...
সোলায়মান সাহেব বিরক্ত গলায় স্ত্রীকে বললেন, "ব্যাপার কী মরিয়ম? আমাদের আক্কাছ আবার কী সমস্যা করলো?"
মরিয়ম কিছু বললেন না, মুখ বুঁজে বসে রইলেন।
সোলায়মান সাহেব বললেন, "আজকে লেবুতলায় সদরুদ্দি এসে বললো, কী সোলায়মান, তুমি কি ছেলের কোনো খোঁজখবর রাখো না? সে যে দিনকে দিন কী বেয়াড়া হচ্ছে, তা জানো? ... বলো দেখি, সদরুদ্দির মুখে এই কথা মানায়? তার নিজের ছেলে বশিরুল একটা বদের হাড্ডি, মারপিট মাস্তানি করে বেড়ায়, ছোটো ছোটো মেয়েদের দিকে কুদৃষ্টি দেয় ... আর সেই সদরুদ্দি কি না ... যাকগে, আক্কাছ কই?"
মরিয়ম বললেন, "আক্কাছ এখনও ফেরেনি।"
সোলায়মান সাহেব বললেন, "বটে? তা সে গেছে কোথায়? ঘরের কাজ তো তাকে কখনও করতে দেখি না। বাইরে টো টো করে ঘোরে সবসময়।"
মরিয়ম মুখ গোঁজ করে বললেন, "সে তার বন্ধুদের সাথে বেরিয়েছে একটু আগে।"
সোলায়মান সাহেব বললেন, "তা ঠিকাছে। একটু খেলাধূলা দরকার জীবনে। এক্সারসাইজ না করলে ফিটনেস থাকবে না। যা দিনকাল পড়েছে আজকাল, জানটা নিয়ে নিরাপদে ঘরে ফিরে আসাই দায়!"
মরিয়ম মুখ কালো করে বসে রইলেন।
সোলায়মান সাহেব তীক্ষ্ণ চোখে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন, "কী হয়েছে? কিছু লুকাচ্ছো নাকি?"
মরিয়ম নিচু গলায় কী যেন বললেন।
সোলায়মান সাহেব বললেন, "আরে জোরে বলো? দুপুরে খাও নাই কিছু? গলায় জোর পাও না নাকি?"
মরিয়ম এবার চড়া গলায় বললেন, "কাঁঠালতলার ইলিয়াছের বউও আসছিলো বাসায়, ফলফ্রুট নিয়ে ... তোমার ছেলের নামে বদনাম করে গেছে। সে নাকি কীসব গ্যাং-ট্যাঙে নাম লিখিয়েছে ... তারা একসাথে কীসব করে ... তাদের নাকি চালচলন ভালো না ... রাজ্যের নোংরা নোংরা কথা ...।" মরিয়মের কণ্ঠস্বর রুদ্ধ হয়ে আসে।
সোলায়মান সাহেব ক্ষেপে ওঠেন, "তুমি ঘরে বসে করোটা কী? ছেলেটাকে একটু শাসন করতে পারো না? য়্যাঁ? সে কি আমার একার ছেলে?"
এমন সময় ধুপধাপ করে ঘরে ঢোকে আক্কাছ। বাবাকে দেখে একটু থতমত খায় সে।
"এই যে রাজপুত্তুর!" বাজখাঁই কণ্ঠে ডাক দ্যান সোলায়মান সাহেব। "এদিকে এসো।"
আক্কাছ গুটি গুটি এগিয়ে যায় বাবার দিকে।
সোলায়মান সাহেব চোখ রাঙিয়ে বলেন, "লোকে তোমার নামে এসব কী বলে?"
আক্কাছ দুর্বল গলায় বলে, "কী বলে?"
মরিয়ম ক্ষেপে ওঠেন, "তোর চালচলন নিয়ে পাড়াপড়শীর কাছে কথা শুনতে হয় আমাকে! কেন? কেন রে?"
আক্কাছ বলে, "আমি আবার কী করলাম?"
মরিয়ম তেড়ে আসেন, "আবার মুখে মুখে কথা? তুই জানিস না তুই কী করিস?"
আক্কাছ বাবার দিকে ভয়ে ভয়ে একবার তাকিয়ে বলে, "আমি কী করলাম?"
মরিয়ম বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বললেন, "ইলিয়াছের বউ এসে বলে গেলো ... তুই আর তোর বন্ধুরা নাকি পেছনের পায়ে ভর দিয়ে হাঁটিস!"
আক্কাছ মাথা নিচু করে বলে, "তাতে কী হয়েছে?"
সোলায়মান সাহেব রাগে ফেটে পড়েন, "তাতে কী হয়েছে? তাতে কী হয়েছে? তুই জানিস না ... ভদ্রলোকে পেছনের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে হাঁটে না! তুই ভুলে গেছিস তুই কত বড় বংশের ছেলে?"
আক্কাছ মিনমিন করে বলে, "কিন্তু আমার বন্ধুরা তো সবাই পেছনের পায়ে ভর দিয়ে হাঁটা প্র্যাকটিস করে!"
সোলায়মান সাহেব আর রাগ সামলাতে পারেন না, কষে একটা চড় মারেন ছেলের গালে। "চুপ কর কুলাঙ্গার! আর কোনোদিন যদি পেছনের পায়ে ভর দিয়ে হেঁটেছিস বলে শুনেছি! দেখিস কী করি!"
আক্কাছ চড় খেয়ে কেঁদে ফেলে।
সোলায়মান সাহেব দোল খেয়ে গাছ থেকে নেমে আসেন। মেজাজটা চরম খারাপ হয়েছে তার। দূরে জামরুল গাছ থেকে কয়েকটা জামরুল পেড়ে খেলে যদি একটু ঠাণ্ডা হয়।
এ ডাল সে ডাল পার হয়ে জামরুল গাছের সামনে ঝুপ করে নেমে সোলায়মান সাহেব আপন মনে গজরাতে থাকেন। পেছনের পায়ে ভর দিয়ে হাঁটা! সমাজটা কোন দিকে যাচ্ছে আসলে? ভেবে কূলকিনারা পান না তিনি।
...
মন্তব্য
জটিলস্য জটিল, পুরাই কঠিনস্য কঠিন, শাখামৃগদের নিয়ে গল্পটা যা দিয়েছেন!! নমস্য
আসলেও, কত্তবড় সাহস, পিছনের পায়ে হাটে !!!
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
- একটা ফুটনোট দেয়া দরকার ছিলো, অমুক ঘটনার সাথে এই গল্পের কোনো মিল নাই। মিল খুঁজে পেলে সেটা পাঠকের খাইষ্টা স্বভাব।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বোকা হয়ে যাচ্ছি। কিছুই বুঝলাম না। ভাইঙ্গা কন নাইলে এক তারা দিয়া যামু কইলাম
বুঝিনি, মনে হয় সমস্যা আমারই !
_______________________________
শান্তিও যদি সিংহের মত গর্জায়, তাকে ডরাই।
--নরেশ গুহ
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
ফলফ্রুট… টার্মটায় মজা লাগল।
গল্পটা পড়া শেষ করে এবং ধুসর গোধূলির মন্তব্য পড়ে শরৎচন্দ্রের ‘শ্রীকান্ত’ উপন্যাসের একটা ঘটনার কথা মনে হল। স্মৃতি থেকে বলছি কাছাকাছি হবে হয়ত।
বার্মায় যাবার জন্য জাহাজে উঠছেন। হঠাৎ করে যাত্রীদের মধ্যে একটা আলোড়ন পরে গেল। তিনি পাশ দাঁড়ানো একজন ‘হিন্ধুস্থানীকে’ ঘটনা কী জানতে চাইলে উত্তর পেলেন ‘দোগদারী হোগা’ (বা কাছাকাছি কোন টার্ম)। বোঝতে না পেরে আবার জানতে চাইলে উত্তর পেলেন, ‘পিলেগোকা দোগদারী হোগা’। তারপর এমন কিছু একটা লিখেছেন… ‘ঘটনাতো বুঝিতে পারিলাম না, আরও জটিল আকার ধারন করিল…’।
জোস হইসে..আপ্নে এতো এতো আইডিয়া কই পান??
স্পার্টাকাস
ফুটোস্কোপ দিয়ে দেখছি তো তাই ঘটনা ধরতে পারি নাই।
জব্বর হইসে। আমিতো প্রথমে চিন্তা করতেসি গরু ছাগলের গল্প লিখতাসে নাকি যে পিছের পা্য়ের কথা উঠল?
ইরেব্বাস! এগুলা কি এম্নি বান্দর, না ডিস্কু বান্দর?
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
জব্বর হইসে...
=======================
ছায়ার সাথে কুস্তি করে গাত্রে হলো ব্যাথা!
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
দূর্দান্ত!
বাপরে... পুরাই দিলছুট হয়া গ্যালো...
সিরাম আইডিয়া...
______________________________________________________
মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক
ফুটো দিয়া দেখলাম, কিন্তুক ধরতে পারলাম না কিচ্ছু।
দুর্দান্ত! এই ব্যাটা সিওর বাংলাদেশি! পোলারে কোটি বচ্ছর আগে যে শিক্ষা দিসিলো, এর বংশধরের বিবর্তন পুরা হয় নাই আইজো......সংসদ এলাকায় ঘুরা ফিরা কইরে বেড়ায়......
আপনি কোথা থেকে আইডিয়া পান? আর ক্যাম্নে এইসব লেখেন? আপনি আসলেই একটা 'ইচ্ছাগল্প-বানানোর-যন্ত্র'।
জোস!
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
পেছনের পা' কী... !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
ঘোর কলিকাল । মাত্র পেছনের পায়ে হাঁটা শুরু করছে । কয়দিন পর ল্যাজ মিলিয়ে যাবে তখন কবরের ভেতরের পূর্বুপুরুষেরাও শিউরে উঠবেন অশুভ আশঙ্কায় ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
লেখক নীরবই রইলেন.।
লেখক কথা বলে বিপদে পড়তে চায় না
http://www.dhormockery.com/2011/02/blog-post.html এইটা দেখে এই পোস্টটা আবার মনে পড়ে গেল।
নতুন মন্তব্য করুন