সিলেটে আমরা যে বাসায় থাকতাম, তার বারান্দায় টবে একটা বেলি গাছ ছিলো। সেই বাসা ছেড়ে আমরা যখন চলে আসি, আমরা পেছনে ফেলে আসি চারপাশের সুপারি গাছে সারি, বারান্দার আকাশ দখল করে রাখা কৃষ্ণচূড়া, রান্নাঘরের উল্টোদিকের পেয়ারা গাছ, স-মিলের জন্যে আনা কাঁচা কাঠের ঘ্রাণ, আমাদের তেরো বছরের জীবন, শুধু বোকার মতো সঙ্গে করে নিয়ে আসতে চেয়েছিলাম টববন্দী গাছগুলোকে। আমরা জানতাম না, ট্রাকে করে ফুলের টব দূরের শহরে আনা নিরাপদ নয়। আমাদের একটা ফুলগাছও বাঁচেনি। এখনো মাঝে মাঝে বৃষ্টির পর পথে স্তুপ হয়ে পড়ে থাকা চেস্টনাটের পাঁপড়ির গন্ধ সেই বেলি গাছে ছাওয়া বারান্দার কথা মনে করিয়ে দেয়। ঐ গাছটির সাথে আমার শৈশবের একটা টুকরোও মৃত্যুবরণ করেছে।
স্বার্থপরের মতো চাই, যা কিছু নিয়ে আমার শৈশব ছিলো, তার সবই টিকে থাকুক, বেঁচে থাকুক, নাম ধরে ডাকলে সাড়া দিক। এর সম্ভবপরতা যাচাই করতে ইচ্ছা করে না। তাই যখন দেখি জিগ'স পাজলের এক একটা টুকরো একদিন হঠাৎ করে হারিয়ে যাচ্ছে, শুধু দুঃখ পাই। অপ্রবোধসম্ভব দুঃখ নিয়ে যেমন দাঁড়িয়ে ছিলাম আরেক শহরের আরেক বারান্দায় আমাদের ভাঙা ফুলের টবগুলোর সামনে, তেমনি নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে দেখি, শৈশবের শহর মরে গেছে, শৈশবের কৃষ্ণচূড়ায় ছাওয়া পথ মরে গেছে, মরে গেছে খেলার মাঠ, কাকচক্ষু সরোবর, শৈশবের মানুষেরা। এটাই বোধহয় জীবনের শেষ গন্তব্য, যেখানে সান্ত্বনাহীন পরিবর্তন চেনা পৃথিবীকে ফোকলা করে রেখে যায়।
বিদায় হুমায়ূন আহমেদ, বিদায় নীল হাতির লেখক। আপনি আমার শৈশবের একটা অংশ ছিলেন। আরো অনেকের মতো আমিও অনুভব করছি, ঘরের মানুষ না হয়েও স্বজনবিয়োগের বেদনা দিয়ে গেলেন আপনি।
মন্তব্য
কিছু কিছু সময় বিদায় বলাটা খুব কষ্টের হয়ে যায়। কিছুতেই চলে যেতে দিতে ইচ্ছা করে না। যেদিন থেকে বুঝতে পারছিলাম কিছুতেই কিছু হবে না সেদিন থেকেই ভাবছিলাম কবে শুনবো সেই কষ্টের খবরটা। কিছুতেই শুনতে চাচ্ছিলাম না। মানতে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু আজ শুনতেও হলো। মানতেও হলো।
আলোকিত মন
সময়টা মনে নেই। আমার বয়স তখন হয়ত ৭-৮, হয়ত একটু বেশী বা কম। এক ছোট্ট বিকেলবেলায় আব্বার সাথে করে গেছিলাম সোবহানবাগের জ্ঞানকোষের পাশের দোকান মিনার্ভায়। ছোটদের বই কিনতে। কথা ছিল বই কেনা হবে দুটো। একটা আমার জন্য আরেকটা ফুপাতো ভাই উপলের জন্য। মিনার্ভা ছোট দোকান, বই এর ভান্ডার ও সীমিত। তার উপরে এমন বই কিনতে হবে, যেটা আমার ও নেই উপলের ও নেই। অনেক বাছাবাছির পর যে দুটো বই কেনা হলো, দুটোই হুমায়ুনের। বোতল ভূত আর আরেকটা ছোটদের গল্প সংকলন (নাম মনে নেই, তবে রাজকুমারী সূবর্ণলেখা জাতীয় একটা গল্প ছিল)। এর পরের অংশ কঠিন, বই পড়ার আগেই বাছাই করতে হবে কোনটা আমার আর কোনটা উপলের। এখন মনে নেই কেন, কিন্তু ওর ভাগে পড়েছিল বোতল ভূত - আর তাই বই উপলের হাতে চলে যাওয়ার আগেই পড়ে শেষ করতে হবে বলে বোতল ভূত দিয়েই আমার হুমায়ুন জীবন শুরু। সেই ভূত কাঁধ থেকে আর নামেনি। অসংখ্য অলস দুপুর, বৃষ্টিভেজা বিকেল, নিঃসঙ্গ রাতের সঙ্গী বইগুলোর জন্য প্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদের প্রতি কৃতজ্ঞতা থাকবে সারা জীবন। আপনি যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন হুমায়ুন।
বলা বাহুল্য অনেকদিন আবার বোতল ভূত বইটাও কিনেছিলাম নিজের জন্য।
অন্য বইটার নাম ভূত ভূতং ভুতৌ। সেটায় গোবর বাবু, বড় মামা ও রাজকুমারী সুবর্ণরেখা, নিউটনের ভুল সূত্র সহ চারটি গল্প ছিলো ( চতুর্থটির নাম ভুলে গেছি।) বোতল ভূল অনেকবার পড়া হয়েচে। বোতল দেয়া আধা পাগলা রবি ঠাকুর, ফুটবল খেলা, স্যারের পা ভাঙা ইত্যাদি। এখনো মনে করতে পারি এক নিমেষেই। সৌরভ, আগুনের পরশমনি, ১৯৭১, সূর্যের দিন -- এগুলো নিয়ে একটি মুক্তিযুদ্ধ সংকলন ছিলো। আরো অনেক অনেক বই অনেক অনেক স্মৃতি। মানুষটি আজ নেই। লেখক হুমায়ূন ছিলেন না অনেক আগে থেকেই। মানুষ হুমায়ুনও আজ চলে গেলেন। তবু আমরা জানবো একদিন তিনি ছিলেন। তিনি লিখে গেছেন স্বপ্নের কথা, ভালোবাসার কথা, মধ্যবিত্ত জীবনের প্রাপ্তি ও দ্বন্দ্বের কথা। তিনি হাসিয়েছেন কাঁদিয়েছেন। তার চোখে আমেরিকা দেখেছি। জোছনাকে ভালো লাগিয়েছেন, বৃষ্টিতে ভিজতে শিখিয়েছেন আর শেষতক স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তিনি ছিলেন থাকবেন তার কাজে। শেষবেলায় তার সমালোচনার জায়গাও ছিলো। আজকে দিনের জন্য সেগুলো ভুলে যেতে চাই।
ওটা হলো, 'ছোটদের সেরা গল্প' ওটা আমারো প্রথম বই হূমায়ুন আহমেদের।
চতুর্থটির নাম ছিল "নিমধ্যমা"। ভূত ভূতং ভূতৌ আমার পড়া হুমায়ূনের প্রথম বই।
'তোমাদের জন্য ভালবাসা' বইটা প্রিয় ছিল অনেক আগে। আরেকটা উপন্যাসের নাম মনে নাই, কী একটা পিকনিকের বিষয় ছিল, এক ঝাঁক পাখি এসে চাঁদ ঢেকে দিয়ে যায় ... এমন একটা ইমেজ ছিল। আর প্রিয় ছিল 'নিমফুল' নাটক। ঘরে ছিল না কেরসিন ...
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
১৯৮৫ সালে আমার ৮ম জন্মদিনে দুটো বই উপহার পেয়েছিলাম - নীল হাতি আর তোমাদের জন্য ভালোবাসা। বানান করে করে পড়ে ফেললাম নীল হাতি। তোমাদের জন্য ভালোবাসা বইটি হাতে নিয়েও পড়তে পাড়লাম না। 'ভালোবাসা' শব্দটি বড়দের বলেই জানতাম, তাই লজ্জায় বইটি হাতে নিতে পারিনি। অনেক দিন পরে লজ্জা ভেংগে দুরুদুরু বুকে পড়ে ফেললাম বইটি। কি অসাধারণ একটি সায়েন্স ফিকশন। আহা কি সেই অনুভূতি।
হুমায়ুন আহমেদ, যে ছোট্ট শিশুটিকে এক অদ্ভূত আনন্দময় জগতে প্রথমবারের মত আপনি নিয়ে গিয়েছিলেন সেই শিশুটিই আজ আপনার অন্য ভূবনে আনন্দময় যাত্রার কামনায় অধীর। প্রিয় হুমায়ুন, আপনি যেখানেই থাকুন, ভাল থাকুন।
/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।
বইটির নাম মনে হয় জল জোছনা। সাপ্তাহিক বিচিত্রায় প্রকাশিত হয়েছিলো। এক ঝাঁক পাখি এসে চাঁদ ঢেকে দিয়ে যায়।
তোমাদের জন্য ভালোবাসা আমার কাছে বাংলা সায়েন্স ফিকশনেরই অন্যতম সেরা বলে মনে হয়। অল্প অল্প করে একদম ভিতরে গিয়ে আঘাত করে মানবীয় অনুভূতি নিয়ে। এমন সাই ফাই হয়েছে আরো। তবে এই উপন্যাসটা কেন জানি ভালো লাগে -- হয়তো বা নামের জন্যই।
সায়েন্স ফিকশন অনেকই লেখা হয়েছে তবে মানবিক সায়েন্স ফিকশন বোধ হয় একমাত্র হুমায়ূন আহমেদই লিখেছেন। তোমাদের জন্য ভালবাসা বইটির সাথে বোধ হয় 'তারা তিন জন' (নামটি সঠিক বললাম তো?) বইটিও রাখা যেতে পারে এই ক্যাটেগরিতে।
/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।
ইরিনা গল্পটাও খুব সুন্দর ছিলো
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
ভাবতেই পারছি না, হুমায়ুন নেই!!!!! হিমু, মিসির আলি বা বাকের ভাই আর আসবে না!! আসবে না সেই কিশোর বেলা!
ওনার প্রিয় বর্ষা ঋতুতে বিদায় নিলেন। এই ছোট ডিটেইলটার জন্য প্রকৃতিকে ধন্যবাদ।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
খবরটা শোনার পর থেকে কেবল একটা বই এর গল্প মনে পড়ছিলো, ক্যান্সারে আক্রান্ত একটা ১১-১২ বছরের মেয়ে, বাবা মা চিকিতসার টাকা যোগাড়ে ব্যাস্ত, মেয়েটার মৃত্যু চিন্তা, এলে বেলে চিন্তা। ১৩তম জন্মদিনে উপহার পেয়েছিলাম, বয়সের সাথে মিলে যাওয়াতেই কি না জানি না, মৃত্যু নিয়ে ভাবার বিলাসিতা হয়েছিল। সেই গল্পে একজন নানীজান ছিলেন, সবকিছুতেই যিনি সৌন্দর্য খুঁজে পেতেন। কিভাবে জানি না বইটা জীবন নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি পালটে দিয়েছিল, একদিন তো যেতেই হবে, তাতে ভয়ের কিছু নাই, এই সুন্দর পৃথিবীটাকে দু'চোখ ভরে , প্রান ভরে দেখে যাই, এমন একটা দার্শনিক ভাব মাথায় ঠাঁই নিয়ে একদম স্থায়ী হয়ে গেল।
সেই বইটার নাম কিছুতেই মনে পড়ছিল না, শেষে বই-মেলা।কম খুজে প্রচ্ছদ মিলিয়ে নাম বের করলাম। কী অদ্ভুত মিল, বইটার নাম " এপিটাফ"।
প্রচ্ছদ ঘেটে নাম বের করতে গিয়ে উপলব্ধি করলাম, আমি সবগুলো বই এর প্রচ্ছদ এমনকি সাইডের অংশটুকু পর্যন্ত এত ভালভাবে চিনি, শুধু ছবি দেখেই বলে দিতে পারব কোনটা কি বই, তার ভিতরের গল্প।।। এতটাই মগজে গেঁথে আছে তার রচনা।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
একদম ছোট্টবেলায় 'নীল হাতি' পড়তে পড়তে আমি ভাবতাম সত্যিই বোধহয় জোছনারাতে ফুলের মালা গলায় দিয়ে জানালার ধারে বসে মনে মনে ডাকলে আকাশপরীদের দেখা পাওয়া যায়। নানাভাইয়ের কাছে বায়না ধরতাম 'সেঞ্চুরি ফ্লাওয়ার' গাছটা কিনবো বলে....
আমি ভাবিনি তার জন্য আমার এত কষ্ট হবে, আমি বুঝিনি তিনি এখনও আমার এত কাছের ছিলেন।
বিদায় স্যার, যেখানেই থাকুন.. ভাল থাকুন।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
বিদায় হুমায়ূন আহমেদ! শান্তির ঘুম হোক আপনার।
২৫ বছর আগে 'আনন্দ বেদনার কাব্য' নামের একটা বই পড়ে আপনার সাথে পরিচয়। সেই সাদামাটা গল্পগুলোর মধ্যে আমাদের অনেক আনন্দ বেদনাকে পেয়েছিলাম বলেই ওই বইটার কথাই মনে পড়লো আপনার চলে যাবার খবর দেখে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
বিদায় প্রিয় হুমায়ুন আহমেদ
"অনেকের মত আমিও অনুভব করছি ঘরের মানুষ না হয়েও স্বজনবিয়োগের বেদনা দিয়ে গেলেন আপনি"
বড় হয়েছি মফঃস্বলে,খুব বেশি গল্পের বই পাওয়া যেত না ওখানে,খুব বেশি পড়তাম ও না।তবে সেই ছোটবেলা থেকেই এখানে সেখানে পাওয়া তার সবগুলো বই গোগ্রাসে গিলেছি,বই পড়ার শুরুটা তার হাত ধরেই।তার গল্পে সংজ্ঞা খুঁজেছি জীবনের,প্রেমের,নিঃসঙ্গতার;হতে চেয়েছি তার গল্পের চরিত্র।এরপরে অনেকবার বিভিন্ন কারনে এই মানুষটার উপর রাগ করেছি,ভয়ংকর রাগে অনেক আজেবাজে কথাও বলেছি।এসব তাকে এত্তটা ভালবাসতাম বলেই।
ভালো থেকো হুমায়ূন আহমেদ,ভালো থেকো।
পার্থসারথি চক্রবর্তী
বিদায় হুমায়ূন
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
'ইরিনা' পর্যন্ত লেখা সায়েন্স ফিকশনগুলি আর বিটিভিতে প্রচারিত তার এককালের নাটকগুলি বাদে হুমায়ূন আমার প্রিয় লেখক ছিলেন না কখনই। হিমু বা মিসির আলীও আমার প্রিয় কোন চরিত্র ছিল না। কেন জানি তার 'লেখা' আমার মস্তিষ্কের কোষে বা হৃদয়ের তন্ত্রীতে আলোড়ন তুলত না কখনই, স্বাদহীন আর জোলো লাগত।
তবে বিটিভি আমলে তার লেখা আর মুস্তাফিজুর রহমান বা আতিকুল হক চৌধুরীর প্রযোজনায় আফজাল, সুবর্ণা, নূর, ফরিদী, আবুল হায়াত, লাকী ইনাম, আলী যাকের, (আরেকজনের আসল নাম মনে পড়ছে না - সেই যে - "সুখী নীলগঞ্জের" মাষ্টার মশাই চরিত্রে অভিনেতা), পীযুষ, ডলি জহুর, লতা, ফেরদৌসি মজুমদার প্রমুখদের অভিনয়ে প্রাণবন্ত নাটকগুলি সেযুগে একটিমাত্র চ্যানেলের দেশে আ্মাদের জন্য ছিল বিনোদনের মরুভূমির মধ্যে এক পশলা হঠাৎ বৃষ্টির মত। পরের দিকে তার নাটকগুলি অবশ্য তার সেই ধার হারিয়ে একঘেয়ে, চর্বিতচর্বনসার আর মুদ্রাদোষসর্বস্ব হয়ে গিয়েছিল। ফলে আর দেখতাম না। তারপরও সেইসব মধুময় দিনগুলির জন্য তাঁকে অশেষ কৃতজ্ঞতা, যখন তার নাটক দেখাবে বলে পরিবারের সবাই মিলে টিভির সামনে এসে বসতাম।
ভালমন্দ সবকিছু মিলিয়েই আমাদের এমনিতে প্রায়-ম্যাড়ম্যাড়ে সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকে এমন একজন বর্ণিল, আলোচিত, সমালোচিত (যুক্তিসঙ্গত কারনেই), বিতর্কিত, প্রাণবন্ত, ইন্টারেস্টিং একজন ব্যক্তিত্ব চলে যাওয়ায় সত্যি খারাপ লাগছে। কেমন যেন আরেকটু বিবর্ণ লাগছে চারপাশ। এখন থেকে কি কেবলই আরো নিম্নমানের আনিসুল হক আর আসিফ নজরুল-টাইপদের বমনে প্লাবিত হতে থাকবে এই অঙ্গনটা?
****************************************
আবুল খায়ের?
হ্যা
অজ্ঞাতবাস
মেঘ বলেছে যাব যাব
#মেঘেদের নিয়মই হলো হলে যাওয়া, তবে সবকিছু তড়িঘড়ি করে নিমিষেই তছনছ করে দিয়ে গেলে-
#প্রিয় হুমায়ূন, যেখানেই থাকুন, অনেক অনেক ভালো থাকুন
বড় হয়ে যাবার পর হয়তো ছোটবেলকার সেই অকৃত্রিম ভালোলাগা নিয়ে তার বই পড়া হয়নি, কিন্তু তিনি ছিলেন যাকে বলা যেত আপনি স্পর্শময়ী সরল লেখা লেখেন। আশা করতাম অচিনপুরের মত লেখা তিনি নিশ্চয়ই আবার লিখবেন। নির্বাক হয়ে যেতে হলো খবরটায়। আশৈশব সাথী হুমায়ূন আপনাকে ভোলা সম্ভব না।
বিদায় হুমায়ুন আহমেদ। আপনাকে ধন্যবাদ শৈশব থেকে এখন পর্যন্ত অনেক সুন্দর সময় উপহার দেয়ার জন্য শ্রদ্ধা
অলস সময়
"স্বার্থপরের মতো চাই, যা কিছু নিয়ে আমার শৈশব ছিলো, তার সবই টিকে থাকুক, বেঁচে থাকুক, নাম ধরে ডাকলে সাড়া দিক।" সত্যি, যদি এই রকম হত তাহলে খুব ভালোই হত। শৈশবটা বেঁচে থাকুক----হ্যাঁ বেঁচে থাকে পুরানো ফটো অ্যালবামে, আমাদের মনের কোন এক কোনে। লেখা ভালো লাগল।
আমার শৈশব আর কৈশোরের হুমায়ূন কখনও মারা যাবেন না, লেখক হুমায়ূন কোনদিনও মরবেন না, মরবেন না নাট্যকার হুমায়ূন, মরবেন না শিল্পী হুমায়ূন; মানুষ হুমায়ূন মরতে পারেন। লেখক হিসেবে তার অসাধারণ ক্ষমতাই হয়ত আমার মত অনেককে ক্ষেপিয়ে তুলেছিল তার শেষদিকের অহুমায়ূনীয় অনেক কার্যকলাপে। প্রিয় হুমায়ূন, আপনাকে বলতে চাই, আপনাকে অনেক অনেক ভালবেসে অনেক উঁচুতে বসিয়েছিলাম বলেই আপনার ওপর রাগ হত, রাগ হত আপনার হাত থেকে আরও একটি 'নন্দিত নরকে' বা 'হোটেল গ্রেভার ইন' পাইনি বলে, রাগ হত আপনি আর 'শঙ্খনীল কারাগারে' অথবা 'কোথাও কেউ নেই' বানান না বলে, রাগ হত শৈশব আর কৈশোরের সেই জাদুময় সময়গুলো আর দিতেন না বলে। কিন্তু আমার মত এমন অপাংক্তেয় মানুষের রাগে বা অভিমানে কী বা এসে যায়। এত তাড়াতাড়ি না গেলেও তো পারতেন। আপনি কোথায় গেছেন সেটা হয়ত আমি জানিনা, কিন্তু আমার শৈশব আর কৈশোরের হুমায়ূন আমার খুব কাছেই থাকবেন, সারাজীবন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আমি অনেক সায়েন্স ফিকশন পড়েছি, এর ভিতর অনেক বিদেশী লেখকও রয়েছেন! কিন্তু আজও 'তারা তিনজন'-এর সমতুল্য কোন বই পাইনি; বইটির গল্প, ভাষা, মানবিক আবেদন- কখনই ভুলবার নয়! তেমনি আরেকটা বই 'নিষাদ'- এমন অনন্য গল্প কি পাওয়া যাবে আর কোথাও? যেমন এর রহস্যময়তা, তেমনি এর মানবিকতা! আর 'যশোহা বৃক্ষের দেশে'? এমন অনন্য স্বাদের ভ্রমণ গল্প আর একটিও পড়িনি আমি! মনে পড়ছে, তার ভৌতিক গল্পগুলোর সংকলন, যা যেকোন বিচারে বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ রহস্য গল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে! এছাড়া তার ছোটগল্পও আমার অসম্ভব প্রিয়। বিশেষ করে 'রূপা'র মত গল্পগুলো কি করে ভোলা সম্ভব? বহুব্রীহি, অয়োময়, বা আজ রবিবার কোন সপ্তাহে মিস হলে পুরো দুনিয়া নিরর্থক মনে হতো! হুমায়ুন আহমেদের আগুনের পরশমণি বারবার দেখেও তৃপ্তি মেটে না! আমার মতে, এই ছবিটি বাংলাদেশের এ পর্যন্ত সর্বশ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র 'সূর্যদীঘল বাড়ি'র পাশেই অবস্থান করবে! তবে হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাসের মতই তার নাটক-চলচ্চিত্রের মান শেষদিকে ফল করেছে, কিন্তু তাতে কিচ্ছু যায় আসে না; বস্তুত উনার কাছ থেকে যা পেয়েছি, তা পরিমাপ করার সামর্থ্যও আমার নেই!
গত রাত্রে যখন চূড়ান্ত খবরটি টিভির পর্দায় ভেসে উঠল, অসম্ভব মন খারাপ হল! এমন নয়, উনাকে কোনদিন সরাসরি দেখেছি বা কথা হয়েছে! তবু কেন জানি চোখ ভিজে উঠল! প্রিয় লেখকেরা বোধহয় এভাবেই নিজের অজান্তে স্বজন হয়ে উঠেন আমাদের সকলের!
কি নিবিড় এক আত্মীয়তার বন্ধনে আজ বাঁধা পড়ে গেছি সবাই! একে অন্যকে চিনি না, জানি না...অথচ অগণিত, অসংখ্য অচেনা, অনাত্মীয় মানুষ একসাথে অনুভব করছি একই স্বজনবিয়োগের বেদনা।
একটি দেশের কত লক্ষ মানুষ একযোগে শোকাহত হলে একটি জাতীয় শোক দিবস হয়?
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আমার প্রথম বই "নন্দিত নরকে"। ক্লাস সিক্সে তাঁর লেখা প্রথম বইটা দিয়েই তাঁকে চিনি। তারপর তাঁর সাথে কেটে গেছে কতশত প্রিয় মূহুর্ত। ভরিয়ে দিয়েছেন নির্জন সময়গুলো।
নিষাদ আর নিনিত কখনো জানবে না, কি অসাধারণ একটা বাবাকে তারা বুঝে ওঠার আগেই হারিয়ে ফেললো। ভীষণ জ্যোছনার কোনো রাতে, গ্রামের কোনো উঠানে বসে, গানের আসরে বাউল গান শোনানোর জন্য, বা উল্টাপাল্টা ইচ্ছে পূরণের কেউ থাকলো না তাদের।
যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন আপনি হুমায়ুন আহমেদ।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
মনে পড়ে ছেলেবেলায় শিশু পত্রিকায় বোতল ভূতের ধারাবাহিক পড়ে অসম্ভব ভালো লেগেছিল। তুই রাজাকার ডায়লগের স্রষ্টাকে চির বিদায় জানাতে বুক ফেটে যাচ্ছে। অচিনপুরে ভালো থাকুন হুমায়ুন। - অয়ন
---------------------
আমার ফ্লিকার
"একি কাণ্ড!"
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
মানুষের মন বড় বিচিত্র জিনিষ । কখনো ভাবিনী হুমায়ূন নেই জেনে এভাবে বুক চেপে কাঁদব । যথেষ্টই বিরক্ত ছিলাম তাঁর লেখায় তার নানাবিধ কর্মকান্ডে, তাঁর ভক্তদের বাড়াবাড়িতে ।
গতকাল খবরটা জানার পর থেকে, নিজের ভিতর আঁতিপাঁতি করে খুঁজতে গিয়ে দেখি, নন্দিত নরক, শঙ্খনীল কারাগার এর লেখক মিছির আলী, বাকের ভাই এর স্রষ্টা, আগুণের পরশমণি, কোথাও কেউ নেই, এইসব দিনরাত্রির কিংবা অয়োময়ের হুমায়ূন তাঁর নানাবিধ মানুষী পতন সত্ত্বেও এখনও আমার ভিতর চুপিসারে ভালবাসার প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখেছিলেন !
পরিবারের সবচেয়ে উজ্জ্বল সদস্যের উপর ভরসা হারানোর অভিমান থেকে, জোর করে মন থেকে তাঁকে দূরে ঠেলে দেওয়া, মুখ ফিরিয়ে থাকার পর, আচমকা সে নেই হয়ে গেলে যেমন করে বুকটা হাহাকার করে উঠে, চারিপাশ কেমন অদ্ভুত ফাঁকা হয়ে যায়, আমার অনুভূতিটা ঠিক তেমনই
_____________________
Give Her Freedom!
অসংখ্য বইয়ের ভীড়ে 'জনম জনম' নামে ( যদি নামটা ভুল করে না থাকি) তাঁর একটা উপন্যাস পড়েছিলাম অনেক বছর আগে। আমার মতে তাঁর অন্যতম সেরা বই ছিল এটা। তাঁর বইগুলোই ছিল আমার বই পড়ার অভ্যাসটাকে ধরে রাখার প্রধান কারণ।
আজ কেমন একটা বোধহীন সময় পার করছি। মনে হয় চারপাশের কিছই স্পর্শ করছে না আমাকে------
ভাল থাকুন হুমায়ুন।
বিদায় হুমায়ূন আহমেদ! আপনার সাথে সাথে মিসির আলি, হিমু, রূপা.. এরকম আরো অনেক আপন মুখও চলে গেল .. থেমে গেল।
আপনাকে মিস করবো ।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
বিদায়...
অচিনপুরে উড়াল দিলেও অনেক কিছু রেখে গেলেন । শুধু ওরা নতুন কোন কথা বলবেনা- যেখানে আরও অনেক কিছুই বলার ছিল...
একজন সৃষ্টিশীল মানুষ হয়ে ওঠা খুব কঠিন! হুমায়ূন আহমেদ শুধু নিজেই সৃষ্টিশীল হয়ে উঠেন নি, অনেক সৃষ্টিশীল মানুষের রূপকারও তিনি। তাঁর হাত ধরেই শাওন, আসাদুজ্জামান নূর, জাহিদ হাসান, সুবর্ণা মুস্তাফা, মাহফুজ আহমেদ, সেলিম চৌধুরী সহ অনেকেই নিজেকে মেলে ধরেছেন।
গভীর রাতে যখন অফিসের গাড়িতে বাসায় ফিরছিলাম আর গাড়ির রেডিও-তে যখন তাঁর কথাগুলো বলছিল, মনে হচ্ছিল একটা কথাই, আর কখনো বুঝি হিমু নিয়ে বইমেলায় মাতামাতি হবে না, ডাঃ এজাজুল, ফারুক-দের সেই নাটকগুলো তৈরি হবে না, 'আগুনের পরশমণি'-র মতো সিনেমা দেখবো না।
সত্যিই বলছি, একদম দেখতে পারতাম না লোকটাকে। তবুও...
অপছন্দের একজন মানুষ কেমন করে যেন হঠাৎ করেই প্রিয় হয়ে যায়। :'(
হুমায়ূন আহমেদ-এর এক একটা বই বলতে গেলে আমাকে পুনর্জন্ম দিয়েছিল।
কৈশোরের সেই আবেগ-জর্জরিত দিনগুলোতে হুমায়ূন হৃদয়ের এত গভীরে জায়গা নিয়েছিলেন তা থেকে তাঁকে আর সরাতে পারি নি।
একসময় তাঁর বই গ্রোগাসে গিলতাম। যদিও তাঁর পরবর্তীকালের বইগুলো একঘেয়ে লাগতো। সেটা হয়তো বয়সের কারণে। তখন আর পড়তাম না, কিন্তু তাই বলে কখনো তাঁর প্রতি আমার বিরাগ জন্মে নি। তার বই দেখলে আমি আজো সযত্নে তুলে রাখি। কারণ যে বই আজ আমাকে নাড়া দিচ্ছে না, আমি জানি, সে-বই অনেকের হৃদয়ে উথাল-পাতাল ঝড় তুলে যাচ্ছে। আমি কী করে সেই বইকে অবহেলা করি!
নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, আগুনের পরশমণি, এইসব দিনরাত্রি, নবনী, গৌরীপুর জংশন আরো অনেক অনেক বই আমাকে আবেগের যে স্রোতে ভাসিয়েছিল সেই স্নিগ্ধ কৈশোরে তার সাথে আর কিছুর তুলনা চলে না। এক একটা বই পড়তাম আর সেই বইয়ের ঘোর কাটাতে আমার অনেকদিন লাগতো। তাঁর হিউমার আমার অদ্ভুত রকম ভালো লাগতো। হাসির উপাদানের কোনো অভাব ছিল না তাঁর বইয়ে। যে বই পড়ে হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যেত, সে একি বইয়ের কাহিনী এত হৃদয়-মথিত করা হতো, এত ট্র্যাজিক হতো যে, অশ্রুর বাঁধ মানতো না। হুমায়ূন আমার অনেকগুলো বিকেলকে বিষণ্ণ করে দিয়েছিলেন। আমার অনেকগুলো রাতকে চোখের জলে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। মেঘ, বৃষ্টি, জোছনা, পূর্ণিমার যে অপরূপ মাহাত্ম্য থাকতে পারে তা আমাকে, আমাদের এক প্রজন্মকে শিখিয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর সৃষ্ট মিসির আলী, হিমুর মত প্রভাববিস্তারী চরিত্র আমাদের মানসপট থেকে কখনো মুছে যাবে না।
এত চমৎকার আর সাবলীলভাবে গল্প বলার আর কেউ রইলো না। আমরা আমাদের সময়ের এক সেরা গল্পকারকে হারালাম।
আমি তেমন একটা পড়ুয়া মানুষ নই। নিজেকে পাঁড় হুমায়ূন ভক্ত বলবো না তবে হুমায়ূনের বই পড়তাম এবং পড়ি। আসলে মধ্যবিত্তের জীবন এতো সুন্দরভাবে অন্য কোনও লেখক ফুঁটিয়ে তুলেছে, ঠিক বলতে পারছি না। তবে আমি সচলায়তনেই এবং অন্য কোথাও কোথাও বলেছি যে তার লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরের সময়ের লেখাগুলোতে সেই প্রথম সময়ের আবেগ পেয়েছি কিন্তু সেই আবেগ কেমন যেনো আমার পাঠক মনে দাগ কেটেছে কিন্তু সেই দাগ রেখে যেতে পারেনি। যেটুকু সময় তাকে পড়েছি, নিজেকে উপলব্ধি করেছি যেনো সেই কাহিনীর একজন হিসেবে। তবে নন্দিত নরকে বা শঙ্খনীল কারাগার, এগুলোর কথা ভোলা যাবেনা। এগুলোই তাকে কালজয়ী লেখকের আসনে বসিয়েছে।
একটা ভিন্নধর্মী বই সম্রাট আমার বেশ ভালো লেগেছে। আফ্রিকার পটভূমিতে লেখা সেই বইয়ের বিদ্রোহী জেনারেলের সাথে আমেরিকান এ্যাম্বেসেডরের সাক্ষাতের বর্ননা জীবনে যে কতো শতোবার দেশী-বিদেশী বন্ধুদের দিয়েছি তা বলে বোঝানো যাবেনা। সেই যে রাষ্ট্রদূত বিদ্রোহী নেতাকে বললো যে আপনার ভয় নেই, আমরা আপনার পিছনে আছি। জবাবে বিদ্রোহী নেতার সেই ঐতিহাসিক উত্তর- সেটাই আপনাদেরকে নিয়ে সবথেকে বড়ো ভয়। আপনারা একসাথে কয়েকজনের পিছনে থাকেন।
আমাদের সবথেকে ছোট ভাইটা হুমায়ূনের এতোবড়ো ভক্ত ছিলো যে আমি মাঝে মাঝেই ভাইকে ঠাট্টা করে বলতাম যে বড়ো হলে তোমাকে হুমায়ূনের একটা মেয়ের সাথে বিয়ে দেবো আর সারাজীবন তার বই ফ্রি পড়তে পারবে।
না ফেরার দেশে হুমায়ূন ভালো থাকুন। তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আহারে নীল হাতি! হিমু তোমার একটা লেখায় পড়েছিলাম, ছেলেবেলায় দুপুরে মা তোমাকে হুমায়ূনের নীল হাতি পড়ে শোনাতো। ওটা শুনতে শুনতে তুমি ঘুমিয়ে পড়তে।
সুজনের নীল হাতির গায়ে শোকের কালোব্যাজ -------------
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
হুমায়ূন আহমেদের প্রতি শ্রদ্ধা। আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা।
হুমায়ূন আহমেদের মহা প্রয়াণে আমিও শোকাভিভূত। তবে মনে করি তিনি সঠিক সময়েই চলে গিয়েছেন। সম্ভবত তাঁর সৃজনশীলতায় ভাটা পড়েছিল।
তার অনেক বই ই আমার প্রিয় কিন্তু শেষের দিকে মনে দাগ কেটে গিয়েছিলো "কবি" আর "অপেক্ষা"।
তার কাছে আমার একট ঋণ আছে। যখন এইচ এস সিতে পড়ি, তখন একটা বই পরেছিলাম "কালো যাদুকর" যেখানে একটা মেয়ের কথা আছে যে অন্ধ। তার ভাই তাকে সবকিছুর বর্ননা দিত, একদিন সে বলল "লাল রঙ" বোনটি জানতে চাইল "রঙ কী?" ভাইটা বহু চেষ্টা করেও তাকে রঙ কী, এইটা বোঝাতে পারল না। রঙ কী, এইটা জানার চেষ্টাতেই মেয়েটার মৃত্যু হয়। বইটা পড়ে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, আমি মরনোত্তর চোখ দান করে যাবো।
একজন মানুষ যেন আমার কর্নিয়াতে রঙ দেখতে পায়, সবুজ ঘাস, লাল সূর্য দেখতে পায়! মরনোত্তর চোখ দান করার এই সাহস বা অনুভূতি হয়েছিল শুধু তাঁর জন্য।
নতুন মন্তব্য করুন