এই লেখাটা প্রায় দু'বছরের পুরনো। প্রাসঙ্গিক মনে হলো বলে পোস্ট করলাম আবার। সেইসাথে যোগ করছি প্রিয় শিল্পী শাহনাজের গানটি।
বিটিভির প্রসঙ্গ উঠলে আমারও মনে হয় মালেনার কথা৷ বিটিভি আমার শৈশবের প্রেম৷ সেই রাত ন'টায় নাইট রাইডার, ফল গাই, দ্য এ টীম, ম্যাক গাইভার, রাতের খবরের পর থর্ন বার্ডস, অল দ্য রিভারস রান, টুইন পীকস ... সন্ধ্যাবেলা টেলস অব দ্য গোল্ডেন মাংকি, শুক্রবার দুপুরে থান্ডারক্যাটস৷ আকৈশোর আমার ভালোবাসা ছিলো বিটিভি৷ তখন নাটক আরো সীমিত, আরো পরিমিত ছিলো, হুমায়ূন আহমেদের নাটক তখন ছিলো প্রতিশ্রুত আনন্দের সমার্থক৷ আখতার ফেরদৌস রানাও বিটিভির জন্য চমৎকার কিছু নাটক লিখেছিলেন, কয়েকটার টুকরো টুকরো সংলাপ মনে আছে এখনও৷
বিটিভির এই আকর্ষণের পাশাপাশি কালো দিকটাও ছিলো৷ খবর মানে এরশাদ সাহেবের ঘোড়ার মতো চেহারা, আর তার চেলাচামুন্ডাদের ভগরভগর৷ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর শুধু নাম পাল্টালো, খালেদা জিয়াই বিটিভির প্রিয়দর্শিনী হয়ে দাঁড়ালেন৷ তখন খবর দেখতাম না, বিটিভি ছিলো ম্যাকগাইভারখানা৷
এগুলো বাদ দিলেও বিটিভিতে হঠাৎ হঠাৎ চমৎকার সব প্রামাণ্য অনুষ্ঠান দেখানো হতো, বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাঁকে দেখানো হতো টুকরো টুকরো চলচ্চিত্র, আরো অনেক কিছু৷ আমার ইংরেজি শেখার একটা সহায়ক মাধ্যম ছিলো বিটিভির সিরিয়ালগুলো৷ বৃহস্পতিবার মুভি অব দ্য উইকে দেখেছি খুব ভালো বাছাই করা কিছু মুভি, নির্বাচক কে বা কারা ছিলেন জানি না, আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই৷
বিটিভিও মালেনার মতোই চোখের সামনে ক্ষমতাসীনের রক্ষিতায় পরিণত হয়েছে৷ বেশ্যার শরীরে যেমন কামুক আর মাতালেরা চিহ্ন রেখে যায়, বিটিভির শরীরেও এখন সেরকম ক্ষত৷ ইংরেজি সিরিয়ালগুলো বাংলায় কুৎসিত ডাব করে দেখানো হয়, অনুষ্ঠানের মান আগের তুলনায় অনেক খারাপ হয়েছে, বেসরকারী টেলিভিশনগুলোর বিভিন্ন সংবাদ পরিবেশনের অনুকরণের ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালানো হয় চরম অদক্ষ ক্রু নিয়ে, যেখানে রিপোর্টার বা সংবাদ পরিবেশকেরা জড়িয়ে জড়িয়ে ভুল বাংলায় কথাবার্তা বলেন, আর প্রায় সারাটা সময় দেশে যে কী দারুণ উন্নয়নের মড়ক লেগেছে সেটা প্রমাণের গাজোয়ারী চেষ্টা৷ প্রথমে বিএনপি, পরে আওয়ামী লীগ, তারপর এখন জোট সরকারের রক্ষিতাগিরি করে চলছে প্রৌঢ়া বিটিভি৷ আমি নিজের প্রাককৈশোর আর কৈশোরকে স্মরণ করে মাঝে মাঝে বিটিভি ধরে দেখি, মনে হয় কোন নাৎসির কোলে ছেনালিতে রত এক বেশ্যাকে চুরি করে দেখছি৷
আজকে যাদের নাগালে আর কোন টেলিভিশন নেই, তাদের ইংরেজি চর্চার উপায়টা পর্যন্ত রাখেনি সদাশয় কর্মকর্তাগণ৷ সব চলচ্চিত্র আর সিরিয়াল আড়ষ্ট বাংলায় ডাব করা, সেটার রসাস্বাদন করা কোন সুস্থ পাকস্থলীর মানুষের পক্ষে বোধহয় সম্ভব নয়৷ সোর্ড অব টিপু সুলতান আর আলিফ লায়লা গোছের নিম্নমানের ভারতীয় অনুষ্ঠানের বাংলা সংস্করণের ঔপনিবেশিকতা শুরু হয়েছিলো আমার কৈশোরেই, আজো তার নখদাঁত থেকে বিটিভি মুক্তি পায়নি৷ শিশুদের অনুষ্ঠানে দেখি দেশের সবচেয়ে দাগী মাস্তানগুলোকে নিয়ে আসা হয় আদর্শ ব্যক্তিত্ব হিসেবে, যারা গুছিয়ে নিজের শিশুকাল নিয়ে একটা সত্য কথাও বলতে পারেন না৷
বিটিভির উদ্দেশ্য কী? সুস্থ, শিক্ষামূলক বিনোদনের মাধ্যমে দেশের অপেক্ষাকৃত স্বল্পবিত্ত মানুষের রুচির কাঠামো নির্দেশনা? নাকি সরকারের ঢোল বাজানোর ফাঁকে ফাঁকে জঘন্য বমনউদ্রেককারী সব "অনুষ্ঠান" দেখিয়ে লোকজনকে চ্যানেল পাল্টাতে উৎসাহ দেয়া? যাঁরা ষড়যন্ত্রতাত্ত্বিক, তাঁরা হয়তো বিটিভির এই পতনের পেছনে বেসরকারী টেলিভিশনের ভূমিকাও আবিষ্কার করে বসবেন৷
যাঁরা মালেনা দেখেছেন, শেষটাও হয়তো দেখেছেন৷ মালেনার পঙ্গু স্বামী ফিরে আসে, মালেনাকে খুঁজে বার করে, তার হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে একদিন বাজারে আসে, যে ঈর্ষাণ্বিতা মহিলারা মালেনাকে পিটিয়ে আঁচড়ে খামচে উলঙ্গ করে বার করে দিয়েছিলো শহর থেকে, তাদেরই একজন সুপ্রভাত জানায় এই দম্পতিকে৷ সব কিছু প্রায় আবার আগের মতোই যেন হয়ে আসতে চায়৷
বিটিভিকে কেউ উদ্ধার করবে এই অপমানের হাত থেকে? এই গ্লানি থেকে? আবারও কি কখনো বিটিভি দেখে চমকে উঠে নিজের শৈশবকে স্মরণ করতে পারবো?
কেউ কি আছেন ত্রাণের জন্য?
মন্তব্য
বিটিভির স্বর্ণযূগ ছিল আশির দশক থেকে নব্বুই এর শুরু পর্যন্ত। এরপর প্রথমে প্যাকেটের যূগ আর তার কয়েক বছর বাদে প্রাইভেট চ্যানেলের যূগ চলে আসে। প্রযুক্তিগত ভাবে এই সময়টায় মিডিয়ার উন্নতি হলেও সে যা হারিয়েছে তা হলো শিল্পমান। মাটির কোলে, সময় অসময়, এখানে নোঙর বা ভাঙ্গনের শব্দ শুনি দূরে থাক সমগ্র বাংলা টেলিজগতে এখন এইসব দিনরাত্রি, বহুব্রীহি, অয়োময় বা কোথাও কেউ নেই মানের নাটক কল্পনাতীত। একইভাবে যদি কিছু মনে না করেন এর মতো ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানও।
মিডিয়া জগত নব্বুই দশকের মাঝামাঝি থেকে হাতে একগাদা পয়সা পেয়ে যায়। তখন থেকে তাঁদের মনোযোগ পড়ে কিভাবে ভারতীয় চ্যানেল গুলির মতো করে জবরজঙ দৃশ্যের টেকনিক্যাল সার্কাস দেখানো যায়।
উত্তরাধুনিক মিডিয়া তাত্ত্বিক হয়তো বলবেন জনগন চোখ ধাঁধাঁতেই টিভি দেখেন, চোখের আরামের জন্য নয়। আর ভষ্মায়নের যূগে কোয়ালিটি না প্রাইস কম্পিটিশানই আসল। সেখানে আমার একটাই জবাব > ত্যানা প্যাচাইচ্চা!
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
আমাদের সময় বিটিভির সবচেয়ে লোভনীয়(বন্ধুদের মাঝে) অনুষ্ঠান ছিল আলিফ লায়লা;
প্রতি শুক্রবার রাতে আমার ঘুম আসতে দেরী হত, শুয়ে শুয়ে ভাবতাম সিন্দবাদ এত বোকা কেন? পাথরের আড়ালে কেহেরমান যে তার লোক দাঁড় করিয়ে রেখেছে চিৎকার করে তা তাকে জানিয়ে দিতে ইচ্ছা করত; আগামী পর্বে কী হবে তা জানতে পুরোটা সপ্তাহ কাটত এক দুর্বিষহ অস্বস্তির মাঝে। টিপু সুলতান সিরিজটার একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলাম আমি।
আপনি শাহনাজ রহমতুল্লাহ এর গানের ভক্ত জেনে ভাল লাগল খুব; প্রায়ই উনার গান বাজাই বলে রুমমেটরা চেচামেচি করে। উনার দেশাত্নবোধক গানগুলো শুনলে মনের গভীরে একটা শুদ্ধতার জন্ম হয় যাকে লালন করতে চাই সারা জীবনভর।
প্রায়ই বিটিভির স্বায়ত্বশাসন নিয়ে আলোচনা হয়; একটা ঘটনা বলি..
৯৬ এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর বিটিভির আটটা ও দশটার সংবাদের আগে বেশ আয়োজন করে বঙ্গবন্ধুর বাণী দেখাত; ২০০১ এর নির্বাচনের দিন (তারিখটা ঠিক মনে নেই) যখন আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডূবি ঘটতে যাচ্ছে , বিটিভি আটটার সংবাদের আগে বঙ্গবন্ধুর বাণী দেখায় নি; দশটার সংবাদেও না। পক্ষাবলম্বনে বিটিভি এতোটাই সতর্ক। আর বর্তমান সরকারের আমলে সেনাবাহিনীর গুনগানের কথাতো বাদই দিলাম।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
শাহনাজ রহমতুল্লাহর দেশাত্মবোধক গানগুলি আবার আমার ভাল্লাগেনা। আমি তাঁর রোমান্টিক গানগুলি পছন্দ করি।
জিয়াউর রহমান পাকিস্তানী দেশাত্মবোধক কিছু গানকে অনুবাদ করে বাংলাদেশের দেশাত্মবোধক গান হিসেবে চালু করার চেষ্টা করেছিলেন, মেরা পাকিস্তান মেরা সাচ্চা পাকিস্তান হয়ে গেলো প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ ... তিনি ক্ষমতায় এসে আমাদের সংগ্রামের স্মৃতিবিজড়িত গানগুলিকে পর্যন্ত পুঁতে ফেলতে চেয়েছিলেন;,আর এই ঘরানার বেশিরভাগ গানই শাহনাজ রহমতুল্লাহর গাওয়া।
হাঁটুপানির জলদস্যু
এই তথ্য জানতাম না তো! তারপরো "একবার যেতে দেনা আমায়", "একতারা তুই দেশের কথা" এই দুইটা গানের আবেদন আমার কাছে আকাশতুল্য।
উনার রোমান্টিক গানের মধ্যে একটা গান প্রায়ই শুনি..."সাগরের তীর থেকে..."
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
এটা জিনাত রেহানার গাওয়া না?
হাঁটুপানির জলদস্যু
নাহ... আমি তো দিব্যি শাহনাজ রহমতুল্লাহ এর গলায় শুনি...
আমার মনে হয় সাগর সংক্রান্ত দু'টো জনপ্রিয় গান নিয়ে এই কনফিউশন হয়। একটা হচ্ছে "সাগরের সৈকতে কে যেন দূর হতে/ আমারে ডেকে ডেকে যায়, আয় আয় আয়" - এটা শাহনাজ রহমতুল্লাহর গাওয়া, হিমু ভাই যার লিংকও দিয়েছেন। আরেকটা হচ্ছে "সাগরের তীর থেকে মিষ্টি কিছু হাওয়া এনে/ তোমার কপালে ছোঁয়াব গো, ভাবি মনে মনে" - এটা জিনাত রেহানার গাওয়া।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
হ্যাঁ, এটা জিনাত রেহানারই গাওয়া। বোঝা যাচ্ছে শৈশবে হিমু শুধু ইংরেজি শেখার জন্যই বিটিভি দেখত http://www.sachalayatan.com/modules/smileys/icons/9.gif। হিমু আপনি শুধু বিটিভিকেই 'টাইটানিক 'দেখছেন। এই সরকারি মহাফেজখানার বগল দিয়ে আরো যে ছিরুদাসরা নিজের বউ/রক্ষিতা ইত্যাদি নিয়ে মুম্বই ক্যালাতে গিয়ে চেন্নাই কেলিয়েছে তাদের ওতো বাঁচানোর সময় হয়েছে!
আমাকে গতবছর সামিয়া ফোন করে বেশ কড়ামিঠে ঝাড়িটাড়ি দিয়ে জানতে চেয়েছিল...কোন চ্যানেল দেখেন ?(ওই সময় আমার চ্যানেল সিরিজটা ছাপা হয়েছে) উত্তর দিলাম_বিটিভি দেখি(যদিও এক মিনিটও দেখিনা)।উত্তর শুনে 'থ'।পরের পশ্ন_কেন?
উত্তর_বিটিভি সারকারের চামচা,অকালকুষ্মন্ড,স্টুপিডবক্স,মোটাদাগের দামড়া,এবং আলোচনা-ভালচোনা_গোচোনা মিশিয়ে যা ডেলিভারি দেয় আপনারা কি তার চে' উন্নততর কিছু দেন?...তর্ক,তর্ক এবং লাইন ডিসকানেক্ট। আমাদের প্রায় সাব চ্যানেলকেই মনে হয় শুধু জাতে ওঠার জন্যই লগ্নি করছে। পেছনে পেখম লাগিয়ে কাকের ময়ূর সাজার চেষ্টা।
চ্যানেল নিয়ে আমার চারটা পোস্ট আছে। টাইপক্ষমতায় কুলোলে পোস্টাবো পরে।
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
জিনাত রেহানার মা জেবুন্নেসা জামালের লেখা গানটা, আর আমিও শুনেছিলাম জিনাত রেহানার কণ্ঠেই। আপনার মন্তব্যের পরের অংশটুকু আমি কয়েকবার পড়েও তার শাঁসাস্বাদনে সক্ষম হলাম না, দুঃখিত। যদি আমাকে কিছু বলতে চান, আরেকটু সরল করে বললে উপকৃত হই। যে মন্তব্য উদ্দিষ্ট ব্যক্তি বোঝেন না, তা করা মন্তব্যকারীর জন্যেও খাটনি হয়ে দাঁড়ায়। আশা করি সামিয়া, ছিরুদাস, চেন্নাই, মুম্বই, সবই পরিষ্কার করবেন ভবিষ্যতে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
সামিয়া জামান। একুশে টিভি থেকে ফোন করে ভিউয়ার্স ভোটিং করছিল। 'ছিরুদাস'বিটিভির থেকেও নিম্নমানের কিন্ত টাকার জোরে বোম্বে কে অনুসরণ করতে গিয়ে দক্ষিণী চ্যানেলের মত হয়ে গেছে।
সারকথা: বিটিভি অবশ্যই অসুস্থ,কিন্তু বাকি চ্যানেলগুলোও সুস্থ নয়।
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
বেশ তো। অন্য চ্যানেলগুলির যদি মাম্পস হয়ে থাকে তো বিটিভির গুটি বসন্ত হয়েছে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
হিমু ভাই আমরা দুজনেই ঠিক। জিনাত রেহানাই প্রথম গানটা গান... তবে উনার গলায় আমি শুনিনি। পরবর্তীতে শাহনাজ রহমতুল্লাহ গেয়েছেন; আমি সেটাই শুনি, যে কারণে একটু বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে...
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
সত্যি সত্যিই একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম আর মনটা একটু উদাস হয়ে গেল লেখাটা পড়ে। পুরোন দিনের কিছু টুকরো স্মৃতি মনে পড়ে গেল। এখনো মনে আছে প্রিয় অনুষ্ঠানগুলো দেখার জন্য কি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকতাম। সে কি উত্তেজনা, কি ভালো লাগা, ম্যাকগাইভার বা অন্য কোন প্রিয় চরিত্রকে নিয়ে স্বপ্ন দেখার পরিকল্পনা নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া! দ্য গার্ল ফ্রম টুমরো-র কোন পর্ব না দেখতে পারলে যে কি কষ্ট লাগত! হুমায়ুন আহমেদের নাটকগুলোর জন্য যে কি অপরিসীম ভালবাসা কাজ করত তখন! আফসোস, সেই দিনগুলো আর কখনোই ফিরে আসবে না!
সেই বিটিভির বর্তমান রূপ দেখলে কোন মন্তব্য করতে ইচ্ছে হয় না এখন। বাংলায় ডাব করা সিনেমা/টিভি সিরিয়ালগুলো যে কি নিম্নমানের তা বলার মত না। কথাপ্রসঙ্গে বলি, বিটিভি বা অন্য কোন চ্যানেলে একবার টার্মিনেটর টু দেখেছিলাম। মূল সিনেমায় একটা ডায়লগ আছে "পিস অভ কেক"। সেটাকে বাংলায় বানানো হয়েছিল "এক টুকরো কেক"!
ম্যালেনার হয়ত মুক্তি মিলেছিল, কিন্তু একই বিষয়বস্তুর "এক ছোটি-সি লাভ স্টোরি"-র কবলে যদি আমরা পড়ি, তাহলে মুক্তি কি আসলেই মিলবে??
ম্যাকগাইভারের কথা মনে করিয়ে দিলেন! আমাদের ছোটবেলার সবচেয়ে প্রিয় টিভি অনুষ্ঠান ছিল এটি। আমাদের কতজন যে ম্যাকগাইভার হতে চেয়েছিল সেসময়!
নারে ভাই,নত্রাণকর্তা বোধহয় কেউ নেই।
আমার ছোটবেলাতেও একটাই টিভি চ্যানেল ছিল।
আর সেসব কথা মনে আসলেও আজ স্বপ্ন মনেহয়।
ভাল লাগল লেখাটা।
--------------------------------------------------------
শাহানাজ রহমতুল্লাহ'র অবোধ্য শ্রোতা ছিলাম আমি-------'যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়'----গানটি আমার জীবনের অসহায় এক সময়ে আমি পাগলের মত শুনতাম আর একেক বিনিদ্র রজনী পার করতাম।
বিটিভি'র এক প্রযোজকের সাথে কিছুদিন আগে আমার কথা হল---মান নিয়ে প্রশ্ন করায় সে কিঞ্চিৎবিরক্ত বোধ করল। তারপর যা বলল শুনে আমার আক্কেল গুরুম। প্রতিটি সমাজে নাকি জাতীয় টেলিভিশনগুলো এ ধারাতেই চলে। আর অনুষ্ঠানের মান অন্য চ্যানেলগুলোর থেকে কোন অংশেই কম নয়। এইসব প্রযোজকদের ফায়ার না করলে সারাজীবনেও এর চেহারা পরিবর্তন হবেনা।
তবে স্বীকার করতে হয়, এখনও সিসিমপুরের মত ভাল কিছু অনুষ্ঠানমালা একমাত্র বিটিভিই ধরে রেখেছে। অন্য চ্যানেলগুলোর শিশুতোষ অনুষ্ঠানগুলো জি বাংলার সস্তা শিশুতোষ অনুষ্ঠানের চাইতে আলাদা করা যায় না। সাথে আছে বড়দের মত হিন্দী কায়দায় উপস্থাপন।
তবে হিমু ভাইয়ের মত নস্টালজিয়ায় পড়ে আমি বিটিভি ছেড়ে দেখার দুৎসাহস বহুদিন দেখাই নি।
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........
এটা সেই আমলের কথা, যখন আরবের লোকেরা গুহায় বাস করতো, আমি তখন হলে কমনরুমে গিয়ে আরো দু-একজন ছিটগ্রস্ত দর্শক তীর্থের কাকের মতো বসে থাকতাম বাতে বিষ্যুদবারের মুভি অব দ্য উইকের জন্য। তখনি তো মনে হয়, প্রতি মঙ্গলবার একটা ধারাবাহিক নাটক চলতো ? মুভি কি বিষ্যুদ বার না শুক্রবার ছিলো ? বিষ্যুদবার মনে হয় সাপ্তাহিক নাটক ছিলো।
দূর ছাই, এতো আগের যে মনেও করতে পারছি না। এও মনে করতে পারছি না, শেষ কবে বিটিভি দেখেছি। এখনো পাশের ঘরে প্রায় সারাদিনই টিভিটা চলে। আমার মালিকান এর দর্শক। কই তিনিও তো বিটিভি দেখেন বলে শুনি না !
সে এক দিন ছিলো। তারপর মাছগুলোর মাথা থেকে পচন শুরু হলো। একসময় দুর্গন্ধে চারপাশ বিষাক্ত করে তুললো। অধিকাংশই মাছ খাওয়া ছেড়েই দিলো। এখন মাছের পচন কীভাবে কোথায় হচ্ছে, তা দেখার আগ্রহও আর কেউ খুব একটা ফিরে পানই না মনে হয়।
সুন্দর পোস্টের জন্য অভিনন্দন।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
"যে ছিলো দৃষ্টির সীমানায়" গানটির সন্ধান কেউ দিতে পারেন কেউ?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
ইমেল ঠিকানা দেন, পাঠিয়ে দিচ্ছি।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
জনসমক্ষেও ধন্যবাদ জানিয়ে রাখি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
তখন বিটিভিকে বাধ্যতামূলকভাবে সবারই ভালো লাগতো কারণ এর চেয়ে ভালো অনুষ্ঠান যে হতে পারে সেই ধারণাই কারো ছিল না
আর এখন যারা আগের বিটিভিকে ভালো বলেন তারা মূলত তাদের সেই সময়ের মুগ্ধতার স্মৃতিচারণ করেন
বিটিভির অনুষ্ঠান সেই সময় আসোলেই কতটুকু ভালো ছিল তা এখন দেখলেই টের পাওয়া যায়
অত আহামরি কোনোদিনও ছিল না
০২
লেখার ভূমিকায় গুড়িগুড়ি অক্ষরে লেখার অভ্যাসটা হিমুর ছাড়া দরকার
ওই বস্তুগুলো দূর থেকে দেখতে ভালোই লাগে কিন্তু পড়তে গেলে চোখে ব্যথা করে
বিশেষ করে আমার মতো কানা লোকদের
মলা-ঢেলা মাছ খান বস। বিটিভিতে কিন্তু এগুলি খাইতে বইলা প্রোমোশনাল দ্যাখাইতো। তখন যদি শ্রীদেবীরে বাদ দিয়া এইসব দেখতেন, কাজে দিতো, সুপারস্ক্রিপ্টের উপরের সুপারস্ক্রিপ্ট দেখতেও কোন সমস্যা হইতো না।
হাঁটুপানির জলদস্যু
বিটিভির অনুষ্ঠান সেই সময় আসোলেই কতটুকু ভালো ছিল তা এখন দেখলেই টের পাওয়া যায়
তখনেরটা তখনই ভালো। এখনে বইসা তখনের বিচার হয় না . . .
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
একসময় আমরাও বিটিভির ভক্ত ছিলাম। দ্য গার্ল ফ্রম টুমরোর এ্যালানার এক পর্ব মিস হলেই মন খারাপ হয়ে যেত। তখন পর্ব নাটকগুলোও ভাল ছিল। আহা কতদিন সেই বিটিভি দেখি না।
আহা বিটিভির সেইদিন গুলোর কথা মনে করিয়ে দিলেন
একবার মনে আছে অনেক ছোট ছিলাম তখন ভোটের সময় ছিল তাই বলেছিল সেদিন সারারাত বিটিভি চলবে, আমি শুনে যে কি খুশি সারারাত তাহলে টিভি দেখব। তারপর সাভাবিক ভাবেই টিভির সামনে রাত ২টার পর ঘুমিয়ে পরি।
দেশ থেকে চলে আসার সময় আমার বান্ধবীর কাছে আফসোস করছিলাম যে ইসস "এ সপ্তাহের নাটক" গুলো মিস করব। আর এখনতো সব কিছুই পাওয়া যায়। এত কিছুই পাওয়া যায় যে দেখেই কুলোনো যায় না। আমাদের বাসায় আব্বু বাংলা চ্যানেল গুলো যখন আনার চেষ্টা করে তখন জানতে পারি আমাদের বাসায় বিটিভি ছারা আর কিছুই আসবেনা আসেপাশে কিছু বড় বড় গাছ থাকার জন্য। শুনে এত বিরক্ত হয়েছি, NTV, channel I, বৈশাখ এসব না এসে কিনা বিটিভি, ধুর!
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
পুরাই নষ্টালজিক করে দেয়া একটা লেখা। এত সুন্দর করে লিখেছেন হিমু ভাই, ম্যালেনার সাথে তুলনাটা পড়ার পরে সেরকম করে ভেবে মনটা কেমন ভার হয়ে গেলো। শেষটা ম্যালেনা মত হবার সম্ভাবনা থেকেও আসলে নেই। কারিগরী দিক দিয়ে এবং এত চমৎকার একটি নিজস্ব ভবন, নাটক-অনুষ্ঠানের সেট, অসাধারণ সব আর্কাইভ...এইসব নিয়ে অনেক কিছুই করা যায় তবে আবার যায়ও না, বিটিভি সরকারী দলের হাতে বন্দি বলে।
ছোটবেলার কয়েকটে অন্তত কয়েকটা অনষ্ঠানের কথা শুধুশুধুই বলতে ইচ্ছা করছে, এক্কেবারে শৈশবে শুক্রবার বিকালে থান্ডার ক্যাটস, তার অনেক পরে টিনেজ মিউট্যান্ট নিনজা টার্টলস, বুধবারের ম্যাকগাইভার, পরে ফল গাই, দ্য এ টিম...এক সময় রোববারে রাতের খবরের পর দেখাতো এগেইনস্ট দ্য উইন্ডস (বড়দের সাথে ভাব নিয়ে বসে দেখতাম), টম এন্ড জেরিও তো প্রথম বিটিভিতেই দেখেছিলাম। আরো অনেক পরে কিশোরবেলায় দেখি দ্য গার্ল ফ্রম টুমরো, স্পেল বাইন্ডার, শুক্রবার রাতে দ্য এক ফাইলস। সোর্ড অফ টিপু সুলতান, আলিফ লায়লাও দেখতাম খুব উৎসাহ নিয়ে, যদিও এরা কেন এরকম উদ্ভট বাংলায় কথা বলে ভেবে পেতাম না। আগে একটা করে "এ সপ্তাহের নাটক" হত বৃহস্পতিবারে, মঙ্গলবারে ধারাবাহিক নাটক, তাও দু'টো নাটক চলতো একসাথে- দুই মঙ্গলবারে দুইটা। বহুদিন পরে পরে শুক্রবারে একটা বাংলা সিনেমা, অন্যান্য দিন "মুভি অফ দ্য উইক"। "দ্য ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সি" বইটা পড়ার মাত্র কয়েকদিন পরেই কাকতালীয়ভাবে সেই সিনেমাটা দেখার সৌভাগ্য হয়েছিলো বিটিভিতে, নিজেকে কি ভাগ্যবান যে মনে হয়েছিলো! প্যাকেজ নাটকের পরে শুরু হলো বুধবারে প্যাকেজ ধারাবাহিক আর সোমবারে প্যাকজে সাপ্তাহিক নাটক। প্রতি শুক্রবারেই বাংলা সিনেমা।
জানিনা শৈশবের অন্যান্য সব মধুর স্মৃতির মতই বিটিভির তখনকার অনুষ্ঠানগুলোও এখন ভাবতে মধুর লাগে কিনা কিন্তু এইসব অনুষ্ঠানের তালিকা দেখে তো মনে হয় যারা পরিকল্পনা করতেন, দেখে বুঝে সুন্দর করেই করতেন।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
হাহাহা মনেপরে গেল দ্য গার্ল ফ্রম টুমরো দেখে আমরা বান্ধবীরা চোখের পাশে কালো ফোটা দিয়ে ওর মত সেজে সেজে খেলতাম, তারপর সিডনি এসে দেখি এটা অসি শো। আর টিনেজ মিউট্যান্ট নিনজা টার্টলস টা একদম পাগলের মত দেখতাম তার সাথে ইংলিশ না বুঝেই এক আবিষ্কৃত ভাসায় শুরুর মিউসিকটা গাইতাম। দা সোর্ড অফ টিপু সুলতান বাসার সবাই মিলে দেখতাম, তারপরদিন স্কুলে গিয়ে তার গল্প। তারপর আরেকটা জাপানিস শো ছিল "ওশিন"। ম্যাকগাইভারের দিনতো কথাই নাই, তারাতারি পড়া কোনও রকমে শেষ করে বাসার সবাই মিলে দেখা। আহা বিটিভির জন্য খুব মায়া লাগছে।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
ইয়ে মানে আমিও চোখের পাশে কালো তিনটা ফোঁটা দিয়ে এলিয়েন সাজতাম ।
ও হ্যা, ওশিনও চলত, আমার কেন জানি এই সিরিজটা বিরক্ত লাগতো, আমি দেখতাম না। একটা মজা ব্যাপার হচ্ছে, ওই সময় জন্ম নেয়া কিছু বাবুর নাম ওশিন রাখতে দেখেছি!
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
আমার যেকোন ধরণের পিরিয়ড-পিস খুব পছন্দের। বিটিভির নস্টালজিয়ার কথা বলছিলেন সবাই। মিলেঝিলে স্মৃতির বিটিভির সাথে মিলিয়ে কিছু একটা তৈরি করা যায়। সবাই মিলে আইডিয়া দিলাম, নিজের মত করে একটা "বিটিভি সপ্তাহ" পালন করতে পারি। যদি খুব ভাল কিছু একটা বের হয়, তাহলে নাহয় সচলায়তনের মিডিয়া-লেখিয়ে'দের দিয়ে চিত্রায়ণযোগ্য কিছু দাঁড় করালাম পরে।
সেইসময় রেভেন দেখে নাই?
বিটিভি ঠিকই আছে। প্রাইভেট চ্যানেলগুলো টাকা দিয়ে কায়দা করে একে রোগী বানিয়ে রেখেছে।
এত কিছু জানি না।
শুধু এটুকু জানি, ঐ সময়টা আমরা বড় সরল আর ভালো ছিলাম।
যেকোনো কিছুতে কনসেনট্রেট করতে পারতাম অনায়াসে।
শ্রদ্ধা এবং মুগ্ধতার চর্চা চলত অত্যন্ত স্বাভাবিক গতিতে।
শেখার একটা প্রবণতা কাজ করত ভেতরে।
এখন অনেক জটিল হয়ে গেছি।
সারাদিনে কয়টা কাজ কনসেনট্রেশন দিয়ে যে করতে পারি জানি না!
মুগ্ধ হই খুবই কম, শ্রদ্ধা বোধ করিই না বলতে গেলে।
শেখার প্রবণতা ততটা কাজ করে না।
এগুলো বিটিভির দোষ না। মিডিয়ার ব্যাপকতা আমাদের খেয়ে ফেলেছে।
আর আমাদের কনসেনট্রেশন নেই দেখে শয়তানেরা জায়গা করে নিয়েছে রামপুরার ভবনটিতে।
পুরনো মেধাবি মানুষগুলো কেউ মারা গেছেন, কেউ বুড়ো হয়ে গেছেন, একদল ভাগাভাগি হয়ে গেছেন বেসরকারি চ্যানেলগুলোর মধ্যে, আর বাকিরা কোথায় যেন হারিয়ে গেছেন। হারিয়ে যাওয়া একজনের নাম বলতে পারি, তিনি আল মনসুর। অভিনেতা প্লাস প্রযোজক। তিনি সশরীরে দেশেই আছেন, কিন্তু সেই অমিত মেধাবী আল মনসুর কোথায় যেন হারিয়ে গেছেন...
শৈশবে এবং বাল্যে বিটিভি আমাকে যত যা কিছু শিখিয়েছে এবং আমার কল্পনাশক্তির জগতকে যে পরিমাণ রঙ আর দৃশ্য দিয়ে ভরে দিয়েছে, এখনও এত আধুনিক সব চ্যানেলের আশ্চর্য সব অনুষ্ঠানেও সে স্বাদ পাই না।
এটা আমার সমস্যা। আমার শেখার সময়টা আমি পার করেছি বিটিভির সঙ্গে। আমার বাচ্চা হয়ত বড় হয়ে এইচবিও চ্যানেলকে ঘিরে নষ্টালজিয়ায় ভুগবে...
কিন্তু আমার এই সমস্যাকে আমি বড়ই ভালোবাসি। এখন বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। সবার ছোট আমি, ভাইবোনেরা বিয়ে করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে নানাদিকে, আমিও বিয়ে করে পরিবারের কর্তা, সন্তানের জনক... কিন্তু শুক্রবার বন্ধের দিনে সকালে সাদাকালো টিভিতে টারজান ছবি দেখি বাবা-ভাই-বোনকে পাশে নিয়ে... শুনতে পাই রান্নাঘর থেকে ভেসে আসা রান্নার আওয়াজ... শুক্রবারের ভালোমন্দ রান্নার আয়োজন করছেন আমার মা... একটু পর পর এসে গোসলের তাড়া... কিন্তু বাবা আর আমরা সবাই মিলে জমিয়ে দেখছি টারজান গণ্ডারের পিঠে চেপে ছুরি মেরে চলছে ক্রমাগত...
তারপর ঘুম ভেঙ্গে দেখি পৃথিবীটা অনেক বদলে গেছে... সেই মানুষগুলো কেউ নেই আমার পাশে...
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
বিটিভি কখনো কখনো, এখনও ভালোবাসার মত।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
মৃদুল আহমেদের মন্তব্যের শেষাংশ একেবারে ভেতরটা নাড়িয়ে দিলো। বিটিভি গেছে, সময় গেছে, সাথে নিয়েছে অনেকটুকু সাদাকালো হিরণ্ময় অতীত।
নতুন মন্তব্য করুন