১.
সচিব মহোদয় ফাইলটি খুললেন শুরুতে। তারপর চোখ খুললেন।
নাহ, সব ঠিকই আছে। ছয়টার কথাই বিশদ লেখা আছে। বৈজ্ঞানিক নামধাম, কোথায় জন্মে, কত উঁচু হয়, উপকারিতা কী, ইত্যাদি নানা হাবিজাবি গুছিয়ে লেখা আছে। দুই সপ্তাহ আগে এক অধিদপ্তরের কর্তা এই ফাইল পাঠিয়েছিলো, তাতে হিজল আর তাল ছিলো না। দুটো গাছকে ফাইলে ঢোকাতে মাত্র দুই সপ্তাহ লেগেছে। মনে মনে উপসচিবের প্রশংসা করলেন তিনি। ছেলেপেলে খুব কর্মঠ হয়ে উঠছে। প্রশাসনের কাজে গতি আসতে শুরু করেছে। তিনি যখন উপসচিব ছিলেন, তখন হিজলকে ফাইলে ঢোকাতে কমসে কম মাস তিনেক লাগতো। তালের জন্যে আরো দেড় মাস। তারপর আবার সব খুঁটিয়ে দেখে দুই ধাপ টপকে সচিবের হাতে ফাইল পৌঁছাতে পৌঁছাতে আরো মাস তিনেক। অধিদপ্তরের কর্তা উপসচিব সেদিনের ছোকরা, রক্ত গরম এখনও, সব কাজ চটজলদি সেরে ফেলতে চায়। আমলাদের হতে হয় কুমীরের মতো, সব শক্তি আর তাপ নিতে হয় চারপাশ থেকে, সময়মতো মওকা বুঝে তড়িৎগতিতে নড়তে কিংবা চড়তে হয়, বাকিটা সময় কাটিয়ে দিতে হয় চুপচাপ রোদ পোহানোতে। লাফঝাঁপ দেয় ব্যাং।
তার নিজের পছন্দ হিজল। গ্রামের বাড়িতে বাড়ির মেয়েদের গোসলের পুকুরের পাশে হিজলের সারি চোখে ভাসে এখনও। কী চমৎকার একটা গাছ, হারিয়ে যাচ্ছে মানুষের চোদনাপনার কারণে।
সচিব মহোদয় একটু গম্ভীর হয়ে ওঠেন। মানুষের চোদনাপনার জন্যে নয় ... নচ্ছাড়পনার জন্যে, নিজেকে সংশোধন করেন তিনি মনে মনে। আ ম্যান ইজ অ্যাজ গুড অ্যাজ হিজ থটস।
বাকি পাঁচটা গাছও মন্দ নয়। আম। তাল। পলাশ। শিমুল। কদম। ঢাকা শহর থেকে বেরিয়ে খোলা বাংলাদেশের কোথাও তাকালে এদের একটা না একটা চোখে পড়বেই। আরিচা রোডের দুই পাশে একটু পর পর পলাশ আর শিমুল। তাদের সারি চলে গেছে পদ্মা পেরিয়ে সুদূর পটুয়াখালি পর্যন্ত। বসন্তের শুরুতে বাংলাদেশের মহাসড়কগুলো এই দুই গাছের শাসনে রঙিন হয়ে থাকে। কদমও খারাপ নয়, যদিও কদমগাছে সাপ থাকে। আম আর তালও চলে।
কিন্তু সবার সেরা হিজল।
সচিব মহোদয় ফাইল নিয়ে উঠে পড়েন। মন্ত্রিসভায় আজ আলোচনা হবে জাতীয় বৃক্ষ নিয়ে।
২.
মন্ত্রিসভায় পেঙ্গুইনের মতো সারি বেঁধে বসে আছেন সাদাকালো মন্ত্রীবৃন্দ। সবার সামনে ফাইলের একটি কপি।
সচিব মহোদয় বিনীত সুরে প্রস্তাবটি উঠিয়ে চুপ করে বসে থাকেন। বাকিটা মন্ত্রীরা বেছে নেবেন। ছয়টা থেকে একটা। ছক্কার দান।
এক মন্ত্রী গলা খাঁকরে বললেন, "জাতীয় ফল কাঁঠাল ছিল, জাতীয় বৃক্ষ আবার অন্য কিছু করার দরকার কী? কাঁঠাল কি বৃক্ষ হিসাবে খারাপ নাকি?"
সচিব মহোদয় ফিরে গেলেন শৈশবে। পুকুরের পারে হিজল গাছ। একটা মাছরাঙা বসে আছে তার ডালে। একটা চালতা খসে পড়লো পুকুরে। শব্দ উঠলো, টুলুব! একটা বোকা মাছ ঘাই দিয়ে উঠলো মাঝপুকুরে।
অপর মন্ত্রী বললেন, "কদম একটা ফালতু গাছ। লোফার ঈভ টিজাররা এর তলে বইসা বংশী বাজায়। কদম ফুল দেখতে সুন্দর, কিন্তু কদমের কাঠ দিয়া না হয় আসবাব, না হয় লাকড়ি। কদমের থিকা নিম গাছ বেশি উপকারী। এই ফাইলে নিমের কথা লেখা নাই কেন?"
প্রথম মন্ত্রী বললেন, "ভাইসাহেব হক কথা বলছেন। নিম বড়ই কাজের বৃক্ষ। মেসওয়াক হয়। নিমের কাষ্ঠ দিয়া ভালো দোতারা হয়। নিমের আসবাবের কথা আর কী বলবো, আমার দাদাজানের নিমের পালঙ্ক আষ্টজন জোয়ান মিল্লা তুইলা এক ঘর থিকা আরেক ঘরে নিতে গিয়া হয়রান হইয়া পড়ছিলেন। নিমগাছের ফল না, পাতাও কাজে লাগে। ছোটোকালে পড়ছিলাম, নিম পাতা জোড়া জোড়া ...।"
আরেক মন্ত্রী অবজ্ঞার সুরে বললেন, "নিম পাতা জোড়া জোড়া না, আম পাতা জোড়া জোড়া।"
চতুর্থ এক মন্ত্রী গলা খাঁকরে বললেন, "এইসব পলাশ শিমুল হিজল তমাল টাইপ ফুলবাবু নাম সাজেস্ট করার দরকার কী? বৃক্ষ যদি হইতে হয় জবরদস্ত বৃক্ষ হইতে হবে। পলাশ শিমুল হিজল কদম কবি আর বয়াতিদের জন্য ফালাইয়া থোন। বৃক্ষ করেন আম নাহয় কাঁঠাল। যেমন ফল তেমন পাতা তেমন কাঠ।"
সচিব মহোদয়ের মানসপটে ভেসে উঠলো গত কুরবানির দৃশ্য। নাতিটা ঘ্যান ঘ্যান করছিলো কাচ্চি বিরিয়ানি খাবে। দু'টো খাসি কুরবানি দিয়েছিলেন। খাসির সঙ্গে এক ব্যাগ কাঁঠালপাতাও এসেছিলো।
আরেক মন্ত্রী বললেন, "আমের সঙ্গে আমাদের নাড়ির বন্ধন। সেই সিরাজুদ্দৌলার আমল থেকে আম্রকাননে ঘুরপাক খাচ্ছি আমরা। আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণাও আমের বনে। জাতীয় সঙ্গীতও আমের বনের ঘ্রাণে পাগল। গতবছর রাজশাহী গেলাম, সাতদিন ছিলাম। আম খাইতে খাইতে পাগল হয়া গেছিলাম। আমার ছোটো মেয়েটা আমের এত ভক্ত, কী বলবো। সারাক্ষণ দেখি আঁটি নিয়ে চুষতেই আছে চুষতেই আছে। আমি বললাম মামণি তুমি আঁটিটা ফালাইয়া দিয়া আরেকটা আম ন্যাও ...।"
এক মন্ত্রী বললেন, "তাহইলে আমই ফাইনাল করেন। বাকি গাছপালা লতাপাতা বাদ।"
এক মন্ত্রী মিনমিন করে বললেন, "আমি অবশ্য তালগাছের পক্ষে মত দিতে চাই। তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে, উঁকি মারে আকাশে ...।"
প্রথম মন্ত্রী বললেন, "সারাটা ইস্কুল জীবন তালগাছ হইতে হইছে কানে ধইরা। ডান পাটা এখনও টনটন করে অমাবস্যা পূর্ণিমায়। তালগাছ চলবে না। আর ... তালগাছ জাতীয়করণের তীব্র বিরোধিতা করি।"
খুব দ্রুত আমগাছের পক্ষে সিদ্ধান্ত জমতে শুরু করে। হিজল ফিরে যায় সচিব মহোদয়ের আবছা শৈশবের পুকুরপারে। শিমুল আর পলাশ মুখ লুকায় মহাসড়কের পাশে। কদম ছায়া দেয় গ্রামীণ বংশীকুশল ঈভ টিজারদের।
আর তালগাছের মালিকানা কী করে পুরো জাতির ওপর ছাড়া যায়? মন্ত্রীরা মন্ত্রী হলে কী হবে, বাঙালি তো? বাঙালি কখনও তালগাছ অন্যের হাতে ছাড়তে পারে? হোক সেই অন্যপক্ষ গোটা জাতি।
আম জাতীয় বৃক্ষ এখন। কেহ অন্ন রাঁধি খায়, কেহ পড়ি নিদ্রা যায় এ রাজ চরণে। সরকারী দলের মন্ত্রীদের মতোই। শুন ধনি রাজকাজ দরিদ্র পালন। আমার প্রসাদ ভুঞ্জে পথগামী জন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: সব চরিত্র কাল্পনিক। তালগাছটা বাদে। উহা আমার। আমার।
মন্তব্য
তাল পাকলে আমাকে দিতে হবে বলে দিলাম। ইটা নাই বইলা লাইন দিতে পারলাম না
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
নাহ্, টেস পাইলাম না
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নিম কিন্তু ভেষজ
আর একটু হইলেই গেছিল।
'সারাটা ইস্কুল জীবন তালগাছ হইতে হইছে কানে ধইরা। ডান পাটা এখনও টনটন করে অমাবস্যা পূর্ণিমায়। তালগাছ চলবে না। আর ... তালগাছ জাতীয়করণের তীব্র বিরোধিতা করি।' --- মাশাল্লাহ, এই লাইনের জন্য লেখাটা পাশ।
হিজল আর তমাল এই দুইটা গাছের ছবি দেখাইতে পারেন কেউ? চেনা চেনা লাগে কিন্তু ঠিক মনে পড়ছে না...
হিজল বা Barringtonia acutangula। আরো ছবি এখানে। ধানমন্ডি লেকের ৩২ নম্বর আর কলাবাগান কোনার উল্টাদিকের নামা ভর্তি ছিল এই গাছে। ৮০-৮৩ সাল পর্যন্ত বাফা'র পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠান হত ঝড়ে পড়া লাল হিজল ফুলে ঢাকা ঘাস-মাটির ওপরে।
তমাল বা Garcinia xanthochymus। আরো ছবি এখানে। । ছোটবেলায় আমাদের গ্রামের বাড়ীতে 'কাউ' ফলের এর একটা গাছ ছিল। আমার দাদী সেটা দেখিয়ে বলেছিল ওটা নাকি 'তমাল' গাছ। দাদী ও গাছ দুজনেই পরপারে, তাই এর সত্যতা যাচাই করার আর কোন উপায় নেই।
কাউ ফলতো কাউফলই। ওটা তমাল নয়। আমি নরসিংদীতে কয়েকটি তমাল গাছ দেখেচে। ওখানে লটকনও পাবেন। আর কাউফল পাবেন কাউখালিতে।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
বাঃ। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আসলেই অনেক ধন্যবাদ! আমি এ দুইটার একটাও চিনতাম না!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমলীগের আমলে আম জাতীয় বৃক্ষ হইবে না তো কি জামরুল হইবে?? আমই হওয়া চাই।।
_______________________________________________
সিগনেচার কই??? আমি ভাই শিক্ষিৎ নই। চলবে টিপসই???
পোস্টে মাইনাস, মন্ত্রীদের আম্রগাছেভুটমারো'র জন্যও। আসলে জাতীয় গাছ হওয়ার কথা ছিলো ধুতুরা গাছের। কতো উপকারী একটা গাছ। কতো সুন্দর ফুল দেয়, ফল দেয়, মূল দেয়, আরও কী কী জানি দেয়! এইরম একটা উপকারী গাছেরে জাতীয় গাছ না কৈরা কিনা আম্র গাছেরে জাতীয় গাছ বানাইলো! এইটা একটা বিলাতি ষড়যন্ত্র। এই আম্র গাছের তলেই কি-না বাংলার স্বাধীনতা সূর্য ডুবছিলো, তাই বিলাতিরা চায় আম্র গাছেরে বাঙালরা পুজা দিক। আর আম্রগাছের লগে তাগোর বীরত্বেরও গল্পচলুক। এইগুলা কি আমরা বুঝি না?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কুমিরের বিষয়টা ভালৈছে।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
সত্যি, ওই উপমাটা বোধহয় লেখার সবচেয়ে সেরা অংশ।
জাতীয়করণে সবারই লাভ হয়। সবাই চায় তাদের ছোট্ট শহরটিকেও যেন জেলা হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। ভাবছি আমগাছের জাতীয়করণে আমপ্রজাতির কী লাভ হল?
জাঁদরেল লেখারে ভাই..............তোফা! তোফা!
যে বোঝে নাই সে যেন ভাদ্র মাসের সুবেহসাদেকের সময় দৌড়াইতে দৌড়াইতে তালগাছ তলায় গিয়া চোখ কচলাইয়া দেখলো পাকা তাল পড়ে নাই..............।
গল্পের ভঙ্গিটাই অন্যরকম লাগল।
বেশ জমে আসছিল। মনে হল বিস্ফোরণ ঘটবে। ঘটেছেও। তবে মোচড়ের মত নয়। শেষে মনে হল--মোচড়টা ঠাস করে চড়ের মত হলে আরও ভাল লাগত।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
একবার মাস্টার মশাই বলেছিলেন, সাহিত্যে নাকি উপমার ব্যবহারই মুন্সিয়ানার পরিচয় দেয়। এরপর অনেক লেখকের লেখাই পড়া বাদ দিয়েছি অসহ্য-আজাইরা উপমার আধিক্যের কারনে।
আজ এই লাইনটা পড়ে আবার মাস্টার মশাইর কথা মনে পড়লো--
সাধু সাধু।
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
সব মানতে রাজী আছি হিমু ভাই, কিন্তু তাল গাছটা আমার
গল্পটা দারুণ হয়েছে।
হোম - টুইটার - ফেইসবুক - উইকিপিডিয়া - এ্যাকাডেমিয়া
টুইটার
খুব বেশি মজা পাইলাম না।
কাকস্য পরিবেদনা
জটিল হইছে হিমু ভাই, বিশেষ করে কুমিরের আর পেংগুইনের উপমাটা সেইরকম হইছে। বেপক মজা পাইছি। চালাইয়া যান।
"সারাটা ইস্কুল জীবন তালগাছ হইতে হইছে কানে ধইরা। ডান পাটা এখনও টনটন করে অমাবস্যা পূর্ণিমায়। তালগাছ চলবে না। আর ... তালগাছ জাতীয়করণের তীব্র বিরোধিতা করি।" - হে হে হে...সেইরাম হইছে উপমাডা।
উত্তম লিখা।
হেমুমিয়ার দাঁতের ধার তাহলে দেখা যাচ্ছে বাড়ন্তই বটে।
হেমুমিয়া কে?
হুমু এরশাদের আত্মীয়স্বজন হৈতে পারে, যার দাঁতের ধারের খবর আবার আনন্দী দেবনাথ ভালো জানেন!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঘটনার শুরু কোনখানে, কেউ লিংক দিতে পারেন? কিছুই তো বুঝলাম না
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
হয়তো কারো স্বপ্ন কিংবা আমতলি বাসস্ট্যাণ্ডের কোন স্মৃতি...
সিলেকশন পুরাই ভুল। জাতীয় জীবনে 'বাঁশ' এর যে পরিমান ব্যবহার, তাতে বাঁশ কে বৃক্ষের সম্মান জানিয়ে একেই জাতীয় বৃক্ষ বানানো উচিৎ ছিলো :@
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
এক্কেরে হক কতা...
নতুন মন্তব্য করুন