ফুটোস্কোপিক গল্প হচ্ছে ফুটোস্কোপ দিয়ে দেখা কোনো গল্প। সামান্যই দেখা যায়।
...
পাবলো ঢোঁক গেলে।
অন্ধকার ঘর। কেবল পাবলোর মাথার ওপর জ্বলছে দুইশো ওয়াটের চারখানা বাল্ব। তার প্রচণ্ড উজ্জ্বলতায় পাবলোর মাথা টনটন করছে, আর গরমে গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে ঘাম। চোখ বন্ধ করলেই পেটে রুলার দিয়ে গুঁতো দিচ্ছে কে যেন। কে এই কাজ করছে দেখার উপায় নেই, মাথার ওপরে আলোর প্রাবল্যে সামনের সবকিছু অন্ধকার ঠেকছে। ছায়া ছায়া কারা যেন ঘুরঘুর করছে ঘরে।
মোটা গলায় একজন বলে, "তারপর চাঁদু? ক্যামন লাগছে রিমাণ্ডে এসে?"
পাবলো ঠোঁট চাটে জিভ দিয়ে। বলে, "পানি খামু!"
মোটা গলা হাসে। বলে, "পানি খাবা?"
পাবলো বলে, "হ। প্লিজ। ঠাণ্ডা একগ্লাস পানি।"
মোটা গলা বলে, "রুহ আপঝা খাবা সোনামানিক? ঠাণ্ডা পানিতে চিনি গুলাইয়া দেই এক গিলাশ?"
পাবলো মাথা নেড়ে সায় দেয়।
অমনি মুখে হড়াশ করে এক মগ গরম দুর্গন্ধময় ওয়াসার পানি ছিটিয়ে দেয় কে বা কাহারা। মোটা গলা ঠা ঠা করে হাসে। তারপর চিবিয়ে চিবিয়ে বলে, "হাউশ কত! রিমান্ডে আইসা পানি খাইতে চায়! বইতে দিলে শুইতে চায় হারামীর দল!"
পাবলো কেঁদে ফেলে।
মোটা গলা বলে, "চুপ শালা! নাম ক! নাম কী তোর!"
পাবলো ফোঁৎ ফোঁৎ করে নাক টানে।
মোটা গলা বলে, "নাম বল শালা!"
পাবলো ধরা গলায় বলে, "পাবলো!"
মোটা গলা এবার সপাং করে বেতের বাড়ি বসায় পাবলোর হাঁটুতে, "ডাকনাম পাবলো সেইটা তো আমিও জানি! ভালো নাম কী তর?"
পাবলো এবার ভাবতে থাকে, নামটা বলবে কি না।
মোটা গলা আবার বেতের বাড়ি দেয় পাবলোর হাঁটুতে। "কী রে শালা, নাম কস না ক্যা? ভুইলা গেলি?"
পাবলো দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবে, যা আছে কপালে। তারপর লম্বা করে দম নিয়ে বলে, "পাবলো দিয়েগো ক্ষোসে ফ্রান্সিস্কো দে পাউলা ক্ষুয়ান নেপোমুসেনো মারিয়া দে লোস রেমেদিওস সিপ্রিয়ানো দে লা সান্তিসিমা ত্রিনিদাদ রুইজ ঈ পিকাসো!"
ঘরে নীরবতা নেমে আসে। এক কোণে ফুটন্ত পানিতে শুধু টগবগ করে দু'টি মুরগির ডিম।
মোটা গলা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলে, "কী কইলি?"
পাবলো ধরা গলায় বলে, "পাবলো দিয়েগো ক্ষোসে ফ্রান্সিস্কো দে পাউলা ক্ষুয়ান নেপোমুসেনো মারিয়া দে লোস রেমেদিওস সিপ্রিয়ানো দে লা সান্তিসিমা ত্রিনিদাদ রুইজ ঈ পিকাসো!"
পাশ থেকে একজন বলে, "স্যার এত লম্বা নাম আমি নোট করতে পারতেসিনা। টেপ রেকর্ডারটা অন করবো?"
মোটা গলা বলে, "না থাক! নোট কইরা কাম নাই! এই সুমুন্ধির পুতরে সোজা ক্রসফায়ারে দ্যাও। মজাক মারে শালার ভাই! নাম জিগাই হ্যার, নাম কয় চৌদ্দগুষ্ঠির! ... খাড়া নাটকির পো, তোর মশকরা বাইর করি! দবীর! দবীর!"
চিকন গলায় দবীর সাড়া দেয়, "জ্বি স্যার!"
মোটা গলা বলে, "এইটারে ক্রসফায়ারে দাও। তারপর আশেপাশে কয়েকজনরে বলবা মিষ্টি কিনে আনন্দমিছিল বের করতে। কুখ্যাত সন্ত্রাসী রংবাজ পাবলোর মৃত্যুতে এলাকাবাসী আনন্দমিছিল করবে। সম্বাদিগরা নাম চাইলে কইবা মোহাম্মদ পাবলো!"
দবীর বলে, "স্যার নামের শুরুতে মোহাম্মদ দিলে যদি সমস্যা হয়?"
মোটা গলা বলে, "কী সমস্যা?"
দবীর বলে, "স্যার আরিফের ঘটনা মনে নাই?"
মোটা গলা বলে, "ও আইচ্ছা। তাইলে পাবলো চৌধুরী বানাইয়া দিও।"
দবীর বলে, "স্যার চৌধুরী একটু সফিস্টিকেটেড হইয়া যায় না?"
মোটা গলা বলে, "কী আপদ! তুমি কী দিতে বলো তাইলে? পাবলো ফকির?"
দবীর বলে, "স্যার এক কাম করি। এই পুরা নামটা ও যা কইতেসে সেইটাই দিয়া দেই সম্বাদিগগো! তারপর তারা পেপারে ছাপাইতে গিয়া হয়রান হৌক! নাম নিয়া গবেষণা করুকগা। তাইলে এইবার আর আমাদের গল্পের খুঁত বাইর করতে টাইম পাইবো না!"
মোটা গলা কিছুক্ষণ ভেবে বলে, "বুদ্ধিটা খারাপ না!"
পাবলো ডাক ছেড়ে কেঁদে ওঠে।
...
মন্তব্য
শাব্বাস।
'সম্বাদিগরা নাম চাইলে কইবা মোহাম্মদ পাবলো' এই পর্যন্তই তো ঠিক ছিল। দবীর বেটা বেশী কথা কয়।
নামের অংশে তুমুল ...
হাহাহহাহা...
বেচারা পাবলো!
-------------------------
ওলো সুজন আমার ঘরে তবু আইলোনা
এ পোড়া মনের জ্বলন কেন বুঝলোনা!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
পিকাসো কেন ঢাকায়?
লেখাটা পড়ে মুখ ধুইলাম ( মুগ্ধ হইলাম )
তবে এইটা যে আসলেই আঁকিয়ে পাবলো পিকাসোর পুরা নাম- এইটা আমি আগেই সন্ধ করসিলাম...ইয়ে মানে...আমি ঝান্তাম এইটা!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
- মুরগী ডিম্বের কোনো ব্যবহার তো চোখে পড়লো না। তাইলে ফুটাইলি ক্যান? গল্পে ফাঁকি মারছোস। দুই।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
প্রশ্ন আমারো, ডিম ফুটাইসেন কেন??
-বেশির ভাগ ক্রসফায়ারের কারণ একই আর মোটামুটি ঘটনাও।
.
___________________________________________
ভাগ্যিস, আমার মনের ব্যাপারগুলো কেউ দেখতে পায় না!
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
তারপর তারা পেপারে ছাপাইতে গিয়া হয়রান হৌক! নাম নিয়া গবেষণা করুকগা
হো হো হো
এই নাম নিয়ে গবেষণা তো জটীল হবে
আমি আপনার লেখা টা পড়ার পর ঠা-ঠা করে হাসার চেষ্টা করলাম অনেকক্ষণ, মুখে তো পারলাম না তাই টাইপ করে দেই...
ঠা-ঠা-ঠাআআআআআ
================================================
পরদেশী বঁধু, ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।
যদি গো নিশিথ জেগে ঘুমাইয়া থাকি,
ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।।
"পাবলো ঢোঁক গেলে" পর্যন্ত পড়েই বুঝতে পেরেছি পিকাসো নামের লুল্পুরুষটারে ফুটোস্কোপের চিপায় ফালাইছেন।
হেভী মজা পাইলাম, এততো জলদি নামের বাহার নিয়ে গল্প চলে আসবে, কল্পনা-ও করি নাই! বেশ মজা হইছে!
আচ্ছা, 'হোসে' ও 'হুয়ান' এর বদলে 'ক্ষোসে' ও 'ক্ষুয়ান' কি ইচ্ছাকৃ্ত?
কাকুল কায়েশ
স্প্যানিশ J এর প্রতিবর্ণ হিসাবে হ বা ক্ষ কোনোটাই সঠিক নয়। ঐ "হ" এর উচ্চারণটা প্রমিত বাংলায় নেই। সিলটি "ক" এর উচ্চারণ বরং এর কাছাকাছি। তবে হ এর চেয়ে ক্ষ বেশি কাছাকাছি।
যদ্দূর জানি শুদ্ধ উচ্চারণ "ক্ষোসে" আর "ক্ষুয়ান"ই হবে।
- ক্যা, "ফোঁসে" আর "ফুয়ান" হৈলে দোষ কী?
দুইটাই তো মিনিংফুল।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এটা সত্যি যে ওই 'হ' এর উচ্চারণ প্রমিত বাংলায় নাই, কিন্তু দুঃখের সাথেই বলছি যে 'ক্ষ' উচ্চারনটাও হবেনা! যদিও এতে আমাদের কোন লাভ-ক্ষতি নাই, তারপর-ও বললাম আর কি!
এজন্য বললাম যে আমার দুই মেক্সিকান বন্ধুর নাম 'হোসে' (Jose) এবং 'হিমেনা' (Jimena)......ওদেরকে যদি 'ক্ষোসে' আর 'ক্ষিমেনা' বলি, আমাদের বন্ধুত্ব আর থাকবেনা নিশ্চিত।
যাই হোক, এই চান্সে ওদের দুজনকে নিয়ে আমরা যে জোকস টা করি, একটু বলেই ফেলি......।
''ইন স্প্যানিশ, হোয়েন এ ওয়ার্ড স্টার্টস উইদ এ 'জে', ইট মেকস দ্য 'এইচ' সাউন্ড''......হোসে
''নো, নট অলওয়েজ। হোয়াট অ্যাবাউট গ্যাটো?''......হিমেনা:))
কাকুল কায়েশ
আহারে ! পিকাসো বেটায় ক্যান যে মরতে আইলো ঢাকায় !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
গল্পটা অসমাপ্ত কিংবা ব্যাকগ্রাউন্ডের কোন ঘটনা থেকে জাত মনে হচ্ছে।পরের / আগের অংশটুকু জানা না থাকায় অস্বস্তি লাগছে
একটা ফুটোস্কোপের কথা ভাবুন। তারপর সেটার ভিতর দিয়ে একটা দেয়ালের দিকে তাকান। দেয়ালের সবটা কি দেখতে পাবেন? নাকি গোল একটা অংশ দেখবেন কেবল?
এই ফুটোস্কোপিক গল্পগুলোও সেরকম। আগা আর মাথা বোঝা দুষ্কর। কেবল মাঝখানে খানিকটা বোঝা যায়।
আরো বিস্তারিত জানতে এখানে টিবি দ্যান।
অন্য গল্পগুলো তো আগে পড়িনি এমন না।এটা কেমন যেন অসমাপ্ত আর খাবলানো ঠেকেছে।আচ্ছা, বুঝিইনি হয়তো বা বেশি বোঝার চেষ্টায় তরল অংশটুকু এড়িয়ে যাচ্ছে।
- এই গল্পে লেখক ফাঁকি মারিছেন। এইটা আমি আগেই সন্দো কর্ছিলাম। লেখকরে আবারো কইষ্যা "দুই"।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
যাক পিকাসো আগেই মরে গিয়ে বেঁচে গেছে। এটা পড়লে নির্ঘাৎ গলায় ফাঁস দিতো!
==============================
ঢাকার মৌন ঘ্রাণে বকুলফুলের নাভি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
শেক্সপিয়ার! শেক্সপিয়ার!
জানতাম গল্পটা আসছে, তবে এতো দ্রুত এসে যাবে ভাবি নি। বাহ বাহ!
পাবলো এতো সহজেই কাইন্দা ফালাইলো...
তাইলে তো মরার সময় হাসবে... অল্পে ছাড় পাইছে দেখে।
-নীরবতা
কুইজ জীবনের শুরুর দিকে আঁতলামি করে এই নাম মুখস্থ রাক্সিলাম...পরে ভুইল্যা গেসি। শ্রীলঙ্কান বোলার চামিন্দা ভাসের পুরা নামটা অবশ্য এহনো মনে আছে... "ওয়ার্নাকুলসুরিয়া পাতাবান্দিগে উশান্ত যোশেফ চামিন্দা ভাস" !!!
_________________________________________
সেরিওজা
ডিম ফুটিয়ে ডিমের ব্যবহার না হওয়াতেই গল্পটা জমে উঠেছে। শেষ পর্যন্ত মনে হচ্ছিল এর পর কি ডিমের ব্যবহার হবে? কিন্তু গল্পে আমরা সেটা পাইনা। লেখকের স্বার্থকতা এখানেই যে পাঠককে তিনি ডিম নিয়ে মন্তব্য করাতে পেরেছেন।
কিন্তু ডিমতো ভঙ্গুর জিনিস!
হ। তয় সিদ্ধ গ্রম ডিম ভয়ঙ্কর!
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
হিমুদা, এইটা কইলাম সিরাম হয় নাই
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
শিব্রাম থাকলে কইতেন "নাম নিয়ে নামা"
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
পারো ও তুমি বাপু! কেমন করে কী দিয়ে কী একটা লেখো, আর কী একটা হয়ে যায়। এত বুদ্ধি নিয়ে ঘুমাও ক্যামনে? বালিশে মাথা দিয়ে না মাথার উপর বালিশ দিয়ে?
( এত সব কী'র ব্যাখ্যা চাওয়া যাবেনা, ওটা ফুটোস্কোপিক বুঝে নিতে হবে)
--------------------------------------------------------------------------------
ইমু ভাই, মজার হইসে ...
: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: :
'Cinema is over' - Master Godard
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
নতুন মন্তব্য করুন