প্রবাসে দৈবের বশে ০৩৯

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: শনি, ১৭/০৫/২০০৮ - ৪:৫৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

probashe

১.
কেমন একটা থমথমে ভাব চারদিকে। মনে হচ্ছে দাঁতের ফাঁকে পিন কামড়ে ধরে আছি, গ্রেনেডটা বুকের সাথে চেপে ধরা, একটু পরেই দারুণ বিস্ফোরণে সব কিছু এলোমেলো হয়ে যাবে। সকালে ঘুম ভাঙার পর অনেকক্ষণ ধরে ধুকধুক করতে থাকে বুক। হৃৎপিন্ডটাও হাঁপাতে হাঁপাতে ছুটছে আমার সাথে, হাঁসফাঁস করে একটা কিছু বলার চেষ্টা করছে, বুঝে উঠতে পারছি না।

আগামী সেমেস্টারে থিসিস, যাকে এখানে বলা হয় ডিপ্লোমআরবাইট, লিখতে হবে। আমার ব্যাচেলর ডিপ্লোম-আইন্স (আইন্স = ১) এর সমকক্ষ, মাস্টার্স করার পর সেটা ডিপ্লোম-ৎস্বাই (ৎস্বাই = ২) হবে। জার্মানীতে প্রকৌশল নিয়ে পড়ালেখা করলে ডিগ্রীটাকে লেখা হয় Dipl.-Ing., অর্থাৎ প্রকৌশলে ডিপ্লোমপ্রাপ্ত। ডক্টরেট করলে কপালে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার দুই খেতাবই জোটে, অর্থাৎ লেখা হয় Dr.-Ing.। এ নিয়েও কিছু কালা কানুন আছে, যেমন হিটলুর আমলের একটা আইন ছিলো, জার্মানির বাইরে কেউ যদি ডক্টরেট করেন, তাহলে জার্মানির ভেতরে সে পরিচয় আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহার করতে পারবেন না, করলে সেটা অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত হবে, এবং জরিমানা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাভোগ জাতীয় ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে। কয়েক বছর আগে এই হুজ্জতের সীমা একটু কমানো হয়েছে, এখন ইয়োরোপীয় ইউনিয়নের ভেতরে কেউ যদি ডক্টরেট করেন, তাহলে জার্মানিতে সে পরিচয় আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহার করতে পারবেন, অন্যথায় নয়। কিছুদিন আগে এক মার্কিন বিজ্ঞানীকে এ নিয়ে পুলিশি জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্টের একটা লিঙ্ক ছিলো, সংরক্ষণ করতে ভুলে গেছি, নইলে শেয়ার করা যেতো।

আরো হ্যাপা নাকি আছে। প্রকৌশলে পোস্ট ডক্টরেট, এখানে যাকে বলে হাবিলিটাৎসিওন, করলে কেবল পুরনো পূর্ব জার্মানীর লোকজনই তা ব্যবহার করেন, পশ্চিম জার্মানীতে প্রকৌশলশাস্ত্রের লোকেরা নামের গোড়ায় Dr.-Ing. Habil. লিখতে পারবেন না। তবে নাটুওরভিসেনশাফট, অর্থাৎ প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের লোক হলে ভিন্ন কথা।

আগামী সেমেস্টারে ডিপ্লোমআরবাইট নিয়ে প্রফেসরদের কাছে ঘোরাফেরা করছি। আমার আগ্রহ সৌর আর বায়ুশক্তিক্ষেত্রে, যদিও বাংলাদেশে এই দুয়ের প্রয়োগই কিছুটা সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি। বাংলাদেশে এই দুই নবায়নযোগ্য শক্তির প্রয়োগযোগ্যতা নিয়ে একটা ছোট সিরিজ লেখার প্রস্তুতি নিচ্ছি আপাতত। প্রফেসর আর তাঁদের ডক্টোরান্ডদের কাছে আনাগোনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কী নিয়ে কাজ করবো। এ নিয়ে একটা চাপা টেনশন কাজ করছে কেন যেন। প্রফেসররা দেখলাম এই আগেভাগে খোঁজ নেয়ার ব্যাপারটাকে বেশ ভালো চোখেই দেখেন। আমার পরামর্শক প্রফেসর কাজ করেন উচ্চবিভব নিয়ে, আমার আগ্রহের কথা শুনে তিনি সরাসরি জানালেন, ওরকম কোন কাজ তিনি আপাতত করছেন না, তবে ইনসুলেশন নিয়ে টাটকা কিছু কাজ হচ্ছে, আমার আগ্রহ থাকলে করতে পারি। কাজের কিছু নমুনা দেখালেন তিনি, বেশ ইন্টারেস্টিং, কিন্তু ঐ পথে হাঁটবো না হয়তো। সৌর আর বায়ুশক্তি নিয়েও প্রচুর কাজ হচ্ছে, এই দুই ক্ষেত্রের তিন প্রফেসরকে জ্বালিয়ে মারবো আপাতত কয়েক সপ্তাহ। যে প্রফেসরের অধীনে কাজ করার খুব ইচ্ছা ছিলো, তিনি আপাতত দূরদূরান্তের সব কাজ গছিয়ে দিচ্ছেন ছাত্রদের, আর কাজ করছেন জৈববস্তু নিয়ে, যে ব্যাপারে আমার আগ্রহ থাকলেও রসায়নে আক্কেলগত শৈথিল্যের কারণে ঐ পথে যাওয়া হবে না।

গত সেমেস্টারের একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে গেলো লিখতে লিখতে। কাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তাপগতিবিদ্যার দুঁদে প্রফেসর হচ্ছেন ক্লোজে। বেশ বদমেজাজি লোক, কিন্তু খুব খেটে পড়ান। বয়স হয়ে গেছে, অঙ্ক করাতে গিয়ে মাঝে মাঝেই ভুলভাল হয়ে যায়, পিএইচডির ছাত্ররা তড়িঘড়ি করে আবার ঠিক করে দেয় বোর্ডে গিয়ে। এক রাতে আড্ডা সেরে আমি আর হের রেহমান যাচ্ছি যে যার বাড়ি, এক বিপন্নমুখো ছোকরা কোত্থেকে এসে হাল্টেষ্টেলেতে পথ আগলে দাঁড়ালো।

"ক্ষমা কোরো ... কিন্তু তুমি কি জানো, কিভাবে কোন সংখ্যার ঘাত বার করতে হয়?"

ছোকরার উচ্চারণ আর চেহারা দেখে মনে হলো সে জাতিতে আরব, বললাম, "হুমম, জানি! ক্যালকুলেটর দিয়ে!"

ছোকরা হেসে ফেলে বললো, "ক্যালকুলেটর ছাড়া কিভাবে করতে হয় তা-ই বলো!"

থতমত খেয়ে বললাম, "টেইলর সিরিজে ভেঙে করা যায়। কিন্তু ক্যালকুলেটর ব্যবহার করছো না কেন?"

ছোকরা এবার জানালো তার দুঃখের কাহিনী। ক্লোজের পরীক্ষা সামনে, যন্ত্রকৌশলের ছাত্রদের জন্যে তাপগতিবিদ্যার প্রথম পাঠ, সে পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার নিষিদ্ধ। ঐ যন্ত্রটি ছাড়াই এক দশমিক ছয় তিন দুই ঘাত শূন্য দশমিক পাঁচ তিন দুই আট এর মান বার করতে হবে।

হের রেহমান চুপচাপ শুনছিলেন, এবার তিনি ধীরে ধীরে কিভাবে টেইলর ধারা দিয়ে এইসব হাবিজাবি বার করতে হয়, কিভাবে তৃতীয় ও পরবর্তী ঘাত অগ্রাহ্য করে সংক্ষেপে কাছাকাছি মান বার করা যায়, তা বিশদ বুঝিয়ে বললেন। ছোকরা সব নোট করে নিলো। মনে মনে ভাবলাম, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রোগ্র্যামেবল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা নিষিদ্ধ ছিলো, কিন্তু কোন ক্যালকুলেটর ছাড়া তাপগতিবিদ্যার পরীক্ষা নেয়াকে ভোগলামি ছাড়া আর কিছু বলা যায় না।

জৈববস্তু নিয়ে কাজ করতে গেলে ক্লোজের মুখোমুখি হতে হবে অনেকবার। দূর থেকেই নমস্কার জানিয়ে তাই কেটে পড়ি।

২.

এই রেনেট ছোকরাটাকে ধরে প্যাঁদানো উচিত। কী একটা মুভি স্ট্রীমিং সাইটের ঠিকানা দিলো, এখন শুধু প্রাণ ভরে মুভি দেখি।

auto

খুব খুব খুব ভালো লাগলো রাতাতুয়ি (Ratatouille) দেখে। ভোজনরসিক এক ইঁদুর রেমি, যে কি না বাড়ির রান্নাঘরে লুকিয়ে চুরিয়ে টেলিভিশনে দেখে দুঁদে শেফ গুস্তো-র রান্নাবান্নার কলাকৌশল। গুস্তো-র মোটো হচ্ছে, যে কেউই রান্না করতে পারে। রেমির বাপ রেমির ওপর একটু চটা, কারণ রেমির চালচলন অন্য ইঁদুরদের মতো নয়। যেমন, রেমির নাক অন্যদের চেয়ে একটু বেশি স্পর্শকাতর, তাই সব ইঁদুরদের যোগাড় করে আনা খাবার শুঁকে দেখে রেমি রায় দেয়, কোনটা বিষ মাখানো আর কোনটা নিরাপদ। কিন্তু রেমি আবার সব খাবার মুখে দেয় না, বেছে বেছে সবচেয়ে ভালো এক চিমটি খায়। রেমি কুড়িয়ে খেতে ভালোবাসে না, খাবার চুরি করে খাওয়া তার পছন্দ নয়, সে চায় রান্না করে খেতে। ছবির শুরুতেই দেখা যায় রেমি এক টুকরো ফরাসী পনির পেয়ে খুঁজে বার করেছে মাশরুম, তারপর বাড়ির ছাদে চড়ে সেই চীজ আর মাশরুম সেঁকে নিচ্ছে চিমনির ধোঁয়ায়। এই দৃশ্যটিই রাতাতুয়িকে অনেক ওপরে ঠেলে নিয়ে গেছে বলে মনে হয়েছে। ছোট্ট রেমি, ছোট্ট তার ইচ্ছা, কিন্তু কী অসামান্য তার চেষ্টা!

এরপরে ঘটনা আরো অনেক গড়ায়, সম্ভাব্য দর্শকের মজা মাটি করার কোন ইচ্ছে আমার নেই। সিনেমা রিভিউ করতে গিয়ে অনেকেই গোটা সিনেমার গল্প বলে দ্যান, যা অতিশয় বিরক্তিকর ব্যাপার, তাই ও পথে পা বাড়াচ্ছি না। গুস্তো, তার রান্নার সমালোচক আন্তন ইগো, কিংবা ঝাড়ুদার থেকে শেফ বনে যাওয়া লিঙ্গুয়িনি, এদের সবার কাহিনী সুযোগ পেলে দয়া করে দেখে নেবেন রাতাতুয়িতে। শুধু বলি, রাতাতুয়ির সুরের কাজ অসাধারণ হয়েছে।

আমি সারা জীবনে কখনো রেঁধে খাইনি, এমনকি চা বানিয়েও খাইনি খুব বেশি, এখন বাটে পড়ে রান্না করে খাই। যা নিজে রান্নার সাহস করি না, তা খাবার ইচ্ছে হল চৌধুরীর ঘাড়ে হামলা করি। চৌধুরীও আমার পথেরই পথিক, কিন্তু তাঁর তেহারি খাওয়ার বাসনা অনেক বেশি সলিড, তাই তিনি নিজেই রান্না করে ফ্যালেন, আমি খানিকটা জবরদস্তি করেই হামখোরাক হই। রাতাতুয়ির মূলমন্ত্র, এনিওয়ন ক্যান কুক দেখে তাই আমি খুবই স্পৃষ্ট। ঠিক করেছি, নতুন কিছু রান্না করে সবাইকে চমকে দেবো। এমন কিছু, যা খেয়ে লোকজন হয় মরে যাবে, নয়তো আর জবান নড়াতে পারবে না।

কিন্তু ছবিটা দেখতে দেখতেই গভীর একটা বিষাদ আমাকে গ্রস্ত করে। শেষ পর্যন্ত, একটা ইঁদুরই তো আমি, রেমির চেয়ে একটু বড়, রেমির চেয়ে আরো অলস। রেমির মতো আমিও তো স্বজনদের ছেড়ে পড়ে আছি দূর প্রবাসে, নিজের ধান্ধায়। নিজেকে ডুবন্ত জাহাজ থেকে লাফিয়ে পড়া ইঁদুরের মতো মনে হয়, যে ঢেউয়ের মাথায় চড়ে জাহাজের দিকে তাকিয়ে চোখ মোছে। খুব শব্দ করে কাঁদতে ইচ্ছা হয়, অন্য অনেক ইচ্ছার মতোই অপূর্ণ থেকে যায় এটাও।


মন্তব্য

রেনেট এর ছবি

দাঁড়ান, আমারে যে ঐ সাইটের ঠিকানা দিয়েছিলো, তারে আগে একটা শক্ত পিটানি দিয়া আসি দেঁতো হাসি
ভালোই হইসে, কালকে থেকে আমার ঘরে নেট থাকবো না। আকামে নেটে ঘুরাঘুরি বন্ধ হবে আশা করছি হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

দ্রোহী (মন্তব্য লিমিট অতিক্রান্ত) এর ছবি

আহ্। অনেকদিন পর আরেক ফোটা বৃষ্টি!!!!

Streaming Movie দেখার জন্য নীচের সাইটগুলো অসাধারণ!
1. http://www.bedroommedia.com/
2. http://joox.net/
3. http://www.messagefromme.com/

প্রথম সাইটটিতে সব ছবি পাবেন। ২ আর ৩ নং এ হাই কোয়ালিটি মুভিগুলো পাবেন।

তবে আমি বড়পর্দায় ছবি দেখার পক্ষপাতি।

হিমু এর ছবি

আমি ছবির ব্যাপারে কিছুটা পর্দানিরপেক্ষ। আমার একটা পিকিউলিয়ার স্বভাব হচ্ছে সিনেমা একা দেখা। আমি একটু তীব্রভাবে সিনেমা দেখি, যা অন্যদের সাহচর্যে ঠিক স্বস্তি নিয়ে করা যায় না। ফলে বড়-ছোট-মেজ পর্দা নিয়ে মাথা ঘামাই না।

আপনি তো সাঁকো না নাড়ার সাইনবোর্ড গেড়ে দিলেন।!


হাঁটুপানির জলদস্যু

দ্রোহী (মন্তব্য লিমিট অতিক্রান্ত) এর ছবি

সাঁকো খালি নাড়াতেই নিষেধ করিনি। সেই সাথে বড় করে বলে দিয়েছি সাঁকো সামান্য নড়লেই ভেঙে পড়বে।

এই তিনটা সাইটে নিয়মিত গেলে খাদ্য-অখাদ্য কোন সিনেমা দেখাই বাদ থাকবে না। আমি প্রতি হপ্তায় ৩/৪ টা করে ছবি দেখি। আগে একাই দেখতাম। এখন বউকে নিয়ে দেখতে হয়।

আমি সবকিছুই করি হড়বড় করে। সিমেষ্টার শেষ হল দুই দিন হয়। ইতিমধ্যেই আপনার পরামর্শ অনুযায়ী "মার্ডার অন দ্যা ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস" পড়া শুরু করেছি। সাথে পড়ছি ফ্রয়েড সাহেবের "দ্যা ইন্টারপ্রিটেশন অব ড্রীমস"। দেশে থাকতে "সোফিস্ ওয়ার্ল্ড" পড়া শুরু করেছিলাম। শেষ করে আসতে পারিনি। অনেকদিন পর সেটাও শুরু করেছি। ২০/২৫ পাতা পড়ে বই বদলাই। একটা শেষ করে ধরবো ফ্র্যাঙ্ক ম্যাককার্টের "টিস্"।

কয়েকটা দিন যাক। আবজাব পোষ্টানো শুরু করে সচলায়তনের সবার খবর করে ছাড়বো।

তানভীর এর ছবি

পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর নিষিদ্ধ করলে কী ফায়দা হয় তা আমি কখনো বুঝে উঠতে পারলাম না! চিন্তিত

রেনেট মিয়ারে আসলেই প্যাঁদানো উচিত হাসি । আমিও এর মধ্যে অনেকগুলা মুভি দেখছি। তবে ঐ সাইটে ক্যামেরা প্রিন্ট বেশী। দ্রোহীরগুলা চেখে দেখা লাগবে।

= = = = = = = = = = =
তখন কি শুধু পৃথিবীতে ছিল রং,
নাকি ছিল তারা আমাদেরও চেতনায়;
সে হৃদয় আজ রিক্ত হয়েছে যেই,
পৃথিবীতে দেখ কোনখানে রং নেই।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍এমন কিছু, যা খেয়ে লোকজন হয় মরে যাবে, নয়তো আর জবান নড়াতে পারবে না।

ডরাইসি হো হো হো

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি তুষ্ট আত্মপ্রেমেই। এর সুবিধে হলো, প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নেই চোখ টিপি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অতিথি লেখক এর ছবি

শেষ প্যারাটা মন ছুয়ে গেল। ভয়ও পাইএ দিলো খানিকটা! ইয়ে, মানে...
দেশে ছেড়ে যেতে হলে খবরই আছে! মন খারাপ

---
স্পর্শ

মুশফিকা মুমু এর ছবি

দেঁতো হাসি ঐ মুভিটা আমারো খুব ভালো লেগেছিল, আমি ইদুরটার কান্ড দেখে হাসতে হাসতে শেষ। বেশি ভালো লেগেছিল যখন ফুড ক্রিটিক তার ছোটবেলায় ফিরে যায় ঐ দৃশ্যটা। আরেকটা কথা by Ing you mean Eng?
-------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

হিমু এর ছবি

Ing. মানে Ingenieur ... জার্মানরা সবকিছুরই একটা জার্মান সুরৎ বার করে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

আরণ্যক সৌরভ এর ছবি

হ! পর্লাম।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- মানুষে স্রেফ খাওয়ার লাইগ্যা এতো কান্দোনের শখ করে এইটা তোর লেখার শেষ প্যারাটা না পড়লে বুজবো ক্যামনে? হালা বেকুব।

ইন্দুরের কাহিনী দেখসছ এখন আইসএজ দেখ। ঐটা শেষ হইলে শ্রেক দেখ। দেখতে দেখতে শহীদ হইয়া যা। এতো আফসোস করোস ক্যান, তুই কি একলাই নাকি যে আত্মীয় রাইখা অনাত্মীয়দের লগে দিনাতিপাত কর্তাছে! হালা ভুদাই।

রেনেটের লিংকটা দে, চাইখা দেখি। আমি একটায় ঢুঁ মারি, কিন্তু সুবিধার না!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

হিমু এর ছবি

আইসএজ আর শ্রেক এর চৌদ্দগোষ্ঠী দেইখা শেষ কইরা ফালাইসি যখন, তুই তখনও বানর আসিলি, গাছে ল্যাজ প্যাঁচাইয়া ঝুলতি, হেবো কোনহানকার হাসি!


হাঁটুপানির জলদস্যু

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- গাছে তো ঝুলতাম তোর লাইগাই। যাতে তোর পথ চিনতে অসুবিধা নাহয়। কাউকে না কাউকে তো আগে যেতে হয় বন্ধু!

লিংকটা দে। আমি ইন্দুরের সিনেমাটা দেখার অনেক ট্রাই দিছি, অসফল হৈছি। ম্যুভি৩ ডট নেটে চলে না এইটা।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

হিমু এর ছবি
দ্রোহী এর ছবি

www.watch-movies.net এর কোয়ালিটি তো দুর্দান্ত রকমের খারাপ। দ্যাখেন ক্যামনে?

Joox (Streamplug ইনস্টল করতে হবে) অথবা Bedroommedia (আগের মন্তব্যে)-র DivX (DivX codec ইনস্টল করতে হবে) সেকশনে যে মুভি গুলো আছে সেগুলোর কোয়ালিটি অনেক ভাল।

Bedroommedia তে Veoh TV required সেকশনে যে মুভি গুলো আছে সেগুলোও দেখতে পারেন।

www.watch-movies.net বা dailymotion টাইপের সাইটগুলো FLV নির্ভর তাই কোয়ালিটি খারাপ। DivX বা XviD নির্ভর সাইটগুলো তুলনামুলকভাবে অনেক ভাল। stage6.com বন্ধ হয়ে আমার মুভি দেখার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে।


কি মাঝি? ডরাইলা?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- joox এর জন্য streamplug পাবো কই? আমি যা দেখলাম ১৫ দিনের ট্রায়ালের কথা বলে, মাগনাচোদা কোথাও নাই?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

দ্রোহী এর ছবি

joox.net এ ঢুকার পর হোমপেজেই Guba Support লেখা দেখতে পাবেন। ওখানে দ্বিতীয় লাইনে একটু খেয়াল করলেই দেখবেন স্ট্রীমপ্লাগ প্লাগিন এর লিংক দেয়া আছে।


কি মাঝি? ডরাইলা?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- হ, এতোক্ষণে। ইন দ্য মিন টাইম আমি সারা দুনিয়া ঘুইরা জিনিষ বাগায়া কয়েকটা অলরেডি দেইখাও ফেলছি। আগ্গুন জিনিষ মেম্বার সাব। আপনের শালিরে নিয়া কাছে আসেন, কোলাকুলি করি!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সুমন চৌধুরী এর ছবি

কয়টা ভালো সাইটের নাম দেন। যেইখানে সবরকম বই দেখা যায়......



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

দ্রোহী এর ছবি
কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

স্ট্রীমিং সাইটের প্রিন্ট দেখে পোষায়? আমি দুয়েকদিন দেখে বাদ্দিছি ...

এখন টরেন্ট দিয়া ঝকঝকা ডিভেক্স প্রিন্ট নামাই ... গড়ে দুই আড়াই ঘন্টা লাগে ... সাথে সাবটাইটেল নামায়া আরাম কইরা দেখি ...
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

দ্রোহী এর ছবি

স্ট্রীমিং এ DivX বা Xvid ফরম্যাটে পেলে কে কষ্ট করে টরেন্ট ব্যবহার করতে যায়? তাছাড়া টরেন্ট বা P2P আমার পছন্দের তালিকার বাইরের জিনিষ।

এখানে ক্লিক করে কয়েকটা মুভি ট্রাই করে দ্যাখেন। DivX Web Player ইন্সটল করে নিতে ভুলবেন না।

ব্যান্ডউইডথ্ ভাল থাকলে messagefromme.com এ গিয়ে একটা গুতা দিয়ে দ্যাখেন কোয়ালিটি কেমন। তার আগে স্ট্রীমপ্লাগ প্লাগিন ইন্সটল করে নিতে ভুলবেন না। স্ট্রীমপ্লাগ প্লাগিন পাবেন এখানে।


কি মাঝি? ডরাইলা?

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

এই সাইটটার খোঁজ জান্তাম না ... প্রিন্ট পছন্দ হইছে ... এখন থেকে চোখ রাখব ...

থ্যাংকু হাসি
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

রণদীপম বসু এর ছবি

সবই ভালো লাগলো, শেষের ঐ বিষন্ন অংশটুকু ছাড়া। কারণ, বিষন্নতাবোধ সবারই দরকার ,তবু বিষন্নতাকে ভালো বলতে নেই।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আহা, এমন করে যদি শনিবারের চিঠি লিখতে পারতাম...!

বিপ্রতীপ এর ছবি

ভালো থাকুন হিমু ভাই...আর মজার মজার লেখা দিন। অনেকদিন মজার কিছু লিখেন না...দেখবেন মজার কিছু লিখতে লিখতে মন ভালো হয়ে গেছে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিপ্রতীপ ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি

কনফুসিয়াস এর ছবি

সিনেমাটা মজার। আমিও দেখে খুব আরাম পাইছি।
আর, আপনিও যদি মন খারাপের লেখা শুরু করে দ্যান, কই যে যামু!

-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

বিপ্রতীপ এর ছবি

হ...টেম্পল টাইগার টাইপের লেখা চাই চোখ টিপি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
বিপ্রতীপ ব্লগ | ফেসবুক | আমাদের প্রযুক্তি

হিমু এর ছবি

মন্দিরারে দেখি না বহুদিন! কবে যে আবার তাকে নিয়ে ছড়া লিখতে পারবো মন খারাপ!


হাঁটুপানির জলদস্যু

শাহীন হাসান এর ছবি

আপনার লেখা পড়লাম ...,
শেষ পংক্তিগুলো ভাগাভাগি করলাম ...।
শুভেচ্ছা ...।
....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !

....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !

সবজান্তা এর ছবি

Ratatoullie একটা দুর্দান্ত সিনেমা। সাধারণত যত ভালোই হোক আমি এক চলচ্চিত্র আমি দুবার দেখি না, কিন্তু এটা আমি দেখেছি ৫ বার। আরো দেখার ইচ্ছা আছে দেঁতো হাসি

হিমু ভাই, নাম পালটে সৌরভ করে ফেলছেন নাকি চোখ টিপি


অলমিতি বিস্তারেণ

পরিবর্তনশীল এর ছবি

আমার রাতজাগা তারা।
একা রাতেরই আকাশে।
তুমি বাজালে একতারা...
আমার চিলেকোঠার পাশে।

ঠিক সন্ধ্যে নামার মুখে।
তোমার নাম ধরে কেউ ডাকে।
মুখ লুকিয়ে কার বুকে?
তোমার গল্প বলো কাকে?

আমার আকাশ দেখা ঘুড়ি।
কিছু মিথ্যে বাহাদুরি।
আমার চোখ বেঁধে দাও আলোয়
দাও শান্ত শীতল পাটি...
তুমি মায়ের মত ভালো।
আমি একলাটি পথ হাঁটি।

আমার বিচ্ছিরি এক তারা...
রাখো শরীরে হাত যদি।
আর জল মাখো দুই হাতে...
প্লীজ ঘুম হয়ে যাও চোখে ...
আমার মন খারাপ এই রাতে...

ভালো লাগেনা... কিচ্ছু ভালো লাগেনা...
খুব শব্দ করে কাঁদতে ইচ্ছা হয়, অন্য অনেক ইচ্ছার মতোই অপূর্ণ থেকে যায় এটাও।

---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

হিমু’র প্রবাসে দৈবের বশে সিরিজের আমি একজন অনুরাগী পাঠক। হিমু একা থাকেন প্রবাসে, আর আমি স্ত্রী-কন্যাসহ। কিন্তু তারপরেও প্রায়ই প্রবাসী হিমুর অনেক গোপন দীর্ঘশ্বাস মিলে যায় আমার দীর্ঘশ্বাসের সঙ্গে। এই যেমন মিলে গেলো পর্ব নম্বর ০৩৯-এর শেষ বাক্যটি! সাড়ে ছয় বছর আমি দেশে যেতে পারিনি। স্ত্রী-কন্যা সঙ্গে না থাকলে তো পাগলই হয়ে যেতাম। আর হিমু তো একলা, একা। হিমুর শেষ বাক্য-‘খুব শব্দ করে কাঁদতে ইচ্ছা হয়, কিন্তু অন্য অনেক ইচ্ছার মতোই অপূর্ণ থেকে যায় এটাও।’-না, আমার এইরকম ইচ্ছে অপূর্ণ থাকেনি। অটোয়া রিভারের জনমানবহীন তীরে বসে কতোদিন খুব শব্দ করে, চিৎকার করে কেঁদেছি! আর শব্দ করে, চিৎকার করে কাঁদতে পারলে বুকটা অনেক হালকা হয়, অন্তত আমার ক্ষেত্রে হয়েছে। সে এক কাহিনীই বটে। লিখতে গেলে আলস্যে কুলোবে না। তাই ওমুখো হচ্ছি না।
Ratatouille নামের কার্টুন মুভিটা আমি পরপর তিনবার দেখেছি এক সিটিং-এ। মার্চের ১৬ তারিখে এ্যামিরেটস-এ ঢাকা-দুবাই-টরন্টোর দীর্ঘ ক্লান্িতকর জার্নিতে Ratatouille আমাকে সঙ্গ দিয়েছে। এমনিতেই আমি ডিজনিপাগল। আর এটাতো একটা অসাধারণ নির্মাণ। এবং অবাক কান্ড হিমু- এই মুভিটা দেখার পরে আমিও আপনার মতোই নিজেকে ছোট্ট ইঁদুর রেমির সঙ্গে নিজেকে মেলাচ্ছিলাম!
আপনার প্রবাস জীবন আনন্দময় হোক। (যদিও জানি প্রবাস জীবন আনন্দময় হবার নয়।)

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

হিমু এর ছবি

ধন্যবাদ রিটন ভাই। অনেকদিন হলো লিখছেন না। সময়, সুযোগ আর স্বাস্থ্য অনুকূলে থাকলে কিছু পড়তে দিন আমাদের।


হাঁটুপানির জলদস্যু

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

কিন্তু ছবিটা দেখতে দেখতেই গভীর একটা বিষাদ আমাকে গ্রস্ত করে। শেষ পর্যন্ত, একটা ইঁদুরই তো আমি, রেমির চেয়ে একটু বড়, রেমির চেয়ে আরো অলস। রেমির মতো আমিও তো স্বজনদের ছেড়ে পড়ে আছি দূর প্রবাসে, নিজের ধান্ধায়। নিজেকে ডুবন্ত জাহাজ থেকে লাফিয়ে পড়া ইঁদুরের মতো মনে হয়, যে ঢেউয়ের মাথায় চড়ে জাহাজের দিকে তাকিয়ে চোখ মোছে। খুব শব্দ করে কাঁদতে ইচ্ছা হয়, অন্য অনেক ইচ্ছার মতোই অপূর্ণ থেকে যায় এটাও।

কিছু বলার নাই ... শুধু স্যালুট দিলাম একটা ... আমি সারাজীবন চাইলেও এমনে বলতে পারতাম না ...
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

সৌরভ এর ছবি

ভালো লাগে না।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

তবুও ভালো, ভালো যে লাগে না, প্রবাসে এই অনুভূতিটা অন্তত ফিল করার অবকাশ পাওয়া যায়।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অতিথি লেখক এর ছবি

কিন্তু ছবিটা দেখতে দেখতেই গভীর একটা বিষাদ আমাকে গ্রস্ত করে। শেষ পর্যন্ত, একটা ইঁদুরই তো আমি, রেমির চেয়ে একটু বড়, রেমির চেয়ে আরো অলস। রেমির মতো আমিও তো স্বজনদের ছেড়ে পড়ে আছি দূর প্রবাসে, নিজের ধান্ধায়। নিজেকে ডুবন্ত জাহাজ থেকে লাফিয়ে পড়া ইঁদুরের মতো মনে হয়, যে ঢেউয়ের মাথায় চড়ে জাহাজের দিকে তাকিয়ে চোখ মোছে। খুব শব্দ করে কাঁদতে ইচ্ছা হয়, অন্য অনেক ইচ্ছার মতোই অপূর্ণ থেকে যায় এটাও।

আমিও স্যালুট দিলাম।
eru

-------------------------------------------------
pause 4 Exam

হিমু এর ছবি

কিংকু আর eru এর স্যালুটের প্রত্যুত্তর দিলাম খটাস করে। ধন্যবাদ ভাই।


হাঁটুপানির জলদস্যু

রায়হান আবীর এর ছবি

মন খারাপ কৈরেন না, ভাই। নেট থেকে রাতাতুয়ি দেখার সাথে সাথে হালকা পাতলা সামাজিক ছবিও দেখে নিয়েন। তাহলে মনে শান্তি ফিরিবেক। হাসি
জর্মন সম্পর্কে বেশ মজার মজার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে আপনার লেখায়। নিজে পর্তেছি, অন্যরেও কাহিনী শুনাচ্ছি...
---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।

ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

নিজে পর্তেছি, অন্যরেও কাহিনী শুনাচ্ছি...

অন্যরেও? বাঃ বাঃ হাসি
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।