ঢাকা ওয়ারিয়র্সের জন্যে শুভেচ্ছা

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: বুধ, ১৭/০৯/২০০৮ - ৩:১১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের বেশ কয়েকজন বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটার দেশের ক্রিকেটের কাছ থেকে আপাত বিদায় নিয়ে যোগ দিয়েছেন ভারতীয় "বিকল্প ধারার" ক্রিকেট লীগে। তাঁদের দলের নাম ঢাকা ওয়ারিয়র্স।

পত্রিকায় প্রতীকী তরবারি হাতে তাঁদের জবুথবু মলিন হাসিমুখ দেখে মায়া লাগলো। দেখতে পেলাম হাবিবুল বাশারকে, যিনি বিভিন্ন সময়ে দলনায়কের দায়িত্বে নিয়োজিত থেকেও দলনায়কসুলভ শৌর্যের পরিচয় দিতে পারেননি ক্রিকেটে, আমরাই বহুবার তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছি ব্লগে, কেউ কেউ তাকে হাবিবুল বাছুর ডেকে বকাঝকা করেছি, RUN মানে যে দৌড়ানো, তা দৌড়বিমুখ হুকপ্রিয় বাশারকে মনে করিয়ে দেবার চেষ্টা করেছি। দেখতে পেলাম গুম্ফবান শাহরিয়ার নাফিসকে, যিনি জিম্বাবুয়ে কেনিয়া প্রভৃতি দলের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে পরশুরামের মতোই ক্ষত্রিয়ঘাতী আচরণ করলেও অন্যান্য দলের পাকা পেসারদের হাতে দুমদাম ধরাশায়ী হয়ে হাতের ব্যাট বগলে নিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন। ঢাকা ওয়ারিয়র্সের খেলোয়াড়দের তালিকায় মারকুটে আফতাব আহমদের নাম আছে, আছে অবসর নেয়া প্রিয় ক্রিকেটার মোহাম্মদ রফিকের নাম। আরো অনেক নবীন খেলোয়াড়ের নাম আছে সে দলে।

হয়তো অস্বীকৃত, কিন্তু উপেক্ষা করার উপায় নেই যে ফ্যাক্টরটিকে, সেটি হচ্ছে অর্থ। বাংলাদেশে ঘরোয়া ক্রিকেটের ন্যুব্জপৃষ্ঠক্যুব্জদেহ, জাতীয় দলে খেলোয়াড় বাছাই নিয়ে কর্তাব্যক্তিদের কুৎকুৎ খেলা, একের পর এক আন্তর্জাতিক ম্যাচে পত্রিকায় ক্রীড়া সাংবাদিকদের বায়বীয় স্তুতিকে ছাপিয়ে যাওয়া পনেরো কোটি দর্শকের আশাহত দীর্ঘশ্বাসের শব্দ ... আর অন্যদিকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে লীগ পর্যায়ে ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি অর্থের আকর্ষণ। ক্রিকেটাররা সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই ভেবেই নিয়েছেন। রপ্তানি হয়ে যাওয়াই ভালো, দেশে থেকে গালি খাওয়ার চেয়ে, এমনটাই হয়তো ভেবেছেন।

অনেকেই হয়তো গালমন্দ করছেন, বিদ্রোহী বা বিশ্বাসঘাতক ডাকছেন এঁদের, কিন্তু সবকিছুর পরও শুভেচ্ছা জানাতে কার্পণ্য করবো না। ভাইয়েরা, ঢাকা ওয়ারিয়র্সের লোগোর সামনে তরবারি ঝলকিয়ে তাসবীর তো খিঁচলেন, নামের পাশাপাশি মানও বাঁচায়েন। আইসিএল, ডাব্লিউডাব্লিউএফ, এসটিইউপিআইডি, সিআইএ, কেজিবি, এক্সওয়াইজেড, যেখানেই যান ভাই, আপনারা আমাদের বাংলাদেশের পোলা, আমাদের ভাই। আমরা চাই না মন্দিরা বেদী আবার নতুন কোন তামশা করুক আমাদের নিয়ে। লাগান বাড়ি ধমাধম।


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

শুভেচ্ছা থাকল কিন্তু অনেক কথাও থেকে যায়। দলে থাকা না থাকা তো আর নাম দিয়ে নয়, কাম দিয়ে। কথায় আছে-- নামে আছে কামে নাই কিনতে গেলে দামে নাই। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে এদের কিনতে গেলেও ভালই দাম দিচ্ছে ভারতীয় লীগ।

আজকের পত্রিকায় খবর বেড়িয়েছে যে এদের মধ্যে তিনজনই গত তিন বছরে কোটি টাকার বেশী কামিয়েছেন এদেশের জার্সি গায়ে লাগিয়ে। ফলে টাকার জন্য দেশে ছাড়ছে না তাদের সেই দাবীটা টেকেনা। বরং দেশে নিজেদের অস্তিত্ব টিকছেনা বলেই এই পিঠটান। ওখানে ব্যাটে-বলে করতে না পারলেও পকেট ঠিকই ভারী হবে সেটাই এদের কাছে মূখ্য হয়ে গেল। একদা ব্যাঘ্র শাবকদের এরূপ শৌর্য-বীর্যহীনতা দেখে মায়াই হচ্ছে।

যা তোরা সফল হ, শত হলেও দেশের পোলাপান।

হিমু এর ছবি

রিসাইকেল হোক, সমস্যা নেই। নাম না ডুবালেই হয়েছে। ব্যাপারটাকে এভাবেও দেখতে পারি আমরা, নবীন প্রজন্মের অন্য ১৪ জন ক্রিকেটার বরং দেশের কাছে নিজেদের প্রতিভা প্রকাশ করার সুযোগ পেলেন। ভিনি ভিডি ভেলক্রো (আইলাম দ্যাখলাম ল্যাটকাইয়া-বইসা-পড়লাম)-দের হাতে ক্রিকেট দল চলে গেলে তো মুশকিল। তা-ও যদি খেলার মাঠে সেরকম হতো, একটা কথা ছিলো। ঐখানে একেকজন ভিনি ভিডি ভোদাই (আইলাম দেখলাম আউট-হয়া-বাড়ি-গেলাম)


হাঁটুপানির জলদস্যু

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

লেখা ও মন্তব্য -- দুটোতেই হিমু ভাই আনলিশড! দুর্দান্ত।

বাইরে খেলতে যাওয়ার ব্যাপারে আমার আপত্তি নেই, তবে এভাবে জাতীয় দলকে বুড়ো আঙ্গুল দেখানো নিয়ে আপত্তি আছে।

অবসরপ্রাপ্তদের অভিযোগনামা পড়ছিলাম কোথায় যেন। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, অর্ধেক দিনের আগে খেলা শেষ হয়ে গেলে নাকি ম্যাচ-ফি দেওয়া হয় না। ৫০+৫০=১০০ ওভারের খেলা যদি দুই ইনিংস মিলিয়ে এক বেলায় শেষ হয়ে যায়, সেটার জন্য আধা লাখ টাকা দাবি করে এরা কোন যুক্তিতে?

যাক, তবু দেশী ভাই। ভাল করুক। এমনিতেও জাতীয় দল এখন টিকে আছে অন্যান্য কিছু খেলোয়াড়ের কারণেই।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

ক্রিকেটাররা যা করছে সেটা নীতিগতভাবে সমর্থনযোগ্য না ... তোমরা দেশের সেরা খেলোয়াড়, তোমাদের থেকে দেশ অনেক কিছু প্রত্যাশা করে ...

কিন্তু তারপরেই মনে হয় দেশ তার সেরা ছেলেদের কাছেও অনেক কিছুই প্রত্যাশা করে ... কিন্তু আমরা কি দেখি? ... আমরা ষোল বছর পাবলিকের ট্যাক্সের টাকায় পড়ি, একফোঁটাও রিটার্ন দেই না ... যখন রিটার্ন দেয়ার টাইম আসে তখন বিদেশে পগারপাড় হই ... অনেকে তা আরো বস ... পিএইচডি করার সময়ও ভার্সিটি থেকে বেতন নেই তারপর পৃষ্ঠপ্রদর্শন ...

যারা আজকে এই ক্রিকেটারদের বেইমান বলে গালাগালি দিচ্ছে এই যুক্তিতে যে এরা বোর্ড থেকে এতদিন উচ্চহারে বেতন-ভাতা নিছে তারা কিন্তু এইটা ভুলে যাচ্ছে যে এরা বেতনভাতা মাগনা নেয় নাই, খেলার বিনিময়ে পারিশ্রমিক হিসেবে নিছে ... ভালো খেলতে পারছে কিনা সেটা অন্য প্রশ্ন ...

আর আমি যদ্দুর জানি বিসিবি মোটামুটি স্বয়ংসম্পূর্ণ, জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলে না, স্পনসর আর টিভি রাইটের টাকাতেই চলে, কাজেই এই ক্রিকেটাররা দেশের মানুষের সাথে বেইমানি করছে এই কথা খাটে না ... এদের থেকে প্রবাসী ছাত্রদের "অপরাধ" বেশি ...

তাই আমি ক্রিকেটারদের আচরণে মন খারাপ করি, কিন্তু দোষারোপ করি না ... তারা দেশের অন্য মানুষদের মতই, তার চেয়ে খারাপ কিছু না ... ভালোও না এই আর কি ...

বেস্ট উইশেস টু দেম ...
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এই এনালজিটা পুরাপুরি ঠিক না।

যারা আজকে এই ক্রিকেটারদের বেইমান বলে গালাগালি দিচ্ছে এই যুক্তিতে যে এরা বোর্ড থেকে এতদিন উচ্চহারে বেতন-ভাতা নিছে তারা কিন্তু এইটা ভুলে যাচ্ছে যে এরা বেতনভাতা মাগনা নেয় নাই, খেলার বিনিময়ে পারিশ্রমিক হিসেবে নিছে ... ভালো খেলতে পারছে কিনা সেটা অন্য প্রশ্ন ...
আপনি এ ধারনার বিচারে এমন এনালজি টেনেছেন। কিন্তু আমার জানা মতে কেউই এমন যুক্তি দেয়নি যে তারা এতদি উচ্চহারে বেতন নিয়েছে আর এখন চলে যাচ্ছে বলে বেইমান বলছে। আসলে এটা বেইমান অবেইমানের ব্যাপারনা। এভাবে চিন্তা করলে তো যারা দেশের টাকায় পড়াশুনা করে দেশেই থাকে কিন্তু নিজ দায়িত্ব ঠিকমত পালন করে না (ছাত্র, শিক্ষক, চাকুরে নির্বিশেষ সবাই) তারাও একই অভিযোগে অভিযুক্ত হবে।

প্রকৃত ব্যাপার হলো এই ক্রিকেটারদের দেশে কোন ভবিষ্যত নাই। অন্তত তাদের এটাই ধারনা। ক্রিকেট বোর্ড অবাক হয়েছে ব্যাপারটা হঠাৎ ঘটেছে বলে। এরা যদি ভারতে খেলে আবার দেশের জাতীয় দলেও খেলার সুযোগ পায় তাহলে কিন্তু ব্যাপারটার মধ্যে খারাপ কিছু থাকেনা। সমস্যা হল তারা যেখানে খেলতে গিয়েছে সেটা একটা বিতর্কিত প্লাটফর্ম।

দেশের ছাত্ররা বিদেশে পড়াশুনা করলেই ব্যাপারটা বেইমানি হয় বলে মনে হয়না। বরং যত বেশী ছাত্র বিদেশে আসবে তারা আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্প্র্কে ততটাই জ্ঞান আহরোণ করতে পারবে। তাদের একটা অংশও যদি ফেরত যায় (যদিও সেই হার কম) তবুও দেশের লাভ। আর সবচেয়ে বড় কথা এই ছাত্রদের সত্যিকার প্রতিভা বিকাশে ক্ষেত্র দেশের চেয়ে বিদেশেই বড়। প্রমাণ হিসেবে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পাবলিকেশনের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে। বিদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি একটা পিএইচডি ছাত্রের যে মানের পাবলিকেশণ আছে তা দেশের ১শতাংশ প্রফেসরেরও আছে কিনা আমার সন্দেহ আছে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ওয়ারিয়ার্স থেকে ওয়ারি না হয়ে গেলেই হয়...

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

আপনি এ ধারনার বিচারে এমন এনালজি টেনেছেন। কিন্তু আমার জানা মতে কেউই এমন যুক্তি দেয়নি যে তারা এতদি উচ্চহারে বেতন নিয়েছে আর এখন চলে যাচ্ছে বলে বেইমান বলছে। আসলে এটা বেইমান অবেইমানের ব্যাপারনা।

এমন যুক্তি অনেক মানুষই দিছে, বেইমান-বিশ্বাসঘাতক এমন বলে গালাগালিও করছে ... আপনি অন্য ব্লগপ্ল্যাটফর্মগুলিতে চোখ রাখলেই টের পাবেন ...

এভাবে চিন্তা করলে তো যারা দেশের টাকায় পড়াশুনা করে দেশেই থাকে কিন্তু নিজ দায়িত্ব ঠিকমত পালন করে না (ছাত্র, শিক্ষক, চাকুরে নির্বিশেষ সবাই) তারাও একই অভিযোগে অভিযুক্ত হবে।

অবশ্যই ... দায়িত্বে অবহেলা তো অপরাধই, নাকি?

রা যদি ভারতে খেলে আবার দেশের জাতীয় দলেও খেলার সুযোগ পায় তাহলে কিন্তু ব্যাপারটার মধ্যে খারাপ কিছু থাকেনা। সমস্যা হল তারা যেখানে খেলতে গিয়েছে সেটা একটা বিতর্কিত প্লাটফর্ম।

জাতীয় দলে খেলা-না খেলাটা কি ব্যাক্তিগত ব্যাপার বলে বিবেচনা করা উচিত না? আমি কিন্তু এইজন্যই সেইম এনালজি টানলাম ... বিদেশ থেকে পড়াশুনা করে আমি দেশে যাব কি যাব না এইটা আমার ব্যাক্তিগত ব্যপার ... নীতিগতভাবে আমাকে হয়তো আপনি দোষী ভাবতে পারেন, কিন্তু তার চেয়ে বেশি কি কিছু করার আছে? নাকি গালিগালাজ করলে সেটা সাপোর্টেবল হবে? আমার ফিউচার বিবেচনায় যেটা ভাল মনে হবে আমি সেটাই করবো, নাকি?

দেশের ছাত্ররা বিদেশে পড়াশুনা করলেই ব্যাপারটা বেইমানি হয় বলে মনে হয়না। বরং যত বেশী ছাত্র বিদেশে আসবে তারা আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্প্র্কে ততটাই জ্ঞান আহরোণ করতে পারবে। তাদের একটা অংশও যদি ফেরত যায় (যদিও সেই হার কম) তবুও দেশের লাভ।

আমি জ্ঞান আহরণ করলে দেশের লাভ কি যদি সেটা দেশের কাজে না লাগাই? আজকে বলা হচ্ছে বিসিবি এই প্লেয়ারদের পিছে বিনিয়োগ করছে তাই তাদের রাইট আছে রিটার্ন চাওয়ার, আমি যদি বলে দেশ আমাদের পিছে বিনিয়োগ করছে দেশের কি রাইট নাই রিটার্ন চাওয়ার? তখন কেন একশোজনের জায়গায় একজন গেলেই আমরা খুশি? বিসিবি একশোজন প্লেয়ারে পিছে ইনভেস্ট করার পরে যদি নিরানব্বই জন আইসিএল খেলে আর একজন ন্যাশনাল টিমে তাহলে কি এই যুক্তি দেয়া যাবে?

আর সবচেয়ে বড় কথা এই ছাত্রদের সত্যিকার প্রতিভা বিকাশে ক্ষেত্র দেশের চেয়ে বিদেশেই বড়। প্রমাণ হিসেবে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পাবলিকেশনের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে। বিদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি একটা পিএইচডি ছাত্রের যে মানের পাবলিকেশণ আছে তা দেশের ১শতাংশ প্রফেসরেরও আছে কিনা আমার সন্দেহ আছে।

ওয়েল এই যুক্তিতে বলি আমাদের প্লেয়াররা ইয়াশনাল টিমে না খেলে বাইরে খেললেই বরং ভালো, সারা বছর প্রতিযোগিতামূলক খেলার মধ্যে থাকবে দক্ষতা বাড়বে ... দক্ষতা ন্যাশনাল টিমের কাজে লাগলো কিনা সেটা ব্যাপার না ...

................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ওয়েল এই যুক্তিতে বলি আমাদের প্লেয়াররা ইয়াশনাল টিমে না খেলে বাইরে খেললেই বরং ভালো, সারা বছর প্রতিযোগিতামূলক খেলার মধ্যে থাকবে দক্ষতা বাড়বে ... দক্ষতা ন্যাশনাল টিমের কাজে লাগলো কিনা সেটা ব্যাপার না ...
খুবই সুন্দর যুক্তি। তবে খেলোয়াড়দের দক্ষতা দেশে যেভাবে কাজে লাগানো যায় বিদেশে পড়ে ফেরত আসলে অধিকাংশ সময়ই সেই অভিজ্ঞতা দেশে সেভাবে কাজে লাগানো যায় না। আমাদের শিক্ষক/বা গুরুদের থেকে অন্তত সেটাই দেখেছি। আর সেকারণেই এনালজিটার আমি আংশিক বিরোধীতা করেছি।

বিদেশে পড়তে যারা আসে দেশে তারা কিন্তু ফেলনা নয়, দেশেও তাদের ভাল অবস্থান থাকে/আছে। কিন্তু ক্রিকেটারদের দেশ ত্যাগের মূল কারণই হলো দেশে তাদের নড়বড়ে অবস্থান।

আমি ব্যাপারটা সংকীর্ণ অর্থে দেখতে চাইনি। বৃহৎ পরিসরে দেখলে এই এনালজিটা পুরাপুরি যায়না, অন্তত আমার কাছে। ক্রিকেটারদের বিদেশে যাওয়াতে অন্যব্লগে কে কি বলল সেটা আমি পড়িনি পড়ার ইচ্ছেও নেই, তাই আমার মন্তব্য সেই সব ব্লগের সাথে মিলিয়ে বিচার না করলে হয়তো বুঝতে পারবেন।
ধন্যবাদ।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

লাগান বাড়ি ধমাধম।
লাগান বাড়ি ধমাধম।
লাগান বাড়ি ধমাধম।

লেখায় জাঝা ।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

তাইনাকি, এটা তো জানতাম না, ভারতীয় "বিকল্প ধারার" ক্রিকেট লীগ মানে?
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

জিফরান খালেদ এর ছবি

আহা... বাংলাদেশের ক্রিকেট লয়া কতদিন খবর টবর রাখি না... কি হইতেসে এখন এইটাও জানি না... অথচ, এইটাই ছিলো আলোচনার মূল বিষয়বস্তু কত কতদিন...

রেনেট এর ছবি

বাশার, রফিক - যারা ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে পৌছে গেছেন/অবসর নিয়ে ফেলেছেন, তাদের জন্য এই প্রস্তাবে সাড়া দেয়া আমার কাছে স্বাভাবিকই মনে হয়েছে।
কিন্তু আফতাব/নাফিস --যারা এখনো দলের প্রতিষ্ঠিত খেলয়াড়, বা ফরহাদ/ ধীমান যারা সবে দলে খেলতে আরম্ভ করেছে, তাদের এভাবে টাকার লোভে অবসর নেয়ার সিদ্ধান্তকে মোটেই ভালো লাগেনি।
টাকার জন্য জাতীয় দলে না খেলার সিদ্ধান্ত, আর জুয়াড়িদের সাথে টাকার বিনিময়ে ম্যাচ পাতানোর মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য দেখি না। একটা খেলার মাধ্যমে দলকে পঙ্গু করে দেয়া, আরেকটা না খেলার মাধ্যমে দলকে পঙ্গু করে দেয়া।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

টাকার জন্য জাতীয় দলে না খেলার সিদ্ধান্ত, আর জুয়াড়িদের সাথে টাকার বিনিময়ে ম্যাচ পাতানোর মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য দেখি না। একটা খেলার মাধ্যমে দলকে পঙ্গু করে দেয়া, আরেকটা না খেলার মাধ্যমে দলকে পঙ্গু করে দেয়া।

একমত না ... কেন একমত না উপরে বলছি ...

এই টাইপ কমেন্টগুলি দেখেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে ... খেলোয়াড়রা যা করছে সেটা শুধুমাত্র নীতিগত বিচারে অসমর্থনযোগ্য, এর বেশি কিছু না ... ম্যাচ পাতানো অনেক বড় অপরাধ, দুইটা কোনভাবেই এক না ...
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

রেনেট এর ছবি

আমিও নীতিগত বিচারেই অসমর্থন করছি...
মেজাজ খারাপ করার জন্য দুঃখিত...আর্দ্রে না কে জানি আছে, উনার ছবি দেখতে পারেন...মন দ্বিগুন ভালো হয়ে যাবে দেঁতো হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

আলমগীর এর ছবি

নাম ডুবাক আর ভাসাক শুভেচ্ছা।
আমি এটাকে পজিটিভলি দেখি।
কেউ তাদের গালাগালি করতে চাইলে দেশের মাটিতে গিয়ে করেন, বিদেশের মাটিতে থেকে না।

আনিস মাহমুদ এর ছবি

ভালই হয়েছে। এই সুযোগে যদি আশরাফুলকে এক্সপোর্ট করে আফতাবকে রেখে দেয়া যেত, সেটা মনে হয় আরো ভাল হত।

কুম্ভকর্ণ বিসিবি-র ঘুম যদি এইবার ভাঙে!

.......................................................................................
Simply joking around...

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

নীতিগত, অর্থগত সব ব্যাপারেই ক্রিকেটারদের এই কাজের সমর্থন করছি।

আর্থিক দিক দিয়ে যারা জাতীয় দলে নিয়মিত খেলবে, তাদের চেয়ে ওয়ারিয়র্সের খেলোয়াড়রা খুব বেশি পাবে, এমনটা না। কিন্তু অর্থের চুলচেরা হিসেবে না গিয়েও বলা যায়, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকলে তারা যে পদক্ষেপই নিক কোনো সমস্যা না, যদি আইনত তা ঠিক হয় (বোর্ডের সাথে কন্ট্রাক্টের শর্তের খেলাপ না হয়)। পরে আসে ক্রিকেট ফ্যান হিসেবে নীতিগতভাবে তাদের কাজকে সমর্থন করা যায় কি না।

নীতির দিক দিয়েও তাদের কাজকে অসমর্থন করার কিছু দেখি না। বাংলাদেশ যেমন ইঞ্জিনিয়ার প্রোডিউস করে; কিন্তু সবার যোগ্য কর্মসংস্থান দিতে পারে না (দেওয়ার কথাও হয়তো নেই), ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। দেশে থাকলে যারা বসেই থাকতো, তারা বিদেশে একটি লীগে খেলে নিজেরা আর্থিকভাবে লাভবান হোক, দেশেও কিছু টাকা আসুক - এতে লাভের বাইরে লসের কিছু দেখি না। বাশার, রফিকদের ব্যাপারে এ ব্যাপারে কেউই দ্বিমত করছেন না; কিন্তু কথা উঠছে জাতীয় দলে খেলার সম্ভাবনা আছে, যেমন আফতাব, ধীমান এদেরকে নিয়ে। এখন এদের জাতীয় দলে খেলা কতোটা নিশ্চয়তা, আর কতোটা অনিশ্চয়তায় ভরা তা একবার ভেবে দেখুন। জাতীয় দলের নির্বাচন পলিসি ফেয়ার না। পাইলটের মত খেলোয়াড়কে লাথি মেরে মুশফিককে বসানো হয়েছে, ধীমানকে এখ সিরিজে খেলিয়ে আবার মিউজিক্যাল চেয়ার মুশফিক, বাংলাদেশের সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান হাবিবুল বাশারকে ক্যাপ্টেন্সি ধরিয়ে দিয়ে ধবংস করে ফেলা হয়েছে, তারপর 'ওল্ডম্যান' আখ্যা দিয়ে দল থেকে কিকআউট করা হয়েছে, রফিকের মত খেলোয়াড়কে ক্রিকেট ফুরানোর আগেই অবসরের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে, একসময় টেস্টে ৬ উইকেট নেয়া এনামুল হক জুনিয়রকে আর দেখা যায় না, নাফিস ইকবাল, হান্নান সরকাররা আর জাতীয় দলের শর্টলিস্টে আসে না। মেধা অপচয়ের এ লিস্ট অনেক বড়। আজকের আফতাব যে আগামীকাল কিক খাবে না, তার নিশ্চয়তা কি? সুতরাং কেউ যদি অনিশ্চিত জীবনের পরিবর্তে দেশের বাইরে লীগে খেলতে যায়, তাতে সমস্যা কি?

উপরের বক্তব্যও যারা মানছেন, তাদের বক্তব্য হচ্ছে আইসিএল 'নিষিদ্ধ' লীগ। অতএব, সেখানে খেলতে যাওয়া অনৈতিক। আসলে নৈতিকতার বিচার করতে গেলে আরেকটু গোড়ায় হাত দিতে হবে। আইসিএল নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ কি? বিসিসিএইয়ের ক্রিকেট বিজনেসের মনোপলিতে বাধা দেয়া। তারওপর সেটা তাদের ঘরোয়া ব্যাপার। আইসিসি কেন আইসিএলে খেলতে যাওয়াদেরকে জাতীয় দলে ব্যান করানোর প্রজেক্ট হাতে নিবে? এটা কি খুব নৈতিক কাজ? নীতির প্রশ্ন আসলে আইসিসির এই বিসিসিআইয়ের চামচামির প্রতিবাদ করুন। এরকম মনোপলি চলতে থাকলে ক্রিকেটের বিশ্বায়ন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

আর বাংলাদেশের মূল সমস্যা বোর্ডের। আমাদের মেধার অভাব নাই। অভাব মেধাকে ব্যবহারের। ম্যানেজমেন্ট ঘাপলা করলে শচীন টেন্ডুলকারও ফ্লপ মারবে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

গেছে ভালো কথা... ভালো কইরা খেলুক। চ্যাম্পিয়ন ট্যাম্পিয়ন হইলে পরে দেখা যাইবো এগর টিমটাই নিয়া বাংলাদেশ জাতিয় দল ঘোষণা করা হইবো।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ঝরাপাতা এর ছবি

অভিনন্দন রইলো . . . .


যে রাতে গুঁজেছো চুলে বেগুনি রিবন বাঁধা ভাট,
সে রাতে নরকও ছিলো প্রেমের তল্লাট।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . (আবু হাসান শাহরিয়ার)


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

দেখছেন তো বিচার ও রায় হয়ে গেছে। ওদের ১০ বছরের সাজা। চিন্তা ভাবনা না করেই দিল একটা পথ বন্ধ করে। আরে ওরা খেলতে গেছে যাক, অন্যদের নিয়ে দল সাজা। ওরা ওখানে ভাল করলে যদি সুযোগ থাকে জাতীয় দলেও নে। সেই পথ বন্ধ করে শোধ নেয়ার কোনো মানে হযনা।

আলমগীর এর ছবি

ক্রিকেটারা হাতের মাঝ আঙুলটা তুলে এখন অবলীলায় ফক ইউ বলে দিতে পারে। আর কোন নৈতিক বাধা থাকল না।

তানবীরা এর ছবি

বাড়ির থেকে বের না হলে শিখে না কিছু। এবার যদি কিছু অন্তত শিখে আসে।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।