ভৃত্যনির্যাতনকারী সরকারী কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা হোক

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: শনি, ১২/১১/২০১১ - ১০:১৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কাজের ছেলে বা কাজের মেয়েকে পশুর মত পিটানো নিয়ে প্রত্যেক মাসে একটা করে প্রতিবেদন আসে পত্রিকাগুলোতে। এসব ঘটনা নিঃসন্দেহে হিমশৈলের চূড়ামাত্র। পত্রিকার সাংবাদিকের নজরে না আসা এরকম আরো হাজারটা নির্যাতনের ঘটনা নিশ্চয়ই আমাদের অগোচরে থেকে যায়।

একটা প্যাটার্ন লক্ষ্য করি, শিশু ভৃত্যকে নির্যাতনকারী হিসেবে প্রায়ই আসে পুলিশ, বড় সরকারী কর্তা কিংবা সশস্ত্রবাহিনীর অফিসারের স্ত্রীদের কথা। পুলিশের বৌ, আমলার বৌ, সেনাকর্তার বৌদের সমস্যাটা ঠিক কোথায়? এদের মনোবিকলন ঠিক কোন পর্যায়ে পৌঁছালে একটা গরিবের বাচ্চা, যে কি না আশ্রয় আর খাদ্যের জন্যে তাদের কাছে এসে ওঠে, তার গায়ে গরম পানি ঢেলে দেয়া যায়? কিংবা খুন্তি গরম করে ছ্যাঁকা দেয়া যায়? বেয়াড়াপনা করলে আমরা নিজেদের বাচ্চাদের শাসন করি, ধমকধামক দেই, দুইচারটা কিল লাগাই মাঝেসাঝে, গরীবের বাচ্চাকে কেন এরচেয়ে বেশি পিটাই?

রোমেলা নামের একটা বাচ্চা মেয়ের ছবি ছাপা হয়েছে কাগজে, ওর বয়স মাত্র দশ। এই বাচ্চাটা কী এমন করে থাকতে পারে যার জন্য এর মাথায় গরম তরকারি ঢেলে দেয়া যাবে? মেরে পিটিয়ে এর ঠোঁট কেটে যাওয়ার পর ঘরেই সুঁই-সুতা দিয়ে সেলাই করা যাবে? এটা তো পরিষ্কার সেইডিজম! বাচ্চাটাকে তো কোনো শাস্তি দেয়া হচ্ছে না (একটা দশ বছরের বাচ্চা দুনিয়া উল্টে ফেললেও এই শাস্তি ডিজার্ভ করে না), তাকে পরিষ্কার নির্যাতন করা হচ্ছে।

শিশু ভৃত্যদের এই নির্যাতন করে পুলিশের বৌ, আমলার বৌ, সেনাকর্তার বৌরা কী সুখ পান? নিজের ক্ষমতা জাহিরের সুখ? আরেকটা হোমো স্যাপিয়েন্সকে পীড়ন করার সুখ? যে পুলিশকর্তা, যে আমলা, যে সেনাকর্তা বাড়ি ফিরে এই নির্যাতিত বাচ্চাটাকে রক্ষা করতে পারেন না, নীরব সম্মতি দিয়ে যান, বরং মাঝেসাঝে তিনিও অংশগ্রহণ করেন, তাদের হাতে আমাদের দেশ নিরাপদ? ঐ পুলিশ, ঐ আমলা, ঐ সেনাকর্তা আমাদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করবে, আমাদের প্রশাসন চালাবে, দেশের প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত থাকবে? এরা তো একটা গরিব বাচ্চাকে নিজের বৌয়ের হাত থেকেই রক্ষা করতে পারে না! এরা রক্ষা করবে দেশ?

আমি সরকার বাহাদুরের কাছে আর্তি জানাই, এই ধরনের অপরাধ যারা করে, তাদের সরকারী চাকরি থেকে বহিষ্কার করে ফৌজদারি আদালতের মুখোমুখি করে বিচার করুন, শাস্তি দিন। এরকম বহু রোমেলার ঘটনা আমরা পত্রিকায় পড়ি, কোনো ফলো আপ পাই না। জানি না আজ থেকে এক বছর আগে পত্রিকায় এমন আরেকটি নির্যাতিত শিশু কী সুবিচার পেলো, আদৌ পেলো কি না। এক বছর আগে যাদের ভৃত্যনিপীড়নের খবর কাগজে এসেছে, তাদের কি বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে? তারা কি শাস্তি পেয়েছে? নাকি ঐ বাচ্চাগুলোর গায়ের ঘা শুকিয়ে যাওয়ার পরই ব্যাপারটার আবেদন ফুরিয়ে গেছে? সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ, আপনারা পুরনো এমন সব খবর যোগাড় করে ফলোআপ নিউজ করুন।

একটা বাচ্চা তার বাপ মা ভাই, তার দরিদ্র কুটিরের পাশে সবুজ মাঠ, তার চেনা নীল আকাশ ছেড়ে কত দূরে অচেনা মানুষের কাছে যায় গায়ে খাটতে, একটু ভালো খাওয়ার জন্য, একটু ভালো পরার জন্য, সম্ভব হলে একটু লেখাপড়ার জন্য, তাকে এইরকম মধ্যযুগীয় নির্যাতন করবো আমরা, আর রাষ্ট্র কিছুই করবে না? একটা কুকুরকেও তো মানুষ এভাবে মারে না। এদের পেটায় যেসব সরকারী কর্তা আর তাদের বৌ, তাদের হাতে আমরা রাষ্ট্রের গুরু দায়িত্ব অর্পিত দেখতে চাই না।

মনোবিকলনে ভোগা এ্‌ইসব পুলিশের বৌ, আমলার বৌ, সেনাকর্তার বৌয়েরা, আপনারা প্রত্যেকে একেকটা কুত্তার বাচ্চা। সামওয়ান পীড ইন ইয়োর মাদারস।


মন্তব্য

রু (অতিথি) এর ছবি

কী করে পারে!!

নিটোল এর ছবি

অনেকের কাছেই শুনলাম, এরা নাকি সব চোর! সারাক্ষণ খালি চুরি করার জন্য ছোক্ ছোক করে, তাই সবসময় এদেরকে মাইরের উপ্রে রাখতে হয়!

বাংলাদেশী অনেক গৃহকর্তা/কর্ত্রী তাদের ঘরের কাজে সাহায্যদানকারী ছেলে/মেয়েকে নিজেদের সম্পত্তি বলে ভাবে যা তারা ওদের মা-বাবার কাছ থেকে কিছু বেতনের বিনিময়ে কিনে নিয়েছে। আর মানুষ তার সম্পত্তি যেমন ইচ্ছে তেমনই ব্যবহার করবে,এতে অবাক হবার কিছু নেই।

পোস্টের বক্তব্যের সাথে সহমত। তবে শুধু সরকারী কর্মকর্তাই শুধু নয়, সবার ক্ষেত্রেই আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন জরুরী। যেমন কারো বাসায় যদি কোনো কাজের লোক রাখা হয় তাহলে তার ছবি, পরিচয়, ঠিকানা ইত্যাদি থানায় জমা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে করে কাজের লোক যদি নির্যাতনের শিকার হয় তাহলে যেমন আইনী সুরক্ষা পাবে তেমনি কাজের লোকটিও যদি কোনো অপরাধ করে তাহলে তাকে দ্রুত শনাক্ত করা যাবে।

_________________
[খোমাখাতা]

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

পোস্টের বক্তব্যের সাথে সহমত। তবে শুধু সরকারী কর্মকর্তাই শুধু নয়, সবার ক্ষেত্রেই আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন জরুরী। যেমন কারো বাসায় যদি কোনো কাজের লোক রাখা হয় তাহলে তার ছবি, পরিচয়, ঠিকানা ইত্যাদি থানায় জমা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে করে কাজের লোক যদি নির্যাতনের শিকার হয় তাহলে যেমন আইনী সুরক্ষা পাবে তেমনি কাজের লোকটিও যদি কোনো অপরাধ করে তাহলে তাকে দ্রুত শনাক্ত করা যাবে।

চলুক চলুক

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

তানজিম এর ছবি

এদের চিড়িয়াখানার পশুদের সাথে এক খাঁচায় রেখে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। চিকিৎসার প্রথম পর্যায়ের লক্ষ্য হবে এদেরকে সাধারণ পশুতে পরিণত করা। কারণ এরা পশুদেরও অধম। এক লাফে কিভাবে এদের মানুষ করা সম্ভব, যারা পশুদেরও ঘৃণার পাত্র!!!

মনোজ এর ছবি

চলুক

guesr_writer rajkonya এর ছবি

অনেক সময় স্বামীরা কাজের মেয়েদের (বয়স বড় কথা নয়) প্রতি খুব আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। সে ক্ষেত্রে স্ত্রীরা কী করবেন? স্বামীর গায়ে কি হাত তোলা ঠিক হবে? তাই গায়ের যত রাগ স্ত্রীরা ঢালেন কাজের মেয়েটির উপর। এ ব্যাপারে স্বামীদের অনুমোদন না থাকার প্রশ্নই আসে না।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

সেজন্যই তো ওই কুলাঙ্গার স্বামীদের বরখাস্ত করা দরকার । তারপর ফৌজদারি আদালতে দুইজনের বিচার করা দরকার !

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

তারেক অণু এর ছবি

ঠিক কথা! মাঝে মাঝে দেখা যায় মিয়া-বিবি দুজনেই স্যাডিস্ট, একসাথে নির্যাতন করে! দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দরকার খুব বেশী।।

মঈনুল এর ছবি

একমত।লগে ভৃত্য যাতে তৈরী না হতে পারে এরকম সমাজ গড়ার আন্দোলনটা জরুরী।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

বন্দনা কবীর এর ছবি

জেনারাইলাইজেশনটা পছন্দ হল না।

ভৃত্য নির্যাতন শুধু এই তিন প্রজাতির কুত্তার বাচ্চারাই করেনা। অনেক কিন্ডারগার্টেনের, কলেজের, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, মন্ত্রি এমপি, কর্পোরেট হাউজের কেরানি, মাদ্রাসার মৌলভি, ব্যাবসায়ি, ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে সমাজকর্মি, সাংবাদিক- তার বৌ সন্তানেরাও করে থাকেন।

এরকম অমেক নিউজই অনেকবার পত্রিকায় এসেছে। শিক্ষক বা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারদের বৌরা যখন বাচ্চাগুলোকে পিটিয়ে ছাল চামড়া তুলে সার্ভেন্টস কোয়ার্টারে ফেলে রাখে তখন কি তাদের মনবৈকল্যতা নিয়ে কারো মনে প্রশ্ন আসেনা?

কিছুদিন আগে দেখেছিলাম একটা মোটা স্বাস্থ্যের এক মহিলা, নিতান্ত সাধারন ঘরের গৃহবধু এই কর্মটি করে খবরের কাগজের খবর হয়েছেন। তাকে নিয়ে কিন্তু খুব একটা বাড়াবাড়ি হলনা। কোলে আড়াই/ তিন বছরের সন্তান নিয়ে দপদপিয়ে পুলিশের জিপে চড়ে সেই যে চলে গেলেন তার কোন রকম ফলো আপ আর কোথাও পেলাম না।

আপনার পোস্টের লেখার মধ্যে একটা বিশেষ শ্রেনির উপরে বিদ্বেষটা স্পস্ট পাওয়া গেল।
কথাগুলো ওভাবে না বলে অনায়াসেই বলতে পারতেন, যারা এইসব কাজ/কুকর্ম করে তারা কি সুখ পায়? মনবৈকল্য... ইত্যাদি ইত্যাদি। কোনো রকমের গ্রুপিং বা শ্রেণীবিভেদ না করেই কিন্তু সকল অপরাধের সমালোচনা করা যায়।
লোকের বাড়ি নেমন্তন্ন খেয়ে দাঁত খোচাতে খোঁচাতে কিন্তু সব জেলার লোকেই বের হয় তাড়া থাকলে, আর এই কর্মটির জন্য কেবল মাত্র হাসির পাত্র হয় নোয়াখালির লোক।
খুনে প্রবৃতির লোক কিন্তু সব জেলা বিভাগেই পাওয়া যায়, কিন্তু খুনে বদরাগি বলতেই লোকে "বরিশালের লোকের" নাম উচ্চারণ করে উপহাস করে।
আপনি রম্য খুব ভাল লেখেন, আজক্র লেখাটা রম্য ট্যাগে দিলে হয়তো একটা কথাও বলতাম না। কিন্তু ওই যে, পুরো জাত টেনে গালি দিলেন যে, তাতে কারো কারোর গায়ে লাগবেই। এই সচলে কি পুলিশের, আমলার, সেনাকর্তার সন্তানেরা লেখে/পড়েনা? এখন তাদের বাড়ির চিত্রটি যদি এই নোংরা চিত্রটির উল্টো হয় তো তার আঁতে লাগতে বাধ্য। হ্যা, আমার যেমন লেগেছে।
আমি একজন গৃহবধু। আমি আমার গৃহভৃত্যটিকে আদর-যত্নে রাখি বা তেল মেরে রাখি নিজের স্বার্থেই। (নইলে তো থাকবেনা। গৃহকর্মি এম্নিতেই এখন দুর্লভ। তায় অত্যাচার করলে তো আমার মুখেই লাথি মেরে চলে যাবে?!)

যুগে যুগে সমস্ত পৃথিবীতেই ভৃত্য নির্যাতনের ঘটনা চলে আসছে।এর বিলুপ্তি মনে হয় পৃথিবী ধ্বংশ হবার সাথে নইলে গৃহভৃত্য রাখার চল বন্ধ হওয়ার সাথেই শেষ হবে। কঠোর শাস্তির ব্যাবস্থা তো আছেই কিন্তু তার ব্যাবহার কতটুকু হচ্ছে যে লোকে ভয় পাবে?
প্রতিবার এই ধরনের এক একটা সংবাদ দেখি আর শিউরে উঠি এই ভেবে যে, আমিও এই মনুষ্য প্রজাতির। কোন এক দিন কি আমিও হিতজ্ঞান বিবর্জিত হয়ে এমন করে কাঁচা কাঁচা বয়সি মানুষের বাচ্চাকে মেরে গায়ের ছাল তুলে ফেলবো?! তার আগে যেন মৃত্যু হয়।

নো হার্ড ফিলিংস প্লিজ।

প্রত্যেক

হিমু এর ছবি

মনোবিকলনে ভোগেন না এমন পুলিশ, আমলা, সেনাকর্তার বৌদের আঁতে ঘা লাগবে বলছেন? কেন?

বন্দনা কবীর এর ছবি

আপনার লেখা আমি বহু দিন ধরেই পড়ছি। আপনাকে আমার বেশ বুদ্ধিমানই মনে হয়েছে বরাবর। কেন লাগবে?' এই প্রশ্নটা আমাকে না করে নিজেকে করুন, কেন লাগবেনা?' তাহলেই আশা করি সদুত্তোর পেয়ে যাবেন।

সামিয়া এর ছবি

সহমত।

হিমু এর ছবি

পিছলান কেন? বলেন দেখি, কেন লাগবে?

আপনি যে সরলীকরণের অভিযোগ করলেন, সেই অভিযোগ শেষ করছেন কী দিয়ে দেখুন।

যুগে যুগে সমস্ত পৃথিবীতেই ভৃত্য নির্যাতনের ঘটনা চলে আসছে।এর বিলুপ্তি মনে হয় পৃথিবী ধ্বংশ হবার সাথে নইলে গৃহভৃত্য রাখার চল বন্ধ হওয়ার সাথেই শেষ হবে।

আপনি এখানে এই নির্যাতনকে যুগে যুগে চলে আসা একটা অনিবার্য প্রপঞ্চ হিসেবে হালাল করতে চাইছেন। কেন?

এইবার আপনাকে প্রশ্ন করি, আপনার স্বামীর সহকর্মী যদি এইরকম জানোয়ারের মতো কাজের লোক পিটায়, আপনি কি তাকে তিরস্কার করতে পারবেন? নাকি যুগে যুগে চলছে বলে তাকে বাঁচাবেন?

একজন পুলিশ/আমলা/সেনাকর্তার স্ত্রী হিসেবে পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আগে আপনি গৃহভৃত্য নির্যাতন বন্ধ করার ব্যাপারে আশাবাদী না। কিন্তু যারা এইরকম পৈশাচিক মারধর করে, তাদের কুত্তার বাচ্চা বললে আপনার খুব গায়ে লাগছে। ঘটনা কী বলুন তো?

সামিয়া এর ছবি

একজন পুলিশ/আমলা/সেনাকর্তার স্ত্রী হিসেবে পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আগে আপনি গৃহভৃত্য

নির্যাতন বন্ধ করার ব্যাপারে আশাবাদী না। কিন্তু যারা এইরকম পৈশাচিক মারধর করে, তাদের কুত্তার বাচ্চা বললে আপনার খুব গায়ে লাগছে। ঘটনা কী বলুন তো?

এ কথাটা হাস্যকর লাগলো। দেখুন আলোচনা করতে চাইলে করা যায়। কিন্তু আপনি দিনে দুপুরে ওনার ওপর দোষ দিয়ে ফেলছেন কেন? ওনার কমেন্ট আমিও তো পড়লাম, কই আমার তো মনে হলো না উনি 'হালাল' করতে চাচ্ছেন।

হিমু এর ছবি

হাসুন তাহলে।

কই, আমি দোষ দিচ্ছি না তো। কিন্তু "পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আগে গৃহভৃত্য নির্যাতন বন্ধ হবে না" বললে আমি বুঝি, যারা এই কাজগুলো করে, তাদের প্রতি বক্তার মনের মধ্যে তেমন একটা প্রতিরোধও কাজ করে না।

আপনাকে যদি আমি বলতাম, "যুগে যুগে পৃথিবীতে পুলিশ/আমলা/সেনাকর্তারা গালি খেয়ে আসছে। পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আগ পর্যন্ত এরা গালি খেয়ে যাবে", আপনার কি ভালো লাগতো কথাটা?

বন্দনা কবীর এর ছবি

আরে যন্তন্না। আমি কি কই হালাল করার চেষ্টা করলাম?!
যুগে য্যুগে তো খুন রাহজানি, ধর্ষন ইত্যাদি ইত্যাদিও হয়ে আসছে। তার জন্য কঠিনতম শাস্তির বিধানও এসেছে যুগে যুগেই। তো? তাতে কি হয়েছে? এই সব কির্তীগুলো কি বন্ধ হয়েছে?!

তাই বলে কি আমি বলবো যে, আগেও হয়েছে এখনও হবে?! আমি না বল্লেও কিন্তু হবে। আমি না চাইলেই দুনিয়ার সব সাইকো গুলো ভাল হয়ে যাবে না রাতারি। যুগে যুগে হয়েছে এখনো হচ্ছে বলে আমি ঐ কর্মগুলোকে হালাল করতে চাউনি। আমি বলেছি আইনের প্রয়োগ ঠিকমত হচ্ছেনা/ হয়না তাই লোকে আইনের তোয়াক্কাও করেনা। তাই এই ধরনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। আপনি আমি চিতকার চেচামেচি করলেও চল্বেই।

আর একটা জিনিস যে বললাম সেটা তো খেয়াল করলেন না?!
বলেছিলাম 'এই গৃহভৃত্য রাখার চল বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত..."

যদিও আমার নিজেরই অনেক বেশি কষ্ট হয়ে যায়/যাবে ঘরে একজন সহযোগি না থাকলে। তবুও, এইসব ঘটনা দেখলে আমার বরাবরই মনে হয়, আসলেও, এখন এই গৃহকর্মি' পেশাটার বিলুপ্তির প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। দুটো ভাল খাওয়া, পরার বিপরিতে এই সব অত্যাচার দেখতে আর ভাল লাগেনা।

হিমু সাহেব, তর্কের খাতিরে ম্যালা তর্ক করা যায়। নির্দিষ্ট কোন কূলের হয়ে সাফাই গাওয়র জন্য কমেন্ট করিনি। আপ্নারম নিরদিষ্ট কুলের ঘাড়েই সব দেওয়া দেখে উপযাচক হয়ে ভুলটা দেখিয়ে দিতে এসেছিলাম।

অপরাধি সব কুল জাতেই থাকে। অনুগ্রহ করে শুধু মাত্র অপরাধিদেরকে চিহ্নিত করে গালি দিন। শুধু কুত্তার বাচ্চা কেন? নিকৃষ্টতম গালিটা দেবার সময় আমাকেও পাশে পাবেন কন্ঠ মেলানোর জন্য।

আমি অপরাধ করলে আমাকে গালি দিন হাজারবার দিন। কিন্তু আমার অপরাধের জন্য আমার বাবা-মাকে গালি দিলে চামড়া জ্বলবে বৈকি।

আলোচনা হচ্ছে গৃহকর্মি নির্যাতন বিষয়ে। এই সময়ের জরুরি অনেকগুলো বিষয়ের মধ্যে এটিও একটা। ব্লগের পাতায় কি-বোর্ডে এদের জন্য কান্নাকাটি না করে মাঠে নামুন। আন্দোলন করুন। কোন কোন গোষ্ঠির বৌরা খালি নির্যাতন করে এই ধরনের গড়পড়তা কমেন্ট না করে অপরাধির/ নির্যাতন কারিকে চুলের মুঠো ধরে ঘর থেকে রাস্তায় এনে ফেলুন। তাদের সরব নিরব সমর্থনকারি স্বামি/সন্তান্দেরকেও বিচারের মুখোমুখি করুন। যাদের খবর অন্ততঃ পত্রিকায় আসে, তাদের কি শাস্তি হল বা না হল, তা খুচিয়ে বের করে ফের পত্রিকার খবর করুন। ডিফেন্স এর ল' / বিচারিক কার্যক্রম জনগনের সাথে শেয়ার করা হয় না। একজন অফিসার শাস্তি পেলে আরেকজন অফিসারও জানতে পায়না তায় পাবলিক" এই জাতিয় উত্তরে আবার প্রশ্ন করুন, কেন হবেনা?' একজন অফিসার/বৌ যখন কোনো সামাজিক ক্রাইম করে তখন সেই কেস সম্পর্কে সব কিছু জানার অধিকার পাবলিক রাখে বা থাকতে হবে। যে নিউজ পত্রিকা থেকে জেনেছি, তার বিচারের খবর ফের পত্রিকায় কেন ছাপানো হবেনা? ডিফেন্সের আইনে/প্রচলিত আইনে তার/তাদের কি শাস্তি হল তা গোপন রাখলে তো ভুল বুঝাবুঝি বাড়বেই। সামরিক বাহিনীকে হেরেমের বাসিন্দা করে রাখলে তাদের সম্পর্কে লোকে ঠিকমত না জানতে পেলে তো এমন হবেই। তাদেরকে বলুন এই আইসোলেটিং পদ্ধতিটা সরিয়ে সাধারন মানুষের সামনে আস্তে।

সব শেষে, আমি বেসিকেলি দুর্বল চিত্তের মানুষ। সরল চিন্তারও বটে। আমি অতো কুটিল করে কিছু ভাবতে পারিনা। তাই আপনাদের অনেক কথাই বুঝতে পারিনা যে কোন কথাটায় আপনাদের ঠাস করে লেগে যাবে আর কখন কোন কথায় জানতে চাইবেন, ঘটনা কি বলুন তো?'

ঘটনা, আমি এই পৃথিবীর / একটা স্বাধীন দেশের/ সভ্য-সুস্থ্য মানুষ হিসেবে সব ধরনের অপরাধেরই প্রতিবাদ করি। প্রতিকার চাই। চাই পৃথিবীর সবাই ভাল থাকুক, শান্তিতে থাকুক।
সমস্যা, আমি চাইলেই সব কিছু আমার চাওয়া মোতাবেক হবেনা।
ভাল থাকুন।

হিমু এর ছবি

আপনাকে তো গালি দেয়া হচ্ছে না, আপনার বাপমাকেও না। দেয়া হচ্ছে এমন কিছু লোককে, যে তার চৌদ্দগুষ্টিশুদ্ধু গালি খাওয়ার মতো কাজ করেছে। আপনি এসে আবার কেন বলছেন আপনাকে বা আপনার মাকে গালি দিলে আপনার চামড়া জ্বলবে? বলছেন, কারণ আপনি এই গালিটা নিজের ওপর থেকে সরাতে পারছেন না। কেন পারছেন না? চিন্তা করুন। কুটিল ভাবেই চিন্তা করে দেখুন।

এইবার, প্রশ্নখানা আবার করি। আপনার স্বামীর সহকর্মী কিংবা তার বৌ যদি একটা কাজের মেয়েকে ধরে পিশাচের মতো পিটায়, আপনি কি তাকে তিরস্কার করবেন? নাকি যুগ যুগ ধরে কাজের লোক পিটানো হচ্ছে আপনি তিরস্কার করলেও পিটানো চলতেই থাকবে ইত্যাদি বলে হালাল করবেন ব্যাপারটা? সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন, সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন।

শেষে একটা কথা বলি। শুনতে আপনার ভালো লাগবে না। আপনার পরিচয়ের সুবিধা আপনি ভোগ করেন যেমন, অসুবিধাগুলিও ভোগ করতে হবে। অসুবিধাগুলি আপনি আমার মুখ বন্ধ করে দূর করতে পারবেন না। যাদের কারণে আপনার এ্‌ই অসুবিধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তাদের কনফ্রন্ট করতে হবে। সেটা আপনি করতে পারবেন কি না, ওপরে করা আমার প্রশ্নের জবাবে জানতে পারবো।

হুতুম এর ছবি

বন্দনা কবীর,

আমি একজন গৃহবধু। আমি আমার গৃহভৃত্যটিকে আদর-যত্নে রাখি বা তেল মেরে রাখি নিজের স্বার্থেই। (নইলে তো থাকবেনা। গৃহকর্মি এম্নিতেই এখন দুর্লভ। তায় অত্যাচার করলে তো আমার মুখেই লাথি মেরে চলে যাবে?!)

এই কথাগুলো খুব কানে বাজলো।গৃহভৃত্য দুর্লভ না হলে তাকে মারতে আপত্তি থাকতো না আপনার?একটি শিশুকে নির্যাতন করা হচ্ছে - এই আমানবিকতাটির থেকে অত্যাচার করলে সে লাথি মারে চলে যাবে - এই আশংকাটুকুই বড় হল আপনার কাছে?

আপনার বাসায় কাজ করা যে শিশুটির যাওয়ার জায়গা বলতে তেমন কিছু নেই,তার নিরাপত্তা এবং মানবাধিকারকে বোধহয় প্রশ্নের মুখোমুখি করে ফেললেন আপনি।

বন্দনা কবীর এর ছবি

আপ্নাদের সমস্যা বুঝিনা। সাধারন একটা কথাকে এতো অসাধারন করে কেমন করে তোলেন আমার মাথায় ঢোকেনা! এতো বুদ্ধি নিয়ে ঘুমান কেমন করে?

আমি গৃহবধু হবার আগে তো কারো মেয়ে ছিলাম নাকি? আমার বাপের বাড়িতেও ঘরে কাজ করার মানুষ ছিল নাকি? তখন ত আর কাজের লোক দুর্লভ ছিলনা। তখনও তাদের সাথে গলা উচু করে কথা বলার জন্য মায়ের চড় খেতে হয়েছে। আমি তো লিখেইছি, নিজের স্বার্থে। নিজের স্বার্থ না থাকলে আমি তাকে ঘরে রাখতাম? যে আমার হয়ে আমার কাজ করে দেবে তাকে একটু তেলিয়ে রাখতে হবে বৈকি। আমি অতো ঘোর প্যাচ বুঝিনা। আমি আমার ঘরের গৃহে কাজ করা মেয়েটির কথা যখন বাইরের লোকের সাথে আলাপ করি, তখন বলি, আমার মেয়েটা ঘরে একা।" আমি কি কেমন সেটা দুনিয়ার লোককে না জানালেও চলবে।

আর, বন্দনাকে যারা চেনে তারা ভাল করেই জানে সে কিসে প্রতিবাদ করে কি করেনা। অন্যায় দেখলে যখন আমার যোয়ান স্বামিটাও গলা তোলেনা ঝামেলা এড়ানোর জন্য, সেখানে আমি চলে যাই চিতকার করতে।
এই দেখুন্না, এখানে যেমন।হিমুর ভুলটুকু ধরিয়ে দিয়েছিলাম আক্রমন আসছে জেনেও। দেখুন্না। এক হিমু মহাশয়ের একটি ভুল কি দেখিয়ে দিলাম আর অম্নি এক যোগে আমার কমেন্টের পোস্ট মর্টেম করতে নেমে পড়লেন অনেকেই।
আমি তো আর হিমুর মত হিমালয় সম ব্লগার নই যে আমার প্রতিটি লাইনে সহমত জানানোর জন্য ছুটে আসবে চোখ টিপি

এখন আমার প্রশ্ন, কোনো গৃহকর্মির উপরে অত্যাচার করতে দেখলে আপনি কি করেন?

হ্যা, আমি অন্ততঃ ওই হাতটা চেপে ধরে এমন ভয় দেখাই যে অত্যাচারির রুহ কেপে ওঠে।
অন্যের উপরে অঙ্গুলি নির্দেশ করার সময় খেয়াল রাখবেন, আপনার বাকি চারটে আঙ্গুল কিন্তু আপনার নিজের বুকের দিকে তাক করা।

এই পোস্টে এটাই শেষ কমেন্ট। ফালতু বিষয়ে সময় অপচয় করার সময় আমার নেই।
হ্যাপি ব্লগিং

দ্রোহী এর ছবি

হ্যা, আমি অন্ততঃ ওই হাতটা চেপে ধরে এমন ভয় দেখাই যে অত্যাচারির রুহ কেপে ওঠে।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

হুতুম এর ছবি

আপ্নাদের সমস্যা বুঝিনা

বহুবচন!!!ক্যাম্নে কী!!! অ্যাঁ
সে যাই হোক,আমার সমস্যা একটাই।সাদা চোখে যেইটা বুঝি সেইটা ফস করে বলে ফেলি,তাতে কারো কারো গাত্রদাহ হয়ে বসে। হাসি

আমি কি কেমন সেটা দুনিয়ার লোককে না জানালেও চলবে

ইন ফ্যাক্ট,আপনি কেমন ব্লগে সেটা জানিয়ে লাভও নেই খুব বেশি।আপনার শব্দচয়ন দিব্যি বলে দেবে আপনি কেমন।

যে আমার হয়ে আমার কাজ করে দেবে তাকে একটু তেলিয়ে রাখতে হবে বৈকি

এখানেই তো সমস্যাটা।যে আপনার হয়ে কাজ করছে তাকে তেলিয়ে কেন রাখতে হবে ওটাই তো মাথায় ঢুকছে না আমার।যেটাকে আপনি তেল বলছেন সেটা কি তার মানবিক অধিকার নয়?গায়ে গরম চা ঢেলে না দেওয়া,খুন্তির ছ্যাকা না দেওয়া,বাসি ভাত খেতে নে দেওয়া - এগুলোকে যদি আপনি তেল মারা বলেন তাহলে তো মানবাধিকারের সংজ্ঞাই পালটে ফেলতে হবে।স্নেহ ভালবাসার কথা না হয় বাদই দিলাম।

এই দেখুন্না, এখানে যেমন।হিমুর ভুলটুকু ধরিয়ে দিয়েছিলাম আক্রমন আসছে জেনেও। দেখুন্না। এক হিমু মহাশয়ের একটি ভুল কি দেখিয়ে দিলাম আর অম্নি এক যোগে আমার কমেন্টের পোস্ট মর্টেম করতে নেমে পড়লেন অনেকেই।
আমি তো আর হিমুর মত হিমালয় সম ব্লগার নই যে আমার প্রতিটি লাইনে সহমত জানানোর জন্য ছুটে আসবে

নিজে নিজেই এত বেশি ইনফিরিয়রিটিতে ভুগলে কার কী করার আছে বলুন।বলা বাহুল্য আমিও হিমুর সমান ব্লগার নই,এমনকি ব্লগার হিসেবে আপনার ধারে কাছেও নেই হাসি
আর তাছাড়া হিমুর ভুল ধরিয়ে দেবার পর পোস্টমর্টেমে নামতে হবে কেন?প্যাকেটে ছ্যাঁদা থাকলে বাতাস তো ঢুকবেই হাসি

এখন আমার প্রশ্ন, কোনো গৃহকর্মির উপরে অত্যাচার করতে দেখলে আপনি কি করেন?

ইয়ে,রুহ কাঁপাতে পারি না,সত্যি বলছি।তেমন সিনার জোর হয়নি এখনো মন খারাপ ।তবে এমনটি দেখলে সাধ্যমত ঠেকানোর চেষ্টা করি।আর সত্যি বলতে কি,যারা এমন বাচ্চা পেটায়,তাদের বেশিরভাগই খুব দুর্বল চিত্তের মানুষ হয়।এদের সামনে একটু কনফিডেন্টলি,সাহস নিয়ে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এরা কুঁকড়ে যায়।

অন্যের উপরে অঙ্গুলি নির্দেশ করার সময় খেয়াল রাখবেন, আপনার বাকি চারটে আঙ্গুল কিন্তু আপনার নিজের বুকের দিকে তাক করা

জ্বি আজ্ঞে,আমার দিকে শুধু আমার চারটে আঙ্গুল নয়,এমনকি দু'হাতের সবমিলিয়ে বাকি ন'টা আঙ্গুলও নয়,বহুজনের বহু আঙ্গুল তাক করা আছে।আপনার দিকেও দুই একটা আঙ্গুল তাক করা থাকবে এ আর আশ্চর্য কী ? হাসি

(অট : হিমুর সাথে আপনার আলোচনার ব্যাপারটা হিমু আর আপনার মধ্যেই রাখুন না।এই আলোচনাটার মাঝে ওটা টেনে না আনলেই বোধহয় ভাল লাগতো।)

ভালো থাকুন হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

@বন্দনা কবীর

ভৃত্য নির্যাতন শুধু এই তিন প্রজাতির কুত্তার বাচ্চারাই করেনা। অনেক কিন্ডারগার্টেনের, কলেজের, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, মন্ত্রি এমপি, কর্পোরেট হাউজের কেরানি, মাদ্রাসার মৌলভি, ব্যাবসায়ি, ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে সমাজকর্মি, সাংবাদিক- তার বৌ সন্তানেরাও করে থাকেন।

- কথা সত্যি কিন্তু এটাও ঠিক যে, পুলিশের বৌ, আমলার বৌ, সেনাকর্তার বৌয়েরা বা এরা নিজেরাই যতটা নির্ভয়ে বা নিরাপত্তা নিয়ে এইকাজ করতে পারে সবাই কিন্তু তা পারে না। এই লেখাটার টোনটা কিন্তু সেদিকেই গেছে। শিশু নির্যাতন যেই করুক অবশ্যই তাকে কুত্তার বাচ্চা বললেও কারও কোন সমস্যা থাকার কথা না। তবে কথা হচ্ছে কোন বিশেষ শ্রেণীর লোকেরা কি তাদের সরকারী ক্ষমতার সুবিধা পাচ্ছে কিনা? এক একজন সেনা কর্মকর্তাকে আমি ঢাকার রাস্তায়ই যেরকম দম্ভ নিয়ে চলাচল করতে দেখেছি তাতেই বোঝা যায় এরা কিরকম প্রিভিলেজড একটা শ্রেণী, আর সেই প্রিভিলেজেরই সুযোগ নিচ্ছে কিছু মনোবৈকল্যে ভোগা কুত্তা।

শিক্ষক বা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারদের বৌরা যখন বাচ্চাগুলোকে পিটিয়ে ছাল চামড়া তুলে সার্ভেন্টস কোয়ার্টারে ফেলে রাখে তখন কি তাদের মনবৈকল্যতা নিয়ে কারো মনে প্রশ্ন আসেনা?

- মনবৈকল্যতা নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন আসবে, কিন্তু কেউ এই কাজটা তার ক্ষমতার জায়গাটার জোরে আরও প্যাশনেটলি করছে কিনা এই পয়েন্টটা খুবই ইম্পর্ট্যান্ট। আমাদের মধ্যেই হয়ত অনেক মেন্টাল স্যাডিস্ট আছে কিন্তু হয়ত ঝামেলা বা হেনস্তা হোয়ার ভয়ে স্যাডিজম থেকে দূরে থাকেন। কিন্তু এই শ্রেণীভুক্ত মানুষগুলোর সেই ঝামেলার ভয় অনেকাংশেই কম। পোস্টের টোনটা কিন্তু সেদিকেই।

এই সচলে কি পুলিশের, আমলার, সেনাকর্তার সন্তানেরা লেখে/পড়েনা? এখন তাদের বাড়ির চিত্রটি যদি এই নোংরা চিত্রটির উল্টো হয় তো তার আঁতে লাগতে বাধ্য। হ্যা, আমার যেমন লেগেছে।

- আমার মতে বাড়ির চরিত্র যদি উলটা হয় তারপরেও তাদের পড়া উচিৎ, এটুকু বোঝার জন্যে যে তাঁরা দেশের হর্তাকর্তা, তারা প্রিভিলেজড, সেই সুযোগটা যেন তারা না নেন, এইটুকু সচেতনতা তৈরী হলেও বা খারাপ কি?

নো হার্ড ফিলিংস প্লিজ। হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

শিশিরকণা এর ছবি

আমি একজন গৃহবধু। আমি আমার গৃহভৃত্যটিকে আদর-যত্নে রাখি, গৃহকর্মি এম্নিতেই এখন দুর্লভ।

এটুকু পড়ার পরেই মনে হলো, গৃহভৃত্য কেন দরকার? বাংলাদেশের আবহাওয়ায় কি গায়ের জোর কমে যায়? এনার্জি চলে যায়? যে কাজ বিদেশে থাকতে একাই সামলে ফেলা যায়, দেশে থাকলেই কেন আমাদের ভৃত্যের দরকার হয়? আর ভৃত্য শব্দটাই বা কেন ব্যাবহার হবে? ঘরের কাজ নিজে হাতে সামলানো সম্ভব না হলে গৃহকর্মীর সাহায্য যদি নিতেই হবে, মনে রাখতে হবে একজন আমার কাজটাই করছে, আমি যতটুকু সম্মান আশা করি, সেও মানুষ হিসেবে ততটুকুই সম্মান দাবি করতে পারে। সে যে নাম মাত্র অর্থের বিনিময়ে আপনাকে সাহায্য করছে, সেজন্য কৃতজ্ঞতা থাকা উচিত।
গৃহকর্মী দুর্লভ হলে তাকে তেল মারা বাদ দিয়ে নিজে কাজ করতে নামুন। শরীরে না কুলালে যথোপযুক্ত সম্মানীসহ গৃহকর্মী নিয়োগ করুন এবং তার সাথে প্রফেশনাল আচরণ করুন। দাসপ্রথা বিলুপ্ত হয়েছে অনেকদিন হল।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

সুলতান এর ছবি

সহমত...
আমার মনের কথাগুলো বলেছেন আপনি।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সহমত

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আপনি যাদের (যাঁদের নয়) কথা লিখেছেন তারাতো কেউ পুলিশ কেউ আমলা কেউবা সেনা এবং তাদের সহধর্মিণীগণ এরাতো মানুষ নয়। সুতরাং....।

তাপস শর্মা এর ছবি

হবে না। আমি শিওর। কেননা এদের যারা শাস্তি বিধান করবে তারও সেম কোরাপ্টেড মাল। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় এমন একটি ঘটণা আছে, যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমার জেলে যাওয়ার বন্দোবস্ত হয়ে গেছিল। কোন রকমে পালিয়ে বেচেছিলাম, মাথা নিচু করে। আমরা শালা কিছুই করতে পারিনা। নিজেকে এতটা ছোট মনে হয়েছিল। অফিসে ফিরে আসার পর চিফ বলল - খবর আনতে গিয়ে এসব উটকো ঝামেলায় জড়ানোর কি দরকার ? শালা এইবার নিজেকে আরও বালছাল মনে হয়েছিল।
সেই শালাই পরদিন এডিটরিয়াল কলামে সমাজের নোংরামি নিয়ে লিখল।

সব শালা হিপোক্রীট কীট।
রাতে বউ - জামাই মিলে স্বপ্ন লিলা সারে, তারপর ঘুম থেকে উঠে চা আনতে দেরি হলেই বাচ্চা বাচ্চা শিশুদের গায়ে গরম চা ঢেলে দেয়।
যে দিন না পর্যন্ত কিছু ভালো মানুষ একত্রিত হয়ে এই গরম চা বা তেল এইসব বিকৃত নর এবং মাদা'দের পোঁদে ঢালতে শুরু করবে ততদিন কিচ্ছু হবেনা। রাষ্ট্র শক্তি কিছুই করবে না। সৎ সাংবাদিকরাও জনমত গড়ে তুলতে পারেনা, কারণ কর্পোরেটের গুতানিতে তাদেরও ছাগুরাম সেজে হাগুর গল্প লিখতে হয়। আর যাদের ক্ষমতা আছে তাদের বেশির ভাগি বাল পাকনা পণ্ডিত।

মনোজ এর ছবি

চলুক চলুক চলুক চলুক চলুক

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

কল্যাণF এর ছবি

হিমু ভাই কুত্তার বাচ্চা একটা অসাধারন প্রাণী। কুত্তার বাচ্চা যখন কোন মানুষের আশ্রয়ে বড় হয় তখন আরো অসাধারন হয়। অপিরিচিত বা পাগলা কুত্তা বিপদজনক। অচেনা কুত্তার কাছে মানুষ গরু ছাগল সবি প্রতিপক্ষ ফলে যেকোন সময় ভয় পেলে আক্রমণ করে বসে। আর পগলা কুত্তা অসুস্থ যে অসুখে কুত্তাটাও কষ্ট পেয়ে ম্রিত্যুর দিকে যাচ্ছে। কিন্তু মানুষ এমনি এক পশু যার তুলনা আপনি পশু সমাজে খুঁজে পাবেন না। এই ভয়ংকর হিংস্র দু'পেয়ে পশু যেকোন বনের পশুর থেকে বিপদজনক কারণ বাইরের অবয়ব দেখে বোঝা যায় না পাশের পশুটার ভিতরে কি পরিকল্পনা চলতেছে। দু'পেয়ে এই পশুদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া দরকার অবিলম্বে এবং দ্রুত।

bahiri এর ছবি

সম্পূর্ণ একমত।

সামিয়া এর ছবি

অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু কোন সন্দেহ নেই, কিন্তু দেখুন, একটা প্যাটার্ন টেনে প্রথমেই আপনি এই তিন শ্রেণীর বিশেষ করে বৌদেরকে এক্কেবারে অপরপক্ষে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন। আমার প্রথমেই গায়ে লেগে গেল কারণ আমার নিজের বাবাই সেনা কর্মকর্তা। তাই ইস্যুটা নিয়ে ভাববার আগেই আমার মাথায় চট করে খেলে গেলো, বুঝি বা আমার মা'কে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হলো। আমার দৃষ্টিটা তখন শিশু নির্যাতন থেকে সরে এসে এই শ্রেণী বিভাজনে লেগে যাবে। এটা আসলে মানুষের স্বাভাবিক একটা ইন্সটিংক্ট। হাসি

আর একটু চেষ্টা করে এই ইন্সটিংক্ট থেকে বেরিয়ে এসে ভাবার চেষ্টা করলাম, আমার মাথায় এই মুহুর্তে যে চারটে উদাহরণ উঁকি দিচ্ছে তার একজন সেনা কর্মকর্তা, একজন ডাক্তার, আর দুজন চাকরী করেননা। তার মধ্যে শেষের জন বাচ্চাটিকে মেরেই ফেলেছিল।

আমি নিশ্চিত আপনি কোন ব্যক্তিগত আক্রমণ করেননি হাসি , আপনার উদ্দেশ্য একদম ঠিক ঠিক। তারপরেও এই সচেতনতা মূলক লেখাগুলো যারা লেখে তাদের দায়িত্ব আসলে অনেক বেড়ে যায়, একটি ইস্যু সমাধাণ করতে গিয়ে যদি অপর ইস্যুগুলোতে খোঁচা পরে যায়...তা আসলে কাম্য নয়।

হিমু এর ছবি

প্যাটার্ন তো এমনি এমনি গজায় না, খবরের কাগজ পড়ে গজায়। আপনি গত এক বছরের খবরের কাগজে শিশু নির্যাতনের রিপোর্টগুলো বের করে পড়ে দেখুন। গুগল করলেই পাবেন। সেখানে পুলিশ, সরকারী কর্মকর্তা আর সেনা কর্মকর্তাদের উদাহরণের ছড়াছড়ি।

আপনার বাবা সেনা কর্মকর্তা দেখে আপনার লেগে গেলো কেন? আপনার বাবা কি কাজের লোক পিটায়? আপনার মা কি কাজের লোকের গায়ে তরকারি ঢেলে দেয়? খুন্তি পোড়া দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়? আমি কি বলেছি দেশের সকল পুলিশ, সকল আমলা, সকল সেনাকর্তার বৌ এই কাজ করে? আর যারা করে, তাদের কুত্তার বাচ্চা বললে দোষ?

তাপস শর্মা এর ছবি

চলুক

সামিয়া এর ছবি

খেপেন না ভাই, আমরা আমরাই তো হাসি

আমার গায়ে লাগে নি, আমি 'বেসিক ইন্সটিংক্ট' -টা বোঝাতে চাচ্ছিলাম। যারা করে, তাদের কুত্তার বাচ্চা বললে আসলেই দোষ না, তবে কুত্তার বাচ্চা বলাটা একটু পার্শিয়াল হয়ে যাচ্ছে। শিরোনামটা দেখুন, শুধু সরকারী কর্মকর্তাদের কথা আসছে, বেসরকারীরা বুঝি পিটায় না?

ভাইয়া, আমার উদ্দেশ্য এই তিন শ্রেণী ফেরেশতা, তা প্রমাণ করা না।এখানে আমাদের টার্গেট গ্রুপ হচ্ছে 'যারা বাচ্চাগুলোকে পিটায়'। আর্মি, পুলিশ পিটায়, ডাক্তারও পিটায়, কদিন আগে নিউজে খবর এসেছিল ঢাবি শিক্ষকের স্ত্রীর বিরুদ্ধে। আসলে এই ব্যাপারে আমার আর কথাই বলা উচিৎ হবে না, তাতে করে ব্লগের মূল ফোকাস সরে যাচ্ছে।

হিমু এর ছবি

কেন সরকারী কর্তাদের বরখাস্ত করার কথা বলছি, আপনি এবার একটু চিন্তা করে দেখুন? আপনি আমি রাস্তায় যদি একটা লোককে পিটাই, আমাদের পুলিশে ধরে নিয়ে যাবে, হাজতে রাখবে, জেলে রাখবে, মামলা দেবে, বিচার করবে। আর একটা পুলিশ অফিসার, সরকারী অফিসার বা সেনা অফিসার যদি রাস্তায় কাউকে অন্যায়ভাবে পিটায়, তাকে দেয়া হবে "বিভাগীয় শাস্তি" বলে একটা আদুরে শাস্তি। এই শাস্তিতে কপাল খারাপ থাকলে কয়েক মাস সাসপেনশনে থাকতে হয়, কপাল প্রচণ্ড মারাত্মক খারাপ থাকলে জেলরিমানা হয়। চট্টগ্রামে পুলিশ ডাকাতির সাথে জড়িত থাকার কারণে তার বিভাগীয় শাস্তি হয় সাময়িক বরখাস্ত। আপনি আমি আমরা বেসরকারী লোক, ডাকাতি করলে আমাদের কোত্থেকে বরখাস্ত করবে সরকার?

অবশ্যই বেসরকারী লোকজন কাজের লোককে অমানুষের মত পিটায়, তারাও কুত্তার বাচ্চা অ্যান্ড সামওয়ান মাস্ট হ্যাভ পীড ইন দেয়ার মাদারস টু, কিন্তু সরকারের পুলিশ-আমলা-সেনাদের কথা তাহলে আলাদা কেন? কারণ তারা সরকার চালায়, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করে, দেশের প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত থাকে। গৃহভৃত্য নির্যাতনের ঘটনা প্রতিরোধে আমরা এদেরকে ফার্স্ট লাইন অভ ডিফেন্স হিসেবে দেখতে চাই, তাই না? আর এদের মধ্যেই যদি এইসব ঘটনা বেশি ঘটে, এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতার প্যাঁচে ফেলে যদি এরাই দোষীদের শাস্তি পাওয়া থেকে বাঁচিয়ে দেয়, তাহলে গালিটা আমরা কাকে দিবো?

সামিয়া এর ছবি

চিন্তা করলাম।
আপনার কথার শেষ প্যারার সাথে একমত, আমিও তাদের প্রথম লাইনেই দেখতে চাই। তবে প্রথম প্যরাটা বেশি তত্ত্বীয় মনে হল।

আপনি আমি রাস্তায় যদি একটা লোককে পিটাই, আমাদের পুলিশে ধরে নিয়ে যাবে, হাজতে রাখবে, জেলে রাখবে, মামলা দেবে, বিচার করবে।

দেখুন, এই দিন আর নাই। আমার কমনসেন্স বলে, এখনকার বাংলাদেশে আপনার আমার যদি ক্ষমতা থাকে তবে আপনি আমিও বেরিয়ে যেতে পারি। আবার কোন আর্মি বা পুলিশ যদি 'ক্ষমতা'হীন হয়, তবে তারা সেই শাস্তি পাবে। আপনি জিজ্ঞেস করতে পারেন 'ক্ষমতা'হীন আর্মি বা পুলিশ কিভাবে হয়। এখন সব পুলিশই তো আর অকারণে মানুষ পিটায় না, সব পুলিশই তো ঘুষ খায় না। এরা সারাজীবনই 'ক্ষমতা'হীন। তেমনটা আর্মিতেও রয়েছে। এরা দোষ করলে ন্যায় 'শাস্তি' পায়।
আমরা যদি আমাদের ফোকাস ঠিক করি, তাহলে পাবোঃ
'গৃহে যেই শিশুরা কাজ করে তাদের ওপর নির্যাতন'
এটার বিরুদ্ধে লড়তে গেলে আমাদের দরকার প্রতিপক্ষ। প্রতিপক্ষকে সরলীকরণ করলে পাবোঃ
যারা নির্যাতন করে
এরা কারা? আর্মি, পুলিশ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, আমলা, এমনকি গুগল করতে গিয়ে শেয়ার ব্যবসা করে এমন মানুষকেও পাচ্ছি আমি। তারমানে এদেরকে আপনি পেশা দিয়ে এক গ্রুপে ফেলতে পারবেন না। এরা হলো মুজাই বর্ণিত 'খারাপ' মানুষের দল।
আমাদের লড়াই এদের বিরুদ্ধেই।
কাজের সুবিধার্থে টার্গেট গ্রুপ কে আমরা যদি আবার সর্ট আউট করতে যাই, তখন আমরা সেনা, পুলিশ, সরকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আগে লাঠি ধরবো। তবে কুত্তার বাচ্চা বললে সবাইকে একসাথেই বলব, নইলে যারা লড়াই করছি, তাদের মধ্যেই বিভেদ শুরু হয়ে যাবে।

হিমু এর ছবি

সব পুলিশই তো আর অকারণে মানুষ পিটায় না, সব পুলিশই তো ঘুষ খায় না।

এখন খুউপ মনোযোগ দিয়ে আমার পোস্টের শেষ লাইনে দেখুন, আমি "মনোবিকলনে ভোগা" এই পুলিশ-আমলা-সেনাকর্তাদের স্ত্রীদের কুত্তার বাচ্চা ডেকেছি। দেশের সব পুলিশের বৌ, সব আমলার বৌ, সব সেনাকর্তার বৌ তো মনোবিকলনেও ভোগে না, কাজের লোককে এরকম পৈশাচিক মারধর করে না, তাদের উদ্দেশ্য করেও কিছু বলিনি আমি।

আপনি যদি মনোবিকলনে ভোগা ইনজিনিয়ারের বৌ, ডাক্তারের বৌ, শিক্ষকের বৌ, উকিলের বৌ, ব্লগারের বৌ, সাংবাদিকের বৌকে কুত্তার বাচ্চা বলেন, আমি কিন্তু আপত্তি করবো না। আমার চোখে গত কয়েক বছর ধরে ভৃত্য নির্যাতনের যে প্যাটার্ন ধরা পড়েছে, আমি সেটা নিয়েই লিখবো। এর বাইরেও তো কত সিকো আছে, তাই না? কিন্তু ঘুরে ফিরে যদি কয়েকটা পার্টিকুলার ভ্যারিয়েবলের ফ্রিকোয়েন্সি বেশি হয়, সেগুলো নিয়ে কথা বলা যাবে না?

সামিয়া এর ছবি

হুম। আমি বুঝতে পারলাম। সম্ভবত এতক্ষণ একটা ফ্যালাসীর মাঝ দিয়ে যাচ্ছিলাম।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

হিমু এর ছবি

সামিয়া আপনাকে আরেকটা প্রশ্ন করি, এই যে আপনি এক সেনা কর্মকর্তার উদাহরণ পেলেন, সেনা সদর কি তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিয়েছিলো? সেনাবাহিনী কি গৃহভৃত্য নির্যাতনকারী একটা লোককে অফিসার হিসেবে নিজের অংশ হিসেবে রাখতে আগ্রহী? কোনো বিভাগীয় শাস্তি কি তাকে পেতে হয়?

আপনি রোমেলার খবরটা দেখবেন, পুলিশ প্রথমে মামলাই নিতে চায়নি। এক এসআই আর তার বৌ পিটিয়েছে, আরেক এসআই নিজের কলিগের চামড়া বাঁচাচ্ছে। পত্রিকায় ব্যাপারটা আসার পর ওপর থেকে পুলিশকর্তারা ব্যবস্থা নিয়েছেন। এই ব্যবস্থা এমনি এমনি নেয়া হয়নি, মিডিয়ার চাপে পড়ে নিতে হয়েছে। কাগজে ব্যাপারটা না এলে কোনো মামলাই হতো না। আর এই মামলার কী ফল হবে, আমরা জানি না। সেনাবাহিনীর অফিসারদের ক্ষেত্রে কি চর্চাটা ভিন্ন হয়? খবরের কাগজে আসা খবরের বাইরে যেসব নির্যাতনের ঘটনা সেনা-নৌ-বিমান অফিসারদের ক্ষেত্রে ঘটে, সেগুলো প্রতিরোধে সেনাবাহিনী বা নৌবাহিনী বা বিমানবাহিনীর কোনো সক্রিয়তা আছে কি না, আমাদের জানাতে পারেন?

সামিয়া এর ছবি

আমার জানামতে ব্যাপারটা সেনা সদর পর্যন্ত পৌঁছতেই পারেনি। তবে গৃহ ভৃত্য নির্যাতনে সেনা সদরের শাস্তির ব্যাপারটা বলতে পারছি না। বিধান থাকার কথা, যে অত্যাচার প্রমাণিত হলে লোর্ট মার্শাল হয়ে সেনা অফিসারের চাকরী চলে যাবে (এই মুহুর্তে রেফারেন্স দিতে পারছি না বলে দুঃখিত)। তবে আদৌ তারা কিছু করে, না নিজ অফিসারকে বাঁচানোরই চেষ্টা করে কিনা তা আমার জানা নেই।

রোমেলার ব্যাপারটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আপনি শিওর থাকতে পারেন এজায়গায় বিত্তশালী অন্য কেউ থাকলেও ডায়রী নিতে তারা এরকমই গড়িমসী করত। কদিন আগেও এক দম্পত্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তারা তাদের আবসার বাচ্চাটিকে নির্যাতন করে রেলিং দিয়ে নিচে ফেলে দিয়েছে।
এসব ঘটনার পর আসলেই কিছু বলার থাকে না।

হিমু এর ছবি

তার মানে, খুব আবছা অনিশ্চিত একটা ব্যাপার। এবং শাস্তিও বড়জোর চাকরি চলে যাওয়া। আমি বা আপনি যদি এরকম পৈশাচিক কারবার করি, শিশু নির্যাতন আইনে একজন বেসরকারী বেসামরিক লোক হিসেবে আমাদের আরও অনেক কঠোর শাস্তি হবে। তার মানে কি ব্যাপারটা এমন না, যে একজন পুলিশ-আমলা-সেনাকর্তার ক্ষেত্রে আইন ভিন্ন? শাস্তি ভিন্ন? তারা এই ভিন্ন শাস্তির সুবিধার কথা জেনেই এইরকম পৈশাচিক মারধর করে? একটা রক্ষাবর্মের আড়ালের সুবিধা নিয়ে যারা এবং যাদের বৌরা এই কাজ করে, তারা কুত্তার বাচ্চা না তো কী?

এইবার আমাকে বলেন তো সামিয়া, ঐ সেনাকর্তা বা তাঁর স্ত্রীকে কি তার সহকর্মী বা প্রতিবেশী কেউ বাধা দিয়েছিলেন? তিরস্কার করেছিলেন? কেউ কোনো সামাজিক চাপ দিয়েছিলেন?

সামিয়া এর ছবি

আবছা অনিশ্চিত কারণ আমি রেফারেন্স দিতে পারছি না বলে। ভাল হত কোন সেনা কর্মকর্তা যদি নিজে উত্তরটা দিতেন।
আর হ্যাঁ, সেই সেনা কর্মকর্তা তার সিনিয়র দ্বারা তিরস্কৃত হয়েছিলেন, পরিবার বাধা দিয়েছিল, সহকর্মীরা সামাজিক চাপ দিয়েছিল। এটা সমাজের যে কোন ক্ষেত্রে যে কেউ করলে আশেপাশের মানুষদের কাছ থেকে চাপ পাবেই। কিন্তু মূল ব্যাপার তিরস্কার, বাধা বা চাপের মধ্য দিয়ে আসছে না। মূল ব্যাপার হলো তিনি যে বাচ্চাটিকে মারলেন, তাতে তিনি আইনগত শাস্তি পেলেন কি না।

হিমু এর ছবি

আইনগত শাস্তি সেই লোক পায় নাই তো। সে নিজেও জানে, তাকে আইনগত শাস্তি দেয়ার দিল্লি দূর অস্ত। একটা চাকর বাচ্চাকে পিশাচের মতো পিটালে তাকে তার সিনিয়র বড়জোর তিরস্কার করবে, পরিবার বড়জোর মৃদু বাধা দেবে, সহকর্মীরা বড়জোর সামাজিক চাপ দেবে, অনেক সময় এগুলো কিছুই ঘটবে না। সর্বোপরি ঐ বাচ্চাও তার মতো একটা গোদা ব্যায়ামপুষ্ট মাসলম্যানের সাথে গায়ের জোরে পেরে উঠবে না। অতএব বাচ্চাটারে পিটায় ভর্তা বানা, গায়ে ছ্যাঁকা দে, গরম পানি ঢাল, চুল কেটে দে, ইত্যাদি ইত্যাদি। আপনি বলেন, এই কিসিমের মনোবিকলনে যারা ভোগে, তাদের কুত্তার বাচ্চা বললে সমস্যাটা কোথায়?

reshad এর ছবি

"আপনি-আমি যদি একই কাজ করি, আমাদের আরো অনেক কঠিন শাস্তি হবে। তারমানে কি ব্যাপারটা এমন না যে পুলিশ-আমলা-সেনা কর্মকর্তার জন্য ভিন্ন আইন?"
হিমু ভাই, আপনার একজন ভক্ত হিসেবে সম্মানের সাথে বলছি, না, ভিন্ন আইন নয়। হয়তো তারা ক্ষমতা খাটিয়ে বের হয়ে যেতে পারেন, বা লুপহোলগুলো ভাল জানেন, কিন্তু আইনের মুখোমুখি করতে পারলে অন্তত সরকারী কর্মকর্তাদের জন্য ভিন্ন কোন আইন আছে বলে আমার জানা নেই, আপনার জানা থাকলে রেফারেন্সসহ জানাতে পারেন। পয়েন্ট হলো, আপনি লোকটা সুবিধার না হলে, আপনার বাপের টাকা বা ক্ষমতা থাকলে, আপনি সরকারি-বেসরকারি-অদরকারি এগুলো কোন ব্যাপারই না, এই দেশে আপনি বের হয়ে যেতে পারবেন, যে কোন অপরাধ করে। যারা অপরাধটা করছে, তাদের কোন বিশেষ শ্রেণীতে ফেলে দিতে চাইছেন এটা বিশ্বাস করি না, কিন্তু অন্তত তাদের জন্য ভিন্ন আইন নেই, এটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি।

হিমু এর ছবি

রেশাদ ভাই, আমি দ্বিমত করতে চাই। আপনি একটু কষ্ট করে গুগলে "বিভাগীয় শাস্তি" লিখে সার্চ করে বেরিয়ে আসা খবরগুলো পড়ুন। আলোচনার জন্যে একটা লিঙ্ক দিচ্ছি, দেখুন।

আমি রাস্তায় চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ধরা পড়লে আমার নামে মামলা হবে। পুলিশ যখন চাঁদাবাজি করে, তখন তাকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয় শুধু। কিংবা দুধভাত শাস্তি হিসেবে সাময়িক সাসপেন্ড করা হয়। কপাল মারাত্মক খারাপ থাকলে সে চাকরি একেবারে হারাবে। কিন্তু কয়টা পুলিশ চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ধরা পড়ে তারপর জেলে গেছে বলেন? পুলিশ বলেন, আমলা বলেন, সেনাকর্তা বলেন, ফৌজদারি অপরাধেও এনাদের বিভাগীয় শাস্তি হয় খালি। কেন?

আপনি যে বললেন, "আইনের মুখোমুখি করতে পারলে", একটু চিন্তা করে দেখেন তো, পুলিশ-আমলা-সেনাকর্তাদের আইনের মুখোমুখি করতে পারাটা কত টাফ এই দেশে? পুলিশকে আইনের মুখোমুখি কে করবে? আরেক পুলিশ। আমলাকে আইনের মুখোমুখি কে করবে? আরেক আমলা। সেনাকর্তাকে আইনের মুখোমুখি কে করবে? আরেক সেনাকর্তা। (সেনাকর্তারা আইনভঙ্গ করলে পুলিশ তাদের মিলিটারি পুলিশের হাতে তুলে দিতে বাধ্য, তাই না?) প্যাঁচটা কোথায়, আমরা তো জানিই।

তারপরও আমি আপনার কথার একটা পয়েন্ট মেনে নিচ্ছি, রিফ্রেইজ করছি আমার কথা, পুলিশ-আমলা-সেনাকর্তাদের জন্য ভিন্ন আইন নেই, তাদের জন্য আছে আ্ইনের ভিন্ন প্রয়োগ কিংবা প্রয়োগহীনতা। বেলা শেষে ঐটাও একটা সুবিধা, যেটার অ্যাবিউজ তাদের মধ্যে মনোবিকলনে ভোগা কয়েকজন করে।

মৃত্যুময় ঈষৎ(অফ্লাইন) এর ছবি

মনোবিকলনে ভোগা এ্‌ইসব পুলিশের বৌ, আমলার বৌ, সেনাকর্তার বৌয়েরা, আপনারা প্রত্যেকে একেকটা কুত্তার বাচ্চা। সামওয়ান পীড ইন ইয়োর মাদারস। চলুক

কোন সুস্থ মানুষের পক্ষে এই ধরণে পাশবিক আচরণ করা সম্ভব নয়। নির্যাতিত বাচ্চাগুলোর দিকে তাকানো যায় না, বুক ভেঙে আসে............অস্থির, অসুস্থ হবে পড়ি.......... মন খারাপ মন খারাপ

ইশান এর ছবি

শালারা খারাপ।।তবে খালি সরকারী কর্মকর্তারা না,যারাই এই প্রকার খারাপ কাজ করবে,তাদের সবাইরে জন সম্মুখে ইট & কচু দিয়া আপ্যায়ন করার ব্যবস্থা করা উচিত ।।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

চলুক চলুক চলুক চলুক চলুক

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

মুক্ত অভি এর ছবি

মানুষ একদিকে নিজেকে সৃষ্টির সেরা জীব দাবি করে, অন্যদিকে কিছু মানুষ নিজেরই প্রজাতির উপর অমানুষিক অত্যাচার চালিয়ে স্যাডিস্টিক 'মনোতৃপ্তি' লাভ করে (যা অন্য কোন জীব প্রজাতি করে কিনা সন্দেহ), এসব 'মানুষ' নামের দু-পেয়ে নরপিশাচদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

রু (অতিথি) এর ছবি

লেখাটা মাথা থেকে সরাতে পারছিনা। জেনারালাইজেশন নিয়ে কিছু পাঠক আপত্তি করছে দেখলাম। অমুক শ্রেনীর মানুষকে ধরে গালি কেন দেওয়া হোল প্রশ্ন করা হলে মনে হয়, পাঠক শিশুটার সমব্যথী না হয়ে সেই পশুটার সাথে নিজেকে রিলেট করছে বেশি। পশুগুলোকে দেওয়া গালি যদি নিজের গালে চড়ের মতো এসে লাগে, তাহলে দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায় নিজে যে শ্রেনীর অন্তর্ভুক্ত সেখান থেকে যেন এরকম কোন উদাহরন না বের হয় সেটা দেখা।

আর কিছু বলতে ইচ্ছা করছে না।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

চলুক চলুক

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

দ্রোহী এর ছবি

চলুক

রোকসানা রশীদ এর ছবি

আমার জানা মতে একজন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকতার 'দৃষ্টান্তমূলক' শাস্তি হইসিলো, যখন তার স্ত্রী কাজের মেয়েকে শুধু পিটায় মেরেই ফেলে নাই, মাদুরে প্যাঁচায়ে লাশ গুম করার সময় ধরাও পড়সিলো। সেই বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা সাময়িক সাসপেন্ডেড হইসিলো, এরপর তার সহায়তায় তার খুনী স্ত্রী আমেরিকা চলে যায়। যদ্দুর জানি তারা এখন ঐখানেই সেটেলড!
এইটা যদি দৃষ্টান্ত না হয় তাইলে কোনটা দৃষ্টান্ত আমি জানি না!!

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এইটা দৃষ্টান্ত বলতেছেন? একজন খুনীকে পালাতে সহায়তা করাও যে ক্রিমিনাল অপরাধ সেটার বিচার কি সাময়িক চাকুরিচ্যুতি?

রোকসানা রশীদ এর ছবি

জ্বী ভাই, এইটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি! হাসি
আপনার কি মনে হয়, মহিলা একদিনেই বাচ্চা মেয়েটাকে পিটায় মেরে ফেলসিলো? দিনের পর দিন পিটাইসে, তার স্বামীর আড়ালে নিশ্চয়ই পিটায় নাই, সে নিশ্চয়ই আগে থেকেই জানতো মহিলার নির্যাতনের কথা... জেনে শুনেও সায় দিয়ে গেসে...
(আপনি সম্ভবত সারকাজমটা ধরতে পারেন নাই!) ইয়ে, মানে...

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

বুঝতে দেরী হলো। আমি একটু স্লো মনে হয়।

দ্রোহী এর ছবি

আমার কথাগুলো রু বলে দিয়েছেন:

জেনারালাইজেশন নিয়ে কিছু পাঠক আপত্তি করছে দেখলাম। অমুক শ্রেনীর মানুষকে ধরে গালি কেন দেওয়া হোল প্রশ্ন করা হলে মনে হয়, পাঠক শিশুটার সমব্যথী না হয়ে সেই পশুটার সাথে নিজেকে রিলেট করছে বেশি। পশুগুলোকে দেওয়া গালি যদি নিজের গালে চড়ের মতো এসে লাগে, তাহলে দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায় নিজে যে শ্রেনীর অন্তর্ভুক্ত সেখান থেকে যেন এরকম কোন উদাহরন না বের হয় সেটা দেখা।

ধ্রুবনীল এর ছবি

সহমত।

১৯৯৫-এ আমার পরিচিত তৎকালীন এক কর্নেল সাহেবের বাসার কাজের মেয়েকে সকাল বেলায় বারান্দায় ঝুলন্ত মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। উনারা আত্মহত্যা বললেও পুলিশ প্রথমে ঝামেলা করেছিল। তারপর তৎকালীন এক প্রভাবশালী মন্ত্রী ধরে "ঝামেলা" মেটান, তাও বেশ কয়েকমাস লেগেছিল। যদিও কর্নেল সাহেব কড়া বিএনপি সমর্থক হিসাবে পরিচিত, কিন্তু আওয়ামী মন্ত্রীর সাহায্য পেতে তার কোন সমস্যা হয়নি।

আমাদের দেশে রাজনীতিতে চূড়ান্ত নোংরামি থাকলেও প্রভাবশালীরা একে অন্যের "বিপদে" ঠিকই সাহায্য করেন। যার ফল ভোগ করে অসহায় গরীব জনসাধাহরন। অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক কোন শাস্তিতো হয়ইনা বরং এই ধরনের অপরাধীরা বার বার পার পেয়ে যায়, যা ভবিষ্যতে আরও অপরাধের সুযোগ সৃষ্টি করে।

আজকের কাগজে রোমেলার ছবিগুলো দেখে শিউরে উঠেছি! আসলেই কিভাবে পারে এরা? ধন্যবাদ।

শিশিরকণা এর ছবি

আমাদের ফ্ল্যাটের চারতলায় একজন নামকরা সমাজকর্মীর বাসা থেকে রাত বিরাতে বাচ্চা মেয়ের 'বাবগো, মাগো" কান্নার আওয়াজ আসতো। ফ্ল্যাটের দারোয়ানদের থেকে শুনেছি, তারা দুই একটা মেয়েকে ঐ বাসা থেকে পালাতে দেখেছে ( বাধা দেয় নি।) এই ভন্ডগুলো কিন্তু অনেক সময় ফার্স্ট লাইন অফ ডিফেন্স পুলিশ, সেনাবাহিনী এর আগে চলে আসে নির্যাতিতকে উদ্ধার করতে।

আর হ্যাঁ, আমার মেরুদন্ড নাই। আমি ঐ বাসায় গিয়ে নক করে বলি নাই, কী হচ্ছে এসব? বাপ মায়ের মুখে 'এসব ঝামেলায় জড়াস না" টাইপের চাহনি দেখে থেমে গেছি। ইয়ে, মানে... ধিক আমার মানবিকতা।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

নীড় সন্ধানী এর ছবি

যে পরিমান নির্যাতন হয় তার কিয়দংশও পত্রিকায় আসে না। পত্রিকার খবরে তখনই আসে যখন থানায় যাবার মতো ভয়ংকর কোন ঘটনা ঘটে।
শুনতে একপেশে লাগে কিন্তু "আমলা পুলিশ আর সেনাকর্তার দয়ালু স্ত্রী" কথাটা কেমন যেন সোনার পাথর বাটি। নিজের চোখে যে কজনকে দেখেছি তাদের মধ্যে দয়ালুরা নেই বলেই বোধহয়।

আমি একজন শীর্ষ আমলাকে চিনি যিনি অসম্ভব মানবিক গুনাবলী সম্পন্ন নির্দোষ নির্মোহ মানুষ। কিন্তু তাঁর স্ত্রী সম্পূর্ন বিপরীত। এবং স্ত্রীর অমানবিক আচরণের প্রতিবাদ করলেও তাকে নিবৃত করার ব্যাপারে অসহায় দেখা গেছে। মুখরা সেই রমনী কখনো কখনো ভৃত্য ছেড়ে স্বামীর দিকেও তেড়ে আসেন। যদিও ক্ষমতার উৎস সেই স্বামী, তবু স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর দাপটেই পাড়া প্রতিবেশী তটস্থ থাকে। ভদ্রলোকের জন্য করুণাই হয়েছিল দেখে। কিন্তু ওই নির্যাতনগুলো খবরে আসে না কারণ, তার একটাও মৃত্যুর পথে হাটেনি। আধমরাতেই পালিয়ে বেঁচেছে কাজের লোক।

আমার আরেক প্রতিবেশী ব্যাংকারের স্ত্রীরও একই কান্ড। দশ বারো বছর বয়সের কাজের ছেলেকে মধ্যযুগীয় কায়দায় বন্দী রেখে কাজ করাতো। ছেলেটার পায়ে দগদগে ঘা হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু কখনো ওষুধ লাগাতে দিত না। ব্যাংকার ভদ্রলোকও অতিশয় ভদ্র। কিন্তু স্ত্রী নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থ। সেই ছেলেটিও একদিন সুযোগ পেয়ে পালিয়ে বাঁচে।

আরেক ঘরে দেখেছি কাজের লোক যেন বিশ্রাম না পায় সেজন গৃহিনীর ঘুম হারাম। খুজে খুজে তার জন্য ১৮ ঘন্টার কাজ/অকাজ তৈরী রাখে। বসে থাকলে নাকি টিভি দেখবে, শয়তান হয়ে যাবে। তাই সারাক্ষণ কর্মব্যস্ত রাখার প্রচেষ্টা। তাছাড়া তিনবেলা খাবার আর ১০০০ টাকা বেতন দিচ্ছে সেটা হালাল করাও দরকার নাকি। সেই বাসার নাম শুনলে কাজের লোক এখন ১০০ হাত দূর থেকে পালায়। ওই বাসা একজন বেসরকারী সংস্থার কর্মকর্তার। এইসব খবরও পত্রিকায় আসে না।

নানা শ্রেনীর এইসব মনোবৈকল্য রোগীর প্রাবল্য দেখে মনে হয় 'কাজের লোক' ধারণাটিই নিষিদ্ধ করা উচিত এদেশে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

বেদুইন এর ছবি

আমি একজন কনিষ্ঠ আমলা হয়ে ও এই নির্যাতনের প্রতিবাদ করছি। কাজের মেয়ের গায়ে হাত তোলা আর ধর্ষন করা একি কথা...।

তিথীডোর এর ছবি

পাশের বাড়ির মেয়েটি (ছেলেবেলায় একসঙ্গে বড় হয়েছি) ভাল খাবারের লোভ দেখিয়ে গৃহভৃত্য হিসেবে কাছের বস্তির বাচ্চা একটা ছেলেকে নিয়ে গিয়েছিল ঢাকায়।
দুমাস পর আধপেটা খেয়ে আধমরা হাল নিয়ে সে পালিয়ে এসেছিল একা।

মানুষ দিন দিন পিশাচ হয়ে যাচ্ছে আসলে!

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

দ্রোহী এর ছবি

কাজের মেয়ে পেটালে পাপ হয় না। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও পৃথিবীর কোন ধর্মেই দাস প্রথা নিষিদ্ধ করা হয়নি। খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্মে দাস-দাসীদের সাথে সঙ্গম করা বৈধ ঘোষনা করা হয়েছে। হিন্দু ও ইহুদিদের ধর্মে কী বলা হয়েছে জানি না, কেউ কী জানেন?

মুয়াত্তা-মালিক হাদিসের ৩০.২.১৩ নম্বর হাদিসটা দেখা যাক।

Yahya related to me from Malik that Abdullah ibn Dinar said, "A man came to Abdullah ibn Umar when I was with him at the place where judgments were given and asked him about the suckling of an older person. Abdullah ibn Umar replied, 'A man came to Umar ibn al-Khattab and said, 'I have a slave-girl and I used to have intercourse with her. My wife went to her and suckled her. When I went to the girl, my wife told me to watch out, because she had suckled her!' Umar told him to beat his wife and to go to his slave-girl because kinship by suckling was only by the suckling of the young."

মুমিন ভাইয়েরা আবার চিপায় পড়লে কোরান-হাদিস মানেন না। মুয়াত্তা-মালিক হাদিসের ৩০ নম্বর বইটা রসময় গুপ্তের বইগুলোর চাইতে কোন অংশে কম না। চোখ টিপি

এবার দেখা যাক বাইবেল কী বলে:

Exodus 21:7 -11

When a man sells his daughter as a slave, she will not be freed at the end of six years as the men are. If she does not please the man who bought her, he may allow her to be bought back again. But he is not allowed to sell her to foreigners, since he is the one who broke the contract with her. And if the slave girl's owner arranges for her to marry his son, he may no longer treat her as a slave girl, but he must treat her as his daughter. If he himself marries her and then takes another wife, he may not reduce her food or clothing or fail to sleep with her as his wife. If he fails in any of these three ways, she may leave as a free woman without making any payment.

পুরো বাইবেল জুড়ে খালি খুন আর ধর্ষনের আলাপ!

ধর্মগুলো সম্পর্কে যত পড়ি ততোবেশি মুগ্ধ হই। তাই বলা যেতে পারে অন্তত ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অভিযুক্ত পুলিশ খাঙ্কির পোলা ও তার বউ তেমন বড় পাপ করেনি। হাসি

shafi.m এর ছবি

আপ্নার মুয়াত্তা-মালিক নিয়ে সন্দেহ আছে,

Sulayman Ibn Bilal said: "When Malik wrote the Muwatta', it included four thousand hadiths - or did he say more than four thousand hadiths. When he died, it contained one thousand and some hadiths, as he screened it year after year according to what he believes fulfills the interest of the Muslims and that of the religion."

`Atiq al-Zubayri said: "Malik included some ten thousand hadiths in his Muwatta'. Each year he would revise it and drop some narrations from therein so much so that we are left with this amount of it. Had he lived longer he would have dropped the rest of it."

লিংক

আমার অল্প বিদ্যায় জানি যে ইসলাম শুধু স্বামী-স্ত্রি (মোরোভার, ইন্টারকোসর্ অনলি ইন ন্যাচারাল ওয়ে) ব্যাতিত অন্য কারো সাথে কোনরুপ শারীরিক সম্পর্ক নিষিদ্ধ।

(24:30) Enjoin (O Muhammad) believing men to lower their gaze and to preserve their chastity; It is what is most pure for you. In truth, God is fully aware of their acts. (24:31) And enjoin believing women to lower their gaze and preserve their chastity, and not to reveal any of their attributes of beauty except that which is [manifestly] apparent, and to draw their veils over their chests…

(24:2) [When it comes to] the woman guilty of fornication or adultery (azzayinatu), as well the man guilty of fornication or adultery (azzani), flog both of them with a hundred lashes, and do not let pity towards them overcome you in implementing God’s law, if you believe in God and the last day. And let a group of believers witness their [dual plural] punishment.

লিংক

৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে পাকি মিলিটেরি ও কিছু পাকি-পাচাটা বাঙাল (ও কিছু বিহারি) রাও এমন ফতোয়া মারছিলো যে যুদ্ধে পাকি (সো কলড সুপিরিওর 'মছলমান' দ্যান বেংগলি মুসলিম) "মোচলমানরা" (হারামিরা) বাঙালি মেয়েদের সাথে সেক্সুয়াল-স্যাডিজম, রেপ এসব করতে পারে, ইসলামে বাধা নাই!!!!!!! (মুখটাই তিতো হয়ে গেল)। অথচ ওরা আমাদেরকে হিন্দু-ঘেসা মুসলিম মনে করত আর ভাবত ওরা বেটার 'মচলমান!!'

আমার ভুল হতে পারে, তবু বলতে চাই কোন কিছুর উপর থেকে বিশ্বাস হারানো মানেই শত্রু হয়ে যাওয়া না।

শাফি।

দ্রোহী এর ছবি

কোরানের আয়াত, হাদিস ইত্যাদি সম্পর্কে কথা বলতে গেলেই এইটা ভুল, ওইট ঠিক নাই, এই হাদিসের গ্রহণযোগ্যতা নাই, ওই হাদিস পচা, এই আয়াতের অর্থ বুঝতে হলে আরবি ভাষায় পড়ে বুঝতে হবে ইত্যাদি যাবতীয় কথাবার্তা শুনি।

মুয়াত্তা মালিক সম্পর্কে উইকি কি বলে শুনি:

The Muwaṭṭaʾ (Arabic: الموطأ‎) is the first written collection of hadith comprising the subjects of Muslim law, compiled and edited by the Imam, Malik ibn Anas.[1] Malik's best-known work, Al-Muwatta was the first legal work to incorporate and join hadith and fiqh together. The work was received with wide praise. Abu Bakr ibn al-`Arabi said: "The Muwatta’ is the first foundation and the core, while al-Bukhari’s book is the second foundation in this respect. Upon these two all the rest have built, such as Muslim and al-Tirmidhi."

এখন কেউ যদি বলে উইকি পচা, ইহুদি নাছাড়ারা ইচ্ছাকৃতভাবে এইসব লিখেছে তাহলে আর বলার কিছু থাকে না।

একটা খুব সহজ প্রশ্ন:

ইসলামে দাসপ্রথাকে কখনো নিষিদ্ধ করা হয়নি। বিদায় হজ্জ্বের ভাষণে মহানবী দাস-দাসীদের প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। অথচ তিনি একবার যদি মুখ ফুটে উচ্চারণ করতেন যে মানুষ হিসাবে আরেকজন মানুষকে দাস হিসাবে কিনে নেয়া হারাম তাহলেই আরব থেকে দাসপ্রথা উঠে যেত। সব ধরনের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি এই কাজটা করেননি।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ইসলামে কেন এই অমানবিক কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য মানুষকে নিষেধ করা হয়নি? অথচ গান শোনা, ছবি আঁকার মত নিরপরাধ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য মানুষকে নিষেধ করা হয়েছে।

অতীতে এই প্রশ্নটা আমি বেশ কিছু ইসলামিক স্কলারকে ইমেইলে জিজ্ঞেস করেছিলাম কিন্তু কেউ কোনদিন উত্তর দেয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। আমার ধারণা উত্তরটা তাদের নিজেদেরই জানা নাই। দেঁতো হাসি

shafi.m এর ছবি

ভাই আন্সারটা আমারো জানা নাই মন খারাপ উইকি নন-মুসলিম্দের লেখা বলে আপ্নার কথা উড়ায়ে দিলাম না। উইকির রেফারেন্স স্কুলে ইনভ্যালিড বলে সাইটটার সম্পর্কে ধারণা তিল পরিমানও নাই, মানে এখনও পর্যন্ত তেমন হয়নি (রাগিব ভইয়ের পোস্ট গুলা ছাড়া)। স্লেভারি আমার অসহ্য লাগে, আমার বিশ্বাস আপ্নার প্রশ্নের আন্সারটাও হয়ত আছে ইসলামে, তবে ইসলামের অনেক ব্যাপার তৎকালিন বিষয় নিয়ে সরাসরি সম্পর্কিত ছিল সেগুলা সমাধান কপ্লে। মহানবী (সাঃ) বল্তে পারতেন, যেহেতু বলেননি নিশ্চয় কোন কারণ ছিল (যেভাবে আম্রা বিশ্বাসিরা বুঝি)। মহানবী (সাঃ) এঁর জন্ম পূর্বে যে অরজকতা ছিল, বর্তমান বিশ্বে নিশ্চয় তেমন ঘটনা ঘটে না, সুতরাং অনেক ব্যাপার গুলা (ও সেগুলার সমাধান) আমাদের কাছে উদ্ভট বা অদ্ভুত মনে হতে পারে তার মানে এই নয় যে সেগুলা ভুল। আর ইসলামে অনেক লোক তাদের নিজেদের সুবিধা মত কুরআনুল কারীমের অর্থ বুঝে নেয়, অনেক শ্রেণী বৈষম্য আছে, অনেকে ওয়েস্টের সাথে তালমিলানোর জন্যে মডারেট মুস্লিম সাজে (মুসলিম না হলে 'সাজে' বল্তাম না।) ভাই এর প্যাচে অনেক মুসলিম পর্যন্ত সন্দিহান হয়ে ওঠে।

শাফি।

দ্রোহী এর ছবি

আমি বইপত্রেই পড়েছিলাম মুয়াত্তা মালিক হচ্ছে কোর আর বুখারি হচ্ছে সেকেন্ড ফাউন্ডেশন। সব রেফারেন্স তো আর নেটে সময়মতো খুঁজে পাই না। তাই উইকির সরণাপন্ন হতে হয়। রেফারেন্স স্কুলে ইনভ্যালিড হলেই উইকির কথা মিথ্যা হয়ে যাবে এমন তো না। কেননা একই কথা ভ্যালিড রেফারেন্সেও খুঁজে পাওয়া যাবে।

মহানবী (সাঃ) বল্তে পারতেন, যেহেতু বলেননি নিশ্চয় কোন কারণ ছিল (যেভাবে আম্রা বিশ্বাসিরা বুঝি)।

যা বলছিলাম, বিশ্বাস যখন "অন্ধ" হয় তখন উত্তর খুঁজে না পেলে এই টাইপের কথা বলে নিজের মনে তৈরি হওয়া প্রশ্নগুলোকে মাটি চাপা দিতে হয়, এই আর কী। চোখ টিপি

কোরানের আয়াতের বৈজ্ঞানিক ভুল দেখিয়ে দিলে লোকজন এসে বলে অনুবাদ ভুল হয়েছে, এইটা কুরাইশদের আরবিতে পড়ে বুঝতে হবে, অথবা নিজের মতো করে একটা হাস্যকর ব্যাখ্যা দাঁড়া করাবার চেষ্টা করে।

ধর্মগ্রন্থের ভুল দেখিয়ে দিলে সেটা এড়িয়ে যাওয়া বা অস্বীকার করা অন্ধবিশ্বাসীদের পুরাতন টেকনিক। বিশ্বাসটা যৌক্তিক হলে মনে প্রশ্ন আসবেই এটা তারা কখনো স্বীকার করতে চান না। প্রশ্ন করলেই ধর্মানুভুতিতে আঘাতের দোহাই দিয়ে মারতে আসে।

কথাগুলো প্রতিটি ধর্মের মানুষের ক্ষেত্রেই খাটে।

শিশিরকণা এর ছবি

, বিশ্বাস যখন "অন্ধ" হয় তখন উত্তর খুঁজে না পেলে এই টাইপের কথা বলে নিজের মনে তৈরি হওয়া প্রশ্নগুলোকে মাটি চাপা দিতে হয়, এই আর কী।

গুরু গুরু

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

shafi.m এর ছবি

ভাই ইসলাম নিয়ে আমার জ্ঞান শুন্যের কাছাকাছি। আপ্নার কথার পিঠে তাই (দুর্বল) যুক্তি দেখাতে চাইনি। হয়ত আপ্নিই ঠিক, দেখি এই 'হয়ত' কতদিন টেকে। ধর্মান্ধ নই, আর ইসলাম কে এক ঝটকায় ফেলে দিতে পারছি না।

ধর্মগ্রন্থের ভুল দেখিয়ে দিলে সেটা এড়িয়ে যাওয়া বা অস্বীকার করা অন্ধবিশ্বাসীদের পুরাতন টেকনিক। বিশ্বাসটা যৌক্তিক হলে মনে প্রশ্ন আসবেই এটা তারা কখনো স্বীকার করতে চান না। প্রশ্ন করলেই ধর্মানুভুতিতে আঘাতের দোহাই দিয়ে মারতে আসে।/quote]

ঈমান বা বিশ্বাস না থাক্লে ধর্মের ব্যাপারটাই চুকে যায়, কিছুটা এভ্যুলুশান থিওরি দিয়ে শুরু করলে আদম-হাওয়া নাই, আর তাঁরা না থাক্লে ইব্রাহিমিক থিওরিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তবে অনেকের অতিরিক্ত শক্ত বিশ্বাসের টানে বিশ্বাসের রশি ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যায়, এটা সমস্যা। ইসলামে ধর্ম নিয়ে (নিজের ও অন্যের) বাড়াবাড়ি নিষেধ আছে।

শাফি।

আমার পরিচয় বাঙাল মুসলিম, মুসলিম বাঙাল নয়।

শাফি।

দ্রোহী এর ছবি

আমার পরিচয় বাঙাল মুসলিম, মুসলিম বাঙাল নয়।

এটা হলেই কিন্তু আর সমস্যা থাকে না। সমস্যাটা তখনই হয় যখন মানুষ পরিচয়ের চাইতে মুসলিম/হিন্দু/খ্রিস্টান পরিচয়টা বড় হয়ে দাঁড়ায়। হাসি

আসিফ হাসান এর ছবি

সরকারী কর্মকর্তাদের কাজ নিয়ে কোন মামলা করতে গেলে সরকারের অনুমতি নিতে হবে এমন একটা আইন করা হচ্ছে বলে শুনেছিলাম। অদুর ভবিষ্যতে যেকোন মামলার জন্যই অনুমতি নেবার বিধান করা হলে অবাক হবার কিছু থাকবে না।

বাংলাদেশ ফলোআপের দেশ না। যারা বলছেন যেকোন ক্ষমতাবান মানুষই আইনের ফাঁক গলে বেড়িয়ে যাবার ক্ষমতা রাখেন তাদের বোধহয় ভাবা উচিত সেই ক্ষমতাটা আসে সরকারের উচ্চপদস্হ কাউকে ব্যবহার করার সামর্থ্য থেকে। সেটা অর্থ বা রাজনৈতিক কানেকশন থেকেই হোক বা যেকোন ভাবেই হোক। ঘুরেফিরে কিন্তু সেই উপরমহলের ফোন আসতে হবে আর সেটার একজিকিউশনটা শেষ করবেন একজন সরকারী কর্মকর্তা। তাই এদের সবাইকেই আইনের সঠিক আওতায় আনা উচিত। আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে এদের জন্য আইন আরো কঠোর হওয়া। উইথ গ্রেট পাওয়ার কামস গ্রেট রেসপনসিবিলিটিজ কিন্তু বাংলাদেশের জন্য গ্রেট কনসিকোয়েন্সেজ দরকার। অপব্যবহার করলে সাধারন মানুষের চেয়ে বড় বাঁশ অপেক্ষা করছে এটা হয়তো একটু হলেও তাদের ভাবাবে। *আশাবাদের ইমো হবে*।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

পোস্টে সহমত। এটা আমাদের সমাজের একটা ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এ ধরনের খবর কিন্তু প্রায়ই আসে। তারপর আর কোন ফলোআপ থাকে না। কী হয় সেই নির্যাতিত বাচ্চাদের? হয়তো তারা আবার কোথাও কাজ করছে। হয়তো সারা জীবনের জন্যে এই ভীতি বয়ে বেড়াচ্ছে। আর সেই স্যাডিস্টরা ঠিকই বিলাসবহুল জীবন কাটাচ্ছে। ...এই বিষয়টাকে নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবার সময় এসেছে। উপরে একজনের কমেন্টে পড়লাম গৃহপরিচারকদের নাম, ছবি ইত্যাদি থানায় জমা রাখার আইডিয়া। এটা আমার কাছে ভাল লেগেছে; উভয় দিক থেকেই।

একই সাথে এটাও যোগ করতে চাই, আমাদের 'কাজের ছেলে' বা 'কাজের মেয়ে'র উপর থেকে নির্ভরশিলতা কমাতে হবে। ঐ ছোটছোট ছেলেমেয়েরা যারা আমাদের বাসায় কাজ করে তারা আরো ভালো লাইফ ডিজার্ভ করে। তাদের জন্যে যেমন পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া দরকার, একই সাথে আমাদের মানসিকতারও পরিবর্তন আনতে হবে নিজের কাজ নিজে করার ব্যাপারে। হিমু ভাই, আপনি লক্ষ্য করবেন, আমরা বাহিরে নিজের কাজ নিজেরা করছি। লেখাপড়া, চাকরী - সব কিছুর পরও কিন্তু করছি। অতএব, এটা আমাদের সমাজেও সমস্যা হবার কথা না। আমি কিছু নূতন কাপলকে চিনি যারা বিয়ের পর দুই জনের ছোট সংসার গড়েছে। দুজনই চাকরী করে। দুজনই ঘর সামলায়। এভাবে যখন আরো একটা জেনারেশন কেটে যাবে, তখন হয়তো এ ধরনের ঘটনা কমে আসবে।

শিশিরকণা এর ছবি

সহমত।
কাজের লোকের কী আসলেই এত প্রয়োজন? হ্যা, অনেক সময় প্রয়োজন হয় একটা বাড়তি হাতের। কিন্তু আপনি টালোথাক্দিলোয়ে তার শ্রম কিনছেন, তার শরীর বা আত্মা নয়! আজকাল অনেক সিকিউরিটি কোম্পানি থেকে বিশস্ত গার্ড নিয়োগ দেয়া হয়। গৃহকর্মীর ক্ষেত্রেও কি এমন কাঠামো অনুসরণ করা যায় না? ( হুমায়ুন আহমেদের একটা নাটকের কথা মনে পড়ে গেল), তাহলে প্রয়োজন পড়লে একজন গৃহকর্মীর সহায়তা পাওয়া গেল, কাউকে 'তেল' বা ডলা দিয়ে লালন পালন করার দরকার পড়ে না। উভয় পক্ষের আর্থিক দায়বদ্ধতা থাকলো কোম্পানির কাছে। কারন থানায় নাম ঠিকানা রাখার ব্যাপারটাতে ভরসা করতে পারি না, শেষ পর্যন্ত সেটা ধনবানদের পক্ষেই কেবল কাজ করবে, এই সম্ভাবনা প্রবল।

এই দরিদ্র দেশে বাচ্চাদেরকেও শ্রম বেচতে হয়। ওদেরকে দেখে কি একটুও মায়া হয় না? এই পিশাচ গুলার ছেলে মেয়ে গুলাকে এনে জেলখানার গু মুত সাফ করানো উচিত। বাপ মায়ের পাপের ঋণ শোধ করুক।

ইশ! বাচ্চাগুলাকে দেখলে মনে হয় বুকে ধরে একটু আদর করে দেই, আশ্বাস দেই, এখনো কিছু ভালো মানুষ আছে।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

জেনা জেনারেল জেনারেলাইলেশন


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

উচ্ছলা এর ছবি

পোস্টের প্রতিটি পয়েন্টের সাথে গলায় গলায় একমত পোষন করছি।

"একটা প্যাটার্ন লক্ষ্য করি, শিশু ভৃত্যকে নির্যাতনকারী হিসেবে প্রায়ই আসে পুলিশ, বড় সরকারী কর্তা কিংবা সশস্ত্রবাহিনীর অফিসারের স্ত্রীদের কথা। পুলিশের বৌ, আমলার বৌ, সেনাকর্তার বৌদের সমস্যাটা ঠিক কোথায়? এদের মনোবিকলন ঠিক কোন পর্যায়ে পৌঁছালে একটা গরিবের বাচ্চা, যে কি না আশ্রয় আর খাদ্যের জন্যে তাদের কাছে এসে ওঠে, তার গায়ে গরম পানি ঢেলে দেয়া যায়? কিংবা খুন্তি গরম করে ছ্যাঁকা দেয়া যায়? বেয়াড়াপনা করলে আমরা নিজেদের বাচ্চাদের শাসন করি, ধমকধামক দেই, দুইচারটা কিল লাগাই মাঝেসাঝে, গরীবের বাচ্চাকে কেন এরচেয়ে বেশি পিটাই?"

উত্তর একটাই। ঐ নির্যাতনকারীরা 'ইতর' শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।

ইতরদেরকে জেলে পোরা ছাড়া আর এদের মদদ প্রদানকারী স্বামীকূলের চাকরিচ্যুতি ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।

হিমু এর ছবি

রুহ কাঁপার একটা ইমো থাকলে ভালৈত।

শিশিরকণা এর ছবি

এইটা কেমন?

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

হিমু এর ছবি

বড়ই খাপছুরত। ডেভু মহারাজদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

শাব্দিক এর ছবি

যতটুকু জানি ১৪ বছরের নীচে শিশুশ্রম আইনত নিষিদ্ধ।
http://www.unicef.org/bangladesh/children_4863.htm
সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে যখন ভাবি আমরা যখন ব্লগিং, ফেসবুকিং করে দুনিয়া উলটে ফেলছি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিনা শ্রমে সামান্য খাদ্য এবং শিক্ষার আধিকার নিশ্চিত করতে পারছি না। আর সরকারের কথা তো বলার কিছুই নাই।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

এই ব্লগ, মন্তব্য ও প্রতিমন্তব্যগুলোর কোন কোনটি পড়ে মনে হলো বক্তব্যকে সঠিক অর্থে বাজাতে হলে etymology, semiotics ও hermeneutics এই তিনটি বিষয়ের প্রতি যত্নশীল হওয়া অত্যন্ত জরুরী।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

মন মাঝি এর ছবি

একটু ব্যাখ্যা করবেন কবি? বেশ ইন্টারেস্টিং লাগছে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি। আর হ্যাঁ, সাইকোলিঙ্গুইস্টিক্স আর সোশিওলিঙ্গুইস্টিক্সও লাগবে মনে হচ্ছে।

****************************************

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

Etymology, semioticshermeneutics এর সামান্য অসচেতনতা একটি নির্দোষ পোষ্ট কিংবা মন্তব্যকেও সংহারক ও অনভিপ্রেত করে তুলতে পারে, অনেকটা কিছু কিছু প্রিণ্ট মিডিয়ার Gonzo Journalism-এর মতন। অন্যদিকে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও তথ্যের অভাবে একটি পোষ্ট কিংবা মন্তব্য হতে পারে Parachute Journalism এর যথাযথ উদাহরণ।

প্রকৃত সমাধানের অভিপ্রায়ে সমাজের ক্ষত নিয়ে ভাবতে গেলে সোশিওলজির পাশাপাশি সাইকোলিঙ্গুইস্টিক্স আর সোশিওলিঙ্গুইস্টিক্সের প্রয়োজন কি করে অবহেলা করি! এসব বিবেচনায় না নিলে সমাধানের অভিপ্রায় বিজ্ঞাপন সর্বস্ব হতে দেরী লাগে না।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

নৈষাদ এর ছবি

আমি আসলে ভৃত্যনির্যাতন ব্যাপারটা নিয়ে কনফিউজড। কোন ডিপ-রুটেড সাইকোলজিক্যাল কারণ আছে কিনা কে জানে। এমন একাধিক 'মহিলাকে' জানি যারা আদার-ওয়াইজ চমৎকার (সামাজিক ভাবে এবং সংসারে), কিন্তু কাজের লোকের ব্যাপারে কেন কে জানে 'চন্ডাল'। বকা-ঝকা, মারধোর সবই চলে। খুবই কনফিউজড।

কোথায় যেন দেখেছিলাম এই ধরনের 'domestic work' কে শ্রম আইনের আওতায় আনার কথা। যদিও আমি নিশ্চিত এটা সম্ভব হবে না।

বন্দনা কবীর এর ছবি

বলেছিলাম এই পোস্টে শেষ কমেন্ট। কিন্তু একদিন বাদে এই পোস্টে ঢুকে দেখি বেশ ভাল রকমের কৌতুক হয়ে গেছে! তাই আবার লিখছি।

পোস্ট থেকে সব কমেন্ট পড়ে বুঝলাম আমার একটা কমেন্টের কন্টেন্ট বুঝতে না পারা বা আমি বোঝাতে না পারার ব্যার্থতার কারনেই এই ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি। পোস্টের মুল সুরটাই ঘুরে গেছে অনেকটা। অন্য ভাবে আলোচনাটা হতে পারতো। হয়েছে/ হচ্ছে অন্য ভাবে।
সে যাই হোক, কারো চোখে নিজেকে ভিলেন দেখতে কেই বা পছন্দ করে? তাই আমারও ভাল লাগছেনা। কেউ কেউ আমাকে যতটা "খারাপ" ভাবছেন ততটা খারাপ বোধ হয় নই আমি (নির্জলা সাফাই গাইলাম আর কি হাসি )

হুতুম কিংবা হিমু কারো সাথেই আমার শত্রুতা নেই বা অত্যাচারিদের সাথে বন্ধুত্ব। আর ঐ সব অত্যাচারিদের সাথে নিজেকে "রিলেট" করার মত যোগ্যতা আমার যেন কোনো দিনও না হয়।

গৃহকর্মি নির্যাতনের প্রসঙ্গে পরে আসছি। আপাততঃ তেল মারা প্রসংগটা ক্লিয়ার করি।

গৃহকর্মিকে তেল মারার ব্যাপারটা কিন্তু ভাল ব্যাবহার অর্থেই বলেছিলাম। কারন সব গৃহকর্মি-ই তো আর ফেরেস্তা নয়। তারাও ভুল করে, ক্ষেত্র বিশেষে অপরাধ। সব কিছু জানার পরেও আমার যখন একজন গৃকর্মি বা সাহায্যকারির নিতান্ত প্রয়োজন হয়ে পড়ে তখন কাকের মত চোখ বুজে থেকে তেল মারা ছাড়া কোনো গতিও থাকেনা। কি করবো? বয়স হয়েছে না?! বুড়ো হাঁড় আর ভার নিতে চায় না। সংসারের এতো সব কাজ একা হাতে সামলাতে পারিনা উনার (ঠিকা বুয়া) অন্যায্য /অন্যায় কাজের কথা জেনেও শুধু ভালবেসেই না তৈল মর্দন করেই তাকে কাজে বহাল রাখতে বাধ্য হই। কেননা, তাকে ছাড়া আমার চল্বেনা।

দিনে দুই ঘন্টা কাজের জন্য তাকে ৩০০০টাকা দিতে হয় মাসে (এটা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মুদ্রায় কতটুকু মান সম্মত জানিনা। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে খুব বেশি কি কম?) তার উপরে আছে মাসের কোন তারিখে তিনি আসবেন বা আসবেন্না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। মাসের মধ্যে তিনি তেরো চৌদ্দ দিন কাজেই এলেন্না কিন্তু মাস শেষে পুরো ৩০০০ হাজার টাকাই গুনে ট্যাকে ভরে চলে যান পরের দিন আসবেন কিনা তার নিশ্চয়তা না দিয়ে।

কে যেন প্রফেশনালিজমের কথা বলেছিলেন।
উনাকে আমি সম্মান দিলাম। প্রাপ্য ন্যায্য বেতনটাও দিলাম তার বিপরিতে উনি কোন ধরনের প্রফেশনালিজমটা দেখালেন চৌদ্দদিন গরহাজির থেকে?! উনাকে আমি সম্মান করে খালা ডাকলেও উনি আমার ভালবাসার, সম্মানের থোড়াই কেয়ার করেবন। আমি ঐ চৌদ্দদিনের একদিনের বেতন কাটার কথাও যদি মুখে আনি তো পরদিন থেকে উনি আর কাজেই আসবেন্না।

উনি কিন্তু আমার এখানে চাক্রি করতেই এসেছেন। কোনো অফিস আদালতে মাসে চৌদ্দ দিন গর হাজির থাকলে তাকে কি ঐ চাক্রিতে বহাল রাখা হত? হতনা। কারন ঐ কাজের জন্য আরো লক্ষ জন লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু আমাকে বা আমার মত হাজারো গৃবধুকে এই কর্মিটিকেই সহ্য করতে বা কাজে বহাল রাখতে বাধ্য হতে হয় নিজের স্বার্থেই

কারন,
আমার স্বামি/ছেলেরা ক্যাডেট কলেজ বা হলে থেকে বড় হয় নাই। বা তারা বিদেশেও থাকেনা। তারা নিজেদের কাজ নিজেরা করতে পারেনা (ঘরের কাজ) আমার স্বামির মা বা আমি আমার স্বামিকে/আমার ছেলেকে ঘরের কাজ করতে শেখাইনি বাংগালি মানসিকতার কারনেই। তাই তাদের কাজটিও আমাকেই করতে হয়।
এই এতো কাজের প্রেশার প্রতিটি বাঙ্গালি গৃহবধুকে একাই নিতে হয়। তার জন্য আবহাওয়া বা অন্য কিছুকে দোষ না দিলেও চলে।
আমাদের দেশের কালচার, রান্না-বান্না ঘরের কাকের ইস্টাইল ইওরোপ আম্রিকার মত না এটাও মাথায় রাখতে হবে। আমাদের কাপড় কাচতে হয়, মশল্লা বাটতে হয়, বটিতে উপুড় হয়ে বসে তরকারি কাটতে হয়, হাড়িপাতিল মাজন দিয়ে মাজতে হয়, ঘর জ়হাট দিতে মুছতে হয় ত্যানা দিয়ে। এসবের জন্য আমাদের বাড়িতে ডিস ওয়াসার, ওয়াশিং মেশিন, রাইস কুকার, মিক্সি নেই, ভ্যাকুয়াম ক্লিনার নাই। তাই ইওরোপিয়ান ওয়েদার আমাদের কাছে অসহ্য। ইওরোপিয়ান/ আম্রিকান্দের হিংসেও হয় চোখ টিপি
আর এই সব ঘরে স্থাপন করতে চাইলে বেচারা মিডিয়াম সেলারির স্বামিটিকে হয় ঘুষ খেতে হবে নয় রাহাজানি করতে হবে।
তাই, আমাদের দেশের নিতান্তই নিষ্কর্মা গৃহবধুগুলোকে কাজের লোকের উপরে নির্ভর করতেই হয়।

এবার আসি ভৃত্য শব্দটিতে। ভৃত্য কিন্তু আমি বলিনি। উপরে দেখুন শীরোনাম কি? চোখ টিপি
ব্যাক্তিগত ভাবে আমার ভৃত্য শব্দটি অপছন্দ। গৃহকর্মিকে চলতি ভাষায় কাজের লোক বলা হয়। এর মানে কি দাড়াল? যারাই কাজ করে তারা সবাই কাজের লোক দেঁতো হাসি
রইলো 'রুহ' কাঁপা...

আসলে হুতুমের কথাই সঠিক। দুর্বল চিত্তের লোকেদেরই সহজেই ভয় দেখানো যায়। বরং বলা ভাল দুর্বল চিত্তের লোকেরাই দুর্বলের উপরেই অত্যাচার করতে পারে। সবলের সামনে পড়ে মিউ মিউ করে। আমি এক্সট্রিমভাবে কাউকে অত্যাচারিত হতে দেখিনি। যার কথা বলেছি, তাকে সামান্য পুলিশ/সাংবাদিক/ ক্যামেরার ভয় দেখিয়েই ভয় পাইয়ে দিতে পেরেছিলাম। তার চেহারা ছাই বর্ণ হয়ে দেখে আমার মনে হয়েছিল, তার রুহ কেঁপেছে। হয়তো সেটা চিন্তা করছিলাম বলেই রুহ কাঁপার কথাটা লিখে ফেলেছি। এই নিয়ে এত্তো রঙ্গ করার কি হলরে ভাই? মন খারাপ আর আমি দাপটের কেউ কেটা হলে লোককে একটু আধটু ভয় দেখিয়ে রুহ কাপাবোনা তাই কি হয়? খাইছে

এবার মূল প্রসংগ,

হিমুর পোস্টের মুল বক্তব্য... সরকারি বা প্রতিরক্ষা বাহিনীতে কাজ করা কাল্প্রিটদের চাকরিচ্যুত করা হোক। চাকরিচ্যুত তো তখনই হবে যখন এই সব নোংরা কর্মগুলো লোকের সামনে আসবে বা উর্ধতন পক্ষ জানতে পারবে, তাইনা? আমাদের অগোচরে যেগুল হচ্ছে সেগুলোর প্রতিকার কি?
আর শুধু চাকরি খেলেই কি সব হয়ে গেল?! শাস্তি কি শুধু চাকরি কেড়ে নিলেই সম্পন্ন হয়ে যাবে? পেটে লাথি পড়লেই সাইকোদের শাস্তি হয়ে যায় না। তাদের দরকার ট্রিট্মেন্ট। দরকার পড়লে ছ্যাকার বদলে ছ্যাকা। শুনতে বাজে লাগ্লেও, এই ট্রিটমেন্টটাই সবচেয়ে বেশি কার্যকরি অন্ততঃ এদের ক্ষেত্রে।
শুধু সরকারি বা সামরিক লোকেরাই বা কেন? বলুন যারাই এই ধরনের কাজ করবে তাদের সকলেরই চাকরিওটা সর্বপ্রথম কেড়ে নিয়ে চরম শাস্তির ব্যাবস্থা করতে হবে। "দৃষ্টান্তমূলক" শব্দটি আজকাল বড্ড খেলো হয়ে গেছে। আমরা কখনৈ ইতিহাস থেকে কোনো শিক্ষা গ্রহণ করিনা। তাই এদের শিক্ষা দেওয়ার মত কোনো দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেও লাভ নেই।

একমাত্র, আইনের যথাযথ প্রয়োগই পারে অপরাধ কমিয়ে আনতে। বন্ধ করা যাবে কিনা সন্দেহ। কারন, এই সব কাজ যারা করে তারা প্রকৃতপক্ষে সাইকো।
আইনে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ। কিন্তু তার পরেও লক্ষ লক্ষ শিশু, ঘরে বাইরে শক্ত শ্রমের কাজ করছে। একটা আইন বানিয়ে দিয়েই সরকার হাত আসমানে উঠিয়ে বসে থাকে। তার প্রয়োগ কতটুকু হচ্ছে তা কি কখনো মনিটরিং করে? নাকি যারা করে তা কেন করে তার খোজ় নেয়? নাকি যারা রাখে তাদের জেল-জরিমানার ব্যাবস্থা করে?
আরো একটা বিষয়। শিশু শ্রম নিষিদ্ধ করে দিলেই হল? এই যে, যে সকল শিশু কাজ করে তারা কি খুব শখ করে করে? তাদের দুই বেলা খাবারের সংস্থান করার জন্যই কাজ করতে হয়। নইলে খোদ জন্মদাতা/দাত্রিও তাদের বসিয়ে খাওয়াবেনা। ইন ফ্যাক্ট তাদের জন্মই দেয়, কাজ করে খাওয়াবে বলে। এ আরেক ইস্যু। কিন্তু কান টানলে মাথা আসার মতই, পুরো বিষয়টাই সাইকেলের আওতায় চিলে আসে দেখবেন একটু ভাবলেই।

সরকার যেহেতু এদের দেখবেনা। তাই এদের কাজ করেই খেতে হবে। এই কাজ করটা কতটা অমানবিক সেটার চেয়েও বড় প্রশ্ন চলে আসে, কাজ না করলে খাবে কি?

আমি আপনি কেউ কি এদের একজনকেও এমনি এমনি পালন পোষন করবো? আবেগ দিয়ে আর যাই হোক পেট ভরেনা। আমি নিজেও প্রচন্ড আবেগি এলজন মানুষ। কিন্তু আবেগ সর্বোস্ব হলে সংসার চলেনা। আবেগের সাথে বাস্তবতাটাকেও ভাবতে হবে।

পাল্টাতে হবে মানসিকতা। ও কি করছে?" না দেখে নিজেকে দেখতে হবে, আমি কি করছি?

আমাদের এখনকার মানসিকতাটা এরকম, 'ঐ বাড়ি থেকে কাজের লোকের বা স্বয়ং গৃহবধুটির আর্তনাদ ভেসে আসছে' আমরা কান অন্যদিকে ফিরিয়ে মনকে বোঝাই, ওটা ওদের ব্যাক্তিগত ব্যাপার। আমাদের নাজ না গলানোই ভাল।" এই চিন্তার ফলশ্রুতিতে একজন গৃহকর্মি নির্মম ভাবে অত্যাচারিত হচ্ছে একজন গৃহবধু/গৃহকর্তা বা তাদের সন্তান দ্বারা অথবা একজন গৃহবধু স্বামির অত্যাচার সহ্য করতে করতে গলায় দড়ি দিয়ে মরছে।
আর আমরা কি বোর্ডে পত্রিকার পাতায় লিখে লিখে ফাটিয়ে ফেলছি, ওদের ছাল চামড়া উঠে যাওয়ার পর অথবা মারা যাওয়ার পর।

সরকার তার দায়িত্ব পালন করেনা, আমরা কি আমাদের সামাজিক দায় পালন করি? এক বিল্ডিং এ থেকে সাম্নের ফ্লাটের মানুষুকে চিনেন না এমন বহু লোক আছে।

রাস্তায় পুলিশ যখন ঘুষ খায় আমরা তাকিয়ে দেখি। সাহস করে কেউ কি এগিয়ে যাই তার হাত চেপে ধরতে? তো? সে তো সাহস পাবেই!

রাস্তা-ঘাটে আর্মিরা দম্ভ নিয়ে হাটে। কেউ কি তার মুখের সামনে গিয়ে বলতে পারে, এই ব্যাটা? তুই কার পয়সায় পোজ মারিস?
আমার পয়সায় তেল বানিয়ে আমার উপরেই...' সে এইরকম এটিচুড করার সাহস কোথা থেকে পেয়েছে? আমরাই দিয়েছি।

এই যে, যা হচ্ছে হোক না, আমার কি?' এই মনভাবটাই এখন আমাদের সব চেয়ে বড় সমস্যা।

আমার ছোটবেলায় দেখেছি, এলাকার একটা করে কমিটি আছে। তাদের কাজ ছিল এলাকার সুরক্ষা দেওয়া। কার বিপদে আপদে এগিয়ে আসা। কোনো মেয়েকে এলাকার কেউ টিজ করার সাহস পেতোনা নাকাল হবার ভয়ে। এই কাজটা কমিটির লোকেরাই করতেন না শুধু। সবাই মিলেই করতেন। আজকালকার এলাকা কমিটির কি কাজ? বছরে আট বার এসে এলাকার গার্ডদের জন্য বোনাসে টাকা কালেক্ট করা। এলাকা ভিত্তিক এই কমিটিও যদি তার দায়িত্ব পালন করতো তো অনেক শিশু এই অত্যাচারের হাত থেকে বেচে যেতে পারে।

মানুষ নাকি এখন খুব অস্থির। হিনমন্যতায় ভোগা মানুষগুলোও কিন্তু ভয়ংকর হয়ে ওঠে ভেতরে ভেতরে। অপ্রাপ্তি আর অবহেলা পেয়ে পেয়ে যে নারিটি জোবন ধারন করে সে তার রাগ ক্ষোভটা খাটায় তার অধিনস্ত কাজের পুচকে ছেলে/মেয়েটির উপরে। দুর্বলের উপরে সবলের ঐতিহাসিক পিড়ন।
মনবৈকল্যতার রোগি এখন আমাদের চারপাশে। তাদেরকে নিবৃত করতে আমাদেরকেই রুখে দাড়াতে হবে। আমার না দেখলেও চলবে এমন ভাবনা থেকে বের হতে হবে।

সর‌্যি, উপন্যাস লিখে ফেললাম। অল্প কথায় গুছিয়ে না বলার ঝামেলায় পড়ে এত্তো কথা বলতে হল।
আরো অনেকের মত, মত সহমত। ভালৈছে। পোস্টে ঝাঝা দিয়ে দায় এড়িয়ে চলে গেলে হয়তো পুরো একটা বিকেল আমাকে কিবোর্ডের পেছনে লেগে থাকতে হত না। সকল ভুল বুঝাবুঝির অবসান হোক। সবাই ভাল থাকুন

কাজের লোকেদের এখনকার মত ছাল তোলার কাহিনী আমি অন্ততঃ আমার ছোট বেলায় কখনো পড়্বছি বলে মনে পড়েনা দেখা তো দূর।

আহসান এর ছবি

## সামরিক বাহিনীকে হেরেমের বাসিন্দা করে রাখলে তাদের সম্পর্কে লোকে ঠিকমত না জানতে পেলে তো এমন হবেই। তাদেরকে বলুন এই আইসোলেটিং পদ্ধতিটা সরিয়ে সাধারন মানুষের সামনে আস্তে।

## রাস্তা-ঘাটে আর্মিরা দম্ভ নিয়ে হাটে। কেউ কি তার মুখের সামনে গিয়ে বলতে পারে, এই ব্যাটা? তুই কার পয়সায় পোজ মারিস?
আমার পয়সায় তেল বানিয়ে আমার উপরেই...' সে এইরকম এটিচুড করার সাহস কোথা থেকে পেয়েছে? আমরাই দিয়েছি।

----------------

দিদি/আপা কি কথাগুলো সার্কাস্টিক টোনে বললেন ?
ইদানিং কিছু ব্লগে এবং ফেসবুক গ্রুপে ছাগুরাই গদামপ্রদানকারীকে এতকালের "ভাদা, নাস্তিক কুত্তা" ট্যাগ দেয়া ছেড়ে উল্টে "ছাগু" ট্যাগ দেয়া শুরু করেছে- ঘটনার প্রহসণটা কি ধরতে পারছেন ?
একই কথা কিন্তু আপনার উপরের মন্তব্য দু'টোর জন্য খাটে।
জলপাই বাবারা নিজেরা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে বসবাস করে, নিজেরা জলপাইবনে বসে বড়সড় গুপ্তকেশ ফেলে আর ম্যাঙ্গোদের "ব্লাডি"জ্ঞান করে। এখন আবার এই ম্যাঙ্গোদের ঘাড়েই দোষ তাদের হারেমবন্দী করে রাখার জন্য!!!!!
ও মাইকেলবাবু, আরেকটা "বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ" এর মতন কিছু একটা লিখে পাঠিয়ে দিন না ধরাধামে

শামীমা রিমা এর ছবি

এমন জঘন্যতম অপরাধ একমাত্র তারাই করতে পারে যারা মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত(মানুষতো নয়ই,পশুরাও তাদের দলে নিতে লজ্জা পাবে)।তাদের এমন শাস্তি হওয়া উচিত যেন তারা সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ হতে পারে ।

হাওয়াইমিঠাই এর ছবি

ভাল লাগ্ল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।