ফরাসি বিস্ময়

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: মঙ্গল, ২৬/০৪/২০১১ - ১১:৪৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সুনীল গাঙ্গুলির কল্যাণে ফ্রান্স আমাদের কাছে ছবির দেশ। কবিতার দেশ। সেইদেশে সঙ্গমবান্ধব লোকজন বাস করে, তারা পান করে সুস্বাদু ওয়াইন, লেখে কবিতা, আঁকে ছবি। যা কিছু ভালো, তার সঙ্গে ... । ফ্রান্সের আছে আইফেল টাওয়ার, আছে র-কে হ্র বলা লোকজনে গিজগিজ প্যারিস, লুভ জাদুঘর, সেখানে মোনালিসা। সভ্যতা ভব্যতায় ফ্রান্স আমাদের চেয়ে অনেক ওপরে। সেই ফরাসিদের বিস্মিত করে দিতে পেরেছি আমরা। এ আমাদের কপালে আরেকটি রাজতিলক। খামারের ইংরেজিতে যদিও বিস্মিত করে দেয়া কথাটার একটা দুষ্টু অর্থ আছে, তবে অত কাবিলি আমরা এখনও হতে পারিনি।

ফরাসী রাষ্ট্রপতির বিশেষ দূত মাহতাঁ ইর্শ আমাদের কায়কারবার দেখে গোটা ফরাসি জাতির হয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে গেছেন। আলেকজান্ডারের পর আর কেউ এইভাবে বিস্মিত হতে পারেনি। ইর্শের সেলুকাস নেই বলে তিনি আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেই যা বলার বলে গেছেন [১]।

ইর্শ বলেছেন,

১৮ মাস আগে আমি এখানে এসেছিলাম। তখন সরকার দারিদ্র্র্য দূরীকরণে কর্মরত গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক ও এ ধরনের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে প্রশংসাসূচক কথা বলেছিলো। তবে বিস্ময়কর বিষয় হলো ১৮ মাস পরে তারাই নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে গেছে।

বিস্ময় প্রকাশ সেরে ইর্শ আসল বার্তাটি দিয়েছেন। বলেছেন,

ফ্রান্সের কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে 'সামাজিক ব্যবসায়' বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

কিছু ভুল বোঝাবুঝির কারণে তা ঝুঁকিতে পড়ুক - এমনটি ফ্রান্স সরকার চায় না বলে মন্তব্য করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত।

ফ্রান্সের একটি বড় প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে সামাজিক ব্যবসায় আগ্রহের রকমসকম দেখে ফরাসি না হয়েও আমি বিস্মিত হয়েছি। আমার এই পোস্টের বাকি অংশ সেই বিস্ময়েরই প্রতিধ্বনি।

প্রতিষ্ঠানটি ভিওলিয়া ওয়াটার। ফ্রান্সের অন্যতম শক্তিশালী এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। গ্রামীণ গোষ্ঠীর একটি প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস এর সঙ্গে যোগ দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করেছে গ্রামীণ ভিওলিয়া লিমিটেড। দৈনিক প্রথম আলো প্রচণ্ড আহ্লাদের সঙ্গে এর ওপর খবর করেছে ২৭ নভেম্বর, ২০১০ সালে [২]। তারা শিরোনাম লিখেছে, "গরীব মানুষের বিশুদ্ধ পানি গ্রামীণ ভিওলিয়া"।

খবর পড়ে জানতে পাই,

  • ২০১২ সালের মধ্যে এক লাখ মানুষকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের পরিকল্পনা করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
  • দাউদকান্দির গোয়ালমারি ও পদুয়া ইউনিয়নের সাত হাজার পরিবারের মধ্যে দুই হাজার পরিবার রিপোর্টকালীন সময়ে গ্রামীণ ভিওলিয়ার গ্রাহক ছিলো।
  • ডিলারের কাছ থেকে দৈনিক ১০ লিটার পানি নেয় বেশির ভাগ অধিবাসী।
  • সামর্থ্যবান দু-তিনটি পরিবারও ঘরে পানির সংযোগ নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রাথমিকভাবে ছয় থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে।
  • ১০ লিটার পানি গ্রামবাসীর কাছে আড়াই টাকায় বিক্রি করে ডিলার ৫০ পয়সা কমিশন পান। বেশ কয়েকজন ডিলারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা পানির কমিশন বাবদ মাসে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা উপার্জন করেন।
  • ১৯টি কলের প্রতিটির জন্যে একজন ডিলার রয়েছেন।

    এবং, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ:

  • গ্রামের গরিব মানুষকে কম দামে পানি দিতে আপাতত গ্রামীণ ভিওলিয়াকে প্রতি লিটার পানির জন্য বড় রকমের ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। তাই মূল প্রকল্পের পাশে আরেকটি প্রকল্প স্থাপন করা হচ্ছে, যেখান থেকে বড় পাত্র ভরে পানি শহরাঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হবে। ওই মুনাফা থেকে গ্রামের মানুষের পানি বিক্রিতে ভর্তুকি দেওয়া হবে।
  • গ্রামীণ ভিওলিয়ার লক্ষ্য ছিল গোয়ালমারী ও পদুয়ার সাত হাজার পরিবারের প্রত্যেকে দৈনিক খাওয়া ও রান্নার জন্য ৩০ লিটার পানি কিনবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ শতাংশ অধিবাসী দৈনিক ১০ লিটার করে পানি নিচ্ছে।
  • উদ্যোক্তারা জানান, পানি সরবরাহের জন্য ব্যবহূত উন্নতমানের পাইপ আনা হয়েছে ভারত থেকে। পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র আনা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও ফ্রান্স থেকে।

এই তথ্যগুলো আমাদের অনেকের মনেই প্রবল গর্ব ও আনন্দ সৃষ্টি করতে বাধ্য। ঐ খবরটিতে একমাত্র কমেন্টটিতে এক পাঠক লিখেছেন, "GOOD----VERY GOOD--WE WILL GO FORWARD--" । বিশ্বে পানি বিরাষ্ট্রীকরণের লাইনে সবচেয়ে বড় কাণ্ডারি ভিওলিয়া এসে আমাদের গরীব গুর্বোদের সস্তায় পানি পিলাচ্ছে, এতে অনেকের বিবেচনায় আমাদের সম্মান হয়তো বেড়েছে। ইউনূস যেমন নোবেল জিতে বলেছিলেন, জাতির উচ্চতা আজ দশফুট হয়ে গেছে। ভিওলিয়া গ্রামীণের সাথে হাত মেলানোয় জাতির উচ্চতা আরো ইঞ্চি দেড়েক বাড়ার দাবি কেউ করলে অবশ্য আমার এই পোস্টের পেছনে যে বিস্ময় কাজ করছে, তা বাড়বে না।

প্রথম আলোর লেখকপরিচয়হীন এই আর্টিকেলটিতে যে উল্লাস ব্যক্ত হয়েছে ভিওলিয়ার আগমনে, সেটা কেন যেন খুব একটা সংক্রামক নয়। যেমন দেখতে পাই, এই পানির মূল্যের একটা বড় অংশই চলে যাচ্ছে পাইপের কল্যাণে ভারতে (বাংলাদেশের ফুড-গ্রেড পাইপের ওপর ইউনূস বা ভিওলিয়া, কারোই ভরসা নেইকো) আর বিশুদ্ধকরণ যন্ত্রের সুবাদে যুক্তরাজ্য-জার্মানি-ফ্রান্সে। আমাদের দেশে আমাদের প্রধান উৎপাদন যন্ত্র হচ্ছে আমাদের শিশ্ন ও যোনি, আমরা বাকি দুনিয়ার জন্য ভোক্তা আর কামলা উৎপাদন করতে জানি শুধু, পাইপও বানাতে পারি না, বিশুদ্ধকরণ যন্ত্রও না। ভাগ্যিস ভিওলিয়া এসে আড়াই টাকা দিয়ে ১০ লিটার পানি খাওয়াচ্ছিলো গ্রামের ঐ গরীবগুলোকে, নইলে কী যে হতো!

তারপরও আমার খটকা দূর হয় না। কারণ এই গরীবগুর্বোদের পানি কেন কিনে খেতে হবে, কেন রাষ্ট্র তাদের জন্য আর্সেনিকমুক্ত পানির সস্তা কোনো সরবরাহ নিশ্চিত করবে না, এ প্রশ্নের উত্তর পাই না। ঢাকা শহরে বিত্তবানেরা ঘরে বসে ১০০০ লিটার পানি পায় ৬ টাকা ৩৪ পয়সায়[৩], আর দাউদকান্দির গোয়ালমারি আর পদুয়া ইউনিয়নের গাঁইয়ারা কেন ১০০০ লিটার পানি ২৫০ টাকা দিয়ে কেনে গ্রামীণ ভিওলিয়ার কাছে, এ এক রহস্যই মনে হয়।

আমার পাপী মন আমাকে বলে, রাষ্ট্রের ব্যর্থতাই বাংলাদেশে গ্রামীণ ও ভিওলিয়ার ব্যবসার প্রথম স্তম্ভ। রাষ্ট্র নিজে গোয়ালমারি আর পদুয়ার সাত হাজার পরিবারের ব্যাপারে উদাসীন।

আর ভিওলিয়া যদি এই গরীবগুর্বোদের পানি পিলিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে চায়, ভর্তুকির টাকা তাকে উসুল করতে হবে নগরাঞ্চলের সুপেয় বোতলজাত পানির মার্কেটে দখল নিয়ে। যেহেতু নামের গোড়ায় গ্রামীণ আছে, আর গ্রামীণ মানেই গরীবের মাইবাপ, কাজেই গরীবের নাম বেচে কিছু কর-সুবিধা বা শুল্ক-সুবিধা হয়তো পেতে পারে প্রতিষ্ঠানটি [নিশ্চিত নই]। অর্থাৎ, শহরে আমাদের অন্যান্য বোতলজাত পানির দেশীয় উদ্যোক্তাদের তুলনায় এই সামাজিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানটি এসব সুবিধার কারণে এগিয়ে থাকবে। তার ওপর তারা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পানি ব্যবসায়ী, ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা তো তাদের থাকবেই। গোয়ালমারি আর পদুয়ার আর্সেনিক-কবলিত মানুষদের দেখিয়ে দেশের নগরাঞ্চলের সুপেয় পানির মার্কেটে নিজের সত্যিকার রূপ নিয়েই আবির্ভূত হতে পারে এই পানিবণিক প্রতিষ্ঠানটি। আমার পাপী মনে আরেকটা উদাহরণ কেন যেন বেয়াদবের মতো উঁকি দিলো। গরীব পল্লী নারীর ভাগ্যোন্নয়নের জন্যে টেলিনরও তো গ্রামীণফোন হিসেবে বাংলাদেশে এসেছিলো। গরীব পল্লী নারীর ভাগ্যের আরেকবার উন্নয়ন ঘটাতে ভিওলিয়া ওয়াটারের বাংলাদেশের পানির বাজার দখল করতে সমস্যা কী?

ইউনূস অবশ্য বলেছেন, সামাজিক ব্যবসাকে কর-সুবিধা নিতে হবে না। তিনি ভারতের মুম্বাইতে গিয়ে ভারতীয়দের বুঝিয়েছেন, তাদের দেশে সামাজিক ব্যবসার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। খাতগুলো চিহ্নিত করতে গিয়ে তিনি পানির কথা বলতে ভোলেননি [৪]।

আমার পাপী মন আবারও দুয়ে দুয়ে চার মেলায়। নোবেলজয়ী ইউনূস দেশে দেশে পানি নিয়ে সামাজিক ব্যবসার কথা বলছেন, আবার হাত মিলিয়েছেন দুনিয়ার সবচেয়ে বড় পানিবণিক ভিওলিয়ার সাথে। পানি নিয়ে বিশ্বের প্রথম সামাজিক ব্যবসা শুরুও করেছে ভিওলিয়া।

ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের বিস্ময়ের কারণটা আস্তে আস্তে স্পষ্ট হয়। ইউনূসকে নিয়ে ফরাসি উদ্বেগের মর্মমূলে যে পানি আর ভিওলিয়ার কিছু শিকড় আছে, এমন একটা অসংস্কৃত সন্দেহ জাগে।

কিন্তু আমার বিস্ময় কাটে না। কারণ খোদ ফরাসি মুল্লুকের রাজধানী প্যারিসেই দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা পানি বাণিজ্য ঘুচিয়ে দিয়েছেন প্যারিসের মেয়র। প্যারিসের আদ্ধেকটায় পানি সরবরাহ করতো ভিওলিয়া, আর গোটা ফ্রান্সের বেসরকারি পানির ব্যবসার ৫৬%-ই তারা নিয়ন্ত্রণ করে [৫]। ফ্রান্স কয়েক শতক ধরেই পানি সরবরাহের ব্যবসাকে বিরাষ্ট্রীকরণ করেছে, ফলে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দুটি পানিবণিক প্রতিষ্ঠান, ভিওলিয়া আর সুয়েজ যে ফরাসি, এতে বিস্ময়ের কিছু নেই। খোদ প্যারিসীয়রাই যেখানে খরচ বাচাতে ভিওলিয়ার হাত থেকে নিষ্কৃতি নিয়েছে, আর প্যারিসখেদানো ভিওলিয়া আমাদের গোয়ালমারি আর পদুয়া ইউনিয়নে এসে ঠাঁই নিলে বুকটা গর্বে একটু ফুলে ওঠে না, বলেন?

বিশ্বের সাড়ে নয় কোটি মানুষের সাথে পানির ব্যবসা করা ভিওলিয়া কিন্তু ক্রমশ লাভ হারাচ্ছে, তাই তারা ক্রমশ ঝুঁকে পড়ছে এশিয়ার দিকে [৬]। বাংলাদেশে গরীবকে পানি পিলাতে তারা এর মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। এশিয়া তাদের বাণিজ্য-প্রসারণে আমাদের নোবেলজয়ী ড. ইউনূস যে একজন সহায়ক শক্তি, তা নিয়ে সন্দেহ থাকে না। তিনি টেলিনরেরও বন্ধু ছিলেন। ফ্রান্স যে দূতাবাসের বাইরেও দূত পাঠিয়ে খবরাখবর নেবে, এ আর বিচিত্র কী?

ছবির দেশ, কবিতার দেশ ফ্রান্সের বিশেষ দূত বাংলাদেশে এসে বিস্মিত হয়ে পড়েছেন বলে অনেকেই উদ্বিগ্ন। ফ্রান্সের অপমান সইতে পারেন না, এমন দুয়েকজন বন্ধু আমার আছেন। তাঁদের একজন গিমে জাদুঘরের প্রত্ন নিদর্শনের গাজোয়ারির সময়ও বাংলাদেশের মানুষের মুণ্ডপাত করেছিলেন। প্যারিসে প্রদর্শিত হতে না পেরে আমরা কত হাজার বছর পিছিয়ে ঐ প্রত্ন নিদর্শনের যুগেই ফিরে গিয়েছি, এমন ভর্ৎসনা তিনি আকচার করতেন। এবার তাঁর জন্যে একটি ছবি, ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া।

সঙ্গে একটি গল্প ফ্রি। সম্রাট আকবর তার কৃপাপ্রার্থীদের অনেকের স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করতেন। সুন্দরী নারীর প্রতি তাঁর একটা স্নেহ কাজ করতো আর কি। এ নিয়ে সম্রাটের নেকনজরবন্দি অনেক পুরুষই ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাঁদের প্রতি আকবরের বার্তা ছিলো, হাতির মাহুতের সাথে বন্ধুত্ব করতে গেলে বাড়ির দরজা উঁচু করতে হয় [বানিয়ে বলছি না, Abraham Eraly-র The Last Spring এ পাবেন]। ছবিতে এরকম একজন হাতির মাহুতকে দেখতে পাচ্ছি। বন্ধুত্ব থাকলেও যে গোয়া মেরে দেয়া যাবে না, এমনটা ফরাসি শাস্ত্রে নেই। তাই ফরাসি বিস্ময় নিয়ে হৃদরোগে ভোগা বন্ধু আমার, সেরে উঠুন।

পুনশ্চ: ১৮ মাসের মধ্যেই সরকারের সাথে ইউনূসের লাঠালাঠি দেখে ইর্শের বিস্মিত হওয়া স্বাভাবিক। সারকোজি আর গাদ্দাফি ২০০৭ এর জুলাইতে পরস্পরের সাথে ঊষ্ণ বন্ধুত্ব স্থাপন করেছিলেন [৭], আর এই ২০১১তে এসে গাদ্দাফির পাছায় মিসাইল দাগছেন সারকোজি। বিবাদে জড়িয়ে পড়তে সারকোজিরই যেখানে ৪৫ মাস সময় লাগে, সেখানে গরীবগুর্বোর দেশ বাংলাদেশের সরকার ১৮ মাসের মধ্যে চুলোচুলি শুরু করে দিলে বিস্মিত না হয়ে উপায় আছে?


[১] ইউনূস বিষয়ে হুমকি নয়, সহযোগিতা: ফ্রান্স

[২] গরিব মানুষের বিশুদ্ধ পানি গ্রামীণ ভিওলিয়া

[৩] ওয়াসার পানির মূল্যহার

[৪] India Has Huge Potential in Social Business, Muhammad Yunus

[৫] Paris takes back public control of their water services from Veolia and Suez-Lyonnaise des Eaux!

[৬] Veolia Environnement’s Profits Shrink as Communities Across the Globe Remunicipalize Water Contracts and Company Fails to Secure Long-Term Leases

[৭] WikiCables: Sarkozy peddles a reactor to Gaddafi


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

এবং বোনাস হিসেবে নিওলিবারেলদের পীর বিশ্বব্যাংক আইএমএফ বলছে সবকিছু প্রাইভেটাইজ করে দাউ!

ফাহিম হাসান এর ছবি

প্রাইভেটাইজ করলে সমস্যা কি? সরকারের থেকে বেসরকারী প্রতিষ্ঠান যদি কোন বিষয়ে দক্ষ হয় তা হলেও কি একই কথা বলবেন?

হাসিব এর ছবি

দক্ষতা কী দিয়ে মাপবেন?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

বাংলাদেশের সাপেক্ষে? মাপামাপি করে লাভ নাই। সরকারী মাল, হয় এমেনে খাবে নাইলে অমনে যাবে, দরিয়ায়।

ফাহিম হাসান এর ছবি

@ ধুসর গোধূলিদা: গড়াগড়ি দিয়া হাসি তবে এইটা কিন্তু বেসরকারীকরণের পক্ষেই গেল

ফাহিম হাসান এর ছবি

@ হাসিব ভাইয়া: দক্ষতা মাপা কঠিন কিছু না। একটা সহজ উদাহরণ দিচ্ছি-

ধাপ: হিসাব ১

পর্যটন খাতে সরকারের বাৎসরিক খরচ
পর্যটন খাতে বেসরকারী প্রতিষ্টানের বাৎসরিক খরচ

ধাপ: হিসাব: ২

পর্যটন খাতে সরকারের বাৎসরিক মুনাফা
পর্যটন খাতে বেসরকারী প্রতিষ্টানের বাৎসরিক মুনাফা

ধাপ: হিসাব ৩

প্রতি ১ টাকা খরচে সরকারের লাভ
প্রতি ১ টাকা খরচে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের লাভ

যদি,

প্রতি ১ টাকা খরচে সরকারের লাভ < প্রতি ১ টাকা খরচে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের লাভ

তাহলে আপাতভাবে বলা যায়: বেসরকারী প্রতিষ্ঠানটি বেশি দক্ষ।হিসাবটা একটা নির্দিষ্ট স্থানের জন্য করলে স্থান বিষয়ক পরিসংখ্যানগত ত্রুটি এড়ান যাবে। যেমন: সুন্দরবনের/ কক্সবাজারের কথা ধরুন। পর্যটনের সাথে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের তুলনা। অথবা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের জন্য গড় করাও যেতে পারে।

সবচেয়ে বড় কথা প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা মাপার অনেক সূচক অলরেডি আছে যা অনেক চলক নিয়ে গণনা করে।। আমি শুধু একটা বেসিক কাঠামো দিলাম।

হিমু এর ছবি

এভাবে কি হিসাব করা সম্ভব হবে? আপনি নিজেই কিন্তু ভর্তুকির প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। সরকার ভর্তুকি দিলে তার মুনাফা কমে যাবে, সঙ্গে কমবে দক্ষতা। কাজেই দক্ষতার প্রশ্ন তুলে যদি আমরা সবকিছু বিরাষ্ট্রীকরণ করি, মুনাফার ম্যাক্সিমাইজেশন হবে, সেবার অপটিমাইজেশন নাও হতে পারে।

ফাহিম হাসান এর ছবি

এইটা আমি খুব সাধারণ একটা হিসাব দিলাম। দক্ষতা মাপার চলক নিয়ে বাণিজ্য বিভাগে প্রচুর কাজ হয়েছে। ওদের যে কোন একটা ইনডেক্স ব্যবহার করলেই হয়।

আর পর্যটন খাতে তো ভর্তুকির কথা বলছি না। কারণ পর্যটন নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্য/ সেবা না। সরকার ভর্তুকি দিতে বাধ্য না।

আর একটা ব্যাপার। যখন সর্বোচ্চীকরণ করা হয় তখন কিন্তু সীমাবদ্ধতা (constraint) খালি অর্থনৈতিক না। যেমন:

Ramsey Inverse Elasticity Rule বলে - যেগুলো পণ্য price inelastic (মূল্য অস্থিতিস্থাপক:চাল, নুন ) সেগুলোতে কর আরোপ করা উচিত (efficiency প্রশ্নে)। কিন্তু এতে রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতা (political constraint) আছে। নির্বাচিত সরকারকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিবে।

আবার crawford keen smith (2010) তাদের বইয়ে value added and excise tax বসানো নিয়ে গবেষণার উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছেন। সেখানেও হিসাব বলে - খাবারের উপর কর বাড়ানো বেশি যৌক্তিক। কিন্তু এইটা বাস্তব সম্মত না। কারণ সরকারকে সব দিক বিবেচনা করতে হয়। এমন করলে মাইর খাওয়ার সম্ভাবনা বিশাল।

এখন কথা হল সামগ্রিক কাঠামো (general equilibrium) বিবেচনায় সরকার পানির পিছে কতটুকু খরচ করতে পারে?

আপাত বেকার অর্থনীতিবিদগণ, যেমনঃ আলি আকবর যদি বনলতা সেনের পাশাপাশি এবং আনু মুহাম্মদ যদি তার কুমিরের ছানা তেল-গ্যাসের পাশাপাশি এই বিষয়ে গবেষণা করতেন তাহলে বোধহয় আমাদের আবুল মাল এডিপির সাইজটা ঠিক মত সামলাইতে পারতো।

হিমু এর ছবি

আমি বলবো, যতটুকু করা প্রয়োজন। যদি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্যে পেয় পানি সরবরাহের জন্য বাড়তি খরচ হয়, সেই খরচটা অপেক্ষাকৃত বিত্তবানের মধ্যে ইন্টার্নালাইজ করা যেতে পারে। পানি ইন ফ্যাক্ট চালের চেয়েও বেশি ইনইলাস্টিক, তাই না?

ফাহিম হাসান এর ছবি

ঠিক

আরিফ জেবতিক এর ছবি

বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে পারলে স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় কমবে। এদেশের রোগবালাইয়ের বড় একটা অংশই পানিবাহিত। আপনি যদি জনস্বাস্থ্য ঠিক রাখতে পারেন, তাহলে উৎপাদনশীলতা বাড়বে, চিকিৎসাখাতের ভর্তুকিতে চাপ কম পড়বে, এবং আরো অনেক সামাজিক ব্যাপারেও এর প্রভাব থাকবে। এসব বিষয়গুলোকে বিবেচনায় নিলে আমার মনে হয় খাবার পানিতে ভর্তুকিকে অর্থনৈতিক ভাবে লাভজনক হিসেবেই চিহ্নিত করা যাবে।

ফাহিম হাসান এর ছবি

বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে পারলে স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় কমবে। এদেশের রোগবালাইয়ের বড় একটা অংশই পানিবাহিত। আপনি যদি জনস্বাস্থ্য ঠিক রাখতে পারেন, তাহলে উৎপাদনশীলতা বাড়বে, চিকিৎসাখাতের ভর্তুকিতে চাপ কম পড়বে, এবং আরো অনেক সামাজিক ব্যাপারেও এর প্রভাব থাকবে।

একমত।

এসব বিষয়গুলোকে বিবেচনায় নিলে আমার মনে হয় খাবার পানিতে ভর্তুকিকে অর্থনৈতিক ভাবে লাভজনক হিসেবেই চিহ্নিত করা যাবে।

একমত নই। অর্থনৈতিকভাবে ভর্তুকি লাভজনক নয়। এই ক্ষেত্রে লাভটা তাই অন্যভাবে করাই শ্রেয়। বাজার তৈরি করুক ও কড়া নজর রাখুক - অন্তত শর্ট টার্মে। আর লং টার্মে মানব সম্পদে বিনিয়োগ করুক। ভালো প্রকৌশলী বানাক।

ফাহিম হাসান এর ছবি

লেখাটা পড়ে আমি নিজেও বিস্মিত। এরকম অনুমোদন দেওয়ার আগে সরকার কোন যাচাই-বাছাইমূলক গবেষণা করেছে কিনা খুঁজে দেখা দরকার।

ঢাকা শহরে বিত্তবানেরা ঘরে বসে ১০০০ লিটার পানি পায় ৬ টাকা ৩৪ পয়সায়[৩], আর দাউদকান্দির গোয়ালমারি আর পদুয়া ইউনিয়নের গাঁইয়ারা কেন ১০০০ লিটার পানি ২৫০ টাকা দিয়ে কেনে গ্রামীণ ভিওলিয়ার কাছে, এ এক রহস্যই মনে হয়।

১। কোন পণ্যের মূল্য দুই স্থানে দুই রকম হতেই পারে। ঢাকা নগরের মানুষের সংখ্যা বেশি। তাই মাথাপিছু স্থির মূল্য (fixed cost) কম। তাই পণ্যের/সেবার দামও কম।

২। ঘনবসতি ও লোক্সংখ্যার জন্য ঢাকায় ১০০ মানুষকে ১ লিটার পানি সরবরাহ করতে যে খরচ (variable cost), অন্য কোন গ্রামে সেই খরচ বেশি হওয়ার কথা।

৩। সরকার হয়ত পানির আসল যে খরচ তার থেকে কম দামে সরবরাহ করছে। ভর্তুকি দিচ্ছে। কোন বেসরকারী সংস্থা তো আর তা দিবে না। তারা মুনাফা করবে। তাতে আপাত কোন সমস্যা নেই যতক্ষণ না পর্যন্ত তারা একচেটিয়া সুযোগ পাচ্ছে।

ফাহিম হাসান এর ছবি

উপ্রের উত্তরগুলো দাউদকান্দির জন্য সত্যই সত্য তা আমি বলছি না। আমি স্রেফ সম্ভাব্যতার কথা বললাম।

হিমু এর ছবি

তাহলে তো গ্রামেগঞ্জে সরকারের কোনো চিকিৎসা পরিষেবাও থাকার কথা না, কারণ গ্রামে চিকিৎসার্থীর কাছে চিকিৎসা পৌঁছে দেয়ার মার্জিনাল কস্ট শহরের তুলনায় অনেক বেশি হবে। সাত হাজার পরিবার বা ৩৫,০০০ মানুষের কথা রাষ্ট্র উপেক্ষা করে যদি তাদের কোনো বেসরকারী সংস্থার ভোক্তায় পরিণত করে, তাহলে দায়টা তো রাষ্ট্রের কাঁধেই পড়ে। ঢাকা শহরের লোক পানিতে সরকারি ভর্তুকি পেলে গোয়ালমারি আর পদুয়া ইউনিয়নের লোক কোন যুক্তিতে বাদ পড়বে?

ফাহিম হাসান এর ছবি

আপনার প্রশ্নেই লুকিয়ে আছে উত্তর। হাসি

একটা জিনিস খেয়াল করেন -
পণ্য/ সেবা সরবরাহ আর পণ্যের/সেবার গুণ আলাদা বিষয়।

(ক) ঢাকা জেলায় সরকারী হাসপাতাল গড়ে যে মানের চিকিৎসা সেবা দেয়, বান্দরবানের সরকারী হাসপাতাল কি সেই মানের সেবা দেয়?

না।

(খ) ঢাকায় মিউনিসিপালিটি নাগরিকদের যে সুবিধা দেয় (যেটুকুই দিক) তার অনেকগুলো প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাবেন কি?

না

এটা সম্ভবও না। নীতিগতভাবে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করা উচিত। কিন্তু সম্পদের পরিমাণ তো সীমিত। সরকারের রাজস্ব তো নির্দিষ্ট (ধরেন বাৎসরিক আয়) ও অপ্রতুল। এইটা এখন ভাগ হবে বিভিন্ন খাতে।

government expenditure

তাই খরচ করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে নেট রিটার্ন পজিটিভ আসে।

সরকারের লক্ষ্য - সামগ্রিক কল্যাণ সর্বোচ্চিকরণ (net welfare maximization)

তাই হিসাব অনুযায়ী যে খাতে সরকারের প্রান্তিক মুনাফা বেশি, সেই খাতেই খরচ হবে বেশি। দক্ষতা ও লাভ বিচারে এটাই বাস্তবতা। সমতা (equity) আর দক্ষতা (efficiency) এর মধ্যে তাই ভারযাম্য আনতে হলে কিছু জিনিস বিরাষ্ট্রীকরণ করা যায়। সরকার তো আর সব পারবে না, সরকারের প্রযুক্তিতে ঘাটতি থাকতে পারে, অভিজ্ঞতায় ঘাটতি থাকতে পারে, তথ্য আহরণে ঘাটতি থাকতে পারে - জোর করে সেগুলো করতে গেলে বরং মূল্যবান রাজস্বের অপচয় হবে। বরং বেসরকারীদের উপর কর আরোপ করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

কিছু ক্ষেত্রে আবার রাষ্ট্রের নিরাপত্তা জড়িত (সামরিক খাত) সেগুলোর ব্যাপারে এই রাষ্ট্রই মূল ভূমিকায় থাকুক। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন - এগুলো ভাগ করে নিতেই পারে দোষ নাই।খালি খেয়াল রাখতে হবে যাতে কর আরোপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের আওতায় থাকে।

হিমু এর ছবি

এই "কিছু জিনিস"-এর মধ্যে যাতে পানি না পড়ে, সেটাই আমার কামনা। পানির ক্ষেত্রে সরকারের প্রযুক্তি, অভিজ্ঞতা বা তথ্য আহরণে ঘাটতি থাকলে সরকার তা সঠিক মানবসম্পদ নিয়োগ করে পূরণ করে নিক।

আপনাকে একটা উদাহরণ দিচ্ছি [তথ্যটা জেনেছি একটা ডকুমেন্টারি থেকে, তাই লিঙ্ক দিতে পারছি না]। উরুগুয়েতে ভিওলিয়ার সাবসিডিয়ারির নাম ছিলো আলগোস দে বালবোয়া। উরুগুয়ের পানির বাজার এরা খুব কার্যকরভাবে কব্জায় নিয়ে আসার পথে ছিলো। গিয়ানজাম লাগলো যখন এক বাচ্চাদের স্কুলের পানির লাইন তারা বকেয়ার কারণে কেটে দিলো। উরুগুয়ের জনগণ খুব ক্ষেপে গিয়ে সাথে সাথে আইন করলো, পানিকে পণ্য নয়, অধিকার হিসেবে দেখতে হবে। আলগোস দে বালবোয়াকে উরুগুয়ে ছাড়তে হয়েছিলো তারপর।

তত্ত্বমতে অনেক কিছু সম্ভব, কিন্তু উট একবার তাঁবুতে ঢুকে পড়লে তাকে বের করা বাংলাদেশে খুব কঠিন।

ফাহিম হাসান এর ছবি

এই "কিছু জিনিস"-এর মধ্যে যাতে পানি না পড়ে, সেটাই আমার কামনা।

আমারও তাই কামনা। কিন্তু একান্ত যদি নাই পড়ে (স্বল্প আয়ের দেশে সমস্যার তো অন্ত নাই) সেক্ষেত্রে আমি বাজার খুলে দেওয়াকেই গুরুত্ব দেব। আগে মানুষ বিশুদ্ধ পানি পাক তো!

পানির ক্ষেত্রে সরকারের প্রযুক্তি, অভিজ্ঞতা বা তথ্য আহরণে ঘাটতি থাকলে সরকার তা সঠিক মানবসম্পদ নিয়োগ করে পূরণ করে নিক।

অবশ্যই, কিন্তু এইটাতো সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। ততদিনে যদি বাজার গড়ে উঠ ক্ষতি কী! খালি মান যাতে ঠিক থাকে আর কর যাতে দেয় - খেয়াল কৈরা!!

হিমু এর ছবি

বাজার গড়ে ওঠার ক্ষতি হচ্ছে, বাজার চায় সম্প্রসারিত হতে। সরকারী পরিষেবার মান তখন সেই বর্ধিষ্ণু বাজারের চাপে কোনো এক রহস্যময় কারণে প্লামেট করে। মানুষের আস্থার ফালক্রাম তখন শিফট করে। একবার সেটা ঘটে যাবার পর সরকারী পরিষেবার আর ব্যবসায়িক ভবিষ্যত থাকে না। বাজার একবার খুললে যেহেতু আর বোঁজানো যায় না, তাই ক্রমশ ভিওলিয়া, সুয়েজ, বেখটেলদের হাতে গোটা পানির বাজার চলে যায়। একবার তাদের হাতে যাওয়ার পর পানির মান নামতে থাকে, বিলিং প্র্যাকটিস খারাপ হতে থাকে, সরকারের যাবতীয় দোষগুলো পুনরাবৃত্ত হতে থাকে, কিন্তু সেবার ওপর জনগণের নিয়ন্ত্রণ আর ফিরে আসে না। জনগণ প্রতিরোধের চেষ্টা করলে কী হয়, সেটা বেখটেলের ক্ষেত্রে আমরা বলিভিয়াতে আর এশিয়া এনার্জির ক্ষেত্রে ফুলবাড়িতে দেখেছি।

আর মানবসম্পদ নিয়োগ সময় সাপেক্ষ হবে কেন? এটা তো রকেট সায়েন্স না, খুব সিম্পল কেমিক্যাল আর মেকানিক্যাল এনজিনিয়ারিঙের জিনিস। ভিওলিয়ার মতো দানব পানিবণিককে ঢুকতে দেয়া সময় সাপেক্ষ না হয়ে যদি কয়েকজন এনজিনিয়ারের নিয়োগ সময়সাপেক্ষ হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে, আমরা এখনও জংলিই আছি।

ফাহিম হাসান এর ছবি

বাজার গড়ে ওঠার ক্ষতি হচ্ছে, বাজার চায় সম্প্রসারিত হতে।

হোক না, যদি অন্য সেবায় শিফট না করে সমস্যা দেখছি না।

একবার তাদের হাতে যাওয়ার পর পানির মান নামতে থাকে, বিলিং প্র্যাকটিস খারাপ হতে থাকে, সরকারের যাবতীয় দোষগুলো পুনরাবৃত্ত হতে থাকে, কিন্তু সেবার ওপর জনগণের নিয়ন্ত্রণ আর ফিরে আসে না।

একমত। কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকে গেল: সরকার যে পানি সরবরাহ করবে তার মানে নিশ্চয়তা দেবে কে? বেসরকারী কেউ করলে সরকার যদি সেইটা মনিটর করে - এইটাই আমার কাছে অপেক্ষাকৃত বেটার অপশান মনে হয়েছে।

মানবসম্পদ নিয়োগ সময় সাপেক্ষ হবে কেন? এটা তো রকেট সায়েন্স না, খুব সিম্পল কেমিক্যাল আর মেকানিক্যাল এনজিনিয়ারিঙের জিনিস। ভিওলিয়ার মতো দানব পানিবণিককে ঢুকতে দেয়া সময় সাপেক্ষ না হয়ে যদি কয়েকজন এনজিনিয়ারের নিয়োগ সময়সাপেক্ষ হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে, আমরা এখনও জংলিই আছি।

নিয়োগ সময় সাপেক্ষ না। কিন্তু যদি ভিওলিয়ার সমপর্যায়ে আসতে চান তা সময় সাপেক্ষ। (নিচে গুছায় আরেকটা উপসংহার দিচ্ছি, ওখানে দেখুন)

হিমু এর ছবি

সরকার যদি বেসরকারী পানির মান মনিটর করতে পারে, নিজের পানির মানও মনিটর করতে পারবে। না পারলে পাবলিক সরকারের ঘাড়ে ধরে করাবে। কিন্তু পাবলিক বেসরকারী কোম্পানির ঘাড়ে হাত দিতে পারে না, দিতে গেলে রাষ্ট্র সেই কোম্পানির স্বার্থ দেখে দুনিয়ার সব জায়গায়। বলিভিয়াতে বেখটেলের পানি পরিষেবার বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে বলিভিয়ান প্যারামিলিটারির গুলিতে মানুষ মারা গেছে, ঠিক যেভাবে ফুলবাড়িতে নিজের ভিটা রক্ষা করতে গিয়ে মানুষ মরেছে বিডিআরের গুলিতে।

ভিওলিয়া কিন্তু মানের দিক দিয়ে বিশ্বের এক নাম্বার পানিবণিক নয়, মার্কেটের দিক দিয়ে। দুইটার মধ্যে পার্থক্য আছে না? জার্মানিতে ভিওলিয়ার এক বোতল পানির মান আর নাইজেরিয়াতে ভিওলিয়ার এক বোতল পানির মান কি সমান হবে?

ভিওলিয়ার সমপর্যায়ে ওঠার বা নামার প্রয়োজনও নেই। সরকার আর্সেনিক-আক্রান্ত লোকেশনে আর্সেনিকমুক্ত পানির ব্যবস্থা করবে, এবং দরিদ্রের পানির অজুহাত দেখিয়ে কোনো দানব পানিবণিককে দেশে ঢুকিয়ে পানিকে প্রাইভেটাইজ করবে না, এইটুকুই চাওয়া।

ফাহিম হাসান এর ছবি

সরকার যদি বেসরকারী পানির মান মনিটর করতে পারে, নিজের পানির মানও মনিটর করতে পারবে।

পারবে না - এইটা তো বলি নাই।

না পারলে পাবলিক সরকারের ঘাড়ে ধরে করাবে।

একমত না। চিকিৎসা, স্বাস্থ্যখাতে তো ঘাড়ে ধরার উদাহরণ দেখছি না। বরং গুণের দিক থেকে গড়ে সরকারী হাসপাতালের গুণগত মানের তুলানায় বেসরকারী হাসপাতালের মান ভালো এবং আরো ভালো হচ্ছে।

ভিওলিয়া কিন্তু মানের দিক দিয়ে বিশ্বের এক নাম্বার পানিবণিক নয়, মার্কেটের দিক দিয়ে। দুইটার মধ্যে পার্থক্য আছে না? জার্মানিতে ভিওলিয়ার এক বোতল পানির মান আর নাইজেরিয়াতে ভিওলিয়ার এক বোতল পানির মান কি সমান হবে?

জানি না পার্থক্য আছে কিনা। তবে থাকার সমভাবনা আছে। কিন্তু প্রশ্ন হল:

# নাইজেরিয়ান সরকার পানি সরবরাহ করলে এর থেকে কম দামে একই মানের বা এর চেয়ে ভালো দিতে পারবে কিনা?

# জার্মানির সরকার যে স্ট্যান্ডার্ড ফলো করে নাইজেরিয়ান সরকার সেই স্ট্যান্ডার্ড ফলো করে কিনা

# যেই উৎস হতে জার্মানি ও নাইজেরিয়ার পানি উত্তোলন করা হয় কিনা তার গুণগত মানে কী পরিমাণ পার্থক্য, পরিশোধনযোগ্যতা কেমন?

হিমু এর ছবি

বেসরকারী খাতের তুলনায় সরকারী চিকিৎসা খারাপ হচ্ছে পাবলিক ঘাড়ে ধরতে না পারার কারণেই। এর দায় বহন করতে হচ্ছে সরাসরি দরিদ্রকে, যার একমাত্র অবলম্বন সরকারী স্বাস্থ্যসেবা। আপনি দেশের বিরাট একটা জনগোষ্ঠীকে বিপন্ন করে যদি বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়ান, কী লাভ? দরিদ্র যদি ঘাড়ে ধরার ব্যাপারটা রপ্ত করতে পারতো, সেটাই হতো সমাধান।

দ্বিতীয়ত, সরকারি পরিষেবায় অনিয়ম হলে মিডিয়া সেটার কঠোর সমালোচনা করে, যেটা চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের ক্ষেত্রে বহুলাংশে সহায়ক। বেসরকারি পরিষেবার ক্ষেত্রে জনগণের জন্য এই মিডিয়া সাপোর্ট কিন্তু সিলেক্টিভ এবং সতর্কভাবে নিয়ন্ত্রিত। আপনি একটু আমাকে জানাবেন, জনপ্রিয় পত্রিকায় শেষ কবে বেসরকারী টেলিকম খাতে দুর্নীতি নিয়ে কিছু পড়েছেন?

আমার বক্তব্য ছিলো, ভিওলিয়ার যে মানকে আপনি বেঞ্চমার্ক ধরছেন, তা প্রায় অবধারিতভাবে খুব উন্নত দেশের কঠোর স্ট্যান্ডার্ডের আওতায় থাকে, এবং সম্ভবত বিশ্বের তুলনামূলক অনুন্নত দেশগুলোতে অনুসৃত হয় না। আপনি গোয়ালমারি আর পদুয়াতে সরবরাহ করা ভিওলিয়ার পানি আর জার্মানির সুপারমার্কেটে রাখা ভিওলিয়ার পানি, দুটোর কোনটাকে প্রেফার করবেন? আমি বলতে চেয়েছি, গোয়ালমারি আর পদুয়াতে জার্মান সুপারমার্কেটের বোতলের পানির মতো পানি তো সরকারের সরবরাহ করার দরকার নেই, সেটা আর্সেনিক ও দূষণমুক্ত এবং পানযোগ্য হলেই তো চলে।

ফাহিম হাসান এর ছবি

২ আর ৩ নং পয়েন্টে সহমত। বিশেষ করে বেসরকারি পরিষেবার ক্ষেত্রে জনগণের জন্য এই মিডিয়া সাপোর্ট কিন্তু সিলেক্টিভ এবং সতর্কভাবে নিয়ন্ত্রিত প্রসঙ্গে। তবে চিন্তা নাই, ব্লগ, ফেইসবুক আছে না! হাসি সনাতন মিডিয়ার চেয়ে কম যায় কিসে?

হিমু এর ছবি

কাগজে পড়লাম সম্পাদকরা চতুর্থ স্তম্ভের বদৌলতে সংসদীয় কমিটির কাছে সংবিধান নিয়ে মত দিতে যাচ্ছেন। বুঝতেই পারছেন, ব্লগ-ফেসবুক কম যায় কিসে দেঁতো হাসি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

ফাহিম, বিশুদ্ধ পানির সংস্থান স্থানীয় সরকারের উদ্যোগেই হওয়ার কথা। সেখানে সরকার সেটা না করে কোনো ফরাসী বেনিয়াকে পানি নিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ দিয়ে ফেললে ব্যাপারটা অন্যরকম হয়ে যায়। ভ্যারিয়েবল কস্ট ভিওলিয়া বিবেচনা করবেই। কারণ তারা সেখানে ব্যবসা করতে এসেছে, দাতব্য সেবা নয়। কিন্তু এটা তাদেরকে করতে দেয়ারই কথা ছিলো না। তারা যদি স্ব-প্রণোদিত হয়ে বিনামূল্যে গ্রামবাসীদের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতো, তাহলে সেটা ভিন্ন ছিলো।

ফাহিম হাসান এর ছবি

ধুসর গোধূলি ভাই: বুঝতে পারছি। এই বিষয়ে আমার ৭,১১,৩৫,৩৭,৩৯ নং মন্তব্যগুলো একটু দেখেন।

হাসিব এর ছবি


বিডিনিউজের অর্বাচীন সাংবাদিক ওয়াসার ময়লা পানি নিয়ে এই মানববন্ধন সেটা বলছে। কেউ কী বলতে পারবেন ছবির এই ব্যানারটা কী কারণে লেখা হলো। ফরাসি পানি কোম্পানির সাথে বিশ্বব্যাংকের সম্পর্কটা তাহলে খোলাসা হতো।

দিফিও-1 এর ছবি

আচ্ছা, এই পানি ব্যাবসার খবরগুলো কি মোটামুটি সাম্প্রতিক? সামুতে দিনমজুর নিকের একটা লেখা ছিল, যেটাতে এই ভিওলিয়ার কথা পড়েছিলাম, সেই পোস্ট ছিল ২০০৯ এর। সেখানে অবশ্য পানির দাম ১০ লিটারে ১ টাকা বলা আছে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অ্যাতো হিংসা করেন ক্যান? বড় মানুষের সাথেই বড় বড় কোম্পানীদের সম্পর্ক হয়, খাতিরদারী হয়। আরো বড় মনের মানুষরা তাদের গুণগান করেন, তাদের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ান। ঐ যে আরেকটা বড় কোম্পানী মোনসান্তোর সাথে একবার কী কী বড় বড় কাজ জানি হতে নিয়েছিল না! কিছু মানুষের হিংসার জন্য সেই বড় কাজটা হতে পারে নাই। আমাদের দুর্ভাগ্য!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হিমু এর ছবি

নোবেল পাইনাই দেইখা হিংসা করিগো পাণ্ডবদা। নরকের এগজিট ডোরে বাঁশের কেল্লা বানামু।

ধুসর গোধূলি এর ছবি
রু (অতিথি)  এর ছবি

ভালো লিখেছেন। খবরটা পড়ে এতটাই বিস্মিত হলাম যে আর কিছু বলতে পারছি না। শুধু একটা প্রশ্ন, এতো বড় প্রকল্প সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অনুমোদন ছাড়া কি সম্ভব?

হাসিব এর ছবি

এইটা পড়েন। একটু আবছা আবছা পরিস্কার হবে।

হিমু এর ছবি

না। সরকারের নাকের ডগা দিয়েই যাবতীয় হাতি হেলেদুলে পার হয়। সরকার শুধু মশা গেলে চটকানা দিয়ে মেরে ফেলে। আর হাতির গায়ে হাত দিলে মাহুতরা সেন্টু খায়, বুঝতেই পারছেন।

দুর্দান্ত এর ছবি

শুকরগুজার কররে ভাই। তাও ভাল ফ্রান্স থেইকা বোতলে ভইরা পানি নিয়া আসেনাই, দেশের মাটির তলা থেইকাই পানি তুলতেছে। অবস্থার যা কন্ডিশান, কয়দিন পরে পেট্রল পাম্পের পাশে পানির পাম্প বসবে, সেখান থেকে অফিস থেকে ফেরার পথে দশটা অকটেন আর দশটা পানি নিতে দেখা যাবে। কাহিনী তো সবে শুরু। এই পানি কতদূর গড়ায় কে জানে...

গ্রামীন যদি সরকারি সংস্থা হয়, তাহলে ভেওলিয়ার এই চুক্তি তো এই চুক্তি সরকারের সাথেই হইল নাকি? সারকোসি আর হাসিনার মিলেনিয়াম গোল এর দিকে এককদম এগিয়ে থাকা।
সুতরাং পাবলিকের ছাড়া আর কারো লস তো দেখিনা। তাতে কী? বেক্কল পাবলিকের লস হলেই কি লাভ হলেই কি...

আয়নামতি1 এর ছবি

মাংস খেলে নাকি মানুষের হিংসা বাড়ে। হিমু ভাইয়া মাংস খাওয়া কমিয়ে দেন হিংসা বশে থাকবে। আর বিস্ময় প্রকাশ করা মানুষের স্বাভাবিক অনুভূতিরই একটা তাই কেউ বিস্মিত হইলে অবাক হবার কী আছে! কেমন আজব নিজেরা যখন বিস্ময়কর ব্যবহার করে তখন কিছুই না, ওটা হয় কৌশলগত অবস্হান আর আমরা করলেই হোলি কাও রেগে টং অবাক হবারও ফুরসত পাইনা আর এসবে। কিন্তু প্রথম আলোর ঐ খবরটা তো ২৭ নভে:২০১০ এর বর্তমানে ফরাসী পানি গিলে কেমন আছেন ভাগ্যবান মানুষগুলো?

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

কয়েকটা খবর একসাথে করতেই সমাধান মিলে গেল! দারুণ এবং সময়োপযোগী লেখা, হিমু। লেখাটি থেকে দেশের জন্য আসলে কারা কী কাজ করছেন সেটা বুঝতে সুবিধা হবে। এরকম উন্মোচনকারী লেখা সম্ভবত ব্লগেই সম্ভব। হ্যাটস্ অফ, হিমু। অসাধারণ। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে এরকম একটা লেখা পড়ার সুযোগ হল।

কনফুসিয়াস এর ছবি

চলুক চলুক চলুক
নিজেদেরকে একটা বিশাল বাজার ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারে না আমাদের সরকার। মন খারাপ

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

ধুসর গোধূলি এর ছবি

বাজার বটে। এবং সেই বাজারে বাংলাদেশের ভূমিকাটা হয় কেবল দোকান ঘরের। ব্যবহারের পর ফেলে চলে যায় সবাই আয়-ব্যয়ের হিসাব নিজেরা বুঝে নিয়ে। আর বাংলাদেশের হাতে থেকে যায় কেবল পেন্সিল।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

একজন মহত(মাহুত নয়)প্রাণ মানুষ বাংলার গরিব নারীদের সেলফোন, পুষ্টিকর দই আর সুপেয় পানি সস্তায় নামমাত্র মূল্যে সরবরাহ করতে চাইলে তোমরা তাঁর পেছনে লাগো কেনো হিমু! চোখ টিপি

পথের বাধা সরিয়ে দাও, তাঁহাকে আগাইতে দাও। শয়তানী হাসি

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

গরিবী অমরতা চোখ টিপি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তারাপ কোয়াস এর ছবি

এই বহুজাতিক কোম্পানীগুলোর হয়ত আরও সূদুর প্রসারী কোন পরিকল্পনা আছে। হয়তো লোকাল মার্কেট ছাড়াও আমাদের দেশের 'ফাও' সুপেয় পানি বোতলজাত করে রপ্তানী করবে কিনা কে জানে!
পিপিদার সাথে একমত। হিমু ভাইকে অনেক ধন্যবাদ দারুণ এবং সময়োপযোগী এই লেখার জন্য ।এই গুরুত্বপূর্ণ লেখাটি না পড়লে পানি নিয়ে চমৎকার একটা ডকুমেন্টারির হয়তো খোঁজ পেতাম না ।


love the life you live. live the life you love.

হিমু এর ছবি

এই ডকুমেন্টারিটা অনবদ্য। ভিওলিয়া, সুয়েজ আর বেখটেলের অনেক কিচ্ছাই এই পোস্টে বলা হয়নি, যেগুলো এই ডকুমেন্টারিতে দেখেছিলাম।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

পাণিপ্রার্থী বনাম পানিপ্রার্থী। শয়তানী হাসি

নীড় সন্ধানী এর ছবি

গ্রামীণব্যাংকের ক্ষুদ্রঋনের বিপক্ষে অবস্থান না নিলেও গ্রামীণের এই সামাজিক ব্যবসার ব্যাপারটা আমার কাছে কখনোই ভালো লাগেনি। ডানোনের সাথে যখন ড.ইউনুসকে দেখি অস্বস্তি লেগেছিল, এই পোষ্ট পড়ে তো অস্বস্তি আরো বাড়লো। গরীব মানুষকে সস্তায় বিশুদ্ধ পানি খাওয়ানোর উদ্যোগটা মহৎ। কিন্তু সেই পানি বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ করার ব্যাপারটা গ্রামেই কেন প্রথম? গ্রামীণ ব্যাংকের নেটওয়ার্কের কারনেই? এখানেই গোলমালটা।

ঢাকা শহরে তার চেয়ে সস্তায় পানি পাওয়া গেলেও তাতে কেচোর পরিমান নেহায়েত কম নয়। আমি ভিওলিয়া হলে আগে ঢাকা শহরে ব্যাকটেরিয়া আর কেঁচোমুক্ত পানি সরবরাহের জন্য বলতাম। গুলশান বারিধারা ডিওএইচএস এলাকা দিয়ে শুরু করে চানখার পুল পর্যন্ত পৌঁছে যাবার পর বলতাম, আসো এবার গ্রামের অবহেলিত মানুষের দিকে নজর দেই। তাদেরও অধিকার আছে জীবানুমুক্ত পানি খাবার। তখন গ্রামীণ ব্যাংককে পার্টনার হিসেবে নিতাম।

দেশে এখন লোকে আপোষে পয়সা দিয়ে পানি কিনে খায়। দেড় যুগ আগেও এটা একটা কঠিন ব্যবসা ছিল। পানির ব্যবসার এই পসার দেখেই ভিওলিয়া আগ্রহী হয়েছে দরিদ্র মানুষের 'সেবা' করার।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

হিমু এর ছবি

কিন্তু পানিটা তো আদৌ সস্তা না। একটা পরিবারে চারজন মানুষ থাকলে তার কেবল পানের জন্যে পানির দৈনিক চাহিদা হবে ১২ লিটার, বছরে যার মূল্য পড়বে ১,০৯৫ টাকা। একটি গ্রামীণ পরিবারের জন্যে বছরে ১,০৯৫ টাকা খুব একটা কম টাকা নয়।

আর আমি যেটা বুঝি, আর্সেনিক আক্রান্ত এলাকায় পানির সমস্যাটা দীর্ঘমেয়াদী। দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার সমাধানের জন্যে সরকারকেও দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। দাউদকান্দি কোনো প্রত্যন্ত এলাকাও নয় যে দুর্গমতার কারণে ব্যবস্থা নেয়া কঠিন হবে।

দুর্দান্ত এর ছবি

দাউদকান্দির সাংসদ মেজে সুবিদালি ভূঁইয়ার বারিধারার বাসা থেকেই আগে শুরু করা যেতো।

ফাহিম হাসান এর ছবি

হিসাবে বাহ্য লাভ (external benefit) বাদ পড়ে যাচ্ছে।

একটা খুব সাধারণ লাভ লোক-লোকসান চিত্র আঁকি:

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পানি সরবরাহ করলো।

খরচ = (উৎপাদন + প্রক্রিয়াজাতকরণ + সরবরাহ) খরচ ইত্যাদি
এই পানির গুণগত মান = ক যা কিনা সরকারী পানি থেকে ভালো।

এখন ধরেন যদি এই মানের পানি খেলে রোগ বালাই বিপদের ঝুঁকি থেকে যায় - ৩০% (অনুমান)

এটা কিন্তু একটা পজিটিভ ব্যাপার। কারণ, মানুষ যদি রোগাক্রান্ত হত এবং তাদের মাঝে একটা অনশ যদি সরকারি হাস্পতালে যেত তাহলে কিন্তু সরকারকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে হত (ভর্তুকি সহ,) - এই খরচটা বাদ যাচ্ছে। আগে অসুস্থতা হেতু মানুষের যে উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পেত তা কিন্তু হচ্ছে না - ইত্যাদি।

কাজেই ভালো মানের পানির external benefit আছে। গড় মজুরী হিসাব করে এই সংখ্যাটা বের করা খুব কঠিন কিছু না। এবং আমার ধারণা সংখ্যাটা বেশ বড় হবে। কাজেই খরচ হিসাব করলে আসল ছবি পাওয়া যাবে না।

দেখতে হবে - ভিওলিয়া যে মানের পানি দিচ্ছে তার জন্য ভোক্তারা কতটুকু প্রান্তিক মূল্য (marginal willingness to pay) দিতে ইচ্ছুক। স্টাডিটা এভাবে হওয়া উচিত।

আবার মৌসুম ভিত্তিক মূল্যের ব্যাপারটাও দেখতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে, গ্রীষ্মে, শীতে, বর্ষায় কোন পার্থক্য হয় কিনা। মানুষ ঈদে বাড়ি যাওয়ার জন্য ৩ গুণ দাম দিয়ে টিকেট কিনে।

হিমু এর ছবি

এখানে স্বতসিদ্ধ হচ্ছে "ভিওলিয়ার পানির মান > সরকারী পানির মান"। এটা আমরা ঢাকা বনাম গোয়ালমারি-পদুয়া তুলনা করতে পারবো না, কারণ ঢাকায় পানির মান হ্রাস পায় পুরনো সরবরাহ লাইনের কারণে। দ্বিতীয়ত, গোয়ালমারি-পদুয়াতে পাইপে করে গরীবের বাড়িতে কিন্তু পানি পৌঁছাচ্ছে না, গরীব প্ল্যান্টে গিয়ে পানি পাত্র ভরে নিয়ে যাচ্ছে (এরকম ১৯টা আউটলেট আছে ওখানে)। পাইপ না থাকলে পানির মান সরকারী প্ল্যান্ট আর ভিওলিয়ার প্ল্যান্টে ঊনিশ-বিশ হবে পিউরিফায়ার প্ল্যান্টে গিয়ে।

আর্সেনিক-বিপর্যস্ত মানুষেরা হয়তো ১০ টাকা দিয়েও ১০ লিটার পানি কিনে খাবে। আমার আপত্তি, সরকার কেন এইরকম একটা পরিস্থিতির দিকে তাদের ঠেলে দেবে? সরকারের নিষ্ক্রিয়তা এবং/অথবা নিস্পৃহতা একটা বড় করপোরেটকে পানির মতো একটা জিনিসকে পণ্যে পরিণত করার সুযোগ করে দিচ্ছে, সেটাই আমার আপত্তির ক্রুক্স।

ফাহিম হাসান এর ছবি

হিমু ভাই, সরকারের নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নে আমিও একমত।

সামাজিক ব্যবসা নতুন মডেল। এজন্য নতুন করের ব্যবস্থা করা হোক। বাজারে প্রতিযোগিতা আসলে দাম এম্নিতেই কমে যাবে। প্রয়োজনে গামছা দিয়ে কর আদায় করা হোক। এককালীন lump-sum না করেো করটা বসান হোক মুনাফার উপর। মনিটর করতে সমস্যা হলে বসাক উৎপাদনের উপর। কোন সমস্যা নাই।

এখানে স্বতসিদ্ধ হচ্ছে "ভিওলিয়ার পানির মান > সরকারী পানির মান"।

উহুঁ ভাইয়া। স্বত:সিদ্ধ হচ্ছে "ভিওলিয়ার পানির মান > সাধারণ পানির মান"।

আর সরকার সরবরাহ করলে চিত্রটা কেমন হবে আমি উপরে দিয়েছি। তবু ধরলাম -

ভিওলিয়ার পানির মান = সরকারী পানির মান

কিন্তু এই একই মানের, একটি নির্দিষ্ট পরিমানের পানি সরবরাহ করতে যদি সরকারের খরচ বেশি হয়, তাহলে ???

আমার মতে বাজার খুলে দিক, কর আরোপ করুক। যাদের পানি নিয়ে প্রযুক্তি অভিজ্ঞতা আছে তারা দলে দলে আসুক। যত প্রতিযোগিতা হবে, মূল্য ততই কমবে। সরকার করের অংশ অন্য খাতে কাজে লাগানোর সুযোগ পাবে।

হিমু এর ছবি

সরকারের খরচ কিন্তু বেশিই হবে, কারণ সরকার দরিদ্রদের সেবার খরচকে অফসেট করার জন্যে নগরাঞ্চলের প্যাকেজড ওয়াটার মার্কেটে কিন্তু ঢুকছে না। সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে, এবং সেটা অফসেট করার জন্যে সরকার অন্য কোনো বড় মার্কেটে সরবরাহকৃত পানির দাম বাড়াতে পারে।

আপনার প্রস্তাবটা আইডিয়াল কেস। বাস্তবে যা হয়, দলে দলেই অভিজ্ঞ বণিকেরা আসে, এবং মার্কেটে সরকারী প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা কোনো এক রহস্যজনক কারণে দিনে দিনে হ্রাস পায়। উদাহরণ হিসেবে টেলিটককে দেখুন।

পানিকে সেবা/পণ্য নাম না দিয়ে একে অধিকার বলার পক্ষে আমি। সরকার জনগণের জন্য আর্সেনিকমুক্ত পানির ব্যবস্থা করবে, কীভাবে করবে, সেই মেকানিজম নির্ধারণের দায় সরকারের। কিন্তু এটা করতে হবে মার্কেটে ভিওলিয়ার মতো দানব পানিবণিকদের না ঢুকিয়ে। বিদেশী বিনিয়োগেরও কোনো প্রয়োজন দেখি না এখানে। আমাদের পানি আমাদেরই গিলিয়ে মুনাফা তুলে নেয়ার সুযোগ অন্যকে দেবো কেন?

ফাহিম হাসান এর ছবি

অধিকারের ব্যাপ্তি নিয়ে আমার মত কিছুটা ভিন্ন। যেখানে খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা - কোনটাই সরকার নিশ্চিত করতে পারছে না তখন অধিকারকে প্রায়োরিটি দিতে হবে বৈকি। সব অধিকার দেওয়ার ক্ষমতা তো সরকারের নাই। তাই যেখানে রিটার্ন বেশি সেখানে সরকার নিজে ব্যয় করুক, অন্যগুলো বেসরকারী করে কর আরোপ করুক - আমার কথা সেইটাই।

"বিশুদ্ধ পানি" অবশ্যই অধিকার। কিন্তু সেইটা সরকারি ভাবে হতে হবে এমন কোন কথা নেই। বেসরকারী প্রতিষ্ঠান আসুক, বিনিয়োগ করুক। সরকার দেখবে যে পানির মান ঠিক আছে কিনা + ঠিক মত কর দেয় কিনা। এই কর অন্য খাতে (প্রয়োজনে ঐ অঞ্চলেরই অন্য খাতে) ব্যয় করা হোক। একচেটিয়া ব্যবসা বন্ধ করতে অন্য প্রতিষ্ঠানকেও একই সুযোগ দেওয়া হোক। ভিওলিয়া VS সরকার হলে সরকারের হারের সম্ভাবনা বেশি। তাই অন্য বেসরকারী প্রতিষ্ঠানকে লেলিয়ে দেওয়াই উত্তম।

আপনার প্রস্তাবটা আইডিয়াল কেস। - ঠিক। কিছু অনুমান নিতে হচ্ছে।

বাস্তবে যা হয়, দলে দলেই অভিজ্ঞ বণিকেরা আসে, এবং মার্কেটে সরকারী প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা কোনো এক রহস্যজনক কারণে দিনে দিনে হ্রাস পায়।

- তাও ঠিক। সরকারের উৎপাদনশীলতা কম; খুবই কম। দুর্নীতির কথা বাদই দিলাম।

এজন্যই বেসরকারীকরণ করলে মানুষ অন্তত পানিটুকু পাবে। বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় তো সরকার করলে মানুষ হয়ত কম মূল্য দিবে ঠিকই কিন্তু গুণগত মান হবে খারাপ, স্বাস্থ্য ঝুঁকি ঠিকই থাকবে। আমি ভিওলিয়াকে গুণের দিক নিশ্চিতকরণের প্রশ্নে সরকারের থেকে এগিয়ে রাখবো।

হিমু এর ছবি

গুণেরও কিন্তু আয়ুরেখা আছে। যতক্ষণ গুণের কারণে বাজার সম্প্রসারণ ঘটবে, ততক্ষণ গুণ সরকারের চেয়ে এগিয়ে থাকবে। বাজার থেকে সরকারের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা উঠে যাওয়ার পর এই গুণ হ্রাস পেতে থাকবে। এটা বানিয়ে বলছি না, ভিওলিয়া আর সুয়েজের ক্ষেত্রে এই অভিযোগ সারা পৃথিবী থেকেই উঠেছে। আপনি উদাহরণ হিসেবে আমাদের মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবাগুলোর কথা ভেবে দেখুন। প্রচুর অসন্তুষ্ট গ্রাহককে পাবেন, যারা অভিযোগ করেও প্রতিকার পান না, এক সেবা থেকে আরেক সেবায় সুইচ করেন টাকা গচ্চা দিয়ে। সরকারী অদক্ষতার সাথে এখানে বেসরকারী অদক্ষতার কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু মাঝখান থেকে যেটা হয়, এই খাতে সরকারের পরিষেবার সক্ষমতা লোপ পায়, সাথে সরকারী পরিষেবার প্রতি মানুষের আস্থাও।

সরকারের উৎপাদনশীলতা কম হলে, সেটা বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পুত্রবধুর টাইফয়েড হলে তাকে শ্বশুর চিকিৎসা করান, তাকে ফেলে রেখে ছেলেকে আরেকটা বিয়ে দিয়ে দেন না।

ফাহিম হাসান এর ছবি

@ হিমু ভাই: ৪৬ নং মন্তব্যের জবাবে -

বাজার থেকে সরকারের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা উঠে যাওয়ার পর এই গুণ হ্রাস পেতে থাকবে।

এইটার উত্তর ভাইয়া আগেই দিয়েছি। গুণ যাতে হ্রাস না পায় সেজন্য অন্য বেসরকারী কম্পানিকেও সমান সুযোগ দেওয়া হোক। সরকারী vs ভিওলিয়া না হয়ে, বেসরকারী vs বেসরকারী হোক।

সরকারের উৎপাদনশীলতা কম হলে, সেটা বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

তা তো করতে হবেই। কিন্তু

১। এইটা অপেক্ষাকৃত লং টার্ম সমাধান। (বছরের হিসাবে না, রিটার্নের হিসাবে)
২। এইটার সাথেও অনেক আনসের্টিনিটি আছে। সরকার তো চিকিৎসা, শিক্ষা, খাদ্য এগুলোতেই ভরসা রাখার মত উৎপাদনশীলতা দেখাতে পারছে না।

হিমু এর ছবি

বেসরকারী বনাম বেসরকারী হলেও কিন্তু গুণ হ্রাস থামবে না। বেসরকারীরা নিজেদের মধ্যে সিন্ডিকেশনের ব্যাপারে বেশ উদার। যদি প্রতিযোগিতাই পণ্যের মানকে চেক দিতে পারতো, তাহলে বাজারে কোনো লো-কোয়ালিটির জিনিসই তো থাকতো না। আপনি দেশে ভোজ্য তেলের বাজারের কথা চিন্তা করুন, সেটা কিন্তু প্রায় সর্বাংশেই বেসরকারী। ভোজ্য তেলের মান কি সব জায়গায় সব সময় গ্রহণযোগ্য থাকে? এভাবে চালের বাজার, ইঁটের বাজার, গুঁড়া মশলার বাজারের কথা ভাবুন, দেখবেন বেসরকারী বনাম বেসরকারীটা তত্ত্বের পাতায় যতটা আছে, বাস্তবের পাতায় তারচেয়ে বেশি আছে হাম ভি বেসরকারী তুম ভি বেসরকারী।

আপনার পর্যবেক্ষণের সাথে আমি একমত। কিন্তু সরকারের এই উৎপাদনশীলতা প্রদর্শনে অক্ষমতাই কিন্তু ভিওলিয়াদের অন্যতম সক্ষমতা। কাজেই আমাদেরই কথা বলতে হবে, ভোক্তাদের সন্বিবিষ্ট হয়ে সরকারের ওপর চাপ রাখতে হবে।

ফাহিম হাসান এর ছবি

সম্ভাবনা প্রবল মাত্রায় আছে। এখানেই টেক্সট বই নীরব। কারণ বাংলাদেশের সরকারের মেরুদন্ড তুলার মত শক্ত।

মূল্য ভিত্তিক কার্টেল সম্ভব না, কিন্তু গুণের দিক থেকে কার্টেল খুব সম্ভব। এইটা সরকারকে মনিটর করতে হবে - আপাতত বিকল্প দেখছি না।

নৈষাদ এর ছবি

মূল্য ভিত্তিক কার্টেল সম্ভব না, কিন্তু গুণের দিক থেকে কার্টেল খুব সম্ভব।

ইন্টারেস্টিং। ব্যাপারটা কী আরেকটু ব্যাখ্যা করা যায়।

হাসিব এর ছবি

যত প্রতিযোগিতা হবে, মূল্য ততই কমবে।

আপনি যখন দক্ষ শব্দটা ব্যবহার করলেন তখনই এই বাক্যটার গন্ধ পাচ্ছিলাম। আমেরিকা ইকোনোমিক্স পড়া অর্থমন্ত্রীরা কেন সুবিধে করতে পারেন না সেটা সহজেই অনুমেয়।

ফাহিম হাসান এর ছবি

এই জিনিস জানার জন্য ইকোনোমিক্স পড়ার দরকার নেই। দেশে মোবাইল কম্পানিগুলোর কল রেটের দিকে তাকালেই বোঝা যায়।

ভাই, কোন দেশের থেকে পড়ে আসলে সুবিধা করা যায়? আমেরিকাতে সল্ট ওয়াটার, ফ্রেশ ওয়াটার দুইটাই আছে। সরলীকরণ ঠিক না।

হাসিব এর ছবি

সরলীকরণ কিন্তু করা যায়ই। এ্যামেরিকান ইকোনোমিক্সের টেক্সট বুক নলেজ কিন্তু ইউরোপীয়নরা পাত্তা দেয় না। মার্কেট এখানে নিয়ন্ত্রিত। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বেসিক ইউটিলিটি সবই স্টেট কন্ট্রোলড। পরিবহন খাতটার বিরাট অংশও সরকারের হাতে। আর মোবাইলের একটা কাহিনী বললেন। কিছু ফেইলিওরের কাহিনীও শোনান যেখানে মার্কেট কাজ করেনি।

ফাহিম হাসান এর ছবি

তা কিছুটা যায় বৈকি। হাসি

নরওয়ে, সুইডেন এসব দেশে সরকার অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করে। উন্নতিও হচ্ছে বেশ। কিন্তু ভাইয়া ঐসব দেশে করের হারও তো অনেক, অ-নে-ক বেশি।

মার্কেট অনেক সময়ই কাজ করে না। কত মার্কিনি-ই তো স্বাস্থ্য সেবা বঞ্চিত।

মধ্যম পন্থাই হচ্ছে উত্তম- এই আরকি।

হাসিব এর ছবি

করের হার বেশি বুঝলাম। তাতে জনগণের বেসিকটার (ইওরোপিয়ান সেন্সে বেসিক, এ্যামেরিকান সেন্সে না) যোগান ঠিক রাখতে হবে এই দর্শনটা কী বদলায়? ব্রিটিশরা সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় স্বাস্থ্যটা পাবলিক সেক্টরে আত্মীকরণ করেছে। আর সেদিনের ইউরোপের ওয়েলফেয়ার স্টেটগুলো কিন্তু মন্দার ছোয়া পাবলিকের গায়ে লাগতে দেয় নাই। এইটা তো ঐ দর্শন থেকে যে মানুষের লিভিং স্ট্যান্ডার্ড একটা পর্যায়ের পর কোনভাবেই নামতে দেয়া যাবে না। বাংলাদেশের মানুষজনকে ঐ পর্যন্ত উঠে তারপর মার্কেটের মুখে ছুড়ে ফেলার চিন্তা করলে হয় না ভাইটি? সমস্যাটা প্রাচুর্যের না, সমস্যাটা বন্টনের - এইটা অনেক পুরনো জ্ঞান।

ফাহিম হাসান এর ছবি

অনেক কিছুই উচিত। এই উচিতগুলোকে প্রায়োরাটাইজ করতে হয়। তার এজন্য হিসেব করে বের করতে হয় -

সরকার ১ টাকা খরচ করলে social welfare কতটুকু হয়?
সরকার ১ টাকা খরচ করলে social cost কতটুকু হয়?

আপনার আগ্রহ থাকলে Bev Dahlby এর The Marginal Cost of Public Funds বইটা পড়ে দেখতে পারেন।

লিঙ্কের থেকে marginal cost of fund জার্গনটার সংজ্ঞা ছোট্ট করে -

The marginal cost of public funds (MCF) measures the loss incurred by society in raising additional revenues to finance government spending.

সরকার খরচ করলেই কল্যাণ বাড়ে - এইটা পুরাতন ধারণা। করের জন্য যে distortion হয় সেইটা হিসাবে না ধরলে ক্যাম্নে কী! এইটা তো সব দেশের জন্য সমান না।

এখানেও একটু গুঁতা মারতে পারেন। তবে এইটা স্রেফ আইডিয়ার জন্য।

সরকার দ্বারা স্বাস্থ্যসেবার ফাটানো উদাহরণ হইল Cuba: ১00% সরকারী এবং সেইরকম কঠোর নিয়ন্ত্রণ।

অমিত এর ছবি

আমেরিকার মানুষের বায়িং পাওয়ার আর বাংলাদেশের মানুষের বায়িং পাওয়ার কি এক ? বাংলাদেশে যারা পানি কেনার সামর্থ্য রাখেন না, তাদের কি হবে ?

ফাহিম হাসান এর ছবি

পার্বত্য চট্টগ্রামে, বান্দরবান, খাগড়াছড়িতে মানুষ কিভাবে বেঁচে আছেন? কী পানি পান করছে?

হিমু এর ছবি

নন-প্রাইভেটাইজড পানি। এখন একটা সিনারিও কল্পনা করুন, বান্দরবানের কোনো একটা ঝর্ণার পানি লিজ দেয়া হলো ভিওলিয়াকে। তারা সেখানকার পানি দিয়ে মিনারেল ওয়াটার বানাবে। বান্দরবানের যে মানুষগুলো এই ঝর্ণার পানির ওপর নির্ভরশীল, তাদের তখন কী হবে?

অমিত এর ছবি

সেই পানি আমরা কিনব এখানকার সুপারস্টোরে, ইক্সোটিক ওয়াটার হিসাবে হাসি

ফাহিম হাসান এর ছবি

@ অমিত: তা কি আর অলরেডি কিনছেন না? চোখ টিপি

@ হিমু:

বান্দরবানের যে মানুষগুলো এই ঝর্ণার পানির ওপর নির্ভরশীল, তাদের তখন কী হবে?

লিজ দেওয়ার সময় স্থানীয় মানুষের অ্যাক্সেস থাকবে না এইটা অনেক শক্ত অনুমান। পানির সোর্স আকাধিক হতে পারে।

আর যদি সেই ঝর্ণার পানি কোন কারণে দূষিত হয়, তখন?

আপনার কি মনে হয়, ঢাকায় সরকার যে মানের পানি সরবরাহ করে, খুলনায়, বান্দরবানে কি একই মানের পানি সরবরহ করে? ট্যাক্স রেইট কিন্তু সব জায়গাতেই সমান।

হিমু এর ছবি

পানির সোর্স একাধিক হতে পারে, এটা আরো শক্ত একটা অনুমান। আর লিজ দেয়ার পর স্থানীয় মানুষের অ্যাকসেস নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে কী হয়, সেটা কি আমরা জানি না? পার্বত্য চট্টগ্রাম বাদ দিন না, আপনি বুড়িগঙ্গা দখল করা লিজ না দেয়া জমিতে স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে জনস্বার্থের হালহকিকত বিবেচনা করে দেখুন।

না, মানে অবশ্যই ঊনিশ-বিশ থাকবে। কিন্তু সেটা কি আর্সেনিক কনটেন্টের কারণে, নাকি পানির স্বাভাবিক মিনারেল কনটেন্টের কারণে?

ফাহিম হাসান এর ছবি

না, মানে অবশ্যই ঊনিশ-বিশ থাকবে। কিন্তু সেটা কি আর্সেনিক কনটেন্টের কারণে, নাকি পানির স্বাভাবিক মিনারেল কনটেন্টের কারণে?

এই ব্যাপারে তেমন কিছু জানি না। নেট ঘাঁটলাম। আর্সেনিক সমস্যার ব্যাপ্তি নিয়ে পড়ছি।

আর লিজ দেয়ার পর স্থানীয় মানুষের অ্যাকসেস নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে কী হয়, সেটা কি আমরা জানি না?

এইরকম হলে বিপদ। তবে আমি ছোট একটা স্টাডি পড়েছিলাম Access to Safe Drinking Water in Chittagong Hilltracts বা এই ধরনের কিছু একটা শিরোনামে।

মানুষগুলো কষ্ট পায় খুব। পানি আনতে যেতে হয় অনেক দূর। আর সরকার কিছু করতে পারছে না (নাকি চাচ্ছে না)। এখন ডানিডা যদি কোন সামাজিক ব্যবসার প্রকল্প নেয় তবে আমি আগে ঐটাকেই সাপোর্ট দিব।

হিমু এর ছবি

আপনি নিশ্চয়ই পার্বত্য চট্টগ্রামে গিয়েছেন অনেকবার? ওখানে অনেক দূর গিয়ে পানি আনার ব্যাপারটা সমস্যা না। পাড়াগুলো গড়ে ওঠে কোনো বড় ঝর্ণা বা দীঘির আশেপাশেই। এর ব্যতিক্রমও দেখেছি, কিন্তু যে পাহাড়িরা জুম চাষের জন্যেই দিনে পনেরো-কুড়ি কিলোমিটার পার হয়, তাদের জন্যে "অনেক দূর" গিয়ে পানি আনাটা সমস্যার না। সমস্যা হতে পারে যদি পানি কোনো কারণে পানের অযোগ্য হয়ে পড়ে। আর ডানিডা যদি ওখানে "অনেক দূরে যাওয়ার" সমস্যা দূর করতে চায়, আপনার কি কোনো ধারণা আছে, কী পরিমাণ অবকাঠামো তৈরি করতে হবে? পাহাড়ের নিচ থেকে পাহাড়ে পানি তোলার জন্যে কয়েক ধাপে রিজারভয়ের তৈরি করে ছোটো ছোটো পাম্প দিয়ে তোলা হয় সেনাবাহিনীর ফাঁড়িগুলোতে, কারণ একবারে তুলতে গেলে বিশাল পাম্প লাগবে (পানির ডেলিভারি হেড কয়েকশো মিটার), সেই পাম্পের তেল বা বিদ্যুৎ কোত্থেকে আসবে? ফলে এ ধরনের প্রকল্প সাংঘাতিক ব্যয়বহুল হবে, যার সংস্থান করতে গেলে ডানিডাকে ক্রস-সাবসিডাইজ করতে হবেই। একটা উন্নয়ন সংস্থা তো আর ব্যবসা করতে পারে না এসে, তাই না? দেখা যাবে ডানিডাও ভিওলিয়ার মতো কারো সাথে জোট বাঁধছে। এবং সবারই চোখ কিন্তু থাকবে শহরের প‌্যাকেজড পানির মার্কেটের দিকে। পাহাড়ের দরিদ্র হবে কুমীরের বাচ্চা মাত্র, যাকে বারবার দেখাতে হয়।

ফাহিম হাসান এর ছবি

নাহ! খুব বেশিবার যাইনি। পানের অযোগ্য বড় সমস্যা হবে - সন্দেহ নাই। কিন্তু ওরা তো রাতে পানি আনতে যায় না। দিনে যায়। শ্রম ঘন্টার অপচয় হয় - নারী-পুরুষ দুইজনেরই।

আপনার কি কোনো ধারণা আছে, কী পরিমাণ অবকাঠামো তৈরি করতে হবে?

আমি দুঃখিত, আমার সত্যি কোন ধারণা নেই। তবে অনুমান করতে পারছি যে অনেক খরচ হবে। আর তাই সরকারের করাটা ইফেক্টিভ হবে না। বরং বেসরকারি কেউ নতুন টেকনলজি নিয়ে এগিয়ে আসলে (!!) তাকে স্বাগত জানাবো। তবে ধান্দাবাজি করলে চেপে ধরতে চাওয়ার মত মেরুদন্ড চাই। সরকার সেবা দিতে না পারুক, মেরুদন্ড শক্ত করুক - তাহলে বাজার পদ্ধতি্তে কিছু সমাধান পাওয়া যাবে।

হিমু এর ছবি

নতুন টেকনোলজি একটাই হতে পারে, রেইনওয়াটার হারভেস্টিং, কিন্তু সেটা তো ড্রাই সিজনে কাজ করবে না। চিলির আতাকামা মরুভূমির মতো করে ডিউ হারভেস্টিং করা যায় সস্তায়, কিন্তু সেটা হয়তো যথেষ্ট হবে না।

পাহাড়িরা পানির ব্যাপারে নিজেদের কিছু ট্র্যাডিশনাল টেকনিক অনুসরণ করে। যদি বাসস্থানের ওপরে কোনো ঝর্ণা থাকে, তাহলে বাঁশ অর্ধেক করে কেটে একটা অ্যাকুয়াডাক্ট বানিয়ে সেটা নিচে নামাতে দেখেছি বেশ কয়েক জায়গায়। বিলাইছড়ির দুটো পাড়ায় দেখেছি, বাচ্চারা শুকনো লাউয়ের খোলে করে পানি আনতে যায়। তবে আপনার পর্যবেক্ষণ সঠিক, পানি আনতে গেলে শ্রম-ঘন্টার অপচয় হয়। কিন্তু চিন্তা করে দেখুন, সেই শ্রম-ঘন্টার মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে তাদের ঘরে পানি দিতে পারবেন কি না। গোয়ালমারি আর পদুয়াতেও কিন্তু লোকে প্ল্যান্টে গিয়ে পানি কেনে, শ্রম-ঘন্টার অপচয় সেখানেও হয়।

ফাহিম হাসান এর ছবি

চিলির ব্যাপারটা জানি না। লিংক দেন প্লিজ। প্রাসঙ্গিক কেইস স্টাডি জানা থাকলে সেগুলারও লিংক দিয়েন।

হিমু এর ছবি

খুঁজে দেখবো। ব্যাপারটা জটিল কিছুও না। সূক্ষ্ম সারফেসের ওপর কুয়াশা এসে পড়লে কনডেনসেট করে, সেটাকে একসঙ্গে কালেক্ট করা হয়। আতাকামা সাগরের পাশে, কিন্তু বৃষ্টিপাত প্রায় শূন্য। সে কারণে কৃত্রিম নেট দিয়ে সেখানে ভোরের কুয়াশা থেকে কনডেনসেট সংগ্রহ করে ভেজিটেশনের জন্যে ব্যবহার শুরু হয়েছে। বান্দরবানের দিকে শীতকালে হয়তো এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে, যেহেতু সাগরের কাছে।

দুর্দান্ত এর ছবি

ব্যাক্তিগত করের হার বেশী বলা যেতে পারে। কিন্তু এসব দেশ ব্যাক্তিগত করের ওপর খুব বেশী নির্ভরশীল নয়। খেলাটা আসলে বানিজ্যিক করের। সেটা আমাদের দেশের মত এখানেও ১৫%। কিন্তু আমাদের দেশের যেসব খাতে পয়সা বানানো যায়, সেগুলো প্রায় সবগুলোকেই কেন যেন ট্যাক্স হলিডের প্রচলন করে দেয়া আছে, যাতে কয়েক বছর পর পর শুধু টিন নম্বর পাল্টেই এইসব ট্যাক্স হলিডের সুবিধা নেয়া যায়।

ফাহিম হাসান এর ছবি

মোটেই একমত নই। নরওয়েতে ব্যক্তিগত সম্পদ ও আয়ের উপর কর বসিয়ে যে রাজস্ব পায় তা পেট্রোলিয়ামের উপর রাজস্বের থেকেও বেশি।

সূত্রঃ Statistics Norway

কানাডার ক্ষেত্রেও তাই। সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আসে ব্যক্তিগত আয়ের উপর বসানো কর থেকে। ছবি দেখেন -

revenue

দুর্দান্ত এর ছবি

কানাডার কথা জানিনা। কিন্তু নরওয়ের ব্যাপারের আপনার দেয়া লিন্ক থেকে ব্যাক্তিগত আয়করের ওপর সরকারের নির্ভরশীলতা সম্বন্ধে কিছু জানা গেলনা। নাকি আপনি সোশাল কন্ট্রিবিউশানের পুরোটাকেই ব্যাক্তিগত আয়করের আওতায় ফেলছেন?

এখানে ২০০০-২০০৮ সালের উপাত্ত দিয়ে আরেকটু ভেঙে বলা আছে। খেয়াল করুন ২০০৮ সালে জাতীয় উতপাদনের নিরিখে সরাসরি পাবলিকের পকেট থেকে ৯.২ (ব্যাক্তিগত আয়কর) +৩.৪ (সামাজিক নিরাপত্তার চাঁদা, আসলে মোট ৮.৯% এর বাকী ৫.৫% আসে চাকুরীদাতার কাছ থেকে) শতাংশ নেয়া হচ্ছে। আরো ভেঙে বললে চাকুরেদের কাছ থেকে মাত্র ১০.২% ভাগ রাজস্ব আয় আসছে।

ব্যাক্তিখাতের এই ১০.২% অথবা বড়জোর ১২.৬% এর প্রভাব সরাসরি বা পরোক্ষ বানিজ্যিক খাত থেকে আসা বাদবাকী রাজস্বআয়ের প্রভাবের চাইতে শক্তিশালী বলে মনে আমার মনে হয়নি। যদি এই বিষয়ে আপনার বিস্তারিত আলোচনার ইচ্ছা থাকে, তাহলে চলুন সেটা আমরা ইমেইলে চলিয়ে যাই।

হিমু এর ছবি

ইমেইলে কেন? একটা পোস্টই হোক না?

ফাহিম হাসান এর ছবি

ঠিক ঠিক, ভাইয়া একটা পোস্ট দিয়ে দেন। এই নিয়ে আড্ডা দিলে মজা হবে খুব। হাসি

ফাহিম হাসান এর ছবি

দুর্দান্ত ভাইয়ের ৭৯ নং মন্তব্যের জবাব -

revenue norway

নরওয়ে এক বিচিত্র কেইস কারণ পেট্রোলিয়ামের জন্য অন্য ফিগার আউলায় যায়। তবে মোটের উপর ওখানে ২০১০ এর প্রথম বার দেখেন।

দুর্দান্ত এর ছবি

স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বেসিক ইউটিলিটি সবই স্টেট কন্ট্রোলড।

এখানে 'কন্ট্রোল্ড' কথাটাকে আরো বিস্তারিত বলার প্রয়োজন হতে পারে। এই কন্ট্রোল কিন্তু শুধুই কন্ট্রোল- নিয়ন্ত্রন। সরাসরি সেবা প্রদান বা সেবা অঙ্গনের রক্ষণাবেক্ষন, এগুলোতো সরকার অনেকদিন ধরেই করেনা, তেমনি হাসপাতাল/স্কুল/ডাকঘর/বিজলীকলগুলোর মালিকানা থেকেও ইউরোপিয় সরকারেরা সরে আসছে। ইউরোপের অর্থনৈতিক মন্দা এই সরে আসাকে আরো গতি দিচ্ছে।

বাংলাদেশে স্টেট কন্ট্রোল্ড স্বাস্থ্য বা ডাক সেবার সাথে আজকের এই স্টেট কন্ট্রোলের তুলনা করা যায়না। জার্মানি বা তার প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোতে সরবরাহ ও চাহিদা, দুই জায়গাতেই সরাসরি সেবা প্রদায়কের স্থান থেকে 'সহায়ক' ও 'মান নিয়ন্ত্রকের' ভুমিকায় সরে আসছে।

ফাহিম হাসান এর ছবি

@ দুর্দান্ত ভাই ৭০ নং মন্তব্য -এই ব্যাপারে একমত। তবে আমি পুরাপুরি সরে আসার থেকে ভাগাভাগিতে আগ্রহী।

নৈষাদ এর ছবি

সেটা কোনটা?

নৈষাদ এর ছবি

দুর্দান্ত - আমি কিন্তু ব্যাক্তিগত ভাবে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য পরিসেবার ব্যাপারে বাংলাদেশের জন্য এখনও বাংলাদেশী মডেলের কন্ট্রোলে বিশ্বাসী (অর্থাৎ সরাসরি সেবা প্রদান করবে)। আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে বাংলাদেশ সরকার সেবা প্রদানের ব্যাপারে নিয়ন্ত্রন থেকে তুলনামূলক ভাবে কিছুটা এগিয়ে আছে।

বেসরকারী খাতে স্বাস্থ্য সেবা, যেখানে প্রফিট ম্যাক্সিমাইজেশনই প্রধান, এবং খুব দুর্বল নিয়ন্ত্রক সংস্থা, একটা চিন্তা করতেই ভয় হয়্‌...।

এন্ড ফর দ্যাট মেটার, কিছু এসেন্সিয়্যাল ইউটিলি সার্ভিসও।

দুর্দান্ত এর ছবি

সরকার যতদিন যথেষ্ট রাজস্ব আদায় না করতে পারছে (রাজস্ব আয়=ক্রয়ক্ষমতা=পুঁজিবাদের ব্রহ্মাস্ত্র) ততদিন তো তাকে নিজেই প্রদানের মাধ্যমেই সেবার মান নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারন সরকার যেকাজ বাকী/কর্জে করতে পারে, বেসরকারি খাত সেটা করবেনা। তবে বেসরকারি মানেই মুনাফার জন্য সংস্থা না হলেও, তারা তো খরচ তুলতে চাইবে। যদি আইন করে এই সেবাখাতকে একচেটিয়াভাবে দাতব্য সংস্থা বা সমবায় কাঠামোতে দেয়া যায়, যদি সরকার রাজস্ব আয় থেকে এইসব সংস্থার আয়-খরচের ফাঁকটা পুষিয়ে দেয়, আর এইসব সেবাখাতকে সদা সতেজ ও নতুন রাখতে প্রয়োজনীয় গবেষনা ও উদ্ভাবক শক্তিতে একটি সবল পুঁজিপ্রবাহ নিশ্চিত করে, তাহলে সরকারের গন্ডির বাইরেও জবাবদিহী ও ভোক্তামুখী সেবাশিল্প গড়ে তোলা সম্ভব।

ফাহিম হাসান এর ছবি

বেসরকারী খাতে স্বাস্থ্য সেবা - ভাইয়া সরকার কিন্তু বেসরকারী হাসপাতাল, ডায়াগোনিস্টিক সেন্টারের অনুমতি দিচ্ছে। তারাও প্রফিট ম্যাক্সিমাইজার। ঔষধ উৎপাদন যারা করে তারাও।

হাসিব এর ছবি

বুদ্ধি ভালো। একেবারে বিশ্বব্যাংক সার্টিফায়েড। খেতে না পাওয়া লোকগুলোকে বেহাল স্বাস্থ্যসেবার ঘানি টানতে বেশি দাম দিয়ে পানি কেনার প্রেসক্রিপশন কোলন্ডি।

ফাহিম হাসান এর ছবি

@ হাসিব ভাই: আপনি ভুল বুঝছেন। কষ্ট করে আবার পড়ে দেখেন।

মন্তব্যে আমি খেতে না পাওয়া লোকের বেহাল স্বাস্থ্যসেবার ঘানি টানার কথা বলি নাই।

বলেছি সরকারের লাভ-লোকসান (cost-benefit) হিসাবে স্বাস্থ্যসেবা খাতে সরকারের যে খরচটা বাঁচবে তা সংযোজন করতে। নাহলে হিসাবে bias result আসবে।

হাসিব এর ছবি

বায়াসটাই তো দরকার, নাকি? সরকারে বায়াসনেসটা জনগণের প্রতি থাকে আদর্শ অবস্থায়। একই অবস্থায় প্রাইভেট সেক্টরের থাকে প্রফিট মোটিভ। মূল পার্থক্যটা দর্শনগত। একটা ওয়েলফেয়ার স্টেট ধরণের চিন্তা করতে সমস্যা কী?

ফাহিম হাসান এর ছবি

সমস্যা নাই। স্রেফ মতের পার্থক্য। আমি রাষ্ট্রের উপর ভরসা একটু কম করতে চাই। আবার মুক্ত বাজারও চাই না। মাঝামাঝি থাকাটাই ভালো।

প্রাইভেট সেক্টরের থাকে প্রফিট মোটিভ

ভিওলিয়া কিন্তু সামাজিক ব্যবসা। নীচে একটা কমেন্ট করেছি। ইউনূস মডেলের সংজ্ঞানুযায়ী এইটা non-dividend প্রতিষ্ঠান। এর মুনাফা মূলত পণ্যের গুণ বাড়াতে বা সরবরাহের ক্ষেত্র বাড়াতে পুন: বিনিয়োগ হবে (ব্রেক ইভেনের পর)।

হিমু এর ছবি

সামাজিক ব্যবসার প্রফিট মোটিভ নেই বলছেন? সরবরাহের ক্ষেত্র বাড়ানো মানে হচ্ছে ব্যবসার পরিধি বাড়ানো, অর্থাৎ মুনাফা বাড়ানো। এবং সেই মুনাফা ব্যবসাতেই পুনর্বিনিয়োজিত হচ্ছে। এবং এই ব্যবসা লিকুইডেট করার সুযোগও বিনিয়োগকারীর হাতে থাকছে। সামাজিক ব্যবসার প্রফিট মোটিভ গুপ্ত এবং ছদ্মবেশী।

দ্রোহী এর ছবি

কথায় বলে বাঙালির নরকে প্রহরী প্রয়োজন হয় না।

আমরা চাইছি গ্রামীণের হাতে হাত রেখে ফরাসিদের সাথে বুকে বুক মিলিয়ে কাজ করে উপরে উঠতে আর আপনি আমাদের টেনে নিচে নামাচ্ছেন?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

ফরাসী বালিকারা সুন্দর আছে। আকন্দ চাচুর আহ্বানুযায়ী কাজ করতে সমস্য হবার কথা না! হাসি

রাজীব  রহমান এর ছবি

হুম... গ্রামীনের বিভিন্ন কার্যক্রমে অনিয়োম খোজা শুরু হয়েছে... এতদিন যাদেরকে কোন প্রশ্নই করা যেত না... দেখি শেষ পর্যন্ত কি হয়... তবে গ্রামীনের এই সামাজিক ব্যবসার ব্যাপারটাতে আমি বেশ বিরক্ত। শক্তি দই বাজারে ছেড়ে ওরা দেশীয় দই-এর বাজারে খানিকটা অস্থিতি এনেছে... বেশ কিছু দই প্রস্তুতকারক বেকার হয়েছে... ব্যক্তিগতভাবে এইরকম একজনের সাথে কথা হয়েছিল একবার ঘটনাক্রমে... আবার এর বিদেশী সহযোগী বেশ বড় একটা ডেভিডেন্টও নিয়ে যায়... যেখানে হিসাবে আবার কিসব ঘাপলাও আছে...

পোস্টের জন্য ধন্যবাদ...

জনৈক পাঠক এর ছবি

ভাই বলতে পারেন আলো বাতাস নিয়া সামাজিক ব্যবসা কবে শুরু হইবো। তাইলে আমরা "সস্তায়" বিশুদ্ধ আলো বাতাস খাইয়া পেট ভরুম। মন খারাপ

রু (অতিথি)  এর ছবি

একটা রিসাইকেল প্ল্যান্ট স্থাপন (সুয়ারেজ থেকে সুপেয় পানি) এবং এই প্রকল্পের তুলনামুলক কোন চিত্র কি বের করা যায়? আর্সেনিক যদি মূল সমস্যা হয় তাহলে এলাকাভিত্তিক ফিল্টার কি বিকল্প ব্যবস্থা হতে পারে?

পোয়েট অব এ ডিমাইজ এর ছবি

এশিয়া তাদের বাণিজ্য-প্রসারণে আমাদের নোবেলজয়ী ড. ইউনূস যে একজন সহায়ক শক্তি, তা নিয়ে সন্দেহ থাকে না।

উনি এরকম অনেক দেশ ও কম্পানিরই সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করেন। তারপরও ব্যবসায়ী ইউনুসের প্রতি অনেক অন্ধ আকুণ্ঠ সমর্থন দেন, এই অযৌক্তিকতার কারণ আমার কাছে বোধগম্য নয়!!!

পোস্টে চলুক

কবি মৃত্যুময়,

ফাহিম হাসান এর ছবি

বাংলাদেশে জেলা ভিত্তিক মাথাপিছু সুপেয় পানি প্রাপ্যতার পরিসংখ্যান নিয়ে ইন্টারনেটে কিছু পাচ্ছি না। আপনি পেলে জানায়েন।

হিমু এর ছবি

একটা নতুন আইডিয়া দিলেন।

ফাহিম হাসান এর ছবি

হাসি
Water management in Bangladesh: an analytical review

এইটা দেখতে পারেন। তবে তেমন ভালো না, পাঁচমিশালী লেখা। কিছু তথ্য আছে, এই যা।

অমিত এর ছবি

@ ফাহিম হাসান

কিছু ক্ষেত্রে আবার রাষ্ট্রের নিরাপত্তা জড়িত (সামরিক খাত) সেগুলোর ব্যাপারে এই রাষ্ট্রই মূল ভূমিকায় থাকুক। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন - এগুলো ভাগ করে নিতেই পারে দোষ নাই। খালি খেয়াল রাখতে হবে যাতে কর আরোপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের আওতায় থাকে।

"নিরাপত্তা জড়িত" ব্যাপারটায় মার্কেট ওপেন করলে কি সমস্যা ? শিক্ষা, একটি দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার- সেটা যদি সরকার মনিটর করতে পারে, পানি- যা ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব, সেটাও যদি মনিটর করা সম্ভব হয়, তাহলে নিরাপত্তা কেন নয় ?

ফাহিম হাসান এর ছবি

কারণ সামরিক নিরাপত্তার degree of non- excludability এবং degree of non-rivarly শিক্ষার থেকে বেশি। দুটোই public good. কিন্তু সামরিক নিরাপত্তা public good এর সংজ্ঞার শর্তটা বেশি পূরণ করে। সেবা/ পণ্য হিসেবে এরা এক না।

আবার এদের রিটার্নের ধরনও আলাদা। সরকারকে risk neutral হলে চলে না, risk averse হইতে হয়।

অমিত এর ছবি

আর পানি আর "নিরাপত্তা জড়িত" ব্যাপারটার মধ্যে public good এর সংজ্ঞার শর্তটা কে বেশি পূরণ করে ?

ফাহিম হাসান এর ছবি

নিরাপত্তা।

হিমু এর ছবি

বেশ কয়েক বছর আগে হিজবুল্লাহর সাথে ইসরায়েলের যে যুদ্ধ হয়েছিলো, সেটার মূল ইস্যুটা অনেকেই কনভেনিয়েন্টলি এড়িয়ে গিয়ে ধামাচাপা দিয়েছিলো। যুদ্ধটা হয়েছিলো লিতানি নদীর পানি নিয়ে, যেটা আমাদের মিডিয়া কাভার করতে, বা হৃদয়ঙ্গম করতে ব্যর্থ হয়েছিলো। যে কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তান লাঠালাঠি, সেই কাশ্মীরও কিন্তু সিন্ধুর পানির নিয়ন্ত্রণের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। তুরস্কে পানির নিয়ন্ত্রণ দিয়ে কুর্দিদের তেজ একটু একটু করে দমন করা হয়েছে। পানি আর নিরাপত্তা দুটো বিচ্ছিন্ন বিষয় না, একটা আরেকটার সাথে খুব জটিলভাবে জড়িত। পানি ছাড়া নিরাপত্তার অর্থের আয়ু সাত দিন, কারণ সাত দিনের বেশি পানি ছাড়া মানুষ বাঁচে না।

ফাহিম হাসান এর ছবি

ধন্যবাদ নতুন জিনিস জানানোর জন্য। মাইনষের যুদ্ধ করার কারণ বেশি খোঁজা লাগে না। পাখির গু নিয়াও যুদ্ধ হইছে এককালে।

একটা জিনিস খেয়াল করে - এম্নিতে পানির কোন দাম নাই। কারণ এইটা সহজ প্রাপ্য। পানি পণ্য না, সুপেয় পানি পণ্য।

আবার সেচ মৌসুমে কৃষিতে পানি লাগে।

নদীতে পানি নাই তো মাছ নাই। মাছের জন্য পানি লাগে।

এই তিন পানি আদতে তিনটি আলাদা পণ্য।

হিমু এর ছবি

আরো একটা পণ্য আছে, নাব্যতার জন্যে পানি। এবং প্রত্যেকটার জন্যেই সামরিক নিরাপত্তা ও সামাজিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। আর কেবল সুপেয় নয়, পানের অযোগ্য পানিও পণ্য হতে পারে, যদি সেটা সুপেয় পানির কাঁচামাল হয়।

গুয়ানো তো অতি উৎকৃষ্ট জিনিস, রীতিমতো দামী। হাফু আর দ্দীণূ স্যার পাখি হলে, দেশটার আয় চড়াৎ করে বেড়ে যেতো।

অমিত এর ছবি

পণ্য ১০১ কোর্স করে আপাতত ধন্য হয়ে গেলাম।

এম্নিতে পানির কোন দাম নাই। কারণ এইটা সহজ প্রাপ্য।

চিন্তিত সহজপ্রাপ্য ? খামাখা আমরা ফারাক্কা বাঁধ নিয়ে কথাবার্তা বলি !

জোকস অ্যাপার্ট, পানি অবশ্যই পণ্য এবং কিছু জায়গায় "সহজপ্রাপ্য" হলেও জেনারেলি পানিকে এই ট্যাগ দিতে আমার যথেষ্ট আপত্তি আছে।সেটা ভিন্ন তর্ক। আর বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হলে সরকারী পানির সরবরাহের কভারেজ হওয়া উচিত ১০০%। বেসরকারী বোতলজাত পানি আছে এবং আরও আসুক, আপত্তি নাই।যাদের সামর্থ্য আছে, তারা কিনবে। এই আমেরিকাতেও লোকজন প্রচুর কিনে যদিও ইপিএ রেগুলেশন অনুসারে যেকোন কল থেকে বের হওয়া পানি পানের যোগ্য হতে হবে।
আপনার প্রোফাইল দেখে মনে হল কানাডায় থকেন।ঐখানে কি অবস্থা ? বেসরকারকারী প্রতিষ্ঠান থেকে পানি নেন না কি ?

ফাহিম হাসান এর ছবি

@ অমিত ভাই: (৯৮ নং মন্তব্য)

সহজপ্রাপ্য ?? জ্বি। অন্য অনেক দেশের থেকে গড়ে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে সারফেস ওয়াটার ফ্লো এর পরিমাণ বাংলাদেশে বেশি - 1,073 million acre feet (MAF)

৯৮,০০০ হেক্টর inland water bodies

২৪,০০০ কিমি স্ট্রিম চ্যানেল

Banglapedia আমাকে বলেছে - "The river system that flows through Bangladesh comprises the third largest source of fresh water discharge to the world's oceans. "

--------------------------------------------

আর আমি কানাডায় বসে কী খাই তা আলোচনার জন্য অপ্রাসঙ্গিক, উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছি না। আশা করি কিছু মনে করবেন না।

অমিত এর ছবি

পোস্ট, মন্তব্য আর প্রতিমন্তব্যে বিভিন্ন দেশের উদাহরণ এসেছে। সেখানে আপনি সহজপ্রাপ্যতা কেবল বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই বুঝিয়েছেন, সেটা বুঝতে ভুল হয়েছিল। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই তাহলে পরিস্থিতি দেখি। সারফেস ওয়াটার ফ্লো-এর একটা গড় নাম্বার দিয়েছেন। এই গড় ব্যাপারটা অনেকাংশেই বাস্তব অবস্থা বুঝায় না। ধরেন দুইটি মানুষ, যাদের মধ্যে একটি ছেলে আর আরেকটি মেয়ে, তাদের মধ্যে গড় করে দেখা গেল যে গড়ে প্রত্যেক মানুষের একটি করে অন্ডকোষ থাকে। ব্যাপারটা কি ঠিক ? সারফেস ওয়াটার ফ্লো কি উত্তরবঙ্গে যেরকম, সিলেটের হাওরের আশেপাশে একইরকম ? ঢাকা আর পার্বত্য চট্টগ্রামে কি এক ? জেলাভিত্তিক তথ্য পেলে বলতে পারতাম। আর বাংলাদেশের মানুষের অধিকাংশই পানি সংগ্রহ করেন টিউবওয়েলের মাধ্যমে (শহরে ৬৮%, গ্রামে ৯৬%), যা কিনা গ্রাউন্ডওয়াটার। সেই গ্রাউন্ডওয়াটার লেভেলও নেমে যাচ্ছে নিচে, তার উপর আছে আর্সেনিক সমস্যা। আপনি উপরে বাংলাদেশের ওয়াটার ম্যানেজমেন্টের উপর একটি পেপারের লিন্ক দিয়েছেন। সেখানেই দেখতে পারছি অ্যানুয়েল পার ক্যাপিটা ওয়াটার অ্যাভেইলিবিলিটি কমে যাচ্ছে।আরও একটা ব্যাপার হল সহজপ্রাপ্যতার মাপকাঠি ? আমি সহজপ্রাপ্য বলতে বুঝি কল খুললেই পানি পড়ে এরকম। আপনিও কি সেটা মনে করেন ? নিচে কিছু রিলেটেড লিন্ক দিলাম



এছাড়া এই সচলেই জাহিদ ভাইয়ের কিছু চমৎকার পোস্ট আছে, সেগুলোও দেখতে পারেন।

আপনাকে করা প্রশ্নটা আলোচনার জন্য প্রাসঙ্গিক হত না যদি প্রশ্নটা হত আপনার ব্যাংক ব্যালেন্স নিয়ে। আপনি উপরে বলেছেন,

"বিশুদ্ধ পানি" অবশ্যই অধিকার। কিন্তু সেইটা সরকারি ভাবে হতে হবে এমন কোন কথা নেই।

সেখান থেকেই আসলে প্রশ্নটা আসে। আমরা যারা প্রবাসী, তারা উন্নত দেশে এসে অবকাঠামোগত কিছু চমৎকার সুবিধা ভোগ করি। আমি মনেপ্রাণে চাই শহর-গ্রাম নির্বিশেষে দেশের মানুষও ঠিক একই সুবিধা পাক। এখন আমি "ক" সুবিধা ভোগ করি আর অন্য সবাইকে যদি বলি "খ" আর "গ" এ জোর দাও, তাহলে একটু সমস্যা হয় বৈকি।

ফাহিম হাসান এর ছবি

@ অমিত ভাই, গড় করতে হলে সমজাতীয় হওয়া লাগে। আপেল আর কমলা যোগ করে যায় না। আপেল ও কমলার মধ্যে গড়ে কয়টা বিচি আছে - এই হিসাব অর্থহীন। অন্ডকোষ নিয়ে সমীক্ষা চালানোর আগে সঠিক স্যাম্পল নেওয়া গবেষকের কর্তব্য।

আপনার পরবর্তী অংশের সাথে একমত। জেলা অনুযায়ী তথ্য দরকার। জেলাভিত্তিক হিসাব আমিও খুঁজছি (আমার ৯৬ নং মন্তব্য দেখুন)। কিন্তু পাচ্ছি না।

যাই হোক মূল কথায় আসি। ১০১ কোর্সের মূলকথা হল যা scarce নয় তা পণ্য নয়। পণ্য হতে হলে scarce হতে হবে। বাতাস পণ্য না। এর দাম নাই। কিন্তু বিশুদ্ধ বাতাসের দাম আছে। সহজ প্রাপ্যতা বলতে আমি এইটাই বুঝিয়েছি।

আমি সহজপ্রাপ্য বলতে বুঝি কল খুললেই পানি পড়ে এরকম।

ভাইয়া, ট্যাপ খুলে পানি পাওয়া তো বিশাল ব্যাপার। অবকাঠামোর সুবিধা না থাকলে তা সম্ভব না। আপনাকে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে পানি তুলতে হবে, পাইপ দিয়ে সাপ্লাই দিতে হবে, মনিটর করতে হবে। সহজপ্রাপ্যতাকে এইভাবে সংজ্ঞায়িত করলে মুশকিল।

সচল জাহিদ ভাইয়ের লেখা আমার ভালো লাগে খুব খুব বেশি।

আরেকটা কথা -

আমরা যারা প্রবাসী, তারা উন্নত দেশে এসে অবকাঠামোগত কিছু চমৎকার সুবিধা ভোগ করি। আমি মনেপ্রাণে চাই শহর-গ্রাম নির্বিশেষে দেশের মানুষও ঠিক একই সুবিধা পাক।

আমিও চাই বিশুদ্ধ পানির সুবিধা সবাই পাক। এই ব্যাপারে আমি চৈনিক নেতা Deng Xiaoping এর উক্তির স্মরণাপন্ন হই:

বিলাই সাদা না কালো সেইটা কোন ব্যাপার না। ঠিকমত ইঁদুর মারতে পারলেই হল।

তাই আমি জোর দিতে চাই এফিশিয়েন্ট পদ্ধতির উপর। কানাডা সরকার আমাকে সুবিধা দেয় তার সেই ক্ষমতা আছে বলে। আমার আয়ের বিশাল অংশ কর বসায় সে নিয়ে নেয়। আমার ৭৮ নং মন্তব্য দেখেন।

আমরা সবাই চাই দেশের মানুষ কম দামে সুপেয় পানি পাক। পদ্ধতির ব্যাপারে আসেন না একটু হিসাব করে দেখি কোন রাস্তাটা বেশি এফিশিয়েন্ট। ভিওলিয়া ধান্দাবাজি করলে ঐটারে লাথি মারতে আমার আপত্তি নাই।

হিমু এর ছবি

এক দেশের সুলভ জিনিস অন্য দেশে দুর্লভ হতে পারে। তাই বাংলাদেশের পানি প্যাকেজড ওয়াটার হিসেবে কিছু দূরে আরব আমিরাতে অনায়াসেই একটা লাভজনক পণ্য হতে পারে, বিশেষ করে আমিরাতে যেহেতু পানির একটা বড় অংশ আসে বেশ ব্যয়বহুল ডিস্যালিনাইজেশন করে। সুদান এবং মিশরের রাজনৈতিক আবহাওয়া বদলের পর তাই নীলনদের পানি এখন পাইপে করে হয়তো ইসরায়েলেও যেতে পারে। তাই না?

ফাহিম হাসান এর ছবি

অবশ্যই পারে। এজন্যই বলছিলাম বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে সাধারভাবে পানি পণ্য না (কিন্তু ফারাক্কার জন্য উত্তরবঙ্গে সংকট আছে )। সাব-সাহারান আফ্রিকাতে এইটাই পণ্য - কারণ scarcity

অমিত এর ছবি

ভাইয়া, ট্যাপ খুলে পানি পাওয়া তো বিশাল ব্যাপার। অবকাঠামোর সুবিধা না থাকলে তা সম্ভব না।

সেই অবকাঠামো সুবিধাটাই আমি চাই সরকার প্রদান করুক। আমি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট অথবা ঘরে ঘরে ফাইবার অপটিক কেবল চাই না। হাজার হাজার বছর আগে যেই সুবিধা মহেনজোদারো অথবা রোমের লোকজন পেত, আমি চাই সরকার শুধু সেটাই দেশের সব মানুষকে দিক। ২০০৪ সালের হিসাবে দেশের জনসংখ্যার মাত্র ৬ শতাংশ এই সুবিধা পায়।

অমিত এর ছবি

আরও একটা ব্যাপার যেটা হতে পারে পুরোপুরি প্রাইভেটাইজ করে দিলে, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মার্কেট ম্যানিপুলেশন

ফাহিম হাসান এর ছবি

লিংকের জন্য ধন্যবাদ। পড়ে দেখবো।

মার্কেট ম্যানিপুলেশান যাতে না হয় সে ব্যাপারে সরকারের লক্ষ্য রাখতে হবে। ঠিকমত মার্কেট ডিজাইন করলে ম্যানিপুলেশানের আশংকা কমে যায়। তবে ভয় থেকেই যায়। চিকিৎসা সেবা ভাগ করতে পারলে, অ্যাপেলোকে ঢুকতে দিলে অন্য খাতে সমস্যা কী?

হিমু এর ছবি

যে কারণে প্রতিরক্ষাকে প্রাইভেটাইজ করা উচিত না। পানি পুরোপুরি নাগরিক নিরাপত্তার সাথে জড়িত।

চালের বাজারও কিন্তু পুরোটাই বেসরকারী খাতে, কিন্তু সরকারকে দুইদিন পর পর চাল নিয়ে নানা হুমকিধামকির অভিনয় করতে হয়, তাই না? সরকার মার্কেট ম্যানিপুলেশনের কেশাগ্র স্পর্শ করার সাহস/সদিচ্ছা/সক্ষমতা রাখে না।

আর চিকিৎসা সেবাকে বেসরকারী খাতে দিয়ে সেই খাতের উন্নতিটা কিন্তু হয়েছে জিরো-সাম গেইমে। বেসরকারী চিকিৎসা পরিকাঠামোতে আমরা সরকারী খাতের রিসোর্স (জনসম্পদ) বহুলাংশে অপব্যবহৃত হতে দেখেছি। সরকারী হাসপাতালের হোমড়াচোমড়া চিকিৎসকরা কর্মস্থলে রিপোর্ট না করে বেসরকারী হাসপাতালে মন দিয়ে চিকিৎসা করেন। কিন্তু এর খেসারতটা দিচ্ছে দেশের বড় দরিদ্র অংশ। আজ যদি সবাইকে সরকারী স্বাস্থ্যসেবা নিতে হতো, আপনার কি মনে হয় না, এ্‌ই খাতে জবাবদিহিতা আর কোয়ালিটি কনট্রোল আরেকটু ভালো থাকতো?

টেলিটকের দিকে দেখুন। বাপেক্সের দিকে দেখুন। বাংলাদেশ বিমানের দিকে দেখুন। বেসরকারী প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে এদের দুর্বল করে রাখা হয়েছে। পানির ক্ষেত্রেও তা-ই হবে। সেটার খেসারতও দেবে দরিদ্ররাই। পৃথিবীর সব দেশে তা-ই হয়।

ফাহিম হাসান এর ছবি

আরো একটা পণ্য আছে, নাব্যতার জন্যে পানি

- ঠিক। এইটা বাদ পড়েছিল।

ফাহিম হাসান এর ছবি

সুপেয় পানির প্রাপ্যতা খুব স্পর্শকাতর ও প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। ভিওলিয়া বিতর্কে আমার আগ্রহ জাগিয়ে তুলেছে নিচের কয়েকটি প্রশ্ন:

১। গ্রামীণ ভিওলিয়া একটি সামাজিক ব্যবসার মডেল। ইউনূস মডেলের সংজ্ঞানুযায়ী এর মুনাফা মূলত পণ্যের গুণ বাড়াতে বা সরবরাহের ক্ষেত্র বাড়াতে পুন: বিনিয়োগ হবে (ব্রেক ইভেনের পর)

আদতে কি তাই হচ্ছে? কে মনিটর করে? রিপোর্ট কই?

২। ভিওলিয়া কি কর দেয়? সামাজিক ব্যবসা কি করের আওতাভুক্ত?

৩।ভিওলিয়া ব্যবসা করছে cross-subsidization এর ভিত্তিতে। এইটা কতটা যৌক্তিক?

৪।যেসব জায়গায় ভিওলিয়া অপারেট করে, পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা কি ভিওলিয়াপূর্ব অবস্থা থেকে ভিওলিয়া পরবর্তী সময়ে কমেছে? এই সংখ্যা কি স্ট্যাটিসটিকালি সিগনিফিকেন্ট?

হিমু এর ছবি

ইউনূসের মডেলের মধ্যে শুভঙ্করের ফাঁকি আছে। তিনি বলছেন, সামাজিক ব্যবসায় বিনিয়োগকারী লাভ তুলে নিতে পারবে না, সেই লাভ পুনর্বার ব্যবসায় বিনিয়োগ আকারে সঞ্চালিত হবে। কিন্তু বিনিয়োগকারী তো ব্যবসাটির মালিকানাতেই থাকছেন? ব্যবসার আকার বাড়লে কি তার লাভ তৎক্ষণাৎ তুলে নেয়ার কোনো প্রয়োজন রয়েছে? ইউনূস মডেলে বিনিয়োগকারীর জন্যে ভবিষ্যতে ব্যবসা হস্তান্তরের সুযোগও রয়েছে। একটি সামাজিক ব্যবসা যখন শুরু হয়, তখন মুনাফার পজিটিভ ফিডব্যাকের কারণে সে ঐ খাতে অন্যান্য "অসামাজিক" ব্যবসাগুলোর গণেশ উল্টে দেয়। এমনটিই ঘটেছে বগুড়ায় গ্রামীণ আর ডানোনের শক্তি দইয়ের ক্ষেত্রে। সেখানে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ঋণীরা ঋণ পেয়েছে গোপালনের জন্যে, এবং দুধ তারা নির্দিষ্ট দামে সারা বছর ডানোনের কাছে বিক্রি করতে ঋণের শর্তে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সামাজিক ব্যবসা তাহলে শুরুই হচ্ছে কাঁচামালের দামকে পেগ করে, যেটা অন্য দই নির্মাতার চেয়ে প্রতিযোগিতায় ডানোনকে এক ধাপ এগিয়ে রাখবে। যেহেতু অন্য গ্রাম্য দই প্রস্তুতকারী ব্যবসা থেকে লাভ তুলে নিয়ে জীবনধারণ করেন, লাভের খুব অল্প অংশই তারা পুনর্বিনিয়োগ করতে পারবেন। সামাজিক ব্যবসা এখানে আবার এগিয়ে যাবে, কারণ মুনাফা তো বিনিয়োগকারী তুলে নিতে পারছেন না। আবারও সুবিধা। কাজেই উত্তরোত্তর এই সামাজিক ব্যবসাটি বাজারের নিয়মেই বাজারের সিংহভাগ দখল করে। যখন সে বাজারের ওপর বহুলাংশে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করলো, তখন যদি ইউনূস মডেল মোতাবেক বিনিয়োগকারী তার ব্যবসাটি চড়া দামে কারো কাছে হস্তান্তর করেন, কে আপত্তি করবে? আর এই ব্যবসাটি অন্যত্র পুঁজিবাজারে তার সুনাম বৃদ্ধিতেও সহায়ক, এবং অন্যত্র পুঁজিবাজার থেকে নগদ মুনাফা তুলতেও সামাজিক ব্যবসার কোনো বাধা নেই।

এই মডেলটি মিষ্টি কথায় আবৃত একটি নির্মম কৌশল। বড় মাছ ছোটো মাছকে যাতে সমাজসেবা হিসেবে খেয়ে ফেলতে পারে, তার একটি প্রেসক্রিপশন এই সামাজিক ব্যবসা। এটাকে তাই ব্যক্তিগতভাবে একটা অক্সিমোরোন মনে করি, ওয়ার ফর পিসের মতো।

ফাহিম হাসান এর ছবি

#

কিন্তু বিনিয়োগকারী তো ব্যবসাটির মালিকানাতেই থাকছেন? ব্যবসার আকার বাড়লে কি তার লাভ তৎক্ষণাৎ তুলে নেয়ার কোনো প্রয়োজন রয়েছে?

তৎক্ষণাৎ কেন, কখনোই ডিভিডেন্ড দেওয়া হয় না।

#

বড় মাছ ছোটো মাছকে যাতে সমাজসেবা হিসেবে খেয়ে ফেলতে পারে, তার একটি প্রেসক্রিপশন এই সামাজিক ব্যবসা।

বুঝি নাই। কে কাকে কিভাবে খাচ্ছে? একটা উদাহরণ যদি দিতেন।

হিমু এর ছবি

দইয়ের সামাজিক ব্যবসায়ী খাচ্ছে দইয়ের ট্র্যাডিশনাল ব্যবসায়ীর মার্কেট হিস্যা। সেটা খাচ্ছে বাজারের নিয়মেই, কিন্তু গোটা ব্যাপারটা ওপর সামাজিক কল্যাণের একটা রং চড়ানো হচ্ছে, যেটাকে তঞ্চকতা মনে করি।

ফাহিম হাসান এর ছবি

গোটা ব্যাপারটা ওপর সামাজিক কল্যাণের একটা রং চড়ানো হচ্ছে, যেটাকে তঞ্চকতা মনে করি।

আমিও।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

সামাজিক ব্যবসার মুলসূত্রগুলোর একটি হচ্ছে, আপনি যখনই চাইবেন তখনই সামাজিক ব্যবসাকে 'অসামাজিক ব্যবসায়' রূপান্তরিত করতে পারবেন। ডিভিডেন্ট বিতরণ হয় না সত্যি, কিন্তু জনকল্যানেও ব্যয় হয় না, কোম্পানিকে সম্প্রসারণ করতে ব্যবহৃত হয়। বিষয়টা খিয়াল কইরা।

ফাহিম হাসান এর ছবি

বুঝি নাই ভাইয়া। একটা ব্যবসা তো রেজিস্ট্রেশান করতে হয়। আপনি চাইলেই নন-প্রফিটকে প্রফিটেবল বিজনেস হিসাবে বদলাতে পারবেন না।

জনকল্যানেও ব্যয় হয় না, কোম্পানিকে সম্প্রসারণ করতে ব্যবহৃত হয়।

কোম্পানি সম্প্রসারণ বলতে ইউনূস সাহেব আওতা বাড়ানো অথবা পণ্যের মান বাড়ানোর কথা বলছেন। তাতে জনকল্যাণ হবে বৈকি। আদতে মান বাড়াবে কিনা এইটা দেখার দায়িত্ব সরকারের। এইটুকু মনিটর তো করতেই হবে। ওয়েল ফেয়ার স্টেইট হতে চাইলে মনিটর করার স্কিল শেখার বিকল্প নাই।

হিমু এর ছবি

সামাজিক ব্যবসা তো নন-প্রফিট নয়। এটা লাভ করবে, কিন্তু সেই লাভ বিনিয়োগকারী তুলে নিতে পারবে না। কিন্তু সম্প্রসারিত ব্যবসাকে ১০ বছর পর হস্তান্তর করতে পারবে না, এমনটা তো বলা নেই। ১০ বছর পর ফেঁপে ওঠা ব্যবসা হাত বদল হবে, পুনর্নিবন্ধন হবে, সমস্যা কোথায়?

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সরকার ভালো খাওয়ার পানির ব্যবস্থা করলে নানা দিকে লাভ। যেমন-
(১) পানি আর ফুটিয়ে খেতে হবে না
(২) না ফোটাতে হলে গ্যাস ক্ষয় কম হবে
(৩) পানি বাহিত রোগের সংক্রমন থেকে বাঁচা যাবে এবং প্রকারান্তরে বছরে হয়ত কোটি কোটি টাকার সাশ্রয় হবে।

আমি কনজারভেটিভ। পানি নিয়ে সরকার ব্যবসা করুক, বিদেশীরা নয়। গরুকে একবার ক্ষেতে ঢুকতে দিলে একে আর গুঁতিয়ে বের করা যাবেনা। ক্ষেত ছোবড়া বানিয়ে তারপর ছাড়বে।

amader shomossha এর ছবি

ধরুন, আমি পদুয়ার লোক। আমার খাবার পানি সমস্যা। টিউবওয়েলের পানিতে আরসেনিক। ফুটিয়ে ও খাওয়া যায়না। পুকুরের পানি, মেঘনার পানি খাওয়া নিষেধ।
বাজারে হরেক রকমের পানি পাওয়া যায়। এক বোতল MUM এর দাম জানেন? গেরামিনের পানি আমাদের ভরসা। আপনারা একই দরে একই মানের পানি দেন, আমরা আপনাদেরটা কিনব।
আমাদের আশার বাণী দিয়েন না, mathematics, economics শিখাইয়েন না। পানি দেন। কিননা খামু।

হিমু এর ছবি

আপনি যাতে গেরামিনের পানির চেয়েও সস্তা দরে সরকারি পানি পান, সেজন্যই প্যানপ্যান করি ভাইডি। আপনার যদি পয়সা গোয়া বেয়ে পড়ে, আপনি ম্যাথমেটিক্স ইকোনমিক্স শিখবেন কেন, আপনি ড্রাগনের নুনু কেটে স্ট্র বানিয়ে লাখ টাকা দাম দিয়ে পানি কিনে খাবেন, আমার কোনো আপত্তি নাই।

অমিত এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

amader shomossha এর ছবি

পানি চাইছিলাম। ধমক দিলেন?
পয়সা বেশি থাকলে তো MUM কিনেই খামু, দাদা।

"আপনি যাতে গেরামিনের পানির চেয়েও সস্তা দরে সরকারি পানি পান, সেজন্যই প্যানপ্যান করি ভাইডি।"
সরকারি পানি! হাসালেন দাদা। আমি না পাই, আমার নাতিনী পাবে তো?
আপনি কি সরকারি পানি খান? সরকার কি খায়? উনাদের মিটিং গুলাতে তো দেখি MUM খায়।

হিমু এর ছবি

আমি যখন দেশে ছিলাম, সরকারি পানি ফুটাইয়া খাইতাম। এখন দেশের বাইরে সরকারি পানি না ফুটাইয়া খাই।

আপনার নাতনি পাইলেই বা খারাপ কী? আপনের নানাদাদা তো ইন্টারনেট পায় নাই, তাই না?

সরকার মাম খাইলে খাক, কিন্তু পাবলিকরে সস্তায় পানি দিতে সরকার বাধ্য। বাধ্য না হইলে আপনারে আমারে মিল্লা বাধ্য করাইতে হবে। নাইলে আপনার নাতনিরে হয়তো আলোবাতাসও কিন্না খাইতে হইতে পারে। বুঝলেন?

ফরিদ এর ছবি

পানি নিয়ে অনেক ভালু ব্যাবসাও করা যায়। সেইগুলা করতে কেউ বঙ্গদেশে আসে না কেনু কেনু কেনু?

http://www.fastcompany.com/magazine/154/a-sea-of-dollars.html

মাহবুব রানা এর ছবি

চলুক

ওডিন এর ছবি

এম্নিতেই এই জীবনের আর কিছু ভাল্লাগেনা, রাতেরবেলা এসে পানির অভাবে ঠিকমতো শাওয়ারটাও হয়না, তাই ভাবছিলাম পরজন্মে জলহস্তি হমু, মনের সুখে পানিতে দাপাদাপি মানে জলকেলি করে করে জীবনটা কাটায়া দিমু। এখন খাওনের পানিই যদি এইভাবে কিন্তে হয় তাহলে ফরাসিসুগন্ধিযুক্ত ঈষদুষ্ণ জনে স্নান তো অনেক দুরের ব্যপার... ওঁয়া ওঁয়া

কালামিয়া এর ছবি


"ক" গ্রামের লোকজন আর্সেনিকের জন্য *লাল রংয়ের টিউবওয়েলের পানি পান করতে পারেন না। সরকারও এমন কোন ব‌্যবস্থা করেন নাই যাতে তারা আর্সেনিক মুক্ত পানি পেতে পারেন। সেরকম কোন সম্ভবনাও নাই নিকট ভবিষ্যতে যে সরকার সুপেয় পানির ব‌্যবস্থা করবেন। অনেক আন্দোলন, ভাংচুর, হরতাল, মানব বন্ধন, স্বারক লিপিতেও সরকারের টনক নরে নাই। তাই তারা বাধ্য হচ্ছেন অনেক কটু কথা শোনার পরেও যেই বাড়িতে *সবুজ রংয়ের টিউবওয়েল আছে সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করতে।


"খ" একটা প্রাইভেট কোম্পানি। "ক" গ্রামে একটা ওয়াটার প্লান্ট বসিয়ে ডিলারদের মাধ্যমে আর্সেনিক মুক্ত পানি সরবরাহ করতে শুরু করল। যাদের সামর্থ আছে তারা সেই পানি কিনে জীবন ধারণ করল। আর যারা পারল না তারা আগের মতই অনেক কটু কথা শোনার পরেও যেই বাড়িতে সবুজ রংয়ের টিউবওয়েল আছে সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করতে লাগল।


একদিন "ক" গ্রামের মি: পান্ডা আপনার এই ব্লগ পরে জানতে পারল "খ" কম্পানি তাদের সাথে জালিয়াতি করছে এবং পানি নিয়ে ব্যবসা করছে। যেহেতু পানি নিয়ে ব্যবসা করা যাবে না তাই মি: পান্ডার লোকজন "খ" কম্পানিকে পেদিয়ে "ক" গ্রাম থেকে বের করে দিল। গ্রামের (সামর্থবান) লোকজন আবারও পরল মহা বিপদে। তাই তারা মি: পান্ডার কাছে গিয়ে জিজ্ঞসা করল এখন কি উপায়। মি: পান্ডা বলল, কোন সমস্যা নাই সরকারেকেই আমাদের বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে হবে, তাই সরকারের কাছে একটা আবেদন পত্র দিতে হবে। ৭ দিন পরে সরকার থেকে উত্তর আসে, তোমাদের আবেদনের সিরিয়াল নাম্বার ৯,৯৯৯। এখন আমরা আবেদন পত্র ১ এর ব্যবস্থা করছি। তোমাদের নাম্বার কবে আসবে সংয় খোদাও বলতে পারবে না।


আপনি বলছেন "খ' কম্পানি পানি নিয়ে ব্যবসা করতে পারবে না এবং এইটা ওপেন সিক্রেট সরকারও নিকট ভবিষ্যতে "ক" গ্রামের মত হাজার হাজার গ্রামে আর্সেনিক মুক্ত পানি সরবরাহ করতে পারবে না। তাহলে পোস্টে লেখকের মতামত কি এই সমস‌্যা থেকে উত্তরণের।

*লাল রংয়ের টিউবওয়েল - আর্সেনিকের মাত্রা ভয়াবহ; সবুজ টিউবওয়েল - আর্সেনিকের মাত্রা এখনও সহনীয়; (পানি ফুটিয়ে পান করলেও আর্সেনিক মুক্ত করা যায় না)

হিমু এর ছবি

দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি আর কুড়ি হাজার টাকার ব্যাঙ্ক ড্রাফটসহ পুনরায় মন্তব্য করুন, সমস্যা থেকে উত্তরণের রাস্তা বাতলে দিচ্ছি। সরকারের উত্তরপত্রটা স্ক্যান করে মন্তব্যের সাথে সংযোজন করবেন।

কালামিয়া এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ কিন্তু এই মুহুর্তে এত টাকা আপনাকে আমার পক্ষে দেয়া সম্ভব না।

নোট: নিচের ছবিগুলো "সবুজ টিউবওয়েল থেকে পানি সংগ্রহ: একটি সামাজিক সমস্যা এবং উত্তরণের উপায়" স্টাডির সাথে যারা জড়িত তাদের হয়ত কমন পরবে, তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে কোন ব্যক্তিগত ইনফরমেশন যেন এখানে আলোচিত না হয়।

"ক' গ্রামের একটি সবুজ টিউবওয়েল -১ (ছবি দেখেই বুঝা যাচ্ছে অবস্থা সম্পন্ণ গৃহস্থ বাড়ী)

"ক' গ্রামের একটি সবুজ টিউবওয়েল -২ (ছবি দেখেই বুঝা যাচ্ছে অবস্থা ভাল না এই গৃহস্থ বাড়ীর)

দুটো ছবিতেই দেখা যাচ্ছে এই টিউবওয়েল গুলো বাড়ীর অন্দর মহলে রান্নাঘরের আশেপাশে। যেখানে বাড়ীর মেয়েরাই বেশির ভাগ সময় থাকে। তাই যারা পানি সংগ্রহ করতে আসে তাদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাইরের বাড়ীতে অপেক্ষা করতে হয় এবং অনেক সময় পানি না নিয়েও ফিরে আসতে হয়, কারন গৃহকর্তা বা কত্রী হয়ত বলেন এখন না পরে আসেন।

এখানে এই ছবি দেবার উদ্দেশ্য সবুজ টিউবওয়েল থেকে পানি সংগ্রহের সামাজিক সমস্যাটার প্যাটার্নটা বুঝান। কারও ব্যাবসার লালবাতি বা সবুজ বাতির জ্বালানোর জন্য না।

অনাহুত বা রবাহুত এর ছবি

হিমুর পিছলামি ভালোই লাগলো। সমাধান দিতে না পারলে সমস্যা নিয়া হাজার খোঁচালেও লাভ নাই; এইটা হয়তো কেউ কেউ না জানলেও আমপাবলিক আর ফরাসী কোম্পানীগুলা ভালোই জানে(এইরে আবার আমাকে সমাধান দিতে বলবেন না যেন; আপনি আচরি শিখাও পর কে আপনারাই তো আবার ব্রাত্য করেছেন! হি হি)।

হিমু এর ছবি

জনাব রবিউল, তাহলে তো আপনার ভাত যারা যোগায়, সেই সংবাদপত্রঅলারা পুরাই লসের কাজ করে যায় সারা জীবন। কারণ ওনাদের কাজই সমস্যা নিয়ে হাজার খোঁচাখুঁচি করা। ভাতারদের গিয়ে মুখের উপর পিছলা ডাকতে পারবেন? হে হে!

সমস্যার সমাধান করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের অনেক বেতনখেকো কেষ্টুবিষ্টু নিয়োজিত আছে, সমস্যাটা তাদের চোখে পড়ানোটাই জরুরি। কইলজার জোর থাকলে আপনার ভাঁড়ামির পত্রিকার কাজটা সেরে সম্পাদকের কাছে মিনমিন করে গিয়ে বলেন, পদুয়া-গোয়ালমারিতে মানুষের পানির কষ্ট নিয়ে নিউজ করতে। আর কইলজার জোর না থাকলে এইখানে আবার চিমটি কাটতে আইসেন। বাপের দেওয়া নাম ব্যবহারের সাহস তো ইহজনমে আর হবে না, নাম ভাঁড়াইয়াই চিমটি কাইটেন।

হিমু এর ছবি

ছবি কই? আসে নাই তো।

আপনি সবুজ টিউবওয়েল থেকে পানি সংগ্রহের যে সমস্যা "বোঝাতে" চেষ্টা করছেন, সেই সমস্যাকে আমি বা এখানে কেউই অস্বীকার করছে না। আমার পোস্টের বক্তব্য হচ্ছে, এই সমস্যাকে অ্যাড্রেস করতে হবে সরকারের। সরকার যদি তা করতে গড়িমসি করে, তাহলে তাকে চাপ দিতে হবে। সেই চাপ দেয়ার কাজটা আপনাকে এবং আমাকে করতে হবে।

আপনি একটু কষ্ট করে আমাকে খুঁজে দেখান তো, গোয়ালমারি আর পদুয়া ইউনিয়নবাসীদের পানির কষ্ট নিয়ে আমাদের প্রথম সারির জাতীয় দৈনিকে কবে কোন নিউজ এসেছে?

কালামিয়া এর ছবি

জানিনা ছবি কেন আসে নি। যাইহোক, আবারও দিচ্ছি,

ছবি ১ https://picasaweb.google.com/102418163330852445276/Arsenic?authkey=Gv1sRgCO7F6ua3vuuvfA#5601258892267713410

ছবি ২ https://picasaweb.google.com/102418163330852445276/Arsenic?authkey=Gv1sRgCO7F6ua3vuuvfA#5601258896656941522

আমার পোস্টের বক্তব্য হচ্ছে, এই সমস্যাকে অ্যাড্রেস করতে হবে সরকারের। সরকার যদি তা করতে গড়িমসি করে, তাহলে তাকে চাপ দিতে হবে। সেই চাপ দেয়ার কাজটা আপনাকে এবং আমাকে করতে হবে।

আর্সেনিক আজকের সমস্যা না এবং সরকার খুব ভাল করেই জানেন কোথায় কোথায় এই সমস্যা প্রকট এবং এর সমধানের প্রস্তাবনাও তারা জানেন (কারণ এটা নিয়ে স্টাডি কম হয় নি)। তাই সেই বিষয়ে আপনার কোন দ্বিমত নেই আশাকরি। আর সরকারকে যে আবেদন/নিবেনদ/চাপ দেয়া হচ্ছে না সেটাই বা আপনি কেন ভাবছেন। যারা ভুক্তভোগী তারা সেই কাজ ঠিকই করছেন। তবে সরকার যে কাজ কিছুই করছে না তা নয়। তবে সেটা চাহিদার তুলনাট অপ্রতুল। আর্সেনিক নিয়ে সরকায় যেই প্লাস পয়েন্টে আছে সেটা হল এই ক্রাইসিস টা পানি বাহিত রোগের মত এখনই ভিসিবল না।

পত্রিকার মালিকানা এখন হযরত ট্রন্সকম (আ:) বা হযরত বসন্ধুরা (আ:) দের হাতে। তারা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী খবর ছাপাবে সেটাও দিনের আলোর মতই সত্য। তাই এই বিষয়ে আর কথা না বলি।

এবার আমার প্রশ্নটা আবারও করি :

আপনি বলছেন "খ' কম্পানি পানি নিয়ে ব্যবসা করতে পারবে না এবং এইটাও ওপেন সিক্রেট সরকারও নিকট ভবিষ্যতে "ক" গ্রামের মত হাজার হাজার গ্রামে আর্সেনিক মুক্ত পানি সরবরাহ করতে পারবে না। তাহলে পোস্ট লেখকের মতামত কি এই সমস‌্যা থেকে উত্তরণের।

ধন্যবাদ।

হিমু এর ছবি

তার মানে, আপনি ফোর্থ এস্টেটের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ব্যর্থতাও স্বীকার করে নিলেন। ভুক্তভোগীর নিজের চেষ্টা যখন পর্যাপ্ত নয়, তখন তার পেছনে যে মিডিয়া-আলোড়িত নাগরিক সমর্থনও নেই, এটাই আপনার কাছ থেকে আমার জানার ছিলো। আর সমস্যার ভিজিবিলিটিকে যদি আরেকটা সমস্যা হিসেবে এক্ষেত্রে দেখা হয়, এবং কেবল ভিজিবিলিটি কমিয়ে সমস্যাটাকেও কার্পেটের নিচে চাপা দেয়া হয়, তাহলে সেটা প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গির অসুখ ছাড়া আর কী বলবো?

এবার আপনার প্রশ্নের প্রসঙ্গে আসি।

"খ" কোম্পানি ব্যবসা করতে পারবে না, এই ফতোয়া আমি দিচ্ছি না। এটা আপনি ক্রমাগত বলে আমার মুখে তুলে দিতে চাইছেন, যেটা কিছুটা বিরক্তিকর। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়া উদ্ভাবনের দায়িত্ব সরকারের, আমি সেই উত্তীর্ণ সিনারিও সাজেস্ট করতে পারি কেবল। আমার আপত্তি, নিষ্ক্রিয়তার মাধ্যমে "খ" কোম্পানিকে ব্যবসার সুযোগ করে দেয়ার সরকারি আয়োজনে।

দ্বিতীয়ত, আপনি ওপেন সিক্রেট বলে সরকারের অপারগতাকে যেভাবে জায়েজ করছেন, সেটার সাথেও আমি একমত নই। কারণ আপনার কথাটায় পানির জায়গায় সড়ক, অন্ন, শিক্ষা, চিকিৎসা, আইন, সংবিধান, সামরিক নিরাপত্তা এমন অনেক শব্দ বসিয়ে অনেক কিছু "খ" কোম্পানির মাধ্যমে চালানোর প্রস্তাবকে যৌক্তিক বলে তুলে ধরা যায়। সরকারের কাজ না পারা নয়, পারা। কীভাবে সরকার পারবেন, সেটা নির্ধারণের জন্যে সরকারের বেতন ও সুবিধাভূক শিক্ষিত, প্রশিক্ষিত ও পরীক্ষিত জনবল আছে। সমাধান তাদের দিতে হবে। নাগরিক হিসেবে আমাদের কাজ সমস্যা চিহ্নিত করা, এবং সমাধানের স্পেসিফিকেশন নির্ধারণ করা।

কালামিয়া এর ছবি

সরকারের কাজ না পারা নয়, পারা। কীভাবে সরকার পারবেন, সেটা নির্ধারণের জন্যে সরকারের বেতন ও সুবিধাভূক শিক্ষিত, প্রশিক্ষিত ও পরীক্ষিত জনবল আছে। সমাধান তাদের দিতে হবে। নাগরিক হিসেবে আমাদের কাজ সমস্যা চিহ্নিত করা, এবং সমাধানের স্পেসিফিকেশন নির্ধারণ করা।

একটু হতাশই হলাম আপনার উত্তরে কারণ আপনি বইয়ের ভাষায় (according to the books) কথা বলছেন কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন সেটা আমি আপনি দুজনেই জানি। এই সমস্যা নিরশনে আপনার কোন আইডিয়া আছে কিনা সেটা জানাটাই আমার মূল উদ্দেশ্য ছিল, যতদূর মনে হচ্ছে সেরকম কোন আইডিয়া নেই। বাঁশি (whisle blow) আমরা সবাই কম বেশি বাজাচ্ছি কিন্তু সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না (সরকারী বা বেসরকারীভাবে) যাতে করে কোন ভাল একটা সমাধান পাওয়া যায়।

ফোর্থ এস্টেটের উদ্দেশ্য যে পুরোপরি ব্যর্থ সেটাও বলা যাচ্ছে না। নিজের ছবিটা দেখেন:

আর্সেনিক বিষয়ে প্রথম আলো, কালের কন্ঠ বা অন্যান্য দেশী মিডিয়ায় লেখালেখি যে কম হয়েছে তা না। সরকারেরও উদ্বিগ্ন না হয়ে উপায় নেই। আর ১০-১২ বছর পর থেকে (যদি আর্সেনিকের ইফেক্ট শুরু হাবর সময়কাল ৩০ বছর ধরি) ২ কোটি করে মানুষদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মত অবস্থা আমাদের সরকারের একার পক্ষে সম্ভব না।

ছবি যদি কাজ না করে তাই নিচের দুটো লিংক শেয়ার করলাম।

সুপেয় পানির অভাবে দিন কাটে কষ্টে: পৌর এলাকার নাগরিকদের সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য গৌরনদী বন্দর, গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড, টরকী বন্দর ও আশোকাঠী এলাকায় চারটি পানির পাম্প রয়েছে। এসব পাম্প প্রায়ই নষ্ঠ থাকে। ফলে এ পাম্পের আওতায় থাকা নাগরিকদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর বিজয়পুর মহল্লার মো. সেকেন্দার হোসেন (৫০) ও শাওড়া মহল্লার মো. সালাউদ্দিন (৬০) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গেরাকুল মহল্লার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন (৫৪) ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বানিয়াশুরী মহল্লার মো. রিপন মিয়াসহ (৩৮) কয়েকজন জানান, তাঁরা সুপেয় বিশুদ্ব পানি না পাওয়ায় খুবই কষ্টে আছেন। এ এলাকায় পৌর কর্তৃপক্ষ পানি সরবারহ করতে পারেনি। পানির অভাবে এখনো অনেকেই অগভীর নলকূপের পানি পান করে। এখানে অধিকাংশ অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিক রয়েছে। পৌর এলাকার বাসিন্দা মো. নাসির উদ্দিন, মো. জামাল হাওলাদার, মো. আজাহার আলী হাওলাদার, মো. আ. খালেকসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, মেয়রের কাছে সুপেয় পানির জন্য ধরনা দিতে দিতে তাঁরা এখন নিরাশ। http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-12-19/news/116579

আর্সেনিকের কারণে বাংলাদেশের কোটি মানুষের মৃত্যুঝুঁকি
নিজস্ব প্রতিবেদক
আর্সেনিক দূষিত পানি পানের ফলে বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি মানুষ মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে গত শুক্রবার মার্কিন গবেষকরা এ তথ্য জানান। এদিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ বলেন, আর্সেনিক ঝুঁকির শিকার মানুষের সংখ্যা দুই কোটি পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু তাদের সবার মৃত্যুর আশঙ্কা নেই।
মার্কিন গবেষক দলের আর্সেনিকবিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদনটি গতকাল শনিবার বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য ও রোগবিষয়ক জার্নালের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত হয়। গবেষকদের অন্যতম শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারের ড. হাবিবুল আহসান সাংবাদিকদের জানান, উচ্চ মাত্রার আর্সেনিক দূষণের কারণে বাংলাদেশের এক কোটি মানুষের মৃত্যু হতে পারে। আর্সেনিক দূষণের শিকার মানুষের আগাম মৃত্যু ঠেকাতে হলে শিগগিরই বিকল্প উপায়ে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করতে হবে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ১০ বছরে আর্সেনিক দূষণের ফলে মৃত্যুহার ২০ শতাংশ বেড়েছে। http://dailykalerkantho.com/print_news.php?pub_no=200&cat_id=1&menu_id=43&news_type_id=1&index=25

"খ" কোম্পানি ব্যবসা করতে পারবে না, এই ফতোয়া আমি দিচ্ছি না। এটা আপনি ক্রমাগত বলে আমার মুখে তুলে দিতে চাইছেন, যেটা কিছুটা বিরক্তিকর। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়া উদ্ভাবনের দায়িত্ব সরকারের, আমি সেই উত্তীর্ণ সিনারিও সাজেস্ট করতে পারি কেবল। আমার আপত্তি, নিষ্ক্রিয়তার মাধ্যমে "খ" কোম্পানিকে ব্যবসার সুযোগ করে দেয়ার সরকারি আয়োজনে।

আপনার পোস্ট পড়ে আমার মনে হয়েছে আপনি পানি নিয়ে কেউ ব্যবসা করুক সেটা চাচ্ছেন না, তাই সেই প্রশ্ন করা। আমাদের সরকারের একার পক্ষে সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব না, আপনি মানেন আর না মানেন এইটাই হল বাস্তবতা।

ধন্যবাদ

হিমু এর ছবি

বাস্তবতা ভিন্ন হওয়া মানে কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন হওয়াকে স্বাভাবিক বলে মেনে নেওয়া নয়। বই অনুযায়ী সরকারী কর্তারা সৎভাবে নিজের কাজ করে যাবেন, বাস্তবে সেটা হয় না, তার মানে এ-ই নয়, সরকারী কর্তাদের সৎভাবে কাজ করতে বললে আপনি এসে হাহুতাশ করতে থাকবেন।

এরপর হয়তো বলবেন, সরকারের একার পক্ষে দেশের সামরিক নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব না, কুদ্দুস সিকিউরিটিজের হাতে আমাদের একটা ডিভিশন ছেড়ে দিতে হবে। কিংবা, বিচার বিভাগের একার পক্ষে বিচার করা সম্ভব নয়, অর্ধেক মামলা দেখবে কোনো বেসরকারী বিচার সংস্থা।

হ্যাঁ, আমি পানি প্রাইভেটাইজ করার বিরুদ্ধে। পাশাপাশি যে প্রতিষ্ঠান নিয়ে লেখা হয়েছে, সেই ভিওলিয়া পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পানিবণিক, বাংলাদেশের বাজারে তাদের প্রবেশকে আমি পানি প্রাইভেটাইজেশনের প্রথম ধাপ হিসেবে দেখছি, এবং এ ব্যাপারে আমার লেখার সীমিত সংখ্যক পাঠককে সচেতন করতে চাইছি। আমাদের সরকারের একার পক্ষে সব সমস্যার সমাধান করা না গেলেও, পানির সমস্যাকে সরকারের একা সমাধান করতে হবে, এটাই আমার বক্তব্য। আর বাস্তবতাকে সবসময় মেনে নিয়ে চুপ করে বসে থাকতে হবে, এমন কোনো কথা তো নেই, তাই না? বৃষ্টি হলে তো ছাতা খোলেন, নাকি বাস্তবতা ভেবে ভিজতে থাকেন?

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

চলুক

স্কেপটিজমের মাইর নাই। আমার একটা পর্যবেক্ষণ হলো মানুষের কিছু বৈশিষ্ট্য স্বতঃপ্রণোদিত, যেমন ক্ষুধা, লোভ। এগুলোকে সে সাধারণত মহৎ বৈশিষ্ট্য হিসেবে দেখে না। মহৎ বৈশিষ্ট্য হলো সত্যবাদিতা, ন্যায়পরায়ণতা, পরোপকার, সমান বন্টন, ইত্যাদি। এগুলো মূলত অর্জিত, এবং মহৎ। এখন যদি ব্যবস্থাগত দিক দিয়ে দেখেন, সরকার তাত্ত্বিকভাবে সাধারণত নীতির ঝাণ্ডা বহন করে। ব্যবসা তাত্বিকভাবে করে না, তার মূলধন হলো মানুষের স্বতঃপ্রণোদিত বৈশিষ্ট্যসমূহ। এবং এই দৃষ্টিতে দেখলে আমার কাছে পরিষ্কার হয়, কেনো সকল সরকার ওয়াদা করে ঝাণ্ডা হাতে নিলেও সাধারণত নীতিচ্যূত হয় - প্রধানত স্বতঃপ্রণোদিত বৈশিষ্ট্যগুলোর কাছে, মানে ব্যবসায়িক ব্যবস্থার কাছে। কারণ ওগুলো স্বতঃপ্রণোদিত।

এটা একটা চিরন্তন দ্বন্দ্ব। আইডিয়ালি নীতিই মহৎ। কিন্তু আবার নীতিস্খলন হলো নীতিধারণের চেয়ে বেশি মানবঘনিষ্ঠ ঘটনা। এই পর্যবেক্ষণগুলো সামনে রাখলে দেখা যায় - ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ব্যবসার হাতে দিয়ে দিলে নীতি কীভাবে নিঃশ্বাস নিয়ে বেঁচে থাকবে, তা বুঝতে পারা মোটেও যায় না। আবার ব্যবস্থাকে পুরোপুরি সরকারের হাতে দিয়ে দিলে - তার নীতিস্খলন যেহেতু অনিবার্য - ব্যবস্থার বিপর্যয়ও তখন অনিবার্য হয়ে ওঠে। এই চিরন্তন দ্বন্দ্বগুলোর নিরসনে অনেকগুলো প্রস্তাব একসাথে বেঁচে আছে, পরস্পরের সাথে বাদবিবাদে লিপ্ত আছে। পুরোপুরি ব্যবসায়িক ব্যবস্থায় একটা কাঙ্ক্ষিত স্থিতিশীলতা কীভাবে আসতে পারে সে ব্যাপারে অনেকে প্রস্তাব করেন। আবার অনেকে ভাবেন মূলত সরকারি তত্বাবধানে রেখে জনগণ আর মিডিয়া দিয়ে চাপে রাখাটা একটা কার্যকর নীতিস্খলননিরোধী স্থিতিশীল অবস্থায় উন্নীত হওয়ার রাস্তা। আপনার ইঙ্গিত হয়তো কিছুটা দ্বিতীয়টা। ব্যবস্থার কোন কোন ভাগ কার কাছে (সরকার না ব্যবসা) বন্টিত হবে, সে নিয়ে আমার বোঝাবুঝির অবকাশ থাকলেও ব্যবস্থাপক নির্বিশেষে স্কেপটিজম জারি রেখে জনগণ আর মিডিয়ার চাপ প্রয়োগের কোনো বিকল্প দেখতে চাই না। আমি কোন ব্যবস্থাই আনচেক্ড ঠিকঠাক থাকার তত্ত্বে বিশ্বাস করি না।

amader shomossha এর ছবি

"আপনার নাতনি পাইলেই বা খারাপ কী? আপনের নানাদাদা তো ইন্টারনেট পায় নাই, তাই না?"

রাগ করবেন? যদি বলি আমাদের গেরামে ইনটারনেট, মোবাইল ফোন গেরামিনের কল্যানেই পাইছি। সরকার ও তো দেখাদেখি মোবাইল ফোন দিল, ইনটারনেট দিল। আপনি ব্যবহার করেন? আপনার ভাই বেরাদর কেউ করে? কাসটোমার মান দেখে, দাম দেখে। সরকার এখন গেরামে গেরামে সজিব মিয়ার AirTel বাধ্যতামুলক করার পরিকলপনা করতাছে। আমরা মান দেখুম, দাম দেখুম। যেইডা বালা হেইডা লমু। আমাদের কত টেকা ইনডিয়া যাবে, নরওয়ে যাবে ঐডা আফনেরা ক্যালকুলেটর চাইপপা বাইর করেন, টেলিভিশনে টক শো কইরা আমাদের বুঝান।

যদি পারেন, একটা ১০০% দেশী টেলিকম কোমপানি দেন। দুই টাহা বেশী দিমু, দেশী মাল ব্যবহার করুম।

সরকার মাম খাইলে খাক, কিন্তু পাবলিকরে সস্তায় পানি দিতে সরকার বাধ্য। বাধ্য না হইলে আপনারে আমারে মিল্লা বাধ্য করাইতে হবে। নাইলে আপনার নাতনিরে হয়তো আলোবাতাসও কিন্না খাইতে হইতে পারে। বুঝলেন?

আমার রাগটা এইখানেই দাদা। সরকারকে বুঝাইতে হবে কেন? সরকারের কি জনগনের সেবা করার ইচছা নাই? দায়িত্য নাই? জনগনের পানি লাগে, বিদ্যুত লাগে এইগুলা না বুঝলে, সমাধান দিতে না পারলে একবিংশ শতাবদিতে এসে গদিত বইছে ক্যান? উলটা জনগনের েটকা নিয়া শেয়ারবাজি, ইনসাইডারবাজি, টেনডার বাজি তো ভালই বুঝে। এইখানে পানি নিয়ে যতটুকু আলোচনা হল তার কতটুকু আমাদের পানি মিনিষটার বুঝতে চেষটা করবেন?

এই সত্যটুকু মানতে কষট হবে, তারপর ও বলছি। পানি, বিদ্যুত ধরনের লং টারম পেলানে সরকার আসবেনা। সরকারের মেয়াদ ৫ বছর। ৫ বছরের মধ্যে ফিতা না কাটতে না পারার মত পরজেকটে সরকার হাত দিবেননা।

তাইলে আমরা গেরামবাসী করুম কি? আরসেনিক খাইয়া মরুম?

আমাদের গেরামে বিদ্যুত নাই। গেরামিন শকতি থেকে সোলার লমু। কেরোসিনের থিকা বালা সারভিস। পোলাপাইন রে বেরাক সকুলে দিমু। বেরাক সকুলে শিকখার মান ভালো। সরকার না দিলে করুম কি?

হাল চাষ করুম, টাকা নাই। সরকারি ব্যাংক থিকা লোন আনলে ঘুষ লাগে। বেরাক, গেরামিন, আশা এরা সুদ নেয় কিনতু ঘুষ লাগেনা। ব্যবহার ও বালা।

নদীনালায় পানি আছে। কিনতু খাবার পানি নাই। মাম এর থিকা গেরামিনের পানি সসতা। আমার খালা বেচে। উনার ও ব্যবসা হয়।

বিদ্যুত নাই। গেরামিনের সোলার কিনছি। কেরাসিনের চাইতে আনেক বালা। রহিমা আফরোজের ব্যাটারী কিনছি। দেশি কোমপানি। মনডা বাললাগে।

সরকারি পরাইমারি সকুলে পরাইভট না পরাইলে পোলাইপাইনের পাস লমবর দেয়না। বেরাকের সকুলে ঐসব কিছু লাগেনা। মাসটর রা ও বালা।

যদি পারেন দাদা, বেরাকের আবেদ সাহেব নাইলে গেরামিনের ইউনুস সাহেব রে গদিত বসান। উনারা আমাদের সমস্যা বুঝেন, সমাধান তো দিচছেন ই। আগে নিজের কোমপানি থিকা দিতেন, উনারা গদিত বইলে সরকার থিকা দিবেন। আপনি যেই সরকারি জিনিস দিতে চাচছেন সেই জিনিস ই আমরা পামু। নাতিনী লাগবেনা এই আমলেই পামু।

::No evaulators, but implementers::

হিমু এর ছবি

আপনার টাকা তো আসলেই ছপ্পর ফাইড়া বাইর হয়! আপনি তো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মালুম হইতেছে। এত টাকা বগলে নিয়া আপনার সরকারি জিনিস ব্যবহার করতে হবে না ভাই। আপনার নাতনি গেরামিন থিকা বাতাস কিন্না খাবে এনশাল্লাহ!

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

তোমার লেখায় মন্তব্য করা হয় না। কী লিখবো বল? তোমার লেখায় তুমি এত প্রশংসা বাক্য পাও যে সেখানে আমর এককাঠি যোগ করার কোন মানেই হয় না।
দেখবার চোখ, বুঝবার মন, লিখবার হাত ও বোঝাবার ক্ষমতা কজনের থাকে? তুমি সেই বিরল একজন মানব। মুগ্ধতা রেখে গেলাম। ভালো থাকো, বেঁচে থাকো।

--------------------------------------------------------------------------------

amader shomossha এর ছবি

সম্ভব হইলে ১৩৮ লম্বরের কালামিয়া ভাইয়ের সিনারিও টা বুইজ্জা উত্তর দেন।

হিমু এর ছবি

সম্ভব হইলে কালামিয়ারে দেওয়া আমার উত্তরটা পইড়া বুইজ্জা চিন্তাভাবনা করেন। সেইসঙ্গে পোস্টখান আরেকবার, সঙ্গে পোস্টের কমেন্টগুলিও। সব গরীবের তো আপনার মতো গোয়া বেয়ে টাকা পড়ে না ভাইডি, তাদের জুতাতেও পা ঢুকায়েন।

amader shomossha এর ছবি

আপনার মূল লেখাটার টান ভাল ছিল। সেজন্যই মতামত দেওয়া।

১। গ্রামবাসীদের দিক থেকে মুল সমস্যাটা দেখে তার সল্প্মেয়াদি/দীরঘ্মেয়াদী সমাধান গুলো বিবেচনায় আন্লে লেখাটার পরিপূরণ্তা আসতো।
২। মতামতে অতিরিক্ত সেল্ফ ডিফেন্সিভ হ্য়েছেন।
৩। গালাগালি না করেও মতামত দেয়া যায়।

হিমু এর ছবি

১. গ্রামবাসীদের দিক থেকেই মূল সমস্যাটা দেখা হয়েছে। কারণ খরচের জোয়ালটা তাদের টানতে হয়। শহরে আমরা ৫ টাকা ইউনিটে বিদ্যুৎ খাই, আর গ্রামবাসীদের ঘাড়ে ৪০-৫০ টাকা ইউনিটের সৌর বিদ্যুৎ চাপিয়ে দিয়ে সেটার নাম দিই উন্নয়ন। এর পেছনে যে নাগরিক তাচ্ছিল্য, অমনোযোগ এবং কর্তৃপক্ষীয় অবহেলা আছে, সেটা উন্নয়নের খাতায় ওঠে না।

২. এটা আপনার পর্যবেক্ষণ।

৩. যুক্তিরহিত মত বা অমতের কোনো মূল্য নেই। সেগুলোর বাহকদের সাথেও ভদ্রতা নিরর্থক। গালাগালি না করে যে যুক্তি এক্সচেইঞ্জ চলে, সেটার উদাহরণ আমার সাথে ফাহিম হাসানের মন্তব্য বিনিময়ে পাবেন। আপনি যদি তর্কের শুরুটা অযথা যুক্তিরহিত বিদ্রুপ দিয়ে না করতেন, আপনার সাথেও একই রকম যুক্তি বিনিময় সম্ভব হতো। আমি দুই পথেই তীব্রভাবে তর্ক করতে জানি, আপনি যেটা খুশি বেছে নিতে পারেন।

amader shomossha এর ছবি

১। গ্রামের সমস্যা গুলো নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের সমালোচনা করেছেন। কিন্তু তার চেয়ে ভাল কোন সমাধান দিতে পারেন নি। এই লিন্ক টা আর তার সাথের লিনং্ক গুলো সময় আর ইচ্ছা থাকলে পড়বেন।
৩। ফেয়ার এনাফ।

হিমু এর ছবি

১. আপনার অ্যাপ্রোচ যদি এমন হয়, যে একটা মহত্তর সমাধান যতদিন পর্যন্ত আমি দিতে না পারবো, ততদিন চলমান "সমাধান"-এর সমালোচনা করতে পারবো না, তাহলে একটু কষ্ট করে জানিয়ে যাবেন কি, চলমান "সমাধান"-এর সমালোচনা না এলে এরচেয়ে ভালো সমাধানের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধ হবে কীভাবে? আপনি তো সমালোচনার ত্রুটিগুলো বের করে আমাকে দেখাতে পারলেন না। আপনি পারলে দেখান, আমি কোথাও ভুল বলেছি কি না, বলে থাকলে সেটা কেন ভুল। আপনার মন্তব্যগুলো তো পুনরাবৃত্ত হয়ে সেই একই প্যাচালে পর্যবসিত হচ্ছে, সরকার পারছে না অতএব এটাই গ্রামবাসীর জন্যে বেস্ট অপশন। আর আমি বলছি, সরকারের এই না পারাকে রিইনফোর্স করছে সামষ্টিক অমনোযোগ আর সামাজিক কল্যাণের মোড়কে ব‌্যবসায়িক স্বার্থ। আজকে সরকার গোয়ালমারি-পদুয়াতে পারছে না, আগামীকাল কুমিল্লা শহরে পারবে না, পরশু ঢাকা শহরে পারবে না। আর আপনার কাছে পানির জন্যে চড়া দামের টাকাটা কোনো সমস্যা বলে মনে হচ্ছে না, যেটাকে আমি সমস্যা মনে করছি।

৩. সবসময়ই।

হিমু এর ছবি
অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

এটা কি একই প্রোজেক্ট? পানি কিনে খাওয়া লাগবে?

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

হিমু এর ছবি

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল পরিদপ্তরের উদ্যোগ, বিশ্বব্যাঙ্ক অর্থায়ন করছে। কিনে খাওয়া লাগবে মনে হয়, দাম কেমন পড়বে জানি না। তবে মনে হচ্ছে ইউনূস কাগুর দোকানের চেয়ে কম দামেই পাওয়া যাবে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।