টারান্টিনোর সিনেমার খুব যে ভক্ত আমি, এমনটা নয়। কিন্তু লোকটা শজারুর মতোই তেড়ে এসে কাঁটা বিঁধিয়ে দিয়ে যায়। প্রথম দেখি রিজারভয়ার ডগস, অনেক আগে, প্রবল ভায়োলেন্সে ছোপানো সিনেমা। রক্তারক্তি দেখে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম। তখন স্টার মুভিজে সিনেমার আগে পিছে নানা সাক্ষাৎকারও দেখানো হতো। সিড়িঙ্গে টারান্টিনোর কথাবার্তা অত মনোযোগ দিয়ে শুনিনি, কিন্তু পরে কিল বিল দেখে নড়েচড়ে বসে বুঝলাম, টারান্টিনোর বিশেষত্ব রক্তে। সিনেমায় রক্তের ব্যবহার কমবেশি সব ডিরেক্টরই নিশ্চয়ই করেছে, কিন্তু টারান্টিনো রক্তকে নিজের স্বাক্ষরের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রায়। টারান্টিনোর সেরা কীর্তি হিসেবে পাল্প ফিকশনই স্বীকৃত, এতে তার স্বাক্ষরের বাকি অক্ষরগুলিও স্পষ্ট হয়ে ফুটে আছে।
পাল্প ফিকশন |
ইন্টারনেটে টারান্টিনোকে নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে নয়, সিনেমাগুলি দেখে যা উপলব্ধি করলাম, টারান্টিনো সিনেমা দাঁড় করায় মন্থর যৌনতা, আকস্মিক দ্রুতগতির ঘটনা, রক্ত আর পুরনো দিনের সুরের ওপর ভিত্তি করে। কোনো সিনেমাতেই যৌনতার যথেচ্ছাচারের অভাব নেই, কিন্তু এই যৌনতার প্রকাশটা মন্থর, অনেকটা চুঁইয়ে পড়া রক্তের মতোই। টারান্টিনোর সিনেমায় পুরনো গান আর সুর ব্যবহার হয় প্রচুর; ৫০ আর ৬০ দশকের গান, যেখানে বেইজের ব্যবহার লক্ষ্যণীয়, সেগুলোই ঘুরে ফিরে আসে দৃশ্যগুলির সাথে। টারান্টিনোর সিনেমার চরিত্রগুলি নাচের ব্যাপারেও খুব আগ্রহী থাকে প্রায়ই, এবং অবধারিতভাবেই কোনো বিকট, ভায়োলেন্ট কার্যকলাপের আগে দর্শককে সেই গান এবং/অথবা নাচ দিয়ে খানিকটা মোলায়েম আবহের গদিতে বসায় টারান্টিনো। গান বা সুরের রেশ কেটে যাবার কয়েক মিনিটের মধ্যে শুরু হয় সৃষ্টিছাড়া কোনো কিছু। আর সেখানে অবধারিতভাবে থাকবে রক্ত, প্রচুর রক্ত। এ যেন সিনেমার গায়ে নামাঙ্কণের জন্যে গলানো মোমের মতো। উদাহরণ হিসেবে বেছে নেয়া যেতে পারে পাল্প ফিকশনে চাক বেরির গানের সাথে মিয়া মার্সেলাস আর ভিনসেন্ট ভেগার টুইস্ট,
কিংবা ডেথ প্রুফে দ্য কোস্টারসের পাগলাটে "ডাউন ইন মেক্সিকো"র তালে তালে স্টান্টম্যান মাইককে ঘিরে বাটারফ্লাইয়ের উত্থানজাগানিয়া ল্যাপড্যান্স।
টারান্টিনোর ছবিগুলিতে পৃথিবীর রংও ভিন্ন, বুড়োটে কালার টেমপারেচারে দেখানোর প্রয়াস আছে। পুরনো দিনের চীনা সিনেমার দৃশ্যের কথা মনে হয় বিভিন্ন দৃশ্য দেখে। ডেথ প্রুফ আর কিল বিল ২ তে এর ব্যবহার এতো চড়া যে রীতিমতো চোখে লাগে। সুর আর রঙের ব্যবহার দেখে সন্দেহ থাকে না, রন হাওয়ার্ডের মতো টারান্টিনোও অতীতের দিনগুলিকে সাঁড়াশি দিয়ে চেপে ধরে রাখে সিনেমার সাথে।
ডেথ প্রুফ |
টারান্টিনোর ছবিতে মোচড়গুলি প্রত্যাশার আয়ত্বের বাইরে। শজারুর কাঁটা লোকটা বেঁধায় ওখানেই। মন্থর, ধীর, নিশ্চিত, সংলাপসঙ্কুল এক একটা দৃশ্যে দর্শককে হাতে ধরে কাহিনীর ধাপ পার করিয়ে একটা জায়গায় এনে পাছায় লাথি মেরে অতল খাদে ঠেলে দেবার কৌশল তার করায়ত্ব। ডেথ প্রুফ সিনেমাটাই একটা বিরাট রসিকতার মতো, পদে পদে সম্পাদনার প্রমাদ গুঁজে রাখা, বেশ কিছু জায়গায় সিনেমার গতি কমতে কমতে বিরক্তিকর পর্যায়ে চলে আসে, কিন্তু সেখান থেকেই কয়েক মিনিটের জন্যে দর্শককে স্তম্ভিত করে রাখার মতো একটা কিছু ঘটিয়ে টারান্টিনো পাতা উল্টে সামনে যায়। কিল বিল ২ তে এর ব্যবহার বেশ দরাজ। পাল্প ফিকশন বা রিজারভয়ার ডগসে বর্ণনার ধরনটা সরলরৈখিক নয় বলে দর্শকের আগ্রহ থাকে, কীভাবে সুতোগুলো কোথায় গিয়ে জোড়া লাগে তা দেখার জন্যে।
সব মিলিয়ে টারান্টিনোকে উপেক্ষা করা মুশকিল। এতো সশব্দ, উচ্চকিত আর সংঘাতময় তার সিনেমাগুলি, যে উপেক্ষার উপায় থাকে না।
সিনেমা রিভিউ করতে গিয়ে কাহিনী বলার বদভ্যাস করতে চাই না, তারপরও কোনো সিনেমা দেখার আনন্দ মাটি করেছি বলে মনে হলে ক্ষমা করবেন।
মন্তব্য
আহ! দারুন। আমারও একই মত!
তবে ইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডস কে গার্ডিয়ান পুরা ধুয়ে ফেলছে।
পত্রিকার রিভিউ পড়া হলো পরের মুখে ঝোল খাওয়ার মতো । আবালীয় রিভিউয়ের প্রচুর নমুনা পাওয়া যায় নেটে ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
টারান্টিনো সালমা-কে নিয়ে যা দেখাইছে এর জন্য আমার ব্যক্তিগত অস্কার ওরে দিয়া দিছি...
ওর অন্য মুভিগুলান মোটামুটি থেকে খুব ভাল লাগার মধ্যে থাকলেও Grindhouse এর দুইটা পর্ব ভাল লাগে নাই...
আর বুয়েটের ইলেক্ট্রিকাল ডে-তে আপনার গানটা জীবনেও ভুলুম না।:p
-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
দেসপেরাদো টারান্টিনোর নির্দেশিত না তো ... রডরিগেজ-এর। লিখেছেও রডরিগেজ।
থুক্কু...ভুইলা গেছিলাম... ওর খোমা দেখাইছিল ওইটাতে। রড্রিগেজ-এর সাথে তার বেশ কয়েকটা মনে হয় মুভি আছে।
ফ্রম ডাস্ক টিল ডন, সিন সিটি...ব্যাপক লাগছিল...ভাল লাগে নাই হস্টেল!
-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
হায়েকের ঐ অজগর আসছে তেড়ে নাচটা তো ডাস্ক টিল ডন এর। ওইটা রড্রিগেসের পরিচালনা। তবে লিখেছিলেন বোধ হয় ট্যারেনটিনোই।
এইটার একটা ব্যাখ্যা দেন না, হিমু ভাই...
আর পাল্প ফিকশন কেনো যেনো ভালো লাগে নাই। বরং 'কিল বিল ২' অনেক ভালো...
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
আমি বিশাল ফ্যান।
নতুন সিনেমাটার জন্য অপেক্ষা করে আছি।
Inglourious Basterds
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফ্লিকার | ইমেইল
টারান্টিনোর ছবি প্রথমবার খেয়াল করে দেখি লন্ডনে, সম্ভবত ২০০৩ এ। কিল বিল ১ যদ্দুর মনে পরে ছবির নাম।
ছবি দেখে পুরাই চমকে গেছিলাম। খুবই সাহসী আর এক্সপেরিমেন্টাল মনে হয়েছিল পরিচালককে। তার ছবি গুলো এন্টারটেইনিং--নিঃসন্দেহে।
ভাল লেখা, হিমু।
টারান্টিনোকে সবাই প্রথম সুযোগেই 'দাঙ্গাবাজ' কিংবা 'রক্তবাজ' একজন পরিচালক বলে ধরে নেন। আমার মনে হয়, ভদ্রলোক আরেকটু সহানুভূতিশীল মনোযোগ প্রত্যাশা করেন। তাঁর ছবিগুলো দেখে আমার মনে হয়েছে---তিনি আসলে খুঁজে ফিরছেন মানুষের ধ্বংসকামী দিকটার মানে।
রিজার্ভার ডগস থেকে শুরু করে কিল বিল পর্যন্ত এক অবিশ্রান্ত রক্তের ধারাপাত। কিন্তু এর ফাঁকে ফাঁকেই টারান্টিনো আমাদের দেখান একেক জন ভয়ংকর নিষ্ঠুর মানুষের মনের গতি-প্রকৃতি। আমরা অবিরাম হত্যাযজ্ঞ আর রক্তস্রোতে আপ্লুত হতে হতে অনেক সময়ে ভুলে যাই এইসব উন্মত্ত জিঘাংসু মন গুলোর ভেতরের কথা।
উদাহরণ হিসেবে, কিল বিল ছবিটার বিলের কথাই ধরা যাক। সর্বার্থে একজন ভয়ানক মানুষ। কঠোর, নির্মম, রক্তলোলুপ---এসব বিশেষন মনে হয় যেন তাকে মাথায় রেখেই তৈরী হয়েছিল। সে এত বড় পামর(তবে রে---) তার কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়া সেই মেয়েটি, যে সারাজীবন নিজেকে বিলের এক অমোঘ অস্ত্র হিসেবেই ভেবেছিল, বিলের খুনীর দলের সবচাইতে ভয়ানক খুনী ছিল সে মেয়েটি---নিতান্ত অবহেলায় তাকেও সে "খুন" করেছে।সেই মেয়েটি, যে কিনা কঠোর প্রশিক্ষন প্রাপ্ত নির্মম এক খুনে--- হঠাৎ সন্তান সম্ভাবনা তার মত পাষানেরও ঘুম ভাঙ্গায়। অন্তহীন রক্তের পথচলায় ক্লান্ত খুনীর খোলশ ছেড়ে বেরিয়ে আসে চিরায়ত এক নারী। সরে যেতে চায় এই হিংসার জিঘাংসার পথ থেকে।
কিন্তু বিল তা হতে দেয় না। মেয়েটার বিয়ের দিনে মূর্ত্তিমান মৃত্যুদূত হয়ে উপস্থিত হয় বিল। হাতে শ্যামের বাঁশরি। মুখে হাসি। চোখে অভয়। মেয়েটা শেষ পর্যন্ত প্রায় বিশ্বাসও করে ফেলে---বিল মনে হয় তাকে ক্ষমা করেছে। মনে হয় শেষ পর্যন্ত তার মাঝে মনুষ্যত্ব জাগ্রত হয়েছে----
কিন্তু তাই কী আর হয়? বিশেষ করে টারন্টিনোর ছবিতে???!!!
তাই আমরা দেখি বিল শেষ পর্যন্ত একজন ঘাতক।সে কাউকে ক্ষমা করে না। বিশেষ করে সে ব্যক্তিটি যদি তার বিশ্বাস ভঙ্গ করে।
তারপর তো সারাটা ছবি জুড়েই রক্তের আলপনা আঁকা। আমরা দেখি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা এক সন্তান হারা মা, যার জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিশোধগ্রহন। জীবনের সকল হিসেব কড়ায় গন্ডায় আদায় করতে পথে নামা তার। বলাই বাহুল্য অবিরল রক্ত স্রোতে সে পথ পিচ্ছিল।
সবশেষে আবার আমরা মুখোমুখি হই বিলের। আমাদের সাথে সেই মেয়েটিও মুখোমুখি হয় তার জীবন থেকে 'জীবন' কেড়ে নেয়া পিশাচটির। এবং কী আশ্চর্য----টারান্টিনো আমাদের দেখিয়ে দেন, বিল হতে পারে পশু শ্রেনীর একজন মানুষ, কিন্তু সবকিছুর পরও সে একজন প্রেমিক। তার বাকী সব কিছুর মতই তার প্রেমও প্রাণসংহারী। সবকিছুর শেষে, সব কুকীর্তি ছাপিয়ে বিল আমাদের কাছে ধরা দেয় এক ঈর্ষাতুর প্রেমিক হয়ে, এক স্নেহশীল পিতা হয়ে, এক অন্যধরনের 'মানুষ' হয়ে।
আমার মনে হয়---এইখানটায় টারান্টিনো জিতে গেছেন।আমাদের এই চেনা পৃথিবীরই পথে হেঁটে বেড়ানো 'অন্যধরনের মানুষগুলো'র সাথে পরিচয় করিয়ে দেন একরকম ঐশ্বরিক নির্লিপ্ততায়।
যাক, বিশাল মন্তব্য করে ফেললাম। সেজন্যে দুঃখিত।
নিরন্তর শুভেচ্ছা।
টারান্টিনোর বিশাল ভক্ত আমি, গ্রাফিক জিনিষ খুব ভালো লাগে বলে বোধ হয়।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আমারও তার সিনেমাগুলো সেরাম লাগে... কিল বিলতো ঝাক্কাস জিনিস!
---------------------
নামে কি'বা আসে যায়...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
একমত। আমিও টারান্টিনোর খুব একটা ভক্ত নই। ভাল্লাগল বিশ্লেষণটা। 'ইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডস'-এর অপেক্ষায় আছি।
এইটা সম্ভব যে আপনি এই লোকের সিনেমা খুব ভালো করে দেখেন নাই । হালকার ওপর ঝাপসা দেখলে অনেক কিছুই মিস করি আমরা। আপনারে একটা পরামর্শ দেই । পাল্প ফিকশন দিয়া শুরু করেন । প্রথমবার এমনি এমনি দেখবেন । দ্বিতীয় আর তৃতীয়বার দেইখা বুঝার চেষ্টা করবেন এইটা অন্য সিনেমা থিকা কি কি কারনে আলাদা । চতুর্থবার দেখবেন এই সিনেমা নিয়া ইন্টারনেটে পড়াশোনা কৈরা । আমি নিশ্চিত এর পরে আপনি টারানটিনো ফ্যান হয়ে সিনেমাটা ৫ম বারের মতো দেখতে বসবেন ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আমমমম... এইটা কিছুটা ঠিক বলসেন বস যে, আমি এই ভদ্রলোকের সিনেমা তেমন একটা মনোযোগ দিয়ে দেখিনি। তবে দেখসি কিন্তু অনেকগুলাই। পাল্প ফিকশন, রিজারভয়ার ডগস, কিল বিল ১, ট্রু রোমান্স (এইটার ডিরেক্টর মনে হয় টনি স্কট), ইত্যাদি। কিন্তু আমি আবার রক্তারক্তি খুব একটা সহ্য করতে পারি না তো, তাই অতোটা টানে নাই। তারপরও আপনে যখন কইলেন, আর আমিও বেশ কয়দিন থেকেই ভাবতেসিলাম, পাল্প ফিকশন-টা আবার দেখবনে তাইলে। তবে ৫ বার দেখার মতো ধৈর্য্য মনে হয় না বস হবে আমার
যে সিনেমা পাঁচবার দেইখা বুঝা লাগে সেইটা মনে হয় না দেখলেও চলবে ... খুদাফেজ
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
অসাধারণ এবং নিখুত বর্ননা , লেখায়
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
টারান্টিনোর পাঙ্খা আমিও
ডেথ প্রুফ টা দেখা হয় নাই। দেখে ফেলবো নিশ্চিত।
হিমু ভাই, প্রিভিউ চ্রম হইছে
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
আমার দৌড় পাল্প ফিকশন আর কিলবিল ২ পর্যন্ত... রক্তে আমার একটু ঝামেলা আছে... দেখে আমোদ পাই না...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
খুবই ভালো লেখা, হিমু।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
সিনেমা যে সবগুলো ইন্দ্রিয়ের যৌথ প্রযোজনায় উপভোগ করার মত জিনিস এটা টারান্টিনোর সিনেমায় খুব ভালভাবে উপলব্ধি করা যায়।
ওর সম্পর্কে কথা একটাই- পৃথিবীতে কোন রক্তপাত, হানাহানি বা নৃশংসতা নেই, এটা ভাবা যায় না। এইসব ডায়োনিসিয়ান নিয়েই যেহেতু একটিমাত্র জীবন পার করতে হবে সেহেতু এগুলোকে উপভোগ করার একটা ব্যবস্থা করা দরকার। এটাই টারান্টিনো করেছেন- সহিংসতাকে নৈসর্গ্যিক রূপ দিয়েছেন।
রেজারভোয়ার ডগস আমার অল টাইম ফেভারিট। পাল্প ফিকশন আরও বস।
নৃশংসতার সবচেয়ে চমৎকার উদাহরণ বিশ্বযুদ্ধগুলো। তাই ইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডস এর বিষয় হিসেবে টারান্টিনোর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেছে নেয়াকেও ঠিক মনে হয়েছে। কিন্তু সিনেমাটা এখনও হাতে আসেনি, অপেক্ষা করছি।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
ইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডকে নাকি ট্যারেন্টিনো তার নিজের করা শ্রেষ্ট ছবি বলে ঘোষনা করেছেন। এই মাসের শেষ এ এখানে মুক্তি পাবে। দেখার অপেক্ষায় আছি।
দারুন লেখা!!
আমি এই লোকটার চ্রম ভক্ত!! কিলবিল ২ এর শেষে একটা গান আছে আমার খুবই প্রিয়। গানের কথাগুলো :
my man's got a heart like a rock cast in the sea
well no one told me about her
the way she lied
well no one told me about her
how many people cried
but it's too late to say you're sorry
how would i know
why should i care
please don't bother trying to find her
she's not there
---------------------
আমার ফ্লিকার
কিল বিল ১ এবং ২ বাংলা সিনেমা দেখার মানসিকতা নিয়ে দেখায় খুব একটা খারাপ লাগে নাই। সিন সিটি (এটা তে মনে হয় ভদ্রলোক গেস্ট ডিরেক্টর ছিলেন) ভাল লেগেছে। কিন্তু হস্টেল দেখে প্রায় হপ্তা খানেক আমার ঘুম হারাম হয়ে গিয়ে ছিল। এত ভয়ংকর একটা কাহিনী নিয়ে কাজ করা শুধু এই লোকের পক্ষেই সম্ভব। যেখান সেখান থেকে মানুষ ধরে এনে পয়সার বিনিময়ে কেটেকুটে ফেলা এইটার মধ্যে অস্বাভাবিকতা ছাড়া আর কিছুই নেই। Apocalypto সিনেমাটাতেও তো কঠিন নৃশংসতা দেখানো হয়েছে, কিন্তু সেটাকে আমার মোটেই অস্বাভাবিক মনে হয়নি। এই লোকের নাম কোনভাবে জড়িত থাকলেই সেই সিনেমা থেকে দুরে থাকতে চাই।
---------------------------------------------
ল্যাসিক করাতে ভয় পাই আর লেন্স ভাল লাগে না।
---------------------------------------------
ল্যাসিক করাতে ভয় পাই আর লেন্স ভাল লাগে না।
বরাবরই তাঁর ভক্ত।
গ্রাইন্ডহাউস, কিলবিল অসাধারন
রিজারভোয়ার ডগ্স আর পাল্প ফিক্শন - দুটাই আমার প্রিয় ছবির তালিকায়। এগুলার পাশে কিল বিল ১-২ একেবারেই ম্লান ছিল। নাই ডায়ালগ, নাই চরিত্র, নাই প্লট। প্রথম দুটা ছবির পরে টারান্টিনোর যশ ছিল গগনচুম্বী - মনে আছে ৯৪ সালে পাল্প ফিক্শন যখন কান ফেস্টিভালে প্রথম প্রদর্শিত হয়, টারান্টিনো-কে সবাই ফিল্মের নতুন দেবতা, এক নতুন স্করসীসি বা আরো বড় কিছু হিসাবে দেখতে প্রস্তুত ছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতি পুরণ হলো না শেষতক। ব্যাটার স্টক অনেক নেমে গেছে।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
হিমুর রিভিউটা খুবই ভালো হয়েছে।
লন্ডনের রেইনড্যান্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সাথে জড়িত ছিলাম বলে টারান্টিনোকে দেখেছি। আর বিস্মিত হয়ে খেয়াল করেছি যে ফিল্মের লোকজন তাকে কতটা দেবতার মত শ্রদ্ধা করে। আর তার সৃজনশীলতায় কি পরিমাণ তারা মুগ্ধ।
তবে সৈয়দ দেলগীরের মত আমারও রক্ত ও মারামরিতে বিবমিষা। এত কড়া টোনের কিছু আমার মর্মে পশে না। তাই বিস্ময়কর হলেও সত্য টারান্টিনোর কোনো ছবি আমি দেখি নাই।
শুধু পাল্প ফিকশনের বোধহয় অংশ-বিশেষ টেলিভিশনের রিভিউতে চোখে পড়েছিল। আর এমনি সিনেমার ওয়ার্কশপে কিছু স্ট্রিপ দেখেছি।
হিমুর রিভিউ পরে মনে হলো গবেষণার গভীর জ্ঞান নিয়ে লেখা। ব্লগে লেখার মান যে কোথায় নিয়ে যেতে চায় হিমু! বাকীরা কি-বোর্ডের সামনে নিশ্চুপ বসে থাকে কিনা ভবিষ্যতে সেই আশংকা হচ্ছে।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
আমি টারানটিনোর ফ্যান না ... তবে ভদ্রলোকের নিজস্ব একটা স্টাইল আছে এইটা স্বীকার করতেই হবে ...
রিজার্ভ্যার ডগস ভালো লেগেছিল, কিল বিল দেখতেই বসেছিলাম অপছন্দ করার মেন্টালিটি নিয়ে, কিন্তু এইটাও বেশ ভালো লেগেছিল ... সেই তুলনায় একদমই হজম করতে পারি নাই পাল্পফিকশন ... একবার দেখেছি, দ্বিতীয়বার দেখার কোন ইচ্ছা নাই ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
শোনেন ভাই, যতো ভালো কথাই বলেন, যেই লোক হোস্টেল বানাইতে পারে, সে নিশ্চিত মাদার্চোদ... মানুষের পয়দা না। আমার একমাত্র কথা।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
হোস্টেলের ডিরেক্টর তো এলি রথ দেখাচ্ছে
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
এইখানে দেখলাম-
Hostel is a 2005 splatter/horror film written and directed by Eli Roth and produced by Quentin Tarantino, who is also said to have had some input to the dialogue of the film.
যাই হোক, ভুল জানতাম। কিন্তু গালি ফিরায়া নিলাম না। এমন একটা বীভৎস ছবির সাথে নাম কোন ভাবে সংযুক্ত থাকলেই, তারে গালি দিমু।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
- আমিও দিলাম। হালার্পুতে মানুষ না!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কমরেড ভুল করসস, টারান্টিনো এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার আছিলো, তারপরো কেন আছিলো এর জন্যও তারে গালি দেইয়া যায়, তবে রিয়েল মাদার্চোদ এলি রথ, ঐটা আসলেই মাইনষের পয়দা না
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
রিজার্ভ্যার ডগস, কিল বিল, পাল্প ফিকশন ভাল লাগছিল, ফ্রম ডাস্ক টিল ডনে ফাইজলামির চুড়ান্ত করছে, ভায়লেন্স ব্যাপক, তবু সালমা হায়েক এর আগমন শুভেচ্ছায় স্বাগতম, খুশি হইয়া গেছিলাম। ডেথ প্রুফ এখনো দেখতে পারি নাই। ইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডস দেখার জন্য বইসা আছি। রিভিউ ভাল লাগল।
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
হোস্টেল তো দুই পার্ট দেখছি।
ছবিটা দেখা হয় নি। "ট্যুরিস্ট" ছবিটা দেখেছেন কেউ? সেই টাইপের ছবি কি?
কিল বিল দেখা হয়েছে, পরিচালকের সম্পর্কে জানতাম না।
জানলাম, আরেকটু দেখে নিচ্ছি তার সম্পর্কে।
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
হোস্টেল দেইখেন না, মন চাইলে একশোটা হোস্টেলে থাকেন তাউ এই মুভি দেইখেন না
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
প্লিজ, না !
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
একদম কাকতালীয় ভাবে দুদিন আগে টিভিতে " কিল বিল-২" ছবিটি দেখলাম আবারো। যদিও আমি রক্তপাত ভালোবাসিনা (কিন্তু গাড়ী ভাংচুর প্রিয়), তারপরও ভালো লাগে এই ছবিটি। কোথায় যেন এক ধরনের বিষন্নতা লুকিয়ে আছে। এমনকি বিলকেও ভালো লাগে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
- ইদানিং সিনেমার দিকে ঝুঁকে যাচ্ছি। নেট থেকে ব্লু-রে আর এইচ-ডি রিপ নামায়ে দেখতেছি ভালো লাগা ছবি গুলো। দেখি এই ধারাবাহিকতায় টারান্টিনোর কিছু কাম দেখতে পারি কীনা!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
নতুন মন্তব্য করুন