আপনার দেখা সময়কে সাহিত্যে ধরে রাখুন

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: শুক্র, ১৩/১২/২০১৩ - ৬:১১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমরা অনেকেই হয়তো ভাবি, যা কিছু বহু মানুষের চোখের সামনে ঘটে গেছে, তা বিকৃতির স্পর্শ এড়িয়ে ভাবীকালের মানুষের জন্যে একটি বিবৃতি হয়ে টিকে থাকবে। যা কিছু চাক্ষুষ, যা কিছু স্পষ্ট, যা কিছু প্রত্যক্ষ, তা কীভাবে পাল্টাতে পারে? এক নিশ্চিন্ত বিশ্বাসে আমরা আমাদের দেখা সময়কে অর্পণ করে দিই কনিষ্ঠদের হাতে। তারা কি আমাদের চোখ দিয়েই সে সময়কে দেখতে পায়?

আমার অভিজ্ঞতা বলে, পায় না। এ কারণেই মতিঝিলে অপারেশন শাপলায় হাজার হাজার হুজুর মরার গুজব একটা মিথ হিসেবে দীর্ঘায়িত হয়। শাহবাগে উচ্ছৃঙ্খলতার গুজব শাহবাগ ও ফেব্রুয়ারি থেকে একটু দূরবর্তী স্থান ও কালে গিয়ে রটনাকারীর হাতে পড়ে মিথে পরিণত হয়। কাদের মোল্লা দাবি করতে পারে, কসাই কাদের সে নয়, কোনো ভিন্ন লোক।

আমাদের ক'জনই বা পুরোনো খবরের কাগজ ঘাঁটি? ক'জন একটু তলিয়ে দেখার চেষ্টা করি? আমাদের স্বস্তি পরিশ্রম না করার মধ্যে। তাই আমরা নিশ্চিন্তে আত্মসমর্পণ করি প্রোপাগাণ্ডার কাছে। এ সুযোগ কাজে লাগায় সমাজের দুর্জন।

আমি একাধিকবার বিভিন্ন সময়ের মানুষের কাছে বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে লেখা চেয়েছি, বেশিরভাগ সময়ই আমার যাচিত আখ্যান আর রূপ পরিগ্রহ করেনি। আইয়ূবের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, শেখ মুজিবের শাসনকাল, জিয়াউর রহমানের শাসনকাল, এরশাদের শাসনকাল, এরকম অনেক অধ্যায় নিয়ে আমি অনেক আগ্রহ নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের অনুরোধ করেছি। তারা কেউ প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভুলে গেছেন, কেউ তাচ্ছিল্যের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

আজ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলার সময় অনুভব করলাম, সময়কে খবরের কাগজ একা ধরে রাখতে পারে না। খবরের কাগজে তথ্য আছে, কিন্তু তার কাছে ফিরে যাওয়ার আকর্ষণ ততোটা নেই। সে আকর্ষণ আছে সাহিত্যে। গল্পে, উপন্যাসে, নাটকে, কবিতায়। সে কারণে যা কিছু আমাদের সমকাল, তাকে সাহিত্যে গেঁথে ফেলাটা খুব জরুরি। আজ এক তরুণী হাসতে হাসতে আমাকে বলছিলেন, এরশাদ তো একটা জোকার। আমি এরশাদের শাসনামলে নিতান্তই বালক ছিলাম, কিন্তু আমি খুব ভালো করে জানি, এরশাদ কোনো জোকার নয়, সে একটা ভয়ানক রক্তপিপাসু নৃশংস লোক ছিলো। আমাদের রাজনীতির পরিমণ্ডল তাকে ভাঁড়ের মুখোশ পরার সুযোগ করে দিয়েছে, আর শিল্পী ও সাহিত্যিকদের নিষ্ক্রিয়তা তাকে সে মুখোশ ক্রমাগত পরে থাকার সুযোগ দিয়েছে। এরশাদের হাতে রক্তের দাগ শুধু সময়ের সঙ্গে ফিকে হয়ে আসেনি, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে সে রক্তের দাগের কথা মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব যাদের, সে সাংবাদিক ও সাহিত্যিকদের অবহেলা। জামাতশিবির এই অবহেলাকে পুঁজি করে রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে হয়েছে দানব, আর এরশাদ হয়েছে ভাঁড়।

আমি তাই আপনাদের প্রতি অনুরোধ করবো, লিখুন। গল্প লিখুন, উপন্যাস লিখুন, নাটক লিখুন সমকালকে নিয়ে (কবিতা লেখার কথা বললাম না, কারণ কবিতা লিখতে পারেন খুব অল্প কিছু গুণী মানুষ, বাকি যা লেখা হয় তা কবিতার নামে শব্দবিষ্ঠা)। শাহবাগের মতো প্রচণ্ড একটি ঘটনা নিয়ে শাহবাগে শামিল হওয়া এতো গুণী মানুষেরা খুব বেশি গল্প লেখেননি। গল্প লিখেছে হাসনাত আবদুল হাই আর অদিতি ফাল্গুনীর মতো শাহবাগের পিঠে ছুরি মারা প্রতিক্রিয়াশীলেরা। সমকালকে এভাবে নষ্ট করার দৌড়ে তাদের জন্যে মাঠ পিটিয়ে সমান করে দিয়েছে দুর্বৃত্ত প্রথম আলো। আমাদের নিষ্ক্রিয়তা একদিন সেই বিকলাঙ্গ সাহিত্যের জন্যে র‍্যাম্প তৈরি করে দেবে, আর সে র‍্যাম্পে চড়ে মঞ্চে উঠবে অসত্য ও বিকারে ভরা ইতিহাস, যা ঘটেনি কখনো।

আসুন লিখি। প্রথম একটা দুটো লেখা হয়তো কাঁচা হবে, কিন্তু তারপর আপনার হাতকে সচল রাখবে আপনার চোখে দেখা সময়। তাকে নিজের ভেতরে বন্দী করে রেখে হনন করবেন না। অনাগত সময়ের মানুষের পাশে যদি নিঃশঙ্ক চিত্তে দাঁড়াতে চান, তাদের জন্যে আপনার চোখে দেখা সময়কে লিখে রাখুন। লিখুন, কে ভাই, কে দুশমন। ভাবীকালের তরুণের স্লোগান আপনাকে লিখে রেখে যেতে হবে, আজ, এখনই।


মন্তব্য

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

লেখা -গুড়- হয়েছে

তিথীডোর এর ছবি

কবিতা লিখতে পারেন খুব অল্প কিছু গুণী মানুষ, বাকি যা লেখা হয় তা কবিতার নামে শব্দবিষ্ঠা

চলুক
পয়লা বুড়া আঙুল এ কথাটার জন্য। দেঁতো হাসি

বাকি পোস্টে আরো দুই বার চলুক চলুক

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

আয়নামতি এর ছবি

খুব ঠিক কথা। চলুক যারা লিখিয়ে তারা লিখুন হাতপা খুলে।

ঈয়াসীন এর ছবি

চলুক সহমত, শুধু সহমত না, লিখারও চেষ্টা করছি।

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ভাবচি একটা কোবতে লিখব শয়তানী হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

শিশিরকণা এর ছবি

আর কিছু না পারি, নাতি পুতিকে যা গল্প শুনাবো আরও ৩০ বছর পরে সেগুলা তো লিখে রাখতে পারি! স্রেফ পারিবারিক গল্প হিসেবেই নাহয় স্মৃতি জমিয়ে রাখুন।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

মৃষৎ এর ছবি

চলুক
শাহবাগ নিয়ে লেখার ইচ্ছা প্রচণ্ড, খুব কাছ থেকে প্রজন্মের চেতনার বিস্ফোরণ দেখা পরম সৌভাগ্যের। দুয়েক কবিতাও লিখে ফেলতে পারি স্যরি টু সে।

নির্ঝর অলয় এর ছবি

"স্লোগান দিতে গিয়ে আমি বুঝতে শিখি
কে ভাই, কে দুশমন।" চলুক

চরম উদাস এর ছবি

চিরকাল আফসোস ছিল, ৭১ দেখিনি। অনেক কিছু লিখতে গিয়ে থেকে যেতাম, সেই সময়ের বেদনা অনুভব করতে পারছি না ঠিকমতো এই ভেবে। লেদার সোফায় বসে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে বীরাঙ্গনার গল্প লিখতে গিয়ে হাত থেমে গেছে, নিজেকে ভণ্ড মনে হয়েছে। তবে আমি সৌভাগ্যবান সেই সময়কে দেখতে না পারলেও এই সময়কে দেখেছি। ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই বলে চিৎকার করেছি, জাতীয় সঙ্গীত গাইতে গাইতে গায়ের সব রোম দাড়িয়ে গেছে, শ্লোগান শুনে হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়েছে, আবার মানুষের ভণ্ডামি আর সুশীলতা দেখে মুখে থুতু জমেছে। আমাদের চোখের সামনেই রাজীবকে টুকরো হতে দেখেছি। শুয়োরকে বাঁচানোর জন্য ধর্মের ব্যাবহার চোখের সামনে দেখেছি। সেই একই রকম ভাবে ৭১ এর মতো। মালাউন মারো এর মতো করে নাস্তিক মারোর শ্লোগান শুনেছি। ইন্ডিয়ার দালাল দেশ দখল নিল বলে হৈচৈ দেখেছি। একেবারে একই ফর্মুলা, একইভাবে তার ব্যাবহার। ৪২ বছর পর প্রতি পদে পদে বুঝেছি কেন ওইসময় রাজাকার তৈরি হয়েছিল, কেন ওই সময় আমার দেশেরই কিছু মানুষ নামের জারজ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আমার মায়ের উপর। কি অদ্ভুত মিল, কি অদ্ভুত পুনরাবৃত্তি।

আর কেউ লিখুক না লিখুক, আমি লিখব আমার দেখা সময়কে নিয়ে। ছোট ছোট করে লিখব। অনেক বড় পরিসরেও লিখব। প্রতিজ্ঞা করলাম।

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

হুমম। আপনার লেখার অপেক্ষায় থাকব। আপনি এই নিয়ে লিখবেন, এটা সুখবর। এমন প্রতিজ্ঞা শুনেও আরাম। হাসি

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

একটা গল্প সঙ্কলন করলে কেমন হয়? সচল থেকে? ই-বুক আকারে? যেটা সবার কাছে ছড়িয়ে দেয়া যাবে?

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

চরম উদাস এর ছবি

চলুক
আইডিয়া দারুণ লাগছে। যুদ্দাপরাধের বিচার, এই সময়য়ের ঘটনা ও সব ত্যানাপেচানো নিয়ে সব গল্প থাকবে। এরকম সংকলন হলে আমি নতুন গরম গরম লেখা দিব প্রমিজ করলাম। কেউ দায়িত্ব নিয়ে শুরু করেন।

একই সাথে ই-বুক ও পেপার কপি করা যায়। অনেকের কাছে পৌঁছে দেয়া যাবে তাইলে।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক
আচ্ছা, টপিক কি আগেই ভাগাভাগি করে নেয়া উচিৎ? নাইলে পরে দেখা যাবে কোন ঘটনা নিয়ে গল্পের পর গল্প হয়ে গেছে... কোনও টা হয়ত বাদই পড়ে গেছে...

প্রতিটি ঘটনাই ইতিহাস... একটাও বাদ না পড়ুক

ঈ-বুকের পাশাপাশি পেপার-বুকেও ভুটাইলাম...
প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে দেবার জন্য এখনও সেটাই বেটার...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

স্যাম এর ছবি

সহমত, কিন্তু এই চেষ্টাগুলো ইদানীং শুরু হয় কিন্তু শেষ হয়না মন খারাপ
সিরিয়াসলি... মৃদুলদা একটা উদ্যোগ নেন না...

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মহিউদ্দিন ডালিম  এর ছবি

লিখেন আরো বেশী বেশী করে|

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রস্তাবে উত্তম জাঝা!
যদিও আমার নিজের লেখালেখির যোগ্যতার উপর এত আস্থা নেই। তবে এই সচলেই অনেকে আছে যাদের এই ক্ষমতা আছে। তাদের কাছে আমারও অনুরোধ রইল।

সুবোধ অবোধ

দীনহিন এর ছবি

আজ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলার সময় অনুভব করলাম, সময়কে খবরের কাগজ একা ধরে রাখতে পারে না। খবরের কাগজে তথ্য আছে, কিন্তু তার কাছে ফিরে যাওয়ার আকর্ষণ ততোটা নেই। সে আকর্ষণ আছে সাহিত্যে।

একমত, হিমু ভাই।
আমরা একখানা '১৯৭১', 'আগুনের পরশমণি' বা 'পূর্ব পশ্চিম' যতটা আগ্রহ নিয়ে হাতে রাখি, ততটা বোধহয় পুরনো দিনের সংবাদপত্র নয়। ওসব তো গবেষকদের কাজ! তাই আপামর জনতার জন্য সাহিত্যের বোধ হয় সত্যিই কোন বিকল্প নেই, ইতিহাস জানতে বা ইতিহাসের আবেগকে ধারণ করতে।

বলতে কি, আজকের এই বাংলাদেশে আমরা যারা একাত্তর দেখিনি, সাহিত্য-গান-কবিতা দিয়েই গড়ে উঠেছি তারা। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশাত্মবোধ!

ইতিহাসের আবেগকে ধারণ করতে পারে সাহিত্য, শুধুই সাহিত্য; নিরেট ইতিহাস বা সংবাদপত্রের স্পেস বোধহয় এখানে সামান্যই।

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক চলুক চলুক

স্বাধীনতাত্তর বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আন্দোলনকে ইতিহাসের পাতার অমর করতে লিখুক সবাই, বাঙালির এই নবজাগরনের ইতিহাস আমরা যদি না লেখি তাহলে কে লেখবে? ইতিহাসকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সবারি লেখা উচিত।

মাসুদ সজীব

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

একমত, সাথে আছি। বড় কিছু লেখার ক্ষমতা আমার নেই... ছোটখাট গুলোতে অবশ্যই থাকবে... আমি খটমটে বিজ্ঞানের মানুষ... তবু সমকালকে এড়াতে পারিনা, যেমন পারেননি আমার বাবারা...

সেই সাথে আর একটু যোগ করি, পুরানো গুলোর মাঝে যেগুলো ঠিক আছে তাদের নিয়ে সমিস্যা নাই... সমিস্যা বিগড়ানো গুলা রে নিয়া... এরা বাতিলের খাতায় থাকুক... কিন্তু নতুনেরা সবাই বিগড়ায় নাই... চাইলে হয়তো আস্তে ধিরে টুকটাক মেরামত করা সম্ভব...

বেশি কিছু না... চলতে ফিরতে কথাবার্তায় এই বার্তাগুলো ঢুকিয়ে দিন না আলতো করে। আমার অভিজ্ঞতা বলতে পারি, পেশাগত জীবনে আমি যেহেতু মাস্টর, আমি এই সুযোগটা নেই। ধরেন ক্লাসে ডেসিমাল টু হেক্সাডেসিমাল রুপান্তর করাতে গিয়ে উদাহরণ হিসেবে ইচ্ছা করেই নিলাম ৭১। তারপর একটু খোঁচাই নাহয় দিলাম। কি চমৎকার একটা সংখ্যা, তাইনা... গ্রাউন্ড প্রস্তুত... এবার কেউ আগ্রহ দেখালে বা উলটাপালটা কিছু বলে বসলে ৫ মিনিটের ছোট্ট ইতিহাস ক্লাস... ব্যাস

চরম উদাসের বানী ধার করি আবারঃ

... ...বাচ্চা পুলাপান সুর করে আলিফ পেশ উন বে পেশ বুন পড়ুক সমস্যা নাই। সেইসাথে যেন ছোটকাল থাকে নিজ জাতির সত্যি ইতিহাস জানে। বীরত্ব এর কথা, দুঃখের কথা দুইটাই যেন আস্তে আস্তে জানে... ...

... ...আশা রাখি আগামী জেনারেশনের পুলাপান আমাদের থেকেও আরও অনেক বেশী বুদ্ধিমান হবে। সত্য বলে কেউ কিছু তাদের মাথায় গুঁজে দিলে চাইলে প্রত্যাখ্যান করবে, প্রত্যেক বিষয়ে প্রশ্ন করবে। ওইসব পুলাপান যেন আমারে বলদ বলে গালি দিয়ে হাসাহাসি করতে না পারে এই জন্যই লেখালেখির মাধ্যমে নিজের অবস্থান পরিস্কার করি আরকি ... ...

এইটাই বটমলাইন

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তানিম এহসান এর ছবি

চলুক

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

আমার লেখার হাত ভালো না, আমি মূলত পাঠক। তবুও চেষ্টা করবো।

____________________________

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

হাঁ, সবাই লিখুন, সময়কে ধরে রাখুন।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দারুণ প্রস্তাব
রাজি

০২
জানামতে জাকির তালুকদার একটা উপন্যাস লিখছেন শাহবাগের আন্দোলন নিয়ে
তার লেখা সম্পর্কে আমার যা ধারণা তাতে অনেক বেশি ভালো কিছু একটা আশা করছি তার কাছ থেকে
আমার প্রস্তাব হবে একই সাথে খোঁজ রাখুন সচলের বাইরে শাহবাগ নিয়ে কারা কী লিখছেন
আর কিছু না হলেও এক জায়গায় একটা তালিকা অন্তত রাখা যাবে

হাসিব এর ছবি

তালিকা করাটা সহজ হবে। কারণ সেটা বেশি বড় হবার সম্ভাবনা নেই।

অতিথি লেখক এর ছবি

হুম, সবাই একটা একটা করে লিখলেও অনেক জমে যাবে। হিমুদা, উদাসদা এরা লিখলে সাহিত্যমান এবং ইতিহাস দুটোই থাকবে। লেলিনদাওলিখুন, লিখুন বাকীরাও।। আমরা পড়ি, আর নিভৃতে চেষ্টা করি- ইতিহাস যা দেখলাম সে সময়টাকে নিজের খাতার প্লাস্টার অব প্যারিসে আমি অবশ্যই রাখার চেষ্টা করবো।
(নির্লিপ্ত নৃপতি)

রণদীপম বসু এর ছবি

খুবই যথার্থ প্রস্তাব ! কখনো মুরোদে কুলালে চেষ্টা করবো হয়তো।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

লিখতে হবে।

মিতুবালী এর ছবি

ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল বইটি তে এরশাদের কথা খুব ভাল ভাবেই লিখে গেছেন হুমায়ুন আজাদ । স্বৈরাচারী এরশাদ কে নিয়ে আর লেখা আমি পড়ি নাই ।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

অ-সা-ধা-র-ন আহ্বান হিমু। গুরু গুরু

তানিম এহসান এর ছবি

শুরু করলাম। আপনাদের কাছাকাছি থাকা মানা বাংলাদেশের সাথে থাকা এটা মেনে নিয়েছি বহু আগেই। লড়াই চলুক, সাথে আছি!

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ হিমুদা। একই কথা শাহবাগের সময়কাল থেকে এমনকি এর আগ থেকে বিগত আগস্ট মুভমেন্টের সময় থেকে অনেককে করে আসছি। নিজে সাহস করতে পারি না নিজের অক্ষমতার কারণে। কিন্তু এটা যে কতটা জরুরী তা অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝেছি, ওেই আগস্ট মুভমেন্টের সময়কাল আর তা নিয়ে পরবর্তীতে নানা বিভ্রান্তি ও তারই স্থায়ীত্ব পাওয়াকে ধরে। আর শাহবাগ আন্দোলন বা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থাতো বিকৃত হবে আরো ভয়ানকভাবে। হচ্ছেও। এটা খুবই জরুরী। ধন্যবাদ আবারো বিষয়টিকে সামনে হাজির করার জন্য।

স্বয়ম

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

পারবো না হয়তো, তবে কথা দিলাম- চেষ্টা করবো।

স্যাম এর ছবি

হাততালি

অতিথি লেখক এর ছবি

লিখতে পারি না। অনু,দিপু(ইয়াসিন) সাহস দেয়,আরে ট্রাই দেন। আমরা আছি না,ঠিকঠাক করে দিবনে। দু একবার লেখার চেষ্টা করার পর চোখ বড় করে হা করে তাকিয়ে থাকি !
এইডা কি লিখলাম? সচল তো দিল্লি তাগরে দেখানোর কথা চিন্তা করতেই ঘাম ছোটে ।
ঘেচাং ।
আমাদের মত আভাগাদের এত সাহস দিয়ে মায়া দিয়ে লিখতে উৎসাহ দেয়ার জন্য হিমু ভাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ ।
শাকিল অরিত

রিক্তা এর ছবি

আজ এক তরুণী হাসতে হাসতে আমাকে বলছিলেন, এরশাদ তো একটা জোকার।

আম্মু আব্বুর কাছে শোনাঃ আমার মামা এরশাদের আমলে বুয়েটের ছাত্র ছিলেন। একবার হল খালি করার সময় প্রত্যেক ছাত্রকে আর্মিরা পেছনে লাত্থি দিয়ে দিয়ে বের করেছিল।

--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।

এক লহমা এর ছবি

"এরশাদ কোনো জোকার নয়, সে একটা ভয়ানক রক্তপিপাসু নৃশংস লোক ছিলো। আমাদের রাজনীতির পরিমণ্ডল তাকে ভাঁড়ের মুখোশ পরার সুযোগ করে দিয়েছে, আর শিল্পী ও সাহিত্যিকদের নিষ্ক্রিয়তা তাকে সে মুখোশ ক্রমাগত পরে থাকার সুযোগ দিয়েছে। এরশাদের হাতে রক্তের দাগ শুধু সময়ের সঙ্গে ফিকে হয়ে আসেনি, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে সে রক্তের দাগের কথা মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব যাদের, সে সাংবাদিক ও সাহিত্যিকদের অবহেলা। জামাতশিবির এই অবহেলাকে পুঁজি করে রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে হয়েছে দানব, আর এরশাদ হয়েছে ভাঁড়।"
চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।