সম্প্রতি বিডিনিউজ২৪ ডট কমের কর্ণধার তৌফিক ইমরোজ খালিদী রাজনীতিকদের প্রতি ব্লগ নিয়ন্ত্রণে আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন [১]। তার নিজেরই প্রতিষ্ঠানে প্রকাশিত সংবাদ থেকে উদ্ধৃত করে তার কিছু কথা আমরা মনোযোগ দিয়ে পড়ে দেখতে পারি।
তৌফিক খালিদী বলেন, “যে কেউ একটি সংবাদ মাধ্যমের (টেলিভিশন চ্যানেল, সংবাদপত্র ইত্যাদি) মালিক হয়ে যাবে, এটা হতে পারে না। সেই সঙ্গে মোবাইল ফোনে যে কেউ সংবাদ সেবা দেবে, এটাও হতে পারে না। নিয়মের মধ্য দিয়ে এটা করতে হবে। এ জন্য একটি নীতিমালা প্রয়োজন।”
বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবনে রাজনীতিবিদদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রধান সম্পাদক বলেন, “সংবাদ মাধ্যম যদি এ রকম লাগামহীন হয়, তবে তার জন্য রাজনীতিবিদদেরই যে বেশি ভুগতে হয়, তা আপনারা (রাজনীতিক) অভিজ্ঞতা দিয়েই বুঝতে পারবেন।”
মুক্ত মত প্রকাশের প্রসঙ্গ ধরে ব্লগিংয়ের বিষয়টি তুলে ধরে তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, “আমি সবিনয়ে বলতে চাই, মত প্রকাশের নামে যা ইচ্ছা তাই প্রকাশের আমি বিরোধিতা করি। মত প্রকাশ করতে হবে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে। মূলত স্বাধীনভাবে প্রকাশের ক্ষেত্র তৈরি করে দেওয়াটা সবচেয়ে জরুরি।”
তার মতে, কোনো ব্যক্তির নামে কল্পকাহিনী, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো কথা ব্লগ কিংবা ফেইসবুক ও টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ অনুচিত।
তৌফিক ইমরোজ খালিদীর তত্ত্বাবধানে বেড়ে ওঠা বিডিনিউজ২৪ ডট কম পাঠকপ্রিয় একটি ওয়েবসাইট, পেশাদারিত্বের সাথে প্রতিনিয়ত খবর প্রকাশের কারণে এটি দেশে ও প্রবাসে মানুষের মনোযোগ কাড়তে সক্ষম হয়েছে। সম্ভবত এই সাফল্যই খালিদীকে প্ররোচিত করেছে, "যে কেউ" একটি সংবাদ মাধ্যমের মালিক হতে পারবে না, এমন একটি কথা বলে ফেলতে। আমি বিনয়ের সাথে খালিদীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, তিনিও এই "যে কেউ"-এর অন্তর্ভুক্ত। তিনি আকাশ থেকে অবতরণ করেননি, মাটি ফুঁড়েও বের হননি। তার মতো "যে কেউ" যদি বিডিনিউজ২৪ ডট কমের মতো একটি গোছানো সংবাদ পরিবেশক সংস্থা চালাতে পারে, তাহলে অন্য ব্যক্তি কেন পারবে না? সারবস্তু না থাকলে মানুষ কোনো কিছুই গ্রহণ করে না, সারা বাংলাদেশে মাটি ফুঁড়ে গজিয়ে ওঠা সংবাদ পরিবেশক ওয়েবসাইটগুলোর করুণ হাল দেখলেই তা বোঝা যায়। সংবাদ পরিবেশনে মানুষের সক্ষমতা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলতেই পারেন, কিন্তু অধিকার নিয়ে পারেন কি? তিনি নিজে কোন নিয়ামকের অধীনে সংবাদ বিক্রি শুরু করেছিলেন, সেটাও তিনি জানাননি, অন্যের জন্য নিয়ামক প্রণয়নে নেমে পড়েছেন। এই অচিন দেশের রাজকুমার সিনড্রোম থেকে বেরিয়ে আসতে পারা সুস্থতার লক্ষণ হিসেবে কেউ কেউ বিবেচনা করতে পারেন।
মত প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্লগে "যা ইচ্ছা তাই" প্রকাশের সমস্যা সম্পর্কে আমরা অনবগত নই। কিন্তু কোনটা "যা ইচ্ছা তাই" আর কোনটা "দায়িত্বশীল বক্তব্য", সেটা কে কীভাবে ঠিক করে দেবে? উত্তর হতে পারে, ব্লগের পাঠক। ব্লগ সংবাদপত্র বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মতো সিমপ্লেক্স বা একমুখী মাধ্যম নয়, বরং পাঠকের সক্রিয় অংশগ্রহণে একটি ক্রমশ চলমান মাধ্যম, যেখানে প্রত্যেকেই প্রত্যেকের বক্তব্যকে খণ্ডনের সামর্থ্য রাখেন। যাচ্ছেতাই আধেয়কে পাঠক তেমন গুরুত্ব দেন না, আর গুরুত্ব দিলেও তার যাচ্ছেতাই বক্তব্যকে ধুয়ে ছেড়ে দেন। সংবাদপত্র বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় পরিবেশিত তথ্যের সংশোধনী আসতে অনেক সময় লাগে, ব্লগে সেটা কয়েক মিনিটের মধ্যেই যুক্তি-তর্ক-রেফারেন্সসহ চলে আসে। এক জায়গায় প্রকাশিত বক্তব্যের প্রতিবাদ অন্য জায়গায় উঠে আসে। ব্লগ সাধারণ মানুষের মাধ্যম, তাই এখানে প্রতিরোধ আর প্রতিবাদও করে সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে চলমান থিসিস আর অ্যান্টিথিসিসের সমন্বয়ে যদি সাংবাদিকরা আস্থা রাখতে না পারে, এবং তার জন্যে রাষ্ট্রযন্ত্রকে আইন প্রণয়ন করে সাধারণ মানুষের চিন্তাস্রোতে বাঁধ দেয়ার জন্যে ডাকাডাকি করে, বুঝতে হবে, সাংবাদিকতা নয়, এখানে উদ্দেশ্য অন্য কিছু।
"লাগামহীন" সংবাদ মাধ্যমের কারণে রাজনীতিকদের ভোগান্তির দিকে ইঙ্গিত করে এ্কে নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজনীতিকদের হাতছানি দিচ্ছেন একজন খবরবণিক, এটি বিস্মিত হওয়ার মতোই একটি ঘটনা। রাজনীতিকরা নিজের ভোগান্তি হ্রাসের জন্যে সংবাদ মাধ্যমে লাগাম পরাবেন, এটিই খালিদীর কাছে কাম্য? তাহলে কেবল রাজনীতিকের ভোগান্তি আলোচিত হচ্ছে কেন? কেন সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা আসছে না? প্রকাশিত সংবাদ বা চেপে যাওয়া সংবাদ তো সাধারণ মানুষের বিপুল ভোগান্তিও ঘটাতে পারে। বিডিনিউজের খবর পড়ে, সাধারণ মানুষ খালিদীর কাছে কোনো ধর্তব্য বিষয় বলে মনে হয় না। তিনি এদের শুধু মোবাইলে খবরের ভোক্তা হিসেবে দেখেই সন্তুষ্ট।
কল্পকাহিনী বা ধমীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগার ব্যাপারটিও বহুল আলোচনায় দীর্ণ একটি বিরক্তিকর প্রসঙ্গ। কারো নামে সংবাদ মাধ্যমে কল্পকাহিনী ছড়ানো অবশ্যই গর্হিত অপরাধ, কিন্তু ব্লগে বা সামাজিক যোগাযোগ সাইটে এর কনটেক্সটটিও বিচার্য। সাধারণ মানুষ বড় বড় লোকদের নিয়ে কৌতুক বানায়, সেগুলোর সত্যতা নয়, বরং তার পেছনে হাস্যরসই সাধারণ মানুষের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কৌতুক প্রচলনের কারণে সোভিয়েত ই্উনিয়নে স্তালিন আমলে মানুষজনকে গুলাগে যেতে হতো, খালিদীর কথা শুনে মনে হয় তিনি বাংলাদেশে একটি গুলাগের অভাব বোধ করছেন। বিনা রেফারেন্সে কারো নামে কল্পকাহিনী ছড়ালে সেটি লোকে তো বিশ্বাস করেই না, বরং তর্ক করে এর অসারতা প্রমাণ করে। আর ধর্মীয় অনুভূতি কথাটা এতো অসংজ্ঞায়িত, যে এটি নিয়ে আলাপ শুরু করাও মুশকিল। কার ধর্মীয় অনুভূতির পায়ের মাপে জুতো তৈরি করবো আমরা? প্রতিটি মানুষই প্রতিটি কথায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত পাওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করেন। ধমীয় অনুভূতির দোহাই দিয়ে আমরা নিরীহ কার্টুনিস্ট আরিফুর রহমানকে দেখেছি মোল্লাদের হাতে নিগৃহীত হতে, দাউদ হায়দার আর তসলিমা নাসরিনকে দেখেছি দেশত্যাগে বাধ্য হতে, হুমায়ূন আজাদকে আক্রান্ত হতে দেখেছি। ধর্মীয় অনুভূতিকে যত সহজে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে মুক্ত মতকে আক্রমণ করা যায়, আর কোনো কিছুকে তত সহজে ব্যবহার করা যায় না। এই মধ্যযুগীয় অজুহাতটি একবিংশ শতাব্দীতে ব্যবহৃত হতে দেখতে চান না অনেকেই। দুঃখের বিষয়, সেই দলে খালিদী নেই। আমি যদি আগামীকাল একটি ধর্ম প্রচার করি, যে ধর্মে "তৌফিক ইমরোজ খালিদী" নামটি শ্রবণ করলে পরকাল ঝরঝরে হয়ে যাওয়ার হুমকি আছে, আমার বিশ্বাস, হাজার পাঁচেক অনুসারী আমি পাবো। আমাদের সেই ধমীয় অনুভূতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে খালিদী কি নিজের নাম উচ্চারণ থেকে বিরত থাকবেন?
ডয়চে ভেলে আজ তার একটি সাক্ষাৎকার [৩] নিয়েছে, সেখানে তিনি বেশ ক্রুদ্ধ কণ্ঠে বলছেন, সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে লেখা জনসভায় বক্তৃতার সমতুল্য। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বা বিরোধী দলীয় নেত্রীর নামে অশালীন কথাবার্তা বলা চলবে না। আমি এ ব্যাপারে তার সাথে একমত, আমরা আমাদের নেত্রীদের বিরুদ্ধে অশালীন কথাবার্তা শুনতে চাই না। শুধু নেত্রী কেন, আমরা কারো সম্পর্কেই অশালীন কথা শুনতে চাই না। আমরা শুনতে চাই না, আমাদের বিরোধী দলীয় নেত্রী বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর ধর্ম কী [৪]। এটি শালীনতার মাত্রা লঙ্ঘন করে। আমরা শুনতে চাই না, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলীয় নেত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলছেন, উনি রাতে কী করেন [৫]। এটিও শালীনতার মাত্রা লঙ্ঘন করে। তৌফিক ইমরোজ খালিদী তরুণদের ক্রুদ্ধ কণ্ঠে হুমকি দিয়ে শালীনতার সিরাতুল মোস্তাকিমে আনার জন্যে আইন ও নিয়ন্ত্রণ (রেগুলেশন) চাইছেন, তার কি হিম্মত আছে, এই দুই নেত্রীকে অশালীন বক্তব্য দিতে বাধা দেয়ার জন্য কোনো আইন বা রেগুলেশন প্রণয়নের দাবি জানানোর? দুই নেত্রী দূরে থাক, সাংসদদের আচরণবিধি নির্দেশ করে সাবের হোসেন চৌধুরী কর্তৃক প্রস্তাবিত আইন [৬], যেটি আর পাশ হয়নি, আর আলোর মুখ দেখেনি, সেটি কার্যকর করতে কোনো আহ্বান, কোনো চাপাচাপি করার সাহস কি তার আছে? আমি এ প্রশ্নের উত্তর জানি না। আশা করবো বিডিনিউজ২৪ ডট কমের ছয় বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে কোনো বক্তৃতায় তিনি ব্লগে সাধারণ মানুষের মুখে কাপাই পরানোর বায়না না ধরে রাজনীতিকদের আচরণ নিয়ন্ত্রণে বিধিমালা প্রণয়নের জন্য রাজনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানানোর সৎসাহস অর্জন করবেন। এই এক বছর ধরে পড়ার জন্যে যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমনসের সদস্যদের আচরণবিধির [৭] লিঙ্কটি তার করকমলে পেশ করছি।
পাঁচ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে খালিদী হঠাৎ কেন ব্লগের বিরুদ্ধে ডুকরে উঠলেন, যখন তিনি নিজেই ডিসেম্বর ৬, ২০১১তে টুইট করেছেন [২],
Web is a two-edged sword. Use or manipulate it to your advantage. But if you ABUSE it or TRY to STRANGLE it, you risk losing more.
এই রোমাঞ্চাভিলাষে ভরা স্ববিরোধিতার পেছনের সম্ভাব্য কারণটি নিয়ে আলাপ করবো পরবর্তী পোস্টে।
আপাতত একটি ছোট্ট আখ্যান (অ্যানেকডোট)। তৌফিক ইমরোজ খালিদীর বক্তব্য তাঁরই পত্রিকায় ছাপা হয়েছিলো [১]। ব্লগে এর প্রতিক্রিয়া আসার কারণেই কি না, আমি নিশ্চিত নই, সেই বক্তব্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ খবরটি থেকে বিনা নোটিশে অপসারিত হয়। এই সুযোগটি কেবল ওয়েবেই রয়েছে, সংবাদপত্র বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ক্ষেত্রে নয়। খবরটির প্রথম সংস্করণ দেখতে পাবেন এখানে, পরিবর্তিত সংস্করণটি পাবেন এখানে। প্রথম সংস্করণে খবরে ছিলো,
এটা এক ধরনের অপরাধ, আর এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে সরকারকে অবশ্যই নতুন আইন করতে হবে। স¤প্রতি শীর্ষ পর্যায়ের এক রাজনীতিকও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। তার সঙ্গে আমি একমত, আর এত দিন ধরে তা না করার দায় রাজনীতিক হিসেবে তারও স্বীকার করতে হবে।
দ্বিতীয় সংস্করণে "আর এত দিন ধরে তা না করার দায় রাজনীতিক হিসেবে তারও স্বীকার করতে হবে।" বাক্যাংশটি গায়েব করে দেয়া হয়েছে। জানি না, কাল সকালে আবার এটিকে ঠিক করে আগের চেহারায় নিয়ে আসা হবে কি না। এভাবে অতীতেও তারা খবর বদল করেছেন কি না, কিংবা ভবিষ্যতেও করবেন কি না, তা-ও জানি না।
এই যে পাঠকের অগোচরে খবর পাল্টে দেয়া হলো, এটি কি রীতিসিদ্ধ, জনাব খালিদী? আপনি কি প্রকাশিত ঐ অংশটি বলেননি? যদি বলে থাকেন, তাহলে কেন সরিয়ে নিলেন? আমরা কি ধরে নিতে পারি, আপনার কথিত "দায়িত্বশীলতা" থেকেই ঐ অংশটি এক্সপাঞ্জ করা হয়েছে? যদি তা-ই হয়, তাহলে কেন পাঠককে এ ব্যাপারে জানানোর প্রয়োজন বোধ করলেন না? একটা ছোট্ট সংশোধনী তো দিতে পারতেন। আর যদি ঐ অংশটি প্রকাশের অযোগ্য বলে মনে করে থাকেন, তাহলে কেন একটি ছোটো নোট দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন না, বললেন না, ঐ কথাটি আপনার বলা উচিত হয়নি?
খালিদী, আপনার দায়িত্বশীলতার দৌড়ের একটা ছোটো নমুনা আমরা দেখলাম। ব্লগারদের দায়িত্বশীল হতে বলছেন আপনি, আমিও আপনার সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে চাই, আসুন দায়িত্বশীল হই। সাধারণ মানুষের কণ্ঠরোধের ভুল সার্কাসে ক্লাউন হয়ে না নাচি। প্লিজ।
[১] দায়িত্বহীন মুক্তমত নয়, বিডিনিউজ২৪.কম
[৩] ডয়চে ভেলেতে খালিদীর সাক্ষাৎকার
[৪] প্রধানমন্ত্রীর ধর্ম কী, প্রশ্ন খালেদার, বিডিনিউজ২৪ ডট কম
[৫] খালেদা জিয়ার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী: ওনার সকাল হয় কয়টায়?, প্রথম আলো
[৬] Bill placed seeking code of conduct for MPs, ডেইলি স্টার
মন্তব্য
আশা করি খালিদী আরেকজন মোস্তফা জব্বার হবেন না।
গুগুল ক্যাশে থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে পোস্টে আপডেট করে দিন। ক্যাশ চিরস্থায়ী নয়, কিছুদিন পরে এক্সপায়ার করে যাবে।
ঠিক করে দিলাম। ধন্যবাদ।
হিমু এই লিংকটা ব্যবহার করেন; বড় সাইজের ছবি। × http://farm8.staticflickr.com/7007/6551114545_269c140de0_o.jpg ×
প্রবাদ আছে চোরের মার বড় গলা!
ছিঃ অশালীন মন্তব্য
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ছিঃ এভাবে মানী লোকের অসম্মান করেন? সব ব্লগার অশালীন ... মানী লোকের মা বাপ তুইলা কথা কয়
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর কোন ব্যক্তির পক্ষে আর উপরোক্ত কথাগুলো বলাতো দূরের কথা, চিন্তায় আনাও অসম্ভব। কোন মিডিয়ার মালিক হয়ে যাওয়া আসলেই সহজ। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে। সেটা তিনি আবারও প্রমাণ করলেন। মিডিয়ার মালিক অনেক আছে, সবাই কি সাংবাদিক?
অবশেষে বলতে চাই মাধ্যম হিসেবে ব্লগ অনেক বেশি শক্তিশালী ও গতিশীল। কিন্তু জনাব খালিদী সাংবাদিকতা বা ব্লগের বা ব্লগারদের প্রতিনিধি নন। সব মিডিয়ার ক্ষেত্রেই দর্শক পাঠকরাই এর নিয়ন্ত্রক। সরকারী নিয়ন্ত্রণ আজ আছে তো কাল নেই। তাই কোন নিয়ন্ত্রণ টিকবে বলে বিশ্বাস করি না।
___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে
আমার এক বিদেশী কলিগ আছে ভীষণ স্মার্ট, অগাধ বাণিজ্যবুদ্ধি। কিন্তু এই ভিনদেশী কাছে আসলেই আমরা নাক সামলাই। তার নিঃশ্বাস থেকে শরীর থেকে ক্রমাগত উৎকট রশুনের সুবাস নির্গত হতে থাকে। যত পারফিউমই ব্যবহার করুক, সবকিছু ছাপিয়ে রশুনের গন্ধটাই সামনে চলে আসে।
ওর দেশের আরো কয়েকজন কাজ করে এই অফিসে, সবাই একই বাড়িতে থাকে, একই বাবুর্চির রান্না খায়, তাদের কারো ক্ষেত্রে এমন হয় না, ওর হয় কেন?
একদিন বাসা গেলে বাবুর্চিকে ডেকে জিজ্ঞেস করে বসলাম, রহস্যটা কি?
বাবুর্চি বিমর্ষ কন্ঠে বললো, বাকীরা তো সালাদের সাথে দুয়েক দানা রশুন খায়, আর এই ব্যাটা রশুনেরই সালাদ খায় তিনবেলা। তাই সারাক্ষণ তার গায়ে রশুনের গন্ধ, সেই গন্ধে মেজাজ থাকে তিরিক্ষি, দোষ হয় আমার, বলে আমার রান্নার কোন সুগন্ধ নাকি সে কোনদিন পায় নাই।
খালিদী সাহেবের কথায়ও রশুনের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
মাঝে মাঝে মনে হয়, ব্লগ জিনিসটা যে কী সেইটাই খালিদী সাহেবদের মত মানুষেরা জানে না। না জানা যে কতটা ভয়ংকর সেটা এদেরকে কে বোঝাবে!
খালিদী তো মনে হয় তোতা পাখী, পেছনে কলকাঠি অন্য কেউ নাড়ছে...
দুর্দান্ত।
লোকটা হিপোক্রিট মনে হচ্ছে। লেখাটার প্রথম ভার্সনটা পড়েই মেজাজ বিগড়ে গিয়েছিল। এখন এ ধরণের চামারি দেখে রীতিমত ঘৃণা ধরে গেল।
এটা অনেক জটিল রোগ। নাম মুইকিহনুরেফটকামাইটিস। এটা সারানো খুব কঠিন। অনেক মডার্ন চিকিৎসাবিজ্ঞানের বইয়েও এর নাম পাবা না। এটার চিকিৎসা খুব বেশি লোক করতে পারে না। একে হযরত কেবলা বাবা ওমর শেহাব বাল্টিমোরীর দরবারে চাবুকপড়া খাওয়ার জন্য পাঠাও। কিছু হলেও হতে পারে।
বি.দ্র. বাবার ফিস দরদামযোগ্য নয়।
উইন্টারে কি করতেসো?
পোষ্টের জন্য । খালিদীর জন্য
নতুন মিডিয়াকে কি পুঁজি-বাজারের সাথে কোনভাবে তুলনা করা যায়?
নিও লিবারেলরা বলে পুঁজি-বাজারে কোন নিয়ন্ত্রণ কাঠামো বা আইনের দরকার নেই। এটা একটা গতিশীল প্রক্রিয়া যেখানে ক্রেতা-বিক্রেতার স্বতঃস্ফূর্ত ও বিপুল সমারোহ, সহজে ও সস্তায় বাজারে অংশগ্রহণ করতে পারা, সহজলভ্য ও অনেক তথ্য ও সেই সুবাদে ভোক্তার দ্রুত প্রতিক্রিয়া আমলে নেয়ার উপায় ইত্যাদি যেহেতু মুক্তবাজার নিশ্চিত করে (বলে দাবী করে), তাই এইসবের সমন্বয়ে একটি 'অদৃশ্য হাত' বাজারের শুধ্যতা বজায় রাখবে।
কিন্তু আমরা দেখেছি আদতে এই হাত বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করেনি। জোর যার মুল্লুক তার হয়ে গেছে। পাবলিক বাঁশের আঁটি গুনেছে।
যদি শুরুর প্রশ্নে উত্তর হাঁ বোধক হয়, তাহলে তো নীতিমালা বা আইন বা কোনরকম কাঠামোর অভাব এই নতুন মাধ্যমকে ক্রমে পুঁজি-মন্দার মত কোন নেতিবাচক দিকে নিয়ে যেতেই পারে। প্রশ্ন হল সেই সম্ভাব্য (নিশ্চিত নয়) 'তথ্যমন্দা' আর আজকের 'পুঁজি-মন্দা' একই রকম নেতিবাচক কিনা। আরেকটি প্রশ্ন হল সেই সম্ভাবনার মূল্যায়ন ছাড়া তো কাঠামোর নকশা ঠিক করা যাবেনা। আবার যদিবা একটি কাঠামো গঠন করার পক্ষে জনমতের ঝড় ওঠে, তখন সব স্টেকহোল্ডারদেরই সেই কাঠামোতে অংশিদারিত্ব থাকতে হবে। সুতরাং এই সিঁড়িতে বেশকতগুলো ধাপ পেরুনোর পরেই আমাদের কাঠামো নিয়ে আলোচনা করা উচিত।
কিন্তু খালিদী দেখছি সিঁড়ি-ফিরি, বারোয়ারি কাঠামো বা 'অদৃশ্য হাত' কে পাশকাটিয়ে সরাসরি রাজনৈতিক হেজিমনিকে দাওয়াত করে আনতে। এর সাথে একমত নই।
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
যা খবরাখবর ঠিক মত পাই ব্লগেই। এখন এখানেও সেন্সরশিপ বসাইলে কেমনে হবে?
আর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা যাবে না-এর মানেতো সুবিধার না। জামাতীদের জন্য কেমন যেন একটা মায়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। খালেদীর তো লেজ মনে হয় বের হয়ে যাইতেসে।
বেশ ভালো বিশ্লেষন করেছেন
এইটা কিছু না
উনি মনে লয় সরকারি সম্পাদকের পদটা পোক্ত করতে চাচ্ছেন
শাফি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কবি ছড়াকার জয়দুল হোসেনের একটা ছড়া পড়েছিলাম বহু আগে- 'কিবা দেশে আইলাম রে ভাই / কিবা দেশের গুণ / একই গাছে পান-সুপারি / একই গাছে চুন।'
(ছড়ার ব্যাখ্যাটা মনে করতে পারছেন তো ?)
একই গাছে পান আর সুপারি কোনভাবে কষ্ট করে মেনে নেয়া গেলেও একই গাছে চুনও আমদানি করলে তো সমস্যাই ! খালিদি সাহেব এখন গাছে চুন আমদানি করতে চাচ্ছেন আর কি !!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
প্রিয় হিমু ভাই, আপনার লেখা খুব ভাল লাগল।
## আমার একটি প্রশ্ন যে "প্রায়ই দেখি ব্লগগুলোতে নিজের ইচ্ছামত করে উল্টোপাল্টা করে মনগড়া মতন একটি লিখা বা বক্তব্য ঝুলিয়ে দেয়া হয়। কোনটি দ্বায়ত্বশীল বা কোনটি অদায়িত্বশীল তা বুঝবো কিভাবে? আমার নিকট যা সময়োপযোগী তা অন্যের নিকট নাও হতে পারে আবার..." সেক্ষেত্রে নীতিমালা থাকাটা আবশ্যকীয় নয় কি?
আপনি যদি বুঝতে পারেন, সেখানে "মনগড়া" তথ্য আছে, আপনি সেই ব্লগে প্রতিবাদ করতে পারেন, ব্ক্তব্যের বিপরীতে রেফারেন্স বা যুক্তি তুলে ধরতে পারেন। সেখানে অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকলে আপনার নিজস্ব পরিসরে (ফেসবুক) এ ব্যাপারে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন।
নীতিমালা কিন্তু ব্লগগুলোতেও থাকে। নীতিমালা থাকার আবশ্যকতার চেয়েও জরুরি নীতিমালা প্রয়োগের আবশ্যকতা। আপনি নিজের ঘর ইচ্ছামতো হেগেমুতে নোংরা করে সেটা সাফ করার জন্য রাষ্ট্রকে ডাক দিতে পারেন কি?
উল্টো পিঠে, মিডিয়াতে অনেক অসত্য মনগড়া খবর প্রচার করা হয়। সাধারণ মানুষের পক্ষে সেগুলোর প্রতিবাদ করার সুযোগ থাকে না। অনেক সময় অনিচ্ছাকৃত ভুল তথ্য আসলে ব্লগে যেমন মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে শুধরে নেওয়া সম্ভব, অন্য মিডিয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা মোটামুটি দুরূহ।
আপনি নিজের ঘর ইচ্ছামতো হেগেমুতে নোংরা করে সেটা সাফ করার জন্য রাষ্ট্রকে ডাক দিতে পারেন কি?
# আপনার বক্তব্যের পুরো অংশটির সাথে একাত্মতা পোষন করছি শুধুমাত্র শেষাংষ ছাড়া। আপনি সবগুলো কোন একঝলকে দেখে তবেই বলেছেন আর আমি হয়তো এক ঝলকে একটি কোন দেখে মন্তব্য করেছি। আপনার প্রশ্নের উত্তরে বলতে পারি " আমি যদি আমার খেয়াল খুশি মতন আমার ঘর নোংরা করে রেখে দেই তবে সময়ের আবর্তনে আমি হয়তো একদিন আমার ঘরের বাইরে চলে আসতে পারি ও অন্যের ঘরকে নিজের মনে করে অথবা অন্যের ঘর মনে করেই নোংরা করতে পারি। তাই, দুষ্ট কীর্তি শুরুতেই বিনাশ নীতি ভাল নয় কি? যদি প্রথমেই জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায় তাহলে মনে হয় এ ভয়টা থাকবেনা। আমি সবগুলো ব্লগে ঢু মেরে দেখেছি মনের মাধুরী মিশিয়ে নানান কান্ডকীর্তি সেখানে প্রবাহমান রয়েছে। ব্লগের পরিবেশ অসহনীয় হয়ে উঠছে। কিন্তু ব্লগের চাকা ঠিক রাখার জন্য ব্লগারকে ব্যান করা হচ্ছেনা। ব্লগার যদি আগেই সাবধান হয় তাহলেতো মশা মারার জন্য আমাদেরকে কামান দাগার ব্যবস্থা করতে হয়না যা জনাব খালিদী সাহেবের মাথায় এসেছে।
# আমি মনে করি রাষ্ট্রের ক্ষমতা ব্যাপক, ইচ্ছে করলেই অনেক কিছু করা সম্ভব। আপনার মত মেধাবী লোকদের কোন সমস্যা হবে বলে মনে করিনা, কারন:আপনি দেখিয়া শুনিয়া পা বাড়াইবেন, কিন্তু যাহারা একটু ল্যাকাডেইজিক্যাল ভাবভঙ্গি নিয়ে আগাইবে, তাহারা নীতিমালার কবলে পড়ে রসাস্বাদন করিতে পারিবে বলিয়া আমার বিশ্বাস।
##ভাল থাকুন সবসময়, এ প্রত্যাশা..
ব্লগারের "সাবধান" হওয়ার ব্যাপারটা রাষ্ট্র আইন করে স্থির করে দিতে গেলে, সম্ভাবনা প্রবল যে সেই আইন প্রযুক্ত হবে ক্ষমতাবানের স্বার্থে, সাবধান করে দেয়া হবে ক্ষমতাবানের স্বার্থের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে, ব্লগে ব্লগে হাগামুতা যেমন চলছিলো তেমনই চলবে।
যে রসের আস্বাদন আপনি করাতে চাইছেন, ক্ষমতাবানেরাও ৫৪ ধারায় ফেলে বিরাগভাজনদের সেই রসের আস্বাদন করায়। দুষ্টের দলের কিছুই হয় না। ব্লগ নিয়ন্ত্রণের আইন হবে একটা ডিজিটাল ৫৪ ধারা। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে লিখবেন, ডিজিটাল ৫৪ ধারার রসাস্বাদন করবেন।
১০০% সহমত।
এই ব্যাপারটা অনেকের কাছেই কাউন্টার ইনটিউটিভ ঠেকে। এ কারণে অনেককেই বলতে শুনি, যেটা খারাপ, সেটাকে ঘটার আগেই কঠোর হাতে দমন করলে, নিষিদ্ধ করলে, নিয়ন্ত্রণ করলে সমস্যা কী? একটা উদাহরণ দেই। পেডোফিলিয়া জঘন্যতম অপরাধের একটা। এখন, এটা যাতে কখনোই না ঘটে, সেটার জন্যে ঘরে ঘরে রাষ্ট্র যদি ক্যামেরা বসিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে, তাতে সমস্যা কোথায়? পারিবারিক যে কোনো নির্যাতনও তো তাতে ঠেকানো সম্ভব। এসবের জন্য এই ভাবনাটা কাজ করে যে রাষ্ট্র উদার ভালো সর্বক্ষমতাময়, ঈশ্বরের মতো। কিন্তু রাষ্ট্র সম্পর্কে চিরসত্য কথা হলো, সে দুষ্ট, তার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা যতোটা সম্ভব নিয়ন্ত্রিত থাকা দরকার। এর বাইরে রাষ্ট্রের কাছে আর যা কিছু নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা আছে, সেটা তার মালিক জনগণের দ্বারা স্বেচ্ছায় ন্যস্ত,এবং ওসবের সদ্ব্যবহার রাষ্ট্র করছে কিনা তার জন্যে জনগণের সদা সতর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়। এর জন্যে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ প্রতিরোধ করার অধিকার সংবিধানের মাধ্যমে জনগণের নিকট প্রদত্ত। দুষ্টলোকেরা ভুল বোঝায়। বলে রাষ্ট্র হলো পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা, উনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রতিরোধ করা রাষ্ট্রদ্রোহ, আর ঘরে ঘরে ক্যামেরা বসানো দরকার কারণ উনি সর্বদ্রষ্টা, উনি নিশ্চয়ই ভালুর জন্যেই কেবল সেইসব দৃষ্টি ব্যবহার করবেন। আর ব্লগে তো হাত দেবেন খালি সুন্দর ছিমছাম মনোজ্ঞ পরিবেশ বজায় রাখার জন্যে। এইসব মিথে কি বিশ্বাস করা সম্ভব?
মুখরা-অশালীন দুই নেত্রী, তাদের গুন্ডা-পান্ডা-ষন্ডা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত সাঙ্গপাঙ্গ (মন্ত্রী, সাংসদ)....ইনাদেরকে আগে আচরণ, মুখের ভাষা, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ঠিক করতে হব। এরপর বাকিরা।
আগে ফরয, তারপর নফল
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
খালিদীর আরো কয়েকটি বিষয় অসলগ্ন লেগেছে। সময় করে উঠতে পারলে আলাদা পোস্ট দিবো। আপাতত সংক্ষেপে লিখি।
রেগুলেশন বনাম কন্ট্রোল
ডয়েচ ভেলের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন 'রেগুলেশন' চান 'কন্ট্রোল' নয়। অথচ 'রেগুলেট' করার অর্থ পেলাম
অর্থাৎ ঘুরে ফিরে সেই কন্ট্রোলের কথাই বলছেন তিনি।
প্রকাশ্যে বনাম গোপনে
জনাব খালিদী বলেছেন ঘরে যেটা বলা যায় সেটা বাইরে বলা যায় না। কেনো? বাইরে বললে কারো স্বার্থহানী হয়? সত্য কথা বলে বসলে কারো গদি নড়বড়ে হয়ে যায়? খুবই ভুল তুলনা এবং স্বার্থান্বেষী বক্তব্য এটা।
রেগুলেটরি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান
বিশ্বের অন্য কোনো দেশে রেগুলেট করার প্রতিষ্ঠান আছে? এর জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দেশ অনুন্নত, আমরা বুঝতে পারি না আমাদের বলার সীমানা কতটুকু হওয়া উচিৎ। একারনে এই রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠান দরকার আছে।
এটা শুনে হাসব না কাঁদব বুঝতে পারলাম না। এযেন আই-রোবোটের ভিকির বক্তব্য। যেহেতু মানুষেরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে মরে যাচ্ছে তাই তাদের নিজেদের ভালোর জন্যই রোবটদের উচিৎ মানুষের দখল নিয়ে নেয়া:
খালিদীর চিন্তা ভাবনা বুশের সাথেও যেনো মিলে যায়:
এ যেনো মাথা ব্যাথার কারনে মাথা কেটে ফেলার বুদ্ধি!!
ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত
বিডিনিউজের লেখায় জানতে পারি তিনি বলেন ব্লগ কারো ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দিতে পারে। অনুভুতির ব্যাপারটা একটা ভুল যুক্তি।
কেউ যদি এখন এসে বলে, বাংলাদেশের নদী বণ্টন নিয়ে আলোচনায় আমার 'অনুভুতি আঘাত' পায়, তাহলে কি নদী বিষয়ে আলোচনা বন্ধ করে দিতে হবে? কিংবা কেউ যদি বলে, আমি প্রো ৭১ ঠিকই কিন্তু সুজনদার কার্টুনে আমার 'অনুভুতি আঘাত' পায়? কিংবা 'বিড়ালের নাম মোহাম্মদ' এই কৌতুকে আমার 'অনুভুতি আঘাত' পায়? তাহলে কি সেটাও বন্ধ করতে হবে? কিংবা বিবর্তনের লেখা পড়ে আমার ধর্ম ছুটে যায়, আমার 'অনুভুতি আহত' হয়? কিংবা হুমায়ুন আহমেদের সর্ম্পকে লেখা পড়ে লেখক হিসেবে আমার 'অনুভুতি আহত' হয়? কিংবা নেভারেস্ট পড়ে অ্যথলিট হিসেবে আমার অনুভুতি আহত হয়? কিংবা মাদক নিয়ে লেখা পড়ে আমার 'অনুভুতি আহত বোধ' করে?
আমরা তাহলে সবার লেখাই বন্ধ করে দেই? কেননা, একটা সমালোচনা হলে সেটা কোথাও না কোথাও, কোনো না কোনো ভাবে কারো 'অনুভুতিকে' আঘাত করবে। 'এই বিষয়ে আলোচনা হলে কারো অনুভুতিতে আঘাত করবে, তাই এটা বলা যাবে না', এই ধরনের বিষয়কে যুক্তি হিসেবে ব্যবহার করা হলে তাকে লজিক্যাল ফ্যালাসি আর্গুমেন্টাম এড পপুলাম বলে।
এখন আমি যদি বলি ব্লগের মুখে কাপড় গোঁজার কথা বলে আপনি লাখো লাখো ব্লগারের 'অনুভুতিতে' আঘাত দিয়েছেন, তাহলে আপনি মেনে নেবেন?
'অনুভুতি আহত হবে' এই যুক্তিতে লেখার বা ব্লগের বিরুদ্ধে ফতোয়া দেয়া খুব বড় ভুল।
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
এদেরকেই কয়দিন ধরে আমি বলছিলাম ইমামতিবান্ধব। উনিই সীমানাটা খালি জানেন।
এখানে টিভি অনুষ্ঠানে সারা প্যালিনকে তুলাধুনা করেছেন বিল মার। বিল মারের অনুষ্ঠানে আমাদের ইউনূস কাগুও হাজিরা দিয়ে এসেছেন। খালিদীর উচিত এই ক্লিপটা দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উন্নত না অনুন্নত।
আমি সবচেয়ে অবাক হয়েছি অন্যান্য ব্লগে এর প্রতিক্রিয়া নেই দেখে! সামহোয়ারইন ব্লগ স্বঘোষিত "ব্লগ দিবসের" পোস্ট ঝুলিয়ে রেখেছে, কিন্তু এই বিষয়ে কোনো বক্তব্য নেই।
ভাঁড় তার ভাঁড়ার নিয়ে হাজির, সামুতে এখন ছাগু এবং লাদির সংখ্যাধিক্যের কারনে "অনেকেই"(এই অনেকের ভেতর মূলত তারাই পড়েন যারা ব্লগিং এর মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তন বা সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারেন) সে মুখে যায় না। কিন্তু ছাগল দিয়ে তো হাল চাষ হয়না। তাই ছাগলের সম্রাজ্যে ছাগু চীফদের সন্মানহানি যেনো কোন ভাবেই না হয়, তাই তথাকথিত সাইবার আইনের নামে সচলায়তন, আমার ব্লগ, মুক্তমনা ব্লগের মতো ব্লগকে কিভাবে সরকারী ধোলাইয়ের মাধ্যমে বাতিল করা যায় সে ফন্দি ফিকিরে ব্যাস্ত এই সাব ভাঁড়েরা।
সাইবার স্পেসে নিরাপত্তার বিষয়ক পোস্টের পরের পোস্টই পাসওয়ার্ড হ্যাকিং নিয়ে!!!!!!!!!!!!!!!!!! ছামোয়াড় আসলেই একটা মজার জায়গা!
ব্যাপারটা প্রথমে খেয়াল করি নাই
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
facebook
বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে, যেখানে ব্লগ ও সামাজিক নেটওয়ার্ক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, সেখানে ব্লগ নিয়ন্ত্রণ স্রেফ গণতান্ত্রিক অধিকারকে খর্ব করা।
চীনের উদাহরণটাই দেখুন
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
মুস্তাফা জব্বারের মত যদি সরকারের নেক নজরের আসার সুযোগ য্দি মিলে যায়, এই আশায় অনেক ব্লগমালিক ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নিজের ব্লগমাথা প্রমাণ করতে বুঝাই যায়। আমাদের এই তোষামোদির স্বভাব আর গেল না।
ইন্টারনেট সেন্সরশীপের কথাই নরম করে বলে দিলেন মনে হল। ইন্টারনেটকে ভয় পায় সবাই। কারন এটাকে সহজে নিয়ন্ত্রন করা যায় না। আমার মুখ আছে আমি বলব। যদি কারো তথাকথিত অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে থাকি সেটা নিয়ে রাষ্ট্রের মাথা না ঘামালেও চলবে। বাকস্বাধীনতা অবশ্যই দায়িত্বশীল ভাবে চর্চা করা উচিৎ। কিন্তু এই স্ট্যান্ডার্ড ইভলভ করার জিনিস, কোনটা ঠিক কোনটা ভুল এইটা সেই কমিউনিটির মিথস্ক্রীয়ায় উঠে আসবে। সরকারের আসল কাজের খবর নাই, ইন্টারনেট তাদের এত মাথাব্যাথা কেন? নাগরিক দের মৌলিক অধিকার নিয়ে চিন্তা করেন সবাই, কে কি বলল এইগুলা সেন্সর করনের কাম নাই।
যেকোন প্রতিষ্ঠান যখন ছোট থাকে তখন তাদের মাঝে একটা বিপ্লবী মেজাজ থাকে। কিন্তু যখনই বড় হয়ে যায় তখনই ডিপ্লোম্যাটদের মত সুশীল ভন্ডামী মার্কা কথা বলা শুরু করে।
যৌক্তিক চুলচেরা বিশ্লষণ দারুন লাগলো
masum14
এদেশে বুদ্ধিজীবী কেনা যাচ্ছে পানির দামে, পত্রিকাগুলো তো বিক্রি হয়েই বসে আছে [কোথাও আট টাকায়, কোথাও আট হাজারে, কোথাও আট লাখে, অথবা কোথাও আটরশীতে]...
অল্প কিছু ব্যতিক্রম বাদে ব্লগার এবং ব্লগদেরই কেবল কেনাকাটা করা যাচ্ছে না যখন, তখন তো 'আইন নিজের হাতেই তুলে নেবেন তারা'
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
খালিদী যা বলেছে তা ১০০ ভাগ ঠিক। আরো কিছু বাদ গেছে, দেশের মানুষ সকালে কি খাবে বা দিনে কয়বেলা খাবে তাও রাজনীতিবিদ ভায়েরা ঠিক করে দিক, আর যে টাকা বাঁচবে তা মাসে মাসে নেতা-আমলাদের একাউন্টে জমা করে দেয়া হোক। সবথেকে ভাল হয় সবার মগজ ধোলাই করে হিরক রাজার মন্ত্র দিয়ে দেয়া হোক। ৫ বছর পর পর মন্ত্র চেঞ্জ করলেই চলবে।
নতুন মন্তব্য করুন