১.
প্রথম আলোর এক খবর থেকে জানলাম, সরকার আর লাইসেন্স দেবে না, কলসেন্টার ভিলেজ গড়ে তুলবে।
সব সরকারের সব মন্ত্রীরই অবকাঠামো খাতে ব্যয়ের একটা বিরাট আগ্রহ থাকে। এর কারণটা সম্ভবত এরকম, অবকাঠামো নির্মাণ খাতের কাজগুলো সাঙ্গোপাঙ্গো চ্যালাচামুণ্ডাদের মধ্যে ভাগবাঁটোয়ারা করে দেয়া সোজা, বিল তোলার পর একটা অংশ মন্ত্রী আর ইনজিনিয়ারদের পকেটেও যায়, দেশেরও উন্নয়ন হয়েছে বলে চিৎকার করা যায়, সেই স্থাপনার নাম কোনো এক রহমানের নামে রেখে দলীয় নেত্রীর স্নেহভাজন হবার সুযোগ বাড়ে, এক ঢিলে পুরা পাখির স্কোয়াড্রন ফেলে দেয়া যাকে বলে। তাই সরকার যদি কোথাও একটি দেয়াল ঘড়ির অভাবও দেখে, সেই ঘড়ি ঝোলানোর জন্যে তারা চীনের প্রাচীর নির্মাণের প্রকল্প ফেঁদে বসে। এই ফাঁপা অবকাঠামো নির্মাণ রীতির কারণে আমাদের দেশে হাসপাতাল তৈরির নামে শুধু হাসপাতার ভবন তৈরি হয়, ভেতরের পরিষেবা আর নিশ্চিত করা যায় না।
কলসেন্টার ভিলেজ কথাটা শুনলেই প্রচুর নির্মাণ কাজ এবং এর সাথে জড়িত টেন্ডারপনার কথা মনে পড়ে প্রথমে। তবে আমাদের আপত্তির কিছু নাই, নির্মাণ না হলে ভিলেজ হবে কীভাবে, আর টেন্ডারপনা না হলে নির্মাণ হবে কীভাবে?
আশঙ্কিত হই খবরের এ অংশটুকু পড়ে,
জানা গেছে, কলসেন্টার ভিলেজ গড়ে তুলতে ইতিমধ্যে রাজধানীর কয়েকটি জায়গাকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী এবং বিটিআরসির চেয়ারম্যান বনানী ও মহাখালীতে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেডের (বিটিসিএল) দুটি জায়গা পরিদর্শন করেছেন। কারণ, কলসেন্টার ভিলেজে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত্ সরবরাহ এবং অন্যান্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা অবশ্যই থাকতে হবে।
এখানে একদম বিসমিল্লায় গলদ আছে মন্ত্রীমহোদয় ও পূজ্যপাদ কমিশনের অধিকর্তার। তাঁদের কাছে আন্তরিক অনুরোধ, ঢাকায় আর একটিও অতিরিক্ত স্থাপনা ও গণকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি না করার। বরং, এই ভিলেজটি আপনারা স্থানান্তর করুন ঢাকা থেকে দূরে কোথাও। ময়মনসিংহ বা টাঙ্গাইলে একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে কলসেন্টার ভিলেজটি স্থাপন করুন, সেখানে কোয়ার্টারের ব্যবস্থা করে দিন কর্মীদের জন্যে। অফ-গ্রিড ক্যাপটিভ পাওয়ারের ব্যবস্থা করে দিন। শ'পাঁচেক বা হাজার খানেক মানুষ নিয়েও যদি শুরু করেন, তাদের ঘিরে একটি অনুন্নত এলাকায় সার্ভিস বিজনেস গড়ে উঠবে। ঐ এলাকার কৃষিজীবী ও শ্রমিকদের ওপর এর অর্থনৈতিক প্রভাবও হবে ইতিবাচক।
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট কানেকশন নিশ্চিত করার জন্যে কেবল রাজধানী ঢাকার বনানী বা মহাখালীতেই ভিড় বাড়াতে হবে, সকাল সন্ধ্যার জাম বাড়াতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। ঢাকা থেকে ভিড় সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করুন, নতুন করে ভিড় আর যোগ করবেন না।
এই প্রকল্পের অর্থ বিনিয়োগেচ্ছু মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করা সম্ভব, পুঁজি বাজার থেকে। মানুষ বিনিয়োগের জন্যে মরিয়া, প্রচুর তরল অর্থে পুঁজিবাজার ভেসে যাচ্ছে, এ ধরনের প্রকল্প [সার্ভিস খাত] থেকে যেহেতু দ্রুত বিনিয়োজিত অর্থ ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই এটির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহও স্বাভাবিকভাবেই বেশি থাকবে।
২.
এই একই আউটক্রাউডিং সংস্কৃতির ধারাবাহিকতায় ঢাকা থেকে আগামী কয়েক বছরে সরিয়ে নিন গার্মেন্টস কারখানা আর বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে। ঢাকাকে বাঁচান। শহরটা যদি কথা বলতে পারতো, তাহলে হাঁপাতে হাঁপাতে আপনাদের মা-বাপ তুলে গালি দিতো।
মন্তব্য
সরকার মহোদয়, হিমুর বক্তব্যটা সম্ভবত আম-পাবলিকের বক্তব্য। দয়া করে ভেবে দেখুন। ডিজিটাল সরকার গড়তে ভাবনা-চিন্তাগুলোও আধুনিক হওয়া প্রয়োজন। আশা করি আপনাদের দিলে দয়া হবে।
- এই চুদির ভাইগুলা কি বধির নাকি কালা? ঢাকা বসবাসের অনুপযুক্ত শহর হিসেবে যে আখ্যা পেলো, সেটা কি খুব বেশি দিন হলো? মাথাভর্তি মাল নিয়া এই মালগুলা কেমনে যে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসে আছে সেইটাই একটা অপার বিস্ময়ের ব্যাপার মনে হয় আমার কাছে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আলুতে পড়ার সময়ে তেমন খেয়াল করি নাই, তবে আপনার লেখা পড়ে বুঝলাম গলদটা কোথায়। বনানী-মহাখালীর মত জায়গায় এরকম অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত নেয়ার মত পরিণামদর্শী বলদ আমাদের প্রিয় নেতারা নহেন। কারণটা শেষে কই।
পাঁচ হাজার মানুষের জন্য কর্মসংস্থান মানে ওই এলাকায় দিনে কমপক্ষে দশ হাজার নতুন ট্রিপ তৈরী হবে। এছাড়া এর ফলে ওই এলাকায় আরো নতুন ব্যাবসা সৃষ্টি করবে। মানে আরো কয়েক হাজার ট্রিপ তৈরী হবে। কিন্তু নতুন রাস্তা নাই। (মাটির তলে আর আকাশের মাঝখানে হাওয়াই পথ বানানো কথা শোনা যায়, কিন্তু ওইগুলা সবই আজাইরা ক্যাচাল; বাংলাদেশের এখনো এগুলো বানানোর মত ফিজিবলিটি আসে নাই।) আমাদের ঢাকা শহরের রাস্তা চর্বিদহুল অপরিণামদর্শী মানুষের মত। এমনিই অতিরিক্ত কোলস্টেরলে হ্রিদপিন্ড ( হ এর সাথে র মিলে রিদয় লিখে কেম্নে?) আছে দৌড়ের উপর, তার উপর আরেক বস্তা নতুন চাপাইলে আর কার্ডিয়াক অ্যা্রেস্ট লাগবে না, কার্ডিয়াক ক্রসফায়ার হবে!
এখানে আরেকটা কথা যোগ করতে চাই। তা হল জ্যামের কারণে যে সময় আমরা হারাই এবং যে পরিমান পরিবেশের ক্ষতি হয়, এর আর্থিক মূল্য কি ওই কর্মসংস্থান থেকে পাওয়া মুনাফা থেকে বেশী? যদি না হয় তাহলে যেভাবে হাজারিবাগে ট্যানারী থাকতে পারে না, সেভাবে এটাও এখানে হতে পারে না। একই কথা প্রযোজ্য ঢাকা শহরে অলিতে গলিতে গড়ে উঠা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির ক্ষেত্রেও।
আর বিদ্যু্তের যে যুক্তি সরকার দিচ্ছে তা আমার কাছে মুলা ঝোলানো মনে হচ্ছে। কয়েকদিন আগে আলুতেই দেখলাম সরকার উত্তরা, বনানী, গুলশান এলাকার জন্য একটা প্রকল্প হাতে নিচ্ছে যাতে ওইসব এলাকায় আর কখনো বিদ্যুৎ না যায়! সারা দেশে চরম শ্বাসকষ্টের মধ্যে বিদ্যুৎ আছে আর এর ভবিষ্যত যখন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত তখন এইসব কথা আমার অল্প মেমরির হার্ডডিস্কে ঢুকে না!
তবে এইসব কর্মসংস্থান অবশ্যই করা উচিত। আর আপনার কথা মত আমিও একমত যে এগুলো হওয়া উচিত ঢাকার বাহিরে। এতে ঢাকার উপর চাপ কমার পাশাপাশি ওইসব এলাকার উন্নতি হবে। এটা সারা দেশের জন্য ভাল হবে।
তারপরো এটা (যদি হয়ে থাকে) “অভিজাত পাড়া”তেই হবে। আমাদের নেতারা মোটেই বেকুব না। বেকুব হইলে কি আমাদের পাঁচ বছর ধইরা বেকুব বানায়? পরের টার্মে ঘরে বসে খিস্তিখেউর করা আর তার পরের নির্বাচনে জেতার জন্য টাকা না জমাইলে কেম্নে কি?
===অনন্ত===
এই পোস্টটা খুবই গুরুত্বপূর্ন একটা পোস্ট। নতুন অবকাঠামো নির্মান করুন, বেশ ভাল কথা। কিন্তু সেটা ঢাকায় কেন? যেখানে ঢাকাকে বাঁচাতে হলে ঢাকা থেকে শিল্প-কারখানাগুলা সরিয়ে নেওয়াটা এখন ফরয একটা কাজ, সেখানে এই সংবাদটা পড়ে খুব আতংকিত হয়ে পড়লাম।
আমাদের এই দাবি কি সরকারের কানে পৌঁছানো সম্ভব? যদি না পৌঁছানো যায়, তাহলে প্রানপ্রিয় ঢাকার মৃত্যু নিজ চোখেই দেখে যাব এটা সুনিশ্চিত।
====================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
এই ব্যাপারটা আসলেই কখনোই হবে না। অন্তত: সাম্প্রতিক সময়ে তো নয়ই। বড় বড় সভা-সমিতিগুলোকে জ্ঞানী-গুণীগণ যতই বলুক, ঢাকার বাইরে ঢাকাকে ছড়িয়ে দিতে হবে, কিছুই তো হচ্ছে না। বরং চারদিক আরো অগোছালো হয়ে যাচ্ছে। সুষ্ঠু কোন পরিকল্পনা নেই কারো। কেউ আগামী ২০ বছর পর অবস্থা কি হবে, সেটা নিয়ে ভাবিত না, সবাই চিন্তায় কেবল এই ৫ বছর কোনভাবে পার করে দেওয়া, লুটেপুটে দেশটাকে খাওয়া, আর পরবর্তী ৫ বছরের জন্যে মেদ সঞ্চয় করে রাখা।
কাল পত্রিকায় আরেকটা সংবাদ এসেছে, "বিশ্বের সবচেয়ে বাজে শহরের তালিকায় ঢাকায় স্থান প্রথম পাঁচের মাঝে" বা এই জাতীয়। এখন যেটুকু শ্বাস নেওয়া যায়, কিছুদিন পর অবস্থা এমন হবে, সবাই ঘর থেকে বের হবার সময় "অক্সিজেন মাস্ক" পরে বের হবে।
আর, জ্যামের কথা তো উপরে একজন বলেই দিয়েছেন, সেটার কথা না হয় এখানে উহ্যই থাক। এত এত মানুষ আসবে, কর্মসংস্থান হবে। আর, তাদের পরিবারসহ এখানে আসলে তারা কোথায় থাকবে, তাদের জায়গা হবে কোথায়??
- মুক্ত বয়ান
বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘমেয়াদী একটা পরিকল্পনাই করে, নিজেদের ক্ষমতা কীভাবে অবৈধ উপায়ে টিকিয়ে রাখা যায়। বাকি সবকিছুই করে স্বল্পমেয়াদী। ৫টা বছর সময় পেয়েছে, আবার কবে না কবে ক্ষমতায় আসে, এলেও মন্ত্রী হওয়া যাবে তার নিশ্চয়তা নাই, এই ৫ বছরের পুরোটা সময় মন্ত্রিত্ব টেকে কি না তার নিশ্চয়তাও নাই, অতএব ওলটপালট করে দে মা লুটেপুটে খাই।
ঢাকায় যারা বাস করবো, তারা মলস্তুপের মধ্যে ডুবতে ডুবতে গুয়ের দলা থুতনি পার না হওয়া পর্যন্ত চিৎকার করবো না। আর তখন চিৎকারটাও বেশি স্থায়ী হবে না, মুখে গু ঢুকে মুখ বন্ধ হয়ে যাবে।
হা হা হা হা!!
সেটাও তো তারা দীর্ঘমেয়াদী করে বলে মনে হয় না, তাইলে তো আর ৫ বছর নিয়া ভাবনা করা লাগতো না।
যেইটা ঠিক মত করে মনে হয়, ক্যামনে বিপক্ষ দলরে উস্কানি দেওয়া যায়, আর বিপক্ষ দল করে হইল, ক্যামনে সরকাররে ল্যাং মারা যায়। এর জন্য এবার যার ল্যাজ ধরা লাগে লাগুক, সেটা উর্দি পরাও হতে পারে, কিংবা ল্যাঞ্জা ওয়ালা সাপও হতে পারে।
শ্যাষের কথার সাথে একমত। আর, তখন সুশীলদের অবস্থা কি হবে ভাবছেন?? 'জাত গেল, জাত গেল' কইরা দেশ ছাইড়া ভাগবে, অথবা, "এখানেই হবে আপনার স্বপ্নের আবাস" এই রকম কোন একটা জায়গায় দাঁড়াইয়া বড় বড় কথা কইবে,"আজ থেকে ৫০ বছর আগে আমরাই সবার আগে ভবিষ্যৎবাণী করেছিল, গোলটেবিল বৈঠক করেছিলাম, আমাদের পত্রিকায়.."
যতসব বিচ্ছিরি মানুষের দল।
- মুক্ত বয়ান
নিজের পায়ে কুড়াল মারার ব্যাপারে বাংলাদেশিরা খুবই দক্ষ। বসবাসের অযোগ্য হিসাবে ঢাকা এবারে ২য় অবস্থানে ছিলো, চ্যাম্পিয়ন না করে নিস্তার নেই বলে মনে হচ্ছে।
-----------------------------------
আমার জানলা দিয়ে একটু খানি আকাশ দেখা যায়-
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
কয় কী! অবস্থা এতো করুণ?
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
আপাত দৃষ্টিতে সরকারের উদ্যোগটা তো ভালই লাগল। কল-সেন্টারের বৈশ্বিক বাজারের কথা বাদ দিলেও এর একটা বড় অভ্যন্তরীণ বাজার আছে এই মুহূর্তে। কিন্তু ...
আসল বিষয়গুলি উল্লেখ করেছেন লেখায়...।
ঢাকার বাইয়ে সম্পসারণ/স্থানান্তরের অনেক কথাই ‘শোনলাম’, এখন পর্যন্ত তেমন কিছুই ‘দেখা’ গেল না। শুধু গত দুই দশকে দেখলাম চিটাগাং থেকে মাল্টিন্যাশেন্যাল গুলি ঢাকামূখী হল। মাঝে মাঝে সিম্পটমের ক্ষণিক সমাধানের জন্য বিশাল টাকার TUPE জাতীয় চিকিৎসা হয়, আসল অসুখ বাড়তেই থাকে। বড় বড় কথা শুনি, সামগ্রিকভাবে কিছুই হয় না। দিন দিন আরও কঠিন হয়ে উঠছে ঢাকার পরিস্থিতি, তবে আমরাও সব কিছু মেনে নিয়েছি।
এই ফেব্রুয়ারী মাসের এক সন্ধ্যায় প্রবাসী এক ভদ্রলোককে ধানমন্ডি থেকে শাহবাগের দিকে একটা স্থানে নিয়ে যাচ্ছিলাম। জানিনা কতক্ষণ জ্যামে ছিলাম। পৌনে সাতটায় কোন একটা রেডিও চ্যানেলে খবর শুনলাম, সারে সাতটায় বিবিসি, তারপর আড়ড়জে...। চরম সুশৃঙ্খল পরিবেশ, লোকজন গাড়িতে বসে শান্ত ভাবে রেডিও শুনছে, মোবাইল ফোনে কথা বলছে। বিরক্তিকর হর্ণের শব্দ ছাড়া সবকিছু এত ছিমছাম... মাঝে মাঝে গাড়ি কিছুটা এগোয়...। ভদ্রলোক আমাদের ভদ্রতা দেখে মুগ্ধ হলেন। আমরা আমাদের জীবনকে ‘অ্যাডজাস্ট’ করে নিয়েছি। সন্ধ্যার পর অমুক দিকে যাওয়া যাবে না - ছিনতাইকারী ধরবে, সন্ধ্যায় যদি কোন বিশেষ কারণে ধানমন্ডি থেকে শাহবাগের দিকে যেতেই হয় আগেই হিসাব করে নিতে হবে। রাসেল স্কয়ার থেকে পান্থপথ দিয়ে সোনারগাঁও হোটেলের ট্র্যাফিক সিগন্যাল পার হতে মিনিম্যাম ২ ঘন্টা, অথবা রাসেল স্কয়ার থেকে এলিফেন্ট রোডের মোড়ে... ১ থেকে ৩ ঘন্টা। ......
তবে আমাদেরকে স্বপ্ন দেখায়, আমার স্বপ্ন দেখি, সিংগাপুরের মত এমআরটি, ব্যাংককের স্কাই-ট্রেন... আরও বড় কিছু... ম্যাগলেভ।
ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে এধরণের প্রযেক্টে টাকা তোলার ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটা আলাদা লেখা দিবার আশা রাখছি।
ধন্যবাদ আপনাকে।
দেশের উন্নতির অন্তরায় হিসেবে এ পোস্টের নিন্দা জানাই। ঢাকা থেকে গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদালত, কল-কারখানা, বিদ্যালয়-মহাবিদ্যালয়-উত্তরদক্ষিণপূর্বপশ্চিমঈশাননৈঋতঅগ্নিবায়ুঊর্ধঅধঃবিশ্ববিদ্যালয়, কলসেন্টার, ক্রিকেট-ফুটবলের স্টেডিয়াম ইত্যকার গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক ক্ষেত্রসমূহ রাজধানীর বাইরে স্থানান্তর করা রাজধানী শহর ঢাকাকে পঙ্গু করার নামান্তর। সরকারের সময়োপযোগী যুগান্তকারী নীতির ফলে কালো টাকা সাদা করার জন্য আইন পাস করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ভূমিক্রয় ও স্থাপনা নির্মাণকে বিশেষ ভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে। ফলে দেশের যতো চোর-ছ্যাচোড়-পাতিনেতা-উপনেতা- ক্যাডার-মহাক্যাডার এবং অভিজাত রহমানবংশীয় লোকজন তাদের সঞ্চিত টাকা সুইস ব্যাঙ্কের মতো বিদেশ-বিভূঁইয়ে ইনভেস্ট না করে ঢাকা শহরের জমিক্রয় কাজে বিনিয়োগ করছেন। এমতাবস্থায় ঢাকা শহরকে জনবিরাণ করার ষড়যন্ত্র এইসব ক্রয়কৃত জমির মূল্যকে এমনভাবে হ্রাস করবে যে, কেউই আর কালোটাকা বিনিয়োগ করবে না। দেশের অর্থনীতির চাকাও মুখ থুবড়ে পড়বে। ঢাকা বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে।
তবে ঢাকা বাঁচবে কিভাবে? ঢাকার পাতাল খুঁড়ে সুড়ঙ্গ করার হবে, সেখান দিয়ে বিআরটিসির বাস চলবে, ট্রাম চলবে, বিদেশীদের কাছে আমাদের নামোজ্জ্বল হবে, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বাড়বে।
সুড়ঙ্গ খোঁড়ার টাকা পাবো কোথায়? সে যখনকারটা তখন চিন্তা করা যাবে। দাতাগোষ্ঠীর সাথে সুসম্পর্ককে সরকারের সাফল্য হিসেবে দেখানো যাবে। আচ্ছা, বন্যার পানি ঠেকানো যাবে কিভাবে? এইডা আসলে কোনো প্রশ্ন না। ঢাকার রাস্তায় পানির ভিতর দিয়া চলাচলের এক্সপেরিয়েন্স যেহেতু আমাদের বাসরিক্সার আছে, সেহেতু সুড়ঙ্গের ভিতর দিয়া সেই এক্সপেরিয়েন্স নিয়ে এক্সপেরিমেন্টও চালানো যাবে। টাঙ্গাইল ময়মনসিংয়ে আছেটা কি? সেখানে অফিস আদালত বসাইয়াই বা লাভ কি? আর টাঙ্গাইল তো প্রথমেই বাদ, কাদের সিদ্দিকীর এলাকা। ধুর, বাঙালি দ্যাশের ভালো চায় না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর দেশের বাড়িতে/নির্বাচনী এলাকায় করলে তো তারই ভোট বাড়বে। এই বুদ্ধিটা তারে কেউ দেয় নাই? নাকি তার নির্বাচনী এলাকা বনানী-মহাখালি?
সত্যি বলতেছি, ঢাকাটা একেবারে বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে দিনে দিনে। নতুন কিছু তো দূরের কথা, আগে এখান থেকে সরাতে হবে কিছু। কিন্তু ঢাকা থেকে কেউ সরে না। ১৫ কোটি মানুষ গিজগিজ করে যেন ঢাকাতেই থাকতে চায়।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ঢাকার ওপর চাপ কমাতে কলসেন্টারকে ঢাকার বাইরে পাঠনো আসলে সমাধান নয়। এখানে সামগ্রিক ভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অর্থনীতির কাঠামোকে দায়ি মনে করি। সবার আগে দরকার স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা। যেটা রাজনৈতিক কারনে কোন সরকারই করেনি বা করতে চায়নি। স্থানীয় সরকারের হাতে যথেষ্ট ক্ষমতা না থাকলে নগর ব্যবস্থায় বিকেন্দ্রিকরন সম্ভব নয়। কলসেন্টারকে ঢাকার বাইরে রপ্তানী করার ধারনাটা সেক্ষেত্রে ফলপ্রসু নাও হতে পারে। অন্যভাবে বলা যায় প্রশাসনিক বিকেন্দ্রি করন না করে অর্থনৈতিক বা ডেমগ্রাফিক বিকেন্দ্রিকরন আশা করলে তা কিছুটা ঘোড়ার আগে গাড়ি জুরে দেবার মত হবে আরকি।
ভিলেজ পলিটিক্সের বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার কি একটা কল-সেন্টারও সামলাইতে পারবে না?!? স্বাভাবিকভাবেই একজন ডিসি বা এমপির চেয়ে হাসিনার পাওয়ার বেশি। কিন্তু কলসেন্টার সামলানো বা পারমাণবিক চুল্লী স্থাপন বা স্টেডিয়াম নির্মাণের সাথে তার সম্পর্ক কি? ঢাকার বাইরে কি নিরাপত্তার অভাব? নাকি অন্য কোনো কারণ? একটু উদাহরণ দিয়া বুঝাইয়া বলেন।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
খুবই প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন। তবে সমস্যাটা ঠিক সামলানো নিয়ে নয়। সমস্যাটা হচ্ছে বিনিয়োগ আর লেবার পূল নিয়ে। কল সেন্টারের পেছনে যারা বিনিয়োগ করবেন তারা কারা? কোথায় থাকেন? যারা সেখানে কাজ করবেন তারা কারা, কোথায় থাকেন? অর্থাৎ লেবার পুলটা কোথায়? অর্থাৎ কোথায় এদের সবাই কে একসাথে পাওয়া যাবে? কতটুকু দক্ষতার প্রয়োজন এগুলো বিবেচনা করলে পাশাপাশি আবার দেখা দরকার যে আমরা কিন্তু কল সেন্টারকে শিল্প হিসাবে সফল দেখতে চাই তাহলে এমন কিছু করা উচিত নয় যেটা এর সাফল্যকে কঠিন করে দেবে। স্থানীয় ভাবে বাংলাদেশে যদি বাইরে থেকে কেউ বিনিয়োগ করে মুনাফা নিয়ে চলে যায় সেটা ভিলেজ পলিটিশিয়ানরা ভাল ভাবে দেখেন না। এসব কারনে বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশের সূচক সব সময়ই অনেক নিচে।
আমি বলছি না ঢাকায় কলসেন্টার হওয়াটা একটা ভাল ব্যপার হচ্ছে। কিন্তু এটাকে ঢাকার বাইরে পাঠানোটাও সমাধান নয়। অর্থাৎ কল সেন্টার ঢাকার বাইরে পাঠানোর আগে দেখার দরকার ঢাকার বাইরে সেই পরিবেশ কেন তৈরি হয়নি। সেই কারন দূর না করে কল সেন্টার ঢাকার বাইরে পাচার করলে সমাধান হবে না।
কেতাবি ভাষায় বললে বলব ফিসকাল বিকেন্দ্রিকরন না হলে স্থানীয়ভাবে বড় মাত্রার পরিচালন ব্যবস্থা কাজ করবে না। সে সব কারনেই ঢাকা বা চট্টগ্রামের বাইরে গার্মেন্টস শিল্পের কনসেন্ট্রেশন তেমন দেখা যায় না। আপনি ভাবুন যদি আপনার এখন একটা গার্মেন্টস কারখানা করার ইচ্ছা এবং সামর্থ্য থাকে আপনি কোন যায়গাটিকে বেঁছে নেবেন? অন্যভাবে বলতে গেলে ঢাকার ওপর চাপ কমানোর একটা অন্যতম উপায় হবে ঢাকার বাইরে প্রশাসনিক বা ফিস্কাল ক্ষমতা বাড়ান। তাদেরকে হাসিনার চেয়ে শক্তিশালি হতে হবে এমন কথা নেইম কিন্তু নিজেদের ভাল মন্দ স্থানীয় ভাবে নিজেরা মানুষ বুঝতে পারে এই আস্থাটুকু রাখতে হবে। সংসদে বসে দেশের কোন থানায় কোন রাস্তায় কতটাকা দিতে হবে তার সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন আর সেটা কাম্যও নয়। কিন্তু দুঃখজনক ভাবে সেটাই আমাদের দেশে (কম বেশি সবখানেই হয়) হয়ে থাকে।
এই পোস্টের উদ্দেশ্যের সাথে আমার দ্বিমত নেই। কারন ঢাকার বর্তমান অবস্থা যে অত্যন্ত শোচনীয় সেটা নিয়ে অনেক দিন ধরেই পেশাগত পরিসরে চেচামেচি করে আসছি। কিন্তু দ্বিমত হচ্ছে প্রক্রিয়া নিয়ে। আমি বলছি বাংলাদেশের নগর ব্যবস্থায় এইযে প্রাইমেসি সেটার কারন দূর না করে কেবল কিছু ফলাফলকে এদিক সেদিক ছড়িয়ে দিলে সেটা কার্যকর হবে কিনা সেটা ভেবে দেখা দরকার।
কলসেন্টার ঢাকার বাইরে পাঠানো দিয়েই অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণের কাজটা শুরু হোক না।
এরকম হলে যে ডেডলক অবস্থা হবে, সেটা তো আর কোনো সমাধান না। যেহেতু মানুষের জীবন উত্তরাধুনিক অনিরসনযোগ্য সন্দেহের ওপর বেইজ করে চলছে না, সেহেতু কোথাও না কোথাও বিকেন্দ্রীকরণটা শুরু করতেই হবে। সেটা যতো তাড়াতাড়ি করা যায়, ততোই মঙ্গল।
আপনি উন্নয়নের যে কথাটা বলছেন, সেটা একটু অন্যদিক দিয়েও দেখা যায়। কলসেন্টার মফস্বলে গেলে সেটা চালানোর দক্ষতাসম্পন্ন লোকজনও মফস্বলে যাবে। তাদের প্রয়োজন মেটাতে দরকারী স্কুল যাবে, পেট্রোল পাম্প যাবে, ডাক্তার যাবে, হাসপাতাল যাবে। হাসপাতাল আগে যাবে, নাকি কলসেন্টার আগে, সেইটা নিয়া প্যাচাইয়া কি লাভ! যার পোষাবে না, সে কলসেন্টারের জবে না গেলেই হলো। যেহেতু লোকজন গ্রামীণের জব নিয়া ঢাকার বাইরে থাকতে পারে, সেহেতু দক্ষ এবং ইচ্ছুক লোকও পাওয়া যাবে।
আর বিনিয়োগের যে সমস্যা এটা সারা বাংলাদেশেরই সমস্যা, ঢাকা আর মফস্বলে হয়তো সমস্যার ধরন একটু আলাদা; কিন্তু বেসিক চরিত্র একই।
মোটকথা, যেহেতু ঢাকায় স্থাপনা আর গাদাগাদি বাড়ছে, সেহেতু কর্মসংস্থানের বিকেন্দ্রীকরণ প্রয়োজন। আর এটা যেহেতু প্রয়োজন, সেহেতু প্রাথমিকভাবে কিছু ইনফ্রাস্ট্রাকচারের সমস্যা থাকলেও সেটা নিয়েই চলা শুরু হোক। সবসময় সবকিছু পারফেক্টলি হাতের কাছে তৈরি থাকে না, সময় নিয়ে তৈরি হয়।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ভাল বিশ্লেষন করেছেন, তবে সমস্যাটা আসলে ঠিক 'ডিম আগে না মুরগী আগে' ধরনের না। বরং এখানে সমস্যা হচ্ছে শহরগুলোর নিজদেরকে উন্নত করার স্বাধীনতা কতটা, এই ব্যপারে তাদের কি করার আছে ইত্যাদি নিয়ে। এমনকি ঢাকার মেয়রের হাতেও ঢাকার পরিচালনের ক্ষেত্রে ক্ষমতা খুবই সীমিত। বিকেন্দ্রি করনের ব্যপারটা প্রথমত রাজনৈতিক এবং পরিচালন ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরনের মাধ্যমে না হলে অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রিকরন আসলে বিসিক জাতীয় গোচারন ক্ষেত্রের তৈরি করতে পারে, তাছাড়া কলসেন্টারের মত একটা খাত যা কিনা এখনো বড় স্কেলে দাঁড়িয়ে যায়নি সেটা নিয়ে এমন এক্সপেরিমেন্ট করা ঠিক হবে না বলেই আমি মনে করি।
এক অর্থে হয়ত এই বাস্তবতা মেনেই নিতে হবে যে সরকার ক্ষমতা কেন্দ্রীভুত রাখতেই চাইবে বছরের পর বছর, সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিকেন্দ্রীকরন কখনো হবেনা যদি ধরে নেন তাহলে প্রশ্ন আসবে যে রাজনৈতিক বিকেন্দ্রীকরন না করেই অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রিকরন করা হোক। সেক্ষেত্রেও সেক্ষেত্রেও বলতে হয় শিল্প ক্ষেত্রে বাহ্যিক প্রভাব আরোপ করাটা কস্ট বাড়িয়ে দিতে পারে। একজন বিনিয়োগ কারী বাজারের সিগনাল দেখেই ঠিক করেন কোথায় বিনিয়োগ করা লাভজনক হবে, আর কোথায় ব্যবসা হবে না। এই স্বাধীনতা যতটা খর্ব হবে ততই দেখা যাবে বিনিয়োগ যোগ্য তারল্য অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে।
দেশের কৃষক থেকে শুরু করে শিল্পপতি সবাই নানাভাবে কর দেন যেখান থেকে সরাকারের কর্মকান্ড চলে। কিন্তু অনেক দেশের তুলনায় আমাদের দেশে করের হার কম। আর মানুষের কর দেয়ার ব্যপারে আগ্রহও কম, কাজেই চাইলেও কর বাড়ান কঠিন কারন করের টাকা খরচ কিভাবে হয় তা নিয়ে মানুষের মনে আস্থার অভাব রয়েছে। এই অবস্থায় স্থানীয় পর্যায়ে যদি প্রশাসনের হাতে নিজদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় নাগরিকদের সম্পৃক্ত করার সুযোগ থাকত তাহলে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অনেক দূর যাওয়া যেত, কিন্তু এখন টাকার জন্য কেন্দ্রের দিকে তীর্থের কাকের মত তাকিয়ে থাকতে হয় নগর কর্তৃপক্ষগুলোকে আর ছোট ছোট মফস্বলগুলোর ক্ষমতাতো আরো কম।
মোদ্দা কথা হচ্ছে কল সেন্টার এখনো অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রিকরনের এক্সপেরিমেন্ট করার মত খাত হয়ে ওঠেনি। গার্মেন্টস শিল্প বিশ্ববিদ্যালয় এগুলো নিয়ে এধরনের এক্সপেরিমেন্ট করা যেতে পারে কিন্তু কল সেন্টার খাতটি হয়ত এখনো তৈরি নয়।
দেখুন, কলসেন্টার নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট যদি ঢাকায় বসে করা হয় এবং ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়, তখন কি কলসেন্টার ঢাকা থেকে সরানো যাবে? আমার তা মনে হয় না। বরং আরো গিজগিজ করে আরো সব ভিলেজ গড়ে উঠবে। এই কলসেন্টারে কাজ করতে আরো লোক ঢাকার বাইরে থেকে ঢাকায় ছুটে আসবে। ফলাফল, শহরটা আরো মরবে।
আপনি যা বলছেন, সে কথাগুলো সঠিক, কিন্তু সেটা দাঁত মাজতে যাবার আগে টয়লেটের ব্যাকটিরিয়ামের ডিএনএ প্রোফাইল তৈরির মতো শোনাচ্ছে।
কল সেন্টারে যারা বিনিয়োগ করবে, তারা লাভের সম্ভাবনা দেখলে ঢাকার বাইরে গিয়েও করবে। আমি স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করার সপক্ষে, কিন্তু সেই কাজ করার আগে এ ধরনের প্রকল্প ঢাকার বাইরে নেয়া যাবে না, এমন ফতোয়া মেনে নেয়ার পেছনে কোনো যুক্তি খুঁজে পেলাম না আপনার বক্তব্যে।
এই মেটাফরটা কতটা খাটে জানিনা, কেন বললেন সেটাও আপনিই ভাল জানেন। তবে নগর ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরন যতটা সরলভাবে দেখছেন ততটা সরল নয়। প্রথমে দেখা দরকার এই প্রাইমেট ধরনের নগর ব্যবস্থা বাংলাদেশে কেন হল?
যদি প্রাইমেসি ঠেকানর সবচেয়ে ট্যানজিবল নীতি পদক্ষেপ কি হবে এমন প্রশ্ন করা হয় তার উত্তর হবে জ্বালানী থেকে ভুর্তকি তুলে নেয়, প্রয়োজনে কর আরোপ করা এটা করলে খুব অল্পসময়ে ঢাকার চেহারা পালটে যাবে। তার ওপর সিএনজি ব্যবহারের দরুন মাইল প্রতি পরিবহর খরচ যত কমে গেছে সেটার সুবিধা ভোগী হয়েছে প্রাইভেট গাড়ীর মালিকেরা। আমার স্বল্পবুদ্ধিতে যেটা বুঝি, ঢাকার বর্তমান কারন হচ্ছে জ্বালানীতে ভুর্তকি আর সিএনজির ব্যবহার। এটাকে রিভার্স করা না গেলে অর্থনৈতিক গ্রাউণ্ডে দরকারি পরিবর্তন হবে না এটা জোর দিয়ে বলতে পারি। মানা না মানা আপনার ইচ্ছা।
অবশ্যই। কিন্তু স্বল্পমেয়াদে ঢাকার বাইরে তাদের পক্ষে লাভের সম্ভাবনা দেখার সম্ভাবনা কম সেটাই বলতে চাচ্ছিলাম আরকি। আর এখন যদি কল সেন্টারকে ঢাকার বাইরে পাঠান যায় একই উপায়ে ভবিষ্যতে কেন পাঠান যাবে না সেটা পরিষ্কার নয়। প্রোডাক্ট সাইকেল বলে একটা ধারনা আছে অর্থনীতিতে (আগ্রহি হলে গুগল স্কলারে product and profit cycle আর regional development দিয়ে সার্চ দিয়ে দেখতে পারেন, আরো আগ্রহী হলে আমি নিজেও আপনাকে নিবন্ধ খুঁজে দিতে পারি), একটা শিল্প গড়ে ওঠার প্রথম কয়েক বছরে সেটা বড় বড় কেন্দ্রের কাছাকাছি যায়গায় কেন্দ্রিভুত থাকে, পরে যখন স্ট্যান্ডার্ডাজড হয় তখন কেন্দ্রথেকে দূরে চলে যায় আপনা থেকেই। কিন্তু বাংলাদেশে আপনা থেকে কেন্দ্র থেকে দূরে যাবার পরিবেশ নেই বলে সেটা হয়ে উঠছে না। জোর করে নতুন কোন খাতকে বাইরে পাঠানটা আমার কাছে একটা কাউন্টার ইন্টুইটিভ ধারনা মনে হয়, যদিও উদ্দেশ্যটাকে সমর্থন করি প্রক্রিয়াটিকে নয়। টেকসই নগরায়নের জন্য রাজনৈতিক কাঠামোগত পরিবর্তনের বিকল্প নেই। তবে একটা বিষয় ভাল লাগছে যে ঢাকার জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে এখন জোরেশোরে আওয়াজ উঠছে। কিন্তু পদ্ধতি নিয়ে অবশ্যই আলোচনার দরকার আছে। প্রথমত আমার মনে হয়না ঢাকার বাইরে বিনিয়োগের ব্যপারে বিনিয়োগ কারীরা আগ্রহী হবেন, অন্তত কল সেন্টারে। ব্যতিক্রম হলেত ভালই। আর এমজি সেক্ষেত্রে তুলনামূলক ভাবে সম্ভাবনা রাখে। আস্তে আস্তে সেগুলোকে সরান যেতে পারে।
যেকোন নতুন সম্ভাবনাময় খাত কোন দেশের অর্থনীতিতে আসলে সেখানে সরকারের অনেক শিথিলতা দেখানর প্রয়োজন পরে আর আমাদের দেশে হয় তার উল্টা (যার দরুন আরএমজির পর এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্রেকথ্রু চোখে পড়েনি)। ধরুন এখন যদি তৈরি পোষাক শিল্পের ওপর কোন রকম কড়াকড়ি আসে প্রতিবাদ হবে কারন সেটা অর্থনীতির চালিকা শক্তি, একে নষ্ট কোরো না। কিন্তু নতুন সম্ভাবনা ময় শক্তির বেলায় ছাড় দরকার বেশি। শিল্পোন্নয়ন বিষয়ে গবেষনা করেন তাদেরই কথা এগুলো আমার কথা না। কাজেই ফতোয়া কোনটাকে বলবেন সেটা আপনার বিবেচনার জন্যই থাকল।
প্রাইমেসি নিয়ে আপনার মতকে সমর্থন করি। আপনি এ নিয়ে একটা স্বতন্ত্র পোস্ট দিন, বিষয়টি আগ্রহোদ্দীপক।
আপনি যে প্রক্রিয়াটির কথা বলছেন, সেটি দীর্ঘমেয়াদী। আমি বলছি মধ্য বা হ্রস্বমেয়াদী প্রক্রিয়ার কথা। আর আপনি যে শিল্পের ক্ষেত্রে কেন্দ্রসংলগ্নতার কথা বলছেন, সেটি কলসেন্টার শিল্পের জন্যে প্রযোজ্য না-ও হতে পারে। আর ঢাকার অবস্থা এমনই দাঁড়িয়েছে, যে কিছু ব্যতিক্রম এখন এনফোর্স করতে হবে। আপনি যদি বলেন, এনফোর্স করা যাবে না, বইতে লেখা নেই, সেক্ষেত্রে আমার আর কিছু বলার নাই।
এনফোর্স করা যাবে না এমন বলছিনা। হয়ত শিল্পটা মাঠে মারা যেতে পারে শঙ্কাটা সেখানেই।
ব্যতিক্রম থাকা সম্ভব নয় এমন নয়। তবে সেক্ষেত্রে বিনিয়োগকারি আর সরকারের নীতি নির্ধারকেরা একসাথে বসলেই উত্তর জানা যাবে। প্রক্রিয়াটি এমনই হতে হবে। আর স্বল্পমেয়াদের ক্ষেত্রে আমার মতে জ্বালানির মূল্যটাই সবচেয়ে দরকারি ক্ষেত্র যেখানে নজর দেয়া উচিত।
সময় পেলে নিচের পেপারটি পড়ে দেখতে পারেন, একটু টেকনিকাল, অর্থনীতির টার্ম ব্যবহার করা হয়েছে, কিন্তু আমেরিকার স্প্যাশিয়াল ইকনমিতে শিল্পের তুলনামূলক বিস্তরনের একটা ছোটখাট ইতিহাস আছে এখানে।
Norton, R D and J Rees. 1979. The product cycle and the spatial decentralization of American manufacturing, Regional Studies 13: 141-51
এছাড়াও অন্যান্য দেশের শিল্পায়নের ইতিহাসও কমবেশি প্রোডাক্ট সাইকেলের তত্ত্বকে সমর্থন করে।
তবে দীর্ঘমেয়াদে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরন কেবল নগর ব্যবস্থার বিন্যাস ঠিক করার জন্য নয় দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যও একটা বড় নিয়ামক হতে পারে। যারা ভাল লেখেন তাদের প্রতি অনুরোধ এর দরকারকে তুলে ধরুন। দীর্ঘমেয়াদে দেশকে পালটে দিতে পারে এটা। একসাথে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব যদি অর্থবহ প্রশাসনিক সংস্কার হয়।
উপরের পেপারটা পড়ে যদি আরো আগ্রহ থাকে তাহলে Charles M. Tiebout এর লেখা নিচের পেপেরটি পড়ে দেখতে পারেন। কেন আর কিভাবে প্রশাসনিক কাঠামো বিশেষ করে ফিসকাল (বাংলা প্রতিশব্দ জানিনা ভাই) বিকেন্দ্রিকরন দরকারি এই পেপার থেকে ধারনা পাওয়া যেতে পারে। এটা কোন টেক্সট বই নয় একটা সেমিনাল পেপার।
A Pure Theory of Local Expenditures, The Journal of Political Economy, Vol. 64, No. 5 (Oct., 1956), pp. 416-424
ভদ্রলোক আমার বর্তমান বসের এডভাইসার ছিলেন, বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ। আর এই পেপারটা হয়ত স্বয়ং লেখকের চেয়েও বিখ্যাত। স্বাভাবিক ভাবেই একটু টেকনিকাল কিন্তু মূল ধারনাটা হয়ত ফলো করা যাবে। আমি নিজেও আবছা আবছা পড়েছি।
দরকারি একটা বিষয় সামনে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
এভাবে দেখুন। বনানী মহাখালি বা ঢাকার যে কোন জায়গায় যদি এতো বড় একটি গণকর্মসংস্থান প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়, তাহলে তা সমস্ত শহরের ওপর কী প্রভাব ফেলবে। এই কলসেন্টারশিল্পকে চাঙা করতে গিয়ে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকে যদি আপনি গোটা শহরব্যবস্থার ঘাড়ে ইনটারনালাইজ করতে যান, তাহলে সামগ্রিক বিচারে লাভ বাড়বে না ক্ষতি বাড়বে। নতুন শিল্পকে অবশ্যই উৎসাহ দিতে হবে, কিন্তু কোলের ওপর গড়ে তোলার জন্যে লাই দিতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। ঢাকা শহর থেকে গার্মেন্টস কারখানাগুলো ঠিক এ কারণেই বন্দরের কাছাকাছি কোনো এলাকায় বড় শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
কলসেন্টারের জন্যে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোকে যদি আমরা এভাবে সাজাই, মানব সম্পদ, বিদ্যুৎ, নেট সংযোগ, তাহলে আমরা দেখবো, এগুলো ঢাকার [বা কেন্দ্রের] ওপর নির্ভরশীল নয়। আপনি কেন্দ্র থেকে দূরে স্বনির্ভর একটি কম্পাউন্ডে এই শিল্প শুরু করতে পারেন। এর কর্মীদের যদি আপনি একই কম্পাউন্ডে থাকার ব্যবস্থা করে দেন, এবং কাছাকাছি শহরের [আমার প্রস্তাব ছিলো টাঙ্গাইলের কোথাও] স্বাস্থ্য ও অন্যান্য পরিষেবার সুযোগকে যদি কাজে লাগান, এ শিল্পটি লাভজনক না হওয়ার কোনো কারণ নেই। আর ঢাকা-ময়মনসিংহ এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের দুই পাশেই শিল্পকারখানা ভর্তি, তারা যখন যেতে পেরেছে, নতুন একটি শিল্পাঞ্চল সেখানে গড়ে তোলা যাবে না কেন, সেটা আমি আপনার কথা থেকে কিছুতেই বুঝতে পারছি না। আপনার বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, ঢাকার বাইরে শিল্পোদ্যোগে উৎসাহী লোক নেই। আসলেই কি তাই?
আপনার দেয়া পেপার থেকে প্রাসঙ্গিক অংশ নিয়ে আপনি যা বলতে চাইছেন, তার সমর্থনে গুছিয়ে পোস্ট দিতে পারেন।
আমার বক্তব্য এখনো হয়ত পরিষ্কার হয়নি। আমি বলছি শিল্পটা দাঁড়িয়ে না গেলে বিনিয়োগকারীরা কেন্দ্রের চেয়ে দূরে বিনিয়োগ করতে ভরসা পাবেননা। যেহেতু কল সেন্টারের ব্যবসার বর্তমান অবস্থার কথা জানিনা তারপরও মনে হয় এটা এখনো ইনফ্যান্ট ইন্ডাস্ট্রি। সেক্ষেত্রে সরকার যদি গার্মেন্টস কারখানাগুলোকে ভুর্তকি দিয়ে ঢাকার বাইরে যেতে সাহায্য করে সেটা হয়ত একটা উপযুক্ত সমাধান হতে পারে। তাছাড়া নতুন গার্মেন্ট কারখানা যাতে ঢাকাতে তৈরি হতে না দেয়া হয় সেটাও নিশ্চিত করা দরকার। সেগুলো করা হচ্ছে কিনা এব্যাপারে আমার সন্দেহ রয়েছে। একটু শক্ত হলেই এটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে মনে করি। সমস্যা একটাই গার্মেন্ট শিল্পের হর্তাকর্তা আর গাড়ির মালিকেরা সরকারের প্রিয়পাত্র তাই তাদের নিয়ে তেমন মাথাব্যথা নেই সরকারের। প্রাইভেট গাড়ির মালিকরাও একই গোত্রের এদেরকে রাগানর ইচ্ছা নাই কোন সরকারের। তাই পরিবহন খরচ কমতেই আছে।
আর 'মানব সম্পদ' বিনিয়োগে ঝুঁকি বাড়ানোর জন্য একটা বড় নিয়ামক হয়ে দাড়াতে পারে। অছ্যুত বলাইয়ের মন্তব্যের উত্তরে তাই লেবার পুলের কথা বলেছিলাম। এমনকি গার্মেন্টস শিল্পের মত খাতেও দেখা যায় ঢাকার বাইরে বিনিয়োগের অনাগ্রহের অন্যতম কারন শ্রমিকের অভাব। এটা মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান থেকে জেনেছি। কল সেন্টারের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আরো প্রকট হবে বলেই মনে করি। সেক্ষেত্রে কল সেন্টারের ব্যপারে আপনার প্রস্তাবটি কেবল দীর্ঘমেয়াদে বাস্তবানুগ হতে পারে।অর্থাৎ বিনিয়োগ কারীরা যখন ঝুকি কম দেখবে তখনি আগ্রহী হবে আর সেজন্য কয়েকটা সফল প্রকল্পের উদাহরন তাদের চোখের সামনে থাকতে হবে।
আপনি ঢাকার সাথে সংযুক্ত করিডোর গুলোর দু'পাশে শিল্প গড়ে ওঠার কথা বললেন, একটু লক্ষ্য করবেন যে সেগুলো ঠিক কি ধরনের। ঢাকা-ময়মনসিংহ করিডোরে সার্ভে করেছিলাম প্রায় ৪ বছর আগে বেশির ভাগই প্রথাগত শিল্প যেমন পোল্ট্রি, ফিসারি, বড়জোর তৈরি পোষাক। এখন চিত্র কতটা পাল্টেছে জানিনা।
আবারো বলব কলসেন্টার বাংলাদেশের জন্য একটা বেশ সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র, এটা নিয়ে ঝুকি নেয়া ঠিক হবে না হয়ত (অবশ্যই ঝুকির ব্যপারটা বিনিয়োগকারীরাই সবচেয়ে ভাল বুঝবেন)। যাই হোক আমাদের কথায় হয়ত তেমন কিছু আসবে যাবে না তারপরও এধরনের আলোচনার দরকার আছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ করিডোরে আমার অভিজ্ঞতাও ৪-৫ বছর আগেরই, কিন্তু পোল্ট্রি-ফিসারি কমই ছিলো, সয়লাব ছিলো টেক্সটাইল মিল আর ফার্মাসিউটক্যালস দিয়ে।
কলসেন্টারের কর্মী আর গার্মেন্টসের কর্মীর মধ্যে পার্থক্য তো পরিষ্কার। কলসেন্টারের লেবার পুল তো আর স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে থেকে যোগাড় করা হবে না যে বিনিয়োগকারীরা স্থানীয় রিসোর্সের কথা ভেবে পিছিয়ে যাবেন। অবশ্য তারা যে কোনো যুক্তিতেই পিছিয়ে যেতে পারেন, হয়তো এলাকার নাম তাদের পছন্দ না হলেও তারা সেটাকে বিনিয়োগের অন্তরায় ভাবতে পারেন, আমরা বলতে পারি না।
কলসেন্টার ঢাকার বাইরে স্থাপন করা যদি ঝুঁকি হয়, তাহলে একই যুক্তিতে বাংলাদেশের পাওয়ার প্ল্যান্টগুলিও মোহাম্মদপুর মীরপুর আর বাসাবোতে স্থাপনের আবেদন জানাই সরকারের কাছে।
দ্বিমত পোষণ করলাম।
অর্থনীতির কাঠামোর কিছুটা পরিবর্তনের দরকার থাকতে পারে, কিন্তু ডিসেন্ট্রালাইজেশনের জন্য বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামোই যথেষ্ট (মোর দ্যান এনাফ)। এখানে কলসেন্টারের কথাই শুধু বলা হচ্ছে না, অনেক সিলেক্টেড ব্যবস্থাকেই ঢাকার বাইরে পাঠনোর কথা বলা হচ্ছে। এটাই এই মুহূর্তে ঢাকার উপর চাপ কমাবার অন্যতম উপায়। ব্যাপারটা খুব স্ট্রেট-ফোরোয়ার্ড। এখানে ধোঁয়াশার কোন বিশেষ সুযোগ নেই।
ভারতে প্রাথমিক ভাবে বিরুদ্ধমত থাকার পরও দিল্লির বাইরে গুড়গাও দিল্লির উপর চাপ কমাবার একটা সমাধান হিসাবে চমৎকার কাজ দিয়েছে।
উপরে অচ্ছুৎ বলাইয়ের উত্তরে দেয়া মন্তব্যের উত্তর দেখুন, হয়ত কি বলতে চাইছি আরেকটু পরিষ্কার হবে। আর গুরগাওয়ের সাথে কল সেন্টার ঢাকার বাইরে পাঠানোর ব্যপারটা এক ব্যপার মনে হল কেন সেটা ঠিক বুঝলাম না। গুড়গাও মূলত একটা স্যাটেলাইট শহর যা দিল্লীর সাথেই সংযুক্ত এরকম পরিকল্পনা ঢাকার ক্ষেত্রেও ভাবা হচ্ছে বলে জানি। এসটিপি বা স্ট্রেটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানে এধরনের শহরের কথা রয়েছে। এটা কোন নতুন ব্যপার নয়। কিন্তু বড় শহরের সাথে নির্ভর স্যাটেলাইট শহরকে কার্যকর করতে দ্রুতগতি এবং উচ্চ যাত্রীবহন ক্ষমতা সম্পন্ন পরিবহন অবকাঠামোর প্রয়োজন হয়। সেটা যদি করা যায় সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে তাহলে খারাপ হয় না। কিন্তু কল সেন্টার ঢাকার বাইরে পাঠান আর স্যাটেলাইট উপশহর তৈরি এক কথা নয়। উপশহরের কথা যেহেতু বললেন এই পোস্টটি প্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে।
কলসেন্টার চলেই আসলে ছাত্রছাত্রীদের পার্টটাইম নিয়োগ দিয়ে। সেখানে ইউনিভার্সিটিগুলো সহ যদি এই সেন্টারগুলোকে ঢাকার বাইরে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে, মন্দ হয়না।
================================================
পরদেশী বঁধু, ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।
যদি গো নিশিথ জেগে ঘুমাইয়া থাকি,
ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।।
বিটিসিএল এর খুলনা, রাজশাহী এবং রংপুরে যে ইনফ্রাস্ট্রাকচার রয়েছে, তাতে কলসেন্টার, পাওয়ার, কানেক্টিভিটিতে কোনো সমস্যা হবার কথা নয়।
বনানীতে কিছু নেই, কয়েকটি কোয়ার্টার ছাড়া। সম্ভবত মহাখালি'র কথাই বলা হয়েছে। মহাখালিতে একসাথে রয়েছে ৪টি অফিস এবং ৩টি প্রোজেক্ট অফিস। এবং এখানে বিটিসিএল এর সর্বমোট কর্মী সংখ্যা ৪০০+-। তার উপরে রয়েছে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক ইস্যু (সারা বাংলাদেশের ট্রান্সমিশন, সরকারী আইজিডাব্লিউ, প্রাইভেট সমস্ত টেলিকমের ফিজিক্যাল কানেক্টিভিটি)। এটা তো শুরুতেই বাদ হয়ে যাবার কথা!
অনেকে অনেক কিছুই বলেছেন। তবে আমি বিশ্বাস করি, আজকে যদি একজন নতুন নির্বাহী বছরে কমপক্ষে ২ লাখ টাকা (বোনাস ও বেনেফিট ছাড়া) কামানোর ব্যাপারে নিশ্চিত হয়, সে ঢাকার বাইরে যেতে রাজি।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
নতুন মন্তব্য করুন