এই উপন্যাসটির কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হুমায়ূন আজাদ ইসলামি মৌলবাদী গোষ্ঠীর আক্রোশের শিকার হন এবং ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতের আঁধারে তাঁর ওপর একদল বরাহশাবক ধারালো অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়। অধ্যাপক আজাদ মারাত্মক আহত হন, প্রথমে সিএমএইচ ও পরে থাইল্যান্ডের বুমরুংরাদ হাসপাতালে চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন। মৌলবাদী গোষ্ঠীর হুমকি অব্যাহত থাকে, তাঁর পুত্রও একবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এদের ধরপাকড়ের শিকার হন, এবং এক পর্যায়ে হুমায়ূন আজাদ জার্মানিতে দীর্ঘ সময়ের জন্যে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। দুর্ভাগ্যক্রমে মিউনিখেই তাঁর মৃত্যু হয়।
অধ্যাপক আজাদের ওপর হামলার এক সপ্তাহ আগে সংসদে দেলোয়ার হোসেন সাইদি প্রস্তাব তুলেছিলো, পাক সার জমিন সাদ বাদ উপন্যাসটি ব্যান করা হোক।
২০০৬ সালে জেএমবি নেতারা ড়্যাবের কাছে স্বীকার করে, তাদের নির্দেশে তাদের কর্মীরাই অধ্যাপক আজাদের ওপর এ হামলা পরিচালনা করে।
স্মৃতিশক্তি আমার সাথে প্রতারণা করছে, তাই মনে পড়ছে না, উপন্যাসটি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশে ব্যান করা হয়েছিলো কি না। যদি হয়ে থাকে, এই ব্যান এরপর তুলে নেয়া হয়েছিলো কি না, সেটাও জানি না।
এ ব্যাপারে কেউ আমাকে আলোকিত করতে পারেন কি?
মন্তব্য
উইকিপিডিয়া বলছে এমন -
"৭ আগস্ট ২০০৪ বিশ্ব বিখ্যাত কবি হাইনরিশ হাইনের ওপর গবেষণা বৃত্তি নিয়ে জার্মানি যান। ১২ আগস্ট তার ফ্ল্যাটের নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। জার্মানি যাওয়ার মাত্র পাঁচ দিন পর তার এই মৃত্যু আমাদের কাছে ২৭ ফেব্রুয়ারির চূড়ান্ত পরিণতি হিসেবে পরিলক্ষিত হয়।"
তাই 'আশ্রয় নিতে বাধ্য হন' বলাটা মনে হয় সঠিক হয়না।
আর 'পাক সার জমিন সাদ বাদ' নিষিদ্ধ হওয়ার কথা শুনিনি। অন্য কেউ ব্যাপারটা নিশ্চিত করবেন আশাকরি।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
অধ্যাপক আজাদ পেন এর ফেলোশিপ নিয়ে গোপনে দেশত্যাগ করেছিলেন। তাঁর পুত্রকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আটক করে কিছু বহিরাগত জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলো এ ব্যাপারে। সৌভাগ্যক্রমে সে পালিয়ে আসতে সমর্থ হয়। এ খবরটা কাগজেও এসেছিলো। অধ্যাপক আজাদ যে ক্রমাগত হুমকির মুখে ছিলেন, দেশে তার জীবনের নিরাপত্তা বিপন্ন ছিলো, ক্ষমতাসীন সরকারের একটি অংশ তার ওপর রুষ্ট ছিলো, এ থেকে আমার অনুমান, তিনি দেশত্যাগ করেছিলেন নিরাপত্তার কারণেই, হাইনরিখ হাইনের প্রতি হঠাৎ আগ্রহ থেকে নয়।
অভিজিত্ রায়ের এ লেখাটি বোধ হয় এ আলোচনায় প্রাসঙ্গিক হতে পারে--
http://www.mukto-mona.com/Articles/avijit/humayun_azad_lash.pdf
আমি তো এবারের বই মেলাতেও বইটা দেখলাম... কখনো নিষিদ্ধ হয়েছিল কিনা জানা নেই....
২০০৭ এর দিকে নিউমার্কেটের অনেক দোকানেই বইটা দেখেছিলাম, কাজেই মনে হয়না ব্যান করা হয়েছিল। তবে একটা জিনিস হঠাৎ মনে পড়ল, যে ২০০৯ এর জুলাইতে দেশে গিয়ে পুরা নিউমার্কেট ঘুরেও হুমায়ুন আজাদের অনেকগুলি বই পাইনি। ব্যাপারটা তখন বেশ চোখে লেগেছিল।
না, বইটি কখ্নই নিষিদ্ধ হ্য় নাই।
পাক সার জমিন সাদ বাদ - ঘৃণ্য পাকিদের জাতীয় সংগীত এই গানটা বাংলাদেশে নিষিদ্ধ কি না জানি না, কিন্তু শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ স্যার-এর "পাক সার জমিন সাদ বাদ" এই উপন্যাস মোটেও নিষিদ্ধ না। সপ্তাহ দুয়েক আগেই কলাবাগানের ১টা দোকান থেকে কিনলাম।
অট : আপনিও কি বিদেশে বসে 'আগাচৌ'-এর মত নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিশেষ ব্যক্তিদের গোপন ফোনের মারফত এইসব বিশেষ খবর প্রাপ্ত হন?!?!
ধন্যবাদ।
অ.ট. নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠিক বলা যাবে না। আমাকে এক ভদ্রলোক ফোন করে বললেন, হ্যালো হিমু, আমি পথহারার বাপ বলছি, শুনেছো নাকি, পাক সার জমিন সাদ বাদ যে বাংলাদেশে ব্যান?
নাহ্ , বইটা নিষিদ্ধ হয়েছে এমন তো শুনিনি। আমি অবশ্য নিশ্চিত না। 'পাক সার জমিন সাদ বাদ' প্রকাশিত হওয়ার পর সাঈদী বইটার সমালোচনা করে, আর তার কয়েকমাস পরেই বইমেলায় হুমায়ুন আজাদকে হত্যাচেষ্টা করা হয়। অথচ এই ব্যাপারটা নিয়ে তেমন কোনো তদন্ত হয়েছে বলে শুনিনি।
হুমায়ূন আজাদের অন্যান্য বইয়ের সাথে এই বইটি-কে বহাল তবিয়তে লাইব্রেরীতে দেখে আসলাম।
রেজওয়ান২২
নিষিদ্ধ না, বইমেলাতেই দেখেছি...
_________________________________________
সেরিওজা
আমি নিশ্চিত বইটা কখনও নিষিদ্ধ হয় নি। হুমায়ূন আজাদের সবগুলো গ্রন্থ একটা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় এবং নিষিদ্ধ গ্রন্থ পরে প্রকাশিত হলে সেখানে নিষিদ্ধ থাকার বিষয়টি উল্লেখ থাকে (যেমন নারী)।
টুইটার
ধন্যবাদ। নিশ্চিত হলাম এবার।
মডুমহোদয়, পোস্টটা প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে দিতে পারেন।
আমি বইটা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি|
সবুজ সরকার, আমি বইটা এই বইমেলা থেকেই কিনলাম। ২১শে ফেব্রুয়ারিতে। আগামী প্রকাশনীতে পাওয়া যাচ্ছে।
নতুন মন্তব্য করুন