অভ্যন্তরীণ নৌ-যোগাযোগ তত্ত্বাবধানে তথ্য প্রযুক্তি

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: মঙ্গল, ২৭/০৩/২০১২ - ১:৪৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কিছুদিন আগে মুন্সিগঞ্জে মেঘনায় কার্গো জাহাজের আঘাতে লঞ্চডুবি হয়ে মারা গেছেন শতাধিক মানুষ। এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রায় বার্ষিক ভিত্তিতে ঘটে, এবং যা কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো, তা গ্রহণে জাহাজ মালিক, জাহাজ চালক, যাত্রী ও তদারককারী সরকারি প্রতিষ্ঠান, এই চার পক্ষেরই এক আশ্চর্য নিস্পৃহ মনোভাব দেখা যায়। দুর্ঘটনার পর স্মার্ট লোকেরা অনেক স্মার্ট স্মার্ট কথা বলে, কিন্তু ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্যে যেসব স্বল্প-মধ্য-দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে মানুষের এই নির্মম প্রাণহানি এড়ানো যাবে, তা গ্রহণে কারোই মাথাব্যথা দেখা যায় না।

সহব্লগার দ্রোহী একদিন বলেছিলেন, বাঙালির দৃষ্টিসীমা অতীতে পাঁচ বছর আর ভবিষ্যতে সাত দিন। কথাটি যে সত্য, তা এ ধরনের দুর্ঘটনার সময় আরো ভালোভাবে অনুভব করি।

একটা অব্যবস্থাপনা তখনই জিইয়ে রাখা হয়, যখন তা থেকে কেউ লাভবান হয়। জাহাজ মালিকরা হয়তো মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়ে কিছু আর্থিক লাভ করে, এবং সেই লাভের কিছু অংশ উৎকোচ হিসেবে সরকারী কর্তৃপক্ষের জায়গামতো তুলে দেয়, কিন্তু জাহাজ চালক আর যাত্রীরা, যারা নিজেরাই সেই দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে, তারা কেন একে চলতে দেয়?

সদ্য ঘটিত দুর্ঘটনাটি ঘটেছে রাতের বেলা, ভুক্তভোগীদের সাক্ষ্য অনুযায়ী, বালিবাহী কার্গো জাহাজের আঘাতে। লঞ্চটিতে এমনিতেই যাত্রী বেশি ছিলো (বিম্পিজামাতের মহাসমাবেশের কারণে দেশে সরকারী হস্তক্ষেপে অঘোষিত ঢাকা-অবরোধের কারণে), আবার মাঝপথে লঞ্চে কাঁচামরিচ, ধনেপাতা, পেঁয়াজ প্রভৃতি কার্গো তোলা হয়। ওদিকে রাতে কার্গো জাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ছিলো, কিন্তু সেই আজ্ঞাকে পালনে বাধ্য করার মতো লোকবল এতগুলো বছরেও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় যোগাড় করতে পারেনি। আরো জানা গেছে, জাহাজগুলো রাতে জ্বালানি খরচ বাঁচাতে আলো না জ্বালিয়ে চলাচল করে।

এ ধরনের আরো কারিগরী ও পরিচালনাসংক্রান্ত ছোটো ছোটো কারণ যখন জমতে থাকে, সেগুলো জন্ম দেয় দুর্ঘটনার। আর আমাদের নীতি নির্ধারকরা তথ্য প্রযুক্তি নিয়ে বড় বড় শব্দ ব্যবহার করলেও বেলা শেষে এ-ই সত্য যে আমাদের তথ্য প্রযুক্তির দিকপাল মোস্তফা জব্বারের মতো লোক।

সরকার চাইলেই অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন ব্যবস্থাকে জিপিএসের মাধ্যমে একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে মনিটর করার ব্যবস্থা নিতে পারে। প্রতিটি নৌযানেই স্বল্প ব্যয়ে সেন্সর বসিয়ে এর মালামালের ওজন অনুমোদিত সীমার ভেতরে আছে কি না, রাতে আলো জ্বলছে কি না, ইত্যাদি কার্যকালীন প্যারামিটারসহ এর গতিবেগ ও অবস্থান জিপিএসের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কাছে নির্দিষ্ট সময় পরপর জানিয়ে দেয়া সম্ভব। আমার জানামতে, দেশে গ্রামীণফোনের ভেহিকল পুলে এমন ভেহিকেল ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু আছে বহুদিন যাবত, এটা এমন কোনো রকেট সায়েন্স নয়। নৌযানের জন্যে এ ধরনের একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং ব্যবস্থা তৈরির জন্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তা নেয়া যেতে পারে, তারা ইতিমধ্যেই প্রিপেইড মিটার ও ইভিএম ডেভেলপ করে দেখিয়ে দিয়েছে যে এ ধরনের প্রযুক্তি বিকাশে তারা সক্ষম। পূর্ণাঙ্গ এক একটি মনিটরিং মডিউল বুয়েটের তত্ত্বাবধানে সংযোজন করে সেটি নিজ ব্যয়ে ইনস্টল করতে বাধ্য করার জন্যে নতুন আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে, ঠিক সিএনজিগুলোতে যেভাবে মিটার সংযোজন করানো হয়েছে।

আপত্তি তোলা যেতে পারে যে এ ধরনের ব্যবস্থা ইনস্টল করলেও নৌযান মালিক বা চালকরা তা নিষ্ক্রিয় করে রাখতে পারে, সিএনজির মিটারের মতোই। সেক্ষেত্রে যদি আইন করা হয় যে এই মনিটরিং ব্যবস্থা কোনো কারণে নিষ্ক্রিয় করা হলে বিপুল জরিমানা দিতে হবে, তাহলে সে পথ অনুসরণ করা থেকে নৌযানগুলো বিরত থাকবে।

এই ব্যবস্থা নেয়া হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিটি নৌযানের আচরণ মনিটর করা সম্ভব হবে, তারা বিধিভঙ্গ করলে সে মোতাবেক স্বয়ংক্রিয়ভাবে জরিমানা আরোপ করা যাবে, সর্বোপরি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বহুগুণে নিশ্চিত করা যাবে। বিটিসিএলের টেলিফোন বিল যেভাবে বুয়েটের একটি ইনস্টিটিউটের তত্ত্বাবধানে করা হয়, একই ভাবে এই দায়িত্বটিও একই ইনস্টিটিউটকে দেয়া যেতে পারে।

এই পদ্ধতিটি খুব ব্যয়বহুল হওয়ার কথা নয়। যৎসামান্য যা ব্যয় হবে, তা অবশ্যই জাহাজ মালিক-শ্রমিক-যাত্রী-কর্তৃপক্ষের সম্মিলিত গাফিলতিতে নিহতদের প্রাণের মূল্যের চেয়ে কম হবে। দীর্ঘ মেয়াদে এই ব্যবস্থা অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্কৃতিতে কিছু শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারবে বলে বিশ্বাস করি।

একটি মানুষের প্রাণের মূল্য তিরিশ হাজার বা পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকায় না মেপে, এক একটি লঞ্চে কিছু অর্থ ব্যয় করে মনিটরিং ব্যবস্থা ইনস্টল করা শ্রেয়তর বলে মনে করি। এই প্রযুক্তি আমাদের আয়ত্বের মধ্যেই রয়েছে, কাজে লাগানোর জন্যে সংশ্লিষ্টরা এগিয়ে আসুন, প্লিজ।


মন্তব্য

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

গত সপ্তাহে গ্রামীন ফোনের ভেহিকেল ফ্লীট ম্যানেজমেন্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে চুরি হয়ে যাওয়া পিক-আপের স্টার্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। যারা চুরি করেছিলো তারা পিক-আপ নিয়ে কিছুক্ষন যাবার পর ধরা পড়ে।

তানভীর এর ছবি

চলুক

আরেকটা ব্যাপার হলো এ সময় অর্থাৎ মার্চ-এপ্রিল মাসে কালবৈশাখি ঝড়ে প্রায়শই লঞ্চডুবির খবর পাওয়া যায়। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়েরই উচিত আবহাওয়া বিভাগের কাছ থেকে নিয়মিত আপডেট নিয়ে এ ধরনের দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা। নাগরিকদের জীবন হেলাফেলা করে অনেকগুলো বছর তো পার হলো। আর কত?

হিমু এর ছবি

এসব ক্ষেত্রে দোষত্রুটি নিয়ে পিলো-পাসিং হয় শুধু। যদি গোটা ব্যবস্থার একটা স্বয়ংলিখিত লগ থাকতো (আমার প্রস্তাবে যা বলেছি), তাহলে মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করা এত সহজ হতো না।

লঞ্চের ঘাট ও বন্দরে সরাসরি আবহাওয়া বিভাগের ইমার্জেন্সি বিভাগ থেকে বেতার মারফত সরাসরি অ্যানাউন্সমেন্টের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। সরকারী মোবাইল পরিষেবা টেলিটক আবহাওয়া বিভাগের সাথে কোঅর্ডিনেশন করে যাত্রীদের জন্যে একটি নির্দিষ্ট নাম্বারে এসেমেসের ব্যবস্থা রাখতে পারে, যেটাতে কোয়েরির উত্তরে জানিয়ে দেয়া হবে, এখন নদীপথে যাত্রা নিরাপদ কি না, যাতে করে যাত্রীরা নিজেরাও লঞ্চে উঠবেন কি উঠবেন না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এতে করে আবহাওয়া বিভাগকেও দায়স্বীকারে বাধ্য করা যায়।

তানভীর এর ছবি

অ্যানাউন্সমেন্টের ব্যবস্থা রাখা ভালো। তবে যাত্রীর হাতে সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেয়া উচিত নয়। কারণ যাত্রী বেশিরভাগ সময়ই ঝুঁকি নিয়ে সময়মতো যেতে চাইবে। তারপক্ষে পরিস্থিতিও সঠিকভাবে বোঝা সম্ভব না। এখানে কর্তৃপক্ষকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। বিমানবন্দরে যেমন কর্তৃপক্ষ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিবেচনা করে ফ্লাইট বাতিল করে বা পিছিয়ে দেয়, নৌবন্দর এবং ঘাটেও সেরকম ব্যবস্থা নিতে হবে এবং কেন্দ্রীয়ভাবেই সহজে ব্যবস্থা নিয়ে কোন ঘাটে/বন্দরে কী পরিস্থিতি এবং সে অনুযায়ী তাদের কী করতে হবে সেটা জানিয়ে দেয়া যায়।

জিজ্ঞাসু এর ছবি

প্রস্তাবটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ এবং এর বাস্তবায়ণও সম্ভব। সরকারের উচিত মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য সম্ভাব্য যেকোন উদ্যোগ নেয়া। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা আইন করে বন্ধ করা হউক!!

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

শিশিরকণা এর ছবি

ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। আপনার আমার ইচ্ছা আছে, কিন্তু যারা প্রয়োগকর্তা তাদের ইচ্ছা নাই, তাই তারা কোন উপায়ও চক্ষে দেখে না, আল্লাহর মাল আল্লাহয় রক্ষা করবে এই আশায় বসে থাকে।

প্রযুক্তি কোন সমস্যাই না। সমস্যা হচ্ছে প্রয়োগ করা। আপনার আমার অবস্থান থেকে কিভাবে চাপ প্রয়োগ করে সরকার বা মন্ত্রণালয় কি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে মানুষের জান মালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী বা বাধ্য করা যায় সেইটা হল সমিস্যা।

হাজার, লাখ বাদ দেন, যেই দেশে মানুষের প্রাণের ২ টাকা দামও নাই, সেইখানে কি করা উচিত বলে কাউ মাউ করলে পাত্তাই দিবে না, ঘাড় ধরে এনে কেম্নে কী করা যায় এইটাই উপায় দেখতে হবে।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

সৃষ্টিছাড়া এর ছবি

চলুক

দুর্দান্ত এর ছবি

আগে দরকারঃ

(ক) নৌযানের লাইসেন্স ও ফিটনেস বাধ্যতামূলক করা
(খ) চিহ্নিত রুটগুলোতে নাব্যতা নিশ্চিত করা
(গ) রাতে নদীরুটের জনপরিবহন বাতিল করা নৌযানের ফিটনেস আর রুটের নাব্যতা নিশ্চিত করা গেলে বাংলাদেশের বেশীরভাগ রুটই বড় আকারের যন্ত্রচালিত যানের জন্য এক বেলার যাত্রা হবার কথা।
(ঘ) আন্তরজাতিক মানের বীমা ব্যাবস্থা করা। বীমা ছাড়া ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে কোন বিমান যাত্রী নিয়ে উড়তে পারেনা। হালনাগাদ বীমা নেই, ফ্লাইটের ছাড়পত্রও নেই। একই ব্যাবস্থা এখানেও দরকার। পেশাদার বীমা কোম্পানি অপ্রশিক্ষিত সারেং চালিত লক্করঝক্কর লঞ্চ এর বীমা করার কথা না।

তারপরে দরকার মনিটরিং।

হিমু এর ছবি

ফিটনেস নিশ্চিত করেও লাভ নেই, যদি তদারকির ব্যবস্থা না থাকে। দেশে যেসব বাস চলে, কয়টার ফিটনেস আছে? ফিটনেস না থাকা নৌযানের চলাচল মনিটর করতে না পারলে ফিটনেস নিশ্চিত করা যাবে না তো।

দুর্দান্ত এর ছবি

সহমত যে তদারকি দরকার। কিন্তু সেই তদারকিতে ডিজিটাল মনিটরিং ই যে খুব একটা কার্যকরী হবে, সেটাই বা কি করে বলি? দেশের সবচাইতে আধুনিক বিমানটিও যখন অহরহ অতিরিক্ত কারগো আর অপর্যাপ্ত কেরোসিন নিয়ে ঢাকা ছেড়ে আমেরিকার বিমানবন্দরে এসে ধমক খায় তখন আমরা বুঝতে পারি যে এখানে ফাঁকটা মনিটরিং যন্ত্রপাতির বা কেন্দ্রীয় ব্যবস্থারও না। সেটা অন্য কোথাও। ঢাকায় বসে নিশ্চিত ঝুঁকি আছে জেনেও অহরহ এতগুলো যাত্রীর জীবন বাজী রেখে এই ফ্লাইটগুলোকে ছাড়পত্র দিচ্ছে যে মানুষটা, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডদের টাকার লোভে তাকে সেই জায়গায় রাখছে যে অথরিটি, আর সেই অথরিটির পাছায় লাথি মারার বদলে সেখানে উচ্চ-ফলনশীল হাঁটু প্রজনন-শালা চালু রেখেছে যে মন্ত্রণালয় - ফাঁকগুলো আসলে সেখানে।

যে নৌযান নদীপ্রাপনীয় (রিভারওয়ারদি?) নয়, যাতে নদীপথে সকল আবহাওয়ায় ভাসমান ও সুনিয়ন্ত্রিত থাকার সরঞ্জাম নেই, আপৎকালে যাত্রীকে নিরাপদে তীরে পৌঁছানোর ব্যবস্থা নেই সেগুলো যাতে একেবারেই যাত্রী বহন করতে না পারে, সেটাই তো আগে নিশ্চিত করা দরকার। বন্দরে যাত্রা শুরু/শেষ কালে ও নদীপথে ঝটিকা তদারকির মাধ্যমেই তো এগুলো নিশ্চিত করতে হবে। এই তদারকিতে প্রশিক্ষিত লোকবল ও সরকারের সদিচ্ছা যে মাপের জরুরি বিষয়, সেই তদারকি বাস্তবায়নের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আর-এফ-আই-ডি, নাকি জি-পি-এস নাকি জি-এস-এম ভিত্তিক হবে, এই বিষয়টা ঠিক সেই মাপের জরুরী বিষয় আমার কাছে মনে হয়নি।

এর চাইতে কার্যকরী হবে যদি আমরা উন্নত যোগাযোগ, দ্রুত স্পিড-বোট/ফ্যানবোট ও সু-প্রশিক্ষিত লোকবল দিয়ে আধুনিক 'নদী-র‍্যাব' জাতীয় কিছু একটা খাড়া কারে, তার হাতে এই তদারকির ভার ন্যস্ত করি। তবে খেয়াল রেখে যে এটাও যাতে আরেকটা হাঁটু-খামারে পরিণত না হয়। এই আর কি।

হিমু এর ছবি

সেই নদী-ড়্যাবের লোকেরা গিয়ে যে তদারকি করবে, সেই তদারকিই তো আপনি কন্ট্রোল রুম থেকে করতে পারছেন। বরং আরো নৈর্ব্যক্তিকভাবে করতে পারছেন। শুধু তা-ই না, সেই তথ্য লগ আকারে থেকে যাচ্ছে।

উন্নত যোগাযোগ, দ্রুতগামী যান আর সুপ্রশিক্ষিত লোকবল নিয়ে তো হাইওয়ে পুলিশও রাস্তায় আছে। লাভ কিছু হয়েছে? তাদের রিপোর্ট কোনো কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আসতে আসতে দুর্ঘটনায় আরো কিছু লোক মারা যায়।

স্বাধীন এর ছবি

চলুক

প্রখর-রোদ্দুর এর ছবি

যাদের হাতে এই ব্যবস্থার গতিবিধি রিমোট তারাই কোন না কোন দিক থেকে এড়িয়ে গিয়ে কেবল মিডিয়াতে মুখ দেখানো আর বিভিন্ন সেমিনারে বক্তব্যের মাঝে নিজেদের জাতীয় কর্তব্য পালন নিশ্চিত করেন।

তানজিম এর ছবি

বেশ কয়েকদিন আগে দেখেছিলাম, ভারতের মুম্বাই শহরের কমিউটার ট্রেনগুলো GPS নিয়ন্ত্রিত। এমনকি দুটি ট্রেন একি লাইনে বিপজনক দূরত্বে চলে আসলে ইঞ্জিন আপনা থেকেই বন্ধ হয়ে যায়।
আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু একটা প্রাইভেট গ্রুপের যানবাহনের GPS মনিটরিং ব্যাবস্থা করে দিয়েছিল বেশ কম খরচেই। এখন দেখার বিষয় নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সদিচ্ছা কতটুকু।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ছাত্রছাত্রীরা সেন্সর নেটওয়ার্ক নিয়ে ভুরি ভুরি পেপার প্রকাশ করেন প্রতিবছর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কনফারেন্স এবং জার্নালে কিন্তু সেগুলোর বাস্তবায়ন চোখে পড়ে না তেমন একটা। এক্ষেত্রে যদি সরকার উদ্যোগ নেয়, তাহলে শুধু নৌপরিবহন ক্ষেত্রেই নয়, আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেন্সর নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে মনিটরিং এর সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশে।

তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, যখন তথ্য প্রযুক্তির নীতিনির্ধারক হন মোস্তফা জব্বারের মত মানুষ যে কিনা মনে করে কিবোর্ডের লেআউটই হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তির সবচেয়ে সেরা আবিষ্কার - তার থেকে খুব বেশি আশা করা যায় না।

আনোয়ার এর ছবি

সহমত

সাফি এর ছবি

আইডিয়াটা ভালো। কিন্তু কথা হলো, মাছ চিনলেই সারেং হওয়া যায়। এইসব জিপিএসফেস সব ভ্রাম্ত ধারমা

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

বলছেন, কি-বোর্ড চিনলেই মডু হওয়া যায় না কি !

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দারুণ প্রস্তাব

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

কুমার এর ছবি

চলুক সহমত।

মন মাঝি এর ছবি

জ্বর সারাইবে কুইনাইন বুঝিলাম, কিন্তু কুইনাইন দেনেওয়ালা ডাক্তার সারাইবে কে?

****************************************

হিমু এর ছবি

৭ লক্ষ লিটার তেল নিয়ে একটা ট্যাঙ্কার ডুবে গেছে [সূত্র], কিন্তু চারদিন ধরে উদ্ধারকর্তা দল জাহাজটাকে প্রবল স্রোতের কারণে চিহ্নিত করতে পারছে না। পরিবেশ অধিদপ্তর আশ্বাস দিয়ে বলছে যে তেল নিঃসরণ ঘটলেও দূষণমাত্রা বিপদজনক কিছু নয়। উদ্ধারকাজে বিলম্ব ঘটার বড় কারণ, ট্যাঙ্কারটির অবস্থান নির্দেশ করা যাচ্ছে না।

এই পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রক (বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ) ট্যাঙ্কারের মতো সংবেদনশীল জাহাজে সোনার বিকন (Sonar Beacon) ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে পারেন। বিকনগুলো এমনভাবে তৈরি করা যেতে পারে যাতে কেবলমাত্র পানিতে নিমজ্জিত অবস্থায়ই সেটি সক্রিয় হয়ে ওঠে। নির্দিষ্ট সময় পরপর একটি নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কে সেটি সঙ্কেত দিয়ে গেলে উদ্ধারকারী জাহাজ থেকে খুব সহজে ডুবে থাকে জাহাজের অবস্থান শনাক্ত করা যাবে। এটি খুবই সহজ একটি প্রযুক্তি, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে দায়িত্ব দিলে তারা একটা প্রোটোটাইপ তৈরি করে দিতে পারবে বলে বিশ্বাস করি। ডুবুরি নামিয়ে পানির কয়েকশো ফিট নিচে ঘোলা পানিতে স্রোতের মধ্যে হাতড়ে হাতড়ে জাহাজ উদ্ধারের দিন বহু আগেই শেষ হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ, একবিংশ শতাব্দীতে পা রাখুন।

হিমু এর ছবি

আইডিয়াটা গ্রামীণফোন কাজে লাগিয়েছে দেখছি।

ওডিন এর ছবি

তাইলে দেখেন, লোকজন শুধু মতিকন্ঠই পড়ে না, সচলও পড়ে । দেঁতো হাসি

হিমু এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।