বলাই আর বলাইনী চলে গেলেন কাসেল ছেড়ে।
কাসেল শহরে আমাদের অল্প কয়েকজনের একটা নিরিবিলি সমাবেশ ছিলো, এক এক করে চলে গেলেন অনেকেই। মুনশি চলে গেলেন গত গ্রীষ্মে আরো দক্ষিণে, রেহমান চলে গেলেন হেমন্তে, আরো পূর্বে। বলাই তাই বোধ করি উত্তরে যাবার সিদ্ধান্ত নিলেন। পশ্চিম দিকটার দিকে তাকিয়ে মাঝে মাঝে মনে হয়, আমার গন্তব্য হয়তো সেদিকেই।
একটা গোছানো সংসার একেবারে ঝেড়েঝুড়ে সরিয়ে নতুন জায়গায় স্থিত হওয়ার ব্যাপক হাঙ্গামা, সেটা আবারও টের পেলাম বহুদিন পর।
বলাই আক্ষরিক অর্থেই সবকিছু ফেলে দিয়ে গেছেন। আমরা গণিমতের মালের মতো নিজেদের যা দরকার টেনেটুনে নিয়ে এসেছি, বাকি সবকিছু বয়ে এনে ফেলে দিতে হয়েছে। এই ফেলে দেয়ার জন্যে আবার দস্তুরমতো পয়সা দিয়ে দরখাস্ত করতে হয়। নগর পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা জায়গা নির্দিষ্ট করে রাখেন, সেখানে গিয়ে মালসামানা গুণে গুণে ফেলে মালপিছু ইউরো গুণে দিতে হয়, মহা ভ্যাজাল। আর টুকিটাকি বহু জিনিস আবর্জনার বাক্সে ফেলা হয়েছে।
বলাই চলে গেছেন বলেই আমার অবশেষে একটা বৌবালিশ জুটেছে। একেবারে গ্যাদাকাল থেকেই আমি একাধিক বালিশকে শয্যাসঙ্গিনী হিসেবে পেয়ে অভ্যস্ত, আর জার্মানদের পালকের বালিশকে আমি বালিশ হিসাবে স্বীকৃতি দেই না। জার্মানিতে এসে বলাইয়ের কল্যাণেই একখানা দেশী কনফিগারেশনের বালিশ পেয়েছিলাম, সংসার তছনছ হয়ে যাবার পর বলাইনীকে বললাম, এইবার একটা হেস্তনেস্ত করতেই হবে, আর কত রাত একা থাকবো? বলাইনী দেখলাম দাঁত কিড়মিড় করে প্রচুর কোলবালিশ, পাশবালিশ, কানবালিশ, ঠ্যাংবালিশ আর গোটা তিনেক কম্বল সব সম্প্রদান কারকে তুলে দিলেন আমার হাতে। ধরা গলায় বললেন, ওদের দেখে শুনে রাইখেন হিম্ভাই, অযত্ন কৈরেন্না, আর মাঝেমধ্যে ধুইয়েন! আমিও ছলোছলো প্রতিজ্ঞা করে জানালাম, এরা আমার সম্পত্তি নয়, এরা আমার সম্পদ।
আমি জিনিসপত্রের অপচয় দেখে অভ্যস্ত নই। আমাদের বাসায় সবসময়ই দেখেছি জিনিসপত্র রিসাইকেলড হতে। তাই বলাইয়ের অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে যা কিছু বহনযোগ্য, সবই আমরা কাসেলের বাকিরা আলগাইতে-পারলে-লয়া-যামু নীতির ভিত্তিতে ভাগাভাগি করে নিয়ে গেছি। যেমন আমি এখন মনে হয় শ'খানেক হ্যাঙ্গারের মালিক। বলাইনীর সন্দেহ আমি অচিরেই বিয়েশাদী করবো কিংবা কোনো বান্ধবী জুটিয়ে যুগলজীবনযাপন শুরু করন ঘটন হওয়াবো, নাহলে এতো হ্যাঙ্গার দিয়ে করবোটা কী?
বলাই একগাদা জামাকাপড়ও ফেলে দিতে চান, সেগুলি তিনি বয়ে নিয়ে যেতে পারবেন না। আমাকে ফিতা দিয়ে মেপেটেপে বললেন, ভুঁড়িটা ফেলে দিতে পারলে তার সব শার্টই আমাকে ঘ্যাম ফিট করবে। আমি নিজেও একগাদা শার্ট বয়ে এনেছি দেশ থেকে, কিন্তু সেগুলি পরা হয় না, উপরন্তু বলাইয়ের পাট করা শার্টের স্তুপ এখন আমার শ্রাঙ্কে। এমনকি আমার পানি গরম করার হিটারটা একটু হেজেমোনি শুরু করায় বলাইয়ের হিটারটাও আরো কিছু রান্নার সরঞ্জামাদিসহ বায়তুল মাল থেকে নিয়ে এসেছি।
বলাইয়ের বাড়িতে "চায়না টাউন" দেখতে দেখতে তাই বলছিলাম, আজ থেকে বছর কুড়ি পর যখন একটা গিয়ানজাম ঘটিয়ে সারা দুনিয়ায় বিখ্যাত হয়ে যাবো, তখন পত্রিকার সাংবাদিকরা বলাই পরিবারের সাক্ষাৎকার নেবে। বলাই বলতে পারবেন, আরে এই হিমু যখন জার্মানিতে প্রথম এলো, সেই কালরাতে সে কই ছিলো? এই বলাইয়ের বাড়িতে। তার তখন একটা বালিশও ছিলো না, কে দিয়েছিলো তাকে বালিশ? এই বলাইনী। অ্যাদ্দূর বলার পর বলাইনী ঠিক করলেন, অন্তত বলাইয়ের একটা টিশার্ট আমাকে নিতেই হবে, যাতে ইন্টারভিউতে কোনো ফাঁক না থাকে। কী পরতো আপনাদের হিমু? এই বলাইয়ের টিশার্ট! আর আজ সে এতো বিখ্যাত ইয়ে, সে কি এমনি এমনি?
তারপরও, শেষ বিচারে এ এক সংসারের লয়ই। চোখের সামনেই বলাইয়ের বসার ঘর থেকে এক এক করে সবকিছু তুলে ফেলে দিয়ে এলাম আমরা। বলাইয়ের শোবার ঘরের সব আসবাব টুকরো টুকরো করে সরিয়ে নয়তো ফেলে দেয়া হলো। একদিন গিয়ে দেখি শূন্যঘরে অল্প কয়েকটা বাক্স কেবল, ঘরে নতুন রং। এই ঘরে গত আড়াই বছরে আমরা অনেকগুলি আনন্দঘন আড্ডার সন্ধ্যা কাটিয়েছি, কাসেলে আমাদের অতিথিদের সৎকার করেছি। মুনশির সেই পুরনো গির্জার চিলেকোঠার গা ছমছমে বাসা আর কাঠের সিঁড়ির ক্যাঁচক্যাঁচ যেমন এখন স্মৃতি কেবল, যেমন স্মৃতি রেহমানের ভোনহাইমের জানালায় ভেসে ওঠা পাহাড়ের উপত্যকা। অথচ মাত্র কয়েক মাস আগেও ক্রিকেট খেলতাম আমরা, হইহুল্লোড় করে মোনোপোলি খেলতাম।
একদিন ভোরে বলাই আর বলাইনীকে ট্রেনে তুলে দিয়ে এসে অনুভব করলাম, মোনোপোলি শেষ পর্যন্ত থাকে একাকিত্বের। সঞ্চয়ের প্রতিটা মুহূর্তই আসলে অপ্রতিরোধ্য ক্ষয়ের প্রস্তুতি। এই প্রত্যেকটা ছেড়ে যাওয়ার মুহূর্তেই মনে মনে নিজেকে প্রবোধ দিই, এ-ই হয়তো স্বাভাবিক নিয়ম, যে নিয়মে আপেল নিচের দিকে পড়ে আর তেল জলে ভাসে। তারপরও মনে হয়, সঞ্চয়টুকু থিতু হোক, কোথাও দাঁড়িয়ে তাকে নিশ্চিন্তে দেখি। প্রেম ফুরিয়ে গেলে প্রেমিকা হারিয়ে যায়, সহোদর-সহোদরা চলে যায় অন্য দেশে অন্য জীবনে, পরিজনেরা সরে যায় নিজেদের কক্ষপথে পাল্টে, আর এ তো প্রবাসে ক্ষণিক দৈবের বশে জড়ো হওয়া আমরা কয়েকজন বন্ধু, মহাকর্ষ কি আমাদের টেনে আলাদা করবে না?
ফেরার পথে তুষারের আভায় অন্ধকার কাসেলকে দেখি। ভাবি, প্রবাসে আসলে প্রাপ্তিটা কী? উত্তর পাই ভেতর থেকে, প্রবাসে মানুষ সবচেয়ে ভালোভাবে পায় নিজেকে। আমি যে এমন আমি, কখনো তো দেখতে পাইনি আগে। নিজের ঘর ছেড়ে বহু দূরে অন্যের শূন্য হয়ে যাওয়া ঘরের জন্যে দুঃখ পাবো, এমনই কি মানুষ তবে আমি?
বাড়ি ফেরার পথে টের পাই, মাইনাস দশ ডিগ্রী তাপমাত্রায় আসলে পানি জমে বরফ হবেই। সে যতই লোনা হোক।
মন্তব্য
- বলাই'দার বাসাটার সঙ্গে অনেক স্মৃতিই জড়িয়ে আছে, কী বলিস! সবাই খালি দূরে সরে যায়রে।
পশ্চিমে এলে চলে আয়, এদিকে। আর পশ্চিমে যাস না, ঐদিকে হাপ আছে।
তুই যখন বিখ্যাত হয়ে যাবি, তখন আমিও ইন্টারভিউতে বলবো, "এই হিমুই তো বলাই'দার বসার ঘরে বাতাসের তোষক ফুলিয়ে দিয়েছিলো আমাকে। শুধু শুধুই কি আর সে 'বিখ্যাত' হয়েছে? মুরুব্বিদের সম্মান করতে শেখ বাবুরা। দেখো মুরুব্বীদের সম্মান করলে বড় হয়ে তোমরা হাবশী না হও, হিমু ঠিকই হওন ঘটোন ঘটাইতে পারবা!"
তুই যদি আরও বিখ্যাত হৈতে চাস, তো এখনই তেলটেল নিয়ে হাজির হয়ে যা। আমার গায়ে গতরে তেল মালিস কর। দোয়া করুম, আরও বিখ্যাত হৈতে পারোস যাতে!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ওহহো। ভুইলা গেসিলাম। ঐ বাতাসের গদিখানাও পাম্পারসহ এখন আমার খাটের নিচে রে মনির ।
তোরে একবার না, এই মেজবানদারি দুই তিনবার করসি। এইটা প্রপারলি ফাঁপাইতে একশো আটবার পাম্প করতে হয় রে মনিরা! বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে একশো আটবার কইরা তোরে তিন কিস্তিতে গদি ফাঁপাইয়া দিসি, খালি খিয়াল কৈরা। তোর বাসায় নেক্সট টাইম গেলে আম আর ইলিশ মাছ তৈয়ার রাখিস।
কাসেলে আর ভুলেও আবি না। আইলেও এই গদির আশা ছাইড়া দে। এই গদি এখন শুধু নারীজাতির জন্যে ব্যবহৃত হবে।
- তোরে কি সাধে আমি য়ূনুইচ্চা বলি? ফাঁপাইছোস দুইবার, চেঁচাইতাছোস তিনবার বইলা। এগুলা বললে হবে?
কাসেলে যদি আসি তাইলে গদির সাথে নারী জাতিও দিবো এখন থাইকা? তোর লাইগা তো চায়-চরিত্র নিয়া দুনিয়ায় কাটাইতে পারলাম না মনেহয়!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হুমমম এইরাম এক্টা সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর মারা যায় অবশ্য। বিশেষ করে তোর সেই চৈনিকা প্রতিবেশিনীরে আমি রীতিমতো ভালু পাই। আমাদের গেশেফটসভেয়ারুং তাইলে চৈনিক ধৈরা লওন হওন ঘটন করানো যায়, কী কস?
- হ, ল সাক্ষর করি। কিন্তু আমাগো তো (বিশেষ করে তোর) চরিত্র ভালো না। দেখা গেলো চুক্তির গুষ্ঠি কিলাইয়া গলাগলি থুইয়া গালাগালি শুরু করছি। সাক্ষী, সাক্ষী যোগাড় কর আগে। আর দেশ থেকে ৫০ টাকার স্ট্যাম্প আনাইতে হবে। ঐটাতে লেখা থাকবে, "... দুইজন সাক্ষীর ওকালতিতে..."।
কী কস?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
সাক্ষী হইতাম মঞ্চায়!!!
এইটা কি নিজামীর যুদ্ধাপরাধ পাইসস যে সাক্ষী দলিল রাইখা কর্তে হৈব? ঐসব ছৈল্ত ন। মরদ কা বাত হাতি কা দাঁত প্রিনৎসিপে বিঝিনেছ হবে।
আমাকে আবার ডাকাডাকি কেনু? কেনু? কেনু?
পরে শেষমেশ ন্যাড়ার মত ফাঁসি হবে না তো?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আহ্ ,
মুস্তাফিজিয় লেখায় হিমিকার সুর!
-------------------------------------------------
"সুন্দরের হাত থেকে ভিক্ষা নিতে বসেছে হৃদয়/
নদীতীরে, বৃক্ষমূলে, হেমন্তের পাতাঝরা ঘাসে..."
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
হাহ হাহ হাহ হাহ হাহ!!!!
সেইরকম মজা পাইলাম হিমু ভাই!
হালকা লয়ে শুরু করলেও শেষের মেজাজ-পরিবর্তনটা দারুণ লাগলো। শেষ দুই প্যারাই।
আপনিতো দেখি পিচ্চিকাল থেকেই লুল্মানব ছিলেন!
অপ্রসংগতঃ লেখাটা সুন্দর হয়েছে হিমু ভাই। প্রিয় মানুষদের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া আসলেই খুব বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা। ভালো থাকুন। (আর বালিশগুলা ধুইয়েন)
---- মনজুর এলাহী ----
"সঞ্চয়ের প্রতিটা মুহূর্তই আসলে অপ্রতিরোধ্য ক্ষয়ের প্রস্তুতি"
ক্ষয়টা তাও কিছুটা মেনে নেয়া যায় যদি তা নিজের জন্য, নিজের দ্বারা হয়। বেশিরভাগ সময় নেপোয় দই মেরে দেয়। "চাচা কাহিনী"তে অমন একটা গল্প ছিল বলে মনে পড়ে।
কাসেলে তাহলে কি এখন আপনি আর বদ্দা বাকি থাকলেন?
লেখাটার শুরু থেকেই যে বিষাদের সুর ছিল শেষে এসে তা মর্মে লেগেছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ইদানিং কালের লেখা গুলিতে বিষাদের সুর বড় বেশি থাকে যেন। ভাল লাগল।
অফটপিক হিজিবিজিঃ ...মাস ছয়েক আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বন্ধু বেশ অনেকদিন পর খুব উচ্ছ্বাসিত হয়ে আমন্ত্রণ করল। ‘এতদিন পর, তাও আবার এত উচ্ছ্বাসিত, ঘটনা কী’? – জানতে চাইলাম। ‘ঈদ, ঈদ রে ভাই। কেমন যেন শৈশব/কৈশোরের সেই ঈদের চমৎকার দিনগুলির মত লাগতাছে।’। ঘটনা হল বিয়ের তিন বছরের মাথায় বউ এই বারই প্রায় ২০ দিনের জন্য শ্বশুর বাড়ি গেছে (তার ভাষ্যমতে অ্যানুয়্যাল লিভ)। পরবর্তীতে বেশ কিছু বিবাহিত সিংহপূরুষকে এই কথায় বলায় একই উত্তব পেয়েছি... ‘আমাদের মনের কথাই বলেছে... আমারা সব সময় এই কথা তো বলতে পারি নারে ভাই...’। বটমলাইন, ‘নদীর এ ...বলে ... ও ...তে সর্ব সুখ আমার বিশ্বাস’।
আপনার এই সিরিজের লেখাগুলা পড়ার সময় ভয়ে ভয়ে থাকি। জানি শুরুটা মজার হলেও শেষে এসে আর তেমন থাকে না। কেমন জানি একটা মন খারাপের আওয়াজ। যথারীতি আজও মন খারাপ করায়ে দেওয়া লেখা।
- মুক্ত বয়ান।
বারোমাস বরাহশিকার, ঝাকানাকা কিংবা কলতলার কবিদের বিদ্রুপ -এইসব নিয়ে আপনার লেখার ফাঁকে নয় মাস-ছয় মাসে যখন এই "সৌরভীয়" লেখা লিখেন, তখন সত্যি সত্যি ভাষাহীন হয়ে যাই।
লেখার বিষয়বস্তু নিয়ে কিছু বলতে চাই না। শুভকামনা থাকলো, বৌবালিশ থেকে যেন বালিশটুকু বাদ পড়ে শীঘ্রই।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
কথাগুলো ভালো লাগলো।
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
জটিল কথা।
সবার মন্তব্য কোট করা দেখে একটা জিনিস না বলে পারছি না-
আমিও মন্তব্য করার সময় পছন্দের লাইনগুলি কোট করতে শুরু করেছিলাম- মন্তব্য টাইপ করার পর দেখি অর্ধেকের বেশি ব্লগই কোটেশনের ভিতর চলে আসছে।
তাই বাদ দিলাম !
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
২০০৬ এর গ্রীষ্মের এক বিকেলে। কার্লসরুহে স্টেশনের ৩নং প্ল্যাটফর্ম থেকে ফ্রাংকফুর্ট চলে গেলেন শামিম ভাই, তার ৫ মিনিট পরে পাশের প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রিয়ারের দিকে রওয়ানা হলাম আমি, প্ল্যাটফর্মে একা দাঁড়িয়ে থাকলো শুধু মঞ্জুর ভাই।
সব খেলাঘরই ভেঙ্গে যায়। তারপরেও কেন যে এতো কষ্ট লাগে!
অফ টপিক, বলাই দা কি বার্লিনের দিকে উড়াল দিলেন নাকি?
=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
বিষণ্ণতা ছুঁয়ে গেলো ...
আমিও! আমার বালিশপ্রীতি এতই বেশি যে বিয়ের পরের কথা ভেবে আগাম বালিশবিরহে ভুগি মাঝেমাঝে।
________________________________
তবু ধুলোর সাথে মিশে যাওয়া মানা
চাইলে বিরহ কাটানোর একটা ব্যাবস্থা করি ভাইজান ??
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
আমার সবচেয়ে বেশি কষ্ট হইছিলো স্কুলের হোস্টেল ছাড়ার সময়। এরপর থেকে একটা 'কী আছে জীবনে' ভাব করি, ট্রানজিশনের সময়টায় হাতে প্রচুর কাজ জমিয়ে রাখি, এতে খারাপ লাগাটা খুব বেশি আক্রান্ত করতে পারে না। এমনিতেই মানুষের জীবন একটা চলমান জিনিস, কোথাও স্থির হওয়ার উপায় নাই।
@ফাহিম, আরো উত্তরে।
তবে কথা হলো, কাসেলে আসতেছি শীঘ্রই।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
- তাইলে একটা মজমা ওরফে জলছা হয়ে যাক সেই উছিলায়! এই জলছায় নতুন পোতিভা উন্মোচিত হবে। ঘুঙ্ঘুর পায়ে নর্তক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবেন জনাব হাবশী আবুলোছেন।
হবে নাকি মুজরার আসর?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
পোচুর হেজেমনির আয়োজন করতে হবে ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
তুমি করবা নাচের আসর? এহ!
ছাতিপা কত গুতাইলো, কই নাচলা না তো।
---
আমারো এট্টু হেজেমনি করতে মঞ্চায়।
- উঁহু, আমি নাচবো কেনো? নাচবে তো নর্তক। নামটা আবার বলবো?
আমি বড়জোর গান গাইতে পারি। হাসিব্বাই চাইলে তবলাটা কিংবা হারমোনিয়ামটা ধরে বাজানো শুরু করতে পারেন।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হয়ে যাক
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
হিমু ভাই দেখি বাসায় একটা বলাই যাদুঘর বানায় ফেলসেন তা বলাইদা তল্পিতল্পা গুটালেন কেন? এখন কোন শহরে?
প্রবাসে আপন মানুষের বড়ো অভাব...
আমি আজকে অফিসে বাসায় বার বার হেসে উঠছিলাম এই হেজেমোনি শব্দটা নিয়ে - কলিগ বাপ-মা রা সন্দেহের চোখে তাকাচ্ছিল। আমি সাধারণত বুঝিয়ে বলি, আজকের ঘটনা অগো কেমনে বুঝাই কন তো?
রিয়াজ ভাইয়ের প্রতি আমার পূর্ণ সম্মান নিয়েই বলছি, উনি বুঝবেন জানি - এখন দেখা যাবে এই হেজেমোনি শব্দটা আরেকটি সচলীয় শব্দ হয়ে গেছে।
গরম পানির হিটারের হেজেমোনি - এই লাইনটা থাকায় আসলে এই লেখাটা আমার কাছে রসপোস্ট হয়ে গেছে। এই যে এখনও হেসে দিচ্ছি। মন্তব্য না করে পারছি না আসলে!
সচলীয় ঝগড়ার ভাল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। আসুন আমরা সকলেই পজিটিভ হেজেমোনিতে মাতি!
কী যে বলে না বলে এই ছোক্রাটা ...
শেষে মন্টা খ্রাপ হয়ে গেল
---------------------
আমার ফ্লিকার
অউউউউ ... মন খারাপ কইরেন না - বাসায় পৌছাইলেই হিটারে বরফ আবার গৈলা যাইব
অপ্রাসঙ্গিক একটা বরফ + লবন সংক্রান্ত ফ্রস্ট বাইট রিয়াকশন ভিডিও দিলাম
স্মৃতি সূধায় ভরা থাক, বিদায়ের পাত্র খানি।
তীরুদার গলায় গানটা খুব ভাল লাগে। এখন আবার শুন্তে মঞ্চায়।
কার মিলনো চাও, হে বিরহী!
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
"মোনোপোলি শেষ পর্যন্ত থাকে একাকিত্বের। সঞ্চয়ের প্রতিটা মুহূর্তই আসলে অপ্রতিরোধ্য ক্ষয়ের প্রস্তুতি। "
খুব সত্যি কথা!
____________________________
শান্তিও যদি সিংহের মত গর্জায়, তাকে ডরাই।
--নরেশ গুহ
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
হিমু ভাইয়ের কথাগুলানে বড়ই আমোদ পাইলাম,জয়তু বালিশ----
(বরাহ শিকারে আমরাও যাইবার চাই)
---রঙপেন্সিল
আপনার প্রবাসে দৈবের বশের শেষ প্যারাগুলো পড়ার জন্যই আসি। কেন জানি নিজের সাথে মিল খুঁজে পাই।
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
হিমু ভাই। দেশের বাইরে এসেছি কিছু দিন হলো। এই লেখাটা তাই ছুয়ে গেলো অন্য রকম ভাবে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
জানি না কেনো, লেখাটা আমার ভয়াবহ ভাল্লাগসে। অনুভূতিগুলো ছুঁয়ে গেলো...
মোনোপোলি শেষ পর্যন্ত থাকে একাকিত্বের। সঞ্চয়ের প্রতিটা মুহূর্তই আসলে অপ্রতিরোধ্য ক্ষয়ের প্রস্তুতি। এই প্রত্যেকটা ছেড়ে যাওয়ার মুহূর্তেই মনে মনে নিজেকে প্রবোধ দিই, এ-ই হয়তো স্বাভাবিক নিয়ম, যে নিয়মে আপেল নিচের দিকে পড়ে আর তেল জলে ভাসে। তারপরও মনে হয়, সঞ্চয়টুকু থিতু হোক, কোথাও দাঁড়িয়ে তাকে নিশ্চিন্তে দেখি। প্রেম ফুরিয়ে গেলে প্রেমিকা হারিয়ে যায়, সহোদর-সহোদরা চলে যায় অন্য দেশে অন্য জীবনে, পরিজনেরা সরে যায় নিজেদের কক্ষপথে পাল্টে, আর এ তো প্রবাসে ক্ষণিক দৈবের বশে জড়ো হওয়া আমরা কয়েকজন বন্ধু, মহাকর্ষ কি আমাদের টেনে আলাদা করবে না?
বদমাইশ টাইপের ইমোশনাল লেখা লিক্সেন ক্যান?
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
নতুন মন্তব্য করুন