দিনে আমরা কতটুকু সময় বই পড়ার পেছনে দিই?
অথবা, সপ্তাহে একটা বইয়ের কতটুকু পড়ি? কিংবা, মাসে ক'টা বই পড়ি? বছরে?
বইয়ের পেছনে দেওয়ার সময়টুকু নিমেষেই খরচ করার জন্য অজস্র সুযোগ আমাদের সামনে রয়েছে। হাতে হাতে এখন স্মার্টফোন, আঙুলের এক খোঁচায় যে কোনো সময় ঢুকে পড়া যায় ফেসবুকে, কিংবা ব্লগে, কিংবা কারো সঙ্গে খেজুরে আলাপে কেটে যেতে পারে সময়। বই এখন একটা পেছনের সারির জিনিসে পরিণত হয়েছে, অল্প কিছু মানুষ বই পড়ছেন, আরও অল্প মানুষ বই নিয়ে কথা বলছেন।
এমনটাই হয়তো স্বাভাবিক। কিংবা হয়তো আমার ধারণাই ভুল। হয়তো যানজটে আটকে পড়া মানুষ সুযোগ পেলে বই খুলে বসছেন, অফিসে কাজের বিরতিতে বই পড়ছেন অনেকে, বাড়ি ফিরে টিভি ছেড়ে কথাম্যালায় ভাঁড়ামো না দেখে বই খুলে বসছেন অনেক মানুষ। তেমনটা হওয়াই কি স্বাভাবিক নয়?
যদি না হয়ে থাকে, আমরাই হয়তো অস্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছি। আমাদের কষ্টার্জিত বহুমূল্য অবসর খরচ করে ফেলছি অসার বার্তা আর মূর্খদের শূন্যগর্ভ বাগাড়ম্বরে। আমরা প্রতিটি মানুষ নিজেদের প্রাত্যহিক অভিজ্ঞতার যোগফল মাত্র, বছর শেষে আমরা কি তবে পরিণত হচ্ছি অজস্র কলহ আর মূর্খ গর্জনের স্তুপে?
বই আমাদের মনের জন্যে পক্ষীরাজ। যে পৃথিবী, যে জীবন, যে সময় আমাদের নাগালের বাইরে, বই সেটাই খুলে ধরে, তুলে ধরে আমাদের মনের চোখের সামনে। পৃথিবীতে কোটি কোটি বই প্রকাশিত হয়েছে, এক জীবনে তার সহস্রভাগের এক ভাগ পড়ার সুযোগও আমাদের হবে না। তার প্রয়োজনও নেই। আমাদের অন্তকরণের পরিসীমা আমরা নিজেরাই নির্ধারণ করি। বই আমাদের আত্মবিস্মৃতির আর আত্মবিস্তৃতির একটা বিরাট সুযোগ দেয়, যা আর অন্য কোনোভাবেই পাওয়া সম্ভব নয়।
আসুন, বই পড়ি আর পড়াই। আমরা কোথায় কখন কী খাচ্ছি, কোন সিনেমা দেখছি, কোথায় বেড়াচ্ছি, তার বিস্তারিত সচিত্র বিবরণ যদি সামাজিক যোগাযোগের জালে মণিমাণিক্যের মতো গেঁথে অন্যকে দেখাতে পারি, তাহলে কী পড়ছি, সে কথা কেন জানাবো না? আমাজনের গুডরিডস.কম ঠিক এ কাজের জন্যেই একটি চমৎকার ব্যবহার্য। ফেসবুক বা টুইটার অ্যাকাউন্ট দিয়েও এখানে প্রবেশ করা সহজ। আপনি যে বইটি পড়ছেন, যে ভাবনাটি ভাবছেন পড়ার ফাঁকে, বইয়ের যে কথাগুলো ভালো লাগছে, সবই সহজে তুলে রাখতে পারবেন এখানে, বন্ধুদের জন্যে তো বটেই, ভবিষ্যতে একবার পেছনে ফিরে নিজেকে দেখার জন্যেও।
বই একটা অলীক বাইসাইকেলের মতো। ওতে চেপে আপনি নিজের মনের ভেতরের জমিনটুকু ঘুরে দেখতে পারবেন। বইতে যা লেখা আছে, তার সিংহভাগই আপনার মনের মাঝে ছড়ানো বা সাজানো, শুধু হয়তো কখনও সেভাবে তাকিয়ে দেখা হয়নি। আর যেটুকু আপনার মনের ভেতরে নেই, সেগুলো নতুন দৃশ্যপট তৈরি করে দেবে। গুডরিডস.কম সেই বাইসাইকেলের ঘণ্টার মতো। আপনার বইযাত্রার টুংটাং শোনার জন্যে আপনার বন্ধুরা কান পেতে রয়েছেন।
মন্তব্য
দেশের বাইরে এই চিত্রটাই দেখি। দেশে কিংবা দেশিদের মাঝে খুব কম দেখি। হয়তো আমরা জাতি হিসেবেই অস্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছি
একাউন্ট করা ছিলো কিন্তু কখনো এক্সপ্লোর করা হয়নি। উৎসাহ পেলাম।
বই পড়ার সময় ভাবি প্রতিটি বই সম্পর্কে দু'চার কথা লিখে রাখবো কোথাও। ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। কিন্তু আলসেমিতে কখনোই হয়ে ওঠে না
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
স্কুলে থাকতে আমার এক মামা বলেছিলেন, প্রতিটা বইয়ের সিনপসিস লিখতে। তখন স্মৃতিশক্তি ছিল ভালো। তাই শুনিনি। এখন বুঝি সেটা কত মূল্যবান উপদেশ ছিল। তাই তথাকথিত সৃজনশীলতার ক্ষতি করে হলেও বই এর রিভিউ লিখতে চেষ্টা করি।
দ্যা লাইব্রেরী থিং আর শেলফারি (অ্যামাজনের) ও আগ্রহউদ্দীপক। গুডরিডসকে অ্যামাজন কিনে নেয়াতে খুব দুখু পেয়েছিলাম।
বই আমাদের মনের জন্যে পক্ষীরাজ।
facebook
গুডরিডস একটা প্রিয় সাইট। নিয়ম করে ওখানে যাওয়া হয়।
বাংলাদেশের ট্রাফিক জ্যামের একটা সমস্যা হলো, এটা অসহনীয়। বিশেষ করে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যারা ওঠেন তাদের জন্য। প্রচন্ড ভ্যাবসা গরমে, হাতে অসীম সময় থাকলেও, বই পড়তে মন চায় না। ব্যক্তিগত গাড়িওয়ালারা অবশ্য চেষ্টা করতে পারেন। অবশ্য সারা দুনিয়াতেই আজকাল বইয়ের জনপ্রিয়তায় ঘাটতি যাচ্ছে।
ফ্লেক্সি করে করে যে টাকা খরচ হয়, তার কণা পরিমান দামের গল্পের বই কেনার কথাও কেউ ভাবতে পারেন না। বই পড়লে মানুষ ভাবুক হয়ে ওঠে। আর ভাবুকের চেয়ে অকর্মন্য আর কাউকে ভাবে না দেশের বেশিরভাগ মানুষ। বই এর আনন্দ কষ্ট করে পড়ে গ্রহন করতে হয়। সেই অর্থে, টকশোর ভগর ভগর শোনা অনেক সহজ। দেশে কত মানুষ যে টকশো শোনে, এইটা কল্পনা করা যায় না। এত শুনেও কেউ কিছু শিখছে না। আমাদের উচিত, চমৎকার কিছু টকশো করা। টিভি নাহলেও রেডিওতে। বিবিসি রেডিওর কত নানান রকম টক শো! মানুষ যে মাধ্যমে আটকা পড়েছে, সেই মাধ্যমে ঢুকে গিয়ে তাদের কাছে মেসেজ পৌছে দিতে হবে। বাইরে থেকে ডাকলে কেউ আসবে না।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
গুডরিডসে নিজে যাওয়া পড়ে অল্প, তবে দুয়েকজনের সৌজন্যে যাওয়া পড়েছে- গিয়ে রিভিউ পড়ে আসতাম! ইদানিং ভাটা পড়েছে একটু!
আচ্ছা সচলের সাথে 'গুডরিডস'-এর কোন সংযোগ করে দেওয়া যায় না কোন ভাবে? সচলে তো বুক রিভিউ করেন অনেকেই, সে রিভিউটা হয়ত স্বয়ংক্রিয়ভাবেই গুডরিডসে যোগ হয়ে গেল ঐ বইয়ের সাথে, সে লিংক টা আবার লেখায় থাকল- এমন আর কি! অন্ততঃ সচল পাঠকদের হয়ত 'গুডরিডস'-এ যাওয়ার অভ্যাসটা হয়ে উঠবে এতে!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
আমি আসলে একটা টুল খুঁজছিলাম যেটা ব্যবহার করে ডুপলিকেট বই বের করা যাবে। লাইব্রেরীগুলোতে পুরোনো বই বিক্রি করে খুব সস্তায়। একবার ভুল করে একটা বই দু'বার কিনে ফেলেছিলাম। তাছাড়া বই কেনার সময় ভালো হবে কিনা সেটা কিভাবে বুঝব? গুডরিডস আর লাইব্রেরী থিং এ দুটোর আইফোন অ্যাপ দিয়ে এটা করা যেতে পারে। গুডরিডস বেশ ইউজার ফ্রেন্ডলি দেখে সেটা ব্যবহার করা শুরু করি শেষ মেষ।
বই কেনার আগে গুডরিডসের অ্যাপপ দিয়ে আইএসবিএন স্ক্যান করি। রেটিং চারের কাছাকাছি হলেই ব্যাগস্ত। আগে অ্যামাজনের অ্যাপপ ব্যবহার করতাম। সেটার রেটিং দুই নাম্বারী হতে দেখেছি অনেক বার। তাছাড়া গুডরিডসে প্রচুর ভালো রিভিউও আছে।
বই কেনার আগে একটু করে নিজের প্রোফাইল ঘেঁটে দেখে নেই ব্যাগস্ত বইগুলো আমার ইতিমধ্যে কেনা আছে কিনা।
নতুন যারা গুডরিডস ব্যবহার করছেন তারা মোবাইল অ্যাপপ ব্যবহার করে আপনার ব্যক্তিগত গ্রন্থাগারের বইগুলো স্ক্যান করে নিতে পারেন।
আমার সংগ্রহের অনেক বইয়ের আইএসবিএন নেই, অথবা আইএসবিএন নাম্বারটা দেয়া থাকলেও বার কোড নেই - ওগুলোকে কী ম্যানুয়াল এন্ট্রি দিতে হবে?
হুঁ। আইএসবিএন বা টাইটেল দিয়ে সার্চ করা যায়।
আমি গুডরিডস ইউজ করি, কিন্তু আজকাল লজ্জা লাগে। আমি আসলে এতো বেশি বুভুক্ষু পড়িয়ে যে একবারে অনেক কয়টা বই পড়া শুরু করি। আর লুকজন প্রায়ি আমাকে বলে, হোই মিয়া তুমি এত বই একসাথে পড়তেছো নাকি ভাব নেও? শো অফ কইরো না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
গত মাস দুয়েক ধরে আমি গুডরিডসের একনিষ্ঠ ভক্ত। পড়ুয়াদের জন্য গুডরিডসে অনেক সুবিধাজনক জিনিস আছে। তাছাড়া আলগা ভাব নেওয়ার জন্য চমৎকার একটা জিনিস এই গুডরিডস।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
গুডরিডস সাইটটা চ্রম।
আগে শেলফারি ব্যবহার করতাম, শেলফারি খুব সুন্দর, দৃষ্টিনন্দন ভারচুয়াল বুকশেলফ তৈরী করে দেয়। কিন্তু শেলফারি কমিউনিটি খুব একটা সক্রিয় মনে হয়নি, গুডরিডস সেই তুলনায় বইপড়ুয়াদের ফেসবুক। গুডরিডসের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এটা ফেসবুকের সাথে বেশ ভালভাবে ইন্টিগ্রেটেড, গুডরিডসে কোন বই এড করলে-রিভিউ লিখলে/রেটিং করলে-কোন বই থেকে উদ্ধৃতি লাইক করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেসবুকে চলে যায়, নিউজফিডে এই আপডেটগুলো দেখে অনেকেই ঝিমিয়ে পড়া অন্তরীন পাঠকটাকে জাগিয়ে তুলতে অনুপ্রাণিত হয়(এছাড়া নতুন বইয়ের খোঁজ পাওয়ার ব্যাপারটা তো আছেই)। এই কমিউনিটিতে কয়েকদিন পরপর একের পর এক বই শেষ করে চমৎকার রিভিউ পোস্ট করা দেশ-বিদেশের বোদ্ধা পাঠকদের দেখলে ব্যাপক উদ্দীপনা বোধ করি।
গুডরিডস কমিউনিটিতে বাংলাভাষী পাঠক খুব একটা নাই দেখে ওদের ডাটাবেইজে বেশি বাংলা বই নেই, তবে নতুন ভুক্তি যোগ করা খুবই সহজ। নতুন কোন বাংলা বই শুরু করলে গুডরিডসে আমি সেটার একটা ভুক্তি খুলে ফেলি, ফ্ল্যাপের ভূমিকাটাই বইয়ের ইনফো ফিল্ডে তুলে দিই আর মোবাইলে ছবি তুলে প্রচ্ছদ আপলোড করে দিই। অনলাইন শেলফে বাংলা বইগুলোকে একটু বেশিই সুন্দর লাগে।
Big Brother is watching you.
Goodreads shelf
ভালো লাগলো - আমিও করবো এখন থেকে।
কর্মজীবন শুরু হবার পর থেকে আবিষ্কার করলাম বই পড়ার জন্য একমাত্র সুবিধাজনক যে সময়টা, সেটা হচ্ছে পথে। সকালে কাজে যাবার আগে ঘন্টা খানেক, রাতে ফেরার সময় ঘন্টা দেড়েক। এই সময়টার সঙ্গী হচ্ছে কাগুজে বই বা ই-বুক রিডার, আর চায়ের সাথে টায়ের মত গুডরিডস।
একইসাথে অনেকগুলো বই পড়ে যাদের অভ্যাস, তারা বই এর ভাজে বুকমার্ক রেখে হয়তো মনে রাখেন কোন বই কতখানি পড়া হয়েছে। কিন্তু কাজের চাপে হয়তো ভুলে গেলেন, বুকমার্ক সরে গেল, বা হয়তো একদমই মাথা থেকে হারিয়ে গেল বইটার কথা। পরে একসময় বন্ধুদের সাথে আলাপে হয়তো মনে পড়লো বই এর কথা, আর মনে মনে আফসোস করলেন যে একদমই ভুলে গেছিলেন।
কিন্তু গুডরিডসে যেহেতু মার্ক করে রাখা যায়, কোন বই কত পৃষ্ঠা পর্যন্ত পড়া হয়েছে, ভুলে যাবার পসিবিলি্টি শূন্য হয়ে গেল। আর আরো যেটা আমার খুব খুব ভালো লাগে, প্রতিবার প্রগ্রেস সেইভ করতে যাবার সময় একটা মন্তব্য লিখে সেইভ করে রাখা যায়।
এই ছোট সুবিধাটুকু ভালো লাগার কারণ হচ্ছে, বই পড়তে গিয়ে হঠাৎ কিছু অংশ খুব ভালো লেগে যায়, তখন মনে মনে ডায়রি খুঁজি লিখে রাখার জন্য। পথে তো আর ডায়রি খুলে বসে যাওয়া যায় না, তাই বই পড়তে পড়তে কিছু মনে হলে ফুটনোটের মত গুডরিডসে লিখে রাখলে পরে তা খুঁজে পাওয়া যায়।
তবে গুডরিডসের সবচে সবচে ভালো ফিচার হচ্ছে, বন্ধুদের বই এর তালিকায় নজর রাখার সুবিধা। নতুন কি বই পড়বো এখন যদি ভেবে না পাই, তাহলে পড়ুয়া বন্ধুদের বই এর লিস্টে একটু নজর বুলিয়েই দেখে নেয়া যায় কে কোন বই এখন পড়ছে, আগে পড়েছে, সেই বইকে কয় তারা দিয়েছে।
বন্ধুদের পড়া বই এর সাথে নিজের পড়া বই এর তালিকা তুলনা করার ও একটা উপায় আছে, ফলে দেখা যাবে আপনি হয়তো আসিমভের 'আই, রোবোট' কে উচ্ছসিত হয়ে পাঁচ তারা দিয়েছিলেন, আপনার প্রিয় বন্ধু সেটায় বিশেষ পুলকিত না হয়ে তিন তারা দেঁগেছে। আর কিছু না হলেও ঝগড়ার একটা যুতসই টপিক অন্তত খুঁজে পাওয়া যায়।
বই রেকমেন্ড করার ফিচারটাও খুব ভালো, দেখলেন এক আঁতেল বন্ধু অনেক পাকা পাকা কথা বলে মানবতাবাদ ইত্যাদি নিয়ে, আবার ঠিকই বিশ্বাস করে নিগ্রোরা স্বভাবতই বেশি চোর/ডাকাত হয়। তার পড়া বই এর লিস্টটা একবার দেখে তাকে 'টু কিল আ মকিং বার্ড' পড়ার রেকমেন্ডেশন আপনি গুডরিডসেই দিতে পারবেন।
বই পড়তে আর পড়ার জন্য মানুষকে খোঁচাতে যারা ভালোবাসেন, তাদের জন্য গুডরিডস একটা ঘর-বাড়ি টাইপ জায়গা হয়ে যাবে কোনো সন্দেহ নেই। প্রিয় সাইট নিয়ে পোস্ট পড়ে যারপরনায় খুশি হয়ে গেছি, তাই কাজ ফেলে রেখে বিরাট মন্তব্য লিখে বসলাম।
ধন্যবাদ হিমু ভাই, পড়তে ভালো লেগেছে।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
ভালো রিভিউ।
অন্য আরো দারুণ অনেক কিছুর মত গুডরিডসের সাথেও পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন হিমু ভাই। এই লেখার মন্তব্যগুলোও 'সচলায়তন' এর আগের সময়ের মত লাগল।
।
অসাধারণ!!!
ইয়ে, আমি চরম হিংসুটে আর কঞ্জুস কিসিমের সাদামাটা মানুষ। পৃথিবীতে দুটো জিনিসের ওপরই নিখাদ লোভ বয়ে বেড়াই, একটা বই আর আরেকটা চকলেট। যতো প্রিয় আর কাছের মানুষই হোক, বই ধার দিতে কষ্ট লাগে। পিডিএফ/ ইপাব হলে অবশ্য ভিন্ন কথা।
গুডরিডস ব্যবহার করছি বেশ ক'মাস হলো। নিয়মিত আপডেইট করা হয় না অবশ্য ঠিক, কী পড়েছি... কী পড়ছি। সহপড়ুয়াদের পড়ার ভিত আর দৌড় দেখে মাঝেমাঝে ভয়ে কুঁকড়ে যাই। কত কী পড়ার আছে বাকি!!
ই-রিডার ব্যবহার করি না। নেই বলেই অবশ্য। পাবলিক ট্রান্সপোর্টে বসে বই পড়ার সুযোগ নেই এদেশে, তবু সকালে গোয়ালে যাবার পথে পেপারব্যাক সাইজের বই খুলে বসার চেষ্টা করা হতো মাঝেমাঝে। অল্পই পথ, অলস চোখে এদিক- সেদিক না তাকিয়ে যা দু- চার লাইন পড়া যায় আর কী। তেমনি খুব বেশি প্রিয় বইগুলো নিয়ে আলস্য কাটিয়ে দু-চার লাইনের অখাদ্য রিভিউ নিজের জন্য টুকে রাখার সুযোগটা ঢুঁড়ে দিয়েছে গুডরিডস-ই। প্রিয় বন্ধুটি কি ঠিক একইরকম ভাবছেন বই কিংবা বইগুলো নিয়ে? সেটা মিলিয়ে দেখার, দেখতে গিয়ে দু-কথা জুড়ে দেয়ার সুযোগটাও কিন্তু এখানেই অনায়াস লভ্য।
পোস্টে ।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
পোস্টটা অনেকেরই প্রয়োজন মিটাবে।
এত পড়ে সব্বাই! খুব ভালো একটা পোস্ট
আমার বইপড়ার অভ্যাস পুরা নষ্ট হয়ে গেছে। এখনো রোজ ১-২ টা বই পড়ি ঠিকই। কিন্তু হাল্কা রসিকতার পাতলা রোমান্স ধাঁচের হয় ঃ(
সারাদিন কামলা দেওয়ার পরে ঘুম আনার জন্য এরচেয়ে বেশি কিছু পড়লে হজম করতে পারি না। হয় ঘুম হয় না অথবা দুঃস্বপ্ন দেখি। আমি এখন বই পড়ি অনেকেই যেভাবে হিন্দি সিরিয়াল দেখে সেইভাবে।
আহারে সেইসব সুখের দিনঃ যখন বেশিরাতে লাইট জ্বালায়ে রাখলে বকা খাবো বলে ল্যাম্পপোস্টের আলোয় বই পড়ছি। বড়দের বই পড়ে বকা খাবো দেখে অলস দুপুরে স্নানঘরের পড়েছি। একমাস রিকশার বদলে ট্যাম্পোতে চড়ে আ ব্রিফ হিস্টরি অফ টাইম আর জীবনান্দের কবিতা সমগ্র কিনেছিলাম (এখনকার খবর জানি না, ১০-১৫ বছর আগে ঢাকায় রাতের বেলা একা একা মেয়েদের ট্যাম্পুতে উঠার বিশাল যন্ত্রনা ছিল, বাসার হালকা প্যাঁদানিতো আছেই )
পাঠকের মৃত্যু হয়ে ভুত।
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
এখন চারিদিকে খালি অভিশাপ। ফেসবুক একটা অভিশাপ। আগে একটা বই ধরলে শেষ না করে উঠতে পারতাম না। এখন এই ফেসবুকের যন্ত্রণায় অ্যাকাডেমিক পড়াই ঠিকঠাকমত হচ্ছে না। আর আসল বই পড়ার অবস্থা খুবই খারাপ। কতগুলা বই যে দশ, বিশ, পঁচিশ, পঞ্চাশ শতাংশ হয়ে আটকে আছে। এরমধ্যে আছে, গুড্রিডস, বইপড়ুয়া মানুষ হাজারে হাজারে বই পড়ে, দেখলেই মন মেজাজ বিলা হয়ে যায়। গুড্রিডস একটা অভিশাপ।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ভার্সিটিতে উঠে ফেসবুক-ব্লগ ইত্যাদির কারণে বই পড়ার অভ্যাস অনেকটা কমে গিয়েছিলো। গত বেশ কয়েকমাস ফেসবুক ডিঅ্যাক্টিভেট করে রেখে এবং ব্লগে যাওয়াও কমিয়ে দেয়ার পর আবার অভ্যাস ফিরে আসছে। খালি ফেসবুকটা বন্ধ করে দেয়ার কিছুদিন পরেই বুঝসি কত বিশাল সময় নষ্ট করসি ফালতু প্যাচাল পেড়ে। এই মূহুর্তে পড়ছি মারিও পূজোর গডফাদার, হাতে আরো কমপক্ষে ৫-৬টা বই জমে আছে! গুডরিডসে অ্যাকাউন্ট খুলে ফেললাম।
ফেসবুককেই অস্ত্র করে বই-অভিযান চালু করেছি। আজ থেকে বছর চারেক আগে আমরা কয়েকজন মিলে সিনেমা নিয়ে আড্ডা মারার জন্যে খুলেছিলাম মুভিম্যানিয়াকস। সে আজ অবধি ভালোই চলছে। তার থেকে আশা পেয়ে এই ক'দিন আগে আরম্ভ করলাম বুকবাডিস। আমি নিজে বইভিক্ষু মানুষ, - বই কিনে, চেয়ে, ঝেড়ে, মেরে কাজ চালাই। পড়তে পড়তে মাঝেমাঝে মনে হয় চেনাজানা সব লোককে ধরে ধরে বইটা পড়াই! হয়ে ওঠে না অবশ্য। কিন্তু তাও, কিছু সহমর্মী আশেপাশে রয়েছে - তারা মিলে একরকম চলছে গ্রুপ। নতুন বই পড়লে পোস্ট করা হয়, কারো বই নিয়ে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা থাকলে, বা 'অমুক ধরনের বই পড়তে ইচ্ছে করছে - নাম সাজেস্ট করো' মার্কা প্রশ্ন থাকলে তা জানায়, পড়া বইয়ের লাইন তুলে আড্ডা হয়। সাহিত্যিকদের জন্মদিনে তাঁদের নিয়ে পোস্ট দেওয়া হয় - মাঝে মাঝে অন্যভাবেও কিছু করি - যেমন সাতদিন ধরে 'সুকুমার-উইক'। কয়েকদিন আগে হইহই করে পেরিয়ে গেল লিমেরিক উৎসব। এখন চলছে প্রথম বুকবাডিস ডিবেট। খুব রমরমা নয়, তবুও ওই একটু শ্বাস ফেলবার ঠাঁই আর কী। এখানে যাঁরা ফেসবুক করেন তাঁরা চলে আসুন - যত মুখ তত মজা! আর বই নিয়ে ভাঁটানোর মতো জিনিস এমনিও আর কিছু হয় না।
সম্রাট দাশুগুপ্ত
গুড রিডস এর নাম শুনেছি, লোকে সেখানে বই টই পড়ে এও আন্দাজে বুঝি। কিন্তু কিভাবে পড়ে টরে, বইগুলো মেলে কিভাবে, পয়সা কড়ির বিষয় আশয় আছে কিনা মানে যাবতীয় ক্যাম্নে কি-র খোঁজখবর নেয়া আর হয়ে ওঠেনি। পোস্টে এগুলোও একটু করে বললে আমার মত চরম আলসেদের কিছু সুবিধে হত।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ঠিক গুডরিডসে বসে-ই তো আর লোকে বই পড়ে না ঠাকুমা। ঘরে-বাইরে, পথে -প্রবাসে পড়েটড়ে ইচ্ছে হলে ওখানটায় খেরোখাতায় টুকে রাখে আর বাকি পড়ুয়াদের সঙ্গে টুকটাক সেটা নিয়ে গপ্পো জুড়ে দেয়।
নিয়মিত ফেসবুকিং তো করোই, তাই না? ঐরকম করেই অ্যাকাউন্ট খুলে এদিক- সেদিক একটু হাতড়াতে হয় আর কী।
সিম্পল।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
উঁহু। আমি বলেছি 'আমার মত আলসে'দের জন্যে। মানে, যারা এই পোস্ট পড়ে একটু উৎসাহী হল, কিন্তু ঘেঁটে ঘুঁটে জানতে আলসেমি লাগছে বলেই আর এদিক ওদিক হাতড়ায় না। আরেকটু সহজ ইনফো দিলে তাদের জন্য একটু সুবিধে হত আরকি। নইলে যারা এই সাইটটা সম্পর্কে একেবারেই জানেনা তারা হয়ত 'পরে দেখব' বলে রেখে দেবে, নয়ত ভুলে যাবে। অবশ্য অন্যদিকে দেখলে, যারা এতটাই অলস তারা আদপেই কষ্ট করে পড়বে কিনা সেও একটা ব্যাপার বটে।
একটা সময় বই পড়তে গিয়ে ফাইনাল এক্সাম দিতে যাবার কথা ভুলে যেতাম। আর এখন একগাদা বই ঘরে ডাঁই করে রেখে দিয়ে রোজ ভাবি কোন একদিন সবগুলোর পুরোটা পড়ে ফেলব ঠিক। হয়না। গুডরিডস আমার জন্য তাই মোটামুটি জাহাজি ব্যাপার। আমার কথা তাই ছেড়েই দাও।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ধন্য তাদের জীবন, যারা বই পড়ার মতন প্রিয় কাজে সময় দিতে পারে। তবু বুকমার্ক করে রাখি http://www.goodreads.com
- একলহমা
বই একটা অলীক বাইসাইকেলের মতো। ওতে চেপে আপনি নিজের মনের ভেতরের জমিনটুকু ঘুরে দেখতে পারবেন। বইতে যা লেখা আছে, তার সিংহভাগই আপনার মনের মাঝে ছড়ানো বা সাজানো, শুধু হয়তো কখনও সেভাবে তাকিয়ে দেখা হয়নি। আর যেটুকু আপনার মনের ভেতরে নেই, সেগুলো নতুন দৃশ্যপট তৈরি করে দেবে। গুডরিডস.কম সেই বাইসাইকেলের ঘণ্টার মতো। আপনার বইযাত্রার টুংটাং শোনার জন্যে আপনার বন্ধুরা কান পেতে রয়েছেন।
আগের চেয়ে বই পড়া এখন অনেক কমে গেছে। লুকিয়ে লুকিয়ে বই পড়ার অভ্যাস টা আর নেই। বাসার ভয়ে মিষ্টির দোকানে গিয়ে এক প্লেট রসমালাই নিয়ে বসে থাকতাম বই নিয়ে। তবু এখনও অল্প অল্প পড়ছি। এই মুহুর্তে হাতে আছে ইনফারনো। হিমু ভাই ধন্যবাদ গুডরিডস এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য
যখন ব্যাংকে চাকরি করতাম, ধানমন্ডী টু মিরপুর যাতায়াতের ফাঁকে একটা মাসুদ রানায় নাক ডুবিয়ে রাখা কমন ছিল। চারদিকে মানুষ ঝুলে ঝুলে যাচ্ছে; সবারই মেজাজ কম-বেশি খারাপ; দেশ-সমাজ-আর নানান পেশাজীবীদের বাপ-বাপান্ত ছিল কমন, এরই ফাঁকে- মাঞ্জামারা-টাই লাগানো এক যুবকের পেপারব্যাকে পলকহীন দৃষ্টির কারনে বেশিরভাগ মানুষই তাকাতো এমনভাবে যেন পাগল দেখছে।
এই আহবান না করাই ভাল। বই পড়া একটা নেশা, খুবই শক্তিসালী। অনেকেই আছেন, দিনের ভেতর কপাতা না পড়লে রাতে ঘুম আসে না, হাঁসফাস লাগে! কেন অযথা মানুষকে এর ভেতর টানা?
যাদের হিউমার অসম্ভব শার্প- তাদের লেখায় কমেন্ট করতে দ্বিধা হয়।
তবে, যা বলেন- বই পড়া মানুষের যে মনন তৈরি হয় তাতে সহনশীলতা প্রধান একটা উপাদান। নতুন প্রজন্মের এইটার অভাবের একটা প্রধান কারন বই না পড়ে- হবি হীন হয়ে বসে থাকা। এদের কাছে নাটাই ভর্তি সুতো কিন্তু ওড়াবার ঘুড়ি নাই।
যাই হোক, কাজটা ভাল না। তবুও (স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট)
খুব চিন্তায় আছি, বইপড়া কমতে কমতে একেবারে তলানিতে এসে ঠেকছে। এই কমেন্ট করতে করতে মনে করে দেখলাম, একসাথে বেশ কয়েকটা বই পড়া শুরু করেছিলাম। কিন্তু গত ৫/৬ দিনে এক পৃষ্ঠাও পড়িনি।
গুডরিডস এর সাথে পরিচয় ছিল না... হিম্ভাইকে
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
স্বপ্নলোকের খোঁজ দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
ইসরাত
একটা একাউন্ট মনে হয় করেছিলাম। কিন্তু ব্যবহার করা হয় নি। আজকে দেখি কি অবস্থা সেটার!
আর আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ব্যাপারটা তুলে ধরার জন্য।
-এস এম নিয়াজ মাওলা
হিমু ভাই,
চার-পাঁচ এবং ছয় নাম্বার প্যারাগ্রাফ অনবদ্য হয়েছে।
নতুন মন্তব্য করুন