বামন

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: শনি, ১৮/০৯/২০১০ - ৫:২৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

লোকটা জ্বলজ্বলে চোখে তাকিয়ে বলে, "লোকে হয় জাম্বুরা খায়, নয় তরমুজ খায়।"

আশেপাশে দুয়েকজন উৎসুক চোখে তাকায় তার দিকে।

লোকটা উৎসাহ পায়। ঠেলাগাড়ির ওপরে রাখা বইগুলো থেকে একটা তুলে আনমনে দেখায় সবাইকে। প্রচ্ছদে বড় বড় হরফে লেখা, দুই শ্যালকের নাও।

জাম্বুরা আর তরমুজের প্রতি উৎসুকেরা আগ্রহ হারাতে সময় নেয় আরো কিছুক্ষণ। লোকটা আড়ে আড়ে তাকিয়ে দেখে তাদের হাবভাব। মনটা একটু খারাপ হয় তার, সমাগত মানুষের দল চলে যাবার ঠিক আগ মুহূর্তে হাতে ধরা দুই শ্যালকের নাও গাড়িতে যত্ন করে নামিয়ে রেখে সে জোর গলায় বলে, "আমি তাদের বলেছিলুম, তোমাদের হয় মাইকেল মধু হতে হবে, নয়তো মাইকেল মুর। কিন্তু যদি মাইকেল জ্যাকসন হতে গিয়ে সাইকেল থামিয়ে দাও মেয়েদের ইস্কুলের সামনে, তাহলেই সব শেষ। তোমাদের ফায়ার ভরা জীবনের টায়ার পাংচার হয়ে যাবে সেই আকুপাংচারে।"

লোকগুলো আবার থামে। ভাবে, জাম্বুরার আলাপ আবার ফিরে আসবে। কিংবা তরমুজের। বস্তুত তাদের ভাবায় ফল দু'টির আকৃতিই। চোখের সামনে ভাসে লাহোরি সিনেমাদের নায়িকাদের বুকচ্ছবি।

কিন্তু লোকটা বকতে থাকে ক্রমাগত। "তারা ভেবেছিলো, আমরা কোনো ব্যাণ্ড সঙ্গীতের দল। অথচ কুষ্টিয়া থেকে আমার যত ক্যাডার বন্ধু ছিলো, সবক'টাকেই সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলুম।"

জনতার ভিড় দ্রুত ছত্রাখান হয়ে যায়। কত কাজ পড়ে আছে সামনে, কে শোনে জাম্বুরার প্রলাপ?

লোকটা মনমরা হয়ে নিজেই দেখে নিজের বইয়ের প্রচ্ছদ। দুই শ্যালকের নাও। কিনছে না কেউ। এই প্রজন্মকে ফ্রড করা, কিংবা ফ্রয়েড করা, দু'টোই কঠিন। সব বেটা শুয়ে শুয়ে বুদ্ধি বাড়িয়ে ফেলছে। একা তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় উদয়াস্ত।

"বাঙ্গি মাহমুদকে আমি বলেছিলাম," দূরে কয়েকজনকে আসতে দেখে গলা উঁচিয়ে বলে সে, "পারবে না তুমি বাঙ্গি। আমি ঠিকই মালয়েশিয়া যাবো। মৌমাছি পালবো রাবার বাগানে, রুটিফল দিয়ে মধু খাবো, বিকেলে চা খাবো নেদারল্যাণ্ডের রাণীর সঙ্গে। বাঙ্গি মাহমুদ আমার ফাইলখানা আটকে দিলো।"

বাঙ্গি শুনে কয়েকজন থামে, সাগ্রহে অপেক্ষা করে লাহোরডমের গল্প শুনতে।

লোকটা আবারও উঁচিয়ে ধরে দুই শ্যালকের নাও। "আমার ওয়েবসাইটেও আছে এক কপি।" সরু গলায় বলে সে। "কিন্তু অনলাইনের সাঁতারুদের বুঝতে হবে, অফলাইনের জঙ্গলে কী প্রকাণ্ড এক একটি ব্রন্টোসরাস ছিলুম আমরা। সেই ঊনিশশো বাষট্টি থেকে চরে খাচ্ছি। এমন কোনো বাঁশঝাড় নেই, যার মশার কামড় খাইনি।"

লোকজন উসখুস করে।

একটা গুবরে মাছি এসে ঘুরঘুর করতে থাকে লোকটার মাথার কাছে। সে ভীষণ ভ্রুকুটি করে তাকায় মাছিটার দিকে, তারপর বলতে থাকে আবার।

"শেষটায় পাইলস হবার পর ঢুকে পড়ি সরকারি চাকরিতে। কত কত রিপোর্ট লিখেছি, ঘাঁটলে এখনও পাওয়া যাবে। ভোটাররা ওসব যদি ভোট দিতে যাবার আগে পড়তো মন দিয়ে, তাহলে আর ভায়ে ভায়ে ঝগড়া হতো না।" লোকটা আনমনে তাকায় সমবেত জনতার দিকে। "হ্যাঁ, বারেক ভাইকে বলেছিলুম, রাহী ভায়ের সাথে জমি নিয়ে গণ্ডগোল মিটিয়ে নাও। আমরা আমরাই তো। সেই ছোটোবেলা থেকে এক রুটি তিন টুকরো করে ছিঁড়ে হালুয়া দিয়ে খেয়ে অ্যাদ্দূর এলুম।"

বাঙ্গির আলাপের আশা ছেড়ে দিয়ে চলে যায় কয়েকজন। যা হতে পারতো একটি ভিড়, সেটি হয়ে পড়ে রুগ্ন জটলা।

লোকটা আবার উঁচিয়ে ধরে দুই শ্যালকের নাও। "ক্রিকেটের জগতে যে কী ভীষণ অনিয়ম চলছে, তা ফাঁস করে দেয়ার জন্যেই জাতীয় ক্রিকেট দলে ঢুকতে চেয়েছিলুম। ইচ্ছা ছিলো সাংবাদিক জগতের মাসুদ রানা হবো। বাছাই পর্বেই আউট হয়ে গেলুম। পড়ুন দুই শ্যালকের নাও, পড়লে আরো জানতে পারবেন কী ঘটে আমাদের ক্রিকেট অঙ্গনে। একেবারে কাছ থেকে দেখা। ভাইসব, ভাইসব ...।"

লোকজন কেটে পড়তে চায়।

মরিয়া হয়ে পড়ে লোকটা। "মুরালিথরন আমার স্পিনের শিক্ষক। সে ঘোরায় বল, আমি ঘোরাই কথা। আর শচীন হাতে ব্যাট ধরিয়ে শিখিয়েছে কীভাবে যুক্তি-তক্কো-গল্পকে মেরে উড়িয়ে বার করে দিতে হয় মাঠ থেকে। সেদিন ফোন মেরেছিলুম শচনাদাকে। ফর্ম পড়ে যাচ্ছে, এ তো আর বলতে পারি না। বল্লুম খেলছো ভালোই, কিন্তু ক্রচ গার্ডটা তো ঠিক সাইজের নিয়ে নামছো না।"

কয়েকজন কাছে ঘেঁষে আসে শচীনের নাম শুনে।

"দুই শ্যালকের নাওয়ে আরো আছে আমার সোয়াজিল্যাণ্ড ভ্রমণের কথা। সেখানকার রাজা আমায় এসে বলে, তোমাদের দেশে এত বন্যা হয় কেন? আমিও কম যাই না, বললুম তুমি এতগুলো বিয়ে করো কেন? রাজা খুশি হয়ে একটা কলা দিলো খেতে।" লোকটা বাড়িয়ে ধরে তার বই।

লোকজন আবার ছটকে পিছিয়ে যায়।

এবার ক্ষেপে ওঠে সে। "যত্তসব বামন। বই কিনতে চাও না তো এসেছো কেন এ শহরে? যাও ভাগো! সোজা গ্রামে গিয়ে কলাপাতায় ছবি আঁকা শেখোগে! মূর্খ নব্য সেলিব্রিটি নির্বোধ ক্লাউন কোথাকার!"

লোকজন নিজেদের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে। তারপর চলে যায়।

কয়েকজন দাঁড়িয়ে ছিলো, তাদের দিকে আবার সাগ্রহে দুই শ্যালকের নাও বাড়িয়ে ধরে সে। "পড়ে দেখো।"

তারা আগ্রহ দেখায় না। একজন শুধু বলে, "ঝাড়ু রেখে গেলাম এখানে, যাবার আগে সব সাফ করে যেও।"

সে একটা পাথর তুলে ছুঁড়ে মারে। "ফেলু গোয়েন্দা হয়েছো খুব, না? তোমার ফিতায় তো সবই ছাব্বিশ ইঞ্চি হয়। আস্তিন ছাব্বিশ ইঞ্চি, হাতা ছাব্বিশ ইঞ্চি, গলা ছাব্বিশ ইঞ্চি! ওসব রেসিজম চলবে না! এখানে আমি ঘুড়ি ওড়াবো আমার ইচ্ছেমতন! বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে মাঞ্জা বানাবো! ভাগো!"

লোকগুলো তাকিয়ে থাকে।

সে সগর্বে বলে, "তিনটা বছর কাটুক, দেখবে কী প্যাঁচ পয়জার শিখেছি। আর দশটা বছর কাটুক, তখন তোমরাই এসে বলবে ওস্তাদ ফাডাইয়ালাইসেন! বইটা পড়লে তো এখনই বলতে!"

সবাই চলে যায়।

সে চিৎকার করে ওঠে, "বামনের দল!"

আস্তে আস্তে সূর্যটা একপাশে ঢলে পড়ে। অবিক্রীত পড়ে থাকে দুই শ্যালকের নাওয়ের সবক'টা কপি। লোকটা সন্ধ্যার দিকে তাকিয়ে মুঠো পাকায়, তারপর নেমে আসে নিজের মলস্তুপ থেকে। আকাশ, দিগন্ত সব তিরিশ ইঞ্চি ওপরে উঠে যায়।

লোকজনের রেখে যাওয়া ঝাড়ুর দিকে ভ্রুক্ষেপ করে না সে। আকাশে চাঁদ দেখা যাচ্ছে না মেঘের জন্যে, গাড়ির খুপরি থেকে একটা প্লাস্টিকের চানতারা বার করে গাড়ির সামনে পতাকার মতো ফিট করে নেয় সে। তারপর গাড়ি ঠেলতে ঠেলতে বাড়ি ফিরতে থাকে, আর মাঝে মাঝে হাত দেয় সেই প্লাস্টিকের চাঁদে।

গুবরে মাছিটা তার ফেলে যাওয়া তিরিশ ইঞ্চি উঁচু মলস্তুপের চারপাশে এক চক্কর মেরে ঊর্ধ্বশ্বাসে আবার উড়ে যায় বইঅলার পিছুপিছু, চক্কর কাটে তার মাথার চারপাশে, ছাব্বিশ ইঞ্চি উচ্চতায়।

শহরটা ভরে যায় বিষণ্ণতায়।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি
তবে হিমু ভাই আমি ভাবছিলাম তিনি হয়তো এই জাতীয় লেখা বা ভাবনা বাদ দিয়ে আগের ট্র্যাকে ফিরে আসবেন। আফসোস



তারাপ কোয়াস

শিশিরকণা এর ছবি

বুঝলাম নাকি বুঝলাম সেটাই বুঝলাম না মন খারাপ, তবে অত্যন্ত উচ্চ শিল্পমান সম্পন্ন বাঁশ হইছে এইটুক বুঝতে পারছি।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

তাসনীম এর ছবি

একটু হতাশই হলাম হিমু, এই লেখাটার খুব দরকার ছিল কি?

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

হিমু এর ছবি

চুপ করে থাকা কখনো কখনো দরকারি মনে হয় কারো কারো কাছে। আমি কিন্তু কখনও গিয়ে প্রশ্ন করি না, চুপ করে থাকা দরকার ছিল কি না। কে জানে কার কাছে কোনটা দরকারি?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

তাসনীম এর ছবি

কারো চুপ করে থাকাটা যদি বাড়াবাড়ি মনে হয়ে তবে সেটা নিয়েও প্রশ্ন করা উচিত বৈকি। ভবিষ্যতে করতে পারো...বলতে পারো যে ভাই আপনি এখন কোন মন্তব্য না করলে ভবিষ্যতে মন্তব্য করার যোগ্যতা হারাতে পারেন।

হাতে একটু সময় আছে...হতাশার ব্যাপারটা খুলেই বলি। তোমার এই গল্পটার নায়ক এই মুহূর্তে সচল পরিবারেরই লোক। উনার লেখা আমি ঠিক বুঝতে পারি না এই জন্য মন্তব্যও করাও বেশি হয় না। মন্তব্যে উনাকে অধিকাংশই বেশ ভালো ধুয়েও দেন। এরপরও উনি লিখে চলছেন এবং নানান বিতর্কের জন্ম দিচ্ছেন। সেটা উনার বিবেচনা।

আমি তোমার প্রায় সব লেখাই পড়ি এবং বেশ আগ্রহ নিয়েই পড়ি। তোমার লেখাতে তাই প্রায়ই মন্তব্য করা হয়। আমি তোমার পাঠককুলের অন্তর্গত তাই এখানে আমার সরব হওয়ার কিছুটা অধিকার আছে। এই অধিকারটুকুর জন্য আমাকে কি আগে অন্য ব্লগে কাউকে কিছু উচিত কথা বলে আসতে হবে? আমার তো মনে হয় না।

তোমার লেখার ক্ষমতা জানি এবং সেই ক্ষমতার প্রয়োগে যেমন মুগ্ধ হই, অপপ্রয়োগে তেমনিই হতাশ হই। তুমি যেই গল্পটা লিখেছ, নিঃসন্দেহে সেটা গল্প হিসাবে দারুণ একটা গল্প। কিন্তু এখানে তোমার ক্ষমতার অপপ্রয়োগ ঘটেছে, গল্পের উইটগুলোকে পাশ কাটিয়ে একধরণের ব্যক্তি আক্রমণ ফুটে উঠেছে।

সহসচলের প্রতি আক্রমণ নিরুৎসাহিত করা হয় -- এই পলিসি মডারেশনের করা, আমার নয়। তুমিও নিজেও সেই মডারেশনের সাথেই যুক্ত। আমি তোমাকে তোমাদের করা নীতিমালাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। আমার মতে সচলে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালার মধ্যে এটি একটি।

উনার লেখার প্রতিবাদের জন্য উনার লেখার নিচে কমেন্টের বাক্স আছে, আপত্তি জানানোর লিঙ্ক আছে, ফেসবুকের স্ট্যাটাস আছে...সেগুলো বেশ নিয়মতান্ত্রিক বলেই আমার মনে হয়।

আশা করি আমার বক্তব্য বোঝাতে পারলাম।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

হিমু এর ছবি

আমার লেখাটা একজন হ্রস্ব আত্মদামামাবিদকে নিয়ে। আপনার যদি মনে হয়ে থাকে, এটা সচলের কাউকে নিয়ে লেখা, সেটা আমার লেখনীর দুর্বলতা হয়তো। কিংবা সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর সাথে এর সংযোগ খুঁজে পাবার ব্যাপারে পাঠকের আগ্রহের কারণেও এমন মনে হতে পারে। এতে আমার দায় থাকে হয়তো, কিন্তু দায় আপনারও থাকে। তাই হয়তো আবার গল্পটি পড়লে আমার ওপর চাপানো দায় কিছুটা লঘু হতে পারে।

কে কখন কোথায় কথা বলবেন, কখন চুপ থাকবেন, সেটা আমি ডিকটেট করার অধিকার রাখি না। তাই কার জন্যে কোনটা দরকারি, কোনটা দরকারি নয়, এ ধরনের মন্তব্য আমি নিজে কখনো করি না। কোনো লেখা খারাপ লাগলে সেটার সমালোচনা করুন, ত্রুটি ধরিয়ে দিন, কিংবা এখন যেমন করলেন, পাঠক হিসেবে আপনার হতাশা আর আশঙ্কার কথা বললেন, সেটাও বলুন। কিন্তু আমরা একজন যেন অন্যের জন্যে "দরকার"টাকে ডিফাইন না করি, এইটুকুই অনুরোধ থাকবে লেখক হিসেবে।

নিয়মতান্ত্রিক অভিযোগের পথও খোলা আছে। contact অ্যাট সচলায়তন ডট কম বরাবর যোগাযোগ করে আপনি অভিযোগ করতে পারেন। মডারেটররা যদি এই গল্প নীতিমালা ভঙ্গ করেছে, এমন কোনো নিদর্শন খুঁজে পান, তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

তুলিরেখা এর ছবি

প্রথমেই বামন? মৎস, কূর্ম বরাহ নৃসিংহ রা কোথা? ???? চিন্তিত

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

ধুসর গোধূলি এর ছবি

তোর লেখার মান নিয়ে আমি বরাবর গর্ব করি। এই গল্পেও তার অন্যথা হয় নাই। কিন্তু গল্পের বিষয়বস্তুটা নিয়ে গর্ব করার কিছুই নাই। বরং তোরে নীতিমালার ৭ নাম্বার ধারাটা স্মরণ করায়ে দিই। আরও স্মরণ করায়ে দিই ৮ নাম্বার ধারার দশ নাম্বার উপধারার।

তোর লেখাটায় আপত্তি জানানো যেতেই পারে। কিন্তু জানালাম না। সেই ভারটা তোর উপরেই থাকলো। তুই যা খুশি মনে করতে পারিস এতে, কিছু আসে যায় না।



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

হিমু এর ছবি

এইসব ধারা জায়গামতো কপচাইতে পারবি যেদিন, সেদিন আবার আসিস এই পোস্টে কমেন্ট করতে। তার আগ পর্যন্ত গ্রুয়স গট।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

ধুসর গোধূলি এর ছবি
প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ফাইন লাইন ব্যাপারটা সম্ভবত আপেক্ষিক। হয়তো এর অস্তিত্বই নেই। থাকলেও এরকম লাইন খুঁজে পাওয়া কিংবা কাউকে যদি এরকম ফাইন লাইন ড্র করার ক্ষমতা দেয়াও হয় তিনিও যে সবসময় ঠিকঠিক এরকম লাইন ড্র করতে পারবেন এমন নয়। মানুষ মাত্রই এরকম নানা সীমাবদ্ধতা নিয়ে এগিয়ে চলা। কোন মানুষই বোধহয় নিরপেক্ষ নয়, তবে কাউকে কাউকে নিরপেক্ষ থাকতে হয়-- নিরপেক্ষ ভাবে ফাইন লাইন ড্র করার চেষ্টা করতে হয়। আমি জানি এরকম মানুষের সংখ্যাও একেবারে কম নয়। হাসি

সংসপ্তক এর ছবি

আপনার লেখার ধার টাংস্টেন সূঁচের কাছাকাছি। কিন্তু হাসতে গিয়ে কি বিষয়ে লেখা সেটা ভূল হবার জো থাকে না। এটাই দুর্দান্ত লাগে।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা

.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা

আবীর এর ছবি

এইটা হিমুর one of the best. এইরকম স্বয়ংসম্পূর্ণ লেখা আরো চাই, এরকম লেখার সময় হয়েছে।

আবীর এর ছবি

একদম না বুঝে মন্তব্য করেছি। মন্তব্য retract করলাম। আজাইরা বাঁশ মারাতে কেবল হিমুর প্রতিভার স্খলনই হয়।ওর কাছ থেকে সত্যই বাঁশহীন, মৌলিক কাজের অপেক্ষায় রইলাম।

হিমু এর ছবি

তুই যদি আমার বন্ধু আবীর হস, তাহলে তোর প্রথম মন্তব্যটাই গুরুত্বের সাথে নিলাম। আপনি অন্য কেউ হলে দ্বিতীয়টা নিয়ে ভাবছি।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

হিমু, আপনার সাহিত্য রচনার ক্ষমতা সম্বন্ধে আমার সন্দেহ নেই। এই ব্যাপারে আমি আগে বলেছি, আপনিও সেকথা জানেন। আপনার লেখার অনুরাগী পাঠক হিসাবে বলতে পারি আমার কাছে এই লেখাটা স্রেফ সময়, শ্রম ও প্রতিভার অপচয় বলে মনে হয়েছে।

মলস্তুপ যে মলের স্তুপ বোঝার জন্য তা ঘেঁটে দেখার দরকার হয়না, তার দুর্গন্ধই দূর থেকে তা জানান দেয়। নিরুপায় মানুষ দূর থেকে নাক বন্ধ করে দ্রুত সেটা পার হয়ে যায়। কিছু মানুষ কিছু সময়ের জন্য হয়তো বিভ্রান্ত হতে পারেন, কিন্তু অনেক মানুষ দীর্ঘ সময়ের জন্য বিভ্রান্ত হতে পারেননা। আপনি সাধারণ মানুষদের প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার উপর আস্থা রাখুন। যা কিছু বর্জ্য তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য হবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হিমু এর ছবি

আমি ভবিষ্যতে আরো সংযত হবার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ আপনাকে।

পূর্বাপর পর্যবেক্ষণের প্রসঙ্গ বাদ দিলে এটি গল্প হিসেবে কেমন?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ।

পূর্বাপর পর্যবেক্ষণের প্রসঙ্গ বাদ দিলে গল্পটির আকার কেমন দাঁড়াবে? শেষটাই বা সেখানে কেমন হবে? গল্পটার শুরুর দিকে আমি শহীদুল জহিরের "ডুমুরখেকো মানুষ"-এর সুবাস পাচ্ছিলাম। যদি অমন সুবাস ধরে আগানো যেতো তাহলে হয়তো আমরা আপনার আগামী গল্প সংকলনের একটা গল্প আগেভাগে পড়ে ফেলার সুযোগ পেতাম।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

শেষবার John Dryden এর MacFlecknoe পইড়া এমন আনন্দ পাইসিলাম। ৫ তারা।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

সাফি এর ছবি

(গুড়)
ব্রন্টোসোরাসরা সব এক দল নাকি?

দ্রোহী এর ছবি

ইট মারলে পাটকেলের জন্য অপেক্ষা করা ফরয। তাই গল্পে আপত্তিকর কিছু খুঁজে পেলাম না।

আর লেখকের ক্ষমতাকে ঈর্ষা করা ছাড়া কিছু করার ক্ষমতা নাই।

গল্পে পাঁচ তারা।


কাকস্য পরিবেদনা

দ্রোহী এর ছবি

ষষ্ঠ পাণ্ডব লিখেছেন:
মলস্তুপ যে মলের স্তুপ বোঝার জন্য তা ঘেঁটে দেখার দরকার হয়না, তার দুর্গন্ধই দূর থেকে তা জানান দেয়। নিরুপায় মানুষ দূর থেকে নাক বন্ধ করে দ্রুত সেটা পার হয়ে যায়।

পাণ্ডবদা, সামান্য দ্বিমত করছি আপনার সাথে।

যেখানে সেখানে মলত্যাগ করতে দিয়ে দূর থেকে নাক বন্ধ করে দ্রুত পার হয়ে যাবার নীতিটা আসলে এড়িয়ে যাবার নীতি। এভাবে আপাতভাবে সমস্যার সমাধাণ হলেও দীর্ঘমেয়াদে তা কার্যকরী হয় না। তাই কাউকে না কাউকে মল ঘাঁটার মত অপ্রিয় কাজটা করতে হয়। ফলশ্রুতিতে হয়ত সে সমাজের কাছে অচ্ছুৎ বলে বিবেচিত হয়। [উদাহরণ: স্ট্রাইকব্রেকার - আইজ্যাক আজিমভ]


কাকস্য পরিবেদনা

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

মেম্বর, যত্রতত্র মলত্যাগের মতো অপকর্মের বিরুদ্ধে অবশ্যই দাঁড়াতে হবে, তবে যথাস্থানে দাঁড়াতে হবে। এই প্রসঙ্গে এই জরুরী-অপ্রিয় কাজটা যথাস্থানে আপনি করেছেন, হিমুও করেছেন। আপনি বা হিমু সেসব স্থানে যা করেছেন সেগুলো যথার্থ ও যৌক্তিক। এর জন্য আপনাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা আছে - আপনাদের অচ্ছুৎ ভাবার প্রশ্নই ওঠেনা। কিন্তু এর জন্য যদি সাহিত্য রচনা করার চেষ্টা করা হলে তাতে সাহিত্যের প্রতি অন্যায় করা হয় এবং হিমুর সাহিত্যপ্রতিভার অপচয় হয়।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দ্রোহী এর ছবি

কিন্তু এর জন্য যদি সাহিত্য রচনা করার চেষ্টা করা হলে তাতে সাহিত্যের প্রতি অন্যায় করা হয় এবং হিমুর সাহিত্যপ্রতিভার অপচয় হয়।

পাণ্ডবদা, হিমু আমার সাথে গল্প করতে করতেই পনের হাজার শব্দের শবর লিখে ফ্যালে। এরকম দু/চারটা ছোটগল্প ওর হাঁচির সাথে বের হয়। এগুলো লিখলে হিমুর সাহিত্য প্রতিভার অপচয় হয় না। নিশ্চিত থাকতে পারেন।

পাটকেল জিনিসটা কিন্তু প্রতিক্রিয়া হিসাবেই আসে। তাই পাটকেল খেলে কাউকাউ করার কোন কারণ থাকার কথা না।

প্রত্যেক গ্রামে দেখবেন একটা করে নেংটা পাগল থাকে। তার কাজই হচ্ছে পোলাপান দেখলে দৌড়ানি দেয়া যাতে পোলাপান ঢিল মারে।


কাকস্য পরিবেদনা

আলমগীর এর ছবি

গল্প হিসাবে খুবই ভালো। কিন্তু আমার ছিদ্রান্বেষী স্বভাবের জন্যই হোক আর কাকতালই হোক, যে পটভূমি আর নায়ক এখানে এসছে সেটা ভালো লাগল না। একটা পোস্টের টক-ঝাল-মিষ্টি সে পোস্টেই মেটানোর পক্ষে আমি।

দুর্দান্ত এর ছবি

অপচয়।

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

"দুই শ্যালকের নাওয়ে আরো আছে আমার সোয়াজিল্যাণ্ড ভ্রমণের কথা। সেখানকার রাজা আমায় এসে বলে, তোমাদের দেশে এত বন্যা হয় কেন? আমিও কম যাই না, বললুম তুমি এতগুলো বিয়ে করো কেন? রাজা খুশি হয়ে একটা কলা দিলো খেতে।" লোকটা বাড়িয়ে ধরে তার বই।

এটা পড়ে মজা পেলাম
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ইতোমধ্যে আপত্তিকর অভিযুক্ত... ব্যাপারটা এখন মডারেটরের কোর্টে। আমার মনে হয় সে পর্যন্ত আর এটা নিয়ে কথা না বলাই উত্তম।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

একটু কঠিন হয়ে গেছে, তবে ভালোই লাগল।
কামরুল হাসান রাঙা

সাবিহ ওমর এর ছবি

আপ্নে দুর্যোধন না, সুযোধন খাইছে

লেখা আপত্তিকর, কিন্তু পৈশাচিক রকমের ভাল পেলাম। শেম অন মি... মন খারাপ

সুরঞ্জনা এর ছবি

হুম, শেইম অন মি টু মন খারাপ
............................................................................................
স্বপ্ন আমার জোনাকি
দীপ্ত প্রাণের মণিকা,
স্তব্ধ আঁধার নিশীথে
উড়িছে আলোর কণিকা।।

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ভালো লাগলো না। ঝামেলা লাগলেই এই রকম গল্প লেখাটা ক্লিশে হয়ে গেছে। সচলায়তনের কোনো "নিয়ম" হয়তো অক্ষরে অক্ষরে ভাঙা হয়নি। "কাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করা হয়েছে" জিজ্ঞেস করলে ইঞ্চি মেপে কিছু বলা যাবে না, কারণ সব কিছুর রেফারেন্স স্রেফ সচলায়তন থেকে আসেনি, নগণ্য পরিমাণে ধোঁয়াশা করা হয়েছে বিষয়বস্তু।

এই ধরনের লেখা/গল্প হয়তো কোনো ল' ভাঙে না, তবে এটা যে সচলায়তনের "স্পিরিট অফ ল'"-র পরিপন্থী, তা নিয়ে হয়তো সবাই একমত হবেন।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

হিমুর পতন দেখে খুবই হতাশ বোধ করছি। এই সমস্ত petty পলিটিক্স বিরক্ত বোধ হয় এখন।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আপত্তি জানালাম। ব্যক্তিগত আক্রমন, মেটাব্লগিং।
কিছু কিছু মানুষের বিনোদিত হওয়ার ক্ষমতা দেখে বিষন্ন হলাম। সচলায়তনে বিকৃত উল্লাস দেখতে ভাল্লাগেনা।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

কালো-মডু এর ছবি

প্রিয় হিমু,

সার্বিক কাঠামোবিচারে আপনার লেখা এই গল্পটি অভিযোগের ভিত্তিতে মেটাব্লগিং বিবেচনা করে প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে দেয়া হলো। এমন পোস্টের পুনরাবৃত্তি ঘটলে আপনার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।