আটক লোকটা উদাস হাসে।
আর দারোগা কিংকর্তব্যবিমূঢ় চৌধারির মেজাজটা কেবল গরম হয়।
লোকটা আড়মোড়া ভাঙে। যেন শীতের সকালে তার মা এসে লেপের নিচে হাত ঢুকিয়ে কান ধরে টেনে বলছে, ওঠ বদমাশ সোনামানিক আমার, ইস্কুলে যাবি না? হেডুর টাকে ঢিল মারবি না? ডাকে পাখি খোলো আঁখি দেখো সোনালী আকাশ। আর সে, আপাদমস্তক গিঁটেল দুষ্কৃতী, লেপের সীমান্ত টপকে নাকটা শুধু বের করে বলছে, আরেকটু! আরেকটু ঘুমাই! হেডুর টাকে চুল এতো জলদি উঠবে না মা গো! আরেকটু ঘুমাই!
কিংকর্তব্যবিমূঢ় চৌধারি বাঘের মতো গর্জে ওঠেন, সেপাই হরকাতুল! আমার বেতটা নিয়ায় রে!
আটক বদমাশ মিটিমিটি হাসে। আরিস্টটলকে দর্শনের আমপারা পড়াতে গিয়ে ওভাবে হাসতেন প্লেটো। সক্রেটিসকে হেমলক গেলাতে গিয়েও ওভাবে মিটিমিটি হেসেছিলো কে যেন। মোনালিসার হোমিওপ্যাথি হাসির সাথে কবিতা-লিখে-পদার্থবিজ্ঞানে-নোবেল-পাওয়া-কবি ইউছুপ কুসীদিয়ার মুখ উপচানো হাসিকে যোগ করে দুই দিয়ে ভাগ করলে এমন মিটিমিটি হাসি পাওয়া যায়।
কিংকর্তব্যবিমূঢ় চৌধারির ঘরে ঘুলঘুলি দিয়ে রোদ এসে ঢোকে। সে রোদে ঝিকমিক করে ওঠে আটক বখাটের একটা সোনালি দাঁত।
কিংকু চৌধারি দাঁতে দাঁত পিষে ফুলকি ছোটান। "বেটা সাংবাদিক কোথাকার!"
বদমাশটার মুখের হাসি মলিন হয়ে যায় গালি খেয়ে। বিয়েবাড়ির ঝলমলে আলোকবাহারের জায়গায় পানের দোকানের কেরোসিন ল্যাম্প মিটমিট করে জ্বলতে থাকে যেন। কিন্তু পাকাপোক্ত লোডশেডিং হয় না। খোঁচা খোঁচা দাড়িভরা মুখের খাঁজেভাঁজে রান্নাঘরের তেলাপোকার মতো টিকে থাকে হাসিটা।
কিংকু চৌধারি বলেন, "দাঁড়া বেতটা হাতে আসুক। তোর যেখানটায় রোদ ঢোকে না, সেখানটায় এমন খেদমত খাটবো আজকে যে তিনের নামতা ভুলে যাবি।"
লোডশেডিঙের বদলে শীতের সন্ধ্যার সেনাকুঞ্জ হয়ে ওঠে বিটকেলটার মুখ। সে এবার ঘুলঘুলির রোদে আরো কয়েকটা স্বর্ণখচিত দাঁত ঝলকিয়ে বলে, "এম্পি সাহেবরে ফোন দ্যান!"
কিংকু চৌধারি আড়চোখে ফোনের দিকে তাকিয়ে ঘোঁৎ করে বলেন, "এম্পি মন্ত্রী বুঝি না আমি। আমি কিংকু চৌধারি, ফোনে কথার আগে মারি, পাঁচশো বেতের বাড়ি।"
লোকটা আবার আড়মোড়া ভাঙে। আর উদার হাতে ঘ্যাঁস ঘ্যাঁস করে চুলকায় অসূর্যম্পশ্য কোন দুর্গম প্রত্যঙ্গে। তারপর বলে, "আচ্ছা। এমনিতেও চুলকাইতেছে। বেতের বাড়ি দিয়াই তাইলে ফোন দিয়েন।"
কিংকু চৌধারি শক্ত মুখে বলেন, "কোন এম্পি?"
লোকটা উদাস মুখে সিলিঙের দিকে চেয়ে বলে, "বেতের বাড়ির আগেই বলতাম, না পরে?"
কিংকু চৌধারি টেবিলে চাপড় মেরে গর্জে ওঠেন, "নাম বল রাস্কেল!"
লোকটা হাসিহাসি উদাস মুখে বলে, "এম্পি আবুল বাছুর দর্শনধারী!"
কিংকু চৌধারি অবজ্ঞার হাসি হাসেন। "এম্পি আবুল বাছুর দর্শনধারী? ছ্যাহ! সে তো পল্লীকুটুম পার্টির এম্পি। ঢালী পার্টি চুন্নু পার্টির কাউকে চিনিস না?"
[চাবিরতি ...]
মন্তব্য
চাবিরতি শেষ হোক।
প্লেটো সক্রেটিসের চ্যালা ছিল, অ্যারিস্টটল ছিলো প্লেটোর চ্যালা।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
শুক্নায় আছাড় খেয়ে পড়ে গেলাম দেখি। ঠিক করি।
কিংকর্তব্যবিমূঢ় চৌধারি বাঘের মতো গর্জে ওঠেন, সেপাই হরকাতুল! আমার বেতটা নিয়ায় রে!
#শেষ পর্যন্ত কিংকু চৌধুরী তুমি নিজে নিজেই গোয়েন্দা ঝাকানাকার দায়িত্ব পালন করছো, বেশ, জয়তু চৌধুরী
#সমাধান দেখার অপেক্ষায়
চাবিরতি আবারো?
হিম্ভাই, গাছের মগডালে তুলে দিয়ে মই নিয়ে চম্পট দিয়েন না।
হইসে এইবার।
সেহেরির পরে ইফতার বহু লম্বা সময়!
'উদাস হাসে' পড়ে ভেবেছিলাম এবার বুঝি চরম উদাসের পালা। আশা পূর্ণ হলো না। কী আর করা।
অনুপস্থিত কেন? এটলিস্ট একটা ক্যামিও তো দিতে পারত!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
চাবিরতি? কিন্তু চা কৈ!! চায়ের নাম করে লেখায় ফাঁকি দিয়ে পালানোর ফলে আপনার চায়ের পরিণতি কি হয়েছে দেখেন --
ঠিক আছে, আমি বানাইতেছি চা, আপনি বাকিটুকে পোস্ট করেন তো...
****************************************
চা বিরতি শ্যাষের আশায়
তবে আমরাও কিছুমিছু চা খাই
হ, আসেন, লেখক যতক্ষণ চা-চোট্টা বিড়ালের পিছনে ধাওয়া করতে ব্যস্ত, আমরা আমরা ততক্ষণে কিছু মিছু চা খেয়ে ফেলি। ৪ কাপ বানাচ্ছি, অন্যরাও জয়েন করতে পারেন (লেখক লেখা শেষ না করলে তার ভাগে জুটবে না) --
****************************************
প্রথম জাপানী মহিলার মতো করেই বোধহয় হিম্ভাই চা খান। তাই উনার এই চাপান আর শেষ হয় না। আমি যাইগা।। ঘুম লাগছে।
ইন্ডিয়ান চার ভিড্যুটা ব্যাপক লাগছে। হাস্তে হাস্তে শেষ!!
- চাবিরতির আল্টিমেটাম চলিতেছে...
ভাই কী চা দিয়া গোসল করতেছেন নাকি?
এই চা বিরতি কি বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলের বিজ্ঞাপন বিরতির মতো ? তাহলে আজ আর নাই খুঁজি।
হিমুদা আপনি তো কালো হয়ে যাবেন
****************************************
নতুন মন্তব্য করুন