আমি ভূতত্ত্ব, জলতত্ত্ব বা জলভূতত্ত্বের ছাত্র নই, আবহাওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কেও আমার জ্ঞান নগণ্য। এম. এইচ. খান স্যারের সাথে তাই তর্ক করার স্পর্ধাও আমার নেই। তবে নবায়নযোগ্য শক্তির ওপর স্নাতকোত্তর পড়াশোনা করতে গিয়ে আমাদের শক্তি ব্যবস্থার সাথে আবহাওয়া এবং জলবায়ুর সম্পর্ক নিয়ে দুটি সেমিস্টারে কিছু কিছু পড়তে হয়েছে। আইপিসিসির রিপোর্টটি নিয়ে সেখানে আমাদের প্রফেসররা একাধিকবার সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছেন। কার্বন নিঃসরণের সাথে নবায়নযোগ্য শক্তির সম্পর্ক খুবই নিবিড় (মুদ্রার অন্য পিঠে হলেও), তাই এ প্রসঙ্গ উঠতে বাধ্য।
আমি যতদূর জানি, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধির যে সব সিনারিও ও মডেল রয়েছে, তা খুবই জটিল (কমপ্লেক্স)। এক একটি সিনারিওতে বেশ কিছু ব্যাপার ধরে নেয়া হয়, তাতে চলক ও প্যারামিটারের সংখ্যা প্রচুর। ব্যবস্থাকৌশল পড়তে গিয়ে আমরা দেখেছি, এ ধরনের জটিল ব্যবস্থায় এই প্যারামিটারগুলোর মানে সামান্য পরিবর্তন হলেই গোটা ব্যবস্থার উলটপুরাণ হতে সময় লাগে না। ফেজ স্পেস বিশ্লেষণ করে এ ধরনের জটিল ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা পরখ করা যায়। একটি ছোট উদাহরণ দিই, তিনটি সমান ভর যদি পরস্পর সমান দূরত্বে অবস্থান করে, তাহলে তাদের মধ্যে কার্যকর মহাকর্ষীয় বল পরিমাপের জন্যে কোন সরল গাণিতিক পদ্ধতি নেই। ব্যবস্থাটির জটিলত্ব সাধারণ ধারণার অতীত।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধির ব্যাপারটিও এর চলকগুলোর ভেতরের সম্পর্কের কারণে জটিল। কার্বণ নিঃসরণ এর অনেকগুলি চলকের মধ্যে একটি। পৃথিবী মূলত সূর্যের পাল্লায় পড়ে গরম হয়, কিন্তু খুব বেশি গরম হতে পারে না, কারণ সেই তাপ আবার মহাশূন্যে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াও পৃথিবীতে চলমান। পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা এ কারণেই পনেরো ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছাকাছি। কিন্তু যে হারে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসৃত হচ্ছে, তাতে করে বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের উপস্থিতি মহাশূন্যে তাপ ফেরত পাঠিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়াটিকে ব্যাহত করছে, ফলে পৃথিবী তাপ না হারিয়ে তা একটু একটু করে জমিয়ে গরম হচ্ছে।
এই ব্যাপারটি যথেষ্ঠ সরল, একে কয়েকটি চলক ও প্রক্রিয়া দিয়ে প্রকাশ করা সম্ভব। কিন্তু এর সাথে আরো অনেক বিষয় জড়িত। পৃথিবী তাপ ফিরিয়ে দেয় মূলত দুই প্রক্রিয়ায়, প্রতিফলন ও বিকিরণ। এই প্রতিফলন নির্ভর করে পৃথিবীপৃষ্ঠের ওপর কিছুটা, আর বায়ুমন্ডলের গঠন ও মেঘের প্রকৃতির ওপর বাকিটা। বালি বেশ ভালোভাবে তাপ প্রতিফলিত করতে পারে, সদ্য পড়া বরফ খুব ভালোভাবে, পুরনো বা জমাট বরফ এই দুইয়ের মাঝামাঝি, পানি তেমন একটা না। এখন, যদি সামান্য তাপমাত্রা বাড়ে, পৃথিবীর কিছু এলাকার বরফ গলে যাবে। ফলে তাপ ফিরিয়ে দেবার ক্ষমতাও পৃথিবীর সামান্য কমে যাবে। এর ফলে বাড়তি তাপ জমবে, তাপমাত্রা আরেকটু বাড়বে, আরো বরফ গলবে, আরো তাপ জমবে, তাপমাত্রা আরেকটু বাড়বে ... যেটাকে আমরা পজিটিভ ফিডব্যাক বলি, তা-ই ঘটবে। দ্রুত, আরো দ্রুত গলতে থাকবে বরফ।
ওদিকে আমরা কিন্তু কার্বন ডাই অক্সাইড আর অন্যান্য অ্যারোসলও সমানে ছাড়ছি বায়ুমন্ডলে। এগুলিও তাপ ধারণ করে রাখে, এবং মহাকাশে তাপ ফেরত পাঠাতে বাধা দেয়। তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে একে নিয়ন্ত্রণের জন্যে, অর্থাৎ কুলিঙের জন্যে আমরা আরো বেশি শক্তি ক্ষয় করবো, ফ্যান বেশি ঘুরবে, এসি বেশি চলবে, এবং তা জ্বলবে ফসিলভিত্তিক জ্বালানি পুড়িয়ে পাওয়া শক্তি দিয়ে, অর্থাৎ আরো কার্বন ডাই অক্সাইড, অর্থাৎ আরো গরম ... আবারো পজিটিভ ফিডব্যাক।
কোন এলাকায় বরফ হঠাৎ যদি গলতে শুরু করে, তাহলে তার আবহাওয়ার পরিবর্তন নির্ভর করে আরো শ'খানেক ফ্যাক্টরের ওপর। আজ যদি উত্তর মেরুর বরফ গলে, তাহলে সেই পানি নিচে নেমে আসবে, মিশবে উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের সাথে, এবং তাকে ব্যাহত করবে পানির লবণাক্ততার ভিন্নতার কারণে। এর ফলে উত্তর ইয়োরোপে হুট করে বরফ যুগ শুরু হয়ে যেতে পারে। তা যদি হয়, তাহলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন আবার উল্টোবাগে মুখ ঘোরাতে পারে।
এরকম অসংখ্য ফ্যাক্টর আছে গোটা ব্যবস্থাটিতে। হাজারের কাছাকাছি চলক ও প্রক্রিয়া। গত সেমিস্টারে আমরা ঈস্টার দ্বীপে সভ্যতা ধ্বংসের ব্যবস্থাটিকে পাঁচটি চলক ও গোটা তিরিশেক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উপস্থাপন করতে পেরেছিলাম (যদিও অনেক সরলীকরণকে গুঁজে দিয়ে), আর এমন একটা সিরিয়াস ব্যাপারে ব্যবস্থা-বিশ্লেষণ যে তার চেয়ে বহুগুণে জটিল হবে, তাতে আশ্চর্য কী?
অনেক প্যাচালের পর আসি আসল প্রসঙ্গে। উত্তর মেরুর বরফ ভাসমান বরফ। তা পুরোটা গলে পানি হলেও সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা সেই গলে যাওয়া বাড়তি পানির কারণে খুব একটা বাড়বে না। সমস্যা হচ্ছে গ্রীনল্যান্ড, অ্যান্টার্কটিকা আর অন্যান্য সব হিমশৈল নিয়ে। সেখানে মজুদ আটকে পড়া পানির পরিমাণ অনেক। উত্তর মেরুর বরফ গললে আশঙ্কা হচ্ছে সেই প্রতিফলনক্ষমতা কমে গিয়ে তাপ ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে পৃথিবীর পারফরম্যান্স কমে আসা, এবং ফলত তাপমাত্রার বৃদ্ধির কারণে সেই গ্রীনল্যান্ড, অ্যান্টার্কটিকা আর হিমশৈলগুলির বরফ গলার আশঙ্কা।
শ্রদ্ধেয় ডঃ খান যেভাবে পলি সঞ্চয় ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধিকে ইকুয়েট করছেন, সেই দুটি হার কিন্তু সমান না-ও হতে পারে। এ অঞ্চলে মৌসুমি বৃষ্টিপাত যদি কোন কারণে ব্যাহত হয়, তাহলে হিমালয়ভিত্তিক নদীগুলির মৃত্যু ঘটতে পারে। তখন পলিসঞ্চয় হার মানতে পারে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধির কাছে। তাছাড়া বছরে কয়েক মিলিমিটার করে বর্তমানে বাড়লেও, হঠাৎ এই স্থিত ব্যবস্থা কোন একটি চলকের কোন একটি মান অতিক্রমের কারণে হঠাৎ পাল্টে যেতে পারে, কয়েক বছরের মধ্যেই গণেশ উল্টে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ প্রক্রিয়াকেই লরেন্টজ বলেছিলেন, প্রজাপতির পাখার ঝাপটায় ঘূর্ণিঝড়। কোথাও, কোন একটি চলক চুপচাপ বসে সবকিছু দেখছে। তার মানটি নির্দিষ্ট একটি মান অতিক্রম করার সাথে সাথে সে আড়মোড়া ভেঙে উঠে দাঁড়িয়ে ইস্রাফিলের শিঙায় পোঁ বাজিয়ে দিতে পারে। এটি যে সম্ভব, তা প্রমাণ করে পৃথিবীর অতীত ইতিহাস। যদিও আরো ধীরগতিতে হয়েছে ব্যাপারটি, কিন্তু একসময় পাপুয়া নিউগিনি, অস্ট্রেলিয়া আর তাসমানিয়া একই মহাভূখন্ড সাহুলের অন্তর্গত ছিলো। ফলে একই নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী এই তিনটি ভূখন্ডে বসত করেছে। পরবর্তীতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে তারা একে অপরের হাত ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা পৃথিবীর সুদীর্ঘ ইতিহাসে কত লক্ষবার ওঠা নামা করেছে, তার কোন হিসেব নেই। আমরা এ-ও জানি না, হঠাৎ খুব অল্প সময়ের মধ্যে এমনটি ঘটেছে কি না। গত সেমেস্টারে ডঃ লাঙ্গে আর ডঃ রোরিগের সাথে আলাপের সময় এর একটি ব্যাখ্যা শুনেছিলাম, বর্তমানে যে জলবায়ুর মডেলটি নিয়ে তাঁরা বায়ুশক্তির পূর্বাভাস নিয়ে কাজ করছেন, সেখানে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ একটি নির্দিষ্ট স্তর অতিক্রম করলে গোটা ব্যবস্থাটির স্থিতিশীলতা ভেঙে পড়ে। তখন কী ঘটে, আর ব্যাখ্যা করা আর সম্ভব হবে না, পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্যে মডেলটিকে নতুন করে না সাজানো হলে।
আর ভয়ঙ্কর যে ব্যাপারটি, সেটি সমুদ্রের কাছে ভূমি হারানোর ব্যাপার নয়। সমুদ্রের পানি লোনা, তাকে ঠেকিয়ে রাখে নদীর বিপুল মিষ্টি পানি। নদীতে স্রোত কমলে সমুদ্রের লোনা পানি উজিয়ে চলে আসে জমিতে। মাটি একবার লবণাক্ত হলে তাকে আবার মিষ্টি করা অসম্ভব নয়, তবে সুদীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে যদি নদীতে বাহিত পানির পরিমাণ হ্রাস পায়, তাহলে স্যালিনেশন ইকুইলিব্রিয়াম লাইন খুব দ্রুত গতিতে কুষ্টিয়া আর চাঁদপুরে পৌঁছে যেতে পারে। এর একটি সহজ অর্থ হচ্ছে, যতদূর জানি, এর দক্ষিণে আর ধান চাষ চলবে না।
তবে আমরা যদি নিজেদের কাছে প্রশ্ন করি, বাংলাদেশ অচিরেই ডুববে কি না, দীর্ঘশ্বাস ফেলতে দ্বিধা হবে না। খবরের কাগজে পড়লাম, মহামান্য রাষ্ট্রপতির স্ত্রীর নামে খাল বরাদ্দ হয়ে যায়। বাংলাদেশকে সমুদ্র ডোবানোর আগে আমরাই ডুবিয়ে ছাড়ি কি না, কে জানে?
মন্তব্য
আমি ভূতত্ত্বের ছাত্র। আমি যতটুকু পড়েছি সে অনুযায়ী বাংলাদেশ ডুবার কথা। [নেতা/নেতৃরা যদি আগেই ডুবিয়ে না দেয় তাহলে আরও কিছুদিন সময় আছে হাতে। ]
কী ব্লগার? ডরাইলা?
না ডুববে না, কারণ পৃথিবীর অতীত ইতিহাসে একাধিক বার তার তাপমাত্রা বর্তমান প্রিডিকশনের চেয়ে বেশী ছিল যেমন ১৫শ এবং ১ম শতকে। তখন বাংলাদেশও ডুবে যায় নি, মেরূভল্লুকরাও বিলুপ্ত হয়ে যায় নি।
আইপিসিসির কার্বন ডাই অক্সাইড ভিত্তিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির মডেলটি ভূয়া, সমুদ্রপৃষ্ঠ বৃদ্ধির মডেলটিও ভূয়া, অতিরঞ্জিত। এটি পদার্থবিজ্ঞানের বিকিরনের সুত্র স্যাটিসফাই করে না।
কার্বন ডাই অক্সাইড নয় বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রধাণ কারন (৮০% বা তারও বেশী) সূর্যের বিকিরনের পিরিয়ডিক হ্রাস-বৃদ্ধি।
আইপিসিসির রিপোর্টটি অনেকটা ইরাকে ডব্লু এম ডি সংক্রান্ত সি আই এর রিপোর্টের মত, যেটি ব্যাবহার করে দুষ্ট লোকে তাদের অনেক উদ্দেশ্যই হাসিল করতে পারবে।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের এই ব্যাপক ধুঁয়া আসলে জ্বালানী রাজনীতির এক খেলা। ইমারজিং এশিয়ার ব্যাপক জ্বালানী চাহীদাকে নিয়ন্ত্রন এবং উন্নত প্রযুক্তির বিপনণই এর প্রধান উদ্দেশ্য।
পরে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা আছে।
--------------------------------------------
শুরুতেই ঈশ্বরের প্রশ্ন, কেমন মন চাই?
ঝকঝকে আয়নার মত, না টিমিটিমে প্রদীপের মত?
একটা যত আলো তত উজ্জল, তেলের খরচ নাই,
অন্যটা সদা কম্পমান কিন্তু খুব দরকার যখন চারদিকে অন্ধকার!
:.:::....:..::..:.::...:.:.:...:.:..:..:::....::..:...:..:.:.:....:..:.:.:.:.
To see Photos Visit: www.sirajul.com
সিরাজ ভাইর তথ্যগুলো আরো জানার আগ্রহ জাগায়।
অপেক্ষায় আছি।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
সিরাজ ভাই, ১ম শতকে বা ১৫শ শতকে ডোবেনি বলেই যে ২১শ শতকে ডুবতে পারবে না, এমন তো কোন কথা নেই। আর পঞ্চগড় পর্যন্ত ডুবে যাবার কথা বোধহয় কেউ বলেনি, ডুবলে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তৃত নিচু এলাকা ডুববে।
আর লক্ষ্য করুন, ১ম শতক বা ১৫শ শতকে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পেছনে কার্বন নিঃসরণের ভূমিকা নিশ্চয়ই ছিলো না। আমরা পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণ ঘটাচ্ছি একবিংশ শতাব্দীতে এসে।
আপনার লেখার জন্যে গভীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।
হাঁটুপানির জলদস্যু
১. যদি তাপমাত্রা বৃদ্ধিই সাগরের উচ্চতা বাড়ায় তাহলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি কোন শতকে বা মানবসৃষ্ট কি না সেটা মুখ্য না।
২. গ্রীন হাউস গ্যাসগুলোর মধ্যে কার্বন-ডাই অক্সাইডের পরিমান মাত্র ২০% (৭০% জলীয় বাস্প ও ১০% বাকী অন্যান্য, মোটামুটি )। এই ২০% কার্বন-ডাই অক্সাইডের মধ্যে মানুষ সৃষ্ট কার্বন-ডাই অক্সাইড এরও ২০ ভাগের এক ভাগ মানে ৫%। ২০% এর ৫% মানে ১%, এটা সর্বোচ্চো হিসাব। আমরা পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণ ঘটাচ্ছি এটা ঠিক, এটা কমানো উচিত্ তাও মানি কিন্তু এর কারনে আমরা ডুবে যাব, একথা মিথ্যা।
--------------------------------
শুরুতেই ঈশ্বরের প্রশ্ন, কেমন মন চাই?
ঝকঝকে আয়নার মত, না টিমিটিমে প্রদীপের মত?
একটা যত আলো তত উজ্জল, তেলের খরচ নাই,
অন্যটা সদা কম্পমান কিন্তু খুব দরকার যখন চারদিকে অন্ধকার!
:.:::....:..::..:.::...:.:.:...:.:..:..:::....::..:...:..:.:.:....:..:.:.:.:.
To see Photos Visit: www.sirajul.com
১. সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়াতে পারে তিনটি ফ্যাক্টর। একটি হচ্ছে টেকটোনিক প্লেটের আকস্মিক স্থান পরিবর্তনের কারণে সাগরের গভীরতা হ্রাস, পৃথিবীর ভূমন্ডল থেকে বিপুল পরিমাণ আয়তনের পানির চেয়ে বেশি ঘনত্বের বস্তু সাগরে জমা, অপরটি তাপমাত্রা বৃদ্ধি।
তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে তো কোন শতকের ডেডলাইন দিয়ে বাঁধতে চাইছি না। কিন্তু আপনি ১ম শতক ও ১৫শ শতকের প্রসঙ্গ টানলেন বলেই বলছি, সেই সময়ে অ্যানথ্রোপোজেনিক কার্বন নিঃসরণের পরিমান আজকের তুলনায় নগণ্য ছিলো। আপনি মানবসৃষ্ট তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণগুলো কেন মুখ্য নয় বলছেন, সেটা বোধগম্য হলো না। এর পেছনে যুক্তিটি কী? নাকি আপনি আপনার ধারণা বা বিশ্বাসের কথা জানাচ্ছেন?
২. আপনার দেয়া তথ্যের দিকে তাকিয়ে দেখুন। জলীয় বাষ্পের পরিমাণ মোট গ্রীন হাউজ গ্যাসের ৭০%। ধরা যাক, জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অপরিবর্তিত রইলো, কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ আমরা ০.১% বৃদ্ধি ঘটালাম। এর ফলশ্রুতিতে যে পরিমাণ তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঘটবে, তাতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ আরো বেড়ে গিয়ে এই কম্পোজিশনে জলীয় বাষ্পের অংশ ৭০ থেকে বেড়ে হয়তো ৭০.৫ এ গিয়ে দাঁড়াতে পারে, কারণ জলীয় বাষ্পের জন্যে অঢেল পানি আছে পৃথিবীতে, বাষ্পীভবনের সেই বাড়তি সুপ্ততাপটুকু জুটে গেলেই তো হয়ে গেলো। এরপর আপনি গ্রীন হাউজ গ্যাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের অংশ মাপুন, ২০% এর চেয়েও কম হবে তা, কারণ জলীয় বাষ্পে যে হারে বেড়েছে, কার্বন ডাই অক্সাইড সে হারে বাড়েনি। এর মানে কী দাঁড়ালো? কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণগত বৃদ্ধি মোট গ্রীন হাউজ গ্যাসে তার শতকরা অংশ কমিয়ে দিতে পারে। কাজেই কার্বন ডাই অক্সাইড কতটুকু আছে, তার পাশাপাশি আরো বিবেচ্য বিষয়গুলির মধ্যে একটি হচ্ছে, অন্য গ্রীন হাউস গ্যাসগুলির ওপর এর প্রভাব কেমন।
আর মানুষ মোট কার্বন ডাই অক্সাইডের ৫% এর জন্যে দায়ী বলেই কি সেটা খুব নগণ্য বা তুচ্ছ ব্যাপার? এই ৫% তো পৃথিবীতে আগে ছিলো না। শুধু তাই না, আগের ৯৫%কে সামাল দেয়ার মতো ফোটোসিনথেটিক এরিয়া পৃথিবীতে ১ম শতক বা ১৫শ শতকে ছিলো, এখন আছে কি? কার্বন ডাই অক্সাইডের যে ভারসাম্য চক্রটি আছে, সেটিও কিন্তু খুব সংবেদনশীল। ৫% সেখানে একটি বিশাল মাপের ব্যাপার।
ধরা যাক আপনি ১০০ কেজি ওজন বহন করতে পারেন, এর চেয়ে ১০গ্রাম ওজন আপনার ওপর চাপালেই আপনি ভারসাম্য হারাবেন। তখন যদি ১% বাড়তি বোঝা, অর্থাৎ ১ কেজি চাপাই আপনার পিঠে?
১% কেন, কিছু কিছু ব্যবস্থা এরচেয়ে নগণ্য পরিবর্তনের কারণে পুরো গণেশ উল্টে দিতে পারে, বিশেষ করে আবহাওয়া ব্যবস্থায়। যখন সাইক্লোন হয়, তখন পানির উপরিতলের তাপমাত্রা সম্ভবত ২৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস (আমি ভুল করতে পারি এই মানটা নিয়ে, কারো জানা থাকলে শুধরে দেবেন) অতিক্রম করার পরপরই খেল শুরু হয়। এখন যদি আমি বলি, ২৭.২৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা হলেই সমস্যা কী, বৃদ্ধি তো মোটে ১% ... কথাটা কি ঠিক শোনাবে?
আমি আপনার কাছ থেকে ব্যাখ্যাটি শুনতে আরো আগ্রহী বোধ করছি। সময় হলে লিখবেন, প্লিজ।
হাঁটুপানির জলদস্যু
১। আমি বলতে চাচ্ছি তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই পুরো মেকানিজমে সূর্য্যের বিকিরণ দায়ী ৮০% বাকী ২০% গ্রীন হাউস গ্যস। সেই ২০% এরও ১% অ্যানথ্রোপোজেনিক তার মানে ০.২%। তাহলে একটি সমীকরনে যেখানে ৯৯.৮% এর উপর আমাদের কোন হাত নাই সেখানে ০.২% হচ্ছে জুজুর ভয়।
২। আপনি যেটা বলছেন সেটা ক্রিটিক্যাল বা ক্যাটাস্ট্রফিক ইভেন্ট। তাপমাত্রা বাড়লে জলীয় বাষ্প বাড়ে বা মেঘ বাড়ে। মেঘ সূর্য্যের বিকিরণ ফিরিয়ে দেয় ফলে তাপমাত্রা কমে। এটি নেগেটিভ ফিডব্যাকের কাজ করে ও সিষ্টেমটাকে স্ট্যাবিলাইজ করে। অতীতে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঘটনায় ক্যাটাস্ট্রফিক ইভেন্টের সেরকম কোন ইতিহাস নাই।
-----------------------------
শুরুতেই ঈশ্বরের প্রশ্ন, কেমন মন চাই?
ঝকঝকে আয়নার মত, না টিমিটিমে প্রদীপের মত?
একটা যত আলো তত উজ্জল, তেলের খরচ নাই,
অন্যটা সদা কম্পমান কিন্তু খুব দরকার যখন চারদিকে অন্ধকার!
:.:::....:..::..:.::...:.:.:...:.:..:..:::....::..:...:..:.:.:....:..:.:.:.:.
To see Photos Visit: www.sirajul.com
তাপমাত্রা বৃদ্ধির পেছনে যে সমীকরণটির কথা বলছেন, সেটি যদি পূর্ণভাবে উপস্থাপন করতেন, আমার বুঝতে সুবিধা হতো। ইনকামিং শর্টওয়েভ তাপ আর আউটগোয়িং লংওয়েভ তাপের একটা ভারসাম্যচিত্র পড়েছিলাম আমরা, সেখানে ব্যাপারটাকে অন্যরকমই মনে হয়েছে আমার কাছে।
আর জলীয় বাষ্প মানেই কি মেঘ? বায়ুমন্ডলের মোট জলীয় বাষ্পের কতখানি মেঘ হতে পারে? জলীয় বাষ্প তো বেশ খানিকটা তাপ বায়ুমন্ডলে ধরেও রাখে জানতাম। মেঘের কিসিমের ওপরও নির্ভর করে সেটি কতখানি তাপ ফিরিয়ে দেবে, কিমুলাস, সিরাস, নিম্বাসের জন্যে একেকরকম ঘটনা ঘটে শুনেছি।
আমি আপনার পূর্ণাঙ্গ লেখাটির অপেক্ষায় আছি। ব্যস্ততা কমলে লিখবেন আশা করছি। জুজুর ভয় কাটানো প্রয়োজন।
হাঁটুপানির জলদস্যু
হিমু ভাই, আপনার লেখায় ভয় পেয়ে গেছিলাম। আবার সিরাজ ভাই'র মন্তব্যে সাহস পাইছি। তবে গত রাতে যে ভূমিকম্পের নাড়া খাইছি, তাতে ভয়ে আছি - ভূমিকম্পের কারনেই না জানি বেঘোরে মারা পড়ি!
---------------------------------
সচল আছি, থাকবো সচল!!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
বিজ্ঞানীরা যেভাবে দুভাগ হয়ে যান, তাতে বুঝতে পারি না- কার কথা ঠিক? এক পক্ষের কথা আশঙ্কায় ফেলে দেয়, আবার আরেক পক্ষের কথা শুনে আশ্বস্ত হই। তবে যাই হোক না কেন, খারাপটার জন্যই আমাদের প্রস্তুত হয়ে থাকা উচিত।
অনিশ্চিত
এই বিষয়ে জানার আগ্রহ প্রবল। যারা জানেন তাদেরকে অনুরোধ করি এইখানে বিষয়টা নিয়া আলোচনা করার।
এখানে শুধু কার্বন ডাই অক্সাইডের কথা এলো... অতি বেগুনী রশ্মির ব্যাপারটাও শুনছিলাম এইখানে ফ্যাক্টর। আরো অনেক কিছুই ফ্যাক্টর... এই বিষয়ে পড়াশোনা করা লোক এইখানে আছেন বইলাই জানি... শামীম ভাই বা তানভীর ভাই সম্ভবত ভালো বলতে পারবেন... আমার অজানা অন্য কেউও থাকতে পারেন। তাদেরকে আলোচনায় যোগ দিতে অনুরোধ করছি। আমাদের মতো নাদানদের উপকারার্থে...
ফারুক ওয়াসিফের একটা প্রকাশনা ছিলো বোধহয় এই প্রসঙ্গে... হাতের কাছে খুঁজে পেলাম না।
আর সিরাজ ভাই তো আছেনই...
ধন্যবাদ হিমু ভাই এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারটারে আলোচনায় নিয়া আসার জন্য।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
--যেটাই ঘটুক না কেন, আমরা কি তা পরিবর্তন করতে পারব ? কত কত প্রস্তুতি দরকার, যার সাধ্য বা অনুভুতি কিছুই আমাদের নাই।
--হতাশ লাগে।
প্রথম আলো'র ঐ আয়োজনটির পরিকল্পনা এবং জোহান হারির লেখাটির অনুবাদ আমিই করেছিলাম। তারপরও বলি, বিষয়টা আমার কাছেও ধাঁধা ঠেকছে। জলবায়ু পরিবর্তন কতটা হচ্ছে, হলে কী হবে তা জানি না। কিন্তু এটাকে ঘিরে নতুন ধরনের প্রযুক্তির প্রচলন, সাহায্য-বিনিয়োগ, অবকাঠামো স্থাপন ইত্যাদির মাধ্যমে বিরাট বাণিজ্য হবে। ক্ষুদ্রঋণ বাণিজ্যের জন্য যেমন একটা নোবেল প্রাইজ দরকার ছিল, জলবায়ু বাণিজ্যের জন্যও একটা নোবেল প্রাইজ দরকার। তার জন্য আল গোর তো ছিলেনই, উপরূন্তু আইপিসিসিকেও পাওয়া গেল।
বাংলাদেশে এটা এখন নতুন হুজুগ। জলবায়ু জলবায়ু করে এনজিওরা টাকা পাচ্ছে, সরকার টাকা পাচ্ছে, নতুন প্রকল্প আসছে, গবেষকরা মওকা বুঝে কোপ মারছেন। সবই ভাল চলছে। আর এর তোড়ে বিশ্বব্যাংকিয় ফ্যাপ আর নেদারল্যান্ডসের হাতে করা জলকাঠামোগুলোর কারণে যে জলাবদ্ধতা, নদীভাঙ্গন এবং নদীমৃত্যু ঘটছে সেগুলোকেও জলবায়ুর নামে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। উপকূলীয় পোল্ডারগুলোর জন্য মোহনায় পলি জমে নতুন ভূখণ্ড জাগছে আবার নদীর সাগরে পড়ার বেগও কমে যাচ্ছে। ফলে জোয়ারের পানি বেশি ভেতরে ঢুকে লবনাক্ততা বাড়াচ্ছে। অনেক অঞ্চলে চিংড়ি ঘেরের জন্য খাল কেটে সমুদ্রের পানি ধানের জমিতে ছড়ানো হচ্ছে। এখন শুনছি, লবনাক্ততাও নাকি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য হচ্ছে।
সবুজ বিপ্লবের কুফল হিসাবে মাটিতে আর্সেনিক হচ্ছে। আশা করছি ভুল কৃষিনীতির থেকে দৃষ্টি সরিয়ে একেও জলবায়ু পরিবর্তনের কোটায় ফেলা হবে। কিছু বলার নাই। কারণ বিশেষজ্ঞদের ছেলে-মেয়ে আছে। তাদের গাড়ি কিনে দিতে হবে, বিদেশে পড়াতে হবে। তাই সত্য বলা যাবে না। কনসাল্টেন্সি তাতে টিকবে না।
এর আগে বার্ড ফ্লু-কে ঘিরেও এমনটা হয়েছে। ফ্লু'র ভাইরাসের দেখা পাওয়ার আগেই ডিক চেনির কোম্পানি ঐ ভাইরাসের প্রতিষেধকের বিরাট চালানের অর্ডার পেয়ে যায়। একদল বিজ্ঞানী তো এটা প্রমাণেরও চেষ্টা করলেন যে, এটি প্রকৃতিদত্ত ভাইরাস নয়, মনুষ্যসৃষ্ট। তো বুঝুন ঠেলা! এসব দেখে জগতাটাকে মায়া মনে হওয়া শুরু হয়েছে।
ওদিকে কানাডার নওমি ক্লেইন শক ক্যাপিটালিজম নামে একটা বই লিখেছেন। তাতে তিনি বলছেন, ক্যাপিটালিজম একটার পর একটা শক তৈরি করে লাফিয়ে লাফিয়ে সর্বোচ্চ পুঁজি সংবর্ধন নিশ্চিত করে। আগে লেনিন কেবল যুদ্ধের কথা বলেছিলেন, এখন নওমি বলছেন কৃত্রিম শক সৃষ্টি করার কথা।
কেবল দেশই নয়, বিশ্বই বোধহয় তার ধ্বংসযাত্রা শুরু করেছে। পশুরাও যেখানে খায় সেখানে হাগে না। আমরা আমাদের লোভের গু দিয়ে ধরিত্রীকে ধ্বংস করে ফেলছি। এসব আর বলতেও ভাল লাগে না। জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়া যেত যদি সব।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
লেখার জন্য হিমুকে অভিনন্দন।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
অভিনন্দনটা এগিয়ে এসে ব্যাট চালিয়ে আপনার দিকেই ফেরত পাঠিয়ে দিলাম :)। জোহান হারির মূল লেখাটা পড়িনি, তবে অনুবাদটা পড়ে ভালো লেগেছে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
প্রথম আলোর দুটো উপ সম্পাদকীয় (জোহান হারি ও এম এইচ খান) এবং এই পোস্ট --- তিনটাই ভালো হয়েছে।
আমার কথা হলো জলবায়ূ পরিবর্তন কিংবা কার্বন ডাই অক্সাইড এর জন্য বাংলাদেশ না ডুবলেও মানুষের ভারে এমনিতেই ডুইবা যাবে। ডুবার হাত থেকে দেশকে বাচাঁনোর উপায় একটাই-- জনসংখ্যা সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে নিয়ে আসা।
( আমি ভাই বুঝি কম..... যা সত্যি তাই কইলাম... ভুল হইলে মাফ কইরা দিয়েন সবাই)।
বিশ্লেষণটা চমৎকার লাগলো। আগে জানতাম না এতো।
(রাতে ভূমিকম্পের ভয়ে ঘুম হারাম, সচলে আজ আবার ডুবে মরার ভয়- যাই কোথা?)
..তবে আমি আশাবাদী- ডুববো না বোধ হয়! প্রথম আলো কিছুটা আশার আলো দেখাতে পেরেছে! অনুবাদের জন্য ধন্যবাদ@ফারুক ওয়াসিফ।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
ভয়ে ভয়ে পড়া শুরু করলেও চমৎকার এই পোস্টটা বুঝতে খুব একটা সমস্যা হয়নি। খুব বেশি মারপ্যাঁচ বুঝি না, একটা জিনিস আমার সবসময়ই মনে হয়, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব কোন না কোন ভাবে তো পড়বেই। তাপমাত্রা বাড়ছে, মেরুর বরফ গলছে, এগুলো তো অস্বীকার করার উপায় নাই। আর এর প্রভাব এড়ানোও তাই সম্ভব না। আমারও কেন যেন মনে হয় আমাদের নিম্ন অঞ্চলগুলো সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট প্রবল। তবে যেহেতু এই বিষয়ে আমার তেমন কোন পড়াশুনা নেই, তাই বিশেষজ্ঞদের লেখার উপরেই ভরসা। সিরাজ ভাইয়ের লেখার জন্য অপেক্ষা আমারও। হিমু ভাইকে ধন্যবাদ তথ্যবহুল চমৎকার এই পোস্টের জন্য।
আশা আর আতঙ্ক, এই দুই গলুইয়ে দুলতে দুলতে শেষ পর্যন্ত কই গিয়ে দাঁড়াই কে জানে ! তবে আমি আশাবাদী মানুষ, নৈরাশ্যকে প্রশ্রয় দিতে চাচ্ছি না সহজে।
চমৎকার পোস্টের জন্য লেখক হিমু এবং সম্ভাব্য আগামী পোস্টের জন্য সিরাজ ভাইকে অভিনন্দন।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
যোহান হ্যারির লেখাটা ইন্ডিপেন্ডেন্টে আগেই পড়েছি। গ্লোবাল ওয়ার্মিং, মৌলবাদ ইত্যাদির খিচুড়ি মিলিয়ে লেখাটিকে অতিরঞ্জন মনে হয়েছে। আর কিছু না হোক, যেহেতু এতে তাহমিমা আনামের নাম আছে- তাই প্রথম আলো এ লেখার অনুবাদ অবশ্যই ছাপাবে- এমন ধারণা আগেই করেছিলাম।
এম এইচ খানের লেখা পড়ে মনে হয়েছে তার বৈশ্বিক উষ্ণায়ণ বা বৈশ্বিক আবহাওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা নেই। তিনি আশা করছেন বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়লে পলি পড়ে বাংলাদেশের উচ্চতাও বাড়বে! কিন্তু হিমু যেটা বলেছে পরিবর্তন হলে শুধু সমুদ্রপৃষ্ঠেই হবে না, বৃষ্টিপাত তথা আবহাওয়া ইত্যাদিতেও ব্যাপক পরিবর্তন আসবে, যার ফলে নদ-নদীগুলোর ওপরেও এর প্রভাব পড়বে। 'কিছুই না করা হলে, প্রকৃতি নিজেই তার সৃষ্ট ভূখন্ড তলিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা নেবে'- লাইনটা হাস্যকর এবং আমাদের পশ্চাতপদ মানসিকতারই একটা উদাহরণ।
তিনটা লেখার মধ্যে হিমুর বিশ্লেষণটাই সবচেয়ে যৌক্তিক। সূর্য থেকে যে পরিমাণ তাপ পৃথিবীতে শোষিত হয়, তা মহাশূণ্যে ফেরত পাঠিয়ে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার যে চলমান প্রক্রিয়া- তা আজ নানা কারণে ব্যহত হচ্ছে- ফলে প্রক্রিয়াটা এখন ভারসাম্যহীন অবস্থায় আছে যাকে বলা হয় ‘প্ল্যানেটারি এনার্জি ইমব্যালান্স’ এবং এতে পৃথিবীর তাপমাত্রা যে একটু একটু করে বাড়ছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। এখানে উল্লেখ্য, পর্যায়ক্রমে পৃথিবীর উষ্ণ ও শীতল হওয়াটাও একটি চলমান প্রক্রিয়া- যেটা সিরাজ সাহেব তার মন্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আমরা বিভিন্ন সময়ে ‘বরফ যুগের’ কথা জানি। তেমনি বিভিন্ন সময়ে ‘উষ্ণ যুগ’ও ছিল। আজ থেকে প্রায় ১৪,০০০ বছর আগে উষ্ণ যুগে যখন মেরু অঞ্চলের আইস শীটগুলো গলে গিয়েছিল তখন সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ৪০০ বছর ধরে প্রায় ২০ মিটার বৃদ্ধি পেয়েছিল (কাইনাস্ট এট আল, ২০০৩)। অর্থাত গড়ে বিশ বছরে এক মিটার। কিন্তু চৌদ্দ হাজার বছর আগের পৃথিবী আর বর্তমান পৃথিবী এক নয়। নিকট অতীতে যেসব উষ্ণ যুগের সন্ধান পাওয়া গেছে তাতে এ পরিবর্তন খুব বেশি ছিল না। গত শতাব্দীতে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়েছে মাত্র ১৫ সেমি (+-৫ সেমি)। কিন্তু তারপরও কথা থেকে যায়। কারণ অতীতের এসব উষ্ণতা/শীতলীকরণ ছিল সম্পূর্ন প্রাকৃতিক নিয়ামকের অধীন। আজ তার সাথে যুক্ত হয়েছে এনথ্রোপজেনিক বা মানুষের ক্রিয়াকলাপের প্রভাব। কার্বন-ডাই-অক্সাইড, গ্রীন হাউস গ্যাস ইত্যাদির বিপুল নিঃসরণ বৈশ্বিক উষ্ণায়ণকে বর্তমানে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে- যা অতীতে কখনো ছিল না। যদিও অনেক মডেল অনুযায়ী, কার্বন নির্গমনের বর্তমান হার যদি দ্বিগুণও হয়, তবুও আইস শীটগুলো স্টেবল থাকার কথা, তারপরও হ্যানসেন প্রমুখ বিজ্ঞানীদের কথাও একেবারে ফেলে দেয়া যায় না। তবে ২৫ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধি এটাকে একটু বাড়াবাড়ি বলেই মনে হয়। ফারুক ওয়াসিফ যেটা বলেছেন বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ে বর্তমানে বিশাল বাণিজ্য চলছে- সব পক্ষেই। ‘বাংলাদেশ ডুবে যাবে’-এটাকে আমার সেই বাণিজ্যিক কৌশলেরই প্রচারণার একটা অংশ বলে মনে হয়। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সাথে ঘূর্ণিঝড়ের সম্পর্ক নিয়ে প্রথম আলোয় কিছুদিন আগে একটা লেখা দিয়েছিলাম (লিংক)। আমার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এদের মধ্যে তেমন কোরিলেশন নাই এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবার মত সময়ও এখনো আসে নি। ভবিষ্যতে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা নিয়ে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে আছে।
= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।
হিমু। আপনার লেখাটা আরো ব্যপক ভাবে প্রচারের দাবি রাখে।শুধু পাপুয়া নিউগিনি বা নিউজিল্যান্ডই নয় এই ভারত ভূখন্ডটাও একালে অষ্ট্রেলিয়ার সাথে ছিল। হিমালয় সৃষ্টির যে কারণগুলো মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত তার অন্যতম হলো গোটা ভারত ভূখন্ড অষ্ট্রেলিয়ার মায়া কাটিয়ে এশিয়ায় ধাক্কা মারার ফলে দুমড়ে কুঁকড়ে মাটি ফুলে হিমালয়ের সৃষ্টি। সেও প্লেট জমানায়। যখন এককোষি এ্যমিবাও জন্মায়নি। আমি যেটা বিশ্বাস করি সেটা ফারুক বলে দিয়েছে। ডুববে। লবনাক্ততা হবে। মিঠা পানি প্রবাহ কমে যাবে সব অংশত ঠিক, কিন্তু তা হতে লাগবে মাত্র হাজার পাঁচেক বছর । স্পেসে হাজার বছর কোন সময়ই নয়। কিন্তু এসব নিয়ে যারা মাদারির খেলা খেলছেন তারা অত সময় নয়, মাত্র ১৫/২০ বছরের মধ্যেই আমারদরকে ইথিয়পিয়া বা আফগান বানানোর যোগাড়যন্তর করেই ফেলেছে, আর আমাদের স্ট্যাবলিশমেন্ট সেসব ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চলেছে। বাইরের শত্রুর জন্য বন্দুক কিনেছি- এদের জন্য কী ?
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
ভারত অস্ট্রেলিয়ার সাথে ছিলো কি না সঠিক মনে নেই, তবে আফ্রিকার সাথে ছিলো। তবে আপনি যে আদিকালের কথা বলছেন, আমি তত পেছনে যাইনি। আর নিউজিল্যান্ড সম্পর্কে আপনি ভুল বলছেন, নিউজিল্যান্ড অস্ট্রেলিয়ার সাথে যুক্ত ছিলো না কখনো। তার অবস্থান বরাবরই বিচ্ছিন্ন ছিলো।
পাপুয়া নিউগিনি, অস্ট্রেলিয়া ও তাসমানিয়ায় মানুষের বসতির ইতিহাস প্রায় পঁয়তাল্লিশ হাজার বছর পুরনো বলে ধারণা করা হয়। এর মধ্যে তাসমানিয়ায় এই বসতি ছড়িয়ে পড়ে প্রায় পনেরো হাজার বছর আগে। ধারণা করা হয়, এর পরই সাহুলের অগভীর অংশকে বর্ধিত সাগর গ্রাস করে এদের তিনটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত করে।
বাংলাদেশের ডুবে যাওয়া নিয়ে ভূরাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের চেহারাটা কেমন হবে, আঁচ করতে পারছি না, তাই বিষম কৌতূহল বোধ করছি এ নিয়ে। এই পোস্টে আমাদের আলোচনাটা একটা থট এক্সপেরিমেন্টের দিকে যেতে পারে। শুরু করবেন নাকি?
প্রথম প্রশ্ন রইলো তবে, বাংলাদেশ ডুবে যাবার ব্যাপারটি নিছক "রটনা" হলে কার লাভ?
হাঁটুপানির জলদস্যু
দুর্দান্ত একটা আলোচনা। বালের এই বিষয়ে খুব বেশি জানাশোনা নাই, নাইলে জিজ্ঞাসা ছিলো কিছু... আপনারা চালান...
অনুবাদটায় আমি বেছে বেছে বিপর্যয়ের অংশটা দিয়েছি, কায়েমি চিন্তার ছাপগুলো রেখেছি যাতে পাঠক এ চিন্তা নিয়ে সতর্ক হতে পারে। কিন্তু এক ঘন্টার কাজে যা হয়, তা-ই হয়েছে। যাহোক, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি আজকের বিশ্বের দৈবী ভিশন। এখানেও তা আছে। লেখক ভীতিকর চিত্র তৈরি করে গেলেন ঢাকার চকবাজারে। এক পানবেচনেওয়ালিরে জিগাইলেন সে লাদেনকে পছন্দ করে কি না। মহিলা বললো করে। আরেকজনরে জিগাইলেন, সেও একই কথা বললো। কেউ কেউ লাদেনকে প্রেসিডেন্টও বানাতে চায়। তারা আবার বিশ্বাস করে যে, ৯/১১ আমেরিকা নিজেই ঘটিয়েছে। এটা কোন ধরনের সমাজত্ত্ব জানি না কিন্তু তাঁর ব্যাস হয়ে গেল, বাংলাদেশে মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ উর্বর। সাক্ষি মানলেন গৌন টিভি চ্যানেল আরটিভির এক সাংবাদিককে। বাংলাদেশের কোনো সমাজ-রাজনীতির বিশ্লেষককে তিনি পেলেন না। আর ওদিকে তাহমিনা আনামের থেকে দেশের প্রতি দরদ আনলেন, আতিক রহমানের কাছ থেকে আনলেন বিশ্লেষণ। খিচুড়ি রেডি। সমীকরণটি এরকম : বাংলাদেশ ডুববেই (বলা দরকার তিনি জলাবদ্ধতাসহ যেসব উদাহরণ টেনেছেন সেগুলোর বেশিরভাগের সঙ্গেই জলবায়ু পরিবর্তনের সম্পর্ক নেই, বিশ্বব্যাংকীয় পরিকল্পনায় করা ভুল জলকাঠামোর সম্পর্ক আছে। ) আর ডুবতে থাকলে অল্প রিসোর্স নিয়ে টানাটানির মধ্যে জঙ্গিবাদ সবল হবে ইত্যাদি। তত্ত্বটা তিনি পয়দা করিয়েছেন অধ্যাপক ফিলিপ জেনকিনস এর বরাতে। এনার আবিষ্কারটির কারণেই রিপোর্টটি গুরুত্ব পেয়েছে। জলবায়ু-মৌলবাদের এ তত্ত্ব হান্টিংটনের তত্ত্বের থেকে কম রেসিস্ট নয়। এর খাতির হওয়ার কারণও সেটাই। হান্টিংটন আরেক জায়গায় বলেছিলেন, পরিবেশ বিধ্বংসী কারখানাগুলো তৃতীয় বিশ্বে সরিয়ে আনলে আর্থিক ক্ষতি কম। কারণ সেখানকার মানুষের জীবনের দাম কম। যেহেতু রাষ্ট্র এখানে নাগরিকদের পেছনে কম অর্থ ব্যয় করে। আর এ ক্ষতির মূল্য হিসাব করে কিছু টাকা ধরিয়ে দিলেই চলবে। এটা আমি পড়েছিলাম কয়েক বছর আগের ফরেন অ্যাফেয়ার্স এর একটি সংখ্যায়। সুতরাং জোহান হারির মতো বন্ধুদের সস্পর্কে সাবধান।
বৈশ্বিক উষ্ণতাকে পুঁজি করে বাণিজ্যের আরো কিছু চিত্র দেয়া যাক।
বাংলাদেশের ভেতরে এবং বৈশ্বিকভাবেও একটা মত জোরালো হচ্ছিল যে, যাদের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি, তাদের এর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এ ব্যাপারে ব্রিটেনের বাংলাদেশে সাবেক রাষ্ট্রদূত আনোয়ার চৌধুরীরও উদ্যোগ ছিল বলে শুনেছি। এরকম একটি কাজ যখন এগিয়ে যাচ্ছিল এবং বাংলাদেশের কিছূ ক্ষতিপূরণ পাবার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছিল, তখনই বিশ্বব্যাংক নাক গলায়। তারা বলে ক্ষতিপূরণের বদলে, ক্লাইমেট ফান্ড গঠনের প্রস্তাব নিয়ে হাজির হলো। এরা দেশের ভেতরে কিছু প্রচারকও পাঠাল। আতিক রহমান তাদের একজন। এরা আহাজারি করা শুরু করলো যে, বাংলাদেশ ডববেই। এর জন্য নতুন প্রযুক্তি দরকার, নতুন বিনিয়োগ দরকার। ব্যস হয়ে গেল। যা বাংলাদেশ ক্ষতিপূরণ হিসেবে পেত, তা এখন আসবে ঋণ হিসেবে। এবং তার পরিমাণ দুই বিলিয়ন ডলার! কইয়ের তেলে কই ভাজা আর কাকে বলে। এখন অনেক গবেষক কোটি টাকা পাবে, অনেক সচিব বিদেশে ভ্রমণ করবে, ফ্লাট কিনবে। রাজনীতিবিদরাও কিছু পাবে। এনজিও-বুদ্ধিজীবী-সাংবাদিকরাও বাদ পড়বে না। এই টাকায় বিদেশি কোম্পানির থেকে নানারকম যন্ত্রপাতি-প্রযুক্তি কিনতে হবে। তাদের নানান প্রজেক্টের ভার দিতে হবে। কারো গুদাম পোড়ে আর কেউ আলু পোড়া খায় আর কি!
এর বাইরে যারা আছেন, মিডিয়া তাদের নেবে না। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশের বিপদ ছোটো হয়ে যায় না। বেশি বেশি ঘূর্ণিঝড় হবেই। বন্যা ঘন ঘন হবে। উদ্বাস্ত হওয়া, মহামারি ছড়ানো চলবে। উতপাদন কমে যাবে। একটা প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ দেশকে কীভাবে সংক্ষিপ্ততম সময়ে ধ্বংস করা যায় বাংলাদেশ তার আদর্শ উদাহরণ হতে পারে।
এ অবস্থায় আমার আপনার অনেক কাজের দায় কিন্তু তৈরি হয়ে যায়। এ আলোচনা সেদিকে গড়ালে, কিছু একটা অগ্রগতি হলো বলে মনে করবো। এবং ভাববো, দেশের সন্তানেরা দেশের চূড়ান্ত বিপদে দেশমার্তৃকাকে ভোলেনি। কী করা যাবে, দেশকে এখনো আমার মা-ই মনে হয়, ধর্ষণযোগ্য গণিকা মনে হয় না।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
ফারুক ভাই, এ প্রসঙ্গে সময় পেলে বিস্তৃত একটি পোস্ট দিন। এ দিকটি নিয়ে আরো আলোকপাত করা জরুরি।
মন্তব্য জাঝা।
হাঁটুপানির জলদস্যু
এই ওয়েব পেজে গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে ভিন্নমতাবলম্বীদের বেশ কিছু লেখা আছে। পছন্দ করে পড়তে পারেন। আমি সবটা বিচার করে দেখিনি। কিন্তু এদের কাজের সঙ্গে আমার পূর্বপাঠ থেকে ভরসা করার কিছু জিনিষ পেয়েছি।
http://www.globalresearch.ca/index.php?context=theme&themeId=4
http://www.globalresearch.ca/index.php?context=va&aid=9199
http://www.globalresearch.ca/index.php?context=va&aid=5086
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
লেখা পড়লাম। ভাল লাগল। মতামতে যাচ্ছি না, কিন্তু আমার মনে হয় এই সবগুলোর যে কোনো একটা ঘটতেই পারে ... মানে ডুবে যেতেও পারে ... নাও পারে। ডুবে গেলে বিজ্ঞানীরা বলবে "দেখলে মজাটা ... আমি কিন্তু আগেই বলেছিলাম", আর না ডুবলে বলবে ... "দেখলে মজাটা ... আগে থেকে সতর্ক করে দিয়েছিলাম বলেই না এ যাত্রায় পার পেয়ে গেলে"। সুতরাং ভেবে খুব একটা কাজ নেই ... আমাদের হাতে নিয়ন্ত্রণও খুব একটা নেই।
তবে যে বিষয়টার কোনো নড়চড় হবার নয় সেটা হল মানুষের আবেগ ... মানে মানুষের চিন্তায় ভাবনায় সমাজ, অর্থনীতি আর রাজনীতির মত গ্লোবাল ওয়ার্মিং নামক আরো একটা টপিক মাথায় চেপে বসল। অন্য কেউ আমাদের ভাবাচ্ছে এই ব্যাপার মেনে নিতে আমার ঘোরতর আপত্তি আছে, তাই আমার মনে হয় গ্লোবাল ওয়ার্মিং কে শত্রু হিসাবে না দেখে এই হুজুগ থেকে কতটা ব্যবসা করে নেওয়া যায় সেটা দেখা উচিত। ৬০০ মিলিয়ন ডলার খরচা করে ছটা জুট পার্ক তৈরী করা হচ্ছে ভারতে, কারণ মনে করা হচ্ছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর চিন্তায় পশ্চিমে অনেকেই জুট ব্যবহার করতে আগ্রহী হয়ে উঠবেন (যদিও প্লাস্টিকের বদলে জুটের সাথে গ্লোবাল ওয়ার্মিং সম্পর্কটা আমার কাছে পরিষ্কার নয়)। এরকমই ব্যাটারীচালিত গাড়িও বাজারে চলবে কিছুকাল, তাই চিনে অনেক ব্যাটারীচালিত গাড়ির কারখানা তৈরী হচ্ছে। আবেগ নিয়ে ব্যবসা চলছে, চলবেই ... সুযোগটা হাতছাড়া করলে চলবে না।
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
দিগন্ত, আপনার বুদ্ধিদীপ্ত মন্তব্য আমার জানাকে অনেকসময় সংশয়ে ফেলে, অনেকসময় জানাকে বাড়িয়েও দেয়।
ভাবনা যদি বাইরের উদ্দীপক ছাড়া মস্তিষ্কে নিজে নিজেই না জেগে থাকে, তাহলে কেউ না কেউ তো আমাদের ভাবাচ্ছেই। এতে আমি মুশকিল দেখি না, দেখার বিষয় হচ্ছে ভাবনাটা ছদ্ম-চেতনা কি না।
আর
প্রশ্নটাকে যখন ওউচিত্যবোধ থেকে তুলছেন, তখন বলতে হয় এই ওউচিত্যবোধ কি শাইলকের ওউচিত্যবোধ নয়? আর কে এ নিয়ে ব্যবসা করতে পারে? যার সেই সামর্থ্য তথা জোর ও বল আছে। সেটা কাদের আছে? বাংলাদেশের কিছু ব্যবসায়ী-আমলা-বিশেষজ্ঞ-সেনাকর্মকর্তাদের, ভারতেও তাই, বিশ্বেও তাই। আপনার ওই 'উচিত' বলা কথাটার স্রোতা কারা, উদ্দিষ্ট কারা? যারা বিশ্বপ্লাবনের শিকার হচ্ছে, না কি তারা যারা ধ্বংসের বেনিয়া ?
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
গোটা রচনাটি এবং তাকে ঘিরে আসা মন্তব্য সমূহ অসম্ভব চিত্তাকর্ষক এবং জানার আছে অনেক কিছু'র উত্তরও বটে। লেখক এবং মন্তব্যকারীগণ সবাই এ জন্য ধন্যবাদ গ্রহণ করুন।
বিজ্ঞান-বোধ আমার নিরেট মাথায় এতোটাই কম যে, আমি সে জন্য সব সময়ই কুন্ঠিত। সে কারণে অনেক প্রশ্ন মাথায় থাকা সত্ত্বেও প্রকাশের সাহস নেই। যেমন মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরাতো পেরিয়ে এসেছি সেই অগ্নি বলয়ের যুগ, শৈত্য যুগ, প্রাণ সৃষ্টি কাল; শাখা মৃগ থেকে মনুষ্যকূল এই যে দীর্ঘ সময়ের ফের, এর মাঝে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী যে কারণে ঘটেছে যেমন ডায়নোসারদের অন্তর্ধান কিংবা মুরগিতে পরিণত হওয়া, হিমালয় উঠে দাঁড়ানো, ভারত আফ্রিকা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া, মাঝে অস্ট্রেলিয়া দ্বীপের মতো ভেসে থাকা- এসব সবই ঘটেছে কিন্তু মনুষ্য হস্তক্ষেপ কিংবা মানুষের দ্বারা কার্বনডাই অক্সাইডের অতি উৎপাদন ছাড়াই।
তাহলে আজ কেন প্রশ্ন উঠছে পৃথিবী এবং সৃষ্টি রসাতলে যাচ্ছে মানুষের কিংবা গরুর বাতকম্মে? আমার কাছে এটা এক বিশাল ধাঁধাঁ এবং জটিল মেইজ। তার মানে কিন্তু আমি এই আলোচনা এবং তদ্বীয় মন্তব্যকে অস্বীকার করছি না, বরং এ থেকে নিজের ভেতরে জমা প্রশ্নটা আরও চাগিয়ে উঠছে।
যে কারণে সমুদ্র মন্থনে বাংলাদেশের উদ্ভব যেমন ঘটেছে সেই একই কারণে কি আজকে বাংলাদেশ তলিয়ে যাওয়ার পথে এগুচ্ছে না? আমরা যদি সমুদ্রতল থেকে হিমালয়ের উত্থানকে ব্যাখ্যা করতে পারি এবং তাতে যদি মনুষ্য প্রজাতির কোনও হস্তক্ষেপ না থেকে থাকে তাহলে এখন কেন বাংলাদেশ ডুবে যাওয়ার জন্য মানুষের ওপর দায়ভার চাপানো হচ্ছে?
আমরা পৃথিবীর বয়স জানি, সূর্যের বয়সও জানি, জানি সমুদ্র ও বায়ুমণ্ডলের বয়সও, মানুষের বয়স বাড়লে মানুষ মারা যায়, প্রকৃতির চক্রে মানুষ শরীর মেশে পঞ্চভূতে, সেই একই চক্রে কেন আমরা পৃথিবীকেও ফেলবো না?
ধর্মবাদীরা হয়তো তাদের সৃষ্টিকর্তার ঘাড়ে সব দায়-দায়িত্ব চাপিয়ে জিকির-আসগার করে কাটাতে পারেন, আবার বিজ্ঞানবিদরা ক্ষণে ক্ষনে তাদের নিজস্ব গবেষণার ফল প্রকাশ করে আমাদের চমকে দেবেন, অর্থনীতিবিদরা দেখাবেন ভোক্তা এবং ভূক্তভোগীদের দ্বন্দ্ব, রাজনীতিবিদরা সবকিছু নিয়েই রাজনীতি করবেন - এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাতে প্রশ্নের উত্তর মেলে কি? এই আলোচনার কথাটিই ধরুন না, বিশেষ করে হিমু এবং সিরাজের মতদ্বৈততাই তো আমাদের মতো সাধারণ পাবলিককে পেজগি খাওয়াতে যথেষ্ট। তাহলে এই দিনে-দুপুরে যাবোটা কোথায়?
ধর্ম, দারিদ্র, খাবার পানি, এইডস্ , নারী, গণতন্ত্র নিয়ে কচকচানি অনেক হয়েছে বুঝতে পারি। এখন তার জায়গা নিচ্ছে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার নতুন তাত্ত্বিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক নতুনতর আলোচ্য; মানুষকে ভয় দেখিয়ে ফায়দা লোটার জন্য অতীতে এসেছে ধর্ম, নবী-রাসুল-অবতারগণ সফলভাবে তা করেছেন; একুশ শতকে কি তবে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা নব্য অবতারের ভূমিকা গ্রহণ করছেন? একপক্ষ বলবেন, পৃথিবী ক্ষয়ে যাচ্ছে, আরেক পক্ষ বলছেন, না না পৃথিবীর আয়তন বাড়ছে। তবে ভালো লাগছে, পৃথিবীর এই বাড়া-কমার দ্বন্দ্বে বাংলাদেশের নাম সবার মুখে উচ্চারিত হচ্ছে। অনেক শ্বেতাঙ্গ এর আগে বাংলাদেশের নামটি জানতেন না, উচ্চারণ করতে জিহ্বাকে ব্যাঙের মতো হেলাতেন-দোলাতেন, এখন তারা সরাসরি শব্দটি জিহ্বার ডগায় নিয়ে আসবেন, নইলে বিদগ্ধ মহলে তাদের অজ্ঞতাই প্রকাশ পাবে আর ব্যবসাও ঠিক জমবে না; এটাও কিন্তু কম পাওনা নয়। কী বলেন আপনারা?
আপনার যুক্তি ধরে বলা যায়, পৃথিবীতে মানুষের উদ্ভবের আগে বহু প্রজাতি প্রাকৃতিক কারণেই, প্রকৃতির প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় চাড্ডিগাঁটরি গুটিয়ে বিলুপ্ত হয়েছে। আজ তবে মানুষের ঘাড়ে প্রজাতিবিলোপের দায় চাপানো হচ্ছে কেন? হচ্ছে, কারণ মানুষ তা করতে সক্ষম ও করছে।
মানুষ যেদিন থেকে আগুন জ্বালানো শুরু করেছে, সেদিন থেকেই সে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার সমকক্ষতা অর্জনের দায়ে অপরাধী। পৃথিবীর বায়োস্ফিয়ার প্রায় সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার জন্যে আজ কয়েকটি রাষ্ট্রের রাষ্ট্রনায়কদের ঐকমত্যই যথেষ্ঠ। মানুষের ক্ষমতাকে তুচ্ছ করে দেখার, বা ধামাচাপা দেয়ার সুযোগ আসলেই আর নেই।
নতুন করে হিমালয় খাড়া করার ক্ষমতা মানুষের নেই, তবে বাংলাদেশ বা নেদারল্যান্ডস বা মালদ্বীপ কে আংশিক ডোবানোর ক্ষমতা তার আছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ইস্যুকে কেউ নেতিবাচকভাবে ব্যবহার করলেই তার প্রতি মনোযোগ সরিয়ে নিয়ে ফালতু বলে উড়িয়ে দেয়াটাও অনুচিত হবে বলে আমি মনে করি। উইপনস অব ম্যাস ডেস্ট্রাকশন এর ইস্যুটি কিন্তু নগণ্য নয়, ভুল পথে পরিচালিত। ইরাক থেকে সরিয়ে ইস্যুটিকে ইজরায়েল, রাশিয়া বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে (যারা বিপুল পরিমাণ বিপুলবিধ্বংসী অস্ত্র উৎপাদন ও সংরক্ষণ করছে) চালিত করা প্রয়োজন ছিলো, যা করতে পৃথিবীর বাকি রাষ্ট্রগুলি ব্যর্থ হয়েছে। এর ফল দেখুন একবার।
হাঁটুপানির জলদস্যু
আজ প্রথম আলোয় এই লেখাটা পড়লাম।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এই অপপ্রচারের উত্তর দিতে কি বাংলাদেশ প্রস্তুত? আমাদের বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদরা কি পারেন না এই ঘটনাটি নিয়ে গবেষণা করতে? প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের জলসম্পদকৌশল বিভাগ আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগসহ আরো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কি "বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার সম্ভাব্য বৃদ্ধি", এ বিষয়ে জোর গবেষণা শুরু হতে পারে না? আমাদের সরকার কি পারেন না এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি গবেষণা সেল প্রতিষ্ঠা করে তাকে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে এ ব্যাপারে তথ্য ও তত্ত্বরে সমন্বয় ঘটিয়ে এই প্রশ্নের একটি উত্তর খুঁজে সেটিকে এই অপপ্রচারের বিপরীতে উপস্থাপন করতে? আমরা কি সেচ বিশেষজ্ঞ শ্রদ্ধেয় খান স্যারের সেই অসম্পূর্ণ বিশ্লেষণমূলক কলামটি দিয়েই এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে জবাব দিয়ে চলবো? খান স্যার যেভাবে বললেন, "কিছুই না করা হলে, প্রকৃতি নিজেই তার সৃষ্ট ভূখন্ড তলিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা নেবে", শুনে সেই অথর্ব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফের অমর বাণী "আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে" মনে পড়ে যায়। প্রকৃতি কি আমাদের তালুই যে সে নিজেই আমাদের রক্ষার জন্যে ব্যবস্থা নেবে?
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে বাংলাদেশ তলিয়ে যাবে, এই প্রচারণার বিপরীতে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলুক। গায়ের জোরে এইসব প্রচারণা বন্ধ করা যায় না, জ্ঞানের জোর লাগে। আমাদের গবেষক ছাত্র-শিক্ষকদের সেই সামর্থ্য ও যোগ্যতা, দুই-ই রয়েছে। এ নিয়ে জোর গবেষণা শুরু করা হোক, তরুণ স্কলারদের যুক্ত করা হোক সেই গবেষণা প্রকল্পে। আমরা এই সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সচেতন হই, এর মাত্রা নির্ধারণের জন্যে উদ্যোগ নিই। এই প্রশ্নের গবেষণালব্ধ উত্তর আসুক, অপপ্রচারকগোষ্ঠীর মুখের ওপর সেই উত্তর আছড়ে ফেলা হোক। সেটি করতে না পারলে আমাদের লুঙ্গি উত্তোলিতই থাকবে, অপপ্রচারের বিপদ রয়েই যাবে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
হিমু ভাই আপনার কথার সাথে একমত। তবে যাদের ওপর দায়িত্ব নেওয়ার দায়িত্বের কথা ভাছেন তাদের মেধা (দেশোপোকারি বা সৃজনশীল চিন্তা ) বা কমিটমেন্টের ওপর আমার বিন্দু পরিমানে আস্থা নেই । ফারুক যেমনটি বলেছে... বিশ্বব্যাংক একটা ফান্ড ধরিয়ে দেয়ার পর কী কী হতে থাকবে তা আমরা সবাই জানি। তা বলে এখানেই আমি সিদ্ধান্ত টেনে দিচ্ছি না । বিষয়টার উপর এত বেশি ক্যাম্পেইন হতে হবে যাতে করে বেজন্মা মিডিয়া আর প্যারাসাইট মিডলক্লাসের বিশেষজ্ঞ অংশ সহসা পল্টি খেতে না পারে । আমাদের এখানে যা কিছু গছিয়ে দেয়ার আগে এই দুই ক্লাসকে গিলিয়ে নেয়া হয় । এ বিষয়ে আলাদা একটা লেখা তৈরি করছি । কাল নাগাদ দিতে পারব ।
আলোচনা চলুক।
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
প্রথম আলোয় তানভীর ভাইয়ের "বাংলাদেশ কি আসলেই ডুববে" শিরোনামে লেখাটি পড়লাম। ওয়েল রিটেন।
হাঁটুপানির জলদস্যু
দেশের বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাংলাদেশ ডুবে যাবে না
হিমু ভাই, মাঝে মাঝে আপনার লেখা পড়া হয়। অনেক ভালো লাগে।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে লিখেছেন। অনেক আগেই এই লেখা লিখেছেন, আমি গত ২ বছর ধরে এটা নিয়ে কাজ করছি। আপনার লেখার জন্য বাহবা থাকলো!
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাজনীতি আছে, চলবে। প্রতিটা গবেষণার উদ্দেশ্য থাকে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গবেষণার ফলাফল সাজানো হয়- এসব কথা অনেকে বলে গেছেন। তাই, এটার ব্যাপারে আলোচনা করলাম না। তবে একটা কথা বলতে পারি, সব কিছুই জলবায়ু পরিবর্তন নয়। যেমন- ভূমিকম্প বৃদ্ধির সাথে জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া যায় নি। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব যে এলাকায় বেশি, সেখানে ভূমিকম্প মরার উপর খাঁড়ার ঘা এর মতই (যেমন বাংলাদেশ)। জলবায়ু পরিবর্তন সবসময় হয়ে আসছে- প্রাকৃতিক কারণে (এ কথাটা অনেক জলবায়ু-আস্তিক এড়িয়ে যেতে চান)। তবে মানুষের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ এ পরিবর্তনের হার অনেক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে সাইবেরিয়া ও আরো কিছু এলাকায় জমে থাকা 'পার্মাফ্রস্ট' এর নীচে মিথেন মুক্তি পেলে কোন কিছু নিয়ন্ত্রণে থাকবে না (মিথেন কার্বন ডাই অক্সাইডের চেয়ে ২০ গুণ শক্তিশালী)।
আর বেশি কিছু বললাম না। তবে নবায়নযোগ্য শক্তির বহুল ব্যবহার এখন আদতেই দরকার- জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাজনীতি আর 'ব্যবসা'র প্রেক্ষিতের বাইরে থেকে অন্তত এই উপলব্ধি আমার।
আপনার পারস্পেক্টিভ থেকে একটা লেখা লিখুন না? এ ব্যাপারে আমাদের জানার আছে অনেক কিছু।
নতুন মন্তব্য করুন