১.
প্রথম আলোতে "মেহেরজান" চলচ্চিত্রের পরিচালিকা রুবাইয়াত হোসেন একটি আর্টিকেল লিখেছেন, "মেহেরজান যা বলতে চেয়েছে" শিরোনামে। আমি মেহেরজান চলচ্চিত্রটি দেখার সুযোগ পাইনি, কিন্তু রুবাইয়াতের আর্টিকেলের পিচ্ছিল দিকগুলো পড়ে সেগুলো নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই।
রুবাইয়াত লিখেছেন,
শিল্প ও ইতিহাসের মধ্যকার যোগসূত্র সব সময় যুক্তিনির্ভর নয়, বরং প্রায়ই তা আবেগনির্ভর। ইতিহাসে ‘একমাত্র’ সত্যের অনুসন্ধান যে ফলপ্রসূ কোনো চর্চা নয়, অনেক দিন ধরে ইতিহাসতাত্ত্বিকেরা সে কথা বলছেন। ইতিহাসের বয়ান সব সময় মতৈক্য অনুসরণ করে এগোয় না। একে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার অবকাশ থাকে এবং সব দৃষ্টিভঙ্গিই ইতিহাসের ভিন্ন ভিন্ন বয়ান প্রকাশের সুযোগ দেয়।
এই প্রারম্ভিকা থেকে একটি জিনিস আমি পাঠক হিসেবে বুঝতে পারি, পরিচালিকা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের "একমাত্র" সত্যটির পরিচয় জানেন। এর অনুসন্ধানকে তিনি ইতিহাসশাস্ত্রীদের মুখে গয়রহ কথা বসিয়ে তার ফলপ্রসবে অক্ষমতার কথা লিখে বসলেও, তিনি জানেন, এই "একমাত্র" সত্যটি কী। এই জ্ঞান সাথে নিয়েই তিনি এই প্যারা শেষ করেন এই বলে,
মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপ্তি এত ব্যাপক যে একটি চলচ্চিত্রে তার সামগ্রিকতা ধারণ করা অসম্ভব। কোনো সাহিত্য বা চলচ্চিত্রকর্ম ইতিহাসকে বড়জোর একটি বিশেষ কোণ থেকে আলোকপাত করতে সক্ষম। সেখানে তাই সত্যের ‘একমাত্র’ ও পুঙ্খানুপুঙ্খ উপস্থিতি খোঁজা খুব যৌক্তিক নয়।
কিন্তু আমরাই না তার প্রথম বাক্য থেকে শিখলাম, যে "শিল্প" আর ইতিহাসের যোগসূত্র সবসময় যুক্তিনির্ভর নয়, বরং "প্রায়ই" তা আবেগনির্ভর? তাহলে আমরা কেন এই ইতিহাসের বিশেষ কোণ থেকে আসা রশ্মির নিচে আলোকস্নানকে যুক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ করতে যাবো? নাকি সিনেমানির্মাতাই কেবল শিল্প আর ইতিহাসের মধ্যে আবেগনির্ভর যোগসূত্রটি বর্গা নিয়েছেন, সেখানে দর্শককে বসতে হবে আবেগবিবর্জিত আর যুক্তিকাতর হয়ে?
প্রথম প্যারা থেকে শিখলাম, এখানে রুবাইয়াত হোসেনকে আবেগের তালগাছটি সমর্পণ করতে হবে। যুক্তির প্রখর রোদের নিচে দর্শককে দাঁড় করিয়ে তিনি ঢুকে গেলেন আবেগের ছাতার নিচে। বেশ।
তারপর রুবাইয়াত বলছেন,
মেহেরজান একাত্তরের নারীপ্রধান একটি আখ্যান। এই আখ্যানে রয়েছে সেই নারীদের গল্প, যাঁরা নিজেদের মতো করে যুদ্ধ করেছেন—কখনো হয়তো বন্দুক ছাড়াই; অহিংসার পথে রক্ষা করেছেন আত্মসম্মান।
শেষের বাক্যটি খুব খটকা লাগায়। অহিংসা? অর্থাৎ, "সহিংস" পথে আত্মসম্মান রক্ষা করতে চেয়েছিলেন যে নারীরা, তাদের শুরুতেই পরিচালিকা ছেঁটে ফেলেছে হিসাব থেকে। এখানে অহিংসা শব্দটি পাঠকের মনে একটি অর্ধস্ফূট মেসেজ পাঠায়, যেন মুক্তিযুদ্ধকালীন "সহিংস" পদ্ধতিগুলো বেছে নেয়া একটা অপরাধ, আর তার দায়টিও আমাদের নারীরই।
এরপর তিনি উদ্ধৃতি দিয়েছেন নীলিমা ইব্রাহিম আর সুসান ব্রাউনমিলারের। আমরা বুঝতে পারি, তিনি বীরাঙ্গনাদের ব্যাপারে বই পড়ে পড়ে অনেক কিছু বোঝার চেষ্টা করেছেন। প্রশ্ন জাগতে পারে, কেন? তিনি তো শিল্প আর ইতিহাসের মধ্যে আবেগনির্ভর যোগসূত্র তৈরি করতে চেয়েছেন, যুক্তিকে বা "একমাত্র" সত্যকে সেখানে তেমন একটা পাত্তা দেননি, পুঙ্খানুপুঙ্খ সত্যাশ্রয় তো দূরের কথা। তাহলে কি পরিচালিকা একটি পূর্বনির্ধারিত কাঠামোর সমর্থন দেয়ার জন্যেই ইব্রাহিম ও ব্রাউনমিলারের বই থেকে ৩০-৪০ জন নারীর উদাহরণকে সামনে টানছেন? আর যদি তিনি বই থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমাণ করতে চান, যে তার কাজ গবেষণার ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে, তাহলে কেন তিনি মাঠ পর্যায়ে একটু খোঁজ করলেন না? প্রচুর বীরাঙ্গনা তো এখনও জীবিত। কাজটা তিনি করেননি, কারণ প্রথমত কাজটা কঠিন, দ্বিতীয়ত, তিনি "একমাত্র" সত্যটি এড়িয়ে যেতেই ইচ্ছুক। তিনি বলতে চান "একমাত্র" সত্যের বাইরে অন্য কিছু।
এরপর তিনি লিখেছেন,
তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখন ও মুদ্রণ প্রকল্পের অধীনে ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৭ সালের মধ্যে সংগৃহীত ও প্রকাশিত হয় আট খণ্ডে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও দলিলপত্র। এটিই মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র আনুষ্ঠানিক তথ্যকোষ, যাতে এই নারীদের বিবৃতি আছে। মোট ২২৭ জনের মৌখিক জবানবন্দির মধ্যে ২৩ জন নারী। তাঁদের মাত্র ১১ জন যৌন নিপীড়নের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেছেন। এসব দলিলে একাত্তরে মেয়েদের ওপর ধর্ষণের নৃশংসতার কিছুটা আভাস পাই, কিন্তু তাঁদের প্রকৃত সংখ্যা সম্পর্কে কোনো ধারণা পাওয়া যায় না। সেনাশিবিরে সংঘটিত যৌন দাসত্বের পুরো চিত্রটিও এতে অনুপস্থিত। ফলে ১৯৭১ সালের নিপীড়িত নারীদের নির্ভরযোগ্য ইতিহাস লিখতে গিয়ে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় তাঁদের সংখ্যার ব্যাপক তারতম্য। সুসান ব্রাউনমিলারের অ্যাগেইনস্ট আওয়ার উইল: মেন, উইমেন অ্যান্ড রেপ, সিরাজুল ইসলাম ও মিয়া শাজাহান সম্পাদিত বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় জ্ঞানকোষ ও অন্যান্য দলিলপত্রের ভিত্তিতে ধর্ষিত নারীর সংখ্যা ৪০ হাজার থেকে আড়াই লাখ, গর্ভপাতের সংখ্যা ২৩ হাজার থেকে ৫০ হাজার এবং যুদ্ধশিশুর সংখ্যা ৪০০ থেকে ১০ হাজারের কোনো সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যানে আসতে না পারায় বিষয়টি অমীমাংসিতই থেকে যায়।
অর্থাৎ, কেউ যদি ধর্ষিতা নারীদের মাথা গুণে সংখ্যাটা বলতে না পারেন, তাহলে এই বিপুল ধর্ষণের ব্যাপারটিই মীমাংসার বাইরে চলে যায়। এটি মীমাংসার নাগালের এত বেশি বাইরে, যে রুবাইয়াত সিদ্ধান্তে এসেছেন, এ নিয়ে কোনো কিছু তিনি সিনেমায় রাখবেন না।
এরপর তিনি লিখছেন,
সুতরাং ১৯৭১ সালে কেবল পাকিস্তানি সৈন্যই নয়, বিহারি, আগাখানি, বাঙালি রাজাকার সবাই কমবেশি অবস্থার সুযোগ নিয়েছিল। আবার এও সত্য, পাকিস্তানি বাহিনীর মেজর আলতাফ করিম প্রিয়ভাষিণীর জীবন বাঁচান এবং সেনাশিবিরের ক্রমাগত নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করেন (নারীর একাত্তর, পৃ. ১৪৫)।
পাকিস্তানি সৈন্যরা "অবস্থার সুযোগ" নিয়ে বাঙালি নারী ধর্ষণ করেছিলো? এখানে যে "অবস্থা"র কথা বলা হচ্ছে, সেটি কি তারাই তৈরি করেনি? আবার আমরা দেখতে পাই, ইতিহাসের একমাত্র সত্যের বাইরে আরেকটি মহাসত্য, কোনো এক পাকি মেজর প্রিয়ভাষিণীর জীবন ও সম্ভ্রম রক্ষা করেন। যেন এই বিচ্ছিন্ন চিত্রটিই পাকিস্তানি সৈন্য + বিহারি + আগাখানি + বাঙালি রাজাকার কর্তৃক "অবস্থার সুযোগ" নেয়ার সমকক্ষ!
নীলা চরিত্রটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রুবাইয়াত লিখেছেন,
নীলা একটি কাল্পনিক চরিত্র, কিন্তু তাঁর মধ্য দিয়ে যে তেজদীপ্ত সাহসিকতা প্রকাশ পেয়েছে, তা পাকিস্তানি বর্বরতার বিরুদ্ধে যেমন, তেমনই আমাদের সমাজের কপটতার বিরুদ্ধেও একটি প্রতিবাদ।
অর্থাৎ, নীলা হচ্ছে সেই সমান চিহ্নটি, যা "পাকিস্তানি বর্বরতা" আর "আমাদের সমাজের কপটতা"কে ইকুয়েট করে। আমাদের কানে ফিসফিস করে বলে, আমরা আর পাকিরা কমবেশি একই।
এরপর আসে রুবাইয়াতের লেখার ক্লাইম্যাক্স,
১৯৭১ সালে একদল পাকিস্তানি বাংলাদেশের প্রতি নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদনামায় যাঁরা স্বাক্ষর করেছিলেন, তাঁদের অন্যতম ছিলেন পাকিস্তানের মানবতাবাদী কবি ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ। বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলায় কারাবন্দী হয়েছিলেন পাকিস্তানের মানবাধিকারকর্মী আসমা জাহাঙ্গীরের বাবা। এমন কিছু মানুষ সব সময়ই থাকেন, যাঁরা রাজনৈতিক ভেদরেখার ঊর্ধ্বে উঠে যান, থাকেন শান্তি ও ন্যায়বিচারের পক্ষে। মেহেরজান-এ মানুষের তৈরি রাজনৈতিক সীমানা পেরিয়ে একটি সর্বজনীন মানবতাবোধে উদ্বুদ্ধ অহিংস শান্তিবাদের শক্তিকে উপজীব্য করা হয়েছে।
এখানে এই "শান্তি", "ন্যায়বিচার" কথাগুলোর অপব্যবহার যত না পীড়া দেয়, তারচেয়ে বেশি পীড়া দেয় "মানুষের তৈরি রাজনৈতিক সীমানা" কথাটি। যেন আমরা রাজনৈতিক সীমানা তুলে পাকিস্তানকে প্রতিহত করতে গিয়ে শান্তি আর ন্যায়বিচারের বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছিলাম, যে কারণে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি আক্রান্ত মানুষ, এক কোটি শরণার্থী, তিরিশ লক্ষ শহীদ আর দুই লক্ষাধিক ধর্ষিতা নারীকে ছাপিয়ে আমাদের এই সিনেমায় বার বার শুনতে হয় ফয়েজ আহমেদ ফয়েজের কথা। আমরা বুঝতে শিখি, ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ এমন এক মস্ত চ্যাটের বাল ছিলেন, প্রতিবাদনামায় স্বাক্ষর করে তিনি এমন এক অহিংস শান্তিবাদকে উচ্চে তুলে ধরেছিলেন, যা আমাদের মুক্তি সংগ্রামের সহিংস পদ্ধতিকে ম্লান করে দিয়েছিলো। অহো! বাঙালি জাতির উচিত সুবহে সাদিকে উঠে ফয়েজ আহমদ ফয়েজের নিতম্বচুম্বন করা।
আমরা দেখি, এই সিনেমায় কোনো বাস্তব চরিত্র নেই, ফয়েজ আহমদ ফয়েজের বায়বীয় উপস্থিতি ছাড়া। কারণ, রুবাইয়াত লিখেছেন,
এ ছবির মূল মর্ম একটি সর্বজনীন মানবতাবোধ ও দেশ-কাল-পাত্রের ঊর্ধ্বে চিরন্তন প্রেমের জয়গান—যা মানুষকে নিজের গণ্ডি পেরিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে।
পরিচালিকা নিজেও অনুধাবন করেছেন, ১৯৭১ সালে এই "সর্বজনীন মানবতাবোধ" এর প্র্যাকটিশনার ঐ ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ ছাড়া আর কোনো রক্তমাংসের মানুষ ছিলেন না। বাকি সবাই, বাঙালি-পাকি নির্বিশেষে সহিংস সব কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলো। আমরা এ-ও বুঝতে শিখি, দেশ, কাল আর পাত্রের ঊর্ধ্বে উঠে আমাদের ১৯৭১কে দেখতে হবে, এবং সেখানে প্রেমের জয়গান বাদে বাকি সবকিছুকে চেঁছে ফিল্টার করে বাদ দিতে হবে। ১৯৭১কে দেশকাল দিয়ে বিচার করা যাবে না, পাত্র দিয়ে তো নয়ই!
আমাদের শিক্ষা এখানেই শেষ নয়। আমরা শিখি,
কোরীয় তাত্ত্বিক নোয়েলিন হেইজের তাঁর এক লেখায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যৌন দাসত্বের শিকার কোরিয়ার পুনর্বাসিত নারীদের ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে একটি নান্দনিক সমাধানের পথ প্রস্তাব করেছিলেন। তাঁর প্রস্তাব ছিল, নারীবাদী তত্ত্বের গতানুগতিক ধারার বাইরে ‘অধিক শক্তিধর কিছুর সন্ধান করা, যা জীবনদায়ী, স্বতঃস্ফূর্ত ও পরিবর্তনশীল’। তাই যুদ্ধংদেহী পৃথিবীতে ‘অপর’কে ভালোবাসার গল্প শোনাতেই মেহেরজান ছবির জন্ম।
এই "অপর"কে পরিচালিকা স্থাপন করেছেন ট্রেঞ্চের ওপারে। যুদ্ধংদেহী পৃথিবীতে তিনি শোনাতে চান মুরগি আর শেয়ালের মধ্যে ভালোবাসার গল্প, সাপ আর ব্যাঙের মধ্যে ভালোবাসার গল্প, বাঙালি নারী আর পাকিস্তানি সৈন্যের মধ্যে ভালোবাসার গল্প। আমরা দেখতে পাই, বাঙালি কিশোরী অর্ধনগ্ন বালুচ সৈন্যের সাথে জলছপছপ খেলছে নিরিবিলি ১৯৭১এ। সেই প্রমোদ কানন দেখে মনে হয়, ১৯৭১ ছিলো একটি মস্ত বনভোজন মৌসুম, সে সময় কিছু দুষ্টু দূরে গোলাগুলি চোদাচুদিতে মগ্ন ছিলো, তাই শান্তিবাদী শাশ্বত প্রেমোৎসুক দুটি হৃদয় খুঁজে নিয়েছে একটি কোর্টশিপ ইয়ার্ড, যেখানে লোকে শুধু প্রেম খ্যালে।
২.
১৯৭১ নিয়ে "একমাত্র" সত্যটি যারা সিনেমায় মোকাবেলা করতে পারে না, তাদের ১৯৭১ নিয়ে সিনেমা চোদানো মানায় না। ১৯৭১ নিয়ে ইতিহাসের ভিন্নপাঠের আগে দুইদিনের বৈরাগী এইসব পরিচালকেরা যেন এই "একমাত্র" সত্যপাঠে কিছু সময় ব্যয় করেন। সহসচল কনফুসিয়াসকে উদ্ধৃত করে বলি, মুক্তিযুদ্ধ কদুর তেল না যে ইচ্ছা হলো মাথায় মাখবেন, আর ইচ্ছা হলো হস্তমৈথুন করবেন।
মন্তব্য
লেখাটা শেয়ার করুন আর ছাগু, ছাগুবান্ধব, কনফিউজ ছাগু, আসন্ন ছাগু এবং ছাগুপ্রেমীদের দেখিবামাত্র পোন্দাইতে থাকেন।
এই আলোচনাটির খুব দরকার ছিল। অসাধারণ।
একটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার এখানে উল্লেখ্য। প্রথম আলোতে আজ এ লেখাটিও প্রকাশিত হয়েছে। আর রুবাইয়াতের লেখাটির শুরুতে বলা হয়েছে,
এখানে ব্যাপারটা পরিষ্কার, যে ফেরদৌস-বাবু-গায়েন-প্রিয়ভাষিণী রচিত লেখাটি পত্রিকায় প্রকাশিত হবার আগে রুবাইয়াত তা পড়ে প্রতিক্রিয়া লেখার সুযোগ পেয়েছেন। দিন বদলের কাণ্ডারী প্রথম আলো তাই তাদের লেখাটি পড়ে একটি জনমত দানা বাঁধার আগেই রুবাইয়াতকে কথা বলার সুযোগ দিয়েছে। এই সুযোগ তারা অন্যকে দেয় না। এর কারণ কী? এই বালছাল সিনেমাটি থেকে মোটা টাকার বিজ্ঞাপন প্রথম আলো পেয়ে থাকে বলে?
তার চেয়েও বড় কথা, আমি পত্রিকায় লেখা প্রকাশের নিয়ম নিয়ে কিছু জানি না, কিন্তু এইভাবে তারা প্রকাশ করার আগে যার প্রতি অভিযোগ তাকে লেখা পড়তে দিতে পারে?
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
তারা নিজেরা যদি কারো পাছা বাঁচানোর খ্যাপ মারায় নিয়োজিত হয়ে থাকে, তাহলে শুধু পড়তেই দিতে পারে না, লেখার জবাবটাও দ্দীণূটাইপ কাউকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়ে রুবাইয়াতের নামে ছাপিয়ে দিতে পারে। সবই তো সম্ভব।
আমি এথিকসের ব্যাপারটা বলছিলাম, তারা যা করছে তা তো দেখতেই পারছি।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
কার কাছ থেকে এথিকস আশা করেনরে ভাই? প্রথম আলোর কাছে? যারা মাত্র "তিরিশ মিনিটে" দুনিযা কাঁপিয়ে ফেলে আমাদের গৌরবময় ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস শেষ করে ফেলেন? নাকি জাতীয় সঙ্গীতের শুরুতে অশ্লীল প্রিল্যুড যোগ করে, জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার প্রচলিত আইনকে কাঁচকলা দেখিয়ে জাতীয় সংসদ ভাবনের সামনেই জাতীয় সঙ্গীতকে গ্যাঙর্যাপ করায় সচেষ্ট হওয়া প্রথম আলোর কাছে?
এদের কাছে এথিক্স আশা করেন আপনি?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এথিকস আশা করি না রে ভাই, কিন্তু প্রতিটা পেশারই কিছু কোড অফ কনডাক্ট থাকে, এথিকস থাকে, আপনিও তো জানেন। এই জিনিসটা সেই এথিকসের মাঝে পড়ে কি না সেইটুকুই জানতে চাচ্ছিলাম। প্রথম আলুর কাছে আমার কিছুই প্রত্যাশা নেই, টাকা পেলে এরা সবই করতে পারে।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
পল্লব একটা সেইরকম দামী কথা বলসে: "আলু গোল, সবদিকে গড়ায়!" ওরে আমার হয়ে একটা স্যালুট দিও।
আমি অলরেডি প্রশংসা আর like এর চোটে ফুলে ভেসে উঠে ছাদে আটকায়ে আছি, ছাদ ভাংলে এর পরে আকাশ। থেঙ্কু!
তবে কথা সত্য।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
সিনেমাটি নিয়ে যত আলোচনা হবে তত বেশী মানুষ ছবিটি দেখতে যাবে। তত টাকা। সমীকরন কোথায় দাঁড়ায় ভেবে দ্যাখো।
অসহ্য ঘৃণায় মুখে একদলা থুতু জমে উঠল।
শাহীন আখতারের তালাশ উপন্যাসকে আলুপেপার পুরস্কার দিসে। ঐটাতেও বাঙালি মেয়ে পাকিস্তানি সেনার প্রেম। লেখক লিখসেন ফ্ল্যাপে, স্মৃতি থাইকা বলি, "উপন্যাসকে সত্য বলার দায় থেকে মুক্তি দিতে হবে"। বিস্মিত হই না। আলুপেপার এই সত্যবাল "প্রজেক্টে"র সাথে বহুদিন ধইরাই ...
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
মতিরে নিশানে ইমতিয়াজ দেয়ার তেব্র দাবি জানাই।
আচ্ছা, ইনিই কি সেই শাহীন আখতার, যার নামে ইমেইলে উল্টাপাল্টা কথা ছড়ানোর দায়ে আমাদের দ্দীণূদা জনৈক জাহিদুর রহিম অঞ্জনের হাতে সেইরকম চটকানা খেয়েছিলো আজিজে?
প্রথম আলো যে এই দুই আর্টিকেলই ছাপাবে, তা আগে থেকেই জানান দিয়ে রেখে আজকে প্রকাশ করেছে। আমার মতে এটাও একটা পাব্লিসিটি স্টান্ট কিন্তু! বিজ্ঞাপন দেয়া সিনেমার জন্যেও যেমন, আবার ধরেন ওদের কাগজেরো বিক্রি বাড়লো।
প্রথম আলোর ভুল তথ্য দেবার ইতিহাস পুরানো, আর এথিকসো মানে না ধরেই নেই। কাজেই তাদের জন্যে না, বরং সবার জানা উচিত বলেই টিউপুর কথাটাই আমিও বলি - যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাকে অভিযোগনামাটা পাব্লিকলি প্রকাশের আগেই, প্রাইভেটলি পড়তে দেয়া জায়েজ না। পরিচালকের লেখা যদি পরেরদিন প্রকাশিত হয় তাহলেও হয়, কিন্তু আজকেই, তাও আবার পরিচালকের ভাষা কোট করি -
তাকে এই সুযোগ দেয়া অন্যায়।
এই একই সুযোগ কি প্রতিবাদ যাঁরা করেছেন তাঁদেরকে দেয়া হয়েছিল? আমার তো পড়ে মনে হয়েছে তাঁরা প্রতিবাদ জানানোর পরে প্রথমআলো সেটা ব্যবহার করেছে পাবলিসিটির কাজে, পরিচালককে তা পড়িয়ে, আরেকটা আর্টিকেল লিখিয়ে নিয়েছে।
সিনেমার পরিচালক, প্রযোজকের কাছে থেকে এবং সংশ্লিষ্ট যত পত্রিকা ও অন্যান্য মিডিয়া এই সিনেমার প্রচারণায় অংশ নিয়েছে তাদের সবার কাছে সাধারণ দর্শক প্রতারিত হয়েছে বছরাধিক সময় ধরে চটকদার ভুল তথ্য আর উপস্থাপনায়। ইতিহাস বিকৃতির এহেন প্রশ্রয়ে সেন্সর বোর্ডসহ এদের সবার বিরুদ্ধেই আমি অভিযোগ জানাই।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ব্যাপারটা সকালেই খেয়াল করেছি। তবে অবাক হইনি, আলুপেপার তো!
______________________________________
লীন
"বস্তুত মেহেরজান-এর মতো ছবির মাধ্যমে একাত্তরের ধর্ষিত নারী ও যুদ্ধশিশুর প্রসঙ্গটিকে ওয়ার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের গোচরে এনে ১৯৭১-এ নির্বিচারে নির্যাতিত নারীদের বিচার দাবি করা সম্ভব—এ রকম একটি ভাবনা থেকেই মেহেরজানকে আমরা একটি আন্তর্জাতিক আঙ্গিকে নির্মাণের প্রয়াস পেয়েছি এবং একটি বৈশ্বিক মানবতাবোধের ভাষাভঙ্গি ব্যবহার করেছি।"
"বৈশ্বিক মানবতাবোধের ভাষাভঙ্গি" ব্যাপারটা কি ? সবাই যুদ্ধ করেছে, সবাই ধর্ষণ করেছে, সবাইকে ক্ষমা করে দেয়া হোক টাইপের ম্যাতকার ? এখন আমাদের বুকে বুক লাগিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় ?
এই যদি হয়, সেই বৈশ্বিক মানবতাবোধের উপর আমি ছ্যাড়ছ্যাড় করে মুত্রত্যাগ করে দিলাম
সরকারের সেন্সরবোর্ড কি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানে না? নাকি সেখানেও ওরা ঢুকে গেছে? রোবায়েত ফেরদৌস প্রমূখ-এর লেখায় ছবির ঘটনা পড়ে মনে হচ্ছে বিষয়টি অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। সরকারী কোন বক্তব্য এসেছে?
সরকারের কাছ থাইক্কা আপনি কি বক্তব্য আশা করেন ? যোগাযোগ মন্ত্রী আবুলের মাইয়া বহুত শখ কইরা একখান ছবি বানাইছে। ছবিখান আপনার আমার মত বাঙালের মনে কষ্ট লাগলেও আমাগো হাসিনা ম্যাডামের কিছু যায় আসে না। মুক্তিযুদ্ধখান আওয়ামীলীগ সারা জনমের লাইগা লীজ লইয়া লইছে। অহন, এইডা বেইচ্চা যতদিন খাইতে পারে, ততদিন খাইবো। আর, আমরা বাঙালরা আশায় আশায় বুক বাঁইধা বইসা থাকুম, কখন যুদ্ধ অপরাধীগো বিচার করব।
সেগুড়ে বালি!!!!!!
আলামতখানাতো মেহেরজান দিয়া বুঝতে পারতাছেন সবাই। আমি আজকে একটা স্বপ্ন দ্যাখতে চাই........
............এই মেহেরজান'র কারনে আমাগো যোগাযোগ মন্ত্রী আবুলের গদিখানা নাই, সেন্সর বোর্ডের সবগুলা আবাল বেকার অইয়া রাস্তায় রাস্তায় গুরতাছে, আর আবুলের মাইয়া তার স্বপ্নের ফিলিমটা ব্যান করনের কারনে আবুলরে কাউয়ার্ড বইলা বিমান ধরনের লাইগা গাট্টি-বোচকা লইয়া পানি ভরা চোখটা কচলাইতে কচলাইতে বিমানের ছিটে বইসা মনে মনে বলতাছে - 'কিল খাই, গুতা খাই, যা খাই- আমেরিকাতে ভালা খাই'। আর আলুর মতি মিয়া আবুলের মাইয়ার পিছনে দোঁড়াইতে দোঁড়াইতে কইতাছে, ম্যাডাম - যাওনের আগে আমার ট্যাকাগুলা দিয়া যান...........।
ইশ্বর আমার স্বপ্নটা কবুল করলেই আমি খুশী। কারন, বাস্তবে যেইটা সম্ভব না, সেইটা স্বপ্নে দেইখা দুধের স্বাদ ঘোলে মিটামু। .....আমিন।
নাহ! তাও কিছুই বুঝলাম না। নানাজান, ফয়েজ, মেজর, সহিংসতা, এই শব্দগুলোই বারবার শুনলাম খালি। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে যে ক'টা দিন জনমনে শান্তসমাহিত তৃপ্তি চলছে, সেখানে একটা শিয়াল-মুরগির প্রেমাখ্যান লেখাটাই উপযুক্ত মনে করেছে সে।
আপনি খুব ভালো পয়েন্টগুলো ধরেছেন। কিন্তু পুরো লেখাটাই তো সুড়ুত্ সুড়ুত্, আসলে ধরবেন কি করে।
ইন ফ্যাক্ট কোন একখণ্ড সহজ সরল উত্তর করতে পারে নাই সে এই ছবির মোটিভেশানের। একবার বলে নারীর সঠিক উপাখ্যান, তখন দেখা যায় সিনেমা ভর্তি নারীর গোলাবি অবমাননা। আবার বলে এটা আসলে সত্য উদ্ঘাটন না, মিথ্যা উদ্ঘাটন। সরাসরি বললেই পারতো যে, হ্যাঁ, এই ছবিতে আমি আমাদের মুক্তির সংগ্রামকে ক্ষুদ্রায়িত করে এক অলীক পাকি-বাঙালি প্রেমকে মহীয়ান করার মাধ্যমে একটি নতুন ছাগলামি উপহার দিতে চেয়েছি। সেটাই তো সিনেমাটার পরিষ্কার মোটিভেশান, নাকি?
কখনো ভাবি নাই এই কথা বলতে হবে, কিন্তু এইটার চেয়ে টোয়াইলাইট অনেক ভালো রূপকথা।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
টিউপু, আমি তিনটা পার্ট পড়েছি টোয়াইলাইটের, এইটা এমন কী জিনিস তা জানতে। আমার পাঠকসত্ত্বার উপরে যদি আস্থা রাখেন তো বলি, স্টেফানি খালা অনেক ভালো কল্পনাশক্তির লেখক এই মেহেরাপার কাহিনির সাথে জড়িতদের থেকে। এইটাকে ঐটার সাথে তুলনা দিতে গেলে টোয়াইলাইটই অপমান হয়ে যাবে! স্টেফানি খালা স্বপ্নে পাওয়া গল্প বলে চালাইতে চাইলেও অনেক জায়গা থেকেই কাহিনির আইডিয়া পেয়েছেন শিওর।
কিন্তু আর যাই হোক, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কল্পনা চলে না! বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম কোন ভীর-জারা প্রকল্প না, যা উপমহাদেশের নামী তারকা টেনে এনে আর বড় বড় বোলচাল দিয়ে
পাবলিসিটি দিবে। উদ্ভট পোশাক, বাজে ডায়ালোগ আর বিকৃত রুচির মনগড়া ইতিহাস ইম্পল্যান্ট করে দেবার কারচুপি ভালো সিনেমাটোগ্রাফি বা নামী তারকা দিয়ে ঢাকা যায় না তা দেখাই যাচ্ছে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
; এই লাইন্টা খাস করে রুবাইয়াতের জন্য
"মুক্তি যুদ্ধ কোলবালিশ ও না যে ঠ্যাঙ্গের চিপায় রাইখা পাকি সোনা কল্পনাইবেন" ----টান দিয়া ঠেং ছিড়া ফালাইমু
মাহফুজ খান
দিব্য চোখে দেখতে পাই উত্তর প্রজন্ম আমাদের মাদারচোদ বলে গালি দিচ্ছে এইসব পাকিসোনাচাটা শুয়োরের বাচ্চাদের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করার অপরাধে।
একাত্তর পরবর্তী দৃষ্টিভঙ্গি নাহয় বুঝা গেলো অনুদার ছিলো, কিন্তু এই দুই হাজার এগারো'তে এসেও কি তার কোনো পরিবর্তন হয়েছে? উদ্ধৃত করছি "মেহেরজান" সংক্রান্ত অন্য একটি লেখা থেকে।
রুবাইয়াত হোসেনের জন্য শুভকামনাই থাকলো। থাকলো এই জন্য যে এখনকার দিনে সুসান ব্রাউনমিলার আর লিখবেন না যে "একাত্তরে তো বটেই বরং দুই হাজার এগারো সালে এসেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার নারীরা যথেষ্ট গুরুত্বসহকারে অসম্মানিত হয়, এমনকি একজন 'বীরাঙ্গনা গবেষক' নারীর হাতেও!"
২০০৫ সালে বীরাঙ্গনাদের কথা ইতিহাস বই থেকে সরিয়ে ফেলাই চূড়ান্ত অবহেলা নয়। বরং বীরাঙ্গনাদের অবহেলিত অবস্থানকে এই দুই হাজার এগারো সালে চূড়ান্ত থেকে মহাচূড়ান্ত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার পেছনে যার অবদান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনি হলেন রুবাইয়াত হোসেন এবং তার ফ্যান্টাসি "মেহেরজান"।
হুমম, বিরাট সমস্যার কথাই বটে! আচ্ছা, রুবাইয়াত হোসেন কি ইতিহাসবিদ নাকি সিনেমা নির্মাতা? তিনি কেবলমাত্র 'সংখ্যার ব্যাপক তারতম্যে'র কারণে যেখানে 'নির্ভরযোগ্য ইতিহাস লিখতে' সাহস করলেন না সেখানে তিনি কী করে নিজের মনের সম্পূর্ণ কাল্পনিক একটা কাহিনিকে ইতিহাসের সঙ্গে জুড়ে দিলেন? কেনো দিলেন?
হ্যাঁ, কিন্তু বেচারী নীলা কলঙ্কভীতিকে চ্যালেঞ্জ করেও পরিচালকের কলঙ্ক থেকে রেহাই পায় নি। পরিচালকের কাছে নীলার পরিচয় "খানেলাগা" হিসেবে। তো, সারা সিনেমাজুড়ে প্রতিবাদী নীলা অবশেষে কী পেলো? "যৌনময়ী" খেতাব, তাও পরিচালকের দ্বারা?
আমি নিজে একজন বালুচকে চিনি যার অবস্থান এখনও আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ঘোর বিপরীতে। তো এখন উপরের সমীকরণ অনুযায়ী তো এটাও বলা যায় যে একাত্তরে বালুচি'রাও আমাদের ওপর পাকিস্তানিদের আক্রমন সমর্থন করেছে সক্রিয়ভাবেই। অর্থাৎ, একাত্তরে বাংলাদেশের গণহত্যায়, ধর্ষণে ইচ এন্ড এভরি পাকিস্তানি সম্পৃক্ত।
প্রশ্ন হলো, এই "অপর"কে একজন পাকিস্তানি সৈন্য কেনো হতে হলো? 'ভালোবাসার গল্প' কি যুদ্ধরত একটি দেশের দুই যুগলকে ঘিরে বলা শাস্ত্রে নিষেধ আছে? নাকি এর পেছনের কারণটা এমন-
এখানে এসেই খসে পড়ে রুবাইয়াত হোসেনের প্রকৃত মুখোশ। বহুল পরিচিত এই ডায়ালগ। সে আসলে শান্তিকামী মানুষের বেশ ধরে পাকিস্তানিদের এ্যাপলজিস্ট। তার আসল ঝাণ্ডা হলো ইনিয়ে-বিনিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে, বীরাঙ্গনাদের 'প্রকৃত' সংখ্যা নিয়ে কটাক্ষ করা। তথ্য-প্রমাণের ধোঁয়া তুলে সেই সংখ্যাকে এমন একটা মানে নামিয়ে আনা যেখান থেকে দায়ী পাকিস্তানকে যুক্তির মারপ্যাচে ফেলে দায় থেকে চিরতরে মুক্তি দেয়া যায়!
দুঃখিত রুবাইয়াত হোসেন, বেটার লাক নেক্সট টাইম।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
শান্তি জিনিসটা খারাপ না, তবে মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি শব্দটা নেতিবাচক ছিলো, এটা এখনকার শান্তিকামীরা বোঝে না। তাই শান্তিকাম চরিতার্থ করার জন্য তাদের বালুচ ভাড়া করে আনতে হয়।
মুক্তিযুদ্ধে দুই জন নারী ধর্ষিতা হয়েছেন না দুই লাখ সেই হিসাবটা বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে কেন??? দুইজন নারীর সম্ভ্রম কি কিছুই না???? সম্ভ্রমহানির ঘটনা কি মিথ্যা??? রুবাইয়াত হোসেন আপনারে একদল আর্মি জোর করে ধরে ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে দিনের পর দিন গনধর্ষণ করলে মনে হয় এই ফাক'ই (পাকি) প্রেম উথলাইয়া উঠত না।
তার মানে আমরা যারা সারাদিন পাকি পোন্দাই তারা গোঁড়া?? আমারত মনে হয় বাংলাদেশে এখনও এই গোঁড়ারাই বেশি, এইটাত মনে হয় গোঁড়াদেরই দেশ, আপ্নে এইখানে কার বা... ফালান, ফাক'ইস্তানে চলে যাচ্ছেন না কেন?
এটা মনে হয় ভুল বললেন। পাকি গ্যাংব্যাংয়ে অনুৎসাহিত কেউ এরকম ছিনেমা বানাবে না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
শেয়ার মারলাম, যেই কয় জায়গায় পারি।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
দেশ থেকে আমার এক বন্ধু ফোনে জানাল তার বাপ নাকি যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের মেয়ে। আমেরিকায় ছিল। সেখানে হয়ত কোন পাকির সাথে......।।
সে মনে হয় "দ্যা পিয়ানিস্ট" টাইপের কিছু একটা বানায় ফেলতে চাইসিলো.. কিন্তু Wilm Hosenfeld যদি হাজার খানেকও থেকে থাকতো, তবু "শান্তিকামীতা" দিয়ে নাত্সী বাহিনী ঠেকানো যেত না।
তার মনে হয় ফুল মেটাল জ্যাকেট দেখা নাই।
মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্মের একজন নাগরিক হওয়ায় "উফফ মেক লাভ নট ওয়ার" বলতে পারছেন এত সহজেই। কিন্তু নিজেকে একাত্তরের এক বীরাঙ্গনার অবস্থানে বসিয়ে তিনি যদি চিন্তা করেন আজকে তাকে যদি কেউ ধর্ষণ করতে আসে তবে তিনি কোন "অহিংস" পথে তা আটকাবেন?
অবশ্য সিনেমার কাহিনি দেখে মনে হচ্ছে ধর্ষণকারী যদি পাকি হয় তাইলে তিনি নিজেই কাপড় খুলে কোমল পাকিসোনা মুখে নিতে বসে পড়বেন।
সেই ক্ষেত্রে তাকে কি বলে আখ্যা দেওয়া যেতে পারে?
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
আটকানোর দরকার কি? "মেক লাভ, নট ওয়ার!"
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ। জানি না কী বলবো... এগুলারে... ******
"মেহেরজান" চলচ্চিত্রটি আমি প্রথম দিনই সিনেমা হলে গিয়ে দেখেছিলাম। একটা সিনেমার আসলে বিতর্কিত হবার জন্যও কিছু গুনাবলি থাকা দরকার। কিন্তু "মেহেরজান" সিনেমাটি আসলে কোনো গল্পই হয়ে উঠেনি। আবারও হাতেনাতে প্রমান পেলাম ভালো সিনেমা মানে আসলে ভালো সিনেমাটোগ্রাফি না, কিংবা বিগ কাষ্টিং না...একটা ভালো সিনেমার জন্য দরকার ভালো একটা গল্প। "মেহেরজান" সেটা হতে ব্যর্থ।
আর হিমু ভাইয়ের লেখাটার সাথে সহমত।
ঘৃণায় এবং রাগে কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।
রুবাইয়াতের লেখাটিতে আর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী'র লেখার কমেন্টে priobhasini নামে একজনের ম্যাৎকার লক্ষ করুন। ইচ্ছে করেই সে এমন নিক নিয়েছে যা ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী'র নামের সাথে মিলে। শুধু আলুতে না, এমন ম্যাৎকার দেবার জন্য জায়গায় জায়গায় আরো অনেক ছাগুকেই এখন দেখা যাবে। একটু চোখ রাখুন, এদের চিনে রাখুন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
যুক্তিপাদীদের জন্য কোথাও দাড়ানো যাইতেসে না
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
এটার কথা বলতে আসছিলাম মাত্র, পাণ্ডবদা কমেন্ট করে ফেলেছেন। বাঘছাল গায়ে লাগালেও ম্যাৎকার তো চাপা দেওয়া যায় না।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
অসাধারন একটি লেখা।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
রুবাইয়াত হোসেনের কথাবার্তা একদম শর্মিলা বোসের মতো। শর্মিলা বোস যেমন
রুবাইয়াতও তেমনি বিচারের প্রশ্নে "বৈশ্বিক মানবতাবোধের ভাষাভঙ্গি" ইত্যাদি ধুয়া তুলে পাকিদের সাথে মিলমিশের আহবান জানিয়েছেন!
শর্মিলা বোসের পুনর্মিত্রতার ব্যবস্থাপত্রঃ
একাত্তরে ধর্ষণের ইতিহাস বিকৃতিঃ একটি পুনর্মিত্রতার ব্যবস্থাপত্র? -০১
একাত্তরে ধর্ষণের ইতিহাস বিকৃতিঃ একটি পুনর্মিত্রতার ব্যবস্থাপত্র? -০২
http://www.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=171091
আরেক জিনিস...
মেহেরজানের মুখ দিয়ে বলালেই কি আর সব সাদা হয়ে যায়?
বিদেশে পড়াশুনা করে রুবাইতেরা এরকম হাজারটা মেহেরজান বানাতে পারে, কিন্তু দেশের প্রতি তাদের ভালবাসার স্তরটা যে কোথায় তা আর গোপন রাখবে কিভাবে?
প্রথম আলোর এই লেখা রুবাইয়াত হোসেন নামের এই ফালতু পাকিছানার লেখা - আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। টেলিভিশনে ২০ সেকেন্ড তার ম্যাতকার শোনার দূর্ভাগ্য হয়েছে - ২০ সেকেন্ডের কথায় শতকরা ষাটভাগই ইংরেজী শব্দ।
শাহবাগের কাউকে টাকা দিয়ে লেখানো মনে হয়। দ্দী ...ণু?
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
বাংলার চে গুয়েবাড়া ফারুক মিয়াও হতে পারে। সে সামুতে জান লড়িয়ে দিচ্ছে মেহেরজানকে ধ্রুপদী চলচ্চিত্র বানাতে। দ্দীণূর খ্যাপগুলি ফারুক এভাবে খেয়ে লিলো? কে জানে!
কিছু পোলাপাইন আছে যারা একটা ডিএসেলার হাতে লয়া আব্বা-আম্মা-ভাই-বুইন-গার্লফ্রেন্ডের ২-৩টা ছবি তুইলা ফেসবুকে আপায়া নিজেরে ফটোগ্রাফার দাবী করে, ঠিক এমুনিই ২-৩ বছর বিদেশে পড়া-লেখা কইরা এই দ্যাশে আইসা কিছু ফকিন্নির বাল-ছাল পুলাপাইন এক্কেলে কড়া 'সুশীল' বইনা যায়। এই মহিলা হইলো এইরাম এক চিজ। এগো পেটে এক পেগ মাল পড়লেই এরা 'ফিলেন্থ্রপিস্ট' হয়া সারা দুনিয়ায় খালি শান্তি আর ভালুবাসা দেখে। কিন্তু যারা রাম পোন্দানি খাইছে তাগো বেদনা বোঝাটারে তারা এক্কেলে ক্ষেত & সহিংসতা মনে করে।
এইসব আবালরে ধইরা কইশ্যা জুতাপেটা করা দরকার। আমাদের দেশের, আমার জাতীর জন্মের ইতিহাস লয়া আমি কোনো নপুংশক, অসভ্য, আবাল সুশীলরে তার মন মতো ইতরামি করতে দিতে পারি না।
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
সবাইকে অনুরোধ করছি প্রথম আলোতে পরিচালকের লেখাতে মন্তব্য করার জন্য। অনেকেই এর পক্ষে মন্তব্য করছেন। যেটা পরিচালককে উৎসাহিত করবে।
/সৃাধীন মণন
লেখায় পাঁচ তারা।
মোহনা'
দারুণ জবাব। শেয়ার করলাম।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
পরিচালক বলতে চেয়েছে, যদি কেউ আমার বাবা মাকে খুন করে আর আমার বোনকে ধর্ষন করে তাহলে তাকে ভালোবাসতে সমস্যা কোথায়!? আমার বাবা মা মারা গেলে আর বোন ধর্ষিত হলে তো আর আমার অথবা খুনির কারোরই যৌনাঙ্গ খসে পড়ছে না। আর বাবা, মা, বোন বেঁচে থাকলেও তো তাদের সামনে ভালোবাসা সম্ভব হত না।
পরিচালক তীব্র শান্তিকামী! তার সেই কামের তাড়নার কিছুটা বহিঃপ্রকাশ এই সিনেমা।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
হিমু ভাই, অসাধারণ লিখা যেটা আশা করেছিলাম আপনার কাছে থেকে
আর ভাই অনার্য সঙ্গীত, যা লিখেছেন ব্যাপক মজা পাইলাম, আপনার এই মন্তব্যই আমার FB স্টাটাস দিলাম ।
--
কালো ও সাদা
বীরাঙ্গনাদের নিয়ে পড়াশুনা করে যদি এদেশের নারীর পাকিস্তানি সেনার প্রেমে পড়ার সিনেমা বানাবার প্রবৃত্তি হয়, তবে সেই পড়াশুনাকে ধীক্কার জানাই।
অবিলম্বে ছবিটি বন্ধ করা হোক।
/দিবালোক
ভাই দিবালোক, আপনি আমার মনের কথাটি বলে দিয়েছেন
কুটুমবাড়ি
রুবাইয়াতের কপাল ভালো যে, সে পাকিস্তানি ঔরসজাত হলেও জন্মাইছে বাংলাদেশে,
ভাবেন তো একবার যে সে ফিলিস্তিনি হইয়া যদি ইহুদী সঙ্গমের একটা কাহিনি রচনা করতো অথবা তার বাপের দেশ পাকিস্তানে, ইন্ডিয়ান দিয়া সঙ্গমের যৌন উদ্দিপক ফিল্ম বানায় শান্তিকামি ডায়লগ চোদাইত ???
পরেরদিন ই পত্রিকায় আসতো- চিত্রপরিচালকের লাশ উদ্ধার, শরিরে ভয়াবহ ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে......
আর ইরান হইলে ত কথাই নাই......পাথর চালান দিত শরিরের স্পর্শকাতর জায়গা দিয়ে।
কিছুটা অশ্লীল মন্তব্য হয়ে গেলো কিন্তু আমার অবস্থা মেহেরজানের মতোই, আবেগ সামলাইতে পারলাম না।
--
কালো ও সাদা
অট্টহাসির ইমো!
প্রথম যখন অনিন্দ্যের মারাত্মক লেখাটা পড়েছিলাম, দুঃখ পেয়েছিলাম। তারপরও মনে খুব ক্ষীণ আশা ছিল হয়ত প্রযোজকের ইগ্নোরেন্স/অসচেতনা থেকে ঘটনাটা ঘটে থাকতে পারে। ঐতিহাসিকে ব্যাকগ্রাউন্ডে প্রেমফেম নিয়ে এসে হজপজ করে ফেলেছে।
তারপর আস্থে আস্থে ব্যাকগ্রাউন্ড জানতে শুরু করলাম। শুভাশীষ পেপার-টেপার ঘেটে বোমা ফাটাতে শুরু করল… প্যাটার্নটা পরিস্কারভাবে ধরা পরল। কতটুকু চিন্তাভাবনা করে ব্যাপারটা করা হয়েছে। অ্যাপোলজিস্টদের সেই সুর, সেই চেনা ধোঁয়াসা সৃষ্টির প্যাটার্ন। সরকারের পেট্রোজানেশন কী কৌশলে আনা হয়েছে। চ্যানেল-আই, ‘কাল্ট’ পত্রিকা প্রথম-আলো!!! ধিক।
লেখা ভালো লাগল। আলু আসলেই গোল। আর পরিচালককে নিয়ে কিছু বললাম না। সবাই বলেই দিয়েছেন।
______________________________________
লীন
চলচিত্র টি দেখে খুবই কষ্ট পেয়েছি কারণ ছবিটি দেখে মনে হল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ যেন এমনি এমনি হইসে। আর মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা প্রেম করে গুন্ডামি করে ফটকামি করে ঘুরে বেরাইছে আর স্বাধীণতা জেন পাকি দের সাথে এদেশের নারীদের প্রেমের কারনে এসেছে। মহিলা মনে হই গাজা খেয়ে এই ছবি বানিয়েছে। ভাই অনার্য সঙ্গীত আপনার লেখাটি আমি FB Status হিশাবে দিলাম।
রুবাইয়াতকে কয়েকটা পাকি গিফট দেয়া দরকার। প্রেমের জয়জয়াকার ঘটিয়ে ইতিহাসের মাইলফলক হয়ে যাবেনে।
-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়
পরিচালক রুবাইয়াতের বক্তব্য = তার সপ্তকে ছাগুছানার ছায়ানট রাগিনী
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
উনার লেখার কিছু অংশ পড়েই এতো বিরক্ত লেগেছিল
আর পুরোটা পড়ার ইচ্ছে হয়নি।
এরা কেন এমন হয়?
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
কেন গো মেহেরজান ?
রুবাইয়াত সাহেবান মুক্তিযুদ্ধকালীন ধর্ষিতা নারীদের নিয়ে ব্যাপক পড়াশোনা করেছেন বলে জানলাম। এই বিষয়ে তার বেশকিছু লেখাজোখাও আছে শুনলাম। কিন্তু বস্তুতই অবাক হলাম তার জানাশোনা বা পড়াশোনার ব্যাপক খামতি দেখে। নিজে গবেষণা করেননি, বই পড়ে জেনেছেন, সেটা হতেই পারে, বই থেকে জানাটাও খারাপ কিছু না। কিন্তু কোন বই পড়ে জানছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ।
তো কোন বই পড়ে বীরাঙ্গনাদের সম্পর্কে তিনি জেনেছেন? নীলিমা ইব্রাহিমের "আমি বীরাঙ্গনা বলছি" থেকে। আগে কোনো একটা লিঙ্ক দেখেছিলাম যেখানে পরিচালিকা বলেছিলেন এই বইয়ের নির্দিষ্ট একটি পৃষ্ঠা নাম্বারের কথা, যেখান থেকে মূলত তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন। লিঙ্কটা খুঁজে পাচ্ছি না, পৃষ্ঠা নাম্বারটাও মনে নাই, তাই ক্রশচেক করতে পারছি না।
এখানে আমি একটু কনফিউজড হয়ে যাই, কারণ তিনি বইটির কোন খণ্ডের কথা বলছেন আমি জানতে পারি না। "আমি বীরাঙ্গনা বলছি" বইটির দু'টো খণ্ড প্রকাশ হয়েছিলো। তৃতীয় খণ্ড প্রকাশের কথা থাকলেও তা হয়নি। তবে পরবর্তীতে অখণ্ড সংস্করণ প্রকাশ পায়। আমি ধরে নিচ্ছি রুবাইয়াত অখণ্ড সংস্করণটার কথাই বলছেন...
এবার আসি নীলিমা ইব্রাহিমের "আমি বীরাঙ্গনা বলছি" বিষয়ে। একথা সত্য যে বীরাঙ্গনা বিষয়ে প্রথম উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ এটা। কিন্তু এর ভূমিকায় আমি পড়ি-
এই বইতে মূলত সেই সব বীরাঙ্গনার কথাই লেখা আছে, যারা দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও পাকিস্তানী সৈনিকদের সঙ্গে দেশত্যাগ করেন, এবং সংখ্যায় তারা মাত্র প্রায় ত্রিশ-চল্লিশজন!
তখন আমার প্রশ্ন জাগে, রুবাইয়াত বীরাঙ্গনাদের নিয়ে এত্ত বড় বড় থিসিস লিখে ফেলছেন, সিনেমা বানায়ে ফেলছেন, সেগুলো এই ত্রিশ চল্লিশজনের জবানীর উপর ভিত্তি করে! উনি নিজে গবেষণায় নামেননি, মাঠে যাননি, বই পড়ে জেনেছেন, জানতেই পারেন। উল্লেখ্য তিনি বীরাঙ্গনাদের সঠিক সংখ্যা নিয়ে বার বার প্রশ্ন করেছেন। তাহলে কি উনি ধরে নিয়েছেন এই ত্রিশ চল্লিশজনই বীরাঙ্গনা!
আমার জানামতে বীরাঙ্গনাদের নিয়ে সবচেয়ে ভালো গবেষণাটি করেছেন ডা. এম এ হাসান। তাঁর "যুদ্ধ ও নারী" বইটি এই বিষয়ে সবচেয়ে সমৃদ্ধ পুস্তক। কিন্তু রুবাইয়াতের নানান কথায় কোথাও এই বইটার নামগন্ধ খুঁজে পাই না। ধরে নিতে পারি এই পুস্তক উনি পড়েননি, অথবা পড়তে চাননি, অথবা পড়লেও এড়ায়ে গেছেন...
অথচ বীরাঙ্গনাদের নিয়ে কাজ করতে হলে আমার মনে হয় সবার আগে এই বইটিই পড়া উচিত।
কেন?
গোটা বইটা তো এখানে দেওয়া সম্ভব না... ফ্ল্যাপ থেকে শুধু কিছু অংশ কোট করি...
সাড়ে চার লাখ নির্যাতিত নারীর কণ্ঠ রুবাইয়াতের কানে বাজেনি... বেজেছে নির্দিষ্ট ত্রিশ চল্লিশজনের কথা... যারা পাকি সৈন্যদের সঙ্গে দেশ ছাড়তে চেয়েছিলো!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ছবিটা দেখা হয়নি। আর হবেও না। কিন্তু গল্পটা পড়া পড়া লাগছে। আমার মনে আছে, ১৯৯০ থেকে ১৯৯৮ সালের মধ্যে যায় যায় দিনের ভালোবাসা সংখ্যা প্রকাশিত হোত। এরই কোনো একটা সংখ্যায় মেহেরজানের গল্পটা অন্য কেউ লিখেছিলেন। এবং গল্পটা হুবহু এরকমটাই ছিলো। যে কেউ ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ সালের পাচটি ভালোবাসা সংখ্যা দেখলেই পেয়ে যাবেন। যায় যায় দিনের সমালোচনাও হয়েছিলো। প্রথম তিনটি গল্পের একটি ছিলো গল্পটি। যায় যায় দিনের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়ে যাবার অন্যতম কারণ ছিলো এটি।
ইন্টারেস্টিং! কারো কাছে সংগ্রহে থাকলে একটু কি চেক করে দেখবেন?
তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখন ও মুদ্রণ প্রকল্পের অধীনে ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৭ সালের মধ্যে সংগৃহীত ও প্রকাশিত হয় আট খণ্ডে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও দলিলপত্র। এটিই মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র আনুষ্ঠানিক তথ্যকোষ, যাতে এই নারীদের বিবৃতি আছে। মোট ২২৭ জনের মৌখিক জবানবন্দির মধ্যে ২৩ জন নারী। তাঁদের মাত্র ১১ জন যৌন নিপীড়নের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেছেন। এসব দলিলে একাত্তরে মেয়েদের ওপর ধর্ষণের নৃশংসতার কিছুটা আভাস পাই, কিন্তু তাঁদের প্রকৃত সংখ্যা সম্পর্কে কোনো ধারণা পাওয়া যায় না। সেনাশিবিরে সংঘটিত যৌন দাসত্বের পুরো চিত্রটিও এতে অনুপস্থিত। ফলে ১৯৭১ সালের নিপীড়িত নারীদের নির্ভরযোগ্য ইতিহাস লিখতে গিয়ে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় তাঁদের সংখ্যার ব্যাপক তারতম্য। সুসান ব্রাউনমিলারের অ্যাগেইনস্ট আওয়ার উইল: মেন, উইমেন অ্যান্ড রেপ, সিরাজুল ইসলাম ও মিয়া শাজাহান সম্পাদিত বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় জ্ঞানকোষ ও অন্যান্য দলিলপত্রের ভিত্তিতে ধর্ষিত নারীর সংখ্যা ৪০ হাজার থেকে আড়াই লাখ, গর্ভপাতের সংখ্যা ২৩ হাজার থেকে ৫০ হাজার এবং যুদ্ধশিশুর সংখ্যা ৪০০ থেকে ১০ হাজারের কোনো সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যানে আসতে না পারায় বিষয়টি অমীমাংসিতই থেকে যায়।
রুবাইয়াৎ আফায় তথ্যটা তাঁর পাকি হিরো ওয়াসিম ভাইকে জিজ্ঞেস করলেই তো বিষয়টি মীমাংসিত হয়ে যায়; গণ্ডোগোলের বছর কয়টা মুতা হইসে?
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
মেহেরজানের দায় ফরহাদ মগবাজারের স্কন্ধ থেকে সরিয়ে ফয়েজ আহমদ ফয়েজের স্কন্ধে চাপানোর আলুপেপারীয় ফন্দি, তাকে জন্মশতবর্ষে তালগাছে তুলছে এই জ্ঞানপাপীরা। আলুপেপারের কল্যাণে আজকে ফয়েজ আহমদ ফয়েজ আর হামিদ মিরই বাংলাদেশের জাতীয় বীর।
ফয়েজ আহমদ ফয়েজ বাংলাদেশ নিয়ে তিনটা কবিতা লিখেছে! আর কেউ পেরেছে এমন কত্তে? ওরে কে আছিস, ফয়েজ মিয়ার ভাস্কর্য বানা কারওয়ানবাজারে!
হাতটা আসল জায়গায়ই দিয়েছেন। ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ যেই হোক না কেনো, যার দায় তার ঘাড়েই থাকা উচিত। ফরহাদ মজহারের দায় ফয়েজের উপর গছিয়ে দেয়াটা মোটেই ভাল কোনও কাজ না। প্রথম আলো অবশ্য এজাতীয় কাজ ভালোই করতে পারে।
এইখানে একটু কথা আছে। রুবায়েত বা প্রথম আলো ফয়েজকে নিয়ে যা মন চায় তাই করুক, ফয়েজ তা জানতেও পারছেন না। আমার জানা মতে তিনি নিজে কখোনোই নিজেকে বাংলাদেশের জাতীয় বীর দাবি করেননি। তিনি এইজন অসাম্প্রদায়িক বামপন্থী কবি ছিলেন, দ্যাটস অল। শেখ মুজিবের বন্ধুও ছিলেন। তিনি কোনও অপকর্ম করে থাকলে তার জন্যে আমরা ঠাট্টা করতে পারি কিন্তু রুবায়েত বা আলু পেপারের আকামের জন্যে আমি ফয়েজকে নিয়ে মশকরার করার পক্ষে না।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
নতুন মন্তব্য করুন