লিখেছেন হিমু (তারিখ: শনি, ০৯/০৬/২০০৭ - ১২:৫৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:
জেবতিক আরিফ মূলত একটা পোস্টে এই ভাবনা উসকে দিয়েছেন। সচলায়তনের এই একটা ব্যাপার আশা করি আমাদের আরো উপকারে আসবে। সামহোয়্যারে উঠতে বসতে ছাগু তাড়ানোর জন্য সময় দিতে হতো, রিসোর্স ব্যয় হতো, সচলায়তনে কিছু আলাদা ভাবনার সময় ও সুযোগ ব্লগারুরা নিজেরাই করে নিতে পারবেন।
বাংলা উপন্যাস এখন আসলে কোন পর্যায়ে আছে? উপন্যাসের উপজীব্য কী কী? উপন্যাসের পাঠক কারা? উপন্যাস রচনায় রচয়িতা মূলত কী সংকটের মুখোমুখি হন? আমাদের চিন্তার ধারাটি কতটুকু ভাষান্তরিত হচ্ছে? একজন ইংরেজি ভাষার পাঠক (উভয়লিঙ্গার্থে) বাংলা সাহিত্য নিয়ে কতটুকু জ্ঞাত? জানি না, জানি কি, জানি কী?
লেখকরা পাঠকের রুচি নির্মাণ করতে সক্ষম, কিন্তু পাঠকের সামর্থ্যও অনেক সময় লেখকের রুচি পাল্টে দেয়। কাগজের দামের অর্থনীতি আর কূটনীতিও চলমান সাহিত্যের মান পাল্টে দিতে পারে বলেই মনে হয়। বইয়ের দাম যদি কোন অজানা অলিখিত Threshold Price বা সংকট মূল্যের ওপরে হয়, তাহলে সে বই অনেকাংশে অপাঠ্য অধরা রয়ে যায় মূল পাঠক সমাজের কাছে।
নোট ১: পরিসংখ্যানপ্রেমী গবেষক কিছু কাঁচা উপাত্ত নিয়ে বসতে পারেন আমার এ বুলির সত্যতা যাচাইয়ে। বইয়ের দামের বিপরীতে তার কাটতি সংখ্যা রেখে গ্রাফ আঁকুন। নিজে দেখুন, আমাদেরও দেখান।
বইয়ের দাম তখনই বেশি হচ্ছে, যখন উপন্যাসের ব্যাপ্তি অনেক বেশি, যেখানে ঔপন্যাসিক অনেক কিছু বলে ফেলেছেন। বিস্তৃত একটি উপন্যাস পাঠকের কাছে পৌঁছাতে পারছে না তার মূল্যের কারণে। ঔপন্যাসিক যদি লিখে খেতে চান, তাহলে এমন উপন্যাস লেখায় তিনি কখনো হাত দেবেন না, যা লিখলে তাঁকে অর্ধাহারে শুকিয়ে যেতে হয়। তিনি যদি অর্থনীতি ১০১ কোর্সটি পড়ে আসেন, তাহলে আরো দ্রুত হাত দেবেন একটি ক্ষীণকটি উপন্যাস রচনায়, যা লিখতে সময় কম লাগে, যা পাঠকের মাসিক গ্রন্থবাজেটের নাগালে, এবং সর্বোপরি প্রকাশকের ভুরুর কুঞ্চনবিরোধী।
কিছু উত্থানপতনের ইতিহাস ছাড়া মোটামুটি উপন্যাস লেখার ব্যাপারটা এমনই। পাঠককে ভাবাতে হলে ঐ চার-পাঁচ-ছয় ফর্মার মধ্যে ভাবাতে হবে।
আয়তনে শীর্ণা হতে বাধ্য হয়ে উপন্যাস তার বিষয় বেছে নেয় এমন কিছু থেকে, যার শুরু নেই, শেষ নেই, এক অতল সমুদ্রের মতো, যা থেকে কয়েক পেয়ালা আহরণ করলেও শেষ হয় না। মধ্যবিত্তের জীবন এমন এক সমুদ্রের মতো। যুবতী নারীর প্রেমও এমন আরেক সমুদ্র। দুয়ের কম্বিনেশন এক মহাসমুদ্র। সেঁচে যেতে পারলেই হলো।
মাঝেমধ্যে নতুন একটা ধারা যে বেরিয়ে আসে না, তা নয়, কিন্তু মূলধারা সেই সাগর-মহাসাগরেই গিয়ে পতিত হয় পদ্মামেঘনাযমুনার মতো। এ থেকে নিস্তার পেতে হলে ঔপন্যাসিককে চিন্তার স্বাধীনতা, অর্থের স্বাধীনতা, প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে। বাজার থেকে বেরিয়ে বাজার দখল করতে হবে তাকে।
সম্প্রতি তাহমিমা আনামের উপন্যাস রচনা নিয়ে একটা আলাপ হচ্ছিলো সচলায়তনে। তাহমিমা মুক্তিযুদ্ধে মধ্যবিত্ত কিছু মানুষের কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি উপন্যাস রচনা করেছেন। তবে তাকে নাহক ফাঁপিয়ে বাজারে কাটানো হচ্ছে, এমন অভিযোগ আমরা পেয়েছি। কিন্তু আমার ধারণা তার পেছনে শুধু তার সম্পাদক পিতাই নেই, আছে ঔপনিবেশিক ইংরেজির মাজা, আর বইয়ের মাজা। এই দুইয়ের মাজার জোরে তিনি মিডিয়াতে জোর কাটতি পেয়েছেন।
ইংরেজিতে আমরা এখনো সেভাবে লেখা শুরু করিনি, কারণ সেই একই, বাজার। ভারতে ইংরেজিতে না লিখলেই বরং পাঠক কমে যাবে, বই মার খাবে। বাংলাদেশে উল্টো হবে। ইংরেজিতে কিছু লিখলে লিখতে হবে ইংরেজি লোকজনের কথা মাথায় রেখে। তারা কী খায়, তারা কী চায়। হুমায়ূন আহমেদ যদি আজ তার একখানা উপন্যাস ইংরেজিতে লেখে, সেটা কি লোকে খাবে? লোকে খাওয়ার ব্যাপারটাই আসল, যখন আপনি খাওয়ার জন্য লিখবেন। আপনাকে খেতে হবে, প্রকাশককেও খেতে হবে।
তাহমিমা ছাইপাঁশ যা-ই লিখুন, আমি খুশি, কারণ কেউ একজন শুরু করেছে। বিশ্বসাহিত্যবোদ্ধারা কষ্ট করে উঁকি দিয়ে দেখে না বিশ্বের চতুর্থ ভাষাভাষী মানুষগুলির সাহিত্যকে। সেই কবে একবার রমাপদ চৌধুরীর অভিমন্যুকে নোবেল কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছিলো, তারপর সব শেষ। তাদের উপেক্ষাদর্পী কপালে তাহলে একটা শক্ত ইংরেজি জুতোই ছুঁড়ে মারতে হবে, কী আর করা?
তাহমিমা একটা ঢোলে বাড়ি দিলো শুধু। এখন নাচুনে বুড়িদের মাঠে নামার সময়। একটা কিছু করে দেখাতে হবে।
মন্তব্য
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
অজ্ঞাতবাস
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
লাইন ছাড়া চলেনা রেলগাড়ি
অজ্ঞাতবাস
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
ওয়াও!!
জোশ আলোচনা!
এরপর কি হলো?!
_________________________________________
ৎ
_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!
নতুন মন্তব্য করুন