কুসুমপুরে ভাত ছিলো না পাতে
আধেক বছর রয় না টাকা হাতে
নিদ আসে না গরিব বাবার চোখে
আঁধার ঠেলে সে চোখ জ্বলে রাতে
অভুক্ত ভাই ঘুমের ঘোরে কাঁদে
নিজের কপাল দুষতে থাকে মায়
কুসুমপুরে আমার ঘরের কাছে প্রকাণ্ড এক আকাশ দেখা যায়।
শহর শুধু গ্রামের গরিব টানে
উপড়ে শেকড় নিজের কাছে আনে
শহরভরা আমার মত মেয়ে
আমার মতোই তারাও ঠিক জানে
কুসুমপুরে হবে না আর ফেরা
কারখানাতেই ঘুরিয়ে যাবো চাকা
কাজের শেষে বস্তি-মেসে ফিরি, টিনের ছাদে রাতের আকাশ ঢাকা।
সকাল থেকে রাত খেয়ে নেয় কাজ
আগামীকাল নিঃস্ব করে আজ
যন্ত্র হয়ে যন্ত্র চালাই শুধু
তূণের ভেতর বন্দী তীরন্দাজ
তৈরিপোশাক বাণিজ্য রমরমা
আমার তবু বেতন পড়ে বাকি
আকাশঢাকা বস্তি-মেসের ঘরে, যন্ত্র হয়ে চুপটি পড়ে থাকি।
শহর তবু হঠাৎই এক দিন
আগুন লাগায় তত্ত্বনোটিশহীন
কারখানাতে একটি সরু সিঁড়ি
সবাই বোঝে, বাঁচার আশা ক্ষীণ
আমাকে তাই আরেক আমি এসে
মাড়িয়ে গিয়ে দোরের দিকে ছোটে
বাহির থেকে বন্ধ কলাপসিবল গেটের কাছে আমার মাথা কোটে।
ইঁট আর লোহার বন্ধ কারাগারে
শহর আমায় পুড়িয়ে শুধু মারে
একটা আমি কয়লা হয়ে জ্বলি
আরেক আমি ঘা দিয়ে যাই দ্বারে
মরার আগে খুব অভিমান লাগে
পূর্ণ না হয় বাসনা একটাও,
তোমরা আমায় একটু তুলে ধরো, মানুষ ভেবে আকাশ দেখতে দাও।
মন্তব্য
দ্বিতীয় ট্যাগ, কপি দ্যাট।
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
চমৎকার লিখেছেন।
ওদের আদৌ কি কোনদিন আকাশ দেখা হবে? নিজের দায় এড়াতে পারছি না, এমন খবর
পড়ে বার বার আবেগ আপ্লুত হই, কিন্তু কিছুদিন পর সব ভুলে নিজের আকাশ নিয়েই ব্যস্ত
হয়ে যাই।
নাদানপোলা
জীবন ধর্মী কাব্য চর্চা চিরজীবি হোক।
ফারাসাত
পড়ে মন খারাপ হল, এটুকুই তো!
আমরা এখন ঐ 'অতি-মানব' হওয়ার ঐ মাত্রায় পৌঁছে গেছি যেখানে এসব ঘটনা 'পেছনে ফেলে' দিব্যি 'এগিয়ে' যেতে পারি!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
খুব খারাপ লাগলো কবিতাটা পড়ে। এমন দিন কি আসবে না, যখন এমন কবিতা লেখার দরকার পড়বে না?
নিচের দুটো বাক্য বেশি ভালো লেগেছে, আপনার মুন্সিয়ানাকে কুর্নিশ।
অসাধারণ।
-
একটা অপরাধবোধ কাজ করে - ভাল লাগেনা কিছুই তারপরে আর
কয়লাখনির কুত্তার বাচ্চার চিঠি
সাহস তোদের বড্ড বাড়াবাড়ি
আমার কাছে চিঠি লিখিস, বটে!
নাহয় মরে লাশ হয়েছিস কাল
আজই তোদের মুখে বুলি ফোটে?
জানিস আমি কাদের সাথে চলি?
তোদের মতন হাজার লক্ষ কোটি
পুড়িয়ে বা পায়ের তলায় মেরেও সবার সামনে বুক ফুলিয়ে হাঁটি
আমার খনি চাকুরী না দিলে
কোথায় পেতি ভাত কিংবা কাপড়
পড়েই থাকতি কুসুমপুরের গ্রামে
মাতব্বরের খেয়ে লাথি চাপড়
সকাল বিকাল রাতের তিন বেলা
হুজুর হুজুর করবি কোথায় তা না
মরে গিয়ে বোঝা বাড়াস শুধু, চুপ না থেকে করিস ঘ্যানা প্যানা
বাংলাদেশে ব্যবসা বড়ই কঠিন
মন্ত্রী নেতা সবাই হা করে
আমার দিকে তাকিয়ে থাকে কখন
বস্তা ভরে টাকা দেব ঘরে
তবে কি জানিস নিয়ম বড়ই ভালো
টাকা দিলে সবাই কেনা কুকুর
আমার বিপদ দেখলে ছুটে আসে, যখন তখন হোক না রাত বা দুপুর
আমি প্রভু আমি যা খুশি করি
মরিস বাঁচিস তার ধার না ধারি
ষোল ঘন্টা কাজ যদি না পারিস
ইচ্ছে হলেই বিদেয় দিতে পারি
তাইতো বলি যদি বাঁচতে চাস
আমার মরণ খনিতে কাজ কর
শরীর ভেঙে যদিও না মরিস, মাঝে মাঝে আগুনে পুড়ে মর
মানুষ হয়ে বাঁচতে চাস বুঝি
শুনেই কেমন পেয়ে গেল হাসি
তোদের যদি মানুষ বলে ধরি
নিজেকে কি বলে ডাকব? খাসী?
তোদের মত দু চার কোটি ময়লা
হারিয়ে গেলেও কিস্যু আসে যায় না
এখন যা ভাগ, মখা বসে আছে, মেটাতে হবে তার কতগুলো বায়না
কয়লাখনির চিঠি আর তার জবাব দুইটাই লাজয়াব হয়েছে।
সকালবেলা কম্পিুটারে বসেই মেজাজ খারাপ ছিল দেশে শিবিরের তান্ডব দেখে।
কবিতাগুলো পড়ে মনটাও খারাপ হয়ে গেল।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
অসাধারণ
হ, সব চোরের দল। আগুন লাগলে প্রাণ বাঁচানো বাদ দিয়ে খালি জিনিস চুরির মতলব করে।
..............................................
(কবিতা চমৎকার)
_____________________
Give Her Freedom!
ঈয়াসীন
এই ব্যাপারটার প্রতিকারে কী করা যায় অনেক ভেবেও কোনো আইডিয়া পাচ্ছি না। খুব হতাশ লাগছে।
এখন যেভাবে চলছে তাতে সরকার দায়িত্বশীল হবে, মালিকপক্ষ তার শ্রমীককে মানুষ ভাবতে শিখবে এমনটা নিকট ভবিষ্যতে হওয়ার আশা নেই। তাহলে সমাধান কী?
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
................................................
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
ইঁট আর লোহার বন্ধ কারাগারে
শহর আমায় পুড়িয়ে শুধু মারে
একটা আমি কয়লা হয়ে জ্বলি
আরেক আমি ঘা দিয়ে যাই দ্বারে
মরার আগে খুব অভিমান লাগে
পূর্ণ না হয় বাসনা একটাও,
তোমরা আমায় একটু তুলে ধরো, মানুষ ভেবে আকাশ দেখতে দাও।
চমৎকার কবিতা।
শুভকামনা রইল।
তুহিন সরকার
তূণের ভেতর বন্দী তীরন্দাজ>>> একঠু বুঝাইয়া খন, এক নি:শ্বাসে পইড়ছি।।সেরাম।। এদের নিয়া লেখে না কেউ কেন? সবার জন্য ভাত আর ওগো লাইগা ফ্যান!! (স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট )
ইঁট আর লোহার বন্ধ কারাগারে
শহর আমায় পুড়িয়ে শুধু মারে
কবিতার পোস্টে কবিতার আঙ্গিক-সৌন্দর্য-রস-ছন্দ ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হবার কথা, কিন্তু এই কবিতাটি এমনসব বিষয়কে ধারণ করেছে যে পাঠকের আর সাধ্য হয়নি ওসব নিয়ে আলোচনা করতে। ইয়াসির আরাফাতের উত্তর-কবিতাটাও লাগসই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ঠিক। বিষয় এখানে এমন তীব্র যে কবিতা কেমন হয়েছে সে খবর গৌণ হইয়ে গিয়েছিল। কালের খাতায় সে বিষয় এখন চলমান শৃঙ্খলের আর একটা গ্রন্থিতে পরিণত হবার পর যখন কবিতার অবয়বের দিকে তাকানোর পরিসর মেলে তখন এ কবিতা একাধিকবার পড়তে পড়তে মনে হয় কি করে কবি এত বেদনা বয়ে এমন কালজয়ী সৃষ্টি করেন।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
নতুন মন্তব্য করুন