পরীক্ষার খাতায় "তোমার জীবনের লক্ষ্য" গোছের রচনার ফরমায়েশে কখনোই সত্য কথাটা উগড়ে দিয়ে আসতে পারিনি। দু'য়েকবার কিছু অসংলগ্ন মুখস্থ মিথ্যা কথা লিখতে গিয়ে প্রবল পীড়া বোধ করে পরবর্তীতে তিনটি বা পাঁচটি বিকল্প থেকে অন্য কিছু বেছে নিয়ে আবোলতাবোল লিখেছি। সময়ের মূল্য, শ্রমের মর্যাদা, বর্ষণমুখর দিনের স্মৃতি, বালছাল।
ক্লাস সেভেনের ষান্মাসিকে যদি লিখতাম, হে পূজ্যপাদ পরীক্ষক মহোদয়, আমি বড় হয়ে একজন জাহাজডুবি নাবিক হতে চাই, নির্জন পলিনেশীয় দ্বীপে বিশালবক্ষা কোন তরুণীর সাথে নারকেল পেড়ে পেড়ে তাতে সংলগ্ন ল্যাগুন থেকে পাকড়াও করা গলদা চিংড়ি ভরে আগুনে ঝলসিয়ে খেতে চাই রুটিফল দিয়ে, আপনি আমার এই লক্ষ্যপাপ ক্ষমা করুন, তিনি কি আমায় ছেড়ে দিতেন? পুটকির চামড়া কি খানিকটা হলেও বেতে তুলে আনতেন না? অথচ সেই বাসনাটি বড় সৎ ছিলো, এক বিন্দু মিথ্যা কথা ছিলো না তাতে। আরো বড় ক্লাসে যখন উঠেছি, ক্ষণিকের জন্যে হলেও ভেবেছি, আমার জীবনের লক্ষ্য বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের দুর্ধর্ষ স্পাই মাসুদ রানার মতো একটা কিছু হবার, যার বয়েস বাড়ে না, যে শুধু নানা ফ্যাসাদের কাজে ঘুরে বেড়ায় আর মাগীবাজি করে, এবং অবধারিতভাবে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কেটেছড়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত মরে না কিছুতেই। ভেবেছি, লিখি, বড় হয়ে আমি কিছু হতে চাই না, আমি সারাজীবন শুয়ে শুয়ে গল্পের বই পড়তে চাই, মাঝে মাঝে উঠে শুধু একটু উদ্দাম প্রেম করতে চাই মাস তিনচারেকের জন্যে। ভেবেছি লিখবো, বড় হয়ে আর যাই হই স্যার, আপনার মতো হবো না, বাংলা দ্বিতীয় পত্রের খাতা দেখার কোন ইচ্ছা আমার নাই স্যার, আমাকে ক্ষমা করবেন। ভেবেছি লিখি, বড় হয়ে কী হবো আমি এখনো জানি না, আগে বড় হই তারপর দেখা যাবে।
তবে আমার জীবনের আপাতঃস্থিরকৃত লক্ষ্য আমি ভেদ করতে পেরেছিলাম টেনেটুনে। আমাদের ভাইবোনরা একেকজন একেক পেশায় গেলেও প্রকৌশলবিদ্যার দিকে কেউ এগোননি, সেই শূন্যস্থান পূরণের জন্যে একটা অব্যক্ত অস্ফূট ইঙ্গিত মাঝে মাঝে অনুভব করতে পারতাম। আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে যথাক্রমে এক নানা ও এক মামা কৃতী তড়িৎপ্রকৌশলী ছিলেন, তাঁদের উদাহরণগুলি যেন একটু বেশি করে শুনতাম। এক সময় দেখলাম, আমি হদ্দমুদ্দ হয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎকৌশল বিভাগের সীমিত কিছু আসনের একটিতে গদ্দিনশীন হবার জন্যে। এবং পরীক্ষার ফল বার হবার পর দেখা গেলো সেটি পেয়েছিও। সেদিন খুব খুশি হয়েছিলাম উল্লুকের মতো।
কিন্তু এখন মাঝে মাঝে মনে হয়, আমি যা হয়েছি তা হতে চাইনি। আমি হতে চেয়েছি একজন প্রকৃত অলস পড়ুয়া, যার ঘরে বোঝাই বই থাকবে, যে বিছানায় শুয়ে মুড়িমাখা খেতে খেতে শুধু বই পড়বে, আর অবশ্যই অবশ্যই মাঝে মাঝে উঠে গিয়ে মাগীবাজি করে বেড়াবে। এ যেন সেই কৈশোরের স্বপ্নগুলোর মিশেল, জাহাজডুবি নাবিক, মাসুদ রানা আর পেশাদার পাঠকের এক এইজিওট্রোপ, যাকে বকযন্ত্রে ছেঁকে আলাদা করা যায় না। এক সবকরাযায় গোছের খাটে শুয়ে থাকতে চেয়েছি, যে খাটে বই মুড়ি মেয়েছেলে শুধু আসতেই থাকবে একের পর এক।
কিন্তু এই মনে হওয়াটাও সাময়িক ঢংধনু বলে মনে হয়। একটা কিছু করে জীবন পার করে দিতে গেলে এই বালের তড়িৎপ্রকৌশলী না হয়ে কী হতাম আসলে? ফ্রিল্যান্স ফোটোগ্রাফার? রেস্তোরাঁ ক্রিটিক? ফুলচাষী? আবহাওয়া অফিসের অ্যানালিস্ট? রেডিওর ভুয়াচিঠিলেখক?
বাচ্চাদের স্কুলের এক খামাখা ক্লাসের মাস্টার হতে ইচ্ছা করে মাঝে মাঝে। মনে হয় একগাদা বাচ্চাকে সামনে বসিয়ে তাদের শেখাই, কিভাবে সাবানের ফেনা গুলে বুদ্বুদ বানাতে হয়, কিভাবে রঙিন কাগজ কেটে কেটে ঘর সাজানোর নকশা বানানো যায়, কিভাবে শুধুশুধুই একদিন পানিতে রং গুলে বেলুনে ভরে দুই দলে ভাগ হয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা যায়, কিভাবে আতশ কাঁচ দিয়ে ছোট্ট বেগুনী রঙের ঘাসফুল দেখতে হয়, কিভাবে হঠাৎ ক্লাসের মাঝখানে একদিনে হারেরেরেরেরেরে বলে একছুট দিয়ে মাঠের মাঝখানে গোলহয়ে কিছুক্ষণ ছুটোছুটি করে টের পাওয়া যায়, এই জীবনটা আসলে আরোপিত মূল্যের ওপরই চলছে, যার যা খুশি দাম ধরে কাটিয়ে দেয়া যায়, জীবনের লক্ষ্য নিয়ে রচনা লেখা নিতান্তই সেইসব ফেল্টুশ বোকাসোকা বোকাচোদাদের কাজ, যারা বোকাদেরও ঠিকমত চুদতে পারে না।
মন্তব্য
যা হতে চাই, তা হতে পারি না। আশে পাশের মানুষগুলো জোর করে আমাদের অন্যকিছু বানিয়ে ছাড়ে।
বাবা মার ইচ্ছায় বিদেশে এলাম, ভেবেছিলাম ব্যাচেলর্স করলেই মুক্তি, কিন্তু এখন মাস্টার্স করতে হচ্ছে, ভেবেছিলাম এরপর অন্তত মুক্তি মিলবে, কিন্তু না, এখনও প্রতি সপ্তায় বিভিন্ন উপদেশমূলক (আসলে আদেশমূলক) বাণী শুনে যাচ্ছি।
নিজের জন্য বাঁচব কবে, জানি না।
---------------------------------------------------------------------------
No one can save me
The damage is done
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
যাহা চাই তা ভুল করে চাই
যাহা পাই তা চাই না ।
-------------------------------
--------------------------------------------------------
মনে হয় অন্য কারো জীবনের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নই জীবনের উদ্দেশ্য।
কী যে হতে চেয়েছিলাম!
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
ঘটনা কি ড্যুড। মন খারাপ কেন?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আমি প্রাইমারী স্কুলের মাস্টার হতে চেয়েছিলাম, অথবা মফস্বলের ফার্মাসি দোকানের মালিক; যেখানে সন্ধ্যায় গরুর দুধের সর ওঠা চা'য়ে চুমুক দিয়ে বিবিসি বাংলার প্রবাহ/পরিক্রমা শোনা যেতো...। দেরী করে শীতের রাতে ক্রীম কালারের শাল গায়ে ঘরে ফেরার - স্বপ্ন ছিল।
...তারপর ক্রমশঃ লোভী হলে, ম্যাটাডোরের ষাঁড়ের মতো লাল কাপড়ের দিকে তেড়ে গিয়ে দেখি কিছু নেই, দৌড় আর দৌড়। অবশেষে দাঁড়িয়ে আছি স্বপ্নের নো-ম্যানস-ল্যান্ডে। এখন কিছু হতে চাই না। পারপাস টু বি পারপাসলেসের মন্ত্রটা কবে ধরেছিল মনে নেই। কী হবে এত শত ভেবে? যা হবার তা-ই হবে...।
হ , আমরা সবাই ভুল মানুষই হয়েছি ।
হিমু এমন একটা দুর্বল যায়গায় খোচা দিলেন যে রীতিমত ক্ষেইপা গেলাম। প্রথমে ভাবলাম লেখি মিয়া আগে কালা সাবান দিয়া মুখ ধইয়া তার পরে ল্যাখতে বসেন। আপনার কথাগুলো এমনই ধারালো যে আলাদা একটা পোস্ট দিতেছি...পারলে পইড়া দ্যাখেন।
এক কবি এরকম বলেছেন:
পৃথিবীটা দুইদিনের
একদিন গেল আকাঙ্খায়,
একদিন গেল হতাশায়।
এই লেখাটা পড়ে কেমন লাগলো সে কথা বলবো না, শুধু জিজ্ঞাসা করবো, এমন সব প্রশ্ন করতে কে বলছে আপনারে? আধা মাতাল হয়ে ডাউনটাউন থেকে ফিরে এই সব অন্তর্ভেদী প্রশ্ন শুনতে হলে সচলে লগায় কোন শালা!
আমার শুধু অলস দিন কাটাতে মন চায়। আপনার সাথে মিলে গেল এই জায়গাটায়। সারাদিন গল্পের বই পড়ে, সিনেমা দেখে, বন্ধুদের সাথে দেদারসে আড্ডা মেরে দিন কাটিয়ে দিতে মন চায়।
কিন্তু এরকম নবাবের জীবন চালাতে হলে অনেক টাকা দরকার, যার জন্য আমাকে চাকরি করতে হবে আর চাকরি করলেই তো এই জীবন কাটাতে পারবো না।
সচলের কোন দয়াদ্র বিশাল বড়লোক সদস্য আছেন নাকি, আমার এই শখ পূরণের জন্য মাসে মাসে হাজার পঞ্চাশেক টাকা করে এমনি এমনি বিনা শর্তে আমাকে দিবেন ?
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
আমি কিছুই হতে চাই না... তাই কিছু একটা হতেই হবে এই তাড়না বড় পেইন খিলায় ...
আমি বড় হয়ে আপনার মতন লিখতে চাই...
ছোটবেলায় অবশ্য শখ ছিলো বাংলা সিনেমার ভিলেন হব.. নায়িকার আঁচল টানতে টানতে বলবো "আজ তোকে কে বাঁচাবে সুন্দরী?"
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
জুলফিকার কবিরাজ যে কবিতার লাইনকটি লিখছেন তা দেখে একটি শের মনে পড়ে গেল:
উমরে জিগর মাঙ কর লায়ে থে চারদিন
দো কাট গ্যায়া গুযারছে, দো ইন্তেযারছে।।
কার শের মনে নেই। আর কথা ভুল হলেও আমার দোষ না। ঊর্দূ জানিনা।
We spend most of our energy in becoming, rather than being. বাংলায় এই কথাটা কীভাবে জুত করে বলা যায় ভেবে পেলাম না বলে ইংরেজিতেই লিখলাম।
.......................................................................................
Simply joking around...
.......................................................................................
Simply joking around...
মানুষ যা কিছু চায় তাহা ভুল করেই চায়;
যাহা পায় তাহাই সত্য....
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
আমি হতে চেয়েছিলাম ভবঘুরে, কিন্তু সংসারের চিপায় পইড়া হইছি কেরানি
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
ল যাইগা হালায়...
উড়াধুরা...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমার জীবনের লক্ষ্য একটা চাকরি করা
যেখানে কাজ নাই খালি বেতন আছে
এইটা আমারটার সাথে মিলছে!
___________________________
বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ
লীলেনদা প্লিজ এরম একটা চাকরী জুটায়া দেন। আমি সিরিয়াস, আপ্নেরে ফোন দিতে পারি এর মধ্যে।
------------------------------
'..দ্রিমু য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
আমি ছোটবেলায় একটা বার্গারের দোকানের মালিক হতে চেয়েছিলাম।...হে হে।...ফ্রি ফ্রি শুধু বার্গার আর কোক খাবার জন্য
আমার আগে অনেক কিছু হতে ইচ্ছা করতো।
এখন আর কিছু হতে ইচ্ছা করে না। কেন জানি স্বপ্নগুলো সব মরে গেছে। খুব ক্লান্ত মনে হয় নিজেকে।
দেশে থাকতে যে কোম্পানীতে কামলা দিতাম তার কান্ট্রী ম্যানেজার ছিলো কলকাতার এক দাদা- দিলখোলা ভালো মানুষ । বয়স আমার থেকে অন্ততঃ বছর পনেরো বেশী । আমি আসার বছর দুয়েক আগেই সে ইংল্যান্ডে এসেছিল ।
গতকাল তার ফেসবুক স্ট্যাটাস এ দেখি- এই মন্দায় প্রোফাইল আপডেট করতে আবারো বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছে । আমি বললাম- 'মর শালা বুড়ো'
পরে ভাবলাম গালিটা কি নিজেরেই দিলাম? প্রস্তুতি নিতে নিতেই তো ফুট্টুস!
চারদিকে তাকিয়ে কাউরে তো কিছু হইতে দেখিনা তেমন
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আমার মনে হয় কলিজাতে অনেক সাহস! এই মন্দার যুগে আমি চাকুরী বাজারে ফাইট দিতে যাচ্ছি দুই মাসের ভিতর।
ভাগ্যলক্ষ্মী বরমাল্য দেন দ্রোহী'র মতো সাহসীদের
অভিনন্দন । এইবার আপনার 'কিছু একটা' না হয়ে উঠার আর কোন উপায় নাই
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
যে জীবন যাপন করছি সে জীবনে ক্লান্ত হয়ে গেছি। সবকিছু নতুন করে শুরু করতে চাই। জানি না আদৌ হবে কিনা!
- ভাইরে, সাহসটাই বড় কথা। এটা না থাকলে ঐদিকে চিন্তা না করাই ভালো।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আমার সাহস আরো বেশি। চাকরি ছাইড়া দিতেছি।
.......................................................................................
Simply joking around...
.......................................................................................
Simply joking around...
- বাচ্চাদের স্কুলের মাস্টার হতে ইচ্ছে করেনা আমার, তাহলে তাদেরকে গৎবাধা জিনিষ শেখাতে হবে। আমার ইচ্ছে করে বটতলায় কিছু দুরন্ত পোলাপান নিয়ে বসে পড়ি। তারপর দুনিয়ার যতো বস্তাপঁচা জিনিষ আছে, সব তাদের জানাই। তারা জানুক, বড় হয়ে যেনো কখনো তোর মতো এমন একটা লেখার কথা কষ্মিনকালেও তাদের ভাবতে নাহয়!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
সূর্য পূর্বদিকে ওঠে, এই কথাটার মতোই বিশ্বাস করতাম, আমি বড় হয়ে ভীষণ একজন বিখ্যাত লোক হব। যার মেধা আর লেখার ক্ষমতা নিয়ে বিস্ময়ে ফেটে পড়বে সারা জাতি। অনেকটা রবীন্দ্রনাথের মতোই। এ নিয়ে এক চুলও সন্দেহ ছিল না আমার।
আমার আশেপাশের কাউকে নিয়ে কখনো হিংসা হত না আমার। আমি ঈর্ষা করতাম রবীন্দ্রনাথ, নজরুলকে। কেউ তাদের গান গাইলে আমার মুখ কালো হতে যেত, আমি ভাবতাম সেদিনের কথা, যেদিন সবাই মিলে আমার গান গাইছে। বুঝুন ব্যাপার!
আমার যে অনেক টাকাপয়সা হবে, সে বিষয়েও কোনো সন্দেহ ছিল না। প্ল্যান ছিল বাবা-মার জন্য বিশাল একটা সাদা রঙের বাড়ি বানাবো, যেখানে চাকরে বাকরে ভর্তি, মাকে আর কখনোই রান্না করতে হবে না, মা শুধু মুখ দিয়ে বলবেন, আর সেই রান্না তৈরি হয়ে টেবিলে সাজানো থাকবে। বাড়ির সামনের বিশাল লনে বসে বাবা সাত-আট রকমের পত্রিকা পড়বেন সারাদিন। একটা সাদা রঙের গাড়ি সবসময় পার্ক করা থামবে বাসার সামনে। শুধু বাবা-মার জন্যই। নানারকম আর্থিক কষ্টে দিন পার করা আমার মধ্যবিত্ত বাবা-মা শেষ বয়সে মুগ্ধ হয়ে যাবেন এমন চমৎকার একটা ছেলের বাবা-মা হয়েছেন বলে।
ক্রিয়েটিভিটিতে আমি যেমন হব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, তেমনি কাজে হব ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। আমার কামানো রাশি রাশি টাকা ব্যয় হবে মানুষের কাজে, কিন্তু আমার কোনো বিলাসব্যসন থাকবে না। স্রেফ দুটো পাঞ্জাবি, দুটো জিন্সের প্যান্ট, আর এক জোড়া চটিজুতা... সেই চটি ছিঁড়ে গেলে আবার সেলাই করা হবে।
বিদেশের মাটিতে বিখ্যাত কোনো এক সেমিনারে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সেখানে আমার পোশাক দেখে সবাই অবাক।
একজন বিদেশি প্রবীণ অর্থনীতিবিদ তো বলেই বসল, হোয়াট দ্যা হেল! এই লোক কি সেমিনারের ড্রেস কোড সম্পর্কে জানে না?
আমি উদ্ধত গলায় বললাম, সারা পৃথিবীর দরিদ্র মানুষদের নিয়ে আমরা আলাপ করতে এসেছি, যাদের পেটে খাদ্য নেই, গায়ে কাপড় নেই... আমি এই পোশাকে যে পরিমাণ কাপড় বাঁচিয়েছি, তাতে দুজন মানুষের বস্ত্রসংস্থান হয়ে যাবে... আর তুমি? অকারণে তোমার গায়ে যে পরিমাণ কাপড় খরচ হয়েছে, তাতে আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি তিনটি শিশু শীতে থরথর করে কাঁপছে...!
বলে গটগটিয়ে আমি হেঁটে চলে গেলাম। উপস্থিত সবাই চেয়ার থেকে দাঁড়িয়ে উঠে হাততালি দিতে শুরু করল!
ইত্যাদি ইত্যাদি।
মনে হত আমার একার সাফল্যে একার অর্জনের আসলে কিছুই আসে যায় না। যেটা দেখতে আমি ভালোবাসি, তা হচ্ছে মানুষের মুখের হাসি। আমার অর্জন আমার খরচ হবে মানুষের সুখের জন্য, ঠিক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মতোই।
আমার ভাইবোন, আত্মীয়স্বজন, কাছের মানুষ, দূরের আত্মীয়, সবাইকে নিয়েই আমার ইনডিভিজু্্যয়াল প্্যলান ছিল। প্রত্যেককেই তার জীবনের সবচে শ্রেষ্ঠ আকাঙ্ক্ষিত জিনিসটি হাতের মুঠোয় এনে দিয়ে তার মুখের হাসিটি দেখার প্ল্যান।
সেসব কিছুই ঘটে নি। আমার বাবা-মা গত হয়েছেন বহু আগেই। আর আমাকে যারা কাছে থেকে চেনে, তারা নিশ্চয় হাসছে। কারণ তারা জানে যে, অল্পকয়টা টাকার বিনিময়ে কর্পোরেট দুনিয়ায় বিক্রি হয়ে আমি সৃজনশীলতার বড়াই করে বেড়াই। আমার আশপাশের মানুষরা আমার মাধ্যমে উপকৃত হয় নি কিছুই।
কিন্তু কী জানেন, আমি এখনো স্বপ্ন দেখি... হাস্যকর আশ্চর্য আশ্চর্য সব স্বপ্ন। এই বয়সেও। দুই বাচ্চার বাপ হচ্ছি হচ্ছি করেও।
জানি, এটা ছেলেমানুষি। এর কোনো মূল্যই নেই। কিন্তু এটা আমি বাঁচিয়ে রাখতে চাই। অন্ধকার বনে যেমন আলোকশিখাকে দুই হাত জড়ো হয়ে বাঁচিয়ে রাখে।
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
আপনে আমারে ঈর্ষা করেন?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অনেক কিছুই হতে চেয়েছিলাম। পাইলট, বইএর দোকানের সেলস ম্যান(বভাবতাম ওরা ফ্রীতে সব বই পড়ে!), বিজ্ঞানী,... আরো কতো কী!
তারপর সেই ছোটোবেলায় একদিন, টিভিতে কোনো একটা গেমস (সাফ/এশিয়ান) দেখতে গিয়ে দেখি। খেলা শেষে সব পতাকা একটূ একটু করে উপরে উঠতে থাকে। কিন্তু একসময় আমার পতাকাটা হুঠ করে থেমে যায়। তারপর অন্যরা সবাই উপরে উঠে পত পত করে উড়তে থাকে। আর চোখ রাঙিয়ে বলে, "তুমি থাকবে নীচে, ওখানে"।
সেদিন পতাকাটাকে আরেকটু উচু করে ধরতে চেয়েছিলাম।
এই স্বপ্নটা এখনো বুকে নিয়ে ঘুরি।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
কি হতে চেয়েছিলাম জানি না। শুধু একটা কবিতা খুব কড়া দাগে দাগ রেখে গেছে মনে। ভুলভাল উচ্চারণে অনেক পড়েছি। আজ দীর্ঘ বছর পরে, সেই লাইনগুলো তুলে দিই এখানে। ভুল হবে নির্ঘাত। তবু তুলে দিই। কবিতাটা নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর
অমল কান্তি আমার বন্ধু
ইসকুলে আমরা একসাথে পড়তাম।
রোজ দেরি করে ক্লাসে আসতো, পড়া পারতো না
শব্দরূপ জিজ্ঞেস করলে এমন অবাক চোখে
জানলার দিকে তাকিয়ে থাকতো... দেখে ভারি মায়া হতো আমাদের...
আমরা কেউ মাস্টার হতে চেয়েছি, কেউ ডাক্তার, কেউ উকিল,
অমল কান্তি সেসব কিছুই হতে চায় নি।
সে রোদ্দুর হতে চেয়েছিলো, ক্ষান্ত বর্ষণ কাকডাকা বিকেলের সেই
লাজুক রোদ্দুর, জাম আর জামরুলের পাতায় যা
এতটুকু হাসির মতো লেগে থাকতো।
আমরা কেউ ডাক্তার হয়েছি, কেউ মাস্টার কেউ উকিল।
অমলকান্তি রোদ্দুর হতে পারেনি।
সে এখন অন্ধকার একটা ছাপাখানায় কাজ করে,
মাঝে মাঝে আমার এখানে আসে, চা খায়, এটা ওটা বলে
তারপর বলে, উঠি তাহলে।
আরও কয়েকটা লাইন আছে, ভুলে গেছি। মনে পড়ছে না কিছুতেই। লাইনগুলো ঠিক নেই। শব্দগুলো উল্টেপাল্টে গেছে... তবু দিলাম তুলে। এমনভাবে আমার কথা আর কেউ যে বলেনি কখনো...
মন্তব্যটা এডিট করে দিলাম। কবির নামে ভুল ছিলো। তবে কাব্যটা ঠিক করিনাই। প্রায় একযুগ পরে এই কবিতাটা আজ আবার পড়ালো কনফু। এখানে কবিতাটা ভুলভালভাবে উল্লেখ করার পরে, লজ্জা দেয়নি সে। শুধু পুরুটা কবিতা ফেইসবুকে তুলে দিয়ে আমাকে লিঙক দিয়ে গেছে।
এইসব বন্ধুতা কিভাবে যে আকড়ে ধরে আমায়... ধন্যবাদ জানাই এইখানে আবার তারেকরে। আর অবশ্যই হিমুরে। কারণ সেইতো কবিতাটা মনে করতে সাহাজ্য করেছে।
আপনারা যদি শুদ্ধ কাব্যটা পড়তে চান তবে নিচের এইখানে দেখতে পারেন।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
এটা আমার প্রিয়তম কবিতার একটি, যা আমি প্রায়ই আবৃত্তি করি, যখন মনটা 'ফাইন' থাকতে চায় না !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
নজমুল আলবাব আর কনফুর সৌজন্যে ...
"বোকাচোদা" - শব্দটি অ্যাকটিভ না প্যাসিভ অর্থ বহন করে?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
আমি আবার সেই ছোট্টটি হতে চাই, যখন 'কী হতে চাই' কথাটাই অর্থহীন হয়ে যায়.....
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আমি ডাক্তার হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হয়ে গেলাম টিচার। সবুজ সতেজ মুখগুলোর মধ্যে থাকতে আমার কিন্তু ভালো লাগে। বেশ ভালো লাগে।
আমার আসলে তেমন কোনো অ্যম্বিশান নেই। যখন যা পাই, তা নিয়েই কেন যেন ভালো থাকি। কেউ কোনো ব্যাপারে খুব বেশি চাপাচাপি না করলেই হলো। )
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আমার জীবনের লক্ষ্য - লক্ষ্যহীন জীবনযাপন করা।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
এইটাও মিল্লা গেল!!
------------------------------
'..দ্রিমু য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
আমি অর্থনীতি কিংবা আইন পড়তে চেয়েছিলাম। বাবা-মা চাইতো বুয়েটে ভর্তি হই। তাদেরই ইচ্ছায় প্রকৌশলী হওয়া।
সেশন জ্যাম, ইত্যাদি এড়াতে বাইরে আসার ইচ্ছা ছিল আমার। জোর করে চলে আসার সময় বাবা-মা'র ইচ্ছার প্রতি পালটা সম্মান দেখিয়ে তড়িৎপ্রকৌশলী হওয়া।
এ-নিয়ে পড়তে তেমন একটা খারাপ লাগে না। তত্ত্বগুলো মজাই লাগে, কিন্তু মনটা কেন যেন পড়ে থাকে অন্য কোথাও।
বড় বয়সে তাই নিজের মত কিছু লক্ষ্য স্থির করে নিয়েছি। ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত সময়টুকু আমার নিজের। এরপর আমি আর ২০ বছর বাঁচবো ধরে নিয়ে ১ লাখ মানুষের জীবন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করতে চাই।
@ইশতি ভাই, মুহম্মদ জাফর ইকবালের মত?
ব্বাপ রে! সব্বাই দেখি কত ভালো কিছু হতে চায় বা চাচ্ছে !! আমি বাবা শুধু স্নিগ্ধাই হতে চাই
যা হতে চাই, তা এখনো হতে পারি নাই। অনেক ঘুরে ফিরে এক পা এক পা করে যেই লাইনে আগাচ্ছি, সেই লাইনে কাজ হবে কি না জানি না। চেষ্টা করতে করতেই হয়তো মরতে হবে একদিন।
দুটা লেখাই ভাল লাগলো।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
আমি খই-আম পন্থী। এমনকি মুড়িকাঠালও চলতে পারে।
নগদ যা পাও হাত পেতে নাও/ বাকীর খাতায় শূন্য থাক(এত কিছু লিখলো ওমর খৈয়াম, লোকে শুধু এই দুইটা লাইন বলে কেন? নাহলে শুনে শুনে আরো শিখতে পারতাম না? )
যাইহোক দোকানদারকে এইসব বলে খই আর আম নিয়ে এসে বাকী লাইনগুলো লিখবো "থাকিতে আম্র খই দিয়া খাও/দিন গেলে শেষে পস্তাবে।"
----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ভাইরে, মনের কথাগুলাই কইলেন সব
------------------------------
'..দ্রিমু য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
আমার জীবনে কোনো লক্ষ্য নাই। যেইখানে রাইত, সেইখানে কাইত। ওভারঅল মহৎ কোনো উদ্দেশ্য নাই, যদিও একটা সময় ভাবতাম মহৎ কিছুর জন্যই আমার জন্ম।
পেশায় ডাক্তার হতে চাই নাই কখনো, যদিও আমার সার্জারির হাত ভালো, কারো পায়ে কাঁটা ফুটলে নিঁপুণ দক্ষতায় সুঁচ দিয়ে তুলে আনতে পারতাম। এর বাইরে টেকা মাটি, মাটি টেকা।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আমরা যা পড়ি বা লিখি তা কি সব সময় এতটাই বানিয়ে লিখি????? আপনার লেখাটা অসাধারণ.........একেবারে আজকের দিনের ও। অনেকটা পেলে চাহিদা আরো বেড়ে যায় আমার.........ছোটবেলা থেকে আমাদের ভিতরের যে হিসেবী আমিটা ,আপনাকে আপনি বা আমাকে আমি হতে দিলনা...............কিছু তার কথা শোনার অপেক্ষায় রইলাম...
একেবারে মনের কথাগুলো বলেছেন। অসম্ভব ভালো লাগলো। শুভেচ্ছা।
বুয়েট জীবনের মাঝামাঝি সময়ের কথা। ইলেকট্রিক্যাল ডে উপলক্ষে প্রোফাইল সংগ্রহ করছিলেন আমাদের এক উদ্দমী সংগঠক। নাম, জন্মদিন, প্রিয় ব্যক্তিত্ব ইত্যাদি হাবিজাবির শেষে ছিলঃ বড় হয়ে কী হতে চাই।
আমাদের এক সরস সহপাঠী লিখেছিলেনঃ ডাক্তার হতে চাই।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
সবাই চাইত আমি ডাক্তার হই। আমি চাইতাম না। আমি জানতামও না আসলে আমি কী হতে চাই। তবে ইঙ্গিনিয়ার হবার ইচ্ছে হত। এর পরে নিজে নিজেই নিজের জন্য লিখলাম ''my aim in life'' রচনাটা। আমি হতে চাই ফটোগ্রাফার।
আমার খুব চারুকলায় পড়তে ইচ্ছে হত। এখনো চারুকলার পাশ দিয়ে গেলে দীর্ঘশ্বাস ফেলি। কবি হবার ইচ্ছেও হত মাঝে সাঝে। আবার বিজ্ঞানী হবার ইচ্ছেও ছিল। সাংবাদিক হতে চাইতাম কখনো কখনো। এয়ার হোস্টেস, সিনেমার নায়িকা, কত কিছু যে হতে চাইতাম!
কিচ্ছু না বুঝে মেডিক্যালের কোচিং করেছিলাম। চান্সও পেয়ে গেলাম। কিন্তু আমি কিছুতেই ডাক্তার হব না। রক্ত, মাংস, লাশ আমি ভয় পাই। এমনিতে চিকিৎসাবিজ্ঞানের বই পড়তে ভাল লাগে। কিন্তু ডাক্তার আমি হব না, হইনি।
এরপরে হয়ে গেলাম স্কুল শিক্ষক।বাংলা ২য় পত্রের বইতে আমার জীবনের লক্ষ্য রচনাতে পড়েছিলাম, ''আমি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট না হলেও আমি এমন এক পেশা বেছে নেব যাতে আমার ছাত্ররা হবে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট''। কথাটা সেই সময় মনে ধরেছিল। হয়ত মনের কোনের সূক্ষ্ণ ইচ্ছা থেকেই হয়ে গিয়েছি শিক্ষক। হা হা হা, না, আসলে আমার মত অলস মানুষদের শিক্ষকই হওয়া উচিত। অনেক ছুটি পাওয়া যাবে এইভেবেই এ পেশায়। তবে আজকাল কেন জানি প্রিন্সিপ্যাল হয়ে যেতে ইচ্ছা করে! লক্ষণ ভাল না।ঃ-/
কিছু যে হতে হবে বড় হয়ে- এই বোধটুকু আসতেই অনেক সময় লেগেছিল। এখনো পুরোপুরি সেই বোধ আসে নাই মনে হয় তবে ছোট বেলার একটা জিনিসই কেবল খুব মনে পড়ে- আমি যদি রাস্তার মোড়ের ওই সন পাপড়ী ওয়ালা হতে পারতাম...তাইলে কত্তগুলা করে খাইতে পারতাম রোজ...
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন