কয়েকদিন আগেও এটা ছিলো একটা স্কুল। এর মাঠে সকালে ঘুম ঘুম চোখে সারি বাঁধা ছেলেমেয়েদের সামনে দপ্তরীর হাতের দায়সারা টানে আকাশে এক মন্থর ভূবন চিলের মতো ডানা মেলতো সবুজের মাঝে লাল একটি বৃত্ত, সহকারী প্রধান শিক্ষকের গম্ভীর আদেশের পর অনেক বিপথগামী কণ্ঠের মাঝে পাশের আমগাছের পাতায় কাঁপন ধরাতো কী শোভা কী ছায়া গো কী স্নেহ কী মায়া গো।
কী আঁচল মৃত্যু এসে বিছিয়ে দিয়ে গেলো স্কুলের মাঠে। এখন আর এটি মাঠ নেই, শবাগারে পরিণত হয়েছে। একটু পর পর সেনাবাহিনীর ছাপ্পড় মারা চটের বড় ব্যাগে বাহিত হয়ে মাঠে এসে যোগ হচ্ছে গলিত শব।
মৃত্যু এসে স্কুলের ঘন্টায় সশব্দ টোকা দিয়ে জানিয়েছে, ছুটি। আগামী কয়েকদিন আর আসতে হবে না স্কুলে।
বাতাসে গলিত লাশের তীব্র গন্ধ একটু পর পর স্রোতের টানে ছুটে যাচ্ছে স্কুলের বারান্দায় জবুথবু হয়ে বসে থাকা মানুষের দিকে। এক একটা মৃতদেহ স্কুলের মাঠে এসে জড়ো হলে এরা টলোমলো পায়ে উঠে দাঁড়ায়, ছুটে যায়। লাশের গন্ধে স্থবির হয়ে পড়া আম গাছের পাতা ক্ষীণ আন্দোলনে জীবনে শেখা একমাত্র গানের কলির স্মৃতি মন্থন করে, কী স্নেহ কী মায়া গো।
ধ্বসে পড়া ভবনটি তার আলিঙ্গন থেকে একটু একটু করে অর্গল খুলে উগড়ে দিচ্ছে মৃতদেহ। বৈশাখ তার সবটুকু দাপট নিয়ে অণুজীবের কাজ সহজ করে তুলেছে, উদ্ধারকর্মীদের হাতের দস্তানায় উঠে আসছে গলে যাওয়া চামড়া আর মাংস। চটের ব্যাগ থেকে বেরিয়ে আছে শবের প্রকাশিত অস্থি, তার কোনোটিতে সস্তা স্বর্ণানুকৃতির চুড়ি, কোনোটিতে কালচে হয়ে আসা নূপুর, সস্তা প্লাস্টিকের ডিজিটাল ঘড়ি। স্কুলের বারান্দা থেকে উঠে আসা মানুষেরা ঠাহর করতে পারে না, এই গলিত মাংসের মাঝে হলদে হাড়গুলোর কোনটা তাদের কন্যার, স্ত্রীর, বোনের।
তারপরও একটি বালিকা চিনে ফেলে তার মাকে। জীবন যে রূপবৈভিন্ন্য তৈরি করেছিলো, গার্মেন্টস কারখানার চাকরি আর ধ্বসে পড়া দালান মৃত্যুর তুলি বুলিয়ে সেই সামান্য বিভেদ ঘুচিয়ে চটের ব্যাগগুলোতে সব গলিত মাংসের রং খয়েরি আর সব হাড় হলুদ রঙে রাঙিয়েছে, কিন্তু সালোয়ারের জড় নকশায় বিশেষ পরিবর্তন আসেনি। কাপড় দেখে অভুক্ত মেয়েটি অস্ফূট কণ্ঠে গুঙিয়ে ওঠে, মা, ও মা, মা? তার সঙ্গে আসা মধ্যবয়স্কা নারী মুখে কাপড় গুঁজে নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকেন, বালিকাটি তাকে জড়িয়ে ধরে স্কুলের পাশের আমগাছের পাতাকে শেখায় আরেকটি নতুন সুর। বাতাসে লাশের জমাট গন্ধ কেটে যায় মেয়েটির কান্নার সুরে, স্কুলের মাঠে বাতাস কেঁপে কেঁপে বলে, মা, ও মা, মা গো। মধ্যবয়স্কা মেয়েটিকে বুকে জড়িয়ে ধরে অব্যক্ত শব্দে ফোঁপায়। হয়তো মনে মনে ভাবে, আরো অনেক সালোয়ার থাকা উচিত ছিলো নিহত যুবতীর, তার কন্যার স্মরণশক্তিকে পরাস্ত করার মতো সংখ্যায়। আলনায় রাখা মায়ের সবক'টি সালোয়ারের নকশাই বালিকার চেনা। সে ভুল করে শুধু দেখে ফেলেছে, করোটির ওপর গলিত মাংস হয়ে যাওয়া মায়ের মুখটি।
আমগাছের পাতা শিহরিত হয় কান্নার শব্দে। মা, তোর বদনখানি মলিন হলে?
বালিকাটি তার আত্মীয়াকে জড়িয়ে ধরে ফিরে যায় কম্পিত শরীরে। বাকিরা কান্নার সুযোগ খোঁজে চটের ব্যাগ থেকে চটের ব্যাগে। দূরের গ্রাম থেকে আসা পিতা জানেন না, কন্যার সালোয়ার কেমন, তাই একের পর এক গলিত মুখ দেখে চলেন। একটিও তাঁর কাছে পরিচিত মনে হয় না। তাঁর কন্যাটির ঈষৎ স্ফূরিত ঠোঁট, বাঁশির মতো নাক, হনুর উঁচু হাড়কে তিনি খুঁজে পান না। তাঁর বালক পুত্রটি স্কুলের মাঠে একটি গাছের ডাল কুড়িয়ে পেয়েছে, সে বোনকে চটের ব্যাগের ভেতর খোঁজে না, একটু পর পর তেড়ে যায় আমগাছের ডাল থেকে নেমে আসা রোমাঞ্চাভিলাষী কাকের দিকে। বাতাসে শবের গন্ধ এলাকার অনেক কাককে আমগাছটির নিয়মিত সান্নিধ্যচারী করে তুলেছে। যখন লাশের অধিকার বুঝে নিতে সমাগত মানুষেরা আবার ফিরে যাবে স্কুলের বারান্দায়, কাকগুলো হালকা চক্কর দিয়ে, কয়েক পা নেচে একটু একটু করে ফিরে আসবে পছন্দসই শববাহী ব্যাগের ওপর, সুযোগ পেলে দুয়েকটা ঠোকরও দেবে।
বালকটি গতকাল রাতের পর আর কিছু খায়নি। তার অভুক্ত শরীরে সঞ্চিত ক্রোধ কেবল হাতের পেশীকে সচল রাখে, সে একটু পর পর দুর্বল পায়ে ছুটে গিয়ে লাঠি নেড়ে বলে, হেই হুশ হুশ যা যা যা।
টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকরা অনেকেই স্পট থেকে বিদায় নিয়েছে বাতাসে লাশের গন্ধ প্রকট হওয়ার পর। কয়েকজন রয়ে গেছে, তারা দূরে পায়চারি করছে ক্লান্ত পায়ে, মাঝে মাঝে সেনাবাহিনীর নিম্নতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছে, কিংবা হঠাৎ উপস্থিত কোনো হোমরাচোমরার দেখা পেলে ছুটে যাচ্ছে মাইক হাতে, পেছন পেছন অবসন্ন পায়ে ছুটছে তাদের ক্যামেরাচালক। মধ্যবয়স্কা পোড় খাওয়া উচ্চপদস্থ এক নারী সাংবাদিক স্কুলের মাঠে নাকে ওড়না পেঁচিয়ে নিষ্কম্প দাঁড়িয়ে আছেন কেবল, বাতাসে লাশের গন্ধ তাকে বিচলিত করার জন্যে যথেষ্ট নয়। হাতের ইশারায় সঙ্গী ক্যামেরাচালককে বালকের কাক তাড়ানোর দৃশ্য ধারণ করতে বলেন তিনি।
বালকটির তাড়া খেয়ে কাকগুলো প্রথমে নাচে তিড়িক তিড়িক, তারপর শেষ মুহূর্তে বাতাসে ডানা ভাসিয়ে উড়াল দেয়। তাচ্ছিল্যমাখানো কা কা ডাক ডাকে দুয়েকটা কাক। নারী সাংবাদিক চুপচাপ সে দৃশ্য দেখেন। কাকগুলোকে চেনা মনে হয় তার কাছে।
স্কুলের মাঠে বাতাস এসে দোল খায়, লাশের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে বাতাসের হাত ধরে। স্বেচ্ছাসেবী এক তরুণী নাকে মুখোশ বেঁধে পলিথিন ব্যাগ থেকে কর্পূরের টুকরো বার করে এক এক করে সব চটের ব্যাগে ছড়িয়ে দিতে থাকেন।
আরেকটি বালক তার বাবার সঙ্গে চলতে চলতে থমকে দাঁড়িয়ে যায় হঠাৎ। তার বাবা নিষ্পলক চোখে তাকিয়ে দেখে একটি চটের ব্যাগ থেকে বেরিয়ে আসা সালোয়ার। তারপর গলায় ঝোলানো গামছা দিয়ে প্রথমে চোখ, তারপর নাক ঢাকে।
বালকটি তার বাবার হাত চেপে ধরে শুধু। শবের গন্ধে তার চোখের পাতা ভারি হয়ে আসে।
কর্পূর ছড়াতে ছড়াতে এগিয়ে আসা মেয়েটিকে সে হাতছানি দিয়ে ডাকে তারপর। বলে, আপা, এইখানে একটু দেন।
মেয়েটি মুহূর্তমাত্র নষ্ট না করে ছুটে এগিয়ে আসে। তার ব্যাগ থেকে আঁজলা ভরে কর্পূর সে ছড়িয়ে দিতে থাকে ব্যাগটির ওপর। কর্পূরের ভারি, মিষ্টি, ঝাঁঝালো গন্ধ লড়াই করতে থাকে বালকটির সামনে শায়িত গলিত শবের সঙ্গে। নিচু গলায় তরুণী প্রশ্ন করে, উনি কে?
বালক নিম্নস্বরে শুধু বলে, মা।
মেয়েটি ফিরে যাওয়ার আগে আরেক আঁজলা কর্পূর ছড়িয়ে দিয়ে যায়। আমগাছের পাতা কাকের পায়ের ভারে কেঁপে ওঠে, ও মা ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে, মরি হায় হায় রে ও মা।
বালকের পিতা তাকে দুর্বল হাতে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকে স্কুলের মাঠে। ক্ষুধা এসে পরাস্ত করে তাদের শোককে, অভুক্ত পিতাপুত্র শুষ্ক চোখে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকে নিহত গার্মেন্টস কর্মী যুবতীর শবের সামনে। ছড়ানো কর্পূর একটু একটু করে উবে যেতে থাকে বাতাসে।
স্কুলের মাঠে শবের সারিতে রোদ ঢালে আকাশ। আকাশে ঈশ্বর নেই। নেই শকুনও। তারা থাকে আরো দক্ষিণে, দূরে, শহরে।
মন্তব্য
পড়তে পড়তে দম বন্ধ হয়ে আসলো। না পড়লেই ভালো হতো।
সচলায়তন এর বিভিন্ন লেখা অনেক দিন ধরে পড়ছি, অলস বাঙ্গালীর ঐতিহ্য ধরে রেখে কোন দিন হাত মাউস থেকে কীবোর্ড পর্যন্ত যেতে দেইনি। আজ আর পারলাম না।
এই লেখাটা প্রথম আলো ছাপাবেনা, লেখকের হয়ত কর্পোরেট এন্ডোরসমেনট নাই। ঐ ডাল হাতের বালক কখনও হয়ত ফটিকের তারকাখ্যাতি পাবেনা, আর লেখকও ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলা একাডেমী বটতলায় বাকি সব বুদ্ধি বেশ্যার দলের সাথে মাতম মাতাবেনা, কিন্তু এই লেখার মাতম কি শুনবে কেউ?
একমত
কাউকে না কাউকে তো লিখতে হবে।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
তোমার লেখনীর ধারেই হোক কিংবা ঘটনার ভয়াবহতায়ই হোক, মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো।
গার্মেন্টস মালিকরূপী হায়েনাদের কী আসে যায় তাতে? আর সরকারেরই বা কী আসে যায়? অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতা এবং এমপি দেরই এক বা একাধিক গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি আছে। তাদের কোন গরজ দেখা যায়? বিদেশে বাংলাদেশের পণ্য রফতানী বন্ধ হলে তাদের কিচ্ছু আসে যাবে না। আবাল জনগণ এই ×××দের আবার ভোট দিয়ে সংসদে বসাবে।
লেখাটি পড়ে মন খারাপ হয়ে গেল। রানা প্লাজার গলিত লাশ খুব কাছ থেকে দেখেছি। লাশের পচা গন্ধে ভারী হয়ে যাওয়া বাতাসের উৎকট গন্ধ এক সময় নাকে সয়েও গেছে। ছিন্ন ভিন্ন লাশের গলা থেকে বহু কষ্টে তার পরিচয় পত্রটির অস্পষ্ট লেখনি অনেক কষ্টে খুব কাছে এনে পড়েছি। এরপর ব্যাগে পুরে স্কুল মাঠ পর্যন্ত পৌঁছে যেতে দেখেছি।
সেই সব মুহূর্ত আবার যেন চোখের সামনে ভেসে এলো। মন খারাপ থাকা এক একটা দিন।
আমরা স্কুলের এসেম্বলিতে জাতীয় সংগীত গাই, বিভিন্ন উৎসবে-পার্বণে বুকে হাত রেখে সুর মেলাই এই প্রাণের সংগীতে। কিন্তু এ তো জাতীয় সংগীত, এ সংগীত এমনিই বাজে আমাদের জীবনে, এমনকি কণ্ঠে গীত হওয়া ছাড়াই। অধরচন্দ্র স্কুল মাঠে এ কয়দিন এমনিই বেজেছে জাতীয় সংগীত, স্কুল বালকদের কণ্ঠ দিতে হয়নি।
জাতীয় সংগীতকে অন্য আলোয় দেখলাম এই গল্পে, বুঝলাম এই সংগীত শুধু সৌন্দর্য-আনন্দ-গৌরবকেই ধারণ করে না, এর ভেতর রয়েছে জাতীয় শোক-লজ্জা-ব্যর্থতাকেও ধারণ করার এক অনবদ্য আর অভাবনীয় শক্তি!
(বি: দ্রঃ গল্পটিতে শরৎ-বিভুতি-মানিক স্টাইলের দীর্ঘ বাক্য লক্ষনীয়, জানি না, হয়ত লেখকের নিরীক্ষা-প্রচেষ্টা বা ওল্ড ফর্মেটকে নাড়াচড়া করার প্রবণতা)।
বাতাস থেকে হয়তো এক সময় লাশের গন্ধ মুছে যাবে-
কিন্তু অসহায় সেই মানুষ গুলোর আহাযারি সারা জীবন আমাদের অপরাধী করে রাখবে।
কসাই মওলানা
কিছু কিছু লেখা মনে হয় না পড়াই ভাল।
লেখা একটু করে আগায়,দম বন্ধ হয়ে আসে,চুল মুঠি করে ধরি কান্না আটকাতে!!
সফল হই না।
সুবোধ অবোধ
..... আমারো
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
শেষ বাক্যটা খুব নাড়িয়ে দিলো।
গল্পটা পড়তে পড়তে বার বার চলে যাচ্ছিলাম অধরচন্দ্র স্কুলের বিশাল প্রান্তরে দেখা মানুষগুলোর কাছে... সেই চোখগুলো এখনো চোখে লেগে আছে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অধরচন্দ্র স্কুলের বাস্তব দৃশ্য যা পারেনি এই লেখাটি তা পেরেছে। আমায় কাঁদাতে।
ভিতরটা ভালো একটা নড়া খাওয়ার পর আর বলার মতো কিছু থাকেনা হিমু, সইতে সময় লাগে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখিনা, দেখি সোহেল রানাকে, ও তার সমজাতীয়দেরকে। ইচ্ছে হয় ওই ভৌতিক আয়নাটাকে ভেঙ্গে চুরমার করে দেই, কিন্তু পারিনা- আমি ওই আয়নার মালিক নই। আতঙ্কে তখন চোখ বন্ধ করে ফেলতে হয়।
যাইহোক, মহাসেনের আঘাতে আমরা আরেকবার ক্ষতবিক্ষত না হওয়ায় একদল শহুরে-সুশীল মানবতাবাদীদের খুব লোকসান হয়ে গেলো। তাদের জন্য রইলো সহানুভূতি।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
থ হয়ে গেলাম।
ক্ষুধা এসে পরাস্ত করে তাদের শোককে,
facebook
বলার মত কোনও ভাষা নেই, শুধু চোখটা ভিজে উঠলো।
দম বন্ধ হওয়া কষ্ট
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
লেখাটি পড়ে শেষ করতে পারলাম না, দুঃখিত
.....কিছু বলার ভাষা জানা নেই।
কিছু কিছু লেখা আসলেই না পড়া ভাল।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-বাংলাদেশে আজ,
যারা ক্ষমতান্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা;
যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই - প্রীতি নেই - করুণার আলোড়ন নেই
বাংলাদেশ অচল আজ তাদের অশ্লীল সুপরামর্শ ছাড়া।
যাদের গভীর আস্থা আছে আজো মানুষের প্রতি
এখনো যাদের কাছে স্বাভাবিক ব'লে মনে হয়
মহত্ সত্য বা রীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা
শকুন, শেয়াল ও দাসব্যবসায়ীদের খাদ্য আজ তাদের হৃদয়।
****************************************
এই ধরণের একটা লেখার কারণে আপনার শাস্তি হওয়া উচিৎ
কেন এইসব লিখেন ? নিজের আবেগকে এতোটা খুঁচিয়ে তুলতে নিজেরই প্রচণ্ড কষ্ট হয়
গল্প পড়ে ঝাপসা চোখে ঝিম মেরে বসে থাকি কিন্তু আর কিছু করি না! কারণ আমিও যে আরো দক্ষিণে থাকি, দূরে, ঈশ্বরের শহরে।
হিমু তোমার গল্পটা পড়ার সময় কর্পূরের গন্ধটা পাচ্ছিলাম
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
দ্বিতীয়বার পড়তে বাধ্য হলাম। কাল হয়তো আরেকবার পড়বো; লেখাটাই এমন।
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
খুবই শক্তিশালী, হৃদয়স্পর্শী একটা "গল্প"!
গল্পটা ঈশ্বর পর্যন্ত পৌছালে ভাল হত। এর চে 'ভয়ঙ্কর' সুন্দর বর্ণনা আর কেমনে দেওয়া সম্ভব?!
মৃত্যু ঘিরে জীবন্ত এক গল্প!
......................
না জানা না শোনা এরকম হাজার খানেক গল্পগুলো জানলে কী অবস্থা হবে তাই চিন্তা করছি...........
_____________________
Give Her Freedom!
বন্ধুর ফেসবুক ওয়ালে লেখাটি দেখে পড়ে ফেললাম । ইশ্ ! কেন যে পড়লাম ? আমাদের দেশের মানুষগুলো এতো অসহায় কেন ! এতো দরিদ্র কেন ! এরা প্রত্যেকেই জানে যে এইসব গার্মেন্টস একেকটা মৃত্যুফাঁদ ... বের হওয়ার কোন প্রশস্ত পথ নাই, আগুন লাগলে পুড়ে মরা ছাড়া গতি নাই, ভবন ভেঙে পড়লে পিষ্ট হওয়াই পরিণতি ... তবু কিচ্ছু করার নাই । ক্ষুধা এসে শোককে ছাপিয়ে যায় । কাজ করতেই হবে ! আবার কোন মৃত্যুফাঁদে জেনে-শুনে-বুঝে মাথা গুঁজে কাজ করে যাওয়াই এদের নিয়তি ।
নতুন মন্তব্য করুন