিজেকে দেখতে দেখতে, সবসময় সে কাজটা করে, পুকুরে পড়ে গেছিল। প্রায় দম আটকে মরতেই বসেছিল, আর বললো ওটা নাকি ভারি অসোয়াস্তির। এতে করে যেসব প্রাণী ওখানে থাকে, যেগুলো সে মাছ বলে ডাকে, তাদের জন্যে তার ভারি চিন্তা হলো, সে তো সবকিছুরই নাম দিয়েই যাচ্ছে যাদের ওসবের কোন দরকার নেই আর ওসব নামে ডাকলেও তারা আসে না, তাতে করে তার কোন প্রতিক্রিয়াও হয় না, এতোটাই মাথামোটা সে, যাগগে; তাই সে ওদের একগাদা তুলে আনলো আর গত রাতে ঘরে নিয়ে এলো আর আমার বিছানায় রাখলো যাতে করে ওগুলো গরম থাকে, কিন্তু আমি ওগুলো তখন থেকেই দেখছি আর তারপর সারা দিন ধরে আর দেখে মনে হচ্ছে না আগের চাইতে ওগুলো বেশি সুখে আছে, স্রেফ আগের চাইতে অনেক ঠান্ডা মেরে গেছে। রাত নামলে ওগুলো বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেবো। ওগুলোর সাথে আর ঘুমুবো না, কারণ গায়ে কিছু না রেখে ওগুলোর সাথে ঘুমুলে খুব চটচটে আর অসোয়াস্তি লাগে।
রবিবার--কাটিয়ে দিলাম।
মঙ্গলবার--এবার তাকে পেয়েছে একটা সাপে। অন্য প্রাণীগুলো খুশি, কারণ সে সারাক্ষণই তাদের সাথে একটা না একটা পরীক্ষা চালাচ্ছে আর জ্বালিয়ে মারছে; আর আমি খুশি কারণ সাপটা কথা বলতে পারে, আর এতে করে আমি একটু বিশ্রাম পাচ্ছি।
শুক্রবার--সে বললো সাপটা তাকে বলেছে ওই গাছটার ফল খাওয়ার জন্যে, আর বলে যে এতে করে অসাধারণ আর চমৎকার আর মহান এক শিক্ষা পাওয়া যাবে। আমি তাকে বললাম এতে করে আরেকটা ব্যাপারও হবে---দুনিয়ায় মৃত্যু নেমে আসবে। বলে ভুল হলো-কথাটা আমার নিজের কাছে রাখাই ঠিক ছিলো; ওতে করে তার মাথায় নতুন ধান্দা ঢুকলো--তাহলে সে অসুখে-পড়া বাজার্ডটা বাঁচাতে পারবে আর পোষা বাঘ আর সিংহগুলোকে টাটকা মাংস খাওয়াতে পারবে। তাকে উপদেশ দিলাম সে যেন গাছটা থেকে দূরে থাকে। সে বললো সে থাকবে না। বিপদের আলামত দেখছি। পালাবো।
বৃহস্পতিবার--আগে বড় বর্ণিল সময় কাটাতাম। পালিয়েছি গত রাতে, চড়ে বসেছি একটা ঘোড়ায়, সারারাত চালিয়ে যতদূরে পারি সরে গিয়েছি, আশা ছিল ঝামেলাটা বাধার আগে পার্ক থেকে যথাসম্ভব দূরে সরে অন্য কোন দেশে চলে যাওয়ার; কিন্তু তা কি আর হয়। সূর্য ওঠার প্রায় ঘন্টাখানেক পরে, হাজারো জানোয়ারে ঠাসা একটা ফুলভরা সমতল জায়গায় ঘোড়া চালাচ্ছি যেখানে ওগুলো কোনটা ঘাস খাচ্ছে, কোনটা গা এলিয়ে পড়ে আছে, কিংবা খেলা করছে অন্যগুলোর সাথে, তাদের মর্জিমাফিক, আচমকাই সবকটা যেন ভয়ার্ত চিৎকারের একটা ঝড়ের ভেতর পড়ে গেলো, আর চোখের পলকেই সমতল ভূমিটা পাল্টে গেলো ভয়াবহ রণক্ষেত্রে আর প্রতিটা পশুই ধ্বংসোৎসবে মেতে উঠে হত্যা করছে তার পাশের জনকে। বুঝে গেলাম কী ঘটেছে--ইভ ফলটা খেয়েছে, আর দুনিয়ায় নেমে এসেছে মৃত্যু...বাঘগুলো আমার আস্তানাটা গুঁড়িয়ে দিলো, থামতে বললাম, আমার কথায় কানই দিলো না, আর আমি থাকলে খেয়ে নিতো আমাকেও-থাকি নি আর, তবে তাড়াতাড়ি ছুটে পালালাম...এই জায়গাটা খুঁজে পেয়েছি, পার্কের বাইরে এটা, কটা দিন বেশ আরামে ছিলাম, কিন্তু সে আমায় খুঁজে বের করে ফেলেছে ঠিক। বের করে ফেলেছে, আর জায়গাটার নাম রেখেছে টোনাওয়ান্ডা--বলে ওটা নাকি দেখতে ওরকম লাগে। ওর আসায় আমার কষ্ট বাড়লো, কারণ খাওয়ার মতো জিনিস এখানে বেশ কম, আর সে বেশ কিছু আপেল নিয়ে এসেছে। খেতেই হলো, এতো খিদে পেয়েছিলো। আমার নীতিবিরুদ্ধ কাজ এটা, কিন্তু দেখলাম ভরপেট না থাকলে আদর্শের আসলে কোন জোর থাকে না...সে নিজেকে লতাপাতা আর ডালপালা দিয়ে ঢেকে রেখেছে, আর যখন প্রশ্ন করলাম এই আজব কাজের মানে কী, আর কেড়ে নিলাম ওগুলো আর ছুঁড়ে ফেললাম মাটিতে, সে খিলখিল করে হেসে উঠলো আর লাল হয়ে গেলো। কাউকে এরকম লাজুক হাসতে আর লাল হয়ে যেতে দেখি নি কখনো আগে, আর আমার কাছে পুরো ব্যাপারটাই কেমন বেখাপ্পা আর বেকুবি মনে হলো। সে বললো খুব শিগগিরই আমি জানবো আমি নিজে কেমন ছিলাম। কথাটা মিছে নয়। খিদে লাগায়, আমি আপেল আধ-খাওয়া অবস্থায় রাখলাম-আমার দেখা সেরা আপেল ওটা, ঋতুর শেষদিকটা হিসেব করলে-আর নিজেকে আমি এলোমেলো লতাপাতা আর ডালপালা দিয়ে ঢেকে নিলাম, আর তার সাথে বেশ একটু কর্কশ গলায় কথা বললাম আর হুকুম দিলাম সেও যেন আরো কিছু নিয়ে আসে আর নিজেকে যেন তামাশার জিনিসে পরিণত না করে। সে কাজটা করলো, আর এরপর আমরা লুকিয়ে জানোয়ারগুলো যেখানে লড়াই করেছিলো, সেখানে গেলাম, আর কিছু চামড়া কুড়োলাম, আর কয়েকটা মিলিয়ে তাকে সবার সামনে যাওয়ার উপযোগী করে কটা পোশাক বানিয়ে দিলাম। ওগুলো গায়ে লাগে বটে, তবে কায়দার পোশাক বটে, আর কাপড়ের ওটাই তো আসল ব্যাপার...মনে হচ্ছে সঙ্গী হিসেবে সে খারাপ না। বুঝতে পারছি ওকে ছাড়া আমি একাকী আর বিষণ্ন হয়ে পড়বো, এখন তো আর আমার সম্পত্তি কিছুই নেই। আরেকটা জিনিস, সে বলছে হুকুম দেওয়া হয়েছে যে আমাদের এখন থেকে কাজ করে খেতে হবে। সে কাজে আসবে। আমি দেখভাল করবো।
দশ দিন পর--সে আমাদের দুর্যোগের জন্যে দায়ী করছে আমায়! সে বলছে যে, যথেষ্ট আন্তরিকতা আর সততা নিয়েই, শয়তান তাকে নিশ্চিত করেছিলো যে নিষিদ্ধ ওই ফলটা আপেল না, আসলে চেস্টনাট ছিলো। আমি বললাম আমি নিরপরাধ তাহলে, কারণ, আমি কোন চেস্টনাট খাই নি। সে বললো শয়তান তাকে জানিয়েছে যে 'চেস্টনাট' একটা আলঙ্কারিক শব্দ যার আসল অর্থ একটা পুরনো আর বাসি কৌতুক। তাতে করে আমি বিবর্ণ হয়ে গেলাম, কারণ ক্লান্ত সময় কাটানোর জন্যে আমি অনেক কৌতুক বানিয়েছিলাম, আর কিছু কিছু ওই ধাঁচের হতে পারে বটে, কিন্তু প্রথম যখন বানিয়েছিলাম তখন যে সেগুলো টাটকা ছিলো, তাতে কোন ভুল নেই। সে জিজ্ঞেস করলো ওই প্রলয়ের সময় আমি কোন কৌতুক বানিয়েছিলাম কি-না। স্বীকার করলাম যে একটা বানিয়েছিলাম বটে, কিন্তু সেটা নিজের কাছেই রেখেছি, চেঁচিয়ে জানাই নি। ওটা ছিলো এরকম। ভাবছিলাম জলপ্রপাতটা নিয়ে, আর নিজেকেই বলছিলাম, "এতোটা জল গড়িয়ে পড়াটা দেখতে কী সুন্দর লাগে!" আর ঠিক তখনই মাথায় একটা যেন বিজলি খেলে গেলো, আর আমিও ওটা ওড়ালাম হাওয়ায়, বললাম, "আরো মজা লাগতো যদি জলটা ওপরে উঠে যেতো!"-আর আরেকটু হলে হেসে খুনই হয়ে যেতাম যদি না ঠিক সেই সময়ই সারা প্রকৃতিই লড়াই আর মৃত্যুতে মেতে উঠতো আর আমিও পালাতাম আমার প্রাণ নিয়ে। "এইতো", সে জয়ের ভঙ্গিতে বললো, "এইতো পেয়ে গেলাম; ঠিক এই কৌতুকটার কথাই সাপটা বলছিল, আর এর নাম দিয়েছিলো প্রথম চেস্টনাট, আর বলেছিলো এর সাথেসাথেই আসবে সৃষ্টি।" হায়রে, আমারই দোষ। এতোটা বুদ্ধি যদি না-ই থাকতো; ওঃ, অতোটা চটপটে যদি না-ই হতাম।
পরের বছর--সে ওটার নাম দিয়েছে কেইন। আমি যখন এরি হ্রদের উত্তর দিকের পাড় ধরে হাঁটতে গেছিলাম তখন সে ওটা ধরেছে; আমাদের গুহা থেকে মাইলদুয়েক দূরে জঙ্গলের ভেতর-বা ওটা চারমাইলও হতে পারে, সে ঠিক নিশ্চিত নয় কোনটা ঠিক। কিছু কিছু দিকে ওটার সাথে আমাদের মিল আছে, আর হয়তো কিছুটা সম্পর্কও আছে। সে ওটাই ভাবে, কিন্তু, ভাবনাটা ভুল, আমার হিসেবে। মাপের তফাতটা দেখলেই তো বোঝা যায় যে এটা আলাদা আর নতুন জাতের একটা প্রাণী-মাছ হবে বোধহয়, যদিও আমি যখন ওটাকে নিয়ে জলে নেমে ওটাকে জলে রাখলাম, ওটা ভাসছিলো, আর তখন সে জলে ঝাঁপিয়ে পড়লো আর আমার পরীক্ষা শেষ করে ওটার জাত চেনার আগেই ওটাকে ছিনিয়ে নিলো। আমার এখনও ধারণা ওটা মাছই, কিন্তু যেটাই হোক ওতে তার কিছু আসে যায় না, আর সে আমায় ওটা নিয়ে কোন কিছু করতেই দেবে না। আমি এটা বুঝলাম না। ওই প্রাণীটা আসার পর থেকে তার পুরো স্বভাবটাই পাল্টে গেছে আর পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যাপারে তার যথেষ্ট যুক্তিহীন মনোভাব দেখা দিয়েছে। অন্য জানোয়ারের চাইতে সে এটা নিয়ে বেশি মাথা ঘামায়, কিন্তু কেন যে করে তার কোন ব্যাখ্যা দিতে পারে না। তার মনটা এলোমেলো হয়ে গেছে-সবকিছুতেই ওটা টের পাচ্ছি। আধোরাতে যখন মাছটা প্রতিবাদ করে আর জলে ফিরে যেতে চায় তখন সে ওটা নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। কখনো কখনো ওটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে তার দেখার জায়গা থেকে জল তার মুখে এসে পড়ে, আর সে মাছটার পিঠ চাপড়ায় আর ওটাকে শান্ত করার জন্যে মুখে নরম নরম শব্দ করে, আর দুঃখ আর নির্জনতা দূর করার হাজারো উপায় বের করে। আর কোন মাছ নিয়ে এহেন কাণ্ড তাকে আমি করতে দেখি নি, আর এতেই আমার মাথা গুলিয়ে যায়। সে সম্পত্তি হারানোর আগে এভাবে বাঘের বাচ্চাগুলো নিয়ে খেলতো বটে, কিন্তু সেটা স্রেফ খেলাই ছিলো; কারোর খাবার নিয়ে কোন আপত্তি থাকলে তাকে এভাবে তাদের নিয়ে পড়ে থাকতে দেখি নি কখনো।
রবিবার--কাজটাজ কিচ্ছু করে না সে, রবিবারে, শুধু ক্লান্ত হয়ে শুয়ে থাকে, মাছটা তার শরীরের ওপর চড়ে বেড়ায়, আর সে ওটাকে খুশি করার জন্যে বোকা বোকা আওয়াজ করে, আর ওর থাবাটা কামড়ানোর ভঙ্গি করে, আর তাতে করে ওটা হাসে। আমি এরকম হাসতে-পারা মাছ আর দেখি নি। এতে করে আমার সন্দেহ হয়...রবিবারগুলো ভালো লাগতে শুরু করেছে। গোটাহপ্তা ধরে কাজ তদারকি করে যা কাহিল লাগে। আরো রবিবার থাকা উচিত। আগের দিনগুলোয় ওগুলো কাটানো বেশ কঠিন ছিলো, কিন্তু এখন বেশ সড়গড় হয়ে গেছে।
বুধবার--ওটা মাছ না। এখনো ঠাউরে উঠতে পারছি না ওটা আসলে কী। মনমাফিক না হলে ওটা অদ্ভুত শয়তানি শব্দ করে, আর খুশি হলে বলে "গু-গু"। ওটা আমাদের কেউ না, কারণ, ওটা হাঁটে না; ওটা পাখি না, কারণ ওটা ওড়ে না; প্রাণীটা ব্যাঙও না, কারণ ওটা লাফায় না; ওটা সাপ না, কারণ বুকে চলে না; মোটামুটি নিশ্চিত যে ওটা মাছ না, কিন্তু ওটা সাঁতরায় কি-না তাও পরখ করে দেখা যাচ্ছে না। ওটা শুয়ে থাকে প্রায় সময়ই, প্রায়ই পিঠের ওপর ভর করে, পাগুলো থাকে ওপরে তোলা। কোনো জানোয়ারকে ওরকম করতে কখনো দেখি নি। বলেছিলাম যে আমার মনে হয় ওটা কোন একটা ধাঁধা; কিন্তু সে না বুঝেই কথাটা মেনে নিলো। আমার ধারণা ওটা একটা ধাঁধা বা কোন রকমের পোকা। যদি এটা মারা যায়, আমি ওটাকে দূরে নিয়ে দেখবো ভেতরটায় কী আছে। কোন কিছু আমায় এতোটা ধন্দে ফেলে দেয় নি কখনোই।
তিন মাস পর--গোলমাল কমার বদলে আরো বেড়েছে। আমার ঘুম খুব কমে গেছে। শুয়ে থাকার বদলে ওটা সবখানে এখন চারপায়ে ঘুরে বেড়ায়। তারপরও অন্য চারপেয়ে পশুগুলোর চাইতে এটা আলাদা, কারণ এটার পাগুলো অসম্ভব ছোট, এতে করে তার শরীরের ওপরের অংশটা অস্বস্তিকরভাবে উঁচু হয়ে থাকে, আর এতে করে ওটা দেখতে ভালো লাগে না। এটার গড়ন অনেকটা আমাদের মতোই, কিন্তু এর চলার ধরন দেখলেই বোঝা যায় এটা আমাদের বংশধর না। সামনের ছোট পা আর পেছনের লম্বা পা নির্দেশ করে এটা ক্যাঙারু গোত্রের প্রাণী, কিন্তু ওই প্রজাতির একটা উজ্জ্বল ব্যতিক্রম এটা, কারণ আসল ক্যাঙারু লাফায়, কিন্তু এটা কখনো সে-কম্মো করে না। তারপরও এটা একটা বেশ কৌতূহলজাগানিয়া আর আশ্চর্য ব্যতিক্রম বটে, আর এর আগে এর কখনো শ্রেণীকরণ হয় নি। যেহেতু আমি এটা আবিষ্কার করেছি, এর নামের সাথে আমার নামটা জুড়ে দেওয়ার কৃতিত্বটা আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয়েছে, তাই এর নাম দিলাম ক্যাঙারুরাম এ্যাডামিয়েনসিস...যখন এটাকে পাওয়া যায় তখন নিশ্চয় এটা ছোট ছিলো, কারণ আসার পর থেকে এটা বেশ বেড়ে উঠেছে। আগের চাইতে প্রায় পাঁচগুণ বড় হয়ে উঠেছে এটা, আর বেখুশি হলে আগে যেমনটা আওয়াজ করতো, তার চাইতে প্রায় বাইশ থেকে আটত্রিশ গুণ বেশি শব্দ এখন ওটা করতে পারে। জোর করে এটার স্বভাব বদলানো যায় না, বরং উল্টোটা হয়। তাই ব্যবস্থাটা বাদ দিলাম। সে ওটাকে বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করে, আর যেগুলো সে ওটাকে দেবে না বলে আমায় আগে বলেছিলো সেসব জিনিসই দেয়। আমি খেয়াল করেছি, যখন ঘরে ফিরে এসেছি তার আগে এটা ছিলো না, আর সে আমায় জানিয়েছে যে, সে এটা বনে খুঁজে পেয়েছে। এরকম স্রেফ একটাই থাকাটা অস্বাভাবিক, কিন্তু বোধহয় ঘটনাটা আসলেই তাই, কারণ কয়েক হপ্তা ধরে বন চষে বেরিয়েও আমার সংগ্রহে আরেকটা যোগ করতে পারি নি, যাতে করে আমি ওটা নিয়ে খেলতে পারি; তাহলে নির্ঘাৎ ওটা আরো শান্ত হয়ে যেতো আর আমরাও ওটাকে আরো সহজে পোষ মানিয়ে নিতে পারতাম। কিন্তু আমি একটাও পেলাম না, না কোন টুকরো; আর সবচে আশ্চর্য, না কোন চিহ্ন। ওটা নিশ্চয় মাটিতে থাকবে, ওটা নিজে নিজে দাঁড়াতে পারে না; তাহলে, মাটিতে কোন ছাপ থাকবে এটা কেমন করে হয়? প্রায় ডজনখানেক ফাঁদ পেতেছি, ফলাফল শূন্য। ওটা ছাড়া আর যত ছোট প্রাণী আছে সব ধরা পড়েছে; জানোয়ারগুলো বোধহয় ফাঁদগুলোতে শুধু কৌতূহলের বশেই যায়, দেখতে যায় ওখানে দুধ রাখা হয়েছে কেনো। কোনোটাকে তো কখনো দুধ খেতেই দেখলাম না।
তিন মাস পর--ক্যাঙারুটা এখনো বড় হচ্ছে, ব্যাপারটা বড় আজব আর মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো। কিন্তু এতোদিন ধরে বড় হয় এমনটা দেখি নি কখনো। এটার মাথায় লোম গজিয়েছে; ঠিক ক্যাঙারুর লোমের মতো না, বরং আমাদের চুল আরো নরম আর পাতলা হলে যেমনটা হয়, আর কালোর বদলে রংটা লাল। এই শ্রেণীবিহীন অদ্ভুতুড়ে প্রাণীটার খামখেয়ালি আর বিরক্তিকর বৃদ্ধি আমার মাথাটা খারাপই করে ছাড়বে। আরেকটা যদি ধরতে পারতাম-যাক, ওসব ভেবে লাভ নেই; এটা একটা ব্যতিক্রম বটে, আর একমাত্র নমুনা; এটা নিশ্চিত। কিন্তু আমি একটা আসল ক্যাঙারু ধরে এনেছিলাম, ভাবলাম আর কোন স্বজন না থাকায় অন্তত এটার সাথে থাকলে ওটা কিছুটা সঙ্গ পাবে কিংবা অন্য প্রাণীর সাথে মেশাটা শিখবে বা এর একাকী অবস্থায় যেখানে কেউ তার চালচলন বা স্বভাব জানে না এমন কারোর সাথে থাকার চাইতে বরং একটা আত্মীয়তা অনুভব করবে অথবা বন্ধুদের সাথে থাকতে কেমন লাগে তা শিখবে; কিন্তু ভুল করেছিলাম-ক্যাঙারুটা দেখেই ওটা এমন মূর্ছা যাওয়ার অবস্থা করলো যে আমি স্পষ্টতই টের পেলাম ওটা আগে কখনো ক্যাঙারু দেখে নি। এই বেচারা আওয়াজভরা খুদে প্রাণীটা দেখলে খারাপ লাগে বটে, কিন্তু এটাকে খুশি রাখার কোন রাস্তা তো পাচ্ছি না। যদি এটাকে পোষ মানানো যেতো-কিন্তু ওটা প্রশ্নাতীত; যতোই চেষ্টা করি ততোই অবস্থা খারাপ হতে থাকে। ওটাকে দুঃখ আর আবেগের ছোটখাটো ঝাপ্টায় বিপর্যস্ত হতে দেখলে আমার বুকটা ভেঙে যায়। ছেড়ে দিতে চাই ওটাকে, কিন্তু সে এসবের নামও বরদাস্ত করতে পারে না। তার কাছে ব্যাপারটা নিষ্ঠুর এবং তার সাথে বেমানান; আর তারপরও তার কথা ঠিক হতে পারে। আগের চাইতে ওটা হয়তো আরো একলা হয়ে পড়বে; যেহেতু আমি নিজেই আরেকটা খুঁজে বের করতে পারি নি, ওটা কিভাবে পারবে?
পাঁচ মাস পর--এটা ক্যাঙারু না। না, কারণ এটার আঙুলগুলো ধরলে এটা নিজেকে দাঁড় করাতে পারে, আর এভাবেই পেছনের পায়ে বেশ কিছুদূর চলে যেতে পারে, আর তারপরেই পড়ে যায়। এটা বোধহয় কোনোরকমের ভাল্লুক; তবে কোন ল্যাজ নেই-অন্তত এখন অব্দি নেই-আর লোমও নেই কোন, মাথায় ছাড়া। এটা এখনো বাড়ছে-আজব কাণ্ড, কারণ ভাল্লুক আরো তাড়াতাড়ি বাড়ে। ভাল্লুক ভয়ংকর প্রাণী-আমাদের দুর্যোগের সময় থেকেই-আর আমি এটাকে এখানে নাক উঁচিয়ে সবখানে ঘুরে বেড়াতে দেখলে সুখ পাবো না। আমি তাকে বললাম এটাকে ছেড়ে দিলে আমি তাকে একটা ক্যাঙারু এনে দেবো, কিন্তু ব্যর্থ-মনে হয় সে আমাদের যত্তসব ফালতু ঝুঁকিতে ফেলতে বদ্ধপরিকর। মাথা নষ্ট হওয়ার আগে সে এমনটা ছিলো না।
একপক্ষকাল পর--ওটার মুখের ভেতরটা পরখ করে দেখলাম। এখনো কোনো ভয় নেই: ওটার মাত্র একটাই দাঁত দেখা যাচ্ছে। এখনো কোনো ল্যাজ গজায় নি। আগের চাইতে এখন শব্দ করে আরো বেশি-আর আওয়াজ প্রায়ই করে রাতে। আমি বাইরে চলে এসেছি। কিন্তু সকালে যাবো, নাস্তা খাবো, আর দেখবো আরো দাঁত গজালো কি-না। যদি মুখভর্তি দাঁত দেখা যায়, তবে ওটার যাওয়ার সময় হয়ে এলো, ল্যাজ গজাক চাই না-ই গজাক, কারণ ভাল্লুকের ভয়ংকর হয়ে উঠতে ল্যাজ লাগে না।
চার মাস পর--গত মাসখানেক ধরে শিকার করে আর মাছ ধরে বেড়াচ্ছি, ও যেটাকে বাফেলো বলে সেখানটায়; জানি না কেন বলে, ওখানে কোন মহিষ তো দেখলাম না। এরমধ্যে ভাল্লুকটা পেছনের পায়ে চারদিকে ঘুরে বেড়াতে শিখেছে, আর 'পাপ্পা' আর 'মম্মা' ডাকতে শিখেছে। এটা নির্ঘাৎ কোন নতুন প্রজাতি। শব্দের সাথে এই মিলটা একেবারে কাকতালীয় নিঃসন্দেহে, আর হয়তো সুনির্দিষ্ট কোন লক্ষ্য বা অর্থ নেই; কিন্তু তারপরও ঘটনাটা অসাধারণ বটে, কোন ভাল্লুকের এটা করতে পারার কথা না। এই শব্দের অনুকৃতি করা, আর লোম আর ল্যাজের সম্পূর্ণ অনুপস্থিতি সুনিশ্চিতভাবেই প্রমাণ করে যে এটা একটা নতুন প্রজাতির ভাল্লুক। এবিষয়ে আরো পর্যবেক্ষণ অবশ্যম্ভাবীভাবেই আগ্রহোদ্দীপক হবে। এরমধ্যে আমি উত্তরের জঙ্গলে দূরের একটা অভিযানে যাবো এবং নিবিড় একটা সন্ধান চালাবো। নিঃসন্দেহে এরকম আরো একটা নমুনা কোথাও না কোথাও আছে, এবং নিজের প্রজাতির সদস্যের সংস্পর্শে থাকলে এর হাত থেকে এটা বিপদের আশঙ্কা কম হবে।
তিন মাস পর--ক্লান্তিকর, ক্লান্তিকর এক শিকার, কিন্তু সাফল্য দূর অস্ত। এরমধ্যে, ঘর থেকে বাইরে না এসেই, সে আরো একটা ধরে ফেলেছে! এরকম সৌভাগ্য আমি কখনোই দেখি নি। এই জঙ্গলে শখানেক বছর ধরে ঘুরলেও হয়তো আমি কখনো একটার দেখাও পেতাম না।
পরের দিন--পুরনোটার সাথে নতুনটাকে মেলাচ্ছিলাম, এক্কেবারে স্পষ্ট যে তারা দুজনেই একই বংশধারার অন্তর্গত। আমি একটা আমার সংগ্রহশালার জন্যে স্টাফড করে রাখতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু সে তো কোনভাবেই করতে দেবে না কী জানি কী কারণে; তাই চিন্তাটা পরিত্যাগ করলাম, যদিও কাজটা ঠিক হলো না বলেই আমার মনে হয়। ওরা যদি পালিয়ে যায়, তাহলে বিজ্ঞানের অপরিমেয় ক্ষতি হয়ে যাবে। বড়টা আগের চাইতে অনেক শান্ত হয়ে গেছে আর হাসতে পারে আর টিয়েপাখির মতো কথা বলতে পারে, টিয়েপাখির সাথে থাকার কারণেই এ-অবস্থা, কোন সন্দেহ নেই, আর অনুকরণ প্রবৃত্তি জন্ম নিয়েছে তার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে। এটা নতুন জাতের কোন টিয়েপাখি হলে আমি বেশ অবাক হবো; অবশ্য তারপরও অবাক হওয়া উচিত হবে না, কারণ প্রথম যখন এটা মাছ ছিলো তারপর থেকে ওটা এতোবার এতোকিছু হতে হতে হয় নি। নতুন আগেরটা প্রথমে যেমন ছিলো, সেরকমই কুৎসিত; গায়ের রংও একই রকমের গন্ধক-আর-কাঁচা-মাংসের মিশ্রণের মতো আর সেরকম একটাই লোমহীন মাথা। সে ওটাকে ডাকে আবেল।
বছর দশেক পর--ওগুলো ছিলো ছেলে; অনেক আগেই আমরা ঘটনাটা বুঝে গেছিলাম। তাদের এরকম খুদে অপরিণত আকৃতিতে আসাতেই আমরা ধোকা খেয়ে যাই; আমাদের অভ্যেস ছিলো না কি-না। এখন ক'টা মেয়েও আছে। আবেল ছেলে ভালো, কিন্তু ভাল্লুক হিসেবে থাকটাই কেইনের জন্যে ভালো হতো। এতদিন পরে, দেখতে পাচ্ছি ইভের ব্যাপারে প্রথম থেকেই আমি ভুল বুঝেছিলাম; নন্দনকাননে ওকে ছেড়ে থাকার চাইতে ওকে নিয়ে বাইরে থাকাটাই ভালো। প্রথম প্রথম ভাবতাম ও বড্ড বকে; কিন্তু আজ যদি সে-কণ্ঠ স্তব্ধ হয়ে যায় আর আমার জীবন থেকে দূরে সরে যায়, তবে বড়ই দুঃখ পাবো। আশীর্বাদান্বিত হোক সেই চেস্টনাট যা আমাদের এনেছে কাছে এবং আমায় শিখিয়েছে তার হৃদয়ের মহত্ত্ব আর তার আত্মার মধুরতা!
[মার্ক টোয়েনের 'এক্সট্রাক্টস ফ্রম অ্যাডামস ডায়েরি' অবলম্বনে] ইভের ডায়েরি নিয়েও একটা গল্প আছে তাঁর।
মন্তব্য
ভালু পাইলাম, তয় লেখার উপ্রে একটা হাতির ছবি দিলে পারতেন, লেখা পড়তে শুরু করনের পর আর ছাড়তে পারি না, দৌড়ের মধ্যে মিয়া এতগুলান টাইম খাইলেন
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
হাতির ছবি কেমনে দেয়?
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
ইভের ডায়েরিটাও অনুবাদে চাই !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
ওটা আরো বিশাল! সাহসসঞ্চয় করে উঠতে পারছি না ঠিক
কেমন লাগলো জানালেন না দাদা!
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
ওরে বাপস॥ বিশাল অনুবাদ। মার্ক টোয়েন মানেই অন্যরকম কিছু গল্প।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
হুঁ, কিন্তু বিশালত্ব দেখে ভয় না পেয়ে রস পেয়েছেন আশা করি
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
ভালো লাগলো
রোমেল চৌধুরী
সুকঠিন সমূহ।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
গল্পটি সুকঠিন। পাঠকের জন্যে সহজপাচ্য নয়। অনুবাদের খামতি নয়, বলছি গল্পটির গঠনের কথা। এতটা জিলিপীর প্যাঁচ এর ভেতরে আঁটা আছে, যে পাঠক হিসেবে খুব অস্বস্তিতে পড়েছিলাম...
অনুবাদ ভালো লাগ্লো।
_________________________________________
সেরিওজা
বিয়ে করতে হবে গল্পটা বুঝতে হলে, নিদেন ভালো ধারণা থাকতে হবে দাম্পত্যসম্পর্কের বা নারীপুরুষের চিরন্তন সম্পর্কের ওপর।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
আমার একটা বাজে বাতিক আছে, পড়ার আগে পোস্টের ওপর চকিতে চোখ বুলিয়ে নেওয়া। এটা করতে গিয়েই পয়লা হোঁচট খেলাম, বারগুলো বারবার ঘুরে ফিরে আসছে দেখে একটু অবাকই হলাম। আর পড়তে গিয়ে মাঝেমাঝে খেই হারিয়ে ফেলছিলাম, তবে লেখনীগুণে সেটা প্রকট হয়নি। শেষমেশ অনুবাদ লেটার মার্ক পেয়ে উত্তীর্ণ :)।
--------------------------------------------
আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
প্রশংসা সব মার্ক টোয়েনের, বিরূপতাটুকু অনুবাদকের।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
হ, জটিল গল্প। মাথাটা আউলাইয়া গেল। আদম ইভ সবারে মাইনাস, কিসব আকামকুকাম করে!
আকাম্কুকাম্নাকর্লেআম্রারকীযেহৈত! তয়াপ্নিবিয়াশাদিকৈরেন্নাকৈলাম।
এনিওয়ে, আপনি দেখি নাগরিক বাংলায় শিক্ষিত হয়ে উঠছেন। ভালো, হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব...
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
ইয়ে, নাগরিক বাংলাটা কী রকম বাংলা? আপনার প্রথম লাইনে লেখা জর্মনধাঁচের বাংলার মতন?
তারপর প্রশ্ন আসবে, কোন নগর? কোন্নগর?
বেশ অদ্ভুত! আর মাঝে খেই হারিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু ভালো হয়েছে। ইভের ডায়েরির অংশও পড়তে আগ্রহী।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
কেউ মজা পায় না কেন! তালে এতো কষ্ট করে আর আমার লাভ কী হল? ধুর, ইভের ডায়রিটার অনুবাদ আর করবোই না!
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
ভাল্লাগছে অনেক ।
ভাল্লাগছে অনেক ।
ভাল্লাগছে অনেক ।
ভাল্লাগছে অনেক ।
ভাল্লাগছে অনেক ।
ভাল্লাগছে অনেক ।
ভাল্লাগছে অনেক ।
ভাল্লাগছে অনেক ।
ভাল্লাগছে অনেক ।
হ, তালগাছটা দিয়া দিলাম।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
দুঃখের ব্যাপার। যেদুজনকে উৎসর্গ করলাম, না পেলাম তাঁদের পদরজ, না পেলাম তাঁদের মুখামৃত।
এই জীবন নিয়া কী ক্রুম!!! (((
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
দুখ করেন না। মুখা মহাশয়ের সচলে কমেন্ট মাত্র আটটি, তুলনায় নোবেল প্রাইজও আট শতাধিক বিতরিত হয়েছে। অতএব ওই দুর্মূল্য বস্তুর আশা ছেড়েই দ্যান।
সিরাত ভাইয়ের কৃত মন্তব্যের সংখ্যাও প্রাপ্ত মন্তব্যের সংখ্যার অর্ধেকেরও কম। অন্যদের লেখা নাকি তাঁরও খুব একটা পড়া হয়ে ওঠে না, সময়/ইচ্ছার অভাবে। দেখেন না, ব্লগিংও তাঁকে করতে হয় তাড়াহুড়োতেই। এ তাঁরই উক্তি। অতএব সে বিষয়েও আশা কমই রাখেন।
তবে, উৎসর্গ যখন করেছেন, একটুখানি আক্ষেপ করার অধিকার আপনার রইল। বেশি না কিন্তু!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন