১.
দীর্ঘদিন পর জ্বর হলো।
খুচরা সর্দিকাশিকে নিত্যসঙ্গী করেই বেঁচে আছি, কিন্তু জ্বরের দেখা পাইনি বলে দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর আবার সাক্ষাতের মতো একটা অনুভূতি হচ্ছে।
কাসেলে শীত নেমে পড়ছে পড়ছে ভাব, গতকাল ঘুম থেকে উঠে জানালার বাইরে পাতা ঝড়ার দৃশ্য দেখলাম বছরে এই প্রথম। টিপটিপ বৃষ্টি পড়ে সারাদিন, হিম হাওয়া চালায় একটু পরপর। চারদিক ভেজা, ঘরে হীটার মৃদু লয়ে চালিয়ে বসেছিলাম সারাদিন। তবে সন্ধ্যেবেলা ডাঁই হয়ে থাকা হাঁড়ি-বাসনকোসন ধুতে ধুতেই মনে হয় জ্বরের শূককীট শরীরে ঢুকে পড়েছে।
হাঁচি শুরু হলো একটু পরই। প্রলয়ঙ্করী হাঁচি, সাফার-সিম্পসন স্কেলে ক্যাটেগরি ফোর তো হবেই। হাঁচতে হাঁচতে ঘাড় ব্যথা হয়ে যাবার দশা। এলাচ আর আদা দিয়ে চা খেয়ে শুধুমুধু ঘুমটা চটলো, জ্বরকে ঠেকিয়ে রাখা গেলো না। জ্বরের মূককীটকে শরীরে নিয়ে বসলাম পাওয়ার সিস্টেমস নিয়ে।
আজ থেকে পাঁচ বছরে আগে শেষ কষেছি এসব প্যাঁচঘোঁচ, বহু জিনিস ভুলে গুলে খেয়ে বসে আছি। লাইব্রেরি থেকে দেখেশুনে বই তোলার পরও ঘরে এসে বই খুলে দেখি, সব হিজিবিজি ঠেকছে। দুনিয়ার হাবিজাবি দিয়ে ভরা জিনিসপত্র, আমার দরকার এলিমেন্টারি কিছু। নিজের ই-বুক সংগ্রহ ঘেঁটে দেখলাম গোটা দুয়েক স্ক্যান করা বই আছে সেখানে, সেগুলো খুলে পড়ছি কয়েকদিন ধরে। জিনিসগুলি খুবই ইন্টারেস্টিং, জ্বরের ঘোরে পড়তে গিয়ে একটু এলোমেলো ঠেকলেও ভালোই লাগছিলো। চটকা ভাঙার পর উঠে দেখি ভোর সাড়ে পাঁচটা বাজে।
আজকে বেড়াতে যাবার কথা ছিলো একজনের সাথে, দশটার দিকে ঘুম থেকে উঠে তাকে জ্বরের কথা জানিয়ে আবার ঘুম দিলাম। শরীরে তখন জ্বর পুরো ডানা মেলা প্রজাপতি, প্রচন্ড গলাব্যথা, মাথার ভেতরে মনে হচ্ছিলো কেউ গ্রেকো-রোমান কুস্তি প্র্যাকটিস করছে। দুপুরে ঘুম ভেঙে উঠতেই আরেকটা ফোন পেলাম, প্রায় বছর খানেক আগে একটা স্টুডেন্ট জবের জন্যে অ্যাপ্লাই করেছিলাম, সেখান থেকে খোঁজ এসেছে, আমি আগ্রহী কি না।
সামনে আরেকটা পরীক্ষা, আর আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পাওয়ার নেটওয়ার্ক সংক্রান্ত অনেক হাবিজাবি আবার ঝালিয়ে নিতে হবে। জিনিসগুলো বার করে দেখলে ভেতরে একটা ঘাই দেয়। আসলেই অনেকগুলি বছর কিভাবে কিভাবে যেন কেটে গেলো। লোড বাস, জেনারেটর বাস, সুইং বাস, এ-বি-সি-ডি প্যারামিটার সব নাচানাচি করছে চোখের সামনে।
২.
মেজাজটা চটে আছে। ভাল্লাগছে না কিছু। এই মুভিটা দেখে মেজাজ আরো খারাপ হয়েছে, কিন্তু প্লটটা ভাবনা জাগানোর মতো। কিল বিল দেখে যদি কারো ভালো লাগে, তাহলে তিনি এটাও পুরোটা দেখতে পারবেন। কিল বিল বেশ রিপালসিভ হওয়া সত্ত্বেও আমার বেশ প্রিয় সিনেমা, তবে ১১:১৪কে পছন্দের তালিকায় রাখবো না।
মন্তব্য
পঞ্চাশ ... তালিয়া
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...
সুস্থতা কামনা করি।
কিলবিল আমার খুব প্রিয় একটা সিনেমা
হাফ সেঞ্চুরির জন্য অভিনন্দন। এবার ব্যাটটা একটু দর্শকদের দিকে তুলেন।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
এরকম জ্বরাক্রান্ত একটা লেখা দিলেন ! পড়তে যেয়ে মনে হচ্ছিলো নিজেরই জ্বর এসে গিয়েছে।
পাওয়ার সিস্টেম সাবজেক্টটা আমার কাছে সুবিধার লাগে নি। টিচার ভালো পড়াতে অল্পের উপর দিয়ে পার পেয়ে গিয়েছি। মজার ব্যাপার মাত্র ৩ সেমিস্টারেই গুলে খেয়ে ফেলেছি এই সাবজেক্ট। তবে মনে আছে ল্যাবে কিছু জঘন্য প্রকৃতির DOS গোত্রীয় সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করা লাগতো, সিমবেস, সিমফ্লো, সিমফল্ট ইত্যাদি। আর থিয়োরিতে দুটা বিশাল ধরণের অঙ্ক করা লাগতো খেয়াল আছে। সবমিলিয়ে জঘন্য। আপনার পড়া লাগছে শুনে সমবেদনা।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
নিজের দিকে যত্ন নিবেন । জ্বরের এই সময়টার কথা জানি । মাথা ভারী হয়ে ঘোরের মত লাগে । সুতরাং ওষুধ খেয়ে বিশ্রাম নিন ।
বর্ণ্না আদি ও অকৃতিম ...চমত্কার । পঞ্চাশে পৌছুলো " প্রবাসে দৈবের বসে " । অভিনন্দন । ভালো থাকবেন ।
-------------------------------------------------------
কারা যেন চলে গেছে দূরে...বহুদূরে..আর ফিরবে না জানি । কোন কারন ছাড়াই , কোন যুক্তি ছাড়াই চুপচাপ হয়ে গেছে সারিবদ্ধ প্রাণ গুলো । জানি , আমাকেও আসতে হবে এই বিষন্ন নগরীতে..একদিন.. কোনদিন --মলাগোফরুমা
---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন
জ্বর খুবই প্রত্যাশিত। জ্বর হলেই কিছুটা বিশ্রাম পাই। কিন্তু আপনের দেখি উল্টা!
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
সেবিকা হাতের্কাছে থাকলে জ্বরটর ব্যাপার না। আমার ফাডা কফাল....না জ্বর...না সেবিকা...
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
আমার জ্বর দরকার নাই। সেবিকা থাকলেই হবে।
হ
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
- সেবিকা? এই রোজা রমজানের দিনে?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঠিক। সেইবি(কা)-বেইবি।
হাঁটুপানির জলদস্যু
ভিডিও তো চলেনা, পোকারের সাইটে নিয়ে যায়। বলে ভিডিও সাময়িকভাবে বন্ধ আছে।
বহুত হয়েছে। আর নয়। সুস্থ হয়ে উঠুন চটজলদি।
পুনশ্চ. এই মুহূর্তে নীড়পাতার ছয়খানা লেখা প্রবাস সংক্রান্ত! হইলোটা কী!
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
শেষ বিচারের আসরে উকিল নিয়োগের ব্যবস্থা না থাকলে ক্যাম্নে কী!
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
- বছরের এই সময়টায় আমার জ্বর আসে। মুন্সটার প্লাৎসে বেথোফেন ফেস্টের বেশ তোড়জোড় চলছে। প্রতি রাতেই মহড়া চলছে পানির ফোয়ারার পর্দা আর তাতে হালকা লেজারের কারুকার্য। বিড়ি ফুকতে ফুকতে আজকেই ভাবছিলাম, যাব্বাবা জ্বরটা এখনো এলোনা দেখছি!
পাতাঝরা দিনের পাশাপাশি যে জিনিষটা সেদিন মন কাড়লো তা হলো ঘন কুয়াশা। একটু একটু করে শীতের আগমন বার্তা জানান দিচ্ছে প্রকৃতি। অচিরেই হয়তো ঠোঙা-ঠাঙা হয়ে ঘরের বাহির হতে হবে। নিজেকে জ্বলজ্যান্ত প্যাকেট বানানোর পরেই বোধহয় মুখটা একটু তিতকুটে ঠেকবে, মাথাটা ব্যাথায় ভার হয়ে উঠবে, এই বছরের জ্বরটা ভালোবেসে আমাকে আলিঙ্গন করবে। অপেক্ষা আছি আপাততঃ তার।
তুই সুস্থ হয়ে ওঠ শিঘ্রী, না হলে যে আমার জ্বরের চুমো পাওয়া হচ্ছে না রে!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আবার একটা পোতানি ভাবের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
আমাদের এই গোলার্ধে এখন বসন্তের শুরু হইয়াছে। শীতভাব অনেকটাই কমিয়া গিয়াছে, মৃদুমন্দ সমীরণ বহিতে শুরু করিয়াছে। চেরি ও অন্যান্য পাতা-ঝরা গাছে ফুলের সমাগম ঘটিতেছে।
আমরা পৃথিবী নীচের দিকের বাসিন্দারা যারপরনাই আহলাদিত।
(আপনি না, আপনার এই সিরিজ) পঞ্চাশে পদার্পণের জন্য অভিনন্দন।
__________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?
নতুন মন্তব্য করুন