সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার মানুষ তিরিশ হাজার টাকা চাঁদা তুলে চার মণ আতপ চালের পিঠা তৈরি করছেন। উদ্দেশ্য, শাহবাগে সমবেত মানুষদের জন্যে এ পিঠা তারা নিয়ে যাবেন।
এ কাজে তিন হাজার টাকা একাই দিয়েছে মণীষা। তার মাটির ব্যাঙ্কটি ভেঙে অনেকদিনের তিলোত্তমা সঞ্চয় সে তুলে দিয়েছে অন্যদের হাতে, যাতে শাহবাগে তারও কিছু অবদান থাকে।
মণীষার বয়স ছয় বছর।
ফেসবুকবন্ধু কামরুলের সৌজন্যে পাওয়া নাম্বার ধরে ফোন করেছিলাম মণীষার বাবাকে। মণীষা তখন ঘুমোচ্ছে, তার বাবা সদ্য কাজ সেরে বাড়ি ফিরেছেন, প্রবাস থেকে কেউ একজন ফোন করে তাঁর মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে চাইছে শুনে তিনিও একটু তটস্থ ছিলেন। ঘুমে ঢলে পড়ে পড়ে কোনোমতে আমার সঙ্গে কথা বলতে এসেছে মণীষা। লম্বা করে সালাম দিয়েছে ভয়ে ভয়ে, কিন্তু যখন বললাম আমি তার একটা মামা হই, তখন সে একটু অভয় পেয়ে কিছু কথা বলেছে।
জানতে চাইলাম, তুমি যে তোমার ব্যাঙ্কটা ভেঙে ফেলে পিঠা বানাতে টাকা দিলে, কেন দিলে মামণি?
রিনরিনে কণ্ঠে উত্তর ভেসে এলো, কারণ আমি রাজাকারদের ফাঁসি চাই।
বললাম, শাহবাগে যাবে? মণীষা একটু অনুযোগের সুরে বললো, আমি তো ছোটো!
ওকে খুব বেশিক্ষণ না জ্বালিয়ে তার বাবার কাছে ফিরে এলাম। বললাম, তাঁর মেয়েটির জন্য আমি আর আমার মতো আরো অনেকে গর্বিত। মণীষা আরো বড় হবে, বাংলাদেশটার ভার ও আর ওর মতো আরো অনেকে ভাগ করে নেবে, তারা এই দেশটাকে আরো সুন্দর করে গড়ে তুলবে। মণীষার তৃপ্ত বাবা বললেন, আপনারা দোয়া করবেন ওর জন্যে।
মাঝে মাঝে লটো খেলি, মিলিয়ন মিলিয়ন ইউরো জেতার দুরাশায়। মেলে না। আজ ভোরে মণীষা নামে সিরাজগঞ্জের এই ছয় বছরের ছোট্ট মেয়েটিই লটারিতে মিলিয়ন ইউরো জেতার গভীর আনন্দ এনে দিলো আমার মনে।
বাংলাদেশকে নিয়ে কখনো আশা হারাবেন না আপনারা। কখনোই না।
মনীষার জন্য ভালোবাসা আর শুভকামনা। এমন মনীষারাই আমাদের আশা।
মন্তব্য
মণীষার মতো শিশুরাই আমাদের আশাগুলোকে জিইয়ে রাখে। আমরা যারা চল্লিশ পেরিয়েছি, জানিনা কতোটুকু বিশাল পরিবর্তন দেখে যেতে পারবো আগামী ২০-২৫ বছরে। কিন্তু আমি দৃঢ়ভাবে বিশাস করি মণীষাদের প্রজন্ম এমন একটা বাংলাদেশ গড়বে যেমনটি আমাদের পূর্বপুরুষের দেখতে চেয়েছিলেন এবং আমরা দেখতে চেয়েছি। আমিও এই মামনিটার জন্যে একটা বই পাঠাতে চাই।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
কুর্নিশ মনীষাকে।
মনীষার মত ছয় বছরের শিশুর যে বোধ সেটা আমি আমার অনেক ত্রিশ ঊর্ধ্ব পিএইচডি করা তথাকথিত জ্ঞানীদের মাঝে দেখি না। কঠিন কঠিন ইংরেজি শব্দ বলে যুক্তি দিয়ে বলে দেয়, চল্লিশ বছর আগের ঘটনা নিয়ে এরকম মাতামাতি করা ইররেলেভেন্ট। এইরকম জ্ঞানীদের মুখে লাত্থি মেরে মনীষার মত মায়েরাই এই ভেঙ্গে পরা দেশটাকে আবার দাড় করাবে এই স্বপ্ন দেখি, দেখে যাবো আজীবন। এই দেশের জন্য বুদ্ধিজীবীর চেয়ে হৃদয়জীবী মানুষ অনেক বেশী প্রয়োজন এখন।
-মনি শামিম
মনীষার জন্য
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
বেচে থাকো মা - মানুষ হও
ধন্যবাদ হিমু ভাই। এমন মনীষা আছে বলেই আমরা পথে। সময় নেই তাই সচলে অনুপস্থিতি। এমন অজস্র গল্প জমা হয়ে আছে পাঁজরের ভেতরে। অনলাইন প্রচারণাগুলোর দিকে একটু খেয়াল রাখবেন। যদিও একাধিক ইউনিট কাজ করছে।
স্বয়ম
মনীষার কথা শুনে গায়ে কাঁটা দিল। গর্বে বুকটা ভরে গেল। কিছু জ্ঞানপাপীরে কষে গালি দিলাম, মুখে একদলা থুথু এল। কিন্তু মনীষার খাতিরে চুপ করে গেলাম। কে আটকাবে এই দেশকে, যতদিন মনীষারা থাকবে?
মনীষার সাথে কথোপকথন কি বেতারায়তনে আসবে হিম্ভাই? দেন না প্লিজ। এই মহীয়সীর কথা শুনতে ইচ্ছে করছে।
কল কোয়ালিটি ভালো ছিলো না বলে আর অডিও দিইনি।
কোয়ালিটি খারাপ হলেও পারলে বেতারায়নে দিয়েন। বাচ্চাটার গলা শুনতে চাই।
মনীষা এবং মনীষার মতো আরো যারা এই আন্দোলনকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করছেন তাদের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। জয় হবেই। জয় বাংলা।
, ভাই আমার চোখের জল বাধ মানছে না!! আমি আবার বিশ্বাস ফিরে পেয়েছি আমার বাঙালি জাতির উপর। অনেক অনেক ধন্যবাদ এই অসাধারন ঘটনাটি তুলে ধরার জন্য।
এই পথ প্রান্তর দুস্তর দুর্গম
সাথে তবু অগনিত সঙ্গী।।।
---ঈয়াসীন
দুপরে অগ্নি শিখা দেখে কাঁদলাম, আবার মনীষার কথা জেনে অশ্রু ধরে রাখতে পারলাম না। মনীষা মা কে বই পাঠান যাবে কার কাছে কিভাবে একটু জানান প্লিজ।
বেঁচে থাকা কত আনন্দের আবার! মণীষার জন্য শুভকামনা। মণীষাকে উৎসাহ দেয়ার জন্য কার সাথে কিভাবে যোগাযোগ করবো?
আজকে শাহবাগের একটা ভিড়ে এক শিশু দীর্ঘক্ষণ স্লোগান দিলো, দৃপ্ত গলা। শাহবাগের সবচাইতে বড় প্রাপ্তি এই শিশুদের ভেতর জাগ্রত চেতনা, ২০২০ কেন, ২০৫০ যেয়েও জামাতের ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন পূরণ হবেনা। জয় বাংলা!
হিমু ভাই, কলরবে নিজ থেকে মন্তব্য করতে পারছি-না, আপনার দুইটা মন্তব্যের ভেতর এটি হয়তো-বা প্রাসঙ্গিক নয়, চেষ্টা করলাম সেখানেও মন্তব্য করা যাচ্ছেনা। ইকনমিস্ট এর একটা রিপোর্ট শেয়ার করার জন্য পাঠানো হয়েছে লন্ডন থেকে, পাঠিয়েছে আমাদের বিদেশী বন্ধুরা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য। এখানে দিলাম, যদি পছন্দ না হয় মুছে দিয়েন। http://www.economist.com/news/asia/21571941-huge-protest-capital-against-islamist-party-and-its-leaders-mass-dissatisfaction?fsrc=rss%7Casi
আজকে শাহবাগের একটা ভিড়ে এক শিশু দীর্ঘক্ষণ স্লোগান দিলো, দৃপ্ত গলা। শাহবাগের সবচাইতে বড় প্রাপ্তি এই শিশুদের ভেতর জাগ্রত চেতনা, ২০২০ কেন, ২০৫০ যেয়েও জামাতের ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন পূরণ হবেনা। জয় বাংলা!
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
কৈরী ডাক্তারকে একটু টোকা দিয়েন বস, উনি কোঅর্ডিনেট করছেন ব্যাপারটা। তবে বেচারার শরীরটা ভালো না, একটু বিলম্ব হতে পারে।
কুর্নিশ মনীষাকে।
সত্যি বলতে কি কাদের মোল্লার রায় শোনার পর আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। ঘন্টা তিনেক ঝিম মেরে বসে ছিলাম আর ভেবেছিলাম যে আর কোন দেশে ফিরে যাওয়ার কথা মাথায় আনবো না। বলাই বাহুল্য সে সিদ্ধান্ত বদল করতে ২৪ ঘন্টাও লাগেনি। নিজের ভুল সিদ্ধান্ত দেখে বোকা হয়ে যাওয়ার পরে তা উপভোগ করার মত ঘটনা আমাদের জীবনে খুব একটা ঘটে না; এবার ঘটলো। আমি উপভোগ করছি সেটা।
/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।
অনেক বড় হও মামনি মনীষা।
শাহবাগ তোমার হৃদয়ে থাকুক, তুমি শাহবাগের হৃদয়ে থাকো
এত ভালো একটা খবর যেন মেঘ সরিয়ে সূর্যের আলো দেখা গেল।
জাফর মুন্সী নামে একজন ব্যান্ক কর্মচারী জামাতের হামলায় মারা গেছেন- তিনি চেতনা ধারনা করে তিন মিনিট নীরবতা পালন করেছিলেন তার দুই দিন পরেই জামাতের রড হামলায় আহত হয়ে মারা যান-আশা করি তাকে সাহায্য করবার জন্য এগিয়ে আসবেন- জাফর মুন্সির নাবালক তিন সন্তানের জন্য বই পাঠাবেন!
আসবো। কার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে জানান।
আর ডাক্তার, আপনি একটা টোন বেছে নিন। ঐ টোনে ভবিষ্যতে আমার পোস্টে মন্তব্য করতে আসবেন। সেটা স্বাভাবিক, সরস, সৌহার্দ্যপূর্ণ হলে আপনি আর আমি দুজনই খুশি থাকবো। অযথা সারকাজম করতে আসলে আপনি সমস্যায় পড়বেন। ঠিকাছে ভাইয়া?
কেন ভাই টোন তো সব সময় স্বাভাবিক, সরস, সৌহার্দ্যপূর্ণ - সেই ২০০৬ থেকে!
নাও অনটপিক- আমার ফাউন্ডেশনের সব ঠিকানা দেয়া আছে- আশা করি নিজে করবেন এবং অপরকে করতে বলবেন- ধন্যবাদ!!
এখানে লিঙ্ক দিয়ে যান প্লিজ।
অফটপিক: টোনের কথাটা সবসময় খুপ খিয়াল রাখবেন ভাইয়া।
আপনে টোন নিয়া হুদাই টেনশন নিতাসেন- টোন সকল সময় চিনির মত মিহি!! আই এসিওর ইউ অব দ্যাট-
অনটপিক: আপনাদের ব্লগে লিনকের নিয়ম জানিনা তাই দেই নাই- এই লিন্কে গেলে সব পাওয়া যাবে-
http://www.jugantor.us/2013/02/15/news0221.htm
ভিসা-পে প্যাল এবং ব্যান্ক ট্রানসফারের বন্দোবস্ত আছে- আপনার এবং আপনার বন্ধুদের সাহায্য প্রার্থনীয়
অশেষ ধন্যবাদ। যুগান্তরের যে লিঙ্কটি দিলেন সেটি পড়তে পারলাম না, সব মহেঞ্জোদোড়ো দেখাচ্ছে। আমারব্লগে দেখলাম একটা পোস্ট এসেছে, সেটার লিঙ্ক দিলে বোধহয় কাজ আরো সহজ হতো।
প্রক্সি দিয়ে না ঢুকলে সচলায়তনে মন্তব্যের বক্সের ওপর টুলবার দেখা যায়, লিঙ্কের অপশনসহ। আপনি ইদানীং সব কাজই জটিল করে করছেন।
বয়স হয়ে গেলে কপি পেসট কি আর আগের মতো হয়- যাই হউক লিন্কটা ঠিক করে দেন মেহেরবানী করে!!
http://www.amarblog.com/amarfoundation/posts/159601
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
চোখে পানি চলে এলো হিমু দা। মনীষার জন্য মস্তক শ্রদ্ধায় অবনত। মনীষার মনে যে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে সেই আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ুক আমাদের দেশের প্রতিটি মানুষের মধ্যে।
বাংলাদেশকে নিয়ে কখনো আশা হারাবেন না আপনারা। কখনোই না।
আশা হারায় নি। এটাই একমাত্র সম্বল হিমু দা। সকল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই হবে।
মনীষা'রা আছে বলেই এখনো স্বপ্ন দেখি প্রবলভাবে ।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
বাংলাদেশকে নিয়ে কখনো আশা হারাই না
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বাংলাদেশকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করিনা। ধন্যবাদ মনীষা। ধন্যবাদ হিমু ভাই।
মণীষাদের কাছে নিশ্চিন্তে রেখে যেতে পারবো রিলে রেসের ব্যাটনটা।
আমরা হেরে যাবো না। আমরা শেষ হয়ে কখনোই যাই নি। অপরিসীম ভালবাসা এই দেশের জন্য। অনেক অনেক বেশি আশাবাদ আমাদের তরুণ প্রজন্ম এবং ভবিষ্যত প্রজন্ম নিয়ে। আমরা পারবো পৃথিবীর বুকে জায়গা করে নিতে!
মনীষার জন্য ভালবাসা আদর।
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
মনীষাকে
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
মনীষাকে
[quote শাহবাগের সবচাইতে বড় প্রাপ্তি এই শিশুদের ভেতর জাগ্রত চেতনা]
শিশিরকনার সাথে একমত।
রাত একটার সময়েও দেখেছি দুই/তিন বছরের বাচ্চা বাবার কাধে উঠে স্লোগান দিচ্ছে। এই জিনিসটারই দরকার ছিল। এ কয়দিন শাহবাগ গিয়ে গিয়ে একটা জিনিস নিশ্চিত হয়েছি আমরা ফুরিয়ে যাইনি , যাবও না।
মনীষার ঠিকানা জানতে চাই,ওকে বই পাঠাতে চাই। সচলে কি মেইল করব?