প্রত্যেকটা দিনকে পাঠ করে চলছি, এক একটা পৃষ্ঠার মতো, জানি যেদিন শেষ পাতাটা পড়ে ফেলবো সেদিন সব কিছু ফুরিয়ে যাবে। মাঝে মাঝে পাতা উল্টে সামনের দিকে না গিয়ে পেছনের দিকে যাই, ফেলে আসা পৃষ্ঠাগুলোর গায়ে হাত রাখি, ধূলো জমতে দিই না। তবুও হলদে হয়ে, ফিকে হয়ে আসে অনেক পাতা, তাদের গায়ে আঁকা দিনগুলো আমার বিস্ময় নিয়েই আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। আমার কাছে মনে হয় এ-ই আমার কুড়িয়ে পাওয়া গুপ্তধনের ম্যাপ, এ-ই হয়তো তেঁতুল বটের কোল ঘেঁষে আমাকে দক্ষিণে চলে যাবার নিশানা দেখাবে। আমি তাই সেই পুরনো পাতাগুলিকে খুলি নিভৃতে, হয়তো রাতে ঘুমোতে যাবার আগে, হয়তো অনেক বৃষ্টিতে একা চলার পথে, হয়তো হয়তো হয়তো ভরা সময়গুলিতে। ঐ পাতাগুলির আমিই একা পাঠক, সেই ফিকে হরফগুলির আমিই রহস্যভেদী, সেই দ্বীপে আমি একা ভেসে আসা নাবিক, যে শুধু পাতার পর পাতা লিখে বোতলে পুরে ভাসিয়ে দেয়। মাঝে মাঝে আমি নিজেই ওরকম লেখা বুকে নিয়ে ভাসা বোতল হয়ে ঘুরি পৃথিবীতে, মোমের নরম আলোর মতো দূরে জ্বলতে থাকে আমার ছেলেবেলার অক্ষরগুলি। মাঝে মাঝে হয়তো দুয়েকজনকে আইসক্রীমের মতো এক কামড় নিজের শৈশবের স্বাদ নিতে সাধি, কিন্তু নিজেই বাকিটা চেটে খাই গপাগপ। আমার হাত থেকে একটু একটু করে খসে পড়া ঘাসফুলের মতো টুপটাপ করে আবার হারিয়ে যায় ছেলেবেলা, আবার নির্বাক হয়ে পড়ে পুরনো পাতার ভিড়ে। পাপ পূণ্যের মতো আমার শৈশব আমার নিজস্ব অর্জন, হারিয়ে যাবার জন্যে পাওয়া উপহার, আমি আগলে রাখি অ্যাটলাসের কাঁধে আকাশের মতো। সব পথ হারিয়ে গেলে শুধু ছেলেবেলার পথ নিজে থেকেই এসে নিজেকে চিনিয়ে দেয়, অনেকবার হাঁটা পথের দিকে তাকিয়ে আমি উল্টোদিকে ছুটি।
তবুও মাঝে মাঝে মনে হয়, কোথায় গেলো সেইসব দিনগুলি? কোথায় আমার শৈশবের বন্ধুরা, কোথায় আমার ভাইবোনবাবামা, কোথায় লুকিয়ে গেলো রান্নাঘরের জানালা দিয়ে দেখা শিমুল গাছটা, কবে কোন ঝড়ে ধ্বসে পড়ে গেলো উল্টোদিকের বাড়ির বুড়ো কৃষ্ণচূড়াটা, কোথায় সবজে কাঁচের ভেতর দিয়ে হলদে রোদের ছাঁটগুলি, আমার বারান্দার চড়ুইগুলি কোথায় উড়ে চলে গেলো, কোথায়?
বাষ্প, সব বাষ্প হয়ে যায়। চোখের সামনে মনিটর আর কীবোর্ডে অচেনা কুয়াশা এসে ভর করে, বাষ্পে হারিয়ে যায় আমার ছেলেবেলা, যাকে আমি এখনো বেতালের মতো কাঁধ নিয়ে ঘুরতে চাই পরম বান্ধবের মতো। এতো বাষ্পের ভিড়ে হারিয়ে ফুরিয়ে যায় সবকিছু, আমার আর ছেলেবেলার গল্প লেখা হয় না।
মন্তব্য
এভাবেই শুরু হয়।
চলুক
__________________________
suspended animation...
" বুঝি আমার হিয়া বিরাম পায় না গো।। "
পড়লাম ,
আবার পড়লাম।
এক দুখজাগানিয়া ব্যাথা অনুভব করলাম।
এভাবেই আস্তে আস্তে লিখতে থাকেন। পড়ে খানিকটা বিষন্ন হলাম। আহারে ছেলেবেলা.. আর কোনদিনও আসবেনা...কোন কিছুতেই ফিরে পাওয়া যাবে না।
ভূমিকাটা অসাধারণ হয়েছে। এবার মূলপর্ব হোক।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
হে পাঠককূল,তোমরা ধৈর্য ধারন করো ।কেননা মূল গল্প পরবর্তী ইবুকে পাইবে ,আগে নহে ।
ধানাই - পানাইটা ভালো হয়েছে। এবার এসব বাস্প - টাষ্প তাড়িয়ে লিখুন তো!
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
হিমু, অ্যাপেটাইজার তো খাওয়াইলা, এইবার একটু মেইন কোর্স সার্ভ করো!
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
হুম। ছেলেবেলার পাহাড় আমায় ডাকে...
-----------------------------------
যা দেখি তা-ই বলি...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
আড়মোড়া ভেঙে ওঠা দেখলাম। এবার তবে শুরু হোক ছেলেবেলা এক্সপ্রেস - - -
হুমম, মন খারাপ করা একটা ভূমিকা দিয়ে শুরু।
দুঃখবাদী লেখা লেখার অধিকার টা প্যাটেন্ট করবো কি না চিন্তা করতেছি।
তাহলে লাইসেন্স বাবদ কিছু পাইতাম।
আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
অসাধারণ ভুমিকা....................
কি মাঝি? ডরাইলা?
- ছালায় কী হাকাইলি এইঠা?
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হিমু ভাই । আর কই?'
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
ধৈর্য ধরে আছি সুনা........
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
আসলেই তাই!
**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
নতুন মন্তব্য করুন