আইডিয়াটি আমার নয়। দুলাল ভাইয়ের। তাঁকে আপনার চেনেন না সবাই, তবে মিসেস দুলাল সচলে সবার কাছেই কমবেশি পরিচিতা।
দুলাল ভাই আমাদের এইন্ডহোফেন থেকে কয়কেনহোফে নিয়ে যাচ্ছিলেন গাড়ি ড্রাইভ করে। নানা বিষয় নিয়ে আলাপ হচ্ছিলো। দুলাল ভাই এমনিতে স্বল্পবাক মানুষ হলেও যথেষ্ঠ মজলিসি, তাই আড্ডা সেদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্তই চলছিলো।
শ্খিপহোল বিমানবন্দর পেরিয়ে যখন লিসে শহরে ঢুকতে যাচ্ছি আমরা, তখন পথের পাশে হলুদ সরিষা [ঠিক আমাদের সরিষা নয়, এদিকটায় যা ফলে তা হচ্ছে রাপ্স বা রেইপসিড, বাংলায় একে কী বলে আমি ঠিক জানি না, তবে এর তেলই রান্নার কাজে ব্যবহার করি। এটিও সরিষার পরিবারভুক্ত (Brassicaceae), তবে প্রজাতি আলাদা।] দেখে দুলাল ভাই আইডিয়া দিলেন, কেউ যদি সরিষার জিনে কোন গিয়ানজাম পাকিয়ে এর ফুলের রংকে হলুদের পাশাপাশি অন্য কোন উজ্জ্বল রং করে দিতে পারে, তাহলে এক সরিষা দিয়েই ক্ষেতে এক দারুণ নকশা তৈরি করা যেতে পারে। তার কাছে কয়কেনহোফের টিউলিপবাগানের সৌন্দর্যও তুশ্চু হবে।
আইডিয়াটা আমার মাথায় অনেকক্ষণ ধরে কামড়াচ্ছিলো, তাই শেয়ার করছি সবার সাথে। এরকম কিছু আদৌ অসম্ভব নয়, ক্রিসেনথিমামের শত শত বিভিন্ন রঙের কালটিভ্যার উদ্ভাবিত হয়েছে গত কয়েকশো বছরে। কিন্তু সরিষা যেহেতু বাণিজ্যিক ফসল, তাই শুধু এর রঙের কথা ভাবলেই চলবে না, ভিন্ন রঙের সরিষার বিকাশ, ফলন এসবও হিসেবে থাকতে হবে। আমি যতদূর জানি, সরিষা পতঙ্গপরাগায়িত ফসল, মৌমাছি এর পরাগায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফুলের রং পাল্টালে মৌমাছি আর আকৃষ্ট হবে কি না, সেই গুহ্যবিদ্যা আমার জ্ঞানের দৌড়ের বাইরে।
কিন্তু হলুদ সরিষার বীজের সাথে যদি লাল, কমলা, টিয়া, ম্যাজেন্টা, নীল আর বেগুনী সরিষার বীজ মিশিয়ে কোন ক্ষেতে চাষ করা যায়, তাহলে ওপর থেকে যে দারুণ মোজাইক ফুটে উঠবে, তার কথাই মশগুল হয়ে ভাবছি।
মন্তব্য
মোটামুটি সব ধরণের সমস্যা আর সম্ভাবনার কথা আপনিই বলে দিয়েছেন। জিন গোলযোগের চেষ্টায় না গিয়ে আমি শুধু রঙ আর ফুলের কথা চিন্তা করে এক পয়সা যোগ করি।
সরিষা ফুল বেশ পলকা, স্থায়ীত্ব কম। একে মাঠেই মানায়। অর্থাৎ বিস্তীর্ন সরিষাক্ষেত থাকলেই কেবল এর সৌন্দর্য ধরা পড়ে। তাই গোটা এলাকাটিকে টিউলিপক্ষেতের মত নানা জ্যামিতিক ফর্মে ভাগ করে এক এক ভাগে সরিষা (সবুজ থেকে হলুদ), তিল (সবুজ থেকে অফ হোয়াইট), লালশাক (ঘন সবজেটে লাল), পেঁয়াজ (সবুজ থেকে হালকা বেগুনী), হলুদ (সবুজ থেকে লাল-হলুদ) আলাদা আলাদা করে চাষ করলে কিন্তু এমন রঙের কম্বিনেশন পাওয়া সম্ভব। একবার শীতে জাহাঙ্গীরনগর যেতে সাভারের মাঠে এমন রঙের খেলা দেখেছিলাম।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এগুলো কি সব এক মরশুমে ফোটে?
আর একটা ব্যাপার হচ্ছে, সরিষার চেয়ে এগুলো কি কম লাভজনক? যদি কম লাভজনক হয়, তাহলে সমস্যা।
এক মন্তব্য দুই বার হয়ে যাওয়ায় এটা মুছে দিলাম।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ষষ্ঠ পান্ডব যা বলার বলে দিয়েছেন। তবে বিভিন্ন প্রকার ফসলে আপত্তি থাকলে পরীক্ষামূলকভাবে সরিষা ক্ষেতে রং ছিটিয়ে দেখা যেতে পারে [চোখের আরামের কথা বলছি, পরাগায়ণের কথা চিন্তা করিনি]।
হিমু, শ্খিপহোল না এটার নাম স্কিফোল। ডাচ উচ্চারন।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
ফুলের রং বদলানোর কাজটা আজকের মলিকুলার বায়োলজীর উন্নতির কল্যানে এখন আর খুব কঠিন সমস্যা নয। আর্থিক সংগতি থাকলে ৩-৫ বছরের মধ্যেই রং বেরঙ-এর ফুল ওয়ালা সর্ষে উৎপাদন সম্ভব।
কিন্তু আমার কাছে মনে হয় সর্ষে এবং গর্জণ (সর্ষের মত তৈল বীজ, দেখতে অনেকটা গাদাঁ ফুলের মত। কিন্তু উচ্চ্তায় সর্ষে গাছের চেয়ে একটু বড়), সাথে খেসারী-কলাই, আর মটরশুটি, এখানে চারটা রং হয়ে গেল এবং সবগুলি একই সময়ে একই পদ্ধতিতে চাষ হয়। কাজেই ইচ্ছে থাকলে রং-এর বৈচিত্র জেনেটিক পদ্ধতির ব্যবহার ছাড়াই, প্রাকৃতিক উপায়েই সম্ভব।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
সরিষা বাদে বাকিগুলির লাভ কি একর পিছু কম হবে?
নতুন মন্তব্য করুন