১.
গরীব মনটা কিছুদিন ধরে ওনাপ্যানা করছে, ক্যামকর্ডার একখানা কেনা যায় কি না। কিন্তু ক্যামকর্ডার নিয়ে জ্ঞান সামান্য আমার। অন্যের ক্যামকর্ডারও ছেনেঘেঁটে দেখার সুযোগ মেলেনি। তাই গুগল মারলাম।
কিছু পড়াশোনা করে যা বুঝলাম, ক্যামকর্ডার কিনতে গেলে অনেক কিছু দেখে কিনতে হবে। নিচের জিনিসগুলি নাকি থাকলে ভালো।
- ম্যানুয়াল ফোকাস। অটোফোকাস দিয়ে দুনিয়ার অনেক কিছুই মনমতো তোলা যাবে না। আমি যেমন স্টিল ছবিও ম্যানুয়াল ফোকাসেই তুলি।
- ম্যানুয়াল আইরিস। এক্সপোজার ঠিক করার জন্যে এটা দরকার।
- হোয়াইট ব্যালান্স। যখন আলোর একাধিক কিসিমের উৎস থাকে, তখন হোয়াইট ব্যালান্স ছাড়া ম্যানেজ করা মুশকিল।
- থ্রি সিসিডি। এক সিসিডির পরিবর্তে তিন চিপের ক্যামকর্ডারগুলিতে কালার স্যাচুরেশন ভালো আসে।
- হেডফোন জ্যাক। এটা না থাকলে কী শব্দ রেকর্ড করা হচ্ছে, তা মনিটর করা মুশকিল।
- সাউন্ড কন্ট্রোল। ক্যামেরা যদি নিজেই শব্দ নিয়ন্ত্রণের কাজটা করে, তাহলে মনমতো শব্দ পাওয়া যাবে না।
- অডিও ইনপুট। একটা এক্সটার্নাল মাইক্রোফোন লাগানোর ব্যবস্থা থাকলে ভালো কোয়ালিটির শব্দ যোগ করা যাবে।
- ফিল্টার রিং। লেন্সের সাথে ফিল্টার যোগ করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। আমি আমার স্টিল ক্যামেরার লেন্সগুলিতে একটা করে আলট্রাভায়োলেট ফিল্টার লাগিয়ে রাখি লেন্সের নিরাপত্তার জন্যে, ক্যামকর্ডারের ক্ষেত্রেও একই নিরাপত্তা দরকার। এছাড়া পোলারাইজিং ফিল্টার বা স্টার ফিল্টারও যোগ করার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে।
- লেন্স অ্যাডাপটার। খুব উঁচুদরের জিনিস ছাড়া ক্যামকর্ডারে সংযোজ্য লেন্স মেলে না, তবে মাঝারিদরের যন্ত্রে লেন্সের সাথে অ্যাডাপটার লাগানোর ব্যবস্থা মাঝেসাঝে থাকে। তবে আমার মনে হয় না এ জিনিস আমার প্রয়োজন হবে।
- ট্রাইপডের স্ক্রু ঢোকানোর জন্যে একটি রন্ধ্র। আমার হাত মোটামুটি স্টেডি, কিন্তু মাঝপথে কোন কিছু ম্যানুয়ালি পাল্টাতে হলে ক্যামেরা কাঁপুক, তা চাইবো না।
২.
এ তো গেলো ক্যামেরার বাইরের দিক। এর নাড়িভুঁড়ি নিয়েও বিয়াপক কথাবার্তা আছে। ক্যামকর্ডার ছবি রেকর্ড করবে কীসে?
দেখলাম, সুযোগ আছে তিন ধরনের। এদের সুবিধা-অসুবিধাও আছে নানারকমের। অসুবিধাগুলিকে লাল কালি দিয়ে দাগিয়ে রাখলাম।
- মিনি-ডিভি। এই ভুঁড়ির ক্যামকর্ডারগুলি সবচেয়ে প্রচলিত, বেছে নেয়ার সুযোগ সবচেয়ে বেশি। এক একটা মিনি-ডিভি ক্যাসেটের দাম দুই ইউরোর মতো পড়বে দেখলাম। এক থেকে দেড় ঘন্টা রেকর্ড করা যায় এক একটা ক্যাসেটে। ক্যামকর্ডার থেকেই টিভির সাথে যোগ করে ফুটেজ দেখা যায়, তবে এক এক করে দেখতে হয়, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় গেলেই ফরওয়ার্ড বা রিওয়াইন্ড করার ভ্যাজাল। আর ক্যামকর্ডার থেকে সরাসরি দেখতে গেলে যন্ত্রটার ওপর চাপ পড়ে, তাই এই কাজ ঘন ঘন করা ঠিক নয়। বেশির ভাগ এডিটিং সিস্টেমই মিনি-ডিভিতে শুট করা ফুটেজ এডিট করার জন্যে তৈরি, তবে এর সবচেয়ে বড় ভেজাল হচ্ছে, পিসিতে ফুটেজ ইমপোর্ট করার ব্যাপারটা ঘটে রিয়্যাল টাইমে, মানে এক ঘন্টার ফুটেজ ইমপোর্ট করতে এক ঘন্টা সময় লাগবে। মিনি-ডিভি সংরক্ষণ করা যায় দীর্ঘদিন, তবে মোটামুটি নাতিশীতোষ্ণ, ধুলো আর আর্দ্রতা থেকে মুক্ত জায়গায় সাবধানে রাখতে হয়।
- ডিভিডি। এক একটা ডিভিডির দাম পঁচাত্তর সেন্টের মতো পড়বে। তিরিশ মিনিট রেকর্ড করা যায় এক একটা ডিস্কে। এক এক ক্যামেরার জন্য এক এক পদের ডিস্ক লাগতে পারে। ডিভিডির সুবিধা হচ্ছে দুমদাম কোন ডিভিডি-প্লেয়ারে নিয়ে দেখা যায়, তবে কমপ্যাটিবিলিটি চেক করে নিতে হবে। ডিভিডি ক্যামকর্ডারগুলি এমপিইজি-২ ফরম্যাটে রেকর্ড করে, যেটা ঠিক এডিটবান্ধব নয়, আবার এডিট করার পর অনেক সময় কোয়ালিটি পড়ে যায়। ডিভিডি সংরক্ষণ করা সহজ।
- হার্ড-ডিস্ক। এর সবচে বড় সুবিধা হচ্ছে, আলাদা কোন খরচ নেই। তবে ফুটেজ সংরক্ষণের জন্যে আলাদা মিডিয়াম লাগবে, যেমন পিসির হার্ডডিস্ক, ডিভিডি বা মিনি-ডিভি ক্যাসেট। এর ধারণ ক্ষমতা হার্ড ডিস্কের আকারের ওপর নির্ভর করবে। ক্যামকর্ডার থেকে ফুটেজ দেখাও সুবিধাজনক, ড়্যান্ডম অ্যাকসেসের সুযোগটা থাকে। পিসিতে ট্র্যান্সফার করাও সহজ।
লালকালির দিক বিবেচনা করলে হার্ড-ডিস্ক মিডিয়ামই দেখা যাচ্ছে সেরা। তবে যা বুঝি, হার্ড-ডিস্ক গেলে খবরই আছে।
৩.
এই সেকশনটা লিখবো নানা ক্যামকর্ডারের রিভিউ পড়ে। ততক্ষণে আপনাদের কাছ থেকেও মূল্যবান পরামর্শ পেয়ে আলোকিত হবো। এরপর সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে, ক্যামকর্ডার কিনলে সর্বোচ্চ কয়দিন উপবাসে থাকা উচিত হবে। ভোজনরসিকদের জন্যে আগাম সুখবর থাকবে, ক্যামকর্ডারের প্রথম শিকার হবে বদ্দার "তেহারি"র উপর একটি ডকুমেন্টারি।
মন্তব্য
হুমম, আপনার গাইড লাইন দেইখা আমার ক্যামকর্ডার কেনার সাধ মিটা গেছে এই তথ্যগুলা জানার পর সস্তা ক্যামেরা গুলারে প্লাস্টিকের ছোট বদনা মনে হইতেছে
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ফলো করবো, জানার আছে অনেক কিছু।
ফলো করতাছি। সবকিছু ঠিক হইলে খালি মডেলের নাম পাইলেই চলবো। কে কষ্ট কইরা গবেষনা করে, হিমু থাকতে ।
রাজু দোস্ত
তুই কিনে আমাকে একটু ব্যাবহার করতে দিস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
- দোস্ত, এই জীবনে না একটা এসেলার কেনা হবে, না একটা ক্যামকর্ডার। তুই কিনলে তোরে একটা অগ্রিম কাম দিয়া রাখতে পারি। পয়সা টয়সা পাবি না, বুঝসই মিসকিন মানুষ! তবে দুইবেলা ভরপেট (ইট-ইন) আর ভরপোটলা (টেক-অ্যাওয়ে) খানা পাবি।
কামটা হইলো, তুই আমার বিবাহের অফিসিয়াল ক্যামেরাম্যানের দায়িত্ব পালন করবি। বিবাহের বিভিন্ন পর্বের সাক্সেসফুল চিত্রগ্রহণ শেষে (আমি নিজে দেইখা সার্টিফাই করুম) আমার বাসর ঘরের ফুলে ফলে সাজানো খাটিয়ার পাক্কা দশ মিনিট ভিডিও করার সুবর্ণ সুযোগ পাবি। চাইলে খাটিয়াটা তোকে একটু ধরেও দেখতে দিতে পারি।( কিন্তু খবরদার বসতে চাইবি না কইলাম।) হাজার হোক, তুই আমার দোস্তই তো!
রাজী থাকলে আওয়াজ দিস। পরে অন্য কাউরে দায়িত্ব দিয়া দিলে আবার ফোনের বিল তুলিস না। আমার নাঁকি কান্না শুনতে ভালো লাগে না!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
কুত্তার মতো দৌড়ের উপরে আছি, নাইলে এই বিষয়ে বিস্তারিত একটা জ্ঞানী মন্তব্য করতে পারতাম। এখন বের হয়ে যাবো। রাতে ফিরে বলবোনে। (তখনও যদি দেহে থাকে প্রাণ)
তার আগে কন ক্যামকর্ডার ক্যান কিনবেন? উদ্দেশ্য বিধেয় কী? কাজের পরিধীর উপরে যন্ত্র বাছাই অনেকটাই নির্ভর করে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
- বাথরুমের দুয়ারের উপ্রে দিয়া চৈনিক বালিকাদের জলকেলীর দৃশ্যধারণ করার জন্য কেমন যন্ত্রের দরকার, সেইটাই বলেন আপনে। কারও না কারও তো দরকার লাগবোই।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
নোট করে রাখলাম। ভবিষ্যতে যদি কোনদিন পয়সা-পাতি হয় তাইলে কাজে লাগবে।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
আমার একটা ক্যামকর্ডার আছে। বৈবাহিক সুত্রে বউয়ের কাছ থেকে পেয়েছি। প্রস্তর যুগে আবিষ্কৃত "Hi-8" প্রযুক্তি সমৃদ্ধ! ইয়াব্বড় সাইজের! কাঁধে নিয়ে হাঁটলে মনে হয় যেন রকেট লঞ্চার নিয়ে হাঁটছি।
কি হিমু? চলবে?
লিস্টের প্রথম দিকের জিনিসগুলা দেইখা ভড়কাইয়া গেছি!...সাধ মিটে গেছে। জীবনে কোনদিন বড়লোক হইলে তখন কিনুম...
--------------------------------
হতাশাবাদীর হতাশাব্যঞ্জক হতশ্বাস!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
আপনে তো শামীম ভাই এর পোস্ট-মার্কা ডিসিশন এনালাইসিস করতেছেন দেখা যায়!
আমাগো বাসায় একখান আছে। সেইটা সনির বানানো তবে থ্রি-সিসিডি না। একটাই সিসিডির। তিরিশ গিগ হার্ড-ড্রাইভ অলা। ২৪এক্স অপটিকাল আর ১০০০এক্স ফাউল ডিজিটাল জুম। সবচাইতে সুবিধা হইতেসে এইটা খুবই পিচ্চি ক্যামকর্ডার। তাই বহন করা খুবই সহজ। আর রান্ডম একসেসের ব্যপারটা ভালা লাগে। মিনি ডিভি তো এখন প্রস্তরযুগে চইলা যাইতেসে। এইটার রক্ষণাবেক্ষন খরচাও আমার কাছে বেশিই মনে হইসে। একটা হাইব্রিড জাতের ক্যামকর্ডার কিনতে পারেন। প্যানাসনিক অথবা সনির জিনিসগুলা ভাল লাগসে আমার কাছে। আর থ্রি-সিসিডি অলাই কিনেন। এখন তো আবার ফুল-হাই ডেফিনিশন গুলা বাইর হইসে সেইগুলার মধ্যেও দেখতে পারেন। ফাটাফাটি রকমের ভিডিও তুলা যাইবো তাইলে।
---------------------------------------------------------------------
--------------------------------------------------------
দুয়েকটা লিংক দেয়া যায়?
নতুন মন্তব্য করুন