জার্মানিতে প্রাকবিশ্ববিদ্যালয় পড়ালেখা বারো নয়, তেরো বছরের। আবিটুর, অর্থাৎ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়ার পর এখানে ছাত্রদের একটি নির্দিষ্ট সময় (এখন নয় মাস) বাধ্যতামূলকভাবে হয় সেনাসেবা (ভেয়ারডিন্সট) অথবা জনসেবা (ৎসিভিলডিন্সট) দিতে হয়। মূল প্রাচীন নিয়মটি হচ্ছে, পুরুষদের জন্যে সেনাসেবা বাধ্যতামূলক, কিন্তু যেহেতু জার্মানদের আগের সেই সামরিক অবস্থান নেই, তাই সেনাসেবাকে পাশ কাটানোর জন্যে কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লিখে জনসেবাকে বেছে নেয়া যায়। বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা বিভাগ, হাসপাতাল, পরিবেশরক্ষা, কৃষিখাত ইত্যাদিতে জনসেবা দিয়ে থাকে ছাত্ররা। নিয়মটা কেবল জার্মানিই নয়, পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই আছে। তবে অনেক দেশেই সেনাসেবা বাধ্যতামূলক (যেমন ইসরায়েল)।
ছবিতে দেখতে পাবেন, লালরঙা দেশগুলিতে কনস্ক্রিপশন বা বাধ্যতামূলক সেবাদান পদ্ধতি চালু, নীলরঙা দেশগুলিতে তা নেই, আর হলুদ দেশগুলি থেকে তা শিগগীরই তুলে দেয়া হবে।
সেনাসেবা দেয়ার বিরুদ্ধে "বিবেকজনিত আপত্তি" জানাতে পারে একজন ছাত্র। ১৯৭৩ সাল থেকে এ ব্যাপারটা দেখছে একটি ফেডারেল দপ্তর। তারা ছাত্রদের পাঠানো দরখাস্ত যাচাই করে তাকে সেনাসেবার পরিবর্তে জনসেবা হয় বেছে নিতে বলছে, অথবা নিজেরাই ঠিক করে দিচ্ছে সে কোথায় এ কাজ করবে। আমার সহপাঠী রাইনার ইয়োসেফ সেনাসেবা এড়ানোর জন্যে বতসোয়ানায় গিয়ে এক বছর জনসেবা দিয়ে এসেছে। তবে সেনাসেবা দিতে অনিচ্ছুক নয় সবাই, এখানে প্রায়ই রাস্তায় তরুণ ভেয়ারডিন্সট-দেনেঅলা দেখা যায় সামরিক পোশাকে, ঝোলা কাঁধে বাড়ি ফিরছে বা বাড়ি থেকে বেরিয়েছে। জার্মানদের সবকিছুই খুব শক্তিশালী আইন দিয়ে বাঁধা, এসবের জন্যে আছে ZDG বা জনসেবা আইন (ৎসিভিলিডিন্সটগেজেৎস)। তারপরও উল্লেখ্য যে সেনাসেবাই এখন কার্যত জনসেবার বিকল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে এখানে।
এই সেবা বাধ্যতামূলক, তবে বিনামূল্যে নয়।
আমাদের দেশে তরুণদের মধ্যে বাধ্যতামূলক জনসেবার ব্যবস্থাটি চালু করা প্রয়োজন। ব্যবস্থাটিকে এভাবে উত্তরণ করা যেতে পারে, স্নাতক পর্যায়ের ডিগ্রি নিতে গেলে এক বছরের জনসেবার প্রমাণ উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করতে হবে। স্কুল, কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ন্যূনতম ষোলো বছর ব্যয় করতে হয় একজন ছাত্রকে, এর মধ্যে বাহান্নটি সপ্তাহ সে বিভিন্ন জনসেবায় সম্পৃক্ত হতে পারে। টানা এক বছর করতে হবে, এমন কোন বাধ্যতা না রাখলে তা সহজেই সম্ভব।
জনসেবা কার্যক্রম চালু হতে পারে গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষাদান থেকে শুরু করে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায়। ত্রাণ ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে খেলার মাঠে ভলান্টিয়ারিং, সবই এর মধ্যে পড়তে পারে।
প্রচুর যোগ্য মানুষ আমাদের, শুধু কাজে লাগাতে হবে। একজন স্নাতক যেন গর্ব করে বলতে পারেন, তিনি দেশের জন্যে অন্তত একটা বছর নিঃস্বার্থ সেবা দিয়ে এসেছেন।
মন্তব্য
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
করিতে পারি না কাজ
সদা ভয় সদা লাজ
সংশয়ে সঙ্কল্প সদা টলে ...
হাঁটুপানির জলদস্যু
পাছে লোকে কিছু বলে ...
মাইনষে তো কইবোই আবার সফল হইলে চামে লাফাইবো লগে লগে।
তাই বইলা কি করা লাগবোনা নাকি !
--------------------------------------------------------
হামদু কি আমারে চামে দুর্নীতিবাজ ডাকলি?
হাঁটুপানির জলদস্যু
- না দোস্ত, তোরে ডাকি নাই।
আমি সবসময় সবার সামনে সত্যি কথা বলি না, অন্ততঃ বন্ধুর খাতিরে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ৎ - উচ্চারন কর কিভাবে?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
এই তো আমার কষ্টগুলি ধরতে পারছে লোকজন ...
হাঁটুপানির জলদস্যু
শব্দের শুরুতে ত্ তো ম্যালাই আছে রুশ ভাষায়! আরও আছে অজস্র উচ্চারণাযোগ্য শব্দ। ভাবেসাবে মনে হয়, ওদের ভাষায় ব্যঞ্জনবর্ণের আকাল! দুটি উদাহরণ: VZGLYAD, MGNOVENIYE.
বোঝেন অবস্থা!
পুনশ্চ. কী লিখতে কী লিখসি! টালও তো আসিলাম না!
আসলে বলতে চেয়েছিলাম, স্বরবর্ণের আকাল!
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
জার্মানিতে জানি না, কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ব্যাপারটা, মনে হয়, ঠিক বাস্তব সম্মত নয়, অন্তত সবক্ষেত্রে। গ্রামের হাইস্কুল থেকে পাশ করে যে ছেলে-মেয়েটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (in generally at a public institution) বৃত্তির টাকায় বা টিউশানি করে পড়ছে তার জন্য নিয়মটা কি চাপিয়ে দেয়া হয়ে যায় না?
সেক্ষেত্রে তাঁরা তাঁদের গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটির সময়ে অবৈতনিক শিক্ষা দিতে পারেন। জনসেবা মানেই যে শহরে বসে করতে হবে এমন তো কোন কথা নেই।
তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জনসেবাভিত্তিক স্যাটেলাইট স্কুল গড়ে তোলা যেতে পারে শহরের ছিন্নমূল শিশুদের জন্যে।
অনেক কিছুই করা যায়। মুশকিল হচ্ছে, এটাকে ঠিকমতো গুছিয়ে সাজানো আর মনিটর করা।
হাঁটুপানির জলদস্যু
লজ্জাজনক হলেও অস্বীকার করতে পারি না, গ্রাম-মফস্বল সম্পর্কে আমার জানা অজ্ঞানতা পর্যায়েই পড়ে। তাই ভুল হতে পারে, হয়ে থাকলে দুঃখিত। পরের কথাগুলো মূলত সঠিকভাবে বিষয়টি বোঝার জন্যই বলছি।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি প্রধানত শহরেই নয়?
দ্বিতীয় প্রস্তাবনাটি নিঃসন্দেহে একটি অসাধারণ উদ্যোগ হতে পারে। যদিও প্রাথমিকভাবে শহরকেন্দ্রিক।
তবে শেষে যা বললেন, উপযুক্ত একটি প্ল্যান সাজিয়ে-গুছিয়ে ঠিকভাবে চালিয়ে নেয়া। আর, ধূগোর আশংকা মত "দুর্নীতির অধ্যায়" নাহলেই হবে।
যদি বিনামূল্যে না হয় তাহলে চাপিয়ে দেয়া হয় না। আর, বিনামূল্যে করতে না হলে সরকারের কতটুকু টাকার দরকার, এবং সেটার উৎস বা সুলভতা নির্ণয় করে তো দেখাই যায়।
বিষয়টা জানা ছিলো না... জেনে ভাল্লাগলো... হিমু ভাইয়ের সাথে একমত... আমাদের দেশেও এই ব্যবস্থাটা চালু করা উচিত... অবশ্যই উচিত... নিজের দেশের জন্য কাজ করার চেয়ে বড় সন্মান আর কী হতে পারে!
দেশ নিয়ে আসলে করার আছে অনেক কিছুই... অভাব খালি সদিচ্ছা আর উপযুক্ত দিকনির্দেশনার।
সফলভাবে এমন করা গেলে তো চমৎকার হতো।
স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীতে বাধ্যতামূলকভাবে এমন ক্রেডিট/নন-ক্রেডিট কোর্স দেয়া যায় নাকি? পরিকল্পনাটা এমন হবে যে বছরের যে কোন সময়েই কেউ না কেউ জনসেবা করার জন্য থাকবে। জনসেবার লিস্টটা কেমন হতে পারে তার একটা আইডিয়া থাকা দরকার ...
আরো আইডিয়া আসতে পারে।
আজকের আইডিয়া হয়তো ১০ বছর পরে সফলভাবে প্রয়োগ হতে পারে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কি এ রীতি প্রস্তাব করে সুফল পাওয়া যাবে?
হাঁটুপানির জলদস্যু
ইউনিভার্সিটি গ্রান্ট কমিশন থেকে নির্দেশ আসলে করবে। তবে আমাদের শিক্ষিত লোকজন তো সুশীলের দলে ... তাই একটু চিন্তিত
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
আমিও হিমু ভাইয়ের সাথে একমত। চালু করা হোক জনসেবা। তবে ভুলেও যেন আবার জার্মানির মতো সেনাসেবা চালু না হয়ে যায়। অ্যাম্নেই সেনারা অতিষ্ঠ কইরা ফেলছে।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
সেনারা তো সেবা করতে আসলে আর যাইতে চায় না। মাপও চাইতে হয় দোয়াও চাইতে হয় তখন ।
হাঁটুপানির জলদস্যু
আসলেই দারুণ হইত ব্যাপারটা।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
একমত।
তবে জনসেবা বাধ্যতামুলক করার আগে দুটি বিষয় নিশ্চিত হতে হবে। কারিগরি ও পেশাজিবি শিক্ষার মান উন্নয়ন করে তরুনদের সামনে কেতাবি উচ্চশিক্ষার যুত্সই বিকল্প দিতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষানবিশ আইন তৈরি করে সরকারি ও বেসরকারি খাতে একে কেতাবি উচ্চশিক্ষার সমমানের গ্রহনযোগ্যতায় নিয়ে আসতে হবে।
হিমু হয়ত এরই মধ্যেই জেনে গেছেন যে, ইউরোপে (অধুনা চীনে ও) ৩-৪ বছরের বিশেষায়িত প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কারিগর তার সমবয়সী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪-৬ বছরের ডিগ্রীধারী প্রকৌশলীর চেয়ে ১৫-২০% বেশী আয় করেন।
এলাভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী এসব কাজের কথা আমাদের ৩য়/৪র্থ শ্রেণীর পরিবেশ পরিচিতি সমাজ বইয়ের শেষে থাকতো। ছুটির দিনে সবাই মিলে নালা-নর্দমা পরিষ্কার করা, স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট বানানোয় সাহায্য করা, বিশুদ্ধ পানি বিষয়ে সচেতনতা তৈরি, ইত্যাদি।
কিন্তু কেনো জানি এসব "এসো নিজে করি"র মতো না-ছোঁয়া থেকে গেছে...।
ম্যাপটা দেখে যা বুঝলাম, ইংরেজ কনস্ক্রিপশনের ধারণাটাকে পছন্দ করে না। তারা যেসব জায়গায় দীর্ঘদিন গেড়ে বসতে পেরেছে, তার কোথাও কনস্ক্রিপশনের রীতি গড়ে ওঠেনি।
হাঁটুপানির জলদস্যু
এস্কিউজ মি। এই পোস্টের শিরোনামের উচ্চারণ্টা কী হবে?
পরের মাস থেকে জার্মান ভাষার কোর্সে ভর্তি হচ্ছি। আগে থেকেই একটু প্রস্তুত হয়ে থাকা আর কী।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
কোর্সেই চমৎকারভাবে শেখানো হবে। লুঙ্গির গিটঠু মারা প্র্যাক্টিস করো এই কয়দিন ।
হাঁটুপানির জলদস্যু
খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার ... আমাদের দেশের জন্য এটা মাস্ট!!
বিশেষ করে ডাক্তারী পড়চে যারা তাদের জন্য বিশেষ ভলান্টিয়ারী কোর্স অবশ্যই প্রয়োজন ... আমাদের দেশে ডাক্তাররা রোগীর কষ্ট বামৃত্যুর সাথে খুব তাড়াতাড়ি এ্যাডজাস্ট করে ফেলে!!
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
কী বলতে চাইলেন বুঝতে পারলাম না ....
এখন তো সার্টিফিকেট নিয়ে কসাইগিরি করে, আপনি কি সনদ ছাড়াই এসব করতে বলেন!
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
আপনি প্রশ্নটা করায় ভালো হলো .... প্রশ্নটা পড়ে মনে হলো ঠিক এই জায়গাটাতেই ফোকাস ফেলার কথা ভাবছিলাম
ডাক্তারী ছাত্রদের ভালান্টিয়ারী কাজ মানেই যে চিকিৎসা হতে হবে তা না ... বরং চিকিৎসার বাইরে অন্য ধরনের স্বেচ্ছাসেবী কাজের উপরই কোর্সের ফোকাস রাখা উচিত .... শুধু চিকিৎসার জ্ঞান বা ক্ষমতাটাই যে ডাক্তারের জন্য যথেষ্ট না সেটা যাতে তারা সার্টিফিকেট পাওয়ার আগেই বুঝতে শিখে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
চেয়ারম্যানের দেয়া চারিত্রিক সার্টিফিকেট বা প্রথম শ্রেনীর সরকারী কর্মকর্তা কর্তৃক সত্যায়িত করার ঘটনাগুলা এইদেশে যেভাবে ঘটে, এই প্রকল্পে এর চেয়ে বেশি ভালো কিছু আশা করা যায় না।
পরীক্ষায় ব্যাবহারিক মার্কস বিষয়ে একটা সমাধান করতে পারলে তখন বোঝা যাবে এই প্রকল্পের ভবিষ্যত। প্রাইভেট পড়ার অপর নাম যদি ব্যবহারিক পরীক্ষায় ভালো মার্কসের মাপকাঠি হয় তাইলে এই প্রকল্প চালু কইরা কোনো ফায়দা নাই বলে আমি মনে করি।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
উচ্চারন করা যায় না এমন বর্ণ ব্যবহার করা হলে সেটা উচ্চারন করে ইস্নিপসে দিয়ে সেই লিংক শিরোনামে বসানোর ব্যবস্থা করার জন্য ডেভুদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি ।
মাদ্রাসার তালবে এলেমরা যে প্রতি সপ্তাহে মিলাদ শরীফে শরিক হয় এবং কোরবানীর সময় গরু কোরবানীতে সাহায্য করে , সেটিকে জনসেবা হিসেবে ধরা হবে কি না জাতির বিবেকের কাছে এই প্রশ্ন রাখছি ।
দিচ্ছি বস, দিচ্ছি ... আপনি একটু আরাম করে (পদ্মাসনে) বসেন, সব দেয়া হবে ...।
আমি মনে করি কোরবানির সময় তালেবে এলেমরা যা করেন, সেটা জনসেবা। তবে মিলাদ নয়।
হাঁটুপানির জলদস্যু
ভীষন সম্ভবনাময় একটা প্রস্তাব।
আসলে আমাদের দেশে জনসেবার কালচারটা সেভাবে গড়ে উঠেনি। দেশের নানা দুর্যোগে কিন্তু ছাত্রছাত্রীরাই সবার প্রথমে এগিয়ে আসে। এই সকল বিচ্ছিন্ন প্রয়াস গুলোকে সাংগঠনিক রুপ দিতে পারলে; দারুন একটা কাজ হবে।
তবে এটা বাধ্যতামুলক নয়া হয়ে বরং সেচ্ছাসেবামূলক হওয়া উচিত্।
----------------------------------------------------------------
এমন শহরে আমি ঘুরি , নাকি শহরটাই ভবঘুরে?
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই,
দুইকে আমি এক করি না এক কে করি দুই৷
বাধ্যতামূলক হলে কী সমস্যা হতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
হাঁটুপানির জলদস্যু
যেকোন সেচ্ছাসেবামূলক কাজে স্বতঃস্ফূর্ততা, বাধ্যতামূলক কাজের চেয়ে বেশী। আর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি স্বতঃস্ফূর্ত কাজের মান অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাধ্যতামূলক কাজের চেয়ে ভাল।
----------------------------------------------------------------
এমন শহরে আমি ঘুরি , নাকি শহরটাই ভবঘুরে?
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই,
দুইকে আমি এক করি না এক কে করি দুই৷
সত্যি কথা।
তবে বাধ্যতামূলক কাজও ভালো করে করার চর্চাটা গড়ে ওঠা জরুরি। এটা করা সম্ভব, যদি বাধ্যতামূলক কাজটিতে ফাঁকির পরিণতটি খুব একটা সুবিধাজনক না হয়। আপনি যদি এক বছর জনসেবার প্রমাণ না দেন, বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে সার্টিফিকেট দেবে না।
তবে ঐ প্রমাণের জায়গাটাতেই গোল। কারণ সব কর্তৃপক্ষের কাছেই "মামা" পাওয়া যায়, এবং মামাদের হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিলে তারা সার্টিফিকেট পর্যন্ত বার করে দিতে পারেন। এটাকে স্কিপ করা গেলে আমরা প্রতি বছর কয়েক লক্ষ যুবকের একটা ফোর্স পাবো, যাকে বিভিন্ন খাতে এফিশিয়েন্টলি ব্যবহার করা যাবে।
স্বেচ্ছাসেবকরা বরাবরই বিভিন্ন দুর্যোগে এগিয়ে আসেন, তবে নিয়মিত একটি সেবা ব্যবস্থার বিকল্প নেই।
হাঁটুপানির জলদস্যু
ভালো আইডিয়া
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
ওয়্যরফ্লিখট নয়, ডীন্সট? কি জানি!
আমেরিকাতে মুহাম্মদ আলী (ক্লে) সেনাসেবা এড়াতে নিজেকে বিবেকবান আপত্তিকারী মুসলিম হয়েছিলেন, তাতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল, চ্যাম্পিয়নের খেতাব হারিয়েছিলেন। আরো অনেক আগে পদার্থবিজ্ঞানী ফাইন্ম্যান সাইকোলজিক্যাল পরীক্ষার সময় 'আমি নিজের সাথে কথা বলি, গায়েবী আওয়াজ শুনি', এই সব বলে নিজেকে পাগল প্রমাণ করে রক্ষা পেয়েছিলেন। পরে অবশ্য তিনি ম্যানহাটান প্রকল্পে পারমাণবিক বোমা বানিয়ে আরো এগিয়ে গিয়েছিলেন।
আমদের দেশে একসময় নিয়ম ছিল এস, এস, সি পাশ করতে হলে একজন লোককে শিক্ষিত করতে হবে। দেখা গেল একই সাক্ষর মানুষ বার বার বিভিন্ন পরীক্ষার্থীর সাহায্যে নতুন করে সাক্ষর হচ্ছে।
সরকারী চাকরীতে ডাক্তাররা যখন ঢোকেন, কয়েক বছর গ্রামে থাকার নিয়ম আছে। শুধু নাটকেই দেখা যায়।
ভেয়ারফ্লিখট হচ্ছে বাধ্যবাধকতা, যেটা ভেয়ারডিন্সট বা ৎসিভিলডিন্সট দিয়ে পূরণ করা যায়। ৎসিভিলডিন্সট কাগজে কলমে একজন কনশেনশাস অবজেক্টর হিসেবেই বেছে নেয়া হয়।
হাঁটুপানির জলদস্যু
আরে, সাবাশ!
এতে আমার চলবে। 'আটকে ফেলার' মত কঠোরও না, বের হওয়ার রাস্তা আছে, 'ফিল গুড ফ্যাক্টর'-ও আছে। রিটার্নটা এতে সামগ্রিকভাবে/গড়ে দেশ (মানে ট্যাক্সেপেয়াররা) পাবে, ব্যক্তি ব্যাসিসে না হলেও।
দুনিয়ার বহু জায়গায়ই তো এটা করা হয়, আমাগো দেশ এটা করে না কেন?!?!?
অনেক, অনেক ধন্যবাদ হিমু ভাই এই লিংকের জন্য। এটা নিয়ে নীতিনির্ধারকগো ধাক্কানো দরকার। তবে মন্তব্যে যেইসব ইস্যু উঠে এসেছে সেগুলোর সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে তবেই।
এইসব 'সাধারণ বুদ্ধি' কেন আমাদের আমলারা করে না? ধুর!
আমাদের আমলারা 'অসাধারণ' যে এইজন্যে!
তয় আম্রা ম্যাঙ্গো পাব্লিকরা 'চলে ভাই কদ্দূর সময় লায়াগে আসি' কয়া মেলা জনগণের টাইম খায়া ফেলি। এখন সেইটা জনসেবা না সেনাসেবা কি হৈব কেজানে।
শাহ্জালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে KIN নামে একটি সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বৈকালিক ক্লাসের ব্যবস্থা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বা দুইজন ছাত্র প্রতিদিন বিকেলে এই শিশুদের জন্য সময় দেয় যেন যারা স্কুলে বা মসজিদে পড়ে তারা যেন তাদের পড়াটুকু ঠিক করে প্রস্তুত করতে পারে। আর যেসব শিশু তখনও স্কুলে যায় না তাদের প্রি-স্কুলিং এর কাজটাও এখানে হয়। আমার অনেক সময় মনে হয় যদি বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটা স্টুডেন্ট গ্রুপকে এটার জন্য অনুপ্রাণিত করা যেত তাহলে কিছু সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে কার্যকরভাবে সাহায্য করার একটা ক্ষেত্র প্রস্তুত হত । এই ব্যাপারটা নিয়ে একটা খুবই ছেলেমানুষী গল্প লিখেছিলাম এইখানে--
http://www.somewhereinblog.net/blog/Razeebblog/28737280
তবে হিমু ভাই যে আইডিয়ার কথা বললেন সেটা আরও অনেক কংক্রিট । আসলেই এইটা চালু করা দরকার। কিছু শিক্ষার্থী হয়ত কাজ না করে সার্টিফিকেট জোগাড় করার ধান্ধা করতে পারে, তেমনি অনেকেই খুশিমনে এই সুযোগটি গ্রহণ করবে।
নতুন যে শিক্ষানীতি তৈরি হচ্ছে সেটার সাথে যাঁরা জড়িত কোনোভাবে বিষয়টি তাঁদের গোচরে আনা গেলে ভালো হত।
রাজিব মোস্তাফিজ
নতুন মন্তব্য করুন