ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা ও আনিসুলের মা উপন্যাসের দামামাবাদক দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক খবরে [১] দেখতে পাই,
জাতীয় সংসদের উপনেতা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাংক টাকা দেয় নাই, তাতে কী হয়েছে? আমরা আমাদের নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করব। দরকার হলে এক বেলা বাজার করব না।’
এক বেলা বাজার না করে বাঁচানো টাকায় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণের মনোবল থাকা ভালো। আজই বিবিসিতে [২] পড়ছিলাম, দক্ষিণ কোরিয়া ১৯৯৭ সালে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটির কারণে যে সঙ্কটে পড়েছিলো, তা থেকে উত্তরণের জন্য আইএমএফের কাছ থেকে কঠিন সব শর্তে ৫৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছিলো। আজ গ্রিস সাধ্যের চেয়ে অতিরিক্ত ব্যয় করে আর ধার করে ঘি খেয়ে যে সঙ্কটে পড়েছে, আর ইয়োরোপের আরো কয়েকটি বড় অর্থনীতির দেশ যেভাবে গ্রিসের মতো না হলেও কাছাকাছি সঙ্কটে নিমজ্জিত আছে, দক্ষিণ কোরিয়ার সমস্যাও ছিলো তেমনি। কিন্তু আইএমএফের ঋণ নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া তিন বছরের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ায়, সেইসাথে ঋণও শোধ করে দেয়।
কোরিয়ার লোকেও আমাদের মতোই ভাত খায় শুনেছি। কিন্তু সম্ভবত অন্য চালের। অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে যে সে সঙ্কটের ভার এবং সঙ্কট মোকাবিলায় দায়িত্বের ভার সকলকেই ধনানুগভাবে নিতে হবে, এ কথা দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিকরা তার জনগণকে বোঝাতে পেরেছিলেন। গোটা দেশ যখন দেউলিয়া হওয়ার পথে, তখন টেলিভিশনে নাগরিকদের কাছে তাদের অতিরিক্ত সম্পদ রাষ্ট্রকে দানের আহ্বান জানানো হয়। মানুষ তার বিয়ের আংটি খুলে তখন দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরকারি গহনা-সংগ্রহ কেন্দ্রে গিয়ে দিয়ে আসে। এ ছাড়া দেশীয় পণ্য ক্রয়ে মানুষকে উৎসাহিত করে অতিরিক্ত বিদেশী মুদ্রাও সরকারি কোষাগারে দানের আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া চলতে থাকে নজিরবিহীন অর্থনীতিগত পুনর্গঠন। কোরীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্তার মতে,
"Burden-sharing," he said. "Every economic player should take their fair burden of the economic restructuring - so asset holders and major shareholders, they cut their stakes in the companies or passed on their assets. Managers and workers agreed to accept salary cuts and layoffs. The consensus among the people is a key ingredient, so we asked our people to take the bullet. And they did."
কেন তারা এমনটা করেছিলো, সে ব্যাপারে কোরিয়াতে দীর্ঘদিন কাটানো এক সাংবাদিক বলেন, ব্যাপারটা এমন নয় যে সরকারের ওপর কোরীয়দের আস্থা বেশি। কোরীয়দের তিনি ইয়োরোপীয়দের মতোই আত্মমগ্ন, অ-ঐক্যবদ্ধ আর অনাস্থাকাতর বলে মনে করেন। কিন্তু কোরীয়দের আরেকটা জিনিস ছিলো, দারিদ্র্যের সাম্প্রতিক স্বাদ। তারা সেই দারিদ্র্য ঐক্যবদ্ধভাবে জাতীয়তাবাদের সাহায্যে মোকাবেলা করে এসেছে, তাই সরকার যখন ঠিকভাবে তাদের সেই বোধে সুড়সুড়ি দিতে পেরেছে, তারা সাড়া দিয়েছে।
আমাদের সরকার বা রাজনীতিকরা যখন আমাদের একইভাবে সুড়সুড়ি দিতে চান, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে পদ্মাসেতু ইস্যুতে গোটা জাতিকে অন্তত এক বেলা বাজারের খরচের সমান আত্মত্যাগে আহ্বান জানান, তারা বেশ সুবিধাজনকভাবে ভুলে যান, মুক্তিযুদ্ধের নায়কেরা সেই ত্যাগে নিজেরা অন্য সবার মতোই শামিল ছিলেন। বঙ্গবন্ধু নিজেকে বা পরিবারকে সুরক্ষিত করে স্বাধীনতার ডাক দেননি, তাজউদ্দীন স্ত্রীকে সসন্তান জনতার ভিড়ে মিশে যাবার কথা চিরকুটে লিখে প্রবাসী সরকার গঠনের জন্যে চলে গিয়েছিলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রায় সকলেরই আত্মীয়স্বজন শত্রুকবলিত দেশে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর ঝুঁকির মাঝে ছিলেন।
এক বেলা বাজার না করার হুঙ্কার দেয়া সাজেদা চৌধুরীর নাম দেখতে পাই দৈনিক সংবাদে [৩], শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি করা সাংসদদের তালিকায়। সে খবরে বলা হয়েছে,
সংসদ সচিবালয়ের হিসাব শাখা থেকে জানা যায়, যেসব গাড়ি আনা হয়েছে তার অধিকাংশ গাড়ি ল্যান্ডক্রুজার, সর্বশেষ মডেলের টয়োটা, কিংবা ডিজেলচালিত ভিএক্স মডেলের বিলাসবহুল গাড়ি। এসব প্রত্যেকটি গাড়ির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৬ কোটি টাকা হলেও এমপিরা শুল্ক সুবিধায় এসব গাড়ি এনেছেন ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকায়।
বিরোধী দলীয় নেতাদের মাঝে ব্যতিক্রমী কণ্ঠ হিসেবে শুনতে পাই জয়নুল আবদীন ফারুকের কথা। তিনি বলেছেন [৪],
‘প্রয়োজনে আমরা এক বেলা খাব না, তবে এর আগে বিশ্বব্যাংক যে চিঠি দিয়েছে, তা প্রকাশ করুন।’
বিশ্বব্যাঙ্কের ১২০ কোটি ডলারের ঋণ বাতিল হওয়ার পর এক বেলা না খাওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে এমন বেয়াকুল ঐকমত্য আমাদের ভাবিয়ে তোলে। কারণ জয়নুল আবদীন ফারুকের নামটিও দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানিকারক সাংসদের তালিকায় [৩] জ্বলজ্বল করছে।
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাঙ্কের ওপর গোস্বা করে নিজেদের পয়সায় পদ্মাসেতু করার ঘোষণা দিয়েছেন। বিশ্বব্যাঙ্কের মতো একটি অর্থনীতিবিনাশী পরাশক্তির খপ্পর থেকে বেরিয়ে নিজেদের ভাগ্যের হাল নিজেরা ধরার চেষ্টা বিচক্ষণ তাজউদ্দীনও নিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি দলের ভেতরে আর দেশের বাইরের চাপে টিকতে পারেননি। তাজউদ্দীনকে বঙ্গবন্ধু নিজেই অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনাকে তাজউদ্দীনের পথে চলার চেষ্টা করতে দেখে তাই মিশ্র অনুভূতি হয়।
সংসদের বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী পদ্মাসেতুর ব্যয়ের জন্যে অর্থসংস্থানের কথা বলেছেন:
চলতি বাজেটে ৫৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট বরাদ্দ আছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং এখান থেকে ২৪ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারি। এ জন্য একটু ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। এ টাকা দিয়ে কাজ শুরু করতে পারি। এ ছাড়া অর্থমন্ত্রী সেতুর জন্য বাজেটে আলাদা করে কিছু টাকা রেখেছিলেন।’ তিনি বলেন, বাজেট থেকে সেতু নির্মাণ করতে গেলে উন্নয়নকাজ কিছুটা কমাতে হবে। তবে সেতুটা হলে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। অর্থনীতি ও প্রবৃদ্ধিতে তা অবদান রাখবে। প্রধানমন্ত্রী সেতু নির্মাণের জন্য ২২ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা সংগ্রহের পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন, ‘৭৫০ মিলিয়ন ডলারের সভরিন বন্ড ছাড়া হবে। সারচার্জ আরোপ করা হবে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি কর্মসূচি বা পিপিপিতে তিন হাজার কোটি টাকা আছে। এ টাকা দিয়ে আমরা কাজ শুরু করতে পারি।
প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পে বিলম্ব ঘটানোর জন্য বিশ্বব্যাঙ্কের কাছে জরিমানা চাওয়া উচিত বলেও মত দিয়েছেন। তাঁর অর্থমন্ত্রী ও বিশ্বব্যাঙ্কের প্রাক্তন কর্তা আবুল মাল আবদুল মুহিত আপাতত অন্য দাতাগোষ্ঠীর কাছে বিশ্বব্যাঙ্কের নামে আদুরে "বিশ্বব্যাঙ্ক পচা আমাকে মালে ওকে মেলে দাও" গোছের নালিশ ঠুকেছেন। তাতে কী হবে আমরা জানি না।
এদিকে জনগণের কাছে মোবাইলে কলপিছু ২৫ পয়সা করে চেয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার আব্দুল হামিদ। খবরে দেখি [৬],
পদ্মা সেতু নিয়ে রোববার সংসদে স্বতন্ত্র সাংসদ ফজলুল আজিমের বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে স্পিকার বলেন, “আমার একটা প্রস্তাব আছে। প্রত্যেক কলে ২৫ পয়সা নিয়ে দেশকে সেতু নির্মাণে সহায়তা করা যায়। এতে অনেক পয়সা আসবে।” এ ব্যাপারে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে সংসদ সদস্যদের নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলার জন্য আহ্বান জানান স্পিকার।
অথচ মাননীয় স্পিকারের সামনে সংসদেই অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, দেশে সোয়া লাখ ঋণখেলাপি [৭] রয়েছে। তার মাঝে সরকারি চার ব্যাঙ্কে ঋণখেলাপির সংখ্যা নিতান্ত কম নয়, খবর অনুযায়ী,
এছাড়া ২০১২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত অংগ্রণী ব্যাংকের সাত হাজার ৯২৩ জন, জনতা ব্যাংকের চার হাজার ৯৪১ জন, রূপালীর তিন হাজার ৯১৪ জন, সোনালীর সাত হাজার ৭৮১ জন
স্পিকার কেন এই ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে ঋণ আদায় করার প্রস্তাব অর্থমন্ত্রীকে দিচ্ছেন না? সরকারি ব্যাঙ্ক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপ করে কয়েক বছর পর পর পুনঃতফশিলীকরণ করে যাবে কিছু বোঁচকামারা বাটপার, আর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে করা রোজগার দিয়ে কোনোমতে জীবনধারণ করে চলা সাধারণ মানুষকে কলপিছু ২৫ পয়সা দিতে হবে পদ্মাসেতুর জন্য? এ কেমন বিচার?
অথবা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রীকে আমরা প্রশ্ন করতে পারি, আপনি আপনার উপদেষ্টা, রাজনীতির ময়দানে দলপর্যটক মওদুদের ভায়রাভাই ও বাংলাদেশের একমাত্র দেশপ্রেমিক তৌফিক ইলাহীকে কেন শেভ্রন আর নাইকোর কাছ থেকে আমাদের প্রাপ্য ৪৫ হাজার কোটি টাকা [৮] উদ্ধারের দায়িত্ব দিচ্ছেন না? তাহলে তো সভেরেইন বণ্ড আর সারচার্জের বোঝা থেকে দেশের সাধারণ মানুষেরা বাঁচে।
বিশ্বব্যাঙ্কের মতো বাটপার প্রতিষ্ঠানের কাছে আত্মা বিক্রি করে দেয়া আমলা-বিশেষজ্ঞদের ঘাড়ে নিয়ে বাংলাদেশ সামনে কতদূর যেতে পারবে জানি না, কিন্তু নিজেদের ব্যয়ে পদ্মাসেতু নির্মাণের উদ্যোগকে সমর্থন জানাই। কিন্তু পাবলিকের ঘাড়ে সারচার্জ চাপানোর আগে দেখতে চাই, নির্লজ্জের মতো যেসব সাংসদ বিনা শুল্কে কয়েক কোটি টাকা দামের বিলাসবহুল গাড়ি কয়েক লক্ষ টাকা দিয়ে কিনে এনেছেন, তারা সবার আগে দেশের প্রাপ্য শুল্ক শোধ করেছেন। এক বেলা বাজারবিমুখ সাজেদা চৌধুরী আর এক বেলা অনশনী জয়নাল আবদীন ফারুককে সবার আগে এই শুল্ক শোধকারীর তালিকায় দেখতে চাই। আমি বহু বছর ধরে এক বেলা ভাত খাই, অন্য বেলা ভাতের টাকা পদ্মা সেতুর জন্য দিতে রাজি আছি, যদি দেখি সাংসদেরা দেশের প্রাপ্য টাকা পরিশোধ করেছেন। যদি তারা সেটা না করেন, পাবলিককে যেন দয়া করে এক বেলা উপবাস করতে না বলেন। অশ্লীল শোনায়।
তথ্যসূত্র:
[১] ‘প্রয়োজনে এক বেলা বাজার করব না’, প্রথম আলো | তারিখ: ০৫-০৭-২০১২
[২] What eurozone countries can learn from South Korea, বিবিসি
[৩] এমপিদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আনা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ, দৈনিক সংবাদ
[৪] প্রয়োজনে আমরা একবেলা খাব না, প্রথম আলো | তারিখ: ০৯-০৭-২০১২
[৫] সংসদে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা: নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু, প্রথম আলো | তারিখ: ০৯-০৭-২০১২
[৬] পদ্মা সেতুর জন্য কলপ্রতি ২৫ পয়সা দিন: স্পিকার, বিডিনিউজ২৪.কম
[৭] দেশে সোয়া লাখ ঋণখেলাপী, বিডিনিউজ২৪.কম
[৮] শেভ্রন ও নাইকোর কাছে আমাদের পাওনা ৪৫ হাজার কোটি টাকা, বিডিনিউজ২৪.কম
মন্তব্য
যারা এত বড় বড় কথা বলছেন তারা যদি জনগণের এক বেলার বাজারের টাকার সাথে তাদের সন্তানদের এক মাসের শপিং এর টাকাটা জুড়ে দেন তাহলে আরও তাড়াতাড়ি পদ্মাসেতু বানানো সম্ভব হবে।
লেখায়
আমরাও চাই, সেতু হোক, তবে সাধারন জনগণকে ভুগিয়ে নয়।
tusqit
বলার মতো কিছু নাই- অক্ষম ক্রোধে ফুঁসতে থাকি এসব বিশেষজ্ঞ মতামত শুনে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
হ্যাটস অফ হিমু দা। চোখে পানি চলে এলো লেখা পড়ে ।
শেষের দুটি লাইনের কাছে আবারও হ্যাটস অফ।
লেখায় সহমত।
সাজেদা চৌধুরী ধরেই নিছে যে বাংলাদেশের সবাই একবেলার চেয়ে বেশী বাজার করে আর তার সাথে গলা মিলাতে গিয়ে ফারুকও a priori assumption এর তক্তার উপরে দাড়িয়ে বলে দিল যে দরকার হলে একবেলা খাব না। তুমি বাপু সকালে উঠে যে নাশতাটা করবা তাতে একবেলা উপাস দিলেও সমস্যা নাই। কিন্তু বাংলাদেশের অনেক মানুষ তো ঐ "একবেলা" ই খেতে পারে না। তারা কি করবে? ঢকঢক করে শুধু আবেগ গিলা মাতাল হয়ে বড় বড় কথা বললেই হবে?
তবে পদ্মা সেতুতে বড় দুইটা উৎস থেকে টাকার জোগান আসতে পারে।
খালেদা গং প্রায়ই বলে যে আওয়ামীলিগ ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিছে। সেই বিক্রির টাকা।
আর আওয়ামীলিগ বলে যে জিয়া পরিবার দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে দিছে। এই পাচার করা্ প্লাস ঐ বিক্রির টাকা মিলে মনে হয় একটার জায়গায় দুইটা পদ্মা সেতু হতে পারে।
তাহলে আপনি মনে করেন দুইটাই সমান সত্য বা মিথ্যা। নাকি কোনোটা কিছুটা বেশি সত্য?
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
শ্রেণীস্বার্থের তবলা বাজানো রাজনীতিকরা কোনদিনই বদলাবে না!! এরা মনে করে পুরো দেশ আর জনগণ তাদের বাপের সম্পত্তি। প্রায় ৯৯ ভাগ রাজনীতিক এবং শিল্পপতিদের নিজেদের আয়-ব্যয় এর হিসেব ঠিক নাই। দেশের ঋণখেলাপিদের চেপে ধরতে সরকারের কোনো উদ্যোগ নাই। দেশ চলে প্রতি মুহূর্তে সাধারণ জনগনের পুটু মেরে। আর এরা হুঙ্কার দিচ্ছে পদ্মা সেতুও ঐ জনগনের পুটু দিয়েই বের করা হবে। যেই দরিদ্র দেশের নেতারা ৬/৭ কোটি টাকার বিদেশী গাড়িতে চড়ে, তাদের থেকে এর থেকে বেশি কিছু তো আর আশা করা যায়না!! দিনশেষে সরকারী-বিরোধীদল সবাই ভায়রা-ভাই। শালা ভোদাই জনতা খালি দেখে আর তালি বাজায়!!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
দিনশেষে সরকারী-বিরোধীদল সবাই ভায়রা-ভাই। শালা ভোদাই জনতা খালি দেখে আর তালি বাজায়!!
কড়িকাঠুরে
_____________________
Give Her Freedom!
facebook
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বা জয়নাল আবদীন ফারুক, কে একবেলা বাজার করলোনা বা একবেলা কম খেল তাতে আমার কি ? বাংলাদেশের ১৬ কোটি জনগণ কি চায় আগে সেটা জানার চেষ্টা করুন। বাংলাদেশটা কি এই দুজনের বাপের সম্পত্তি যে কোথায় খুটো পুঁতবে বা সাঁকো বানাবে, কার কাছ থেকে টাকা নেবে সেটা এরাই নির্ধারণ করবে ? আর আমরা আমজনতা আলু-কুমড়ো বেঁচা টাকা তাঁদেরকে দিয়ে আসবো ? চমৎকার চিন্তাধারা!
১. সরকারের সব টাকাই থিওরিটাকলি জনগণের। উল্টাটা না। কিছু কিছু খোচর পলিটিশিয়ান এইটা ভুলে যায়।
২. জনগণ মানে আবার একজন একজন ব্যক্তি না, যেটা আমৃকান ঞলিবারলরা এবং রাইট উইং লিবার্টানিয়ানরা প্রচার করে। বাংলাদেশে আবার আরেক রকম কেইস আছে। ট্রেনের সিট খুলে বাসায় নিয়ে গেছে, 'জনগণের সম্পদ' ডায়লগ দিয়ে। অফটপিক।
৩. সামর্থ্য না থাকলে ভিন্ন আলাপ, কিন্তু মধ্যবিত্ত সামর্থ্য থাকলেও নিজের বৌবাচ্চা আর নিজের শশুরবাড়ির বাইরে ১০ টাকাও খরচ করে না। মধ্যশ্রেণী সাধারণত একই ব্যধিতে আক্রান্ত, যে ব্যধিতে আক্রান্ত তাদের সংসদীয় প্রতিনিধিরা - তারা আত্মনিষ্ঠ, সংকীর্ণমনা ও আগ্রাসী শোষক। ( পশ্চিমে রেগান আর থ্যাচার মিলে ক্যাপিটালিজমকে এই ফ্যামিলি এন্টারটেনমেন্টের জায়গায় নিয়ে আসছে। বাংলাদেশে এখনো এত বাজে অবস্থা না, আশার কথা।)
৩. ঋণখেলাপি, করখেলাপি, দায়িত্বখেলাপিসহায়ক সিস্টেমর আমূল পরিবর্তন দরকার। কিন্তু সিস্টেমের পরিবর্তন জিনিসটা ঐভাবে নব্বইয়ের দশকের পরে শুনি না আর। সরকার পরিবর্তন আর সিস্টেমের পরিবর্তন এক জিনিস না। কখনো কখনো সম্পূরক হলেও।
৪. মাঠ গরম করতে পলিটিশিয়ানরা কত কথাই বলে। মাঠ গরম করতেও বিশ্বব্যাংককে এইভাবে কেউ সমালোচনা করছে বলে শুনি নাই। প্রধানমন্ত্রীকে অন্তত গালি দেয়ার জন্য হলেও প্রারম্ভিক হাত তালিটা দিয়ে গেলাম। আপতত ঐ পর্যন্তই। কিন্তু সভরেন বন্ডের ফাঁদে পা দিলে কাহিনী খুব খারাপ হবে। কোরিয়ার আগে গ্রিস হয়ে গেলে, এই বাজারে এর চেয়ে খারাপ কিছু ঘটা সম্ভব না। তার চেয়ে পদ্মাব্রিজ না হওয়া ভাল।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
কিন্তু মধ্যবিত্ত সামর্থ্য থাকলেও নিজের বৌবাচ্চা আর নিজের শশুরবাড়ির বাইরে ১০ টাকাও খরচ করে না।
একমত হতে পারলাম-না, খুব বেশি সরলীকরণ মনে হল। আমি বরং মধ্যবিত্তকেই তার সামর্থ্যের সাপেক্ষে খুব বেশি পারিবারিক, সামাজিক দায়ভার নিতে দেখি।
৩ নাম্বার পয়েন্টের সাথে পুরো সহমত। আমাদের আসলে এটাই প্রয়োজন, ব্রিটিশ প্রেতাত্মার ছায়া নিয়ে টিকে থাকা সিস্টেমটাই মূল সমস্যা আমাদের জন্য। আর তার সাথে সে সিস্টেমের বেনিফিশিয়ারিরা যারা এটাকে টিকিয়ে রাখার প্রচেষ্টায় সদা নিয়োজিত।
আপনি বললেন, 'মধ্যবিত্তকেই "তার" সামর্থ্যের সাপেক্ষে খুব বেশি পারিবারিক, সামাজিক দায়ভার নিতে দেখি'। আমিও বললাম, 'মধ্যবিত্ত সামর্থ্য থাকলেও "নিজের" বৌবাচ্চা আর নিজের শশুরবাড়ির বাইরে ১০ টাকাও খরচ করে না'। এইযে আমরা উভয়ই, মধ্যবিত্তরে একবচন দিয়া ডাকলাম এইটা আত্মপর ফ্রিডমখোর "ইন্ডিভিজুয়াল" হিসাবে মধ্যবিত্তের জেনারেল ইমেজের ভাষিক প্রতিফলন। কিন্তু একজন বিচ্ছিন্ন লোক তো মধ্যবিত্ত না, বরং মধ্যবিত্ত একটা শ্রেণী।
ইন্ডিভিজুয়ালের তথাকথিত ঘাড়ে পারিবারিক দায়ভারের কথা আমিও বলছি। মধ্যবিত্ত কোনো সামাজিক দায়ভার নেয় না। তারা বড়লোক হওয়ার চেষ্টায় দিবারাত্রি ধান্দাবাজি করে। এবং 'ছোটলোক'দের দাবায়া রাখে। আমি নিজেও এই চরিত্রের বাইরে না।
মধ্যবিত্তের একটা নিরাময়ের অযোগ্য ইলুশন হচ্ছে, তারা মনে করে 'তারাই' সংগ্রামী আমজনতা। আমি জিনিসটারে খুব বেশি সরল মনে করি, তাই সরলীকরণ করলাম। তবে আমার কমেন্টে পরের দুইটা লাইন যদি পড়েন তাইলে দেখতে পাবেন আমি কিছুটা জেনারেলাইজেশনের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করছি। বলছি, মধ্যশ্রেণী "সাধারণত" একই ব্যধিতে আক্রান্ত। আরেকটু পরে বলছি, "বাংলাদেশে এখনো এত বাজে অবস্থা না, আশার কথা।"
আপনার ভিন্নমত নিশ্চয়ই আশাবাদী করবে অনেককে। যেহেতু এই পোস্টের প্রসঙ্গে আমাদের আলোচনাটা থাকতেছে না, একটা অপ্রাসঙ্গিক থিওরিটিকাল টার্ন নিতেছে, আমরা এই আলোচনা বরং আরেক জায়গায় চালাই
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
হুম।
গত কয়েক মাসের কিছু সরকারি প্রতিক্রিয়া কতটা তথাকথিত লাভজনক হল কিনা তা জানিনা - তবে একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে - মায়ান্মার এর সাথে কোর্ট এ যাওয়ার পরেই এমন পরিবর্তন - জন্মের পর থেকেই দেখে আসা সাদা চামড়ার বন্ধু নামের প্রভুদের কথার বাইরে যাওয়া কিছু ঘটনা আমার তো ভালই লাগল - কিছু ঘটনায় অবাক ই হয়েছি
১। সমুদ্রসীমা নিয়ে মায়ানমার কে ছাড় না দেয়া
২। হিলারীর নট সো কুল সফর
৩। জার্মান বিদেশ মন্ত্রীর সফরকালীন সময়েই প্রতিবাদ, রাষ্ট্রদুত কে তলব
৪। রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে শক্ত অবস্থান
৫। বিশ্বব্যাঙ্ক কে ফাইট দেয়া
এর সঙ্গে আরো কিছু বিষয় যোগ করতে পারলে ভাল লাগত - টিপাইমুখ বা তেল গ্যাস বা বর্ডার কিলিং---
আমাদের বললেই শুনব অন্তত এমন একটা জায়গা থেকে কিছুটা উত্তরন ঘটেছে---
যদিও এইটাকে ঠিক এখনই বিশ্বব্যাংকে ফাইট বলা যাচ্ছে না। আরেকটা কথা মনে রাখতে হবে স্যাম ভাই, দা এম্পায়ার স্ট্রাইকস ব্যাক।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
হুম অনিন্দ্য দা - দে উইল স্ট্রাইক ব্যাক ফর সিউর উইথ ফিলদিয়ার হ্যান্ডস
কিন্তু শুরুটা ঠিক পছন্দের হল না, ইউনুসের সাথে বিবাদের পর থেকেই সমস্যার শুরু বলে আমার ধারণা - ওটাই সূত্রপাত করে বাকিগুলোর।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
তাও তো ঠিক
আপনার সৃষ্ট "দলপর্যটক" শব্দটা দারুন লাগল।
নতুন পাঠক
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
কি ভায়ে, আপনের বিখ্যাত টিপ্পনী আর খোঁচাগুলা অনুপস্থিত কেনে এই লেখায়???
কি ভায়ে, বাপের দেয়া নামে কমেন্ট করতে ডরান কেনে???
বোকা োদার বাটখারা ...
মডুদের উপর বেশ বিরক্ত হইলাম, এরকম ছাগলামি টাইপ কমেন্ট ছাড়ার মানে কি? নাম দেখেই তো বুঝা যাইতাছে সে খোঁচা মাইরা ঝগড়া করতে আসছে।
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
দেখেন আর আসে কিনা; আসবে না মনে হয়।
এলেও অন্তত তিনি এই নামে আসবেন না।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
সূত্র ৮, ৪৫ হাজার কোটি টাকা পাওনা
ভাবছি, মন্ত্রী/আমলারা কতবড় চশমখোর হলে এই টপিকে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারে। কয় টাকায় দেশের স্বার্থকে বিক্রি করেছে?
অক্সিডেন্টালের কারণে যখন মাগুরছড়ায় দুর্ঘটনা ঘটে, তখন তৌফিক ইলাহী জ্বালানি সচিব ছিলো। ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য সে কিছুই করেনি। নাইকো যখন ট্যাংরাটিলায় দুর্ঘটনা ঘটায়, তখন নাইকোকে বাঁচিয়ে দেয় মওদুদ। নাইকোর দেশী প্রধান কাশেম শরীফ তৌফিকের ভাগ্নে বলে পড়লাম এক জায়গায়। তৌফিক আর মওদুদ আবার ভায়রাভাই।
এরা কয় টাকায় দেশের স্বার্থ বিক্রি করেছে সেটা জানা যায়নি এখনও।
আশাবাদী হতে বলে সবাই। কিন্তু আশার কোন কথা নেই, বা আশার আসার নাম নেই। কোরিয়ার যে উদাহরণ দিলেন সেটাতে বোঝাই যায় যে রাজনৈতিকদের সদিচ্ছা ছিল, আর কোরিয়ানদেরও তাদের নীতিনির্ধারকদের উপর আস্থা ছিল। কিন্তু, আমার দেশে আমি কার উপর আস্থা রাখব? একজন রাজনীতিবিদও কি আছেন যাকে এখন মানুষ বিশ্বাস করে? এমন কোন নীতিনির্ধারক আছে কী যিনি কাজে কর্মে সৎ কিংবা দেশপ্রেমিক? এমন একটা দেশ যেখানে একজন মুক্তিযোদ্ধা একাত্তরে তার গৌরবময় ভূমিকার জন্য এখন প্রকারান্তরে অনুতাপ করেন, '' না বুঝে অনেক গুনাহর কাজ করসি, আয় ভাই মাফ কইরা দি্যা বুকে টাইন্যা ল'' বলে কেঁদে বুক ভাসায়, সেই দেশে আশা কোথায় আর? হিমু ভাইকে আবারও ধন্যবাদ।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
বাজারের টাকায় পদ্মা সেতু, কথাটা কতটা সিরিয়াসলি বলা কে জানে! প্রথমে শোনার পর আমার ব্যক্তিগত ইন্টারপ্রিটেশান ছিল, অনেকটা ক্ষোভ থেকে হালকাচলে বলা কথা। এরকম কথা আমাদের জনপ্রতিনিধিরা অহরহ বলে আসছেন। দেখা যাক বক্তব্যটা কতটা দায়িত্বশীল বক্তব্য ছিল। শুধু বলার জন্যে যদি বলা হয়, তাহলে কিন্তু, 'দরকার হলে ভাত খাব না একবেলা', এরকমটা শুনতে অনেক বেশি আবেগপূর্ণ লাগে। কিন্তু সিরিয়াসলি নিজের টাকায় সেতু করতে হলে, এসব আধাবালছাল, আবেগপূর্ণ কথায় যে কাজ হবে না এটা সবাই জানে। দেখা যাক সরকার আসলে এই ব্যাপারে কতটা সিরিয়াস।
চমৎকার লেখাটার জন্যে
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
হক কথা ! পাব্লিকের টাকা নিয়ে যে আবুলেরা আবার নয়-ছয় করবেনা তার গ্যারান্টি কি কেউ দিয়েছে?
"শেখ হাসিনাকে তাজউদ্দীনের পথে চলার চেষ্টা করতে দেখে তাই মিশ্র অনুভূতি হয়। "আসলেই কি একই পথে হাঁটার চেষ্টা নাকি রাজনৈতিক ভেল্কি?
আগামী পাঁচ বছরের মাল কামাইতে মাল আঙ্কেল এবং তাহার সঙ্গীরা তবে উঠে পরে লাগছে! আর বি এন পির ভাবীজান আসলেও তো নদীর উপরে খাম্বা পইড়া থাকবো, আশঙ্কা করা যায় তার পোলা সেই খাম্বাও গলধঃকরণ করিবে।
লেখাটা চিন্তার খোরাক জোগালো। ধন্যবাদ।
শেখ হাসিনা কোনোভাবেই তাজউদ্দিননের পথে চলছেন বলে মনে হয় না। গত ক'দিনে আমাদের প্রধানমন্ত্রী/মন্ত্রী/সাংসদরা যা বলেছেন, সেগুলো নেহায়েতই প্রতিক্রিয়া এবং সম্মান বাঁচানোর চেষ্টা মাত্র। হ্যাঁ, দীর্ঘমেয়াদে বিশ্বব্যাংকের বিপদ নিয়ে আলোচনার দরকার আছে, তবে বিশ্বব্যাংক মুখের ওর "না" বলে দেয়ার পরেই হঠাৎ করেই এনাদের অনেকের জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন আমোদজনক। বলা বাহুল্য, বিশ্বব্যাংক হঠাৎ এই ঝামেলা না করলে মন্ত্রী-সাংসদরা বিশ্বব্যাংকের সাথে ভাব জমিয়েই চলতেন, আর ভবিষ্যতে এই সমস্যায় সমাধান হয়ে গেলে আবার মিলমিশ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশী।
জ্ঞানচক্ষুর সমস্যাই ঐখানে, সে বেকায়দায় চাপ না পড়লে উন্মীলিত হয় না। ভেনেজুয়েলায় শাভেজ যেমন বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে বের হয়ে গেছে, বাংলাদেশ সেরকম বের হয়ে না গেলে বিশ্বব্যাঙ্কের ব্যাপারে রাজনৈতিক কমিটমেন্টের অ্যাসারশন স্পষ্ট বা জোরালো হয় না।
কিন্তু বাংলাদেশের জ্ঞানীগুণী কেষ্টুবিষ্টুরা যেভাবে বিশ্বব্যাঙ্ককে হাতেপায়ে ধরে আবার মিটমাটের জন্যে বেয়াকুল, তাতে মনে হয় যে তারা আবুলের দুর্নীতি দূর করায় যতটা আগ্রহী, বিশ্বব্যাঙ্কের দুর্নীতি আর দেশনাশী পরামর্শের ব্যাপারে ততটাই উদাসীন। বিশ্বব্যাঙ্ক যে ভুয়া চীনা কোম্পানিকে নিয়োগ দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলো, সেটা আবুল চোরার প্রসঙ্গের নিচে চাপা পড়ে গেছে।
দারুন লিখা হিমু ভাই। বেশীরভাগ মানুষের মনের কথা গুলো খুব সুন্দর গুছিয়ে লিখেছেন। এ লেখাটি সব সংবাদপত্রে পাঠানো উচিত। এ ধরণের লেখার ব্যাপক প্রচার দরকার মানুষকে সচেতন করার জন্য। সাধ্যমত টাকা দিতে বা একবেলা না খেয়ে থাকতে আপত্তি নেই, কিন্তু আমার টাকার যে সদ্ব্যবহার হবে, আমার টাকা থেকেও যে আবুল কাবুলের কাছে কমিশন যাবেনা তার নিশ্চয়তা কি? লেখার জন্য আবারো ধন্যবাদ।
সুন্দ্র লিখার জন্য ধন্যবাদ। জয়নাল ফারুক আর সাজেদা উভয়ই শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানী করেছেন। তবে জয়নালের চেয়ে সাজেদার কথা অপেক্ষাকৃত বেশি অশ্লীল শোনায়। কারণ জয়নাল বিশ্বব্যাংকের চিঠি প্রকাশের পর প্রয়োজনে না খাওয়ার কথা বলেছেন। এটা বলে উনি মূলত পদ্মা সেতুতে সরকারের দূর্নীতির দিকে ইংগিত করেছেন। অন্যদিকে সাজেদা নিজেদের দুর্নীতি গোপন করার চেষ্টা করছেন। বি এন পি আগের আমলে নজীর বিহীন দুর্নীতির শাস্তি গত নির্বাচনে যেভাবে পেয়েছে এই সরকারও অচিরেই পাবে বলে মনে হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের সরে যাওয়ার কারণটা আপনার লিখায় চলে আসলে আরো ভাল হত। ধন্যবাদ।
বিশ্বব্যাঙ্কের সরে যাওয়ার পেছনের উচ্চারিত কারণ আবুল, অনুচ্চারিত কারণ ইউনূস।
খুব গোছানো এবং সুচিন্তিত লেখা। জাতীয় পত্রিকাগুলো এমন লেখা ছাপাতে শিখলে/ চাইলে ভালো হতো।
কোরীয়দের ঘটনা শুনে মুগ্ধ হলাম। আমাদের দেশেও কোনো একদিন এমন নেতৃত্ব আসবে। বিশ্বব্যাঙ্ক আম্রিকা এরা যে ধরনের চুদুর-বুদুর শুরু করছে, এইটাই শক্ত নেতৃত্ব গড়ে ওঠার শ্রেষ্ঠ পরিবেশ।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
বিশ্বব্যাংক টাকা দেয়না, ঋণ দেয়, সহজ শর্তে দেয়না, কঠিন শর্তে দেয়, সুদের হারও সামান্য নয়। প্রতিবছর আমাদের বাৎসরিক উন্নয়ন পরিকল্পনার টাকা খরচ হয়না, সিস্টেম লস ভয়াবহ, উন্নয়ন কাজ শুরু হওয়ার আগেই ভাগ-বাটোয়ারা শেষ হয়ে যায় --- শেষ হবেনা ফিরিস্তি দিতে গেলে।
একটা পদ্মাসেতু করতে সব ঋণ খেলাপি, কর-খেলাপি আর কালোটাকার মালিকদের ধরে একটা ঝাঁকি দিলেই যথেষ্ট, বাজারে যাওয়া বন্ধ করতে লাগেনা। সাজেদা চৌধুরী আর জয়নাল আবেদীন ফারুকদের একবেলা বাজারের টাকায় সারামাস তিন-বেলা ভাত খেতে পারবে এমন পরিবারের সংখ্যা অগণিত বাংলাদেশে।
বিশ্বব্যাঙ্কের সুদের হার সামান্যই। কিন্তু যে শর্তগুলো তারা সাথে জুড়ে দেয়, সেগুলোকে খরচের খাতায় কোয়ান্টিফাই করা গেলে দেখা যাবে সেটা কম নয়। আওয়ামী লীগ প্যাঁচে পড়ে বদনাম করছে, কিন্তু তারা বিশ্বব্যাঙ্কের কুপরামর্শ বাস্তবায়নে মোটেও পিছিয়ে ছিলো না বা এখনও নেই।
দৈনিক সংবাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাংসদেরা শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি করেই এক হাজার কোটি টাকার বেশি শুল্ক থেকে বঞ্চিত করেছে দেশকে। তাদের কাছ থেকে এই টাকা আদায় করলে পদ্মা সেতুর ৫% খরচ উঠে যায়।
কী বিপদের কথা! এক সরকারের মন্ত্রী বলে, ভাত খাইস না। পরের সরকারের মন্ত্রী এসে বলে, হাগিস না। আমরা বলদ পাবলিক যামু কোন দিকে?
ভাত না খেলে তো আর হাগুও হবেনা, তাই এক কথা অন্য কথার পরিপূরক !!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
ক্যান? পদ্মা সেতু হবে সেই খুশিতে যদি এক হাঁড়ি রসগোল্লা সাবাড় করি তাহলেও কি হাগু না হয়ে সব ঘাম হয়ে মিলিয়ে যাবে?
আমাদের অবস্থা এমন যে, কোরিয়ার মত কোনো কিছু ঘটলে দেখা যাবে সাধারণ জনগনের দান নেতা-মুতারা সব খেয়ে বসে আছে! কিন্তু গত কয়েকদিনের সংবাদ, আলোচনা, টকশো, ব্লগ, ফেইসবুক ইত্যাদি দেখে মনে হচ্ছে "পদ্মাসেতু" করাটাই হচ্ছে বাংলাদেশীদের এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি বিষয়! হুজুগে বাঙালি মনে হয় খামাখাই আমাদের কে বলা হয় না!!
এমনতো না যে পদ্মার দুপাড়ে কুটি কুটি জনগণ দাড়িয়ে আছে, "পদ্মাসেতু" হলেই তারা এপাড় থেকে ওপারে ঝাঁপিয়ে পরে উন্নয়ন করে ফেলবে। আমাদের দেশে কত সেতু, কালভার্ট, প্রয়োজনীয় রাস্তা বর্তমানে অসমাপ্ত ও নাজুক অবস্থায় আছে - সেগুলো কি গুরুত্বপূর্ণ নয়? মানুষ পান করার মত সুপেয় পানি পাচ্ছে না, নদী-নালা গুলো শুকিয়ে ও বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে - সেগুলো কি গুরুত্বপূর্ণ নয়?
যাহোক, নেতিবাচক আরও অনেক কিছুই বলা যায়। এখন যেহেতু ইতিবাচক একটা ঢেউ উঠেছে, এই উপলক্ষে দুর্নীতির একটা সুরাহা হওয়া উচিত। আর বলাই বাহুল্য লেখকের ভাষায় সাংসদরা যেন অশ্লীল কথা পুনরায় আর না বলেন!
আপনার সাথে এ ব্যাপারে একমত হতে পারছি না। পদ্মাসেতু হলে স্বাভাবিকভাবেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটবে। যমুনা সেতুর কারণে যেমন উত্তরবঙ্গের এক বিশাল এলাকা জুড়ে কৃষিনির্ভর সমাজ উপকৃত হয়েছে, পদ্মাসেতুর কারণে দক্ষিণবঙ্গেও তেমনি ঘটবে। আমাদের দেশে গ্যাস আর বন্দরের কারণে শিল্পাঞ্চল পূর্বদিকে কনসেনট্রেটেড, ফলে শিল্পভিত্তিক কর্মসংস্থানও দেশের একাংশে বেশি ঘন। পদ্মাসেতুর কারণে কর্মসংস্থানে নতুন সিনারিও দেখা দেবে ক্রমান্বয়ে।
বলতে চেয়েছিলাম, এই মূহুর্তে "পদ্মাসেতু"-র টাকা-পয়সা সংগ্রহের থেকে অন্যান্য অনেক বিষয় গুরুত্ব পাওয়া দরকার! কিন্তু দায়িত্ববানেরা কেন যেন সেইসব দিকে নজর দিচ্ছেন না!
বাজারে কথা আছে প্রাক্তন যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল সাহেব-এর জন্যই নাকি এই অবস্থা! জানি না এর কতটুকু সত্য, কতটুকু মিথ্যা। কিছুদিন আগে আবুল সাহেব প্রতিবাদও করলেন (হয়ত আপনাদের অনেকেরই চোখে পরেছে, http://av.bdnews24.com/file/2012/06/Padma.pdf) তারপর পাল্টা কোনো কিছু আর চোখে পড়লো না! আমাদের নেতা-মন্ত্রীদের চারিত্রিক যে বৈশিষ্ট, এতে ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি দোষ যদি আসলে নাই থাকত তাহলে এতদিনে প্রথমআলো ভাজা ভাজা হয়ে যেত, কৈফিয়ত দেয়ার এমন মোলায়েম ভাষা থাকত না!
আপনি পদ্মাসেতু হলে যেই সব সুবিধার কথা বললেন সেগুলো নিয়ে আশা করি কারোরই কোনো দ্বিমত থাকার কথা না!
অন্যান্য যে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলোর কথা আপনি বললেন, সেগুলো কিন্তু অর্থসংস্থানের অভাবে আটকে নেই, আটকে আছে সুপারভিশনের অভাবে। বাংলাদেশে সড়ক-সেতু সংস্কারের কাজ চুরিদারিকে প্রাধান্য দিয়ে করা হয়। সারা বছর কোনো কাজ করা হয় না, বর্ষাকালে গিয়ে মাটিকাটার ধুম পড়ে যায়, কারণ বর্ষাকালে মাটি কাটলে হিসাবে গোঁজামিল দেয়া সহজ। এগুলো দেখভাল করার দায়িত্ব সরকারের, কিন্তু এগুলো দেখভাল করতে গিয়ে পদ্মাসেতুর প্রকল্প পিছিয়ে দিতে হবে, পরিস্থিতি সেরকমও নয়। সরকার একটা মাল্টিটাস্কিং বডি, সে রান্নার পাশাপাশি চুলও বাঁধে।
পদ্মাসেতুকে সামনে রেখে আপাত অপ্রয়োজনীয় অন্য কী ব্যয়সাধ্য প্রকল্প নিয়ে সরকার ভাবছে, সেগুলোর একটা তালিকা বরং করতে পারেন।
আপনার মত আমাদেরও একই ধারণা যে এগুলো দেখভাল করার দায়িত্ব সরকারের। সরকার একটা মাল্টিটাস্কিং বডি, সে প্রয়োজনে নানা ধরনের প্রজেক্ট নামায় পাশাপাশি পয়সাও মারে! আর আপনিই তো বললেন সাংসদেরা আগে বঞ্চিত শুল্ক গুলো পরিশোধ করুক তারপর না হয় জনগনের কাছে হাত পাতুক। আগে তো ওনারা আস্থা আনুক, তারপর না হয় প্রয়োজনে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী আমরা এক বা দু'বেলা উপস থেকে পদ্মাসেতু, এয়ারপোর্ট ইত্যাদি বানাই!
যাইহোক, বিশ্বব্যাঙ্ক ঋণ দিবে না এতে যতটুকু না দুঃখ পেয়েছি তারচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছি দায়িত্ববানেরা বিশ্বব্যাঙ্ক এর অভিযোগের কোনো শক্ত জবাব না দিয়ে বরং আমজনতার আবেগ নিয়ে ক্যারাম খেলছেন! দুর্নীতি পরায়ণ জাতি হিসেবে আমাদের আরো একটু নাম ডাক হলো!
বিশ্বব্যাঙ্ক কারে ঋণ দিলো আর কার ঋণ বাতিল করলো, সেইটা দিয়ে যদি বাকি দুনিয়া জাতিগত দুর্নীতি মাপে, তাহলে কম্বোডিয়া আর বাংলাদেশ বাদে দুনিয়ার বাকি সব দেশই সাধু। চীন যেমন বিশ্বব্যাঙ্ককে মুখের উপর ঠাপ দিয়ে বলেছে, দুর্নীতি নিয়া বেশি কথা কবি তো তোগো ঋণ লমু না। বিশ্বব্যাঙ্ক লেজ দুই পায়ের ফাঁকে গুটিয়ে কুঁইকুঁই করতে করতে পয়সা দিয়ে যাচ্ছে চীনে। আর দুর্নীতি নিয়ে এত টেনশনে থাইকেন না, আমাদের একমাত্র নোবেলপতিই যেখানে দরিদ্র নারীদের মুখ দেখিয়ে চেয়ে আনা ফান্ড অন্য প্রতিষ্ঠানে সরিয়ে নেন, সেখানে আবুলের কাছ থেকে আপনি কী আশা করেন?
হিমু ভাইয়া, একটা বিষয় পরিষ্কার না আমার কাছে, সেটা হচ্ছে, ধরলাম না হয় জনগণ টাকা দিলো এবং সরকার সেই টাকা পুরোটাই বরাদ্দ করলো সেতুর জন্যে। কিন্তু ডলার আসবে কীভাবে? আবার ডলার ছাড়া বাইরে থেকে টেকনোলজি কিংবা অন্যান্য উপকরণ আনা অসম্ভব। দেশীয় কনসাল্ট্যান্ট এবং ইঞ্জিনিয়ার দিলে কাজ করতে চাইলেও তো টেকনোলজির জন্যে বাইরে থেকে জিনিস আনতে হবে মনে হয়। সেক্ষেত্রে প্রোডাক্ট ব্যাতিরেকে ডলার বাইরে থেকে আসবে কীভাবে? সরাসরি টাকাকে তো ডলারে পরিবর্তন করার সিস্টেম নেই আমি যদ্দূর জানি। নাকি অন্য কোনো উপায় আছে? আর তা না থাকলে টাকা নিয়েই বা কী হবে?
-অতীত
এটা হচ্ছে পদ্মাসেতুর ব্যয়বিন্যাস [সূত্র] ।
আমি যতদূর জানি, এর মধ্যে মূল সেতুর খরচের একটা বড় অংশ আর পরামর্শের খরচ করতে হবে ডলারে। ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ (শুনেছি ঐখানেও হরিলুট হয়েছে)। নদীশাসন, পুনর্বাসন, সংযোগ সড়ক, এগুলোর জন্য তো আর ডলারে খরচ করতে হবে না। আর দেখবেন একটা বড় অংশ আছে বেতনভাতা, যানবাহন প্রভৃতি খাতে। সরকারের গাড়ির পুলে প্রচুর গাড়ি মিসইউজড হয়। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, আমলার ছাও ইস্কুলে যায় প্রকল্পের গাড়িতে চড়ে, আমলার বৌ শপিং করতে যায় প্রকল্পের গাড়িতে চড়ে। এইসব যদি চিবি দেয়া যায়, সরকারের এক্সট্যান্ট ভেহিকল পুল থেকে এই প্রকল্পের জন্য গাড়ি বরাদ্দ করা হয়, দেখা যাবে প্রচুর টাকা বাঁচানো যাচ্ছে। বেতন তো এমনিতেও দিতে হবে ওমনিতেও দিতে হবে। মূসক সরকারের হাতেই আবার ফিরবে। কাজেই মোটামুটি ৫০% খরচ হয়তো ডলারে হবে। এই ডলারের যোগান নির্ভর করবে সরকারের ঋণ-কূটনীতির ওপর। বিশ্বব্যাঙ্ক ছাড়া অন্যান্য ঋণদাতা (মিডিয়া দাতা লেখে সবসময়, কথাটা ঠিক না) গোষ্ঠীকে ভজিয়ে পয়সা যোগাড় করার ধান্দায় আছে সরকার। পুরোটা রিজার্ভ থেকে খরচ করতে গেলে তেলনির্ভর পাওয়ার প্ল্যান্ট চালানোর পরিকল্পনা স্ক্র্যাপ করতে হবে।
ব্যস্ততার কারণে সচলে এতক্ষণ পরে এসে হাজির হলাম আবার।
হ্যাঁ, ভাইয়া ঠিকই বলেছেন। আমারও মনে হচ্ছে এইখানে গিট্টু বেঁধে যাবে। পঞ্চাশ শতাংশ অর্থ এর জন্যে যে ডলার লাগবে তা যদি ব্যাংক এর রিজার্ভ থেকে নেয়া হয় তবে সকল বর্তমান কিংবা ভবিষ্যতের ঋণ/বিনিয়োগ যেগুলো বাইরে থেকে আসছে তাতে কূটনৈতিক ঝামেলা দেখা দিবে। যদ্দূর শুনেছি ব্যাংক এর রিজার্ভে যে ডলার কিংবা স্বর্ণ থাকে তার বিশাল প্রভাব থাকে বৈদেশিক ঋণ কিংবা বিনিয়োগে। ব্যাংক এর অবস্থা এমনিতেই মনে হচ্ছে খারাপ বা নাজুক। এর থেকে আবার ডলার খসে গেলে ভারসাম্য পুরোটাই বিগড়ে যেতে পারে।
ফেসবুকে কার মাধ্যমে জানি দেখলাম, একজনের প্রস্তাব অভিনব লাগলো। তা হলো বিশ্বব্যাংক বা এমন ঋণ প্রদানকারী সংস্থারা পয়সা দিয়ে আসলে যেমন বিনিয়োগ করে তেমনি দেশের মানুষের কাছে থেকে টাকা নিলে তাদেরকেও এই বিনিয়োগের সুফল দিতে হবে। যদি তারা টাকা দেয় সেই টাকা শেয়ার বাজার বা এমন ধরনের একটা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হবে। সেতু থেকে যা আয় হবে টোল এবং অন্যান্য দিক থেকে, তার লভ্যাংশ এইসব জনগণকে দিতে হবে, যদ্দিন না তার বিনিয়োগের টাকা পুরোটা উঠে আসে একটা নির্দিষ্ট মানের লাভ সহ। অর্থাৎ আমরা সবাই ব্যবসায় বিনিয়োগের মতো করে এই টাকা দেবো সরকারকে। জানিনা এটা কেমন জিনিস কিন্তু আমার কাছে বেশ চমকপ্রদ লেগেছে।
একটা বিষয়ে আমি এখনও নিশ্চিত না যেটা আপনি বললেন। সেটা হচ্ছে নদী শাসন এবং সংযোগ সড়ক। এই দুইটার ব্যয় এর কিছু অংশ মনে হয় ডলারে করতে হবে। যমুনা সেতুর ক্ষেত্রেও এমন হয়েছিলো। সেক্ষেত্রে সব মিলিয়ে আমার যা মনে হচ্ছে, ৬০-৪০। অর্থাৎ ডলার ৬০ শতাংশ লাগবে মনে হয়।
আর হ্যাঁ, পুরো বিষয়টা সম্বন্ধে আপনার কাছে থেকে একটা স্বচ্ছ ধারণা পেলাম। সেইজন্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা ও
-অতীত
ঐটাকে পিপিপি বলে। অভিনব কিছু নয়। পদ্মা সেতুকে কোম্পানি হিসেবে খুলে শেয়ার বাজার থেকে টাকা তোলা যায়। কূটনৈতিক মহলে সক্রিয় থাকলে বিশ্বব্যাঙ্কের নম্বরী শত্রু ভেনেজুয়েলার কাছ থেকেও ঋণ নেয়া সম্ভব। কিন্তু আমি যেটা পোস্টে বলার চেষ্টা করেছি, পাবলিকের কাঁধে সারচার্জ চাপানোর আগে সাংসদদের কাছ থেকে গাড়ির শুল্ক আদায় করা হোক। খেলাপি ঋণ আদায় করা হোক। এগুলি যদি করতে পারে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করা যাবে। দেখা যাবে কালো টাকাই হয়তো বাইরে থেকে ডলার হয়ে ঢুকছে এই খাতে, কে জানে?
সরকারে ঘোষণা শুনে আমি গত শুক্রবার বাজার স্কিপ করেছি। দুহাজার টাকা বাঁচলো। এই টাকা পদ্মা সেতুর জন্য দেবো নাকি 'আবুলবক্সে' লুকিয়ে রাখবো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। কারণ আমি সরকারে পকেটে আরো কিছু বাড়তি টাকা দেখতে পাচ্ছি। আড়িয়ল বিলে বঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্ট করার স্বপ্ন থেকে পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা থেকে অর্ধেক সরিয়ে নিলেও তো পদ্মা সেতুর স্বপ্নপূরণ হয়ে যেতে পারে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
সঙ্গে আরো ধরেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট তিন হাজার কোটি টাকা।
যেই বাটপারটা মহাদুর্নীতি করে বিশ্বব্যাংকের মত প্রতিষ্ঠানকে খেপাইয়া দিলো, যেই লোকটার পিঠ বাচানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর বলা 'কথার কথা' আজকে সিরিয়াস টপিক হইয়া গেল, সেই লোকটার কথা কেউ বলতেসেনা। ওই লোকটা চিপায় বইসা মজা নিতাসে।
আর পাবলিক তার খাওয়ার লাইগা আরও টেকা দিতে নাচতাসে।
শেয়ারবাজার লুটপাট, কুইক রেন্টাল, রেলওয়ে দুর্নীতি এইসবের ঘা এত তাড়াতাড়ি শুকাইয়া গেল?! এখনও পাবলিকের পকেটে চোররে দেয়ার লাইগা টাকা রইসে! আমাগোর পাবলিকের মত রহমদিল পাবলিক দুনিয়াতে আর পাওয়া যাইবোনা, এরা শিয়ালের কাছেও মুরগি বর্গা দেয়, after all শিয়ালেরও ত বাইচা থাকন লাগব।
দেন ভাই দেন, পকেট খুইল্লা দেন।
* আমরা টাকা দিতে রাজি আছি তবে শিওর হতে চাই ঐ টাকা কোনো চোর বাটপারের পকেট ভারি করবেনা।
**ঋন খেলাপিদের ঘাঁড়ে ধরে টাকা আদায় করে সেই টাকা পদ্মা সেতুর জন্য খরচ করা হোক।
হিমু ভাই, পোস্টের বক্তব্যের সাথে সহমত। সাথে এটাও লক্ষণীয় যে শুল্কমুক্ত গাড়ী কেনার মতই এক বেলা বাজার না করা এবং এক বেলা ভাত না খাওয়ার বিষয়ে সরকার ও বিরোধী দল কিন্তু একই প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে আছে। এত দ্রুত তাদের মতের ঐক্য খুব কম দেখা যায়। এ ঐক্য সাধারণতঃ তখনই হয় যখন সেখানে তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় জড়িত থাকে। পদ্মাসেতুও তেমনই একটা ইস্যু। যেভাবেই এই সেতু হোক, অর্থাৎ দাতা সংস্থার টাকায় অথবা আমাদের নিজেদের অর্থায়নে, ট্রান্সপারেন্সিটা খুব জরুরী। তা না হলে ঋণ খেলাপীদের থেকে আদায় করা টাকার একটা বড় অংশ এক হাত থেকে কেবল অন্য হাতে যাবে।
টুইটার
সাজেদা চৌধুরী আর জয়নাল আবেদীন ফারুকদের এক একবেলা বাজারের দাম কী কম?
হিমুর লেখা এবং সগুলো মন্তব্য যদি কোনভাবে সাজেদা,জয়নুল গংদের পড়ানো যেত(যদিও ওদেরপড়ার মত সময় )তবে আর যাই হোক দেশের মানুষ যে তাদের "গোপাল ভাড়"মনে করে এটা তারা বুঝতে পারতো
রাজনীতিবিদদের বাজারের টাকায় যদি সেতু হয়ে যায় তাহলে বোঝা যায় তারা কত টাকার বাজার করেন,বুঝি না হাসব না কাদব
নূরুল হকের "ছায়াপাথর" কবিতায় একটা অসম্ভব সুন্দর লাইন আছে:-
"দেশটা এখন আমার কাছে ভীষন ভারী লাগে" ; জানি না এটা কবির ব্যক্তিগত উপলব্ধি নাকি সেটা কিছুমাত্রায় রাজনৈতিকও।
লেখা দারুন লাগলো।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
সৌরভ কবীর
কোরিয়া থেকে ঋণখেলাপীদের মধ্যে একটা যোগসূত্র টানার চেষ্টা করি। ষাটের দশক পর্যন্ত কোরিয়া ছিল মূলত কৃষি-ভিত্তিক সমাজ ও উন্নয়ন ছিল কৃষির সাথে সম্পর্কিত। এই সময় থেকে জাপানের দেখাদেখি কোরিয়াও শিল্পায়নের পথে পা বাড়ায়, জাপানের মতই কিছু পরিবার-ভিত্তিক ব্যবসাকে সামনে রেখে। এই পরিবারগুলোকে কোরিয়ানরা বলে ছাবল (বা জাবল, সঠিক উচ্চারণ জানি না)। এই শিল্পায়নের হাত ধরে পরবর্তী তিন দশকে কোরিয়া শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হয় আর তার পুরোভাগে থাকে সেই পরিবার-ভিত্তিক ব্যবসাগুলো - স্যামসাং, হুন্ডাই, এল-জি বা দায়ু। কোনও ক্ষেত্র থেকে লাভ আসতে থাকলে স্বাভাবিক প্রবণতা থেকেই সেই ক্ষেত্রে বেশী বিনিয়োগ করা হয়, কখনও বিনিয়োগ আসে ধার করে। সরকার যদি বেশীরভাগ ব্যাঙ্কের মালিকানায় থাকে, তাহলে বেশীরভাগ ঋণদাতার ভূমিকায়ও সরকার থাকে। যেহেতু এই ব্যবসাগুলোতে টাকা ঢালার ফলে দেশের সার্বিক উন্নয়নে সুবিধা হয়েছে, তাই সরকারও চোখ বন্ধ করেই ঋণ দিয়ে গেছে এদের। এখন ১৯৯৬ সালে থাইল্যান্ড থেকে হঠাৎ করে বিনিয়োগকারীরা ডলার তুলে নিতে চাইলে (ব্যাপারটা আসলে আরো অনেক জটিল) এশিয়ান ফিনান্সিয়াল ক্রাইসিস শুরু হয়। ফলে একের পর এক দেশ অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভুগতে থাকে। যেহেতু কোরিয়ার রপ্তানী এই দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীল ছিল (এখনও কোরিয়ার ৫২% রপ্তানী এশিয়ায়), তাই কোরিয়ার ছাবলেরা একে একে দেনায় পড়ে যায়। অবস্থা আরো খারাপ হয় যখন বড় পঞ্চাশটির মধ্যে দশটি ডিফল্টার হয়ে যায় (কিয়া মোটরসের দেনা ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার, দেয়ুর ৮০ বিলিয়ন ডলার)। খবর বুঝে সবাই কোরিয়া থেকে বিনিয়োগ তুলে নিতে থাকে, ফলে কোরিয়ার বিদেশী মুদ্রা রিজার্ভ কমতে থাকে, ওন এর দাম ডলার পিছু আট শো থেকে এক বছরের মধ্যে দুই-হাজারে গিয়ে ঠেকে। এই অবস্থায় আই-এম-এফ এর কাছে ষাট বিলিয়ন ডলার ধার নিয়ে কোনোরকমে অবস্থার সামাল দেয় কোরিয়া। ধার না পেলে কোরিয়ার বাকি কোম্পানীগুলোও একে একে দেউলিয়া হয়ে যেত। সুযোগ বুঝে আই-এম-এফ কোরিয়ার ঘাড়ে শর্ত চাপিয়ে দেয় যে মার্কিণ ও জাপানী পণ্যকে বেশী ছাড় দিতে হবে শুল্কে, লে-অফ করার স্বাধীনতা দিতে হবে, বাজেট পাশ করার আগে আই-এম-এফ এর কর্তারা তা স্ক্রুটিনি করবেন ও ব্যাঙ্কসহ সব ফাইনান্সিয়াল সংস্থায় বিদেশী বিনিয়োগের সুযোগ করে দিতে হবে। ২০০৩ এর মধ্যে ঋণ শোধ করে কোরিয়ার সরকার বাজেট স্ক্রুটিনির হাত থেকে মুক্তি পেল বটে কিন্তু সেইটা অন্য একটা ক্রেডিট ক্রাঞ্চের জন্ম দিল যেটা আলাদা গল্প। সেটা এখানে পড়ে দেখতে পারেন।
এখন, কোরিয়ার সরকার কিন্তু সব পরিবার-ভিত্তিক ব্যবসাগুলোকে ঋণখেলাপী বলে ফেলে দিতে পারেনি, কারণ তাদের হাতে হাজারে হাজারে চাকরি ছিল, সাধারণ জনগণের চাকরি। কিয়া মোটরস-কে তুলে দিলে মালিক ঠিকই অন্য দেশে গিয়ে আরামে থাকত, কিন্তু যাদের চাকরি যেত, তারা সরকারকে উৎখাত করে ছাড়ত। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা চালালে এটাই সুবিধা - কয়েক হাজার লোককে সেই ঋণ-নেওয়া-ব্যবসার মধ্যে জড়িয়ে ফেলতে পারলেই তারা একরকম "রাজনৈতিক বন্ধকে" পরিণত হয়। সরকার টাকা ফেরত চাইলে তারা বলে ফেরত দিতে গেলে আমার কোম্পানী উঠে যাবে আর সবার চাকরি চলে যাবে। তার ওপর এই ঋণখেলাপীরা যদি একটা দল করে ফেলতে পারে তাহলে তো পোয়াবারো, ঋণ ফেরত পাওয়ার কোনও আশাই থাকে না সরকারের হাতে। উলটে তারাই দরাদরি শুরু করে ঋণের একটা অংশ মকুব করে দেবার জন্য। আমেরিকায় ফ্রেডি ম্যাক আর ফেনি মে - কে সরকার বেইল আউট করেছে জনগণের পয়সায় কারণ তারা ভাল রাজনৈতিক বন্ধক তৈরী করেছিল। আমি নিশ্চিত বাংলাদেশের এই ঋণখেলাপীদের বড় একটা বিনিয়োগ আছে গারমেন্টসে। চট করে এই টাকা সরকারের হাতে ফেরত আসার সম্ভাবনা কম। সেরকম কোনও চেষ্টা হলে ক্যাপিটাল ফ্লাইট দেখা দিতে পারে, যার পরিণতি আরও খারাপ হতে পারে। কথায় বলে "ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।"
প্রসঙ্গত, চিনে বা কোরিয়ার খেলাপী ঋণের বোঝা মোট ঋণের ১-২%, ভারতে ২ এর একটু বেশী সেখানে বাংলাদেশে ৮% এরও বেশী।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
আমার ধারণা ঋণখেলাপি যারা আছে তারা প্রত্যেকেই ক্যাপিটাল ফ্লাইটের হাঙ্গামা আগেভাগে সেরে রেখেছে, যাতে পরিস্থিতি খারাপ দেখলে চম্পট দিয়ে কয়েক বছর বৌবাচ্চাসহ ডানে বামে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারে।
এই পদ্মা সেতুর নাম কি হবে? আবুল সেতু, নাকি পিতার নামে?
সাজেদা চৌধুরির ছেলের নামে লোকে বদনাম করে সে নাকি গাজিপুরের জমিদারি সম্পত্তি দখল করেছে। রেহানা আর আবুলের নাকি ব্যবসা আছে চিনের সাথে। তারেক জিয়ার আছে অঢেল সম্পদ।
এই গন্যমান্য ব্যাক্তিরা হাত ঝাড়া দিলেই তো পদ্মা সেতু হয়ে যায়। তারা টাকা টা দিয়ে দেয়না কেন?
আমাদের বাজারের লিস্টি জিনিসপত্রের দামের দৌড়ে এমনিতেই কমে গেছে। পদ্মা সেতুর টাকা দেবো কোত্থেকে?
সরকার আর ঋণখেলাপিদের বিচ্যুতিরেখা ক্রমেই কমে আসছে বলেই হয়ত!
বিশ্বব্যাংক একটি বিশ্ব দুর্নীতিবাজ সংস্থা, অথচ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, বিএনপি-বিশ্বব্যাংকের সম্পর্ক ততই ঘনিভূত হচ্ছে!
বিশ্বব্যাংক ফান্ড বাতিল করেছে আর নতুন নতুন তহবিলদাতা তহবিল হাতে এগিয়ে আসছে! প্রশ্ন হচ্ছে, এরা এতদিন কোথায় ছিল? আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পারলে, তার মত আনন্দদায়ক সংবাদ আর কিছুই হবে না! কিন্তু আজ যারা তহবিলের জোয়ার দেখাচ্ছে, তাদের নিয়ে আমার ঘোরতর সন্দেহ হয়! তারা সুযোগ সন্ধানি নয়তো?
লেখা ভাল লেগেছে! মনের কথার প্রতিচ্ছবি দেখতে পেয়েছি!
পদ্মা সেতু কোম্পানি করে শেয়ার ছাড়ার পরামর্শটা কেমন?
এই পরামর্শটিকে আমার ভাল মনে হয়েছে। কিন্তু সেই কোম্পানির মূল্যায়ন ও মালিকানা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আরো ভাবার প্রয়োজন আছে। আমরা চাই আর না চাই, আমাদের পদ্মা সেতু ভারতের পূর্বাঞ্চলের সাথে কোলকাতার সামরিক, প্রসাশনিক ও বানিজ্যিক যোগাযোগ বাড়াবে, যার মূল্যমান আমাদের আভ্যন্তরীন মূল্যসংযোজনের সমান বা অনেক বড় হতে পারে, সেখানে স্টক বাজার যেন আমাদের সিমেন্ট ও ভোগ্যপণ্য বাজারের মত এই সেতুটিও প্রচ্ছন্ন ভারতীয় নিয়ন্ত্রণে না আসে, তার একটি প্রকাশ্য ব্যাবস্থা রাখতেই হবে। বাংলাদেশে ব্যাঙ্ক ও ডি এস ই সজাগ থাকলে এই প্রতিরোধ ওয়ান-টুর খেলা।
প্রাক-উতপাদন মূলধন সংগ্রহের সময়ে প্রকল্পের খরচকেই পরিশোধিতমূল্যে প্রাক্কালনের কেন্দ্রীয় নিয়ামক ধরে নেবার একটি প্রবণতা থাকে। আমরা যমুনা বহুমূখী সেতুর প্রকল্প উন্নয়নের সময়ে এরশাদ সরকারের এহেন ফাইজলামি দেখেছিলাম, যেখানে হাঁটু-প্রশাসকেরা লেভির হিসাব ভিত্তি ধরেছিল ১৯৬৯ এর ফ্রিম্যান ফক্সের (অধুনা হাইডার কন্সাল্টিং) প্রাক্কালিত ১৭৫ মিলিয়ন, ওরাও বলেছিল দেশী টাকায় নাকি সেতুর ৪০-৫০% সম্পূর্ন করা সম্ভব ছিল। ৯৮ তে বিয়েম্পি যখন সেই সেতু নির্মান শেষ করে তখন এর পরিশোধিত খরচ দাঁড়ায় ৬০০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি - আসল হিসাব প্রকাশিত নয়।
পদ্মা সেতুর জন্য বাজার থেকে টাকা তোলার সময়ে প্রকল্পের মূল্য (খরচ নয়) নির্ধারন ব্যাঙ্কসুদ ও মূল্যস্ফীতি ছাড়াও আন্তর্জাতিক নির্মান বাজারের 'উত্তাপ' খেয়ালে রাখতে হবে। তদুপরি যমুনা সেতু যেমন আমাদের হুন্দাই/স্কান সিমেন্টের মত স্থানীয় শিল্পকারখানা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের নির্মানশিল্পকে উস্কে দিয়েছিল, এই সেতুরও কিন্তু আভ্যন্তরীন নদী পরিবহন, নদীশাসন ও ড্রেজিং এর মত স্থানীয় ভারী শিল্প উন্নয়নের হেতু হতে পারে। সেতু কোম্পানির সাথে সাথে আর কিছু না হোক অন্তত ১০ টা বড় আকারের ড্রেজার কিনে একটি বড় আকারের ড্রেজিং কোম্পানির জন্যও টাকা তুলতে হবে - যেটা দেশের ড্রেজিং মাফিয়াকে ফতুর করে দিতে পারে।
আমরা চাই আর না চাই, আমাদের পদ্মা সেতু ভারতের পূর্বাঞ্চলের সাথে কোলকাতার [b]সামরিক, প্রসাশনিক ও বানিজ্যিক যোগাযোগ বাড়াবে[/b]
পদ্মাসেতু কোলকাতার (ইস্টার্ন কমাণ্ড) সাথে ভারতের পূর্বাঞ্চলের সামরিক যোগাযোগ বাড়াবে, এটা খুব গুরুতর অভিযোগ। আপনার হাতে কি এই বক্তব্যের সমর্থনে কোনো তথ্য আছে?
নতুন মন্তব্য করুন