ছাত্ররাজনীতি "নিষিদ্ধ" করা, ছাত্ররাজনীতির "স্বর্ণযুগ", ছাত্ররাজনীতির "শোধন" ইত্যাদি নিয়ে পত্রপত্রিকায় লোকজনকে হড়হড় করে কলমে ফ্যানা তুলতে দেখে অশ্রদ্ধা চলে এসেছে। দেখলাম, সকলেই ছাত্ররাজনীতি নিয়ে দুই কলম লিখতে পারে। যে "ছাত্ররাজনীতি" করেছে, সে তো লেখেই, যে করেনি, সে আরো বেশি লেখে। কাজেই আমিও সাহস করে একটা কিছু লিখে ফেলছি। আমি দ্বিতীয় দলে, অর্থাৎ ছাত্রাবস্থায় কোনো রাজনৈতিক দলের সংশ্রবহীন ছিলাম।
শুরুতে একটা উপলব্ধির কথা জানাই, আমরা রাজনীতি শব্দটাকে এখন চূড়ান্তভাবেই পরস্পরের পশ্চাদ্দেশে মধ্যমাসঞ্চালনের ক্রিয়াবিশেষ্যের প্রতিশব্দ হিসেবে নিয়েছি। রাজনীতি শব্দটা আমার কাছে ব্যক্তিনীতির চেয়ে বৃহৎ অর্থে পলিসি হিসেবে অর্থ বহন করে। এটি পরিবারের মতো ক্ষুদ্র সমষ্টি থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের মতো বৃহৎ কাঠামো পর্যন্ত বিস্তৃত। আমার বাবা আমাকে স্কুলজীবনে সন্ধ্যেবেলা বাড়ির বাইরে থাকতে দিতেন না, এটা একটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আবার টিভি দেখতেও নিষেধ করতেন না, সেটা আরেকটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আমি ঢাকায় আমাদের বাসায় টিভিতে হিন্দি চ্যানেলগুলোকে প্যাঁচ মেরে সরিয়ে দিয়ে এসেছি, এটা একটা রাজনৈতিক সক্রিয়তা। আমাদের বাড়িঅলা কোনো ছম্মাকছল্লো কিশোরী বা তরুণী আছে এমন পরিবারকে বাসা ভাড়া দিতেন না, এটাও একটা রাজনৈতিক কর্ম।
এক কথায় বলতে গেলে, যে নীতি কোনো সমষ্টিভুক্ত ব্যক্তিবর্গের আচরণকে প্রভাবিত করে, সেটাই রাজনীতি। পরিসর ছোটো বলে আমরা পরিবাররাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বা ক্রিয়াকে "রাজনীতি" হিসেবে চিহ্নিত করতে পারি না হয়তো।
ছাত্ররাজনীতি শব্দটাকে আমরা তাহলে কীভাবে দেখবো? ছাত্র যে রাজনীতিতে সক্রিয়, সেটিই কি ছাত্ররাজনীতি? নাকি ছাত্রের জন্যে ছাত্রের অংশগ্রহণে ছাত্রত্বের খাতিরে যে রাজনীতি, সেটি ছাত্ররাজনীতি?
কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির নামে যা কিছু বহুলাংশে মিডিয়ায় আসে, সেটি মূলত ছাত্রদের দিয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলের দলীয় স্বার্থ উদ্ধারের পাণ্ডামির গল্প। এই পাণ্ডামির সপক্ষে পাণ্ডা আর গুণ্ডা আর তাদের পাণ্ডামোগুণ্ডামোর সুবিধাভোগী ছাড়া আর কেউ কথা বলে না। কিন্তু গালিটা যখন এসে পড়ে, তখন ছাত্ররাজনীতির পুরোটার ওপরেই এসে পড়ে। ফলে একটা প্রস্তাব চলে আসে, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হোক। ভুক্তভোগীরা কথাটা জোরেশোরে বলেন, মতলববাজরা বলেন ইনিয়ে-বিনিয়ে।
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা বরাবরই পাবলিক আর প্রাইভেটে বিভক্ত। পাবলিক শিক্ষাব্যবস্থায় জনগণের করের পয়সা জনগণের মেধাবী সন্তানদের জন্যে ব্যয় করা হয়, আর প্রাইভেটে সেই ব্যয় সংকুলানে জনগণের করের পয়সা ব্যয় করা হয় না। প্রাইভেট শিক্ষা সেক্টরে আগে কওমী মাদ্রাসাই প্রধান ছিলো, এখন সেটি কিণ্ডারগার্টেন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত গড়িয়েছে। মতলববাজরা বলে থাকেন, প্রাইভেট শিক্ষা ব্যবস্থায় ছাত্ররাজনীতি নেই, তাই তারা সুন্দরভাবে তাদের কোর্স সময়মতো সম্পন্ন করে জীবনের পথে নাক বরাবর যাত্রা শুরু করতে পারেন। আর পাবলিকে যেহেতু ছাত্ররাজনীতি আছে, তাই তারা দুইদিন পর পর গিয়ানজাম লাগিয়ে চার বছরের কোর্স সাত বছরে শেষ করে। অতএব ছাত্ররাজনীতি খারাপ, কুয়োড এরাট ডেমনস্ট্রানডুম।
এখানে সমস্যাটা অবধারিতভাবেই রাজনৈতিক, কারণ সমস্যাটা স্টেইকহোল্ডিঙে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে ছাত্রদের সংগঠিত হবার প্রয়োজন যদি দেখা দেয়, তাহলে তাদের সংগঠিত হতে দিতে হবে কি হবে না, এটাই প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা পদ্ধতিতে। সেটি পরিচালনার দায়িত্ব নেন শিক্ষকদের কাউন্সিল, তারাই সেখানে সর্বেসর্বা। তাদের কোনো সিদ্ধান্ত যদি ন্যায়ানুগ না হয়, ছাত্ররা কোথায়, কী পদ্ধতিতে প্রতিবাদ জানাবে?
ধরা যাক দবীর একজন "রাজনীতিবিমুখ" পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, সে চার বছরের কোর্স চার বছরে পড়ে শেষ করতে চায়। কিন্তু শিক্ষা শুধু কোর্সে সীমাবদ্ধ না, দবীর শুধু বইয়ের পাতা থেকে শিক্ষা নিয়েই জীবনে প্রবেশ করবে, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যও নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেহেতু প্রতিনিয়ত নানা ঘটনা ঘটে চলেছে, সেসবকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো সিদ্ধান্তের ন্যায্য প্রতিবাদ করার অধিকার দবীরের আছে কি নেই, সেই প্রশ্নের ফয়সালা আমরা করতে চাই। দবীর কী করতে পারে? সে কি প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লিখিত প্রতিবাদ জমা দেবে কোথাও? কী পরিচয়ে? নিজ নামে? তার পরিণতি কী হতে পারে? প্রশাসনে তো থাকেন শিক্ষকরা, যারা দবীরের খাতা দেখবেন দু'দিন পর। কলমের এক খোঁচায় দবীরের গ্রেড দুই তিন ধাপ নেমে যেতে পারে, এ কথা দবীর জানে। বিজ্ঞ দবীর তাই নিজের একক পরিচয়ে প্রতিবাদ দাখিলের পথে হয়তো যাবে না। সে নিরাপত্তা খুঁজবে সমষ্টিতে। সে কবীর সবীর প্রবীর ম্যাকবীরদের নিয়ে প্রথমে একটি সমষ্টিতে পরিণত হয়ে প্রতিবাদ জানাতে চেষ্টা করবে। ভিড়ের মধ্যে একটি মুখের দায় কমে যায়, এমন একটি ধারণাই আমাদের দেশে প্রচলিত। এবং যে মুহূর্তে সে সংগঠিত হলো, সে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করলো। এই রাজনীতি পলিসি নির্মাণের সাথে জড়িত, এবং এই রাজনীতির অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখার পক্ষে আমি মত ব্যক্ত করি। এই সংগঠিত হওয়ার ব্যাপারটা কীভাবে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র শাখা লুন্ঠন করে নেয়, সে তর্ক ভিন্ন।
এই গল্পের পরবর্তী অংশটুকু কিন্তু দবীরদের ঐ সমষ্টির হাতে থাকবে না, প্রশাসন কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে, তার ওপরও নির্ভর করবে। শিক্ষকদের জোট ঐ প্রশাসন কীভাবে কয়েকজন ছাত্রদের ভেতর থেকে একজনকে নেতা হিসেবে চিনে নিয়ে তাকে ডেকে নেবেন, সিন্নি সাধবেন বা কোঁৎকা দেখাবেন, সেটি আমাদের চোখের সামনে বা মিডিয়াতে আসে না। এবং পাঠক, চিনে নিন, ওটাও রাজনীতি। ওটা প্রশাসনের রাজনীতি। ওটা নিষিদ্ধ করতে আপনি একবারও মুখ খোলেননি সারা জীবনে।
ছাত্রের কাজ ভাংচুর করা নয়, আমি এ কথা বিশ্বাস করি। কিন্তু ছাত্রদের ভাংচুরের মুখে যেতে দেখে যে প্রশাসন তাকে বিরত করে না, নিরস্ত করে না, সন্তানপ্রতিম ছাত্রটির কাঁধে হাত রেখে অতীতের নিজেকে স্পর্শ করতে পারে না, সে প্রশাসনও কিন্তু রাজনীতি করে যাচ্ছে ক্রমাগত। যে ছাত্রটি টেণ্ডার সন্ত্রাস করছে, সে একটি ফৌজদারি অপরাধে লিপ্ত। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্বিকারভাবে তাকে আড়াল করে যায়, শাস্তি দেয় না। এই মেরুদণ্ডহীন প্রশাসনকে দূর না করে ছাত্ররাজনীতি দূর করবেন কীভাবে?
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাজ শিক্ষকদের ওপর ন্যস্ত হওয়া উচিত নয়। প্রশাসকের কাজ আর শিক্ষকের কাজ ভিন্ন, এবং একটি কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট তাতে স্পষ্ট। শিক্ষকের পদোন্নতি যদি তাঁর অধ্যাপনার গুণগত মানের ওপর নির্ভর না করে প্রশাসনিক কাজে "দক্ষতা"র ওপর নির্ভর করে, তাহলে তিনি শিক্ষক হিসেবে কাজ না করে কেন "বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসক" নামে একটি পদে যোগ দেন না? আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজ পরিচালনার জন্যে কেন একটি আলাদা পেশার ধারা আমরা তৈরি করি না? বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা নামে একটি পৃথক ফ্যাকাল্টিও তো তৈরি হতে পারে, যেখান থেকে পাশ করে ছাত্রেরা যোগ দেবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে রিসার্চ গ্র্যান্ট সংগ্রহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া ব্যবস্থাপনা, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণসংযোগ ইত্যাদি কাজে? কেন একজন ছাত্র পাশ করে ক্ষমতাভিমুখী রাজনৈতিক চক্রে পা দেবেন শিক্ষক হওয়ার জন্যে, তারপর সেই অন্তহীন চক্রে ঘুরপাক খাবেন আর অন্যদেরকে টেনে নেবেন সেই কৃষ্ণগহ্বরে?
আজ আমরা ছাত্ররাজনীতির নামে যা কিছু শুনি, সব এই কৃষ্ণগহ্বরের ইভেন্ট হরাইজন থেকে উঠে আসা হকিং রেডিয়েশন। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু ছাত্রই থাকে না, শিক্ষকও থাকেন, প্রশাসকও থাকেন। রাজনৈতিক চুতিয়ামিতে ছাত্ররা থাকলে ধরে নিতে হবে শিক্ষকরাও আছেন। এমন একটা বিশ্ববিদ্যালয় কেউ দেখাতে পারবেন দেশে, যেখানে সব শিক্ষক ধোয়া তুলসী পাতা, আর ছাত্রগুলো কতগুলো বাইনচোদ, খালি "রাজনীতি" করে বেড়ায়?
বিশ্ববিদ্যালয় যে আইনবলে পরিচালিত হয়, ওখানে হাত দিয়ে এর পরিচালনা আর প্রশাসন কাঠামো একটু পাল্টে দিতে বলবেন কেউ? যদি না পারেন, ছাত্ররাজনীতি সিলগালা মেরে বন্ধ করেও লাভ নেই, বিশৃঙ্খলা থাকবেই।
মন্তব্য
এত কিছু আমি বুঝিনা। আমি স্ট্রেইট যেটা বুঝি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের কাজ হলো গবেষণা করা আর ছাত্র পড়ানো, রাজনীতি করা বা করানো নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে জিজ্ঞেস করেছিলাম-- স্যার, শিক্ষকরা রাজনীতি না করলে কী এমন এসে যায়? উত্তরে বলেছিলেন এটা আমাদের অধিকার। আমি বললাম এই অধিকার ফলাতে গিয়ে আপনি তো শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছেন, রাজনীতি করবেন তো বাইরে গিয়ে করেন, মানে পড়াশুনার পরিবেশের বাইরে আপনার যে সামাজিক জীবন আছে সেখানে গিয়ে রাজনীতি করেন। উত্তরে উনি আবারো সেই অতীতের কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন। আমিও আর কথা বাড়াইনি।
খুবই দু:খজনক হলেও সত্যি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির দোরগোড়ায় কারো হাত না ধরে পৌঁছুতে পারিনি কোনদিন, অথচ এই ভিসিরাই রাজনৈতিক দলের লেজুড়, তথাকথিত "ছাত্র"দের নিয়ে গোল হয়ে বসে থাকে। আর তাদের সাথে বসে থাকে কিছু স্তাবক শিক্ষক যারা কোন হলের প্রভোস্ট, কিংবা হাউস টিউটর। এসবের মূলে আছে সেই 'রাজনীতি'।
এই রাজনীতি আমি চাইনা।
শিক্ষকদের এই অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে দেয়া হবে কেন? এই পদগুলি যদি লাভজনক হয় [ধরে নিচ্ছি আবাসনসহ আরো কিছু সুবিধা পাওয়া যায় এসব থেকে], তাহলে এর জন্যে শিক্ষকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা তৈরি হবে, যা কোনো দৃশ্যমান মানদণ্ডে বিচার করা হবে না। এমন যদি হতো, প্রভোস্ট বা হাউস টিউটর হতে গেলে নির্দিষ্ট সংখ্যক পেপার প্রকাশ করতে হবে আন্তর্জাতিক জার্নালে, তাহলেও একটা কথা ছিলো।
শিক্ষকদের এই সমস্ত লাভজনক পদে নিয়োগ বন্ধ করা হোক। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্যে আলাদা সার্ভিস তৈরি করা হোক।
এই অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করার জন্যই তো এই লেজুড়বৃত্তি, তেলানি রে ভাই। মূল কারণটা তো অর্থনৈতিক। হাউস টিউটররা বাসা পায়, বলতে গেলে বিনা খরচায় (বা মিনিমাল খরচায়) ক্যাম্পাসে থাকা যায়। যে বেতন পায় তা দিয়ে ঢাকা শহরে অন্য কোন শেলটার না থাকলে খেয়ে পড়ে বাঁচা অসম্ভব।
এটা ঠিক যে মাপকাঠি পরিবর্তন করতে পারলে হয়ত অবস্থার উন্নয়ন হবে। কিন্তু সেটা তো করবে না, কারণ তাহলে দলীয় শিক্ষকদের আর জায়গামতো বসানো যাবে না। ভোটের রাজনীতিতে কে পিছিয়ে পড়তে চায় বলুন?
প্রফেসররা দালালি করে সুনজরে আসার জন্য। মূল উদ্দেশ্য হলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বা এধরনের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হওয়া, কিংবা সরকারী কোন প্রজেক্টের কিছু একটা হওয়া। শিক্ষার মান উন্নয়নে কিংবা আবাসন সমস্যার সমাধানে বা বিকল্প কোন ব্যবস্থা করার রাজনীতি তাঁরা করেন না। একই ভাবে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোও কোনদিন ছাত্রদের পক্ষে কোন পদক্ষেপ নিয়েছে বা আন্দোলন করে বলে মনে পড়ে না।
বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্টের যে কথা আপনি বললেন সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয় গুলো যদি ঠিক মতো ম্যানেজ করা যেতো তাহলে এই অর্থনৈতিক সমস্যার একটা সুরাহা হতো। বর্তমান ব্যবস্থায় ছাত্র-বেতন তুলে আনতে যে লোকবল নিয়োগ করা আছে তাদের পেছনের মোট ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট (নিজস্ব) আয়ের চেয়ে বেশী।
অনেকেই ছাত্র বেতন বাড়ানোর পক্ষে। তবে কথা হলো, বেতন না বাড়িয়ে ব্যয় কমিয়েও কিন্তু একই অবস্থায় আনা যেতে পারে। অন্তত চেষ্টা করে দেখা যায়। এসব নিয়ে ভাবার কেউ নাই রে ভাই। কিংবা যারা আছে তারা হালে পানি পায়না।
বুয়েট বা এধরনেরগুলো বাদ দিলে জেনারেল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন মতে ডিগ্রী অর্জনই এখন যেহেতু শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য সেহেতু ছাত্রদের মধ্যে ডেডিকেশনের অভাব প্রচণ্ড। পড়াশুনার সাথে এনগেজমেন্ট দুর্বল। এটাও সার্বিক পরিস্থিতির একটা ঋণাত্বক অনুঘটক।
একটা কথা ঠিক যে অধিকাংশ শিক্ষকই এসব থেকে অনেক দূরে থাকেন। কিন্তু দুধ নষ্ট করতে এক ফোঁটা চনাই যথেষ্ট।
নব্বুই দশকের শেষার্ধে ঢাবিতে একটা বড় আন্দোলন হইছিলো বেতন বৃদ্ধি নিয়ে। সেই আন্দোলনটা ঢাবিতে স্বৈরাচার পরবর্তী সময়ে প্রথম বড় ধরনের আন্দোলন। সেইটাতে শিক্ষকদেরও দুইটা পক্ষ ছিলো। এক পক্ষ ছাত্রদের মিটিঙে হাজির থাকতেন। আন্দোলনে কাজ হয়েছিলো ভালো। অন্যায় ফি বৃদ্ধি অনেকটাই কমানো গিয়েছিলো। এই কাজটা বিকল্প কী পদ্ধতিতে করা যেত বলে মনে করেন? ছাত্রনং অধ্যয়ন তপ নাকি অন্য কিছু?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
কিছু মনে না করলে একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন করি...
আপনি যে দেশেই থাকুন, ধরে নেই আপনি বাংলাদেশের বাইরে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। সেইখানে ফি বাড়ালে আপনি কি হকিস্টিক নিয়ে আন্দোলনে নামবেন?
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
তীব্রভাবে একমত ...
_________________________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
কোন রাজনীতি আমি চাই সেটা তো আমার মন্তব্য থেকেই বোঝার কথা। আলাদা করে ডিফাইন করতে হবে কেন? চামচাগিরির রাজনীতি দিয়ে তো লাভ হচ্ছে না। সময়ের প্রয়োজনে মানুষ গর্জে উঠবেই, তার জন্য চামচাগিরির রাজনীতি লালন করতে হয়না বলে বিশ্বাস করি।
ভাল লাগল।
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
আফসার ভাই,
কিছু মনে না করেন যদি তো আপনার মন্তব্য থেকে একটু মজা লুটি। আপনি প্রায় মন্তব্যেই এক দুই লাইনেই কথা শেষ করে ফেলেন
সম্পূর্ণ একমত।
এইখানে আমি একটা মন্তব্য করতে চাই। একইভাবে এই রাজনৈতিক অধিকার অক্ষুন্ন রাখার পন্থার কাঠামো পরিবর্তনেরও প্রয়োজন আছে। একজন ছাত্রের মত প্রকাশ করতে যদি প্রতিবারই মিছিল করতে হয় তবে সেটা কারোই কোনো উপকার বয়ে আনে বলে আমি মনে করি না। যেমন একটা উদাহরণ দিতে পারি... আমি এখন যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আছি, মেজর কোনো পলিসি পরিবর্তন করতে হলে সকল ছাত্র /ছাত্রীদের কাছ থেকে ভোট সংগ্রহ করা হয়। স্টুডেন্ট গর্ভনমেন্ট অর্গানাইজেশনের কথা আগেও বলেছি। যারা নির্বাচিত হয় ছাত্র/ছাত্রীদের ভোটে। যতদূর জানি এর সমতূল্য ঘটনা দেশেও আছে। কিন্তু সেইখানে সমস্যা হলো নির্বাচনে দাঁড়ায় যারা তারা যতটা না বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো চায়, তার থেকে বেশি চায় "অমুক" দলের স্বার্থ সিদ্ধি করতে। রাম শ্যাম যদু মধু একত্র হয়ে প্রতিবাদ করতেই পারে, তবে রাম শ্যাম যদু মধুর সাথে শতকরা ৫০ ভাগের বেশি শিক্ষার্থী একমত নাকি সেটাও দেখার বিষয়। নাকি রাম শ্যামের মাইরের ভয়ে তারা নির্বাক?
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
একটা উদাহরন দেই। যৌননিপীড়ন বিরোধী আন্দোলন নিয়ে মোটামুটিভাবে ১২/১৩ বছর ধরে মিছিল মিটিং হচ্ছে। এই কাজে সহায়ক শক্তি হিসেবে কিছু শিক্ষকও জড়িত। কাজ খুব একটা হয়েছে বলা যাবে না। এইক্ষেত্রে আপনার পরামর্শ কী? ছাত্ররা মিছিল মিটিং ছেড়ে পড়ায় মন দিক?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
"
বস বোধহয় কিওয়ার্ডটা ইগনোর করে গেছেন। তাছাড়া যৌননিপীড়নের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল করতে কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে হবে কেন? গায়ে ছাত্রলীগ/ ছাত্রশিবির/ ছাত্রদলের তকমা না লাগালে মিছিল করা যাবেনা এটা কেমন কথা?
তারোপরে কথা হল ১২/১৩ বছর মিছিল করেও যখন কিছু হয়নি, তখন আমাদের প্রশ্ন করা উচিত সমস্যাটা কোথায়? দুই দিন পর পর একেক ইস্যুতে (প্রয়োজনীয় / অপ্রয়োজনীয় নির্বিশেষ) মিছিল করলে কিন্তু ব্যাপারটা তার গুরুত্বও হারায়। এক্ষেত্রে বোধহয় তাই হয়েছে। ছাত্ররাজনীতিবিদরা উঠতে বসতে মিছিল করে এমন অবস্থা তৈরী করেছে যে সত্যিকারের ছাত্ররা মিছিল করলে তাও আর পাত্তা পাচ্ছেনা। রোজকার ঘটনা।
আরও ব্যাপার আছে। বাসের ধাক্কায় ছাত্রী মারা গেল... নি:সন্দেহে মর্মান্তিক ঘটনা। এর পরে যা ঘটে তা হচ্ছে সি.এন.জি আর গাড়ি ভাংচুর করে আগুন লাগানো হয়। এতে কি মৃত্যুর হার কমেছে? তাইলে কথা হলো উপায় কি?
অন্যের ক্ষতি না করে আসলেই কি কোনো উপায় নাই?
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক বিভাগ বলে একটা জিনিস আছে যার ভূমিকা নিতান্তই কারণিক। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মূলত সেরকম প্রশাসকবিহীন যারা অপরাধ দমন করতে পারে। যা পারে তা হলো ঘটনা ঘটার পর পুলিশে খবর দিতে।
রাজনীতি প্রতিটি মানুষের জাতীয় অধিকার। কিন্তু যেখানে যে আচার মানায় সেখানে তাই করতে হয়। মসজিদের ভেতর ধর্ম ব্যবসা আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতি একই রকম অনাচার।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আরেকটু ভেঙে বলেন নীড়সন্ধানী। আপনি বলতে চাচ্ছেন অযৌক্তিক বেতন বৃদ্ধি নিয়ে আন্দোলন, যৌননিপীড়ন বিরোধী আন্দোলন, শামসুন্নাহার হলের ঘটনা নিয়ে আন্দোলন, হাটুতত্ত্বাবধায়কের মুখ বন্ধ করানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে আন্দোলন ইত্যাদি অনাচার?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
যৌক্তিক বেতন বৃদ্ধি নিয়ে আন্দোলন, যৌননিপীড়ন বিরোধী আন্দোলন, শামসুন্নাহার হলের ঘটনা নিয়ে আন্দোলন......... ইত্যাদি রাজনৈতিক লেজুড় বৃত্তিক আন্দোলন ছিল না। এই আন্দোলনগুলো ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। কোন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে ছিল না। এইসব আন্দোলন করতে কোন রাজনীতির ব্যানার লাগে নি।
রাজনৈতিক অনাচার বলতে আমি লেজুড়বৃত্তিক পান্ডামিকে বোঝাতে চেয়েছি। ছেলেমেয়েরা তো কেবলমাত্র পড়তেই যায় ওখানে রাজনীতি করতে নয়। তবে অন্যায় দেখলে ছাত্রসমাজ রাজনৈতিক সংগঠন বাদেও গর্জে উঠতে পারে।উপরের আন্দোলনগুলি তার প্রমান।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
লেখার প্রথম অংশেই কিছুটা ঈঙ্গিত আছে, যদি ঠিক বুঝে থাকি তাহলে, ছাত্ররাজনীতি শব্দটাই মিসনোমার। বাদবাকি অংশের সাথে বেশ একমত হয়ে, আরেকটা ছোট কথা যোগ করতে চাই। ফৌজদারি দণ্ডবিধি ও অন্যান্য যাকে বলে 'প্রচলিত আইন' সেগুলো ঠিকঠাক কাজ করলে, ছাত্র কি শিক্ষক, কোনো রাজনীতি নিয়েই আমাদের মাথা ঘামাতে হতো না। অতি সরলীকরণ হয়ে গেলেও, ভেবে দেখা যায়। টেন্ডারবাজি ঠেকাতে শাহবাগ থানার ওসিই কিন্তু যথেষ্ট। সুতরাং, সে যখন সেটা ঠেকায় না, তখন এটাকেও একধরণের পুলিশ-রাজনীতি বলি না কেন? (তার মানে এই না আবার যে এতে শিক্ষক-ছাত্র যৌথ নষ্টামির দায় কমে যায়, কিন্তু নষ্টামি নষ্টামিই, রাজনীতি না)
____________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
চমৎকার করে কথাগুলো বলেছেন ভাইয়া! ভাল লাগল!
একটা নোট যোগ করে যাই, বুয়েটের একসময়ের এক ডিএসডাব্লিউ আমাকে বলেছিলেন, "যারা অপরাধ করে তাদের মধ্য থেকে অনেককেই শাস্তি দেয়া যায় না কারণ আমরা চিন্তা করি ওই বিশেষ ব্যক্তিকে শাস্তি আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক, ও প্রফেশনাল জীবনে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর কি প্রভাব পড়তে পারে; আর সাধারণ কেউ অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেও তাকে শাস্তি দেয়া যায় কারণ তাকে শাস্তি দিলেও কেউ তার পেছনে দাঁড়াবেনা!"
সো প্রশাসনটাকে আলাদা করলেও জটিলতা কমবে কি? তারাওত সেই দলবাজই?
-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
প্রশাসনকে আলাদা করলে জটিলতা অনেকখানি কমবে বলে আমি মনে করি। এখন শিক্ষকরাই যেহেতু প্রশাসক, তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর এই প্রশাসনের ছায়া গাঢ় হয়েছে।
কিছুদিন আগে বুয়েটে কোনো এক হলে এক রামছাগল আরেক রামছাগলকে চড় মেরেছে বলে হল ভ্যাকেট করে ৩৫ দিন বুয়েট বন্ধ ছিলো। ঐ দুই রামছাগলকে আলাদাভাবে শাস্তি না দিয়ে শাস্তিটা দেয়া হয়েছিলো সব ছাত্রকে। ঐ ৩৫ দিন কি শিক্ষকদের কনসাল্টেশন বন্ধ ছিলো? ছাত্রদের হল ভ্যাকেট করার পাশাপাশি যদি শিক্ষকদের কোয়ার্টারও ভ্যাকেট করার বিধি থাকতো, বুয়েটে কোনোদিন এক মাস বন্ধ থাকতো কোনোকিছু?
ভাংচুর করছে কিন্তু অন্য আরেকজনের মদতে। তার নামে মেলা অভিযোগ আছে সেই সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ কিছু করে নাই তারে।
---------------------
আমার ফ্লিকার
---------------------
আমার ফ্লিকার
সহমত। আমাদের ক্যাম্পাসেই জিরো রাজনীতি থেকে ফুল রাজনীতি হতে দেখেছি। আসলে এই ক্যাম্পাসে রাজনীতিগুলো হয় উঁচু পর্যায়ে, ছাত্ররা হলো শিক্ষকদের রাজনৈতিক খেলনা। নিজেদের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে তারা ছাত্রদের বলির পাঁঠা করে।
ভাংচুরের ঠিক আগ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রশাসন খুঁজে পাওয়া যায়না। ভাংচুরের পর তার গতি আর দেখে কে, পদক্ষেপ নিয়ে একাকার। বারবার প্রশাসনের এই রূপ দেখতে দেখতে ছাত্ররাও ভাংচুরে উৎসাহী হয়।
দারুন লাগলো।
বলা সহজ করা কঠিন। আর বেশি কিছু না বলি।
নেভারেস্টের অপেক্ষায়।
মুসা ইব্রাহীম আলুতে ৩ সপ্তাহ ধরে রসিয়ে রসিয়ে লিখলেন, কীভাবে তিনি এভারেস্টে উঠলেন। আমি নেভারেস্ট-১ লেখার পরের বুধবার দেখি ১ বাক্যে এভারেস্ট থেকে ঠাকুরগাঁ আর ২০১০ থেকে ১৯৯০ এ চলে গেলেন, শৈশবে কী করেছেন না করেছেন সেসবের ফিরিস্তি। আবার লিখেছেন, ওঠার চেয়ে নামাটা বেশি কঠিন, কিন্তু নামার কোনো বর্ণনা লিখছেন না। বোধ করি গল্পের গরু গাছে চড়ানো যত সহজ, নামানো ততটা সহজ নয়।
নেভারেস্ট-২ লিখবো দুয়েকদিনের মধ্যেই। একটু ব্যস্ত।
কেন, সহজ তো; গরুকে স্কী করে নামিয়ে নিয়ে আসবে
গড়াগড়িহাসি)
ভালই কইছেন পিপিদা।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
গরু ও সাট্টিফিকেট হাঁকাইতে পারে....বলা যায় না।
.........
আমাদের দূর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
জয় বাংলা বলে আলাউদ্দিনের সে চল্লিশ চোরের মত কাঠের পিপের মধ্যে ঢুকে গরিয়ে নাম্লেই ত হয়...........
'ছাত্ররাজনীতি' আর 'শিক্ষক রাজনীতি'র নামে যে জঘন্য পা চাটাচাটি চলছে দিনের পর দিন তাকে সমর্থন করা আসলেই মুশকিল, একে ঘৃণা করি বললেই সত্যি বলা হয়।
ভেতরের কথা তো বলতে পারিনা, তবে এঁদের কাজকর্ম দেখে কখনো মনে হয়নি তারা দেশের কথা বা দশের কথা আদৌ ভাবেন। হ্যাঁ, আমরা যারা দূরে সরে থাকছি তারাও দায় এড়াতে পারিনা- তবে অন্তত এটুকু স্বস্তি পাই যে কখনো কারো ক্ষতি তো করছিনা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যে আন্দোলন তাকে ছাত্ররাজনীতির সাফল্য বলাটা ঠিক হবেনা। খেলার মাঠের ঘটনা থেকে হলের সাধারণ ছাত্ররা বেরিয়ে আসার পর ওরা এসে যোগ দিয়েছিল- আর আমার কাছে সব সময়-ই মনে হয়েছে এটা যত না ছাত্রদের সাথে যোগ দেয়া তার চেয়ে অনেক বেশি হঠাৎ মেলা সুযোগ কাজে লাগানো!
ভুল হতে পারে আমার, তবে এদের ব্যাপারে কোনরকম শ্রদ্ধাবোধ বা ভক্তি আমার মনে নেই, কাজেই এদের বিশ্বাসও করতে পারিনা।
অবাক হয়ে যাই যখন দেখি বাবার বয়সী কাউকে ওরা অবলীলায় তুই-তোকারি করছে। ধিক্কার দেই নিজেকে যে ওরা দিব্যি ইচ্ছামতন বিনা পয়সায় চা-নাস্তা খেয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন আর সেটা বলার সৎ সাহসটুকু কখনো দেখাতে পারিনি। খারাপ লাগে যে ওদের ইচ্ছে হলেই নিরপরাধ কাউকেও মার খেতে হয়, দেখা ছাড়া আমাদের কিছুই করার থাকেনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ছাত্র ছিচকা চুরি করে ধরা পড়ে, এ লজ্জা কি আমার একার?!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
জটিল লেখা...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ছোট মুখে বড় কথা হতে পারে।
কিন্তু একজন ছাত্র হিসেবে বলছি, এযুগের ছাত্ররাজনীতির একটিও ভালো দিক এখনও চোখে পড়েনি।
ছাত্ররাজনীতি কি এই প্রসঙ্গে একটি বাস্তব উদাহরণ তুলে ধরি। কয়েকদিন আগে ময়মনসিংহ গিয়েছিলাম। মেডিক্যাল কলেজেও গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে জানতে পারলাম, সেখানে পড়তে হলে একটা একটা রাজনৈতিক দলের সাথে থাকতে হবে। না হলে একা একা একঘরের মত থাকো, ভালো সিট পাওয়া যাবে না, র্যাগ খেতে হবে, এমনকি জুনিয়ররাও তোমাকে একহাত নিতে পারবে। মোদ্দা কথা তোমাকে বোবা হয়ে থাকতে হবে যে কয় বছর তুমি ওখানে থাকবে।
ভার্সিটি লেভেলে গিয়ে এই সব কিভাবে একজন ছাত্র মেনে নেবে?
রাজনীতি করলে তো সব ধরনের সুবিধা পাওয়া যাবে, যা ইচ্ছা তাই করা যাবে এই নীতিতে এখন ছাত্ররাজনীতি হয়। এটাই এখন সংজ্ঞা। এখনকার দিনে আদর্শগত কোন কারণ এখানে রেয়ার। "লীগ ক্ষমতায় তো লীগ করি", "পাঁচ বছর পর দল আসবে, আর কেউ দলে নাই। সুতরাং আমিই তখন রাজা।" এইসব কিছুর ভিত্তিতে এখন রাজনীতির দল ঠিক হয়।
অধিকার আদায় করতে,অন্যায্য বেতন বৃদ্ধির বিরুদ্ধে, এবং ছাত্রী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে রাজনীতি করতে হয় না। আপনার সাথে ব্যক্তিগতভাবে এই জিনিসগুলো ঘটলে আপনি যে রিয়েকশন করতেন, তাই তখন সামগ্রিকভাবে উঠে আসে। কারণ তখন সবাই একই রকম রিয়েকশন দেয়।
ভাংচুরের কথায় যদি আসি, কয়েকদিন আগেই একটা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন বৃদ্ধি নিয়ে বিশাল গিয়াঞ্জাম হয়েছিল। যতদূর জানি, বিশ্ববিদ্যালয়টির কম্পিউটার ল্যাবের একটা কম্পিউটারও আস্ত ছিল না। আজকের ঘটনাটাই দেখুন।সেখানে কিন্তু কোনপ্রকার রাজনীতি নেই। তো এখন কি বলবেন সবাই তারা কি রাজনৈতিক কারণে ভাংচুর করেছেন?
আসলে বিষয়টা হল ভাঙ্গচুর ছাত্ররাজনীতির একটা ইস্যু হয়ে গেছে। ভাঙ্গচুর মানেই ছাত্ররাজনীতি নয়। কিছু একটা হলেই সাধারণ ছাত্রদের নামে ভাংচুর চলে কে করছে? সাধারণ ছাত্ররা করেছে।।ইস্যু নিয়ে টিস্যু ছিঁড়াছিঁড়ি আরকি!!
আবার গেঞ্জামে যদি দেখা যায় ছাত্র নামধারী রাজনীতিবাজদের কোন লাভ হচ্ছে তো তারা সেখানে আছে। না হলে???চায়ের মোড়ে তাদের ঠিকই দেখা পাওয়া যায়।
ছাত্রদের ছেড়ে এবার শিক্ষকে আসি। প্রাইভেট ভার্সিটিতে গিয়ে কিন্তু এই পাবলিক ভার্সিটির টিচাররা ক্লাস নিচ্ছেন। প্রশাসনেও এদের অনেকে আছেন। প্রাইভেট ভার্সিটিতে যে ভূমিকা তারা পালন করেন সেই ভূমিকা পাবলিকে করলেও অবস্থার একটু উন্নতি হত।
টিচারদেরও কিন্তু সবসময় এত ক্ষমতা থাকে না, যেমনটা আমাদের ডিপার্টমেন্টের হেড জয়নাল স্যার কয়েকদিন আগে বলেছিলেন, "বুয়েটের শিক্ষকদের যে কি পাওয়ার আছে বোঝা যায়, যখন বউ বাচ্চার সামনে তারই স্টুডেণ্ড তার গায়ে হাত তোলে।"
শিক্ষকরাও একই কারণে রাজনীতি করেন, অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা। ভালো থাকবার প্রয়াস, স্টাফদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
প্রশাসনের কথা যদি বলতে হয়, তবে কাল বিকাল পাঁচটায় সরকারদলীয় বুয়েট স্টাফরা মিছিল বের করে। প্রশাসন আলাদা করলেও কি এসব রাজনীতি আলাদা হবে???
কয়েকদিন আগের গেঞ্জাম প্রসঙ্গে বলি। যার কারণে এত কিছু তার কোনকিছু কিন্তু হবে না। কারণ যতদূর জানতে পেরেছি সরকারদলীয় এক শিক্ষক এবং গুটি কতক স্টাফ তার পক্ষে।
যতক্ষণ পর্যন্ত না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিটা স্তর থেকে রাজনীতি বাদ যাবে, শুধু শিক্ষাই একমাত্র মুখ্য উদ্দেশ্য হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এ অবস্থার কোন উন্নতি হবে না।
আর একটা জিনিস। ছাত্র অবস্থায় যাদের হাত দুর্নীতিতে এবং অন্যান্য অপরাধে পাকাপোক্ত, আপনি কিভাবে আশা করেন সেখান থেকে ভবিষ্যতে দেশের জন্য ভালো কিছু পাবেন? রাজনীতি করার অভিজ্ঞতা থাকলেই যে দেশ ভালো চালাতে পারবে একথা নিশ্চয়ই কেউ বলছেন না। তাহলে কি দরকার ছাত্র রাজনীতির?কি দরকার?মুক্ত চিন্তা করতে?কিঙ্গবা বড় কিছু হতে??
রাজনীতি ছাত্রদের জন্য কোন সুফল এ প্রজন্মে আনেনি। কেউ কেউ বলবেন, মুক্তিযুদ্ধ এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনে ছাত্র রাজনীতির অবদান ছিল অনস্বীকার্য। কিন্তু সেটা সেসময়ের আর এটা এসময়।এখন এমন সব মহৎ উদ্দেশ্য ছাত্ররাজনীতি ব্যবহৃত হয় যে সেই আমলের ছাত্র থাকাকালীন যারা রাজনীতি করতেন তারাও দেখে লজ্জা পান।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
হিমু ভাই,
একবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাসে ঘুরে যান। ছাত্র রাজনীতি কোন পর্যায়ে আছে তা কোন কষ্ট ছাড়াই টের পেয়ে যাবেন। আসার আগে ডাঃ মেহদী হাসান খান (অভ্র মেহদী) কে একটা আওয়াজ দিলেই হবে। আমিও খবর পেয়ে যাবো। আপনার এই লেখার ২য় কিস্তির মাল-মশলা রেডি পেয়ে যাবেন। ভালো থাকবেন।
-------------------------------------------------------মানিক
মানিক ভাই, আপনি যে পরিস্থিতির কথা বলছেন, ওটা পাণ্ডামি। মনে করুন "ছাত্ররাজনীতি" নিষিদ্ধ করা হলো, তারপরও এই পাণ্ডামি থাকবে। কারণ পাণ্ডামি নিষিদ্ধ করার কথা কেউ ঠিকমতো বলে না।
হিমু ভাই,
চমৎকার বলেছেন। আমাদের দেশের ছাত্র রাজনীতির অসাধারন একটা ইতিহাস আছে। তাই ছাত্র রাজনীতি শব্দটার প্রতি আমার একরকম মমতা আছে। ছাত্ররা রাজনীতির নামে এখন যা করছে সেটাকে ছাত্র রাজনীতি না বলে অন্য কোন শব্দ দিয়ে বলা যায় না? তাহলে ছাত্র রাজনীতির সন্মান বাঁচতো। ভালো থাকবেন।--------------------------------------মানিক
ব্যক্তিগতভাবে আমি নিরীহ লোকজনকে ভালোবাসি না। কারণ, এরা পৃথিবীকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো ভূমিকা রাখে না। নিজস্ব স্বার্থপরতার গন্ডির বাইরে যাওয়ার সামর্থ না থাকায় পরের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খেয়ে সেই মাথাওয়ালাকে দোষ দিয়ে গা বাঁচানো নীতিই এদের সম্বল। অন্যদিকে যারা সমষ্টির জন্য চিন্তা করতে পারে, সমষ্টির প্রয়োজনে এগিয়ে আসতে পারে, তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা অনেক। এই এগিয়ে আসা বা সমষ্টির প্রয়োজনে সংঘবদ্ধতার রাজনীতি মানুষের টিকে থাকার পেছনে প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং আমি চাই ছাত্রদের মধ্যেই এই রাজনীতিটা থাকবে। শিক্ষা অর্থ একাডেমিক সার্টিফিকেট না, শিক্ষা অর্থ জ্ঞানার্জন করে টিকে থাকার যোগ্যতা অর্জন এবং সময় এবং সুযোগ বুঝে অর্জিত জ্ঞানকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। শুধু বই পড়ে কাজটা সম্ভব না।
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ছাত্ররাজনীতির যে ভুল সংজ্ঞাটা মনকে বিষিয়ে তোলে, তার জন্য রাজনীতির প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার না করে বরং সেটাকে আইনের চোখে অন্যায় হিসেবে দেখা উচিত। একজন বা একাধিক ছাত্র অন্য একজন ছাত্রকে পিটালে সেটা আইনের চোখেই শাস্তিযোগ্য অপরাধ, সেই শাস্তিটা না দিয়ে দোষটা ছাত্র রাজনীতির ওপরে চাপানো অন্যায়।
আইনের প্রয়োগটা ঠিকমতো হয় না বলেই রাজনীতির নামে কিছু শিক্ষক এবং কিছু ছাত্র দুর্বৃত্তির সুযোগ নেয়। ছাত্র রাজনীতি না থাকলে এরা অন্য কোনো উপায়ে আকাম ঠিকই করতো। অন্যদিকে আইনের প্রয়োগ ঠিকঠাক হলে ছাত্র রাজনীতি থাক বা না থাক এই আকামগুলো করে পার পাওয়া যেতো না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
একমত। আমিও তাই বলসি, উপরে দ্যাখেন ...
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
নতুন মন্তব্য করুন