দালজিৎ সিং একটু থতমত খেয়ে যায় ভাণ্ডারি রামের ধমক খেয়ে।
"মোটর সাইকেলে স্টার্ট মার শালা বুড়বাক!" ভাণ্ডারি রাম দাঁত খিঁচিয়ে ধমকায়।
দালজিৎ আমতা আমতা করে তবুও। "কিন্তু বিশুর কেসটার কী হবে সাব?"
ভাণ্ডারি রাম পিচিক করে থুথু ফেলে মাটিতে। নেপাল বর্ডার থেকে বদলি হয়ে আসা প্রত্যেকটা চ্যাংড়াই এখানে এসে ত্যাড়ামি শুরু করে। ভাণ্ডারি রাম বহুবছর ধরে এদিকে আছে, দালজিতের মতো বহু বাঁকা লাঠিকে সোজা করে ছেড়েছে সে।
"এই নিয়ে দুইবার তুই আমার মুখে মুখে কথা বললি।" নিচু গলায় বলে ভাণ্ডারি। "আমি এইসব পছন্দ করি না। বুঝলি?"
দালজিৎ চোখ সরিয়ে নেয়। সে কনস্টেবল হয়েছে, খুব বেশিদিন হয়নি। হেড কনস্টেবলদের সাথে তর্ক যে করতে হয় না, এই শিক্ষা পেতে খুব একটা সময় লাগে না বাহিনীতে ঢোকার পর। কিন্তু ভাণ্ডারি তাকে যা করতে বলছে, সেটাও করতে বাধছে তার।
আশি সিসির মোটর সাইকেলটার স্টার্টারে কষে লাথি মারে দালজিৎ, খক খক করে দুয়েকবার কেশে বুড়ো কুকুরের মতো গর্জে ওঠে এনজিনটা। ভাণ্ডারি দালজিতের পেছনে এসে বসে। দালজিত ক্লাচ ছেড়ে দেয়, মৃদু ঝাঁকুনি দিয়ে সামনে বাড়ে মোটর সাইকেল।
বিশু গতকাল রাতে টাকা পৌঁছে দিয়েছিলো ফাঁড়িতে, বরাবরের মতোই। ভাণ্ডারি তখন অফ ডিউটিতে থাকে, দালজিৎও ছিলো তার সাথে। বিশু কথা কম বলে, ভাণ্ডারির সাথে নিচু গলায় দুয়েকটা কথা বলেই সে সাইকেল নিয়ে রওনা দিয়েছিলো গাঁয়ের পথে। রেখে যাওয়া পানের ডিব্বায় এক থোকা পঞ্চাশ রূপির নোট চুপচাপ গুণে ভাণ্ডারি দালজিৎকে ডেকে হিস্যা বুঝিয়ে দিয়েছিলো। পরিমাণ দেখে বুঝতে পেরেছে দালজিৎ, একজন লোক টপকাবে আগামীকাল ভোরে।
এদিকটায় গরু তেমন একটা যায় না। কী যেন একটা সমস্যার কারণে একবার ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছিলো, সাব ইনস্পেক্টর গোপালানকে বড় সাহেবরা ডেকে পাঠায় তার পর। ওদিক থেকে বিডিআর পতাকা বৈঠকের ডাক দিয়ে খুব হাউকাউ করেছিলো। গোপালান বেজার হয়ে ফিরে আসার পর এক এক করে সব হেড কনস্টেবলকেই বদলি হয়ে যেতে হয়েছে এখান থেকে, আর গরুর চালানও বেমালুম বন্ধ হয়ে যায়। গরুতে পয়সা বেশি হলেও চালানিগুলো দিনকে দিন খচ্চর হয়ে যাচ্ছে, ঘাড়ও বাঁকা হচ্ছে আস্তে আস্তে। বিএসএফের ওপর লোহা ধরার সাহস দেখালে দস্তুর হচ্ছে দুয়েকটা বডি ফেলে দেয়া, তারপর তাদের লোক ফাঁড়িতে সন্দেশ আর খাসি ভেট নিয়ে এসে মাফ চাইলে তারপর আবার শুরু হয় কারবার। সেবারের গণ্ডগোলে কারবারিদের এক বড়সড় লোক মারা পড়েছিলো এক ছোকরা কনস্টেবলের হাতে, বেশ উঁচু জায়গায় তার টোকা গিয়ে পড়েছিলো, এপার ওপার দুধারেই।
দালজিৎ নেপাল সীমান্তে কাজ করতে গিয়ে দেখেছে, সবচেয়ে আরাম ড্রাগসে। যারা ড্রাগসের ব্যবসা করে, একেবারে সুবেদার মেজরের সাথে বোঝাপড়া করে রাখে, টাকাপয়সা মাসে মাসে হাতে চলে আসে একেবারে ওপর থেকে, যদি সুবেদার মেজর খচ্চর লোক না হয়। অস্ত্রের চালান নিয়ে ঘাপলা থাকে, বড়সড় কিছু পার হলে সেখানে তার মতো নবীন কনস্টেবলের বেশি লোভ না করাই মঙ্গল, টুকিটাকি খুচরা জিনিস পার হলে মোটাসোটা দাঁও মারা যায়, তবে সেখানে ঝুঁকিও যে থাকে না, তা নয়। দালজিতের এক দেশোয়ালি ভাইকে দেশী বোমা চার্জ করে বসেছিলো এক গোঁয়ার, বেচারা একটা চোখ হারিয়েছে, সাথে চাকরিও। সাথের লোকজন বডি ফেলে দিলেও ততক্ষণে ক্ষতি যা হবার, তা তো হয়েই গেছে।
এদিকের বর্ডারে আরেকটা জিনিস বেশ চলতে দেখেছে দালজিৎ, ফেনসি। পঞ্চাশ কিলোমিটার দূরে গঞ্জে একটা কারখানা আছে, সেখান থেকে মিনিতে করে মাল এনে গ্রামে দিয়ে যায় ব্যাপারিরা। ওপারের লোকজন নানাভাবে সেগুলো নিয়ে টপকায়। বাচ্চা থেকে শুরু করে বুড়ো, সবাই আছে এই ফেনসির লাইনে। ফেনসিতে পয়সা মাথাপিছু খুব বেশি না হলেও সব মিলিয়ে খারাপ আসে না।
ভাণ্ডারি রাম মাঝে মাঝে জুয়ার আড্ডায় একটু বেসামাল হয়ে গেলে হিসাব করতে থাকে, পাটনা শহরে বাড়ি করতে গেলে তাকে আর কয় বছর খাটনি দিতে হবে এই বর্ডারে। সুবেদার মেজর হয়ে বুড়ো হবার শখ নেই ভাণ্ডারি রামের, সে এর মধ্যে কিছু জমি কিনেছে তার গাঁয়ে, সে কিষাণ বসিয়ে ক্ষেতি করবে আর মাঝে মধ্যে পাটনায় গিয়ে মাস্তি করে আসবে। দালজিৎ মিটিমিটি হাসে ভাণ্ডারির কথা শুনে। তার মনে অবশ্য ক্ষেতির শখ নেই। কিছু টাকা বানাতে পারলে সে চণ্ডীগড়ে তার বড় ভাইয়ের গ্যারেজের ব্যবসায় টাকা খাটাবে। আর বিয়েশাদিও তো করতে হবে, নাকি?
মোটর সাইকেলটা একটা ছোটো গর্তে পড়ে, ঝাঁকি খেয়ে দালজিতের মুখের মৃদু হাসিটাকে চিন্তাটার সাথেই মুছে দেয়, আর ভাণ্ডারি এনজিনের গুনগুনকে ছাপিয়ে একটা গালি দেয় মাতৃভাষায়, সেটার অর্থ গাধার অণ্ডকোষ। দালজিৎ পাত্তা দেয় না ভাণ্ডারিকে।
আজ বেহুদাই বিশুর কেসে যাচ্ছে তারা। ভাণ্ডারি গত দুই সপ্তাহ ধরে বলে আসছে, তার ধারণা বিশু তাকে ঠকাচ্ছে। একজনের টাকা দিয়ে বিশু দু'তিনজনকে পার করাচ্ছে। ওসব চলবে না।
দালজিতের অবশ্য কখনোই মনে হয়নি, বিশুর এত হিম্মৎ আছে। ভাণ্ডারি এদিকের বিওপিতে আছে বেশ কয়েক বছর ধরে, চালিয়াৎ কারবারি তার হাতেই মরেছে কয়েকটা, তার মাঝে বিশুর গাঁয়ের লোকও আছে। বেশি চালিয়াতি করতে গেলে যে সমস্যা হবে, সেটা বিশু বোঝে। লোকটার সিড়িঙ্গে ছোটোখাটো ভীরু চেহারাটা দেখে মনে হয় না, ভাণ্ডারিকে ঠকিয়ে কোনো কিছু সে করে যাচ্ছে। কিন্তু ভাণ্ডারি দালজিতের এসব যুক্তিকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছে।
"বাঙ্গুদের চিনিস না তুই। এরা সব সাপের মতো। কিলবিল করে চলবে মাটি ঘেঁষে, আর একটু ছাড় দিবি তো পোঁদের সমান উঁচু হয়ে কামড়ে দেবে।" চিড়েতনের বিবি আছড়ে ফেলে বলেছে ভাণ্ডারি। ইউসুফ খান আর সুবল রাও ছিলো সেদিনের জুয়ায়, তারাও হুঁ হুঁ করে উঠেছে তার কথায়। "হক কথা।"
হয়তো সত্যিই তাই। তবে দালজিৎ এখন পর্যন্ত সেরকম কাউকে পায়নি। দূর থেকে হাঁক দিলে জড়োসড়ো হয়ে যায় লোকগুলো, কারবারির হাত চেপে ধরে, বার বার মানা করা সত্ত্বেও সীমানার কাছে গিয়ে ঝেড়ে দৌড় দেয়। কচি বয়সের মেয়েরাও আসে ফেনসি নিতে, ভীরু বাছুরের মতো চোখ করে তাকিয়ে থাকে, দালজিতের বুকের ভেতরটা শিনশিন করে ওঠে।
এখনও পর্যন্ত কোনো বডি ফেলেনি সে।
ভাণ্ডারি সংক্ষিপ্ত আদেশ দেয়, "খেজুর গাছটার কাছে থামা।"
একটা নুয়ে পড়া খেজুর গাছ যেন খুব মন দিয়ে দেখছে কাঁচা রাস্তাটাকে, দালজিত তার নিচে মোটর সাইকেল থামায়। মোটর চালানোর সময় তার হাতিয়ারটা একটা স্ট্র্যাপ দিয়ে পিঠের সাথে বাঁধা থাকে, সেটা না খুলেই মোটর সাইকেলের চাবি মোচড় মেরে নেমে দাঁড়ায় সে।
"এখন?"
ভাণ্ডারি লম্বায় দালজিতের চেয়ে ঝাড়া আধহাত ছোটো হলেও তার চোখ দু'টি গনগনে আগুনের মতো। সে চাপা গলায় গর্জে ওঠে, "হাতিয়ার খোল। খুলে হাতে নে।"
দালজিৎ লজ্জিত মুখে অস্ত্রটা হাতে নিয়ে ভাণ্ডারির পেছন পেছন চলতে থাকে। টহলেই তো এসেছে সে, হোক না সেটা টাকা খেয়ে টহল না দেবার সময়। সে একজন রক্ষী, তার হাতে অস্ত্র সবসময় তৈরি থাকবে ডিউটির সময়।
ভাণ্ডারি আবারও চাপা গলায় গালি দিয়ে বলে, "বিশু বেহেনচোদটা যদি কোনো বেঈমানি করে, তাহলে আজকে একটা বডি ফেলে দেবো। শালা বিজিনেস করবি কর, তাই বলে নাইনসাফি?"
দালজিৎ মাথা নাড়ে আনমনে। বিশু একজনের হিসাব করে দু'তিনজন পার করবে, এমনটা তার মনে হচ্ছে না এখনও। শীর্ণ একটা লোক, শার্টের হাতা ঢলঢল করে, সাইকেল চালাতে গিয়ে দু'তিনবার করে আছাড় খায়, আর বিশু করবে বেঈমানি?
ভাণ্ডারি ঢালু একটা জায়গায় পৌঁছে শুয়ে পড়ে, তারপর পাউচ খুলে বাইনোকুলার বের করে চোখে লাগায়। দালজিৎ কয়েক গজ হামাগুড়ি দিয়ে পৌঁছায় তার কাছে। মাথায় উঁচু বলে তাকে সবসময় একটু আগে ক্রল শুরু করতে হয়।
ভাণ্ডারি ধৈর্য ধরে বসে থাকে। তার ভাণ্ডারে গালি আর ধৈর্যের কোনো অভাব নেই। এই কাজে পয়সা কামাই করতে গেলে দু'টো জিনিসই লাগে।
আর লাগে গুলি।
ভাণ্ডারি রাম চাপা গলায় বলে ওঠে, "হাতিয়ার তৈরি রাখ!"
দালজিৎ একটু চমকে উঠে তাকায় ভাণ্ডারির দিকে। বিডিআরের প্যাট্রল বের হয়েছে নাকি ওপাশে?
ভাণ্ডারি বাইনোকুলারটা দালজিতের হাতে দিয়ে ইনসাস রাইফেলটা হাতে নেয়। ব্যাটেলিয়নের অন্যতম সেরা মার্কসম্যান ভাণ্ডারি রাম, নিশানা না ফসকানোর ব্যাপারে দুর্নাম আছে তার।
দালজিত বাইনোকুলার চোখে লাগিয়ে চমকে ওঠে। জোর পায়ে সীমানার দিকে হাঁটছে দু'জন মানুষ। একজন বয়স্ক পুরুষ, আরেকজন কিশোরী।
ভাণ্ডারি ঝকঝকে সাদা দাঁত বের করে গোঁফের নিচে। "বলেছিলাম না? বিশু শুয়ারটা ঠকাচ্ছে আমাদের।"
দালজিৎ বিমর্ষ মুখে বলে, "এরা টপকাবে কীভাবে?"
ভাণ্ডারি গোঁফে মোচড় দেয়। "বিশুর লোক একটা মই রেখে আসে বেড়ার গায়ে। মই বেয়ে টপকাবে, আর কী?"
দালজিৎ আবার বাইনোকুলার লাগায় চোখে। বয়স্ক লোকটার পরনে হাফশার্ট আর ফুলপ্যান্ট, মেয়েটার পরনে সালোয়ার কামিজ। সন্ত্রস্ত পায়ে প্রায় ছুটছে তারা। বেড়ার গায়ে এক জায়গায় লাল একটা কাপড় গিঁট মেরে রাখা, ওদিকেই এগোচ্ছে তারা।
ভাণ্ডারি চাপা গলায় হাসে। "বিশু আমাদের একজনের টাকা দিয়েছে। একজনই টপকাবে।"
দালজিৎ চমকে ওঠে। "আরেকজন?"
ভাণ্ডারির হাসিটা মুখেই থাকে, কিন্তু এবার তার পরিধি চোখ থেকে নেমে নিষ্ঠুর চোয়াল স্পর্শ করে শুধু। "আরেকজনকে ফেলে দিবি তুই।"
দালজিতের মুখটা বিবর্ণ হয়ে যায়। "আমি?"
ভাণ্ডারি শক্ত মুখে বলে, "হ্যাঁ, তুই।"
দালজিৎ তার রাইফেলের ধাতুর শীতল স্পর্শ অনুভব করে হাতে। আজ তাকে বডি ফেলতে হবে?
ভাণ্ডারি বাইনোকুলার চোখে লাগায়। "নে, মার একটাকে।"
বয়স্ক লোকটা ব্যস্ত হাতে বেড়ার গোড়ায় পড়ে থাকা মইটা নিয়ে বেড়ার গায়ে ঠেকায়, শক্ত হাতে ধাক্কা দিয়ে সেটার গোড়া মাটিতে বসায়, তারপর মেয়েটাকে ইশারা করে। মেয়েটা ডানে বামে তাকাচ্ছে শুধু, লোকটার ইশারা দেখে সে মাথা নাড়ে। লোকটা অধৈর্য হয়ে হাত নাড়ে, কী যেন বলে, মেয়েটা আবার এদিক ওদিক মাথা নাড়ে। লোকটা আর কথা বাড়ায় না, মই বেয়ে উঠতে থাকে।
ভাণ্ডারি বলে, "মার শালাকে।"
দালজিৎ অস্ফূট গলায় বলে, "ওস্তাদ, দুই রূপি মারি।"
ভাণ্ডারি বিরক্ত হয়ে বাইনোকুলার নামায় চোখ থেকে। "কীসের দুই রূপি মারবি? এই শালা কেশরীর বাচ্চা, তুই পয়সার বখরা পাস না? কাজে নেমে দুই রূপি মারামারি কী রে?"
দালজিৎ হাতড়ে হাতড়ে পকেট থেকে পাতলা মানিব্যাগ বের করে একটা দুই রূপির মুদ্রা বের করে। "গাছ উঠলে আমি ফেলছি বডি। অশোকস্তম্ভ উঠলে তুমি ফেলো।"
ভাণ্ডারি চোখে আগুন নিয়ে বলে, "শালা ডরপোক! এদিকে মাল টপকে যাচ্ছে, আর তুই রাণ্ডির ভাতার দুই রূপি মারছিস! আচ্ছা ... গাছ উঠলে আমি ফেলবো। মার দেখি।"
দালজিৎ বুড়ো আঙুলের টোকায় মুদ্রাটা বাতাসে ছুঁড়ে এক বুক আশা নিয়ে তাকিয়ে থাকে সেটার দিকে।
বয়স্ক লোকটা ওদিকে মই বেয়ে কাঁটাতারের দুই মানুষ উঁচু বেড়া টপকে লাফিয়ে পড়ে অন্য পাশে। তারপর গুড়ি মেরে বসে মেয়েকে ডাকে, "আয় ফেলানি, জলদি আয়! দেরি করতিছিস কেন, আয়!"
মেয়েটা টলমল করে উঠতে থাকে মই বেয়ে, তার সন্ত্রস্ত চোখ পেছনের বিরান ভূমিতে।
লোকটা মেয়েকে তাড়া দেয়, "তাড়াতাড়ি আয়! পিছনে কী দেখতিছিস? তোর শ্বশুর আসতিছে নাকি?"
মেয়েটা তাড়াতাড়ি পা চালাতে যায়, তার সালোয়ার আটকে যায় কাঁটাতারের বেড়ায়। সে অস্থির হয়ে পা টানে, কিন্তু পা ওঠে না।
"বাপজান! বাপজান, আমি আইটকে গেছি বাপজান!" ডুকরে ওঠে সে। "আমারে ছুটাও!"
বয়স্ক লোকটা উৎকণ্ঠিত দৃষ্টিতে তাকায় ফেলে আসা দেশের মাটির দিকে। "জোরে টান মার, সালোয়ার ফাইড়ে গেলে ফাড়ুক! জলদি আয় রে মা!"
সালোয়ার ছেঁড়ে না, অনড় আটকে থাকে কাঁটাতারের বেড়ায়। বরং আটকে যায় ফেলানির কামিজের একটা অংশও।
"বাপজান, আমি আইটকে গেছি, আমারে ছুটাও!" ফেলানি আতঙ্কে ফুঁপিয়ে ওঠে।
দালজিতের বুকের ভেতরটা ঠাণ্ডা করে মাটিতে আছড়ে পড়ে অশোকস্তম্ভ। তিনটি সিংহ তিন দিকে তাকিয়ে যেন মুখ ব্যাদান করে ব্যঙ্গ করে দালজিৎকে।
ভাণ্ডারি ফুড়ুক ফুড়ুক হাসে। চোখে বাইনোকুলার লাগিয়ে বলে, "রোজগার হালাল কর কেশরী। এইবার এই ছোকরিকে মারো। ওর সাথের মরদটা টপকে গেছে, ওটাকে ছেড়ে দে।"
দালজিৎ চমকে উঠে তাকায় ভাণ্ডারির দিকে। "সাব, আওরৎকে মারবো?"
ভাণ্ডারি বাইনোকুলার চোখ থেকে ধীরে নামিয়ে ঠাণ্ডা দৃষ্টিতে তাকায় দালজিতের দিকে। দালজিতের জিভ শুকিয়ে যায় সেই দৃষ্টি দেখে।
"মুখে মুখে কথা বলিস না লৌণ্ডা।" ভাণ্ডারি রাম হিসহিস করে ওঠে। "বিশু যেন এরপর কোনোদিন আমাকে আর ন্যায্য হিস্যার চেয়ে কম দিতে সাহস না করে। ছুকরি আটকে গেছে বেড়ায়। ফেলে দে।"
দালজিৎ ভাণ্ডারি রামের চোখে তার পাটনার বাড়ি আর মুজফফরপুরের ক্ষেত যেন দেখতে পায়। সে হাতের ঘাম মুছে নেয় প্যান্টের পাছায়, তারপর সাইটে চোখ লাগায়।
কাঁটাতারের বেড়ায় আহত প্রজাপতির মতো ছটফট করে ফেলানি, তার কাপড় আটকে গেছে, আঁচড় লেগে চামড়া ছড়ে রক্ত পড়ছে দরদর করে।
সিঙ্গল শটে সেট করে ট্রিগারে চাপ দেয় দালজিৎ, তার চোখ বন্ধ।
প্রথম গুলিটা ফেলানির কোমরের একটু ওপরে গিয়ে লাগে। ৫.৫৬ ক্যালিবারের গুলির ধাক্কায় সে মই থেকে সরে বেড়ার ওপরে পড়ে। দ্বিতীয় গুলিটা তার ফুসফুস ছিদ্র করে বেরিয়ে যায়।
মইটা আছড়ে পড়ে মাটিতে, ফেলানির শরীরটা খিঁচুনি দিয়ে ওঠে। তার বাবা বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে দেখে সে দৃশ্য। বিশাল আকাশকে ডান থেকে বামে, উত্তর থেকে দক্ষিণে চিরে চলে গেছে এক বিরাট কাঁটাতারের বেড়া, তাতে এক অতিকায় পতঙ্গের মতো বিদ্ধ হয়ে আছে ফেলানি, তার কাপড়ের সম্মুখভাগ গাঢ় করে উঠে আসছে রক্ত।
ফেলানি একবার কাশে, অস্ফূটে কী যেন বলে ঘড়ঘড় করে। তারপর তার মাথাটা ঢলে পড়ে ঘাড়ের ওপর।
ফেলানির বাবা আতঙ্কে চিৎকার করে ছুট দেয় নিজের দেশের দিকে।
২.
নাজারেথ থেকে উড়ে আসে কাকের দল, কাঁটাতারের বেড়ার খুঁটিতে এসে বসে। একটা সাহসী কাক এগিয়ে ফেলানির খোলা চোখে ঠুকরে দেয়।
পরদিন সূর্য ঠিক সময়মতোই ওঠে, সীমানার এপারে ওপারে মানুষ জেগে ওঠে। কেউ খবরের কাগজে ফেলানির কথা পড়ে, কেউ ফেসবুকের দেয়ালে। কেউ গল্প লেখে, কেউ লেখে স্ট্যাটাস। তারপর আবার সব শুনশান হয়ে যায়। সীমানার ওপর দিয়ে টপকে আসে শুধু বিনোদনের ঢেউ।
চলুন, দেখে নিই আজকের ছবির তালিকা, দৈনিক প্রথম আলোর ভেতরের পাতা থেকে। ফেলানির খবরও এসেছে পত্রিকাটিতে, প্রথম পাতায়।
মন্তব্য
সকালে খবরটা পরে চোখে পানি চলে আসছিলো। আরো একবার তা-ই হল।
কিছু বলার নাই।
ভাষাহীন। এই জানোয়ারদের প্রতিরোধ এবং বর্জন করতে হবে। কিন্তু ওই বিএসএফ শুয়োরের যে দেশপ্রেম আছে আমাদের হুজুগে গুলোর তার একরত্তির থাকলেও কথা ছিল। থাকলে এই হারামজাদাদের এদেশে ব্যবসা করতে হতোনা।
কেউ এখন যুক্তি নিয়ে খাড়া হবে যে মেয়েটি কোন দেশের তা তাদের দেশপ্রেমিক বিএসএফ জানতোনা।
এবং এই ধরণের বিবেকবাদী আচার্যগণের যুক্তির পালে ভর করে বিএসএফ'এর এইসব ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড কোনো একদিন হয়তো প্রবলভাবে জাতিগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিবে বাংলাদেশের প্রতিটা কোণে!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
পানি ধরে রাখা মুশকিল। অক্ষম ক্রোধে তড়পাতে থাকি।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
হাত পা শিরশির করে উঠলো। বিএসএফের উপর প্রচন্ড ক্রোধ জন্মে, কিন্তু এই ক্রোধের ভিত্তি কী? আমরা নিজেরা যদি গাল পেতে দিয়ে রাখি, ওদের কেন বাঁধবে এসে চড় দিয়ে যেতে।
-রু
নির্বাক।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
দীর্ঘশ্বাস...
ধৈবত
মর্মান্তিক.................তবু সীমানার ওপর দিয়ে টপকে আসে বিনোদনের ঢেউ...............সেই ঢেউয়ে ঝাপাঝাপি করে আমাদেরই মা খালা ভাইবোনেরা। আমাদের পত্রিকার বিনোদনের পাতা জুড়ে থাকবে ওদের মুখ। নির্বোধ একটা সমাজ!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আজকে আমরা অনেক খুশি, আইপিএল এ সাকিব তিন কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে। কে কোথায় মারা গেলো সেটা নিয়ে ভেবে আর কী হবে।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
খবরটা আমিও পড়েছি প্রত্রিকাতে, মর্মান্তিক ব্যাপারটার সাথে নির্বোধ সমাজের যোগসূত্রটা আপনার লেখাটা না পড়লে সহজ এ অনুধাবন হতো না।
-- শফকত মোর্শেদ
নিপুণ নিরীক্ষণ। যদি ছোটগল্প হিসেবে নিই তবে বোধকরি এখানে এসে শেষ টেনে দেয়াই উত্তম হতোঃ
সিঙ্গল শটে সেট করে ট্রিগারে চাপ দেয় দালজিৎ, তার চোখ বন্ধ।
চরিত্রগুলি ফুটেছে পেন্সিলে আঁকা নিপুন পোট্রেটের মতো। বয়ানের ধরণটির মধ্যে অদ্ভুত এক আকর্ষণী শক্তি আছে যা একটি স্তবক থেকে অবলীলায় টেনে নিচ্ছে পরবর্তী স্তবকে। খুব বেশি ভালো লাগা কিছু চরণ উদ্ধৃত করিঃ
এইসব চরণ গল্পটিকে অনাবিল বিশ্বাসযোগ্যতা দিয়েছে, শৈল্পিক বিভাতেও উদ্ভাসিত করেছে। তবে মনে করি, ছোটগল্পের বিবেচনায় নীচের অংশটুকু অপ্রয়োজনীয়।
কারন, লেখক তো 'সিঙ্গল শটে সেট করে ট্রিগারে চাপ দেয় দালজিৎ, তার চোখ বন্ধ' এই বাক্যেই হৃদকলমের আঁচড়ে যতটুকু দাগ কাটবার প্রয়োজন ছিল তা করতে পেরেছেন নির্মোহ সততায়। লেখককে কুর্ণিশ!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
আমরা কিছু বলতে পারিনা, আমরা কিছু করতে পারিনা, আমরা তাহলে কী? কী নিয়ে এত গর্ব আমাদের???
-অতীত
প্রথম আলোর কাছে বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোর নাম নেই? লিস্টে শুধু বিটিভি দেখলাম। আরতো সব বিদেশী চ্যানেল।
আসলে সবাই মিলে ওই উপারের বিনোদনের ঢেউই নিয়ে আসছে। কে মরলো আর কে বাচলো তা দিয়ে কার কি আসে যায়।
সুপ্রিয় দেব শান্ত
কিছু বলার নেই।
নির্বাক
---আশফাক আহমেদ
সীমানার ধারণাটাই যাচ্ছেতাই। আমার পৃথিবীটাকে আমার কাছেই কাঁটাতার দিয়ে বিভক্ত করা। মানুষ স্রষ্ঠার সেরা জীব দাবী করতে পারেনা।
বড্ড ব্যস্ত শহুরে জীবন।
ফালানীদের ঝুলে থাকা মৃতদেহের জন্য একটা ছোট্ট দীর্ঘশ্বাস ছাড়া দেবার মত কিছু নাই আর আমাদের।
ফালানির ছবি।
ছবিসূত্র অজ্ঞাত।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এই আমরা বোকচোদ এই জাতিটা যতদিন না নিজের পায়ে দাড়াতে পারবনা, ততদিন পর্যন্ত বোধহয় এগুলা চলতে থাকবে....যে জাতিতে সত্যজিতের জন্ম তারা কিভাবে যে বলিউডের সিনেমা দেখে, বুঝি না...
কী বলব!
শেষ দুটো লাইনই যা বলার বলে দিলো!
এইসব নিয়া ভাইবা লাভ আছে নাকি? জানেন নাকি আইপিএল এ সাকিব ৪ লাখ ২৫ হাজার ডলারে বিক্রি হইছে! চলেন সবাই ডিগবাজি দেই! লাগা পল্টি!!!
ওহ ওয়েট, এখন নাকি জি একশনে ধর্মেন্দ্র'র লুহা সিনিমাটা দেখাইতাছে, তাহলে একটু পরেই যাই ডিগবাজি দিতে।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
যাক, তাহলে আমার গালি খাওয়াটা একেবারে বৃথা যায়নি। 'জাতি বিদ্বেষ', "ধর্মীয় বিদ্বেষ" এর রেডিমেড বুলি ছেড়ে শেষ পর্যন্ত হিমুর নজর আসল ঘটনাপ্রবাহের উপর পড়ল।
এবার একটা হ্যাপী এন্ডিং টাইপ এর পোষ্ট নাহয় নাজিল করুন। আমি বরং একটু সাহায্য করি। ভান্ডারীর ইয়ে মেরে দেওয়াটা এর একটা পার্ট হতে পারে। বেশ একটা রিভেঞ্জ রিভেঞ্জ গন্ধ থাকবে। আচ্ছা, এই হ্যাপী এন্ডিং ব্যাপারটাকে একটু দীর্ঘ করতে গেলে ঘটনাপ্রবাহের অপর দিকটাকেও কিছু মেরামত করার প্রয়োজন আছে কি? নাকি প্রথম আলো থেকে সিনেমার লিস্টি সরিয়ে দিলেই কাজ হবে?
ও হ্যাঁ আরেকটা খবরঃ ভারত সীমান্তের সাত কিলোমিটার অভ্যন্তরে আবার তিনজন গরু ব্যাবসায়ী(!) মধ্যরাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মরেছে। দুজন বাংলাদেশী একজন ভারতীয়। বাংলাদেশ এ খবরটা বোধ হয় এখনো পৌঁছোয়নি।
আমি কখনো এই সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গে "ধর্মীয় বিদ্বেষ" বা ধর্মসংক্রান্ত কোনো কিছু লিখেছি বলে মনে পড়ছে না। আমার ধারণা আপনি সেই উদাহরণও দেখাতে পারবেনও না। যেভাবে "শেষ পর্যন্ত" বললেন, তাতে মনে হলো আমি যুগযুগ থরে ব্যাপারটাকে ধর্মীয় বিদ্বেষ হিসেবে চালিয়ে দেবার জন্যে কলম ধরে বসে আছি। নিজের হোগা থেকে কথা টেনে বের করে তর্ক চালাতে এসেছেন, অন্যের কথা আমার মুখে গুঁজে দিতে।
তা প্রসূন, এই ফেলানিও কি আপনাদের বীর বিএসএফের ওপর অস্ত্র তাক করেছিলো? কিংবা দশ ট্রাক অস্ত্র পাচার করে ফিরছিলো? ওর সালোয়ারের নিচে কি গ্রেনেডের বটুয়া খুঁজে পেলো কেউ? নাকি ফেলানির বাবা আপনার কাকামামার ওপর হাঁসুয়া নিয়ে আক্রমণ করেছিলো? ভারতের নিরাপত্তা কিংবা আপনার নিজের পাছার চামড়ার নিরাপত্তা রক্ষা পেলো তো এই যাত্রা?
ধর্মীয় বিদ্বেষ এর কথা আপনি বলেননি ঠিকই, কিন্তু যারা বলেছিল তাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই আপনি বি এস এফ এর "সিলেক্টিভ ইচ্ছা"র কথা বলেছিলেন যার জবাবে আমি ভারতীয়দের মৃত্যুর খবরও দিয়েছিলাম। যাই হোক আপনি সেই মনোভাব পোষন না করলে আমি উপরিউক্ত বক্তব্য প্রত্যাহার করছি এবং তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।
রাত বিরেতে যে ব্যাক্তিটি মই লাগিয়ে সীমান্ত টপকাচ্ছে তার কোমড়ে যে গ্রেনেড এর বটুয়া নেই বা সে যে ডাকাতি করতে ইচ্ছুক নয় সেই খবরটাও তো আপনি বি এস এফ ক্যাম্পে এসে আগাম জানিয়ে যাননি, তাই না? সেক্ষেত্রে আমার পাছার চামাড়া বাঁচানোর ব্যাবস্থা তো আমাকেই করতে হবে, নাকি?
আর ঘটনার অপর দিকে আপনারা কি ব্যাবস্থা নিচ্ছেন বা নিদেনপক্ষে নিতে ইচ্ছুক কিনা এ প্রশ্ন আগেও করেছিলাম আবারও করছি, দোহাই আপনার এবারে অন্তত এড়িয়ে না গিয়ে একটু ভাসা ভাসা হলেও জবাব দেন।
প্রশ্নটা আবারও পরিস্কার ভাবেই করি- ১) সীমান্ত চোরাচালান বন্ধ করার ব্যাপারে বা রাত বিরেতে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে বাংলাদেশ সরকার আগ্রহী কিনা? আগ্রহী হলে এ যাবৎ কী ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে বা নেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে?
২) আপনি নিজে কি চোরাচালান বা অবৈধ অনুপ্রবেশ সমর্থন করেন?
৩) যে প্রবল বিক্রমে ভারতের গুষ্ঠী উদ্ধার করে জালাময়ী পোষ্ট এর বন্যায় সব ব্লগগুলো ভেসে যাচ্ছে তার বিপরীতে অন্তত মিউ মিউ করে হলেও কেন একজন একজন ব্লগারও এই প্রশ্ন তুলছেন না যে "চোরাচালান বা অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধে বাংলাদেশ সরকার কেন কোনো ব্যাবস্থা নিচ্ছেন না?" তাহলে কি এটাই ধরে নেব আপনারা সবাই আসলে এটাই চান যে অনুপ্রবেশ বা চোরাচালান এভাবেই চলতে থাকবে কিন্তু বি এস এফ কিছু বলতে পারবে না। একটা বড় অংশের ব্লগারই তো দেখি উলটো আরো ব্যাপারটাকে যাস্টিফাই করার চেষ্টায় রত এই বলে যে "অন্য দেশেও একইভাবে অবৈধ পথে বাংলাদেশীরা প্রবেশ করছে। এবং সেখানে কাজকর্ম করে প্রচুর ফরেন রেমিটেন্স আনছে, তাহলে ভারতেই বা যাবে না কেন?"
ও হ্যাঁ আরেকটা প্রশ্ন, মৃতদেহ ফেরৎ চাওয়ার ব্যাপারে বি ডি আর এর যে তৎপরতা দেখা যায় জীবিত ব্যক্তিদের প্রত্যর্পনের বেলায় তার ঠিক উল্ট টা হয় কেন? জেল খাটার মেয়াদ উত্তীর্ন হয়ে যাবার পরেও কেন বাংলাদেশী নাগরিকদের ভারতের জেলেই বা হোম গুলোতে পচতে হয়? এটা কি বাংলাদেশ এর রাষ্ট্রীয় নীতি নাকি নিজের দেশ এর লোকজনকে যেন তেন প্রকারে বিদেয় করতে হবে।
আপনার কায়দাটা তো মন্দ না। অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করে এসে বাজে কথাটা বলে ফেলে তারপর প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। আপনাকে চটকানা মেরে আমি যদি তারপর বলি, ওহহো, আপনি যেমন ছাগু ভেবেছিলাম তেমনটা নন, আমার চটকানাটা প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করছি, আপনার কি ভালো লাগবে?
আপনাকে এর আগে অনেক প্রশ্ন করেছিলাম, তার মধ্যে একটি ছিলো, আপনি চোরাচালানিদের গুলি করে মেরে ফেলা সমর্থন করেন কি না। সেটার স্পষ্ট উত্তর না দিয়ে পিছলাতে পিছলাতে বহুদূর চলে গিয়েছিলেন। আজকে আপনার যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আগে, সেই প্রশ্ন আবার করি। আপনি কি ঐ ধরনের আবাল, যারা সীমান্তে কাউকে দেখলেই গুলি করে মেরে ফেলাকে সমর্থন করে? যদি ঐ ধরনের আবাল হয়ে থাকেন, তাহলে কথাবার্তা ফুরাক এখানেই।
যাক, একটি নিরস্ত্রা কিশোরীকে মেরে তার মৃতদেহটা দীর্ঘক্ষণ টাঙিয়ে রেখে আপনার পাছার চামড়া যে গত পরশু রক্ষা পেলো, এতে আমরা যার পর নাই আহ্লাদিত।
এইবার আপনার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে আপনার কায়দায় পাল্টা প্রশ্ন করি।
১. সীমান্তে চোরাচালান বন্ধের ব্যাপারে কি ভারত সরকারের আগ্রহ আছে? এই আগ্রহের নমুনা দেখানোর জন্যে ভারত সরকার কি বাংলাদেশ সীমান্তে গড়ে ওঠা ফেনসিডিল কারখানা রেগুলেট করে দেখাবে?
২. আমি চোরাচালান বা অবৈধ অনুপ্রবেশ সমর্থন করি না, কিন্তু নিরস্ত্র মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলাও সমর্থন করি না। আপনি কি সীমান্তে নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করা সমর্থন করেন?
৩. আপনার কথা শুনে মনে হয় বাংলাদেশ সরকারের আগ্রহে সীমান্তে চোরাচালান হয়। আপনি তো ছোটোখাটো চোরাচালান এক্সপার্ট, আপনার কি এটাই মনে হয়?
বাংলাদেশে ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে বিপুল সংখ্যক ভারতীয় আর পাকিস্তানী কাজ করে, ফরেন রেমিটেন্সও দেশে ঠেসে পাঠায়, দেশের ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে ভেন্ডরের এনজিনিয়ার হিসেবে কাজ করতে গিয়ে এই জিনিস বেশ ভালোভাবেই দেখেছি। ফরেন রেমিটেন্সের খোঁটা কোনো ভারতীয়র দিতে আসা উচিত না।
জীবিত ব্যক্তিদের প্রত্যর্পণের জন্য বিডিআর [এখন থেকে বিজিবি] সক্রিয় হবে কেন? প্রপার চ্যানেলে যোগাযোগ করুন না। একেবারে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী থেকে শুরু করে হালের সুনীল শীর্ষেন্দু সক্কলকে ফেরত পাঠিয়ে দিন।
আপনারা কি বাংলাদেশের লোকজনকে এই কল্পিত রাষ্ট্রীয় নীতির কথা স্মরণ করেই গুলি করে মারেন? যে এরা বাংলাদেশের লোক, দুইদিন পর এমনিতেই না খেতে পেয়ে মারা যাবে, মেরা ভারত মহান, দিই পোঁদে গুলি করে ঝামেলা কমিয়ে?
আসবেন বেড়াতে বাংলাদেশে। গুলি করে মারবো না আমরা, কথা দিচ্ছি। প্রথম আলোর বিনোদন পাতায় চাকরিও পেয়ে যেতে পারেন, কে জানে!
সেলোয়ারের নিচে গ্রেনেড কল্পনা করে পাছা বাঁচানো মানসিক গুলিটা চালানোর পরে মনে হয় ওনার উত্তরটা আমরা পেয়ে গেছি।
এ প্রশ্নের উত্তর আমি আমার দ্বিতীয় মন্তব্যেই দিয়েছিলাম। তারপরেও অন্তত বার তিনেক কপি পেষ্ট করেছিলাম।
"আমি এখানে বিএসএফ এর ‘সমস্ত’ কাজকর্মকেই জাস্টিফাই করতে আসিনি। ‘কুকীর্তি’ জিনিসটা্র রেকর্ড সমস্ত সশস্ত্র বাহিনীরই আছে। বিএসএফ এর থাকবে না সেটা হতে পারে না। (এপারেও এমন উদাহারন আছে নীচে দময়ন্তী সেটা উল্লেখ করেছেন) তাই আপনার তৃতীয় প্রশ্নে আমাকে মাথানত করতেই হচ্ছে। ......।আর হ্যাঁ ওই দম্ভকারী ব্যাক্তিদেরকে আমি “মানসিক বিকারগ্রস্ত’ই বলব। আর এক্ষেত্রে আমার অবস্থান বলব ‘আমাদের বাধ্য করা হচ্ছে, আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে’। "
এখন দেখি আবারও কেঁচে গন্ডূষ করতে হবে। বেশ তাহলে আবারো বলি বি এস এফ এর কাজ অণৈতিক সেটা আমি মানি।
এবার আপনি প্রশ্নের জবাবে পালটা প্রশ্ন করে পিছলিয়ে না গিয়ে একবার অন্তত বলুন- "বি এস এফ এর অনৈতিক কর্মের পাশাপাশি আমাদের তরফ থেকেও প্ররোচনা বর্তমান, এবং সেটা রোধ করতে এ পর্যন্ত কোনো লক্ষনীয় উদ্যোগ ই নেওয়া হয়নি"
আর হ্যাঁ, চোরাচালানকারী বা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দের ফেরৎ দেবার সাথে ভারতীয় নাগরিক সুনীল-শীর্ষেন্দুকে ফেরৎ দেবার তুলনাটা জম্পেশ হয়েছে দাদা। অনুমান করি সুনীল শীর্ষেন্দুর মত বাকী বাংলাদেশীদেরকেও একইভাবে ভারতে পাঠিয়ে আর ফেরৎ না নেবার পরিকল্পনাই চলছে। রাতের আঁধারে অবৈধ অনুপ্রবেশ এর সাথে বাংলাদেশ বেড়াতে যাবার তুলনা তো একেবারে পাপড়ি চাট!
দায়সারা "সমর্থন করি না" ও বলবেন আবার পরের প্যরাতেই ধরা পড়া ব্যাক্তিদের ফেরৎ নেবার কথা বললেই হাত উলটে দেবেন, বেশ মজা তো! আচ্ছা আপনি সমস্যাটা বোঝার পরেও সেটাকে অস্বিকার করছেন কেন। ইগোর প্রব্লেম হলে বলুন, আর মন্তব্য করব না।
হ্যাঁ, ফেলানি যে ব্যাপক প্ররোচনা দিয়েছে আপনাদের বীর বিএসএফকে, আমি স্বীকার করছি। কাঁটাতারে আটকে যাওয়া একটি কিশোরীকে দিনের আলোয় বাইনোকুলার দিয়ে কয়েকশো মিটার দূর থেকে দেখলে বিএসএফ যে গুলি করতে প্ররোচিত হবে, এটা আমি বুঝলেও মেয়েটা বোঝেনি। এটা যে গুলি খেয়ে মরার মতো প্ররোচনা বা পাপ, সেটা অবশ্য আমিও বুঝতে পারছি না এখনও। কিন্তু প্রসূনের পাছার চামড়া বাঁচাতে দরকার হলে গোটা একটা ইউনিয়নের লাশ ফেলে দিক বিএসএফ, কিচ্ছু আসে যায় না। ফেলানিরা জায়গামতো টাকা না ঢেলে সীমান্ত টপকালে প্রসূনদের পাছার চামড়া যে কেটেকুটে রক্ত ঝরবে, এ কথা আমরা বুঝতে পারি না বলেই তো যত গণ্ডগোল।
রাতের আঁধারে শুধু বাংলাদেশীরাই বেড়াতে আসে জেনে হাসলাম। ভারতের লোকজন বেড়াতে টেড়াতে যায় না তেমন, শুধু পাছার চামড়াটা ফেলানিদের দিকে মেলে ধরে বর্ডারে শুয়েবসে থাকে। আর ট্যুরিস্ট ভিসায় এসে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে যারা তারা মনে হয় পেলাসটিকের ভারতীয়।
ফেরত নেবার কথা বললে হাত ওল্টাবো কেন? আমি তো বলছিই, ধরুন, ধরে চড়-চটকানা মেরে বিডিআরের হাতে তুলে দিন। সেটা করেন না কেন? আপনাদের আরপি সিংকে তো আমরা শিশু হত্যা, নারী ধর্ষণের চেষ্টা ও হত্যার মতো অপরাধের পরও জানে মারিনি, চিকিৎসা করে সুস্থ করে বিএসএফের হাতে তুলে দিয়েছি। আমাদের সীমানায় পাঙ্গা নিতে এসে হাতিয়ার খুইয়ে গেছে আপনাদের জওয়ান, সেটাও পতাকা বৈঠক করে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। এইটুকু মনুষ্যত্ব বিএসএফ আর তার অন্ধ ভক্তদের গজালে কোথায় চুলকায়?
প্রথম আলোর রিপোর্ট টা আরেকবার পড়ুন। নইলে তথ্য বিকৃতির দায়ে নিন্দে মন্দ হবে যে। দিন আর রাতে যে একটু ফারাক আছে সেটা যে পরক্ষে স্বীকার করলেন এজন্য ধন্যবাদ।
ও হ্যাঁ আরেকটা তথ্য দেই- আজ পর্যন্ত ধরা পড়া কোনো বাংলাদেশী অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে আপনাদের সরকার (বা বি ডি আর যেই প্রপার চ্যানেল হোক না কেন ) ফেরৎ নেয়নি। তারা সবাই হয় জেলে ওভারটাইম ব্যাগার খাটছে না হয় অসুস্থতার অজুহাতে কোনো হোম এ আছে। সেজন্য এখন আর পুলিশও কাউকে ঘাঁটায় না। সরাসরি থ্রেট মারে হয় এক সপ্তাহের মধ্যে তল্পি তল্পা গুটিয়ে দেশে যাবি নয়ত জেলে পচবি। তল্পি তল্পা গুটিয়ে কজন "দেশ" এ যায় জানি না তবে আমার পরিচিতরা দেখি আরো পশ্চিমে যাওয়াই ভালো মনে করে... মুম্বাই, দিল্লী... কারন ওখানে বরং বাঙ্গালী পরিচয় দিয়ে সহজেই পার পাওয়া যায়।
আপনার ইগোর সমস্যাটা ধরতে পেরেছি মনে হয়, তাই আজ এ পর্যন্তই।
ধন্যবাদ।
আপনার গরুর বিজনেসের সমস্যা না কাটলে দুইদিন পরপরই আপনি আবার ছিন্নরজ্জু বাছুরের মতো এসে ডুকরে উঠবেন। আমার ইগোর সমস্যা তো একটাই, আমি নিরস্ত্র লোককে বিনা উসকানিতে [তা-ও আবার যে কিনা ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকছে] মেরে ফেলার বিপক্ষে। আপনি এই ইগোর সমস্যা থেকে মুক্ত এক নির্বাণলব্ধ পুরুষ। আপনার একটা ছবি কোথাও আপ করেন, ভোরে উঠে ধূপ দিবো।
আর একটু কষ্ট করে বিডিনিউজের খবরটা পড়ে আসেন, দিনেরাতের গিয়ানজাম দূর হবে।
আপনি দেখছি অনুপ্রবেশকারীদের ওপর বিপুল জ্ঞান রাখেন, কিন্তু পরিসংখ্যানে অপারগ। ভাইজানের কি এই লাইনে বিজনেস আছে নাকি? বিশুকে চেনেন?
হাঃ হাঃ ... এরকম ডজন খানেক বিশুকে চিনি বলেই তো এত জ্ঞান। এটা এতদিন পরে বুঝলেন আমি যে "চোরাচালান এক্সপার্ট" সেটা ত অনেকদিন আগেই বুঝে ফেলেছিলেন এবার এত দেরী হল বুঝতে
আমার গরু বিজনেসের সমস্যাটাই যে আসল সেটা যখন বুঝতে পেরেছেন সেটাকেই না হয় এবার একটু ফোকাস করে একটা সমাধান বাতলান
আর হ্যাঁ আপনার চেনা পরিচিত কেউ বিনা ভিসায় আসতে চাইলে জানাবেন। দিনের আলোয় কিভাবে নিরাপদে নিয়ে আসতে হয় সে রাস্তাও জানা আছে।
এনিওয়ে, রবিবার সন্ধাটা আর মাটি না করে উপোভোগ করুন, আমি চলি।
বাংলাদেশের নাগরিককে যদি সরকার ভারতের জেইল থেকে ফেরত না নেয়, এ অবশ্যই খারাপ। কিন্তু আবার একটু বলুন তাতে সীমান্তে হত্যাকান্ড বৈধ হয় কীকরে?
বাংলাদেশের সরকারের সমালোচনা করতে চান? গালিগালজ করতে চান? আসুন। জয়েন দ্য ক্লাব।
কিন্তু এর সাথে সীমান্ত হত্যাযগ্গকে সমর্থন করার কী সম্পর্ক?
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
প্রসূনকে বুঝতে হলে আগে কাগজে একটা গরু এঁকে নিন।
গরু আমার দেখা সবচেয়ে নিরীহ গোবেচারা ধরনের একটা প্রাণী। বিশেষ করে গরুর নাকের দিকে যদি তাকান, কিংবা স্পর্শ করে দেখেন, দেখবেন কী আশ্চর্য রকমের ভালো লাগবে। কিংবা গরুর গলার নীচের গলকম্বল-- আহা, এত মসৃন আর আদরনীয় কোন জিনিস দ্বিতীয়টি হয়না। শিং গজায়নি এমন ছোট গরুর শিংয়ের জায়গায় একটু চুলকে দিন, দেখুন কত মজা পায় তারা।
শেষ কথা হলো, গরু আমার সবচেয়ে প্রিয় প্রাণী
প্রসূনকে বোঝা হয়ে গেলে এবার গরুটার ছবির নীচে ক্যাচ লাইন লিখুন
"ফেলানীদের জীবনের বিনিময়ে হলেও তোমাকে চাই"
তারপর আবার বুঝতে থাকুন.........
প্রসূন ভাই,
"আসবেন বেড়াতে বাংলাদেশে। গুলি করে মারবো না আমরা, কথা দিচ্ছি।"
আমরা গালাগালি বেশি পারলেও গোলাগুলি আপনাদের মতো পারি না...
হিমাগ্নি
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
প্রসূন
এখানে এরকম একটা নিষ্ঠুর মন্তব্য না করলে হতো না?
সচলে কোথায় জাতি বিদ্বেষ ধর্মীয় বিদ্বেষ কে সমর্থন দেয়া হয়েছে, একটু জানাবেন?
একটা বাচ্চা মেয়ে মারা গেছে প্রসূন। যার বিয়ে হবার কথা ছিল কদিনের মধ্যে।এমনকি বিএসএফ, যাদের হাতে সবসময় কোন না কোন কারণ তৈরি থাকে তাদের করা হত্যার সাফাই গাইবার জন্য, তারা পর্যন্ত দুঃখপ্রকাশ করেছে (ক্ষমা চেয়েছে কিনা জানিনা)।আপনি এর মাঝেও গরু ব্যবসার কথা বলছেন?
আচ্ছা একটু বলুন তো তিনজন গরু ব্যবসায়ী মারা যাবার (তাও ভারতের সীমান্তে) খবর দেয়ার কারণ কি? আপনি কি বলতে চাইছেন গরু ব্যাবসায়ী বা ফেনসিডিল ব্যাবসায়ী মানেই তাদের গুলি করে মেরে ফেলা যৌক্তিক কোন কাজ? আপনি কি আসলেই জানেন ওখানে ঠিক কী ঘটেছিল? একটা লিঙ্ক দেবেন এই খবরের?
আপনার জাতীয়তাবাদ একধরনের অন্ধত্বের পর্যায়ে চলে গেছে। তাই ফেলানির মারা যাবার খবর আর গল্পের মাঝেও আপনি শ্লেষ করতে ভোলেন না।
একবার যদি ভাবতেন নিজের দেশের কতগুলো গরীব মানুষ প্রতিবেশির ঘরে গুলি খেয়ে মারা গেলে কেমন লাগে, এরকম মন্তব্য হয়তো করতে পারতেন না।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
দুঃখিত আপনার মনে আঘাত দেবার জন্য।
যেকোনো মৃত্যুই দুঃখজনক। ফেলানীর মৃত্যুটা আরো বেশী বেদনাদায়ক।
একদা আমি বলতে চেয়েছিলাম এইসব হত্যাকান্ড সিলেক্টিভ কিছু নয়। বি এস এফ এর কাজকর্ম যে অনৈতিক সেটাও আমি বহু আগেই বলে এসেছি তবে সাথে প্রশ্ন করেছিলাম হত্যাকান্ড রোধ করতে বাংলাদেশ এর তরফ থেকে প্ররোচনা টা বন্ধ করতে করতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় না কেন? তার জবাবে...... সে অনেক কাহিনী।
ব্যাপারটা যে সিলেক্টিভ কিছু নয় তা জানাতেই আবারো ভারতীয়ের মৃত্যুর খবরটাও জানিয়েছিলাম। আপনাদের পত্রিকা থেকেই লিঙ্ক তুলে দিলাম। http://www.thedailystar.net/newDesign/latest_news.php?nid=27823
যাই হোক ফেলানীর দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুর জন্য আমার সমবেদনা রইল।
ধন্যবাদ।
মানে যতক্ষণ বেঁচে থাকবে মেয়েটা, ততক্ষণ তার সেলোয়ারের নীচে আপনি গ্রেনেড দেখেন, আর আপনার কোমল পাছা বাঁচানোর জন্যে তাঁকে গুলি করেন? তারপর কসাই যেভাবে ছাগল উল্টো ঝুলিয়ে রাখে, সেভাবে ঝুলিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর সমবেদনা জানান?
আপনি তো ভারতের বিল ওরেলি। আপনি খামোখা মাঝে মাঝে সমবেদনা, দুঃখ প্রকাশ, বেদনাদায়ক, এসব কি কথা বলেন, বুঝি না। গরুর কথা বলুন, পাছার কথা বলুন। আপনার সহজাত ভাষাটাই বোঝা বেশি সহজ।
গরুর কথা বলুন, পাছার কথা বলুন। আপনার সহজাত ভাষাটাই বোঝা বেশি সহজ।
আপনি বোধ হয় খেয়াল করেননি, উহা আমার কথা নয়, উহা জনাব হিমু সাহেব আমাকে ফরমাইয়েছেন।
বাকী কথা বলার আগে আপনি এই পোষ্ট এ বরং একটু ঘুরে আসুন।
http://www.sachalayatan.com/maskwaith/33774
আপনার এই পোস্টেও তো গরুর মহাভারত লেখা। সব কিছুতে্ই খালি গরুর বিজনেস নিয়ে আসেন।
হাম্বা...
উনার শয়নে, স্বপনে, নিদ্রা, জাগরণে খালি গরু আর গরুই...
আমার আব্বা আম্মা আমারে গরু ডাকে... বিজনেস করবেন???
হিমাগ্নি
ব্যাপারটা সিলেক্টিভ কিছু নয় বলতে কী বোঝাতে চাইছেন?
মানে বলতে চাইছেন বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে বিএসএফ সমান সংখ্যক ভারতীয় এবং বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করে? আপনি যা বলছেন বুঝে শুনে বলছেন তো?
আপনার হিমুকে করা মন্তব্যে একটা পুরনো মন্তব্য তুলে দিয়েছেন সেখানে আপনার অবস্থান হচ্ছে
যতদুর মনে পড়ে সেই লেখায় আপনি বলেছিলেন পাইপগান হাতে এক কিশোর গরু ব্যাবসায়ীর কথা। এরাই কি আপনাদের নিরাপত্তা বিঘ্নের কারণ? অদ্ভুত তো।
প্রসূন
আপনি বিএসএফ এর কাজের সমালোচনা আর এই সার সার হত্যার সমবেদনা এমনভাবে জানিয়েছেন, তাতে ঠিক স্বান্তনা খুঁজে পাওয়া যায়না।
বাংলাদেশ সরকারের উদ্যমের অভাব কিংবা গরু চোরাচালান কিংবা ভারত সীমান্তে বেআইনী অনুপ্রবেশ কিছুতেই পাপ স্থলন হয়না এই ধারাবাহিক হত্যাকান্ডের ।
এই কথা আপনি এবং বিএসএফ বোঝার চেষ্টা করবেন, এ আশা হয়তো ভুল। তবু আশা করলাম
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
..........................................................................
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
রুপক দিয়ে আবেগ ফুটে তোলার প্রচেষ্টার জন্যে ধন্যবাদ। কিন্তু আবেগের মাঝে 'দালজিত' কে কিছুটা দরদী করে ফুটে তোলা আর বাংলাদেশীরা যারা মারা যাচ্ছে বি এস এফ এর হাতে তাদের সবাইকে ঢালাও ভাবে 'ফেন্সি' চোরাকারবারী হিসেবে নিয়ে আসার ব্যাপার সমর্থনযোগ্য নয়। আর ফেলানী এবং তার বাবার ব্যাপারে যে তথ্য পত্র-পত্রিকায় এসেছে তাতে কিন্তু ফেলানীর বাবা কে বলা হয়েছে 'সস্তায় ইটের ভাটার' স্রমিক হিসেবে নিয়ে যাওয়া। আপনি তো ঘটনার বর্ননা দিলেন বি এস এফ র অবস্থান থেকে- এতটা নিশ্চিত হচ্ছেন কিভাবে যে এইভাবেই ঘটনাগুলো ঘটছে?? আর তাই যদি হয় তবে গত এক বছরে এই ধরনের ঘটনা গুলোর তীব্রতা বৃদ্ধি পাবার কারন কি বলে মনে হয় আপনার?
এই গল্পে রূপক একটি আছে বটে, কিন্তু আপনি কি সেটা ধরতে পেরেছেন? আমার মনে হয় পারেননি। যদি পেরে থাকেন, বলে যান। আর গল্পটায় আবেগের স্থান তো খুব বেশি দেখতে পাচ্ছি না।
দালজিতের দরদী হতে বাধা কোথায়? বিএসএফের প্রতিটি এনরোলড কনস্টেবল নিশ্চয়ই মানুষ মেরে হাত পাকিয়ে বাহিনীতে ঢোকে না, ব্যাপারটা শুরু হয় কোনো ঘটনা দিয়ে। তাই না?
ভারতের মাটিতে যারা মারা যাচ্ছে বিএসএফের হাতে, তাদের বিএসএফ কী মনে করে, কী চোখে দেখে, সেটাই গল্পে দেখানোর চেষ্টা করেছি। বাস্তবে তারা চোরাকারবারি, নাকি অবৈধভাবে সীমানা পার হওয়া পার্টি, তাতে কিছুই আসে যায় না বিএসএফের কাছে। পয়সার বখরা নিয়ে গণ্ডগোল হলে এই লোকগুলোর একটাই পরিচয়, তারা টার্গেট।
আমি তো একটা গল্প লিখেছি, পত্রিকার রিপোর্ট তো লিখতে বসিনি। আপনি ফ্যাক্ট খুঁজতে চাইলে গিয়ে পত্রিকাই পড়তে থাকুন না, বাধা কী?
গত এক বছরে ঘটনাগুলোর তীব্রতা বৃদ্ধি পাবার কোনো কারণ তো গল্পে উল্লেখ করিনি। এ ব্যাপারে আমার ভাবনা তাই এখানে ব্যাখ্যা করার কোনো দায় অনুভব করছি না। আপনার যদি এ ব্যাপারে কোনো বিশ্লেষণ তৈরি থাকে, পোস্ট দিন, পড়ি।
সবশেষে একটা কথা বলি, শুনতে খারাপ লাগবে। আমি চাই আমার পাঠক যেন মনোযোগ দিয়ে আমার লেখা পড়েন। তিনি সেই কাজটা না করে, ভাসাভাসাভাবে পড়ে মন্তব্য দিতে লাফিয়ে পড়লে আমার বিরক্ত লাগে। কারণ লেখাগুলো আমি যথেষ্ট মনোযোগ দিয়ে লিখি। ফলে এই ধরনের অপ্রস্তুত প্রতিক্রিয়াগুলোকে আমি কর্কশভাবে মোকাবেলা করি। এই সংঘর্ষটা এড়ানো যায় যদি কিছু মনোযোগ দিয়ে আমার লেখা পড়েন। ধন্যবাদ।
গল্প টা আসলেই বেদনাদায়ক এবং যা ঘটেছে গত বেশ কিছুদিন ধরে সেটাও :(। বি এস এফ এর আচরন কখনোই প্রতিবেশীর মতন নয় । তবে হ্যা আমরা তো আর দেশ থেকে বি এস এফ ধরে ধরে বিচার করতে পারব না । তাদের এমন কাজের প্রতি ঘৃণা রইল । কিন্তু হায় আমার দেশের সরকার আমার দেশের বর্ডার গার্ড এরা কি করে ।
সরকার এর উচিত এখনই ভারতীয় হাই কমিশনার ডেকে এনে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানানো ।
আর একটা কথা বলতে চাই । আমাদের বর্ডার গার্ড গুলাও যদি টাকা না খাইত তাহলেও হয়তো কিছু মানুষ অন্তত বি এস এফ এর হাত থেকে রক্ষা পেত
প্রচন্ড রাগ হয়... তারপর একটা সিগারেট খেলেই সব ঠিকঠাক। আইপিএলের শিডিউল কালেকশন, নতুন সিনেমা, জিয়েফের জন্যে মাছাক্কালি... নাহ, এত্তো সময় কোথায়!!!
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
হিমুর লেখাটার প্রশংসা যতই করা যায় কম হয়ে যায়, আমাদের বোবা মানবিকতাও ধাক্কা খেয়ে যায়। দালজিতের মত চরিত্র বি এস এফ এও থাকতে পারে কিন্তু আমার ধারণা এরাও কিছুদিনের মধ্যে পোড়খাওয়া হয়ে যায়। বাস্তবের সাথে গল্পে একটাই তফাত আছে মনে হয়, ঘটনাটা ঘটে সন্ধ্যায় অর্থাৎ বাইনোকুলার দিয়ে দেখার অবকাশ ছিলনা।
বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে কিছু বক্তব্য আশা করেছিলাম, একদিন চলে গেল, বি এস এফ দুঃখপ্রকাশ করল, লাশ ফেরত দিল, ব্লগে অনেক লেখা হল, বি এস এফ আবারো কয়েকজনকে মেরে ফেলল, কিন্তু সরকারী মন্তব্য এখনও আসে নি। এই রকমের ঘটনা যত তাড়াতাড়ি বন্ধ হয় ততই ভাল। যারা ধর্ম-নাগরিকত্ব নিয়ে বক্তব্য রাখছেন তাদের কাছে অনুরোধ রইল একটু মানুষ হিসাবে দেখার চেষ্টা করুন ঘটনাটা।
হিমুকে ধন্যবাদ ঘটনাটা সামনে নিয়ে আসার জন্য।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
গরুর মূল্য মানুষের জীবনের চেয়ে বেশি মনে হলে মানুষ হিসেবে দেখাটা ইনহেরেন্টলি ইম্পসিবল হতে পারে|
আপনার অনুরোধটাই করি, সীমান্তে বিএসএফ'এর গুলিতে মরতে থাকা মানুষগুলোকে 'মানুষ' হিসেবে দেখার চেষ্টা করুন, প্লিজ। লুঙ্গি কিংবা সালোয়ারের নিচে ট্যাংক লুকানো ভারতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হিসেবে নয়।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কোন যুক্তিতেই এহেন আচরন গ্রহনযোগ্য করে তোলা সম্ভব নয়। ভারত-বাংলাদেশ ভাগের আগথেকেই যারা এই সীমান্ত এলাকায় থাকেন, তারা কি করবেন? এক কাটা তারের জন্যে তারা আত্মীয় বিসর্জন দিবেন কিভাবে এটাতো আমি কোনভাবেই বুঝতে পারতেছি না। তাই এই এলাকার বাসিন্দারা যদি এপার ওপার করেন, তবে তাদের চোরাচালানী, সন্ত্রাসী বা অন্য ট্যাগে ফেলে সীমান্তরক্ষীরা তাদের নির্দ্বীধায় খুন করেন, সেটা শুনে আমি কেবল শিউরেই উঠতে পারি। কিন্তু এই ধরণের আচরন যখন কোন আবাল এসে আচোদা যুক্তি দিয়ে হালাল করতে চান, তখন খিস্তিতে আর থুতুতে মুখ ভরে আসে। মনে হয়, এদের বিএসএফ এর স্ট্যান্ডার্ডে জবাব দেই...
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
বড্ড ভালো লেখা| একটা হালকা খটকা, ফেন্সি বলে না 'ডাইল' বলে? আমাদের এলাকার ছেলেপুলেরা ডাইল বলে দেখি|
(এহে আমার সিগনেচারটা কোথায় উড়ে গেছে!)
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
বলে দমুদি, এখানেও ডাইল বলে। আমার একটা প্রশ্ন ছিল, যদিও পোস্টে হিমু ভাইয়ের মূল বক্তব্যের সাথে অপ্রাসঙ্গিক কিছুটা, কিন্তু আপনার কথায় মনে পড়লো, ব্যাপার হলো যে ফেন্সিডিল কিন্তু আসলে ফেনারগানের মতো অ্যান্টি-অ্যালার্জিক, হিস্টামিন টাইপ অষুধ। ফেনারগান বা এমন যেকোন ঔষধ খেলেই কিন্তু নেশাভাব বা ঝিমুনি এসব হবে। আমার মনে আছে ২০০১-এর শুরুতে হুগলিতে কাজে গিয়েছিলাম, ঠাণ্ডা লেগে যাওয়ায় আমাদের হোস্ট বন্ধুদের একজন সাজেস্ট করেছিলেন ফেন্সিডিল কিনে দেবেন কেনা, তখন অন্যান্য ব্যস্ততায় তাঁদের কাওকে জিজ্ঞেস করা হয় নাই বলে জানতে চাচ্ছি, কিছু মনে করবেন না। কিন্তু কথা হলো, ফেন্সিডিল যেভাবে আমাদের এখানে এফেক্ট ফেলছে নেশার দ্রব্য হিসেবে, পশ্চিমবঙ্গে কি তেমন নয়? না হলে, কেন? বা কিভাবে এটা রোধ করা সম্ভব হচ্ছে?
আমাদের এখানেও ফেনারগান বা এ জাতীয় অন্য অষুধগুলো খেয়ে নেশা করে না দেখি, কাজেই কারো জানা থাকলে জানতে চাই, এর কারণ কি ফেন্সিডিলের দাম কম, নাকি এটাই বেশি সহজলভ্য? এটার প্রোডাকশন আসলে কী অনেক বেশি? চাহিদা কি স্রেফ এদেশেই?
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
একটা বাস্তবতাকে এত সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন সত্যই যা হৃদয় স্পর্শ করে। ধন্যবাদ আপনাকে।
একটু দেরিতে পড়লাম। আমার তো গল্প চমৎকার লাগল। আপনার ছোট ছোট ডিটেলের কাজ বরাবরই মুগ্ধ করে। তবে কিছু কিছু রেফারেন্স বুঝতে না পারায় একটু হলেও রসগ্রহণ ব্যহত হয়েছে, যেমন ফেন্সি। উপরে ব্যাকপ্যাকার-দিদির মন্তব্যে কিছুটা বুঝলাম ওইটা।
আবার মন্তব্যের ইচ্ছা ছিলনা। তবুও বলছি দাদারা, সাহিত্য মানব হৃদয়ের অনুভতি। হিমুদার লেখাটা মানবতার দৃষ্টিতে মর্মস্পর্শী। বাংলায় লেখেন, বাংলায় স্বপ্ন দেখেন, বাংলায় ভালোবাসেন, -কাঁটাতার এর বেড়াটা মন থেকে মুছতে পারেন না কেন?
মর্মস্পর্শী লেখা। আমাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বলি আর যে কতো ফালানির হতে হবে তার ঠিক নেই। ইনডিয়ার সরকারের সোনার ছেলে বিএসএফরা যে কতোটা উদ্ধত হতে পারে তা নতুন করে বলার আর অবকাশ নেই। বিদেশে বসে আপনার লেখাটা পড়ে খুবই কষ্ট পেলাম। বিএসএফএর উদ্ধত এবং অসভ্য আচরণ সম্পর্কে অনিন্দ্য ভাইয়ের একটা লেখায় কমেন্ট করেছিলাম। আমি পাসপোর্টধারী একজন ট্রাভেলার। পেট্রাপোল বর্ডার পার হওয়ার পর সার্চের জন্যে আমাদের গাড়ি থামিয়ে আমার পকেট সার্চ করতে গিয়ে আমার নুনুতে হাত দিয়েছিলো।
অ.প্রা. আপনার বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহ শিকারে গানটা শুনলাম। অসাধারণ একটা গান। বাণীতে, সুরে আর সর্বোপরি আপনার দরাজ কন্ঠে। গানটার সাথে বেজ গিটারের কয়েকটা টোকা থাকলে আরও জোস হতো।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
নতুন মন্তব্য করুন