মানুষের জীবন কি এই কিছু জিনিসের মধ্যে পড়ে? প্রশ্নের উত্তরে পাল্টা প্রশ্ন করতে হয়, মানুষটা কি বাংলাদেশের? যদি বাংলাদেশের হয়, তাহলে আর "কিছু জিনিস" নয়, সে চলে যাবে "বাকি সবকিছু"র খাতে।
আমাদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পগুলোর কী অবস্থা, আমি জানি না, কিন্তু বুঝি, মানুষের ভারে বাংলাদেশ কাঁপছে। কেবল মানুষের ওজনেই তলিয়ে যাচ্ছে মানুষের জীবনের দাম। অর্থনীতির জটিল গ্রন্থিময় পথ ধরে ক্রমশ নিচে নেমে গেলে তার ভিতের কাছে গেলে পাথরে খোদাই হরফে লেখা দেখি, যার সরবরাহ অফুরান অথচ চাহিদা কম, তার মূল্যও কম। বাংলাদেশে মানুষের জীবন এমনই এক স্বল্পমূল্যে ক্রয়যোগ্য পণ্যের কাতারে চলে গেছে।
বাংলাদেশে লঞ্চডুবি তো কোনো নতুন ঘটনা নয়। নতুন কোনো কায়দাতেও লঞ্চ ডুবছে না। বছরের পর বছর ধরে এই একই খবর দেখতে দেখতে এই খবরের মূল্যও মানুষের কাছে কমে গেছে। আবারও সেই অর্থনীতির ফতোয়া, এ ধরনের খবরের চাহিদার চেয়ে সরবরাহ অনেক বেশি। রাস্তায় ট্রাক এসে পিষে দিচ্ছে নসিমন, ট্রেন এসে তুবড়ে দিচ্ছে বাস, গাড়ি উঠে যাচ্ছে ফুটপাথে শায়িত ছিন্নমূলের শরীরের ওপর, আর নদীতে মানুষের ভারে টলতে টলতে এগিয়ে যাওয়া লঞ্চ ডুবে যাচ্ছে ঝড় অথবা অন্য জাহাজের ধাক্কায়। এই মৃত্যগুলো রোধ করা সম্ভব, কিন্তু কারো কোনো গরজ নেই। মানুষের নিরুদ্বেগ নিস্পৃহতার কারণে প্রতিদিন, আমি আবারও বলছি, প্রতিদিন খবরের কাগজে এই মৃত্যুর খবর পড়তে হয় আমাদের। এই খবরগুলো পড়তে পড়তে আমরা একটু একটু করে অমানুষ হয়ে উঠি, আমরা ভুলে যাই "পাঁচজন নিহত হয়েছে" কথাটার অর্থ পাঁচটি মানুষ মারা গেছে, তাদের পরিজনের পৃথিবী থেকে মুছে গেছে পাঁচটি সতেজ নাম, সর্বমোট একশো দেড়শো দুইশো বছরের যাপিত জীবনের স্মৃতি আর দায় বহন করতে হচ্ছে তাদের স্বজনদের, আর যা কিছু তারা দিতে পারতো আমাদের, তা থেকে আমরা বঞ্চিত হলাম। এই খবরের চাপে আমরা দুইশো লাশের সংবাদ পড়ে পাতা উল্টে চলে যাই আফ্রিদির চ্যাগানো ছবি কিংবা স্কারলেট জোহানসনের ন্যাংটা ছবি প্রকাশ কিংবা ঐশ্বরিয়ার বাচ্চার নাম কী রাখা হলো সেসব খবরে।
পৃথিবীতে মানুষের গড় আয়ু সত্তর বছর। আমি মানুষের উত্তরণের দীর্ঘ ইতিহাসের পাঠক, মানুষের ক্ষমতায় আস্থাবান, তাই এই সত্তর বছরের এক দিন আগেও যে মৃত্যু ঘটে, তাকেও মানুষের ব্যর্থতা হিসেবেই পরিগণনা করতে শিখেছি। মেঘনায় লঞ্চডুবিতে যারা মারা গেছে, তাদের মৃত্যুও আমাদের ব্যর্থতায় ঘটেছে। আমাদের সমাজের প্রতিটি মানুষ ঐ মৃত্যুর দায়ভার আংশিক হলেও বহনে বাধ্য। তবে সবচেয়ে বড় দায় আমাদের নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের। বিবেকহীন এই অশিক্ষিত লোকটি এই তিন বছরে নৌপরিবহন মন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে কী কাজ করেছে আমরা জানি না, তার সকাল থেকে সন্ধ্যা নৌপরিবহন ব্যবস্থার কোন উন্নয়নের কাজে সক্রিয়ভাবে লাগে, আমরা জানি না, শুধু জানি, এই লোকটি এই নির্মম দুর্ঘটনার শিকার মানুষগুলোর জীবনের মূল্য নির্ধারণ করেছে তিরিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকা। একটা কোরবানির গরুর দাম যে দেশে লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়, সে দেশের মন্ত্রী হয়ে এই লোক অম্লানবদনে, কোনো দুঃখ-লজ্জা-গ্লানি প্রকাশ না করে তিরিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকার শাকে নিজের ব্যর্থতা আর অযোগ্যতার মাছটা ঢাকা দিতে চায়।
রাতের বেলা কার্গো জাহাজ চলাচল নিষিদ্ধ, এই বিধি আছে, এর প্রয়োগ নিশ্চিত করা কি এতই কঠিন? শাজাহান খান এই তিন বছর বসে কোন অঙ্গের কেশ উৎপাটন করেছে যে এই সামান্য নিষেধ কার্যকর করার ব্যবস্থা করতে পারলো না? রাতের বেলা জাহাজ চালানোর খরচ বাঁচাতে জাহাজের মাস্টার-সারেং-সুকানিরা আলো জ্বালায় না। ধরে নিলাম তারা অশিক্ষিত মূর্খ কাঠবলদ, কিন্তু নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কী করে? তারা কি এই মাস্টার-সারেং-সুকানির চেয়ে উন্নত কিছু? যদি উন্নতই হবে, তারা কেন এই সামান্য চর্চাটুকু নিশ্চিত করতে পারে না? লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ঠেকানোর ক্ষমতা তো দূরের কথা, লঞ্চের বাতিটার ওপরও তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই, এমনই পালোয়ান নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
গত পরশু সুইটজারল্যাণ্ডের এক টানেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চুরমার হয়ে গেছে বেলজিয়ামের স্কুলশিশুবাহী এক বাস। বাইশটি শিশু ঘটনাস্থলেই মারা গেছে, ড্রাইভার আর চার শিক্ষকসহ। বেলজিয়ামে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হয়েছে, বেলজিয়াম আর সুইটজারল্যাণ্ডের বিশেষজ্ঞরা নেমে পড়েছে কী করে দুর্ঘটনা হলো তা খতিয়ে দেখতে। এতে করে ঐ আটাশ জনের প্রাণ ফিরে আসবে না, কিন্তু ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা যাতে আর না হয়, সে চেষ্টা নিশ্চিত করা হবে। আর এ জন্যে যা লাগে, তা পড়ে সেই "কিছু জিনিস"-এর মধ্যে, যা টাকা দিয়ে কেনা যায় না। এদের এই তৎপরতার পেছনে কাজ করছে দায়বদ্ধতা, বিবেক আর মনুষ্যত্বের চাপ। এরা জানে, এই প্রাণহানির জন্যে কোথাও না কোথাও কাউকে না কাউকে জবাবদিহি করতে হবে। আমাদের মাস্টারকার্ডঅলা নৌপরিবহনমন্ত্রী দায়বদ্ধতা আর মনুষ্যত্ব বানান করে কাগজে লিখতেই পারবে না (নিজের নাম শাহজাহানই তো ঠিকমতো লিখতে পারে না সে, লেখে শাজাহান), তুলনামূলকভাবে সহজ শব্দ বিবেক লিখতে পারলেও পারতে পারে, কিন্তু তার মানে সে বোঝে না। শাজাহানের আগে এই মন্ত্রণালয় চালাতো আরেক বিবেকহীন আকবর, যে লঞ্চ দুর্ঘটনায় মৃতের পরিবারকে একটা বা দুটো ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল ক্ষতিপূরণ দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলো। তিরিশ হাজার টাকায় হয়তো চারটা ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল কেনা যাবে। তাই শাজাহান ছাগল-স্কেলে আকবরের তুলনায় এগিয়ে আছে। মানুষ স্কেলে এই দুইজনকেই খুঁজতে যেতে হবে স্কেলের ঋণাত্মক প্রান্তে, হয়তো লঞ্চে করেই যেতে হবে, এমনই দূরবর্তী এক প্রান্তের অমানুষ এরা। আমরা পনেরো কোটি মানুষের চল্লিশ বছর পুরনো জাতি, কিন্তু একজন, মাত্র একজন দায়িত্ববান বিবেকসম্পন্ন মানুষ তৈরি করতে পারলাম না যে আমাদের নৌপরিবহন ব্যবস্থার অভিভাবক হতে পারে।
এই ঘটনার তদন্তের পর দুর্ঘটনার শিকার লঞ্চ মালিক, মাস্টার-সারেং-সুকানি আর অজ্ঞাতনামা জাহাজের মাস্টার-সারেং-সুকানির নামে মামলা হয়েছে। কিন্তু যার দায় সবচেয়ে বড়, সেই নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আর তার অযোগ্য মন্ত্রীর কাজের কৈফিয়ত কে নেবে? আমরা কি কোথাও গিয়ে তার কাজের হিসাব চাইতে পারি? বলতে পারি, এই তিন বছরে তুমি কী আঁটি বেঁধেছো আমাদের দেখাও? এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধের জন্যে তুমি আর তোমার মন্ত্রণালয় কী করেছে তার বিবরণ দাও জাতির কাছে? আমরা পারি না। কারণ আমরা পাবলিক। সংবিধানে লেখা, আমরা সবকিছুর মালিক, কিন্তু আমাদের জীবনের মূল্য সংবিধানে লেখা নেই। ওটা শাজাহান খান লিখে দিয়েছে, তিরিশ হাজার, আর যদি আমাদের পরিবারের আরো একজন একই দুর্ভাগ্যের শিকার হয়, তাহলে পঁয়তাল্লিশ হাজার। চার থেকে ছয়টি ছাগলের মূল্যে আমাদের এই মাস্টারকার্ডঅলা নৌপরিবহনমন্ত্রীরা নিজেদের অযোগ্যতার দায়টুকু চুপচাপ কার্পেটের নিচে চাপা দিয়ে দিতে চায়।
সড়ক পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতা শাজাহান খানের দাপট আমরা দেখেছি তারেক মাসুদ-মিশুক মুনীরের ঘাতক বাসচালকের গ্রেফতারের পর। শুধু ঢাকা শহরে বেআইনীভাবে বাস-ট্রাক সমাবিষ্ট করেই এই লোকটি ক্ষান্ত হয়নি, সে তার সংগঠনের ক্ষমতা দেখিয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যানবাহন ধর্মঘট করে। নৌপরিবহন শ্রমিকদেরও হয়তো অনুরূপ সংগঠন আছে, শাস্তি দিতে গেলে তারাও হয়তো তাদের সংগঠিত শক্তির দৌড় দেখাবে পাবলিককে জিম্মি করে। সংগঠন নাই শুধু পাবলিকের, সংগঠন নাই শুধু ঘুরে বেড়ানো তিরিশ হাজার টাকা দামের জ্যান্ত লাশগুলির, তারা বালটাও ছিঁড়তে পারে না। তারা শুধু বাসের ভেতরে পিষ্ট বা দগ্ধ হয়, নয়তো নদীতে ডুবে অপেক্ষায় থাকে, কখন ডুবুরি এসে লাশ তুলবে বা পেট ফাঁসিয়ে সমাধি করে দেবে জলের নিচেই।
ফাঁসির আসামি রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পেয়ে হাসতে হাসতে বেরিয়ে আসে, কিন্তু প্রতিনিয়ত ফাঁসির চেয়েও নির্মম মৃত্যুর খাঁড়া ঝুলে থাকে যাদের মাথায়, সেই সাধারণ মানুষদের কোনো ক্ষমা নাই। তাদের পাপ, তারা বেলজিয়াম জন্মায়নি, তারা সুইটজারল্যাণ্ডে জন্মায়নি, তারা জন্মেছে বাংলাদেশে যেখানে মন্ত্রী হয় আকবর আর শাজাহানের মতো লোক। আমাদের ক্ষমা করে দেয়ার কেউ কি আছেন? প্লিজ মাফ করে দেন এই পনেরো কোটি মানুষকে। মাস্টারকার্ডটা পকেটে রেখে এক দিনের জন্যে একটু তাকিয়ে দেখুন, কত মানুষ মারা যাচ্ছে প্রতিদিন, শুধু আপনাদের অযোগ্যতা আর গাফিলতির জন্য! সংখ্যার আড়ালে প্রতিদিন একটু একটু করে চাপা পড়ে যাচ্ছে জীবিত ও মৃত মানুষের মনুষ্যত্ব!
ক্ষতিপূরণ দিতে চেয়ে শাজাহান খান স্বীকার করে নিয়েছে, ক্ষতির দায়ভার তার। এই লোক পদত্যাগ করবে, এই দুরাশা আমি করি না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরজি জানাই, তিরিশ হাজার টাকায় মানুষ কিনতে চাওয়া এই লোকটাকে পশ্চাদ্দেশে শক্ত একটা লাথি মেরে মন্ত্রিসভা থেকে বের করে দিন। একজন যোগ্য লোককে নিয়োগ দিন নৌপরিবহন মন্ত্রী হিসেবে। পনেরো কোটি মানুষের মধ্য থেকে তেমন একজনকে কি পাবেন না?
মন্তব্য
ট্যাগটা একদম সঠিক হয়েছে
ট্যাগ ঠিক আছে
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে যারা মানুষ ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন-তারা যতদিন রাজনীতিতে না নামবে ততদিন আশা করতে পারছিনা। "মানুষ ও রাজনীতিবিদ" বাংলাদেশে স্ববিরোধী একটা ব্যাপার। শাজাহানদের পশ্চাৎদেশে লাথি দেয়ার লোক মন্ত্রিসভায় নেই, যদি থাকেও যারা দিতে চায় তাদের হয়ত পিঠ বাঁচানোর লোক নাই। আফসোস! মনের কথা বললেন। ট্যাগে সহমত পোষন করলাম।
শাফি।
আপ্লুত হলাম। এ লোকটা নানা সেক্টর থেকে দেদারসে ঘুষ খেয়ে চলেছে। আমার পরিচিত একজনের চিনিকল চালানোর ক্ষেত্রে মাস্তান অথবা সরকারি লেভেল থেকে কোন অসুবিধার সম্মুখিন হতে হবেনা এই নিশ্চয়তার বিনিময়ে নিয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। এমন নির্লজ্জ মানুষগুলো আমাদের নেতা হয়ে বসে আছে। আমরাই এদেরকে নির্বাচিত করি। আমাদের নির্বুদ্ধিতা আর অবিবেচনার দায়ভার আমরা ছাড়া আর কে বহন করবে? জীবন দিয়ে আমরাই কাফফারা দিচ্ছি, এবং দিয়ে যাবো।
আমাদের দেশটায় অকাট মূর্খ লোকজনের উপরে ওঠা খুব সহজ। আপনি যদি মন্ত্রী হতে চান তবে আপনার অনেক টাকা থাকতে হবে এবং/বা পেশীশক্তির জোর থাকতে হবে। এর সাথে যে জিনিসটা অবশ্যই লাগবে তা হল বেহায়াপনা। আমাদের অধিকাংশ রাজনীতিবিদের বেহায়াপানর লেভেল অনেক উপরে। শ্রমিকনেতা, ব্যবসায়ী, ছাত্রনেতা সব পাওয়া যায় কিন্তু জননেতা এখন আর পাওয়া যায় না। আরও দুঃখের বিষয় হল এইসব ফালতু ও স্বার্থপর লোকের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে। সেই সাথে জনগণের ** মারা খাওয়ার রেটও বাড়ছে। শ্রমিকনেতা, ব্যবসায়ী, ছাত্রনেতারা পার্টিতে টাকা যোগায়, মহাসমাবেশে লোক যোগায়- এদের বের করার সাহস প্রধানমন্ত্রীর কখনোই হবে না।
অবশ্য সাধারণ জনগণের দোষ কম না। আমার এক বন্ধু আছে শাজাহান খানের এলাকার। তার মতে ঐ এলাকায় শাহজাহান খান যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিনই নির্বাচিত হবে। এরকম ম্যান্ডেট পেলে অন্য কাউকে পাত্তা দেয়ার কথা না। তাই জনগণ যতদিন রাজনৈতিক ভাবে সচেতন না হবে ততদিন শাহজাহান খানরা যা খুশি তাই করে যাবে।
-নামুস
পুরোনো ঢাকায় আগুন লাগলো, প্রান গেল জনা পঞ্চাশেক মানুষের। প্রধান কারন ছিল কেমিকেলের গুদাম।
আমরা আহা আহা করলাম, চোখের জম ফেললাম।
ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলির মধ্যে ২ টা মেয়ের বিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী, ঘটা করে অনুষ্ঠান করে।
মৃতদের স্মৃতি ধরে রাখতে স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হলো।
চারিদিকে ধন্য ধন্য পড়ে গেল।
কিন্তু সেই কেমিকেলের গুদাম আর সরলো না।
কিছুকাল পরে এই কয়েকটা লাইনের পুনরাবৃত্তি হবে না সেটা কে জানে?
হিমু ভাই, যা লিখলেন !
ঘেন্না লাগে।
...........................
Every Picture Tells a Story
লেখায়
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
শাজাহানকে নিয়ে আর কথা বলতে ইচ্ছে করেনা। আমি আগেও এই জানোয়ারটাকে নিয়ে সচলে লিখেছি। সর্বকালের সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী সড়ক-নৌ চাঁদাবাজ এই কুত্তাটা সরকারের কাছে কেনো এতো আদরনীয় তা বুঝতে পারিনা।
একজন মানুষের পক্ষে ‘মানুষ‘ হতে গেলে কিছু জিনিস অত্যবশ্যক। জ্ঞ্যান, বুদ্ধি, প্রজ্ঞা, সক্ষমতা, ইত্যাদি। শাজাহানের মাঝে এর কোনটা আছে?
কোরিয়ানরা কুকুরের মাংস খায়, প্রায় সবদেশের মানুষই শুকরের মাংশ খায়, এবং যৌনকর্মী যার কাছ থেকে পয়সা নেয় তাকেই দেহসেবা দেয়।
তাহলে শাজাহানের উপযোগিতা কোথায়? মানুষ মানুষের গোস্তো খায়না। সুতরাং শাজাহান থেকে কুকুর এবং শুকরের উপযোগিতা বেশি।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
বাংলাদেশের মন্ত্রীসভা লজ্জাহীন ও ছ্যাঁচড়া মানুষে ভরা। এদের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের দেশের সাধারন মানুষ মূল্য পাবে না। কিন্তু দুঃখের বিষয়, বাংলাদেশে স্মার্ট রাজনীতিবিদ নাই বললেই চলে, যাদের বিবেক, বুদ্ধি ও লজ্জা আছে।
facebook
এই ঘটনায় শাজাহানকে একমাত্র আপদ হিসাবে আর প্রধানমন্ত্রীকে সেই আপদের প্রশমক হিসাবে দেখছো দেখে একটু অবাক হলাম। ক্রমাগত মানুষ মরছে। সীমান্তে, নদীতে, শহরে, রাস্তায়। তার পরেও কেন এই ক্য়াবিনেট, কেন এই উপদেষ্টামহল। এই অবস্থা চলছে কার সিদ্ধান্তে? শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তেই তো, নাকি?
আবুলকে সরিয়ে কি হয়েছে? মন্ত্রনালয়ের একটা পিওনও কি সুরন্জিত বা টুকুকে পাত্তা দেয়? এটাই কি ঘটনা নয় যে আবুল-আমলে, ক্রয় সংক্রান্ত কাজকামের বাইরে, স্থল-রেল মন্ত্রীর আসল ক্ষমতা উপভোগ করেছে শাজাহান? নদী-স্থল-রেল মন্ত্রনালয়ে মন্ত্রী যেই হোক, আর ক্ষমতায় যে দলই থাকুক শাজাহান-গং পরিবহন ব্য়াবস্থার ভাগ্য়বিধাতা ছিল এবং যতদিন খালেদা-হাসিনা-এরশাদেরা নিরবাচনের বাজারে থাকবে, শাজাহান-গং এর সেই ক্ষমতাও ততদিন থাকবে।
তুমি সীমান্তে হত্য়াকান্ডের প্রতিবাদের আয়োজন করেছ, তার উল্লেখযোগ্য় ইতিবাচক ফলাফল হয়েছে বলে আমরা শুনেছি। তাও আমি আশাবাদি, অচিরেই দেশের ভেতরের ইসুয়গুলো নিয়ে কারযকর একটি পদক্ষেপের ডাক তোমার কাছ থেকে আসবে।
আর, সীমান্তে- নিমতলিতে- মাসুদ-মাশুক - সাগর-রুনি এরকম আরো অগণিত ঘটনা ঘটেই চলেছে, তার পুরো দায়িত্ব হাসিনার। সবার আগে তার পদত্য়াগ কামনা করি।
আর আপনি গ্যালারিতে বসে দেখবেন?
তোমার যদি কোন আপত্তি না থাকে, তাহলে তোমাকে সহযোগিতাও করতে পারি।
আপনি করেন, আমি দেখি। তারপর কাজ হচ্ছে শুনলে বলবো, "আমরা শুনলাম আপনার আয়োজনের ফলাফল ইতিবাচক হয়েছে।"
এদেরকে ক্ষমতায় বসাই আমরাই !!!!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
বাংলাদেশের রাজনীতি যতদিন চোর, ছ্যাচড়া, ডাকাত আর ব্যবসায়ীদের হাত থেকে মুক্তি না পাবে, ততদিন এসব হতেই থাকবে। তাই প্রতিদিনই এধরণের খবর দেখার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখাই ভালো।
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
'শাহজান তুই বিদায় হও' ফেসবুকে একটা পেজ খুলে সেখানে এই কুকুর শাবকের কৃর্তি সবাই কে জানানো উচিত, জনমত গড়ে তোলা উচিত। এভাবে যদি অন্তঃত একটা কে বিদায় করা যায় তবে বাকীগুলা কিছুটাও হলেও নিজেকে শুধরানোর চেষ্টা করবে।
আমাদের লঞ্চগুলোকে আরএফআইডি বা সাধারণ জিপিএস সিস্টেম দিয়েও ট্র্যাক করার একটা ব্যবস্থা করা যেতে পারে। গ্রামীণফোনের ভেহিকল পুলের গাড়িগুলোতে জিপিএস লাগানো থাকে, সেগুলো কখন কোথায় কী গতিবেগে চলছে সেটা জানার ব্যবস্থা করা আছে। এমন একটা সলিউশন লঞ্চ, কার্গো জাহাজের জন্যেও বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে, যাতে তারা কখন কোথায় কী বেগে চলছে, সেটার একটা লগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হয়। এটা নিষ্ক্রিয় করা হলে বিপুল অঙ্কের জরিমানার বিধানও রাখা যেতে পারে। নজরদারি বলতে মূর্খ মন্ত্রীরা বোঝে হাতে গাদা বন্দুক নিয়ে নৌকায় করে টহলদারি আর তোল্লা খাওয়া। নজরদারি যে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমেও সম্ভব, এই বিদ্যা তাদের পেটে থাকলে তো হইছিলোই। ডিজিটাল বাংলাদেশ তো বলদের গোয়া দিয়ে বের হবে না, সেটাকে গড়ে তুলতে হবে। সেটার জন্য মূর্খ, অশিক্ষিত লোকজনের হাত থেকে মন্ত্রণালয়গুলোকে আগে উদ্ধার করতে হবে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে ঢাকা আসতে গেলে ফেরীতে বা লঞ্চে পদ্মা পার হতে হয়। দিনদুপুরে একটা ফেরীতে কয়টা গাড়ি ওঠানো যেতে পারে এটা নিয়ে বিআইডব্লিউটিসি নামক প্রতিষ্ঠান যে নাটক দেখায় তা দেখে হাসব না কাঁদবো বুঝতে পারিনা। আর লঞ্চ মাঝরাতে যাত্রীদের ঘাঁট থেকে বেশ দূরে ঘাটে ভিড়ানো অন্য লঞ্চে নামিয়ে দিয়ে যে নির্দেশনা দেয় তা বোঝায় লাফ ঝাঁপ দিয়ে কয়েকটি লঞ্চ পেরিয়ে ঘাটে পৌঁছতে হবে দ্রুত। কারন ওপারে বাস অপেক্ষা করে আছে, একটু দেরি হলেই কিন্তু বাস মিস মানে সব মিস হয়ে যাবে আপনার। কত যে নারী তার শিশু সন্তান আর বড় ব্যাগ নিয়ে লঞ্চ ভ্রমণ করে, তারা কীভাবে পার হবে কারো কোন নজর নেই। আর ওপারে পৌঁছে কখন যে বাসের দেখা পাবেন তার কোন ঠিক নেই।
দুর্ঘটনার দিন রাতে টক শো শুনছিলাম। বুয়েট নেভাল আর্কিটেকচার এর বিজ্ঞ একজন বললেন দেশের এধরনের নৌযানের ফিটনেস ঠিক নেই হয়তোবা শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশীর। তাতে কার কি আশা যায়! যথার্থ জায়গায় শোক বা দুঃখ প্রকাশ বা ভুল স্বীকার করা আমাদের এখানে কী সুদূরপরাহতই থেকে যাবে? D H LORENCE বলেছিলেন 'I never saw a wild thing sorry for itself'।
আর লেখা নিয়ে কিছু বলার নেই, এর চেয়ে সময়োপযোগী আর কী হতে পারে!
অশিক্ষিত অসভ্যদেরকেই তো আমরা ভোট দেই। আর ভদ্র শিক্ষিত ভালো মানুষকে নিয়া আমরা টিটকারি করি। কেউ একবার ভাবে না ওই মৃত্যুমুখী লঞ্চটাতে আমি বা আমরাও থাকতে পারতাম !! আমাদের পাবলিকের গায়েও ছাগলের গন্ধ, এটা ওই শাজাহান খানরা বুঝে গেছে আগেই। তাই তো মানুষের মূল্য নির্ধারণ করে ছাগলের দামে !!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
অসাধারন লিখেছেন।
আপনি কি এই পোস্টে হুমায়ুন আজাদের ওপর আক্রমণ জায়েজ করতে চাওয়া রামছাগল আলামিন?
মন্ত্রী শাজাহান খানের মুখে সদা সর্বদা একটা হাসি ঝুলেই থাকে। এদের হাসি কখনই ম্লান হয় না।
পোস্টাকারে দেওয়ার ইচ্ছা ছিল, সময়াভাবে এখানে মন্তব্য আকারে দিচ্ছি।
আমরা শাজাহানদের কীর্তি দেখি আর মাথার চুল ছিঁড়ি, আমরাই এদেরকে নির্বাচিত করেছি বলে। আমরা মনে করি আমাদের আর কোন অপশন ছিল না। কিন্তু এটা মারাত্মক একটা ভুল ধারণা। আমাদের অপশন আছে, আমাদের হাতে 'না ভোট'-এর অপশন আছে। আমাদের এখন আর মন্দের ভালো বেছে নেওয়ার প্রয়োজন নাই। 'না ভোট' দিয়ে আমরা একটা রাজনৈতিক দলকে বাধ্য করতে পারি শাজাহান বা আবুল হোসেনদেরকে দল থেকে বিতারিত করতে। নিজে সচেতন হোন, আরেকজনকেও সচেতন করুন।
"না ভোট" একটা হাস্যকর ঞলিবারেল স্টান্টবাজিমাত্র। "না ভোট" তো আপনি দেবেন সাংসদ নির্বাচনে গিয়ে (আমি অবশ্য জানতাম এই অপশনটা তুলে দেয়া হয়েছে)। মন্ত্রীর তো সাংসদ হওয়ার দরকার নাই। শাজাহান আজকে না ভোটের কাছে ২-০ গোলে হেরে গেলেও তাকে শেখ হাসিনা অনায়াসে মন্ত্রী নিয়োগ দিতে পারে। আপনি আগে নিজে "না ভোট" ব্যাপারটা নিয়ে সচেতন হোন।
আচ্ছা, এভাবে সরকার নির্বাচন না করে, নির্দিষ্ট পদের জন্য (যেমন যোগাযোগ ব্যাবস্থার দায়িত্ব) নিদৃষ্ট ব্যাক্তি নিযুক্ত করা যায় না? যেমন, যাকে যে বিষয়ে দায়িত্ব দেয়া হবে সে হবে দেশের ভেতর সে বিষয়ে সবচেয়ে বিজ্ঞ লোক। মন্ত্রীদের সহজে সরানো যাবে না, তাই মন্ত্রী থাকবে শুধু নামে কাজ করবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাক্তি বা কমিটি।
এ সবই আইডিয়া, আমরা একা এতটাই ক্ষুদ্র যে পরিবারের কর্তা কারো হেঁয়ালিতে নাই হয়ে গেলেও কারো দিকে আঙুল তাক করে বলতে পারি না "এই পরিবারটার ধ্বংসের জন্য তুইই দায়ী, কি ক্ষতিপূরণ দিবি এর?"
আপনার লিখাটা ভাল, কিন্তু এই সবই হয়তো বৃথা আস্ফালন!
নতুন মন্তব্য করুন