বর্ষাকাল আপাতত সকল সংস্কারের ঊর্ধ্বে। শ্রাবণ মাসে মেঘেরা অবসরে গেছে, আকাশে বেহায়া সূর্য বুক ফুলিয়ে হাঁটাহাঁটি করে। ছাতা একটা কিনেছিলো কে যেন, কালো, বিষ্টিবাদলের হাত থেকে মাথা বাঁচানোর জন্য। রোদ দেখে সেটাই টেনে বার করলো ঘরের চিপা থেকে। ছাতার ভেতরে আরশোলা থাকে, বলেছিলাম আমার ভাগ্নিটাকে, সে বললো কই দেখি দেখি? ওদিকে কাকে যেন কে বোঝাচ্ছিলো এই কুটকুটে গরমে কালো ছাতা মাথায় দিয়ে বেরোলে আরো বেশি গরম লাগবে। আমিও প্রাণপণে সেই আলাপের মধ্যে গিয়ে ঢুকি, ঢুকবার চেষ্টা করি, ঢুকাই আমার বক্তব্যকে, হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ ঐ যে পড়োনি পড়োনি কালো রং তাপ শোষণ করে সাদা রং তাপ বিকীরণ করে আর আরো কত কত বালছাল পড়োনি ফিজিক্সে? কিন্তু বিষ্টির মায়রে বাপ বলে রাস্তায় বেরিয়ে পড়া কি আর আগের মতো সহজ? রোদ লাগে তো। তো কে যেন বেরিয়েছিলো কালো ছাতা মাথায় দিয়ে, পেছনে চ্যাঁচাচ্ছিলাম আরে এর জন্যই তো জার্মানরা বলে জনেনশিয়ার্ম আর রেগেনশিয়ার্ম, হিস্পানিরা বলে পারাসল আর পারাগা, কিন্তু বাঙালি ছাতার জাতপাত এখনো বার করতে পাল্লোনা, ছাতা ছাতাই, তার আবার রোদবিষ্টি কী? কিন্তু ঐ যে কালো ছাতা দিলে গরম লাগে, সাদা ছাতা দিলে গরমটা কম লাগতে পারে, সৌরছাতা আর বর্ষাছাতার মধ্যে একটা ধুনফুন পার্থক্য তো থাকতে হবে, নাকি? কিন্তু ছাতাটা নিয়ে ভালোই করেছিলো কারণ মেঘগুলি এখনও অত হারামখোর হয়নি, হয়তো আরো দুটো ঘন্টা সময় দিলে হয়ে যেতো, একটু পরেই ইবলিসের পেচ্ছাপের মতো চড়চড় করে পড়া শুরু করলো। কে যেন বললো এটা কি বিষ্টি না বাল? শ্রাবণ মাসের হিসাব জানতে চাইলো একজন, আরেকজন দিলো প্রচন্ড ধমকি, আরে গেলি, শ্রাবণ মাস তো এখনও আষাঢ়ের পেট চিরে বেরোয়নি, খালি প্যাচাল! কালো হোক ধলো হোক ছাতাটা কাজে দিলো কিছুক্ষণ। ওমা, পেচ্ছাপের তোড় বেড়েই চললো, ছাতাঅলা গাল দিয়ে বললো, বাড়ার ছাতা বানাইছে। কে একজন জানতে চাইলো ক্যানো ক্যানো? সে বলে, মাথা বাচাইলে পাছা ভিজ্যা যায়। সবাই হাসে, হো হো হো, কে যেন বললো তাহলে পাছা বাচাও। সে বলে, তাইলে মাথার কী হবে? আমি বললাম, রেইনকোট কিনলে না কেন হে ভোদাই, হোগামাথা সবই বাঁচতো। সে বলে, এহ, আসছে চন্দ্রবিন্দু লাগাইতে। আমি বললাম, হ্যাঁ, রেইনকোট অনেক ভালো। সে বলে, হোক ভালো, বিষ্টি নামলে আমার দরকার ডাইরেক্ট অ্যাকশন। রেইনকোট পরতে পরতে তো ভিজ্যা যামু। মাথা পাছা সব। আমি বললাম আরে এখনও তো ভিজলেই। সে বলে না আমার ছাতাই ভালো, হোক না কালো। আমি বললাম সৌরছাতা দিয়ে বর্ষাছাতার কাজ চালাতে নেই, সে বলে যাও যাও তোমার থিওরি দিয়া আমি গু মুছি। শেষ পর্যন্ত দেখলাম কালো ছাতা মাথায় আরো অনেকে চলছে, কেউ কেউ আছে রঙিন ছাতা নিয়ে হাঁটছে রাস্তায়, আমি বিষ্টিতে ভিজে কাবু, ছাতা রেইনকোট কোনটাই সাথে নেই, রাস্তায় জমে থাকা পানি ঠেলে ঠেলে হাঁটছি যেন ম্যাথুশেলা বাজারে বেরিয়েছে, এক নির্ভেজাল চুদির্ভাই সাঁই করে গাড়ি চালিয়ে এসে কাদাপানির ছিটে দিয়ে আমার বর্ষাকালো ফুটে ওঠা টগরের মতো সাদা শার্টটায় দিলো ময়লা মাখিয়ে, আমি এই বিষ্টির দিনটায় গালিটালি না দিয়ে আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে রইলাম হতভম্ব প্রবাসী ক্যাকটাসের মতো।
মন্তব্য
সংস্কার ভালোই হলো । টগরের মতো সাদা শার্টে দুর্মুল্য কালো গোলাপ সেঁটে গেলো ।
-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
রুগ্ন -> রুগ্ণ / রুগ্ণ
_____________________________
জিকোবাজি | ফটো গ্যালারি | ইমেইল
ণা ণা ণা এ হতে পারে ণা :'( !
হাঁটুপানির জলদস্যু
তবে মোটা মোলাটঅলা বাংলা অভিধান দেখে আমাকে গর্হা থেকে মুক্ত করুন হে হাঁটুপানির জলদস্যু।
_____________________________
জিকোবাজি | ফটো গ্যালারি | ইমেইল
অভিধাণে যদি ভুল লেখে ?
হাঁটুপানির জলদস্যু
ণ হবে কেন? নিপাতনে?
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
রুগ্ন না হয়ে রুগ্ণ হবে কেন?
র অথবা ক্ষ-এর পর যদি
a)ক বর্গ (ক,খ,গ,ঘ,ঙ)
b)প বর্গ (প,ফ,ব,ভ,ম)
এবং
c)য য় হ
এই ১৩টি বর্ণের যে কোনো একটি বা দুটি বসে, তবে তার পর ণ হয়।
ণ-ত্ব বিধান!
_____________________________
জিকোবাজি | ফটো গ্যালারি | ইমেইল
মাণি ণা মাণবো ণা ! এই কালাকাণুণের অবসাণ চাই !!
হাঁটুপানির জলদস্যু
আজকে সারাদিন রোদ ছিলো। যেই আমি বেরোলাম অমনি বৃষ্টি। তা-ও আবার দশমিনিটের বৃষ্টিতে হাঁটুপানি। ভিজে ফিরলাম অফিসে, লোকজন আমাকে দেখে হেসে খুন। মেজাজটা চড়ে আছে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
গাড়ীর পানি ছিটায়া পাবলিকরে ভিজাইতে নাকি বেজায় আনন্দ। বাকিটা শক্তির নিত্যতার ফর্মূলা।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আজকাল এমনি এমনি, ওমনি ওমনি বৃষ্টি আসে।
সব ভিজিয়ে দিয়ে যায়।
মানুষ আর কাক।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
পড়লাম।
----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।
----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।
গাইলাইয়া ফাডাইয়ালাইছে রে!!!!!
তয় লেখা ভালৈছে।
__________
কি মাঝি? ডরাইলা?
আমি কোনোদিন ছাতা ব্যবহার করি না। জিনিসটা কেন যেন আমার দুই চোখের বিষ, ছোটোবেলা থেকে। অপছন্দের কারণ জানি না।
ব্যবহার না করার দুটো কারণ।
এক. আমার এক মামা ছিলেন, ছাতা হারানোতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। ফলে তাঁর থাকতো সবসময় চকচকে নতুন ছাতা। হাটে গেলেন ছাতা নিয়ে, ফিরলেন খালি হাতে। শহরে যাওয়ার সময় নতুন ছাতা, ফেরার সময় খালি হাত।
দুই. আশেপাশে সবসময়ই দেখছি দরকারের সময় ছাতাটা আছে অন্য কোথাও। ভদ্রলোক অফিস থেকে বের হবেন, বাইরে বৃষ্টি, আসার সময় ছাতা গাড়িতে ফেলে এসেছেন। বাড়ি থেকে বেরোনোর মুখ বৃষ্টি। ইস, ছাতাটা কাল ভুলে অফিসে রেখে এসেছেন। এইরকম আর কি।
তাহলে আর ছাতার দরকারটা কি? ছাতা দিয়ে কী ছাতাটা হবে?
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
'হিমু ও বর্ষাকাল'
How Strange.
এ কি! ভেরি আন-হিমুলাইক!
নতুন মন্তব্য করুন