বড় বড় খবরের কাগজের বড় বড় সম্পাদকেরা সম্পাদকীয় পর্ষদে আলোচনা করেন ব্যাপারটা নিয়ে। বড় বড় টেবিলের এপারে ওপারে বড় বড় সাংবাদিকেরা ঘটনার সব চুল এক এক করে ছেঁড়েন, তারপর চেরেন। ছোটো ছোটো পিয়নেরা মাঝারি আকৃতির ট্রেতে করে কয়েক দফা ছোটো ছোটো কাপে চা আর ছোটো ছোটো পিরিচে কেক-বিস্কুট দিয়ে যায়। মোটামুটি বড় বড় মিটিং রুমের বাতাসে বড় বড় গোল গোল শব্দ ইতস্তত ভেসে বেড়ায়।
তারপর সকলেই ঐকমত্যে পৌঁছান, খবরটা যেতে পারে। বড় বড় কলামিস্টদের মোবাইলে ছোটো ছোটো বার্তা যায়, এ নিয়ে বড় বড় বিশ্লেষণধর্মী স্তম্ভ রচতে হবে। আধুনিকরা ল্যাপটপে হামলে পড়েন, বুড়ো বুড়ো কয়েকজন জলছাপ মারা প্যাডে কলম নিয়ে ঝুঁকে বসেন। স্ক্রিনে আর পাতায় ফুটে উঠতে থাকে বড় বড় কথা।
হাদুল্লাপুরে আম্লীগ ও বিম্পি এক টেবিলে বসেছে অবশেষে। তারা সিদ্ধান্তে এসেছে, এখন থেকে দুই যুযুধান দল মিলে মিশে নাশকতা প্রতিরোধ করবে। আর এই দুই দলকে এক টেবিলে বসিয়েছেন হাদুল্লাপুরের সাংবাদিকরাই। আর ছোট্টো হাদুল্লাপুরের ছোট্টো প্রেসক্লাবে রাতবিরাতে অনুষ্ঠিত সুদীর্ঘ মিটিঙের খবর বড় ঢাকার বড় বড় খবরের কাগজগুলোর টনক একেবারে টনটনিয়ে ছাড়ে।
জামাত-শিবিরের খুনীরা গত সপ্তাহেই হাদুল্লাপুরের দামালপুর বাজারে আম্লীগের এক বড় নেতাকে ধরে কসাইকোপান কুপিয়েছে। আহত শেখ ফটিক এখনও হাসপাতালে। তার শরীরে সেলাইয়ের দাগে দাগে ফুটে আছে ফাঁসির অপেক্ষায় প্রহর গোণা মুজাহিদ-কামারুজ্জামান-সাঈদীর কুটিল ভ্রুকুটি। শেখ ফটিকের গা ধরে বসে আছে কখনও তার স্ত্রী, কখনও সন্তান, শিয়রের কাছে হাসপাতালের খাটের হুকে সর্বক্ষণ ব্যঙ্গমী হয়ে ঝুলতে থাকা স্যালাইনের ব্যাগ।
জামাত-শিবিরের খুনীরা কসাইপনা সেরে নির্বিঘ্নে সটকে পড়ে, রাস্তায় পড়ে থাকে শেখ ফটিকের রক্তাক্ত শরীর, আর সে শরীরের দিকে তাকিয়ে দেঁতো হাসে হাদুল্লাপুর সদরে বিম্পি নেতা উকিল টিপু সুলতানের বাড়িটা। বাজার থেকে একদল মানুষ শেখ ফটিককে ধরাধরি করে রিকশায় বসিয়ে নিয়ে যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, আরেক দল এগিয়ে যায় টিপু উকিলের বাড়ির দিকে। সে বাড়ি যাওয়ার পথেই পড়ে বিম্পির আরেক নেতা বাতেন ভুট্টোর আটার কল আর সিমেন্টের দোকান। একটা মুদি দোকানও পড়ে সে পথে, যার সামনে দিয়ে আরোহীর কোলে নেতিয়ে পড়া শেখ ফটিক পথে রক্তের ফোঁটা ছড়াতে ছড়াতে চলে যায়। মুদি দোকানি ঝাঁপটা নামিয়ে বেরিয়ে আসে, হাতে কেরোসিনের টিন। হাদুল্লাপুর বাজারে মানুষের মিছিল আস্তে আস্তে দীর্ঘ হয়।
একটু পর টিপু সুলতান উকিলের বাড়ি দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। বাতেন ভুট্টোর আটার কল আর সিমেন্টের দোকানও সাড়া দেয় সে সংলাপে। বাতেনের মোটর সাইকেলটা একা একা পোড়ে এক কোণায়।
প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকেরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জেলার বড় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা শেখ ফটিককে অস্ত্রোপচারের পর দেখে ফিরে আসে টিপু সুলতানের পোড়া বাড়িটা এক নজর সরজমিন ঘুরে দেখতে। বাতেন ভুট্টোর আটার কল আর সিমেন্টের দোকানটাও তাদের যাওয়ার পথেই পড়ে। তারপর তারা আম্লীগ আর বিম্পির বাকি নেতাদের মোবাইলে কল দেয়। বলে, বাহে অ্যানা আইসেন, সগলায় বসিয়া কতা কই।
ভাইদের একদল শেখ ফটিককে দেখতে গিয়েছিলেন জেলা শহরে, তারা আপত্তি করেন না। ভাইদের যে দল টিপু সুলতানের বাড়ি এক নজর ঘুরে দেখে এসেছেন, তারাও রাজি হয়ে যান।
প্রেসক্লাবে রাতের বেলা কেউ রিকশায়, কেউ সাইকেলে, কেউ সদলে পায়ে হেঁটে অগ্রহায়ণের শেষ ভাগের রাতের কুয়াশা আর শীত ঠেলে চলে আসেন। আম্লীগ আর বিম্পির নানা উপসর্গখচিত দলের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকেরাও আসেন। সকলেই একটু ক্লান্ত, আর গম্ভীর। মাফলারের পেছনে তারা উৎকণ্ঠিত ঢোঁক গেলেন, একে অন্যের দিকে আড়ে আড়ে চান।
হাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোটর সাইকেলে তালা দিয়ে গটগট করে ভেতরে ঢোকেন। বণিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্জ একাব্বর হোসেন, ব্যবসায়ী মকিম ভরসা, ইউনিয়ন পরিষদের সভাপতি সৈয়দ আলি হায়দার, সকলেই গাড়িতে চড়ে আসেন, আরো কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে।
বৈঠক চলে। হাদুল্লাপুরের ছোট্টো প্রেসক্লাবের ছোট্টো বায়ুমণ্ডলে অনেক ছোটো ছোটো কথা ইতস্তত ভাসে। কিছু কথা একটু বেশি সময় ধরে বুদ্বুদ হয়ে ভেসে থাকে, কিছু কথার বুদ্বুদ চট করে ফেটে যায়।
দূরে জেলা শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেখ ফটিক কাতরায়। ডিউটি নার্স কর্কশ কণ্ঠে তার শিয়রে অপেক্ষমান ছেলেকে কী একটা হুকুম দেয়, পাশের বেডে আরেক রোগী কাতরায়, হাসপাতালের পাশের গলিতে একটা বেড়াল আরেকটা বেড়ালকে ধমকায়। ছোট্টো হাদুল্লাপুরের ছোট্টো প্রেসক্লাবে শেখ ফটিকের নাম কয়েকবার উচ্চারিত হয়, বিম্পির নেতারা স্বীকার করেন, কোরবানির গরুর মতো একজন মানুষের বাজারে খোলা আকাশের নিচে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে থাকা সভ্য সমাজে মেনে নেওয়া যায় না। আম্লীগ নেতারা স্বীকার করেন, টিপু সুলতানের বাড়ি কোনো দোষ করেনি, যেমন দোষ করেনি বাতেন ভুট্টোর আটার কল, সিমেন্টের দোকান, বা তার মোটর সাইকেলটি।
হাদুল্লাপুর বিম্পির সাধারণ সম্পাদক ওমর আলি পল্টু দীর্ঘ আলোচনার পর চামড়ার জ্যাকেটের ভেতর থেকে উঠে আসা দীর্ঘশ্বাসের সঙ্গে বলেন, হাদুল্লাপুরে মাইনষের জানের উপ্রে, মালের উপ্রে কোনো ক্ষতি আইসে, অ্যাঙ্কা কাম হামরা কক্ষনো করোং নাই, কোরব্যারো নোং। হামরা তো মানুষ, নাকি? মানুষ হয়া ভাই, মাইনষের সাতে অ্যাঙ্কা কেউ করে?
আম্লীগ সভাপতি ইয়াসিন ব্যাপারি বলেন, আজনীতি কল্লে এট্টু-আট্টু মতের অমিল তো হবারই পারে। তার জন্যে তো মিছিল হয়, মিটিং হয়। আগাআগি চিল্লাচিল্লি সবে হয়। কিন্তু মাইনষোক জবো করা বা দোকানপাট ঘরবাড়ি পুড়ি দেওয়া যত কম হয় তত ভালো।
হাদুল্লাপুরের ছোট্টো প্রেসক্লাবের বাইরে রাত ভরে ওঠে কুয়াশায়। বারান্দার বাইরে রাখা সাইকেল, মোটর সাইকেল আর গাড়িগুলো গোপনে হিমে কাঁপে। নারকেল গাছে একটা ক্লান্ত প্যাঁচাকে ঠোকরায় কয়েকটা ক্রুদ্ধ কাক। জানালার বাইরে সোয়েটারে, চাদরে, মাফলারে ওম খোঁজা সাধারণ মানুষ কান পেতে শোনে, প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা কী কী যেন বলছেন, তাদের শীতে অবশ নাকে প্রেসক্লাবের জানালা গলে ভেসে আসা বাতাস আশার স্ফূলিঙ্গের ছোঁয়াচ দেয়।
হাদুল্লাপুর থানার ওসি গলা খাঁকরে চড়া গলায় বলে, হাদুল্লাপুরের প্রেসক্লাব যে শান্তির উদ্যোগ নিলো, তা সারাদেশে মডেল হয়ে থাকবে।
এরপর আরো অনেকে অনেক কথা বলতে থাকেন। বাড়ির মালিক, গাড়ির মালিক, কলের মালিক, দোকানের মালিকরা একটু জোর দেন শান্তির ওপরে। বিম্পি নেতার দোকান আর বিম্পি নেতার মাকানের ওপর হামলা ঘটার পরই কেবল হাদুল্লাপুর টের পায়, শান্তি রক্ষা করতে হবে, নাশকতা রুখতে হবে। হাদুল্লাপুর ঝিম ধরে থেকে সে শান্তির কথা শোনে।
প্রেসক্লাবে শান্তি চুক্তির ওপাশে ঝোপের আড়ালে ত্রস্ত পায়ে ছুটে যায় কে যেন। জামাত? শেয়াল? মতিউর রহমান? বোঝা যায় না।
মন্তব্য
সবাই সব বুঝবে, কিন্তু ফটিকের অ্যামনেস্টি নাই।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
সহমত।
সুবোধ অবোধ
সাহিত্যে সময়কে ধরে রাখার ডাক দিয়ে নিজেই পথ দেখালেন। স্যালুট।
সুবোধ অবোধ
হিমু ভাই তাড়াহুড়ো করে লিখেছেন। আপনার সেই ট্রেডমার্ক, ছিড়েখূঁড়েচিরে দেয়া ভাষা নেই এটাতে।
সময় দিলে লেখাগুলো আর শেষ হয় না। অনেক অর্ধেক গল্পে ড্রাফটের বাক্স ভরে আছে। পরের গল্পে পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ।
হাদুল্লাপুরে এভাবেই রচিত হোক ক্ষুরধার সাহিত্য । মুতিমিজানুরানিচুশীলুলদের বিষাক্ত নেকড়ে নেকড়ে চেহারা ভেসে উঠুক সচল আরশীতে । উত্তর প্রজন্মেরা যেন এই ভদ্রলোক দেশদ্রোহীদের সহজে চিনে নিতে পারে । যে দেশে একদিন মাঠের রাখাল , গায়ের বঁধু ছিল কবি ,সে দেশে এসব লেখার জন্য কোন আচিপ নজরুল লাগবে না। ঘর থেকে বেড়িয়ে আসুক আরো অনেক উদাস, হিমু সৌভিক। স্বাগত হে নতুন দিনের সাহিত্যিকেরা। আরো আরো আরো লিখুন ।
রাজর্ষি
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
জন্ম যদি তব বঙ্গে ! তিষ্ঠ ক্ষণকাল!
একটানে পড়লাম। বর্ণনাভঙ্গি এক কথায় অসাধারণ। অসম্ভব শক্তিশালী।
লাইনটি একটু দীর্ঘ মনে হয়েছে আমার কাছে।
গল্পটি থেকে এমন অসামান্য সব শৈল্পিক উদ্ধৃতি দেয়া যায় আরও।
বেশ বোঝা যায়, এইটিই হচ্ছে গল্পটির মূল কথা। এই বিষয়টিই তুলে আনতে চেয়েছেন। কিন্তু আমার কথা হল, এই লাইনটি কি না দিলেই হত না? গল্পের বক্তব্য কি দুর্বোধ্য থাকত সেক্ষেত্রে? আমার মতে, সহজেই ছেঁটে দেয়া যায় এই লাইনটি। তাতে গল্পটির বিন্দুমাত্র ক্ষতি হবে না।
এটিও আরেকটি সাঙ্ঘাতিক সুন্দর লাইন। তবে একটি প্রশ্ন কিন্তু মনে আসে। পুরো গল্প জুড়ে যতটা হিম দেখানো হয়েছে, ততটা হিম কি আমাদের অঞ্চলের দেশগুলোতে মানানসই?
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
৯৭ সালে ঠাকুরগাঁও পঞ্চগড়ে প্রায় ১২ দিন সূর্য্যের চেহারাও দেখা যায় নি। একদিন মনে আছে দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ কুয়াশা এত ঘন হয়ে যায়, মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে কোমরের নিচে দেখতে পাচ্ছিলাম না। দেয়ালে ঝুলানো থার্মোমিটারের পারদ অনভস্ততাবশতঃ ২'এর নিচে আর নামছিলো না। এইরকম হিম হলেও কি চলবে না।
আরেকদিন অন্যকিছু ছেঁটে দেবো নাহয়। আজ এটা থাক।
জানি না, কি ছেঁটে দেয়ার কথা বলছেন। তবে কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কিছু বলিনি কিন্তু। একজন সাধারণ পাঠক হিসেবে আমার যা মনে হয়েছিল, তাই বলেছি। একটি গল্প বা কবিতা আমার কাছে একটি আবিষ্কারের মত। পাঠক হিসেবে আমি গল্পটির এক একটি বাক্য পড়ছিলাম, আর ধরার চেষ্টা করছিলাম, ঠিক কোন জায়গাটিকে আপনি হিট করার চেষ্টা করছেন। যতই এগুচ্ছিলাম, আসল জায়গাটির খুব নিকটে চলে যাচ্ছিলাম। কিন্তু হল কি, আলোচ্য বাক্যটিতে আপনি যেন বা সরাসরি বলে দিলেন, সেক্ষেত্রে আবিষ্কারের আনন্দ কিছুটা হলেও লঘু হল, আমার কাছে, একজন পাঠক হিসেবেই। আমি এ জায়গা থেকেই বলেছি, হিমু ভাই। আপনার সাথে শিল্প-মান নিয়ে কথা বলার যোগ্যতা আমি রাখি না। আমি পাঠকের জায়গা থেকেই বলেছি, বিশ্বাস করুন।
যাই হোক, সচলকে বড্ড ভালবাসি। আমার অপরাধ হলে ক্ষমা করে দিবেন। সচল থেকে কখনও ছিটকে পড়তে চাই না।
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
সবার ভয় ভাঙ্গাইতে ভাঙ্গাইতে আপনার তাইলে এই অবস্থা??
তবে জিজ্ঞাসা হইল- এই টাম্বলারগুলা কেমনে যোগ করে?? আমি তো ছবিই যোগ করতে পারি না!! যা আমার দুই একটা পোস্টে দুই একটা ছবি দিয়েছিলাম তাও ছবি আসে নি!!
কায়দাটা কি??
সুবোধ অবোধ
কমেন্ট বক্সের ওপরে বামে দেখবেন ছবি সান্ধানোর বাটন আছে। ইউআরএলটা দিয়ে দিলেই খেল খতম।
অনেক ধন্যবাদ। তবে এর আগে এই পদ্ধতিতে দিয়েছিলাম। কিন্তু কেন যেন ভাঙ্গা ভাঙ্গা ছোট একটা শেইপ আসল,যাতে বোঝা গেল যে এই খানে একটা ছবি ছিল। তবে ছবির দেখা পাই নি।
আর প্রস্থ x দৈর্ঘ্য ব্যাপারটা ঠিক বুঝি নি।
যাই হোক চেষ্টা করে দেখি।
সুবোধ অবোধ
আপনার বুঝতে একটু ভুল হৈতেছে। এইটা ব্লগে লেখা গল্প। কাগুজে অরাজনৈতিক ধান্দালদের লেখা গল্প না।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
পড়া-লেখার বিশেষ অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে পন্ডিত মানুষদের মত কিছু বলতে পারবনা। বলার হয়ত দরকার-ও নেই। ব্লগ পাঠের যৎসামান্য অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়েছে, প্রবলভাবে সময়োপযোগী এই চাবুকের মত লেখাটি বেশীরভাগ জায়গা জুড়ে মেইনস্ট্রীম সাহিত্যের পথে হেঁটে শেষের দিকে ব্লগের রূপেই নিজেকে খুঁজে নিতে চেয়েছে। সেই কারণে “বিম্পি নেতার দোকান আর বিম্পি নেতার মাকানের ওপর হামলা ঘটার পরই কেবল হাদুল্লাপুর টের পায়, শান্তি রক্ষা করতে হবে, নাশকতা রুখতে হবে।” বাক্যটি জায়গা পেয়ে গেছে। বিশুদ্ধ সাহিত্যের মাপকাঠিতে এই বাক্যটি এখানে ‘দীনহিন’-এর মত আমারও মনে হয়, না এলেও ক্ষতি ছিলনা। এসে বোধ হয় লেখার শৈল্পিক মানকে ঝামেলায়-ই ফেলেছে। কিন্তু এ লেখা ত মাহবুব আজাদ লেখেন নি, লিখেছেন হিমু। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে যিনি এখানে লেখার অন্তরবাক্যটিকে মোটাদাগেই দাগিয়ে দিতে চেয়েছেন।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
বিশুদ্ধ সাহিত্য জিনিসটা আসলে কী?
আমার মন্তব্য থেকে "বিশুদ্ধ সাহিত্যের মাপকাঠিতে" অংশটুকু বাদ দিতে অনুরোধ রাখছি। আর এ ব্যাপারে আমার কোন দ্বিধা নেই যে সাহিত্য, তার শৈল্পিক মান এই নিয়ে আমি যা বলেছি তা আপনার নানা লেখা পড়ে, ভালবেসে আপনার লেখা পড়তে পড়তে আপনার লেখা নিয়ে আমার যে প্রত্যাশা তৈরী হয়ে আছে, সেখান থেকে এসেছে। এবং এ লেখাতেও আমি যা পেয়েছি, তা আমার কাছে অমূল্য প্রাপ্তি। আমি পাঠক হিসেবে আমার অনুভূতি ঠিক ভাবে প্রকাশ করতে পারিনি। দুঃখিত। বিচ্ছিরি লাগছে।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আপনাকে বিব্রত করা আমার প্রশ্নের উদ্দেশ্য ছিলো না। কিন্তু "বিশুদ্ধ সাহিত্য" ব্যাপারটা আমাকে চিন্তিত করলো, বিশেষ করে একটি নিরামিষ বাক্যের লুপ্তিতে অশুদ্ধ সাহিত্য থেকে বিশুদ্ধ সাহিত্যে এই গল্পটির উত্তরণ ঘটবে, এটা বেশ দুর্ভাবনায় ফেলে দিলো আমাকে। আমি ঐ অংশটুকু আবার পড়লাম, মনে হলো না এটা কোনো ত্রুটি। "বিশুদ্ধ সাহিত্য" রচনার বিশেষ কোনো তাগিদও আমার নেই।
শিল্পমান সম্পর্কেও আমার জ্ঞান আর অভিজ্ঞতা তুচ্ছ। একটা বক্তৃতায় এক ডিজাইনারের কথা শুনেছিলাম, তিনি বলেছিলেন Art is whatever remains । এই গল্পটা যদি সে সংজ্ঞায় উত্তীর্ণ হতে না পারে, তাতেও আমার কোনো আফসোস নেই। আশা করবো কেউ না কেউ সাম্প্রতিক সময়কে আমার চেয়ে বহুগুণে বিশুদ্ধি আর শিল্পমান প্রয়োগ করে গল্পের প্লাস্টারে ধরে রাখবেন।
"আপনাকে বিব্রত করা আমার প্রশ্নের উদ্দেশ্য ছিলো না।" - এ নিয়ে আমার এতটুকুও সংশয় নেই। আমি বিব্রত অবশ্যই - নিজেরই কথায়।
আপনার সমস্ত লেখাই - কি বিষয়ে কি শিল্পমানে আমাকে মুগ্ধ করে রাখে। অবশ্যই কোন লেখা অন্য কোন লেখার থেকে আরো ভাল লাগে। আর, সেটা জানাতে গিয়ে সবসময় ঠিকভাবে জানাতে পারব, সে আমি আদৌ মনে করি না। যখন পারলাম না তখন লেখক উপেক্ষা না করে জানতে চাইলেন কেন কি লিখেছি, আর তার পরে নিজের কথা বললেন এটা আমি পাঠকের দুর্লভ প্রাপ্তি বলেই মনে করি। (বকা খেয়েছি? বেশ করেছি। আমার প্রিয় লেখক, প্রিয় মানুষের কাছ থেকে খেয়েছি। আমার দু:খ অন্যখানে - ব্যস্ত মানুষটিকে হাবিজাবি কাজে সময় নষ্ট করিয়েছি। খুব-ই খারাপ লাগছে।)
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আপনাকে "বকা" দেওয়ারও কোনো বদুদ্দেশ্য আমার ছিলো না। গল্প যখন লিখতে পেরেছি, তখন ব্যস্ততার অজুহাত কি আর দেওয়া যায়?
আমার জন্য সুখের বিষয় হচ্ছে আমি "বিশুদ্ধ সাহিত্য" নিয়ে একটা গল্পের প্লট পেয়ে গেছি। পাইপলাইনে থাকা প্লটগুলোকে সাইজ করে ঐটাতে হাত দেবো ।
হইল!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আমার কিন্তু মনে হয় ব্লগই হবে আগামীদিনের মেইনস্ট্রিম সাহিত্যধারা।
সাহিত্যে মূল কাজ প্রকাশ ও সংযোগ। সে কাজটিতে ব্লগ কিন্তু খুবই সফল।
কে যেন একবার বলেছিলেন শিল্প-সাহিত্য আসলে 'ক্লাব'-এর মত। কবি-লেখক-শিল্পী-ক্রিটিকদের ক্লাব। কোনটা উচ্চ, কোনটা নীচু, কোনটা ভাল, কোনটা খারাপ, কোনটা কালোত্তীর্ণ কোনটা তা নয়, কোনটা আসল কোনটা মেকি, কিম্বা একদম গোড়াতেই এর সংজ্ঞা কি - কোনটা আদৌ শিল্প বা সাহিত্য পদবাচ্য আর কোনটা তা নয় এবং কেন নয় - এমন হরেক রকমের প্রশ্ন নিয়ে কবি-লেখক-শিল্পীরা বিভিন্ন ক্লাবে বিভক্ত হয়ে যান, আর তারপর পরস্পর মধুর মাথা ফাটাফাটি করেন। আমার কাছে এটা অনেকটা বরং ফুটবলের ক্লাব-ভিত্তিক কম্পিটিশনের মত মনে হয়। সব ক্লাবই ফুটবল খেলে, কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হয় একটা। তো এক্ষেত্রে যে ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হয় তার মতামতটাই চলে বেশি বা বেশি প্রভাবশালী হয় - যদ্দিন সে চ্যাম্পিওন থাকে আরকি, আর বাকিরা একটু মৃয়মান থাকে তদ্দিন। এটা একটা মজার খেলা। কিন্তু তার মানে এই না যে অন্য ক্লাবগুলি যা খেলে সেটা বৈধ ফুটবল না। আসলে তাদের বাদ্দিয়ে এ খেলা তো হয়ই না!
"বিশুদ্ধ সাহিত্য" বলতে, আমার মনে হয় কেউ কেউ "কালোত্তীর্ণ" সাহিত্য বুঝিয়ে থাকেন। আমার ধারণা, যে সাহিত্য পড়ে কয়েক প্রজন্ম পরের মানুষও মূল কনটেক্সটটা (বা আবেগটা) না জেনেও বা অন্তত মূল কন্টেক্সটে আর আচ্ছন্ন বা প্রভাবিত না থেকেও - সাহিত্যটা উপভোগ করতে পারে্ন বা তাতে আলোড়িত হতে পারেন এবং সেটা মূল্যবান মনে করেন - সেটাকেই বোধহয় অনেকে "কালোত্তীর্ণ" বা "শুদ্ধ" বলেন। আমি নিশ্চিত না। তাছাড়া এর গুরুত্ব বা প্রয়োজন কি তাও আমি জানি না।
এছাড়াও আরও নানারকম ফর্মুলা আছে মনে হয়। যেমন, বিশুদ্ধ বা প্রকৃত সাহিত্য নিয়ে কম্যুবাদীদের 'সোশিয়ালিস্ট রিয়ালিজম' নামের একটা মতবাদ ছিল মনে হয়। তবে এর সবই ঐ ক্লাব ফুটবলের মত। আজকে একজন চ্যাম্পিওন, কালকে আরেকজন!
****************************************
যেইটা কাগজে লিখে ছাপানো হয়, সভা সেমনার করে যেইসব নিয়ে কাগুজেরা একে অন্যের প্রশংসা করেন সেইটারে বিশুদ্ধ সাহিত্য বলে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
"যে জাতি ছাগলকে ভালোবেসেছিলো" বা "গরুটারই চরিত্র ভালো নয়" এগুলোতে কি আপনার মতে সাহিত্যের বিশুদ্ধতা রক্ষা হয়েছিলো লহমা ভাই? অথবা "পাগমার্ক" বা "তেজোসৃপ ও তিলোত্তমা"? আমি তো ছাই জানি না বিশুদ্ধ সাহিত্য কি জিনিস। এক শুনেছিলাম ফ্রেঞ্চদের হিসাব অনুযায়ী নজরুলের কবিতা কোন কবিতাই নয়। কবিতায় নাকি এরকম মারমার কাটকাট থাকতে পারবে না। আর এই আবার শুনছি সাহিত্যের বিশুদ্ধতার জন্য কোদালকে কোদাল বলা ঠিকনা। আপনারা নিয়মিত লেখেন আপনারা জানেন। আমরা তো যা উপভোগ করা যায় উপভোগ করি নিয়ম কানুন বুঝতে যাই না।
তবে বড় কথা হলো, হিমু ভাইয়ের লেখাই একসময় আমাকে সচলায়তনে সাঁটিয়ে রেখেছিলো পোস্টারের মত। তাঁর লেখার কারণেই তো তাঁর অতিমাত্রার শর্ট ফিউজ মেজাজটাকেও উপেক্ষা করা যায়। হিমু ভাই, দয়া করে আপনি যেনো আবার কোদালকে কাতানা বলবেন না।
আমার মন্তব্য ঠিক ছিল না। দুঃখিত।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
@ এক লহমাঃ আপনার দুঃখিত বা বিব্রত হওয়ার কিছু নেই। আমি যদ্দুর জানি, "শুদ্ধ সাহিত্য", "কালোত্তীর্ণ সাহিত্য", "উচ্চ সাহিত্য" (হাই ব্রাও) - এই সবই শিল্প-সাহিত্য জগতে আলোচিত ও তর্কিত বিষয় ও ভোকাবুলারি। আর সাহিত্য তো বিজ্ঞান নয় যে - যে কোন একটা মত বা মতবাদই একমাত্র সত্য হতে হবে। বিজ্ঞানে পৃথিবী সূর্যের চতুর্দিকে ঘুরে নাকি সূর্য পৃথিবীর চারপাশে ঘুরে - এই দুই মতবাদের যে কোন একটিকেই সত্য হতে হবে। কিন্তু সাহিত্যে মনে হয় দুটোই সম্ভব। সত্যি কথা বলতে কি, মত-মতামত-মতবাদের এই অফুরন্ত বৈচিত্র্যই আমার মতে শিল্প ও সাহিত্যের সৌন্দর্য্য, তার শক্তি। আপনি যদি মনে করেন "শুদ্ধ সাহিত্য" আছে, তাহলে অবশ্যই সেটা আছে। আবার নেইও
****************************************
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
প্রিয় এক লহমা, আপনার মন্তব্যে এমন কিছু ছিল না যাতে আপনি দুঃখিত বোধ করবেন। একজন পাঠক হিসেবে আপনার যা মনে হয়েছে আপনি সরল ভাষায় তা ব্যক্ত করেছেন এবং তা কারোকে আঘাত করেও নয়। বরং আমার কাছে মন্তব্য প্রতি মন্তব্য পড়ে বেশ চমৎকার লেগেছে - কিছু কিছু কথা তো মনে দাগ কেটে যাওয়ার মত, যেমন "শিল্প-সাহিত্য আসলে 'ক্লাব'-এর মত" এটা তো চিন্তা ভাবনার একটা নতুন দ্বার খুলে দিলো।
সুতরাং আপনি মন খুলে মন্তব্য করে যান - আমাদেরই তো এই সচলায়তন, আমরাই তো একে সচল রাখবো।
ধন্যবাদ।
____________________________
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আসলে আমার মন্তব্যেই বোধহয় খানিকটা শ্লেষ প্রকাশ পেয়েছে, যার প্রয়োজন ছিলো না। মাঝে মাঝে নিজেকে স্মলাতে পারি না। লহমা ভাই, আমি দুঃখিত।
আরে না, না। আমরাই ত!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মাসুদ সজীব
ভাল হয়েছে লেখাটা।
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
পড়ার জন্যে সবাইকে ধন্যবাদ।
কিছু কিছু গানের একটা শব্দ মাথায় গেঁথে যায় যেমন IMAGINE
কিছু কিছু গল্পের একটা লাইন কবিতা হয়ে উঠে "তার শরীরে সেলাইয়ের দাগে দাগে ফুটে আছে ফাঁসির অপেক্ষায় প্রহর গোণা মুজাহিদ-কামারুজ্জামান-সাঈদীর কুটিল ভ্রুকুটি। "
আপনার লেখা এই সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে এরকম গল্প গুলো পড়ার সময় এক ধরনের যাদু-বাস্তবতা এসে ভর করে। মনে হয় কোন না কোন ভাবে আপনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন! নয়তো গল্পটাকে এত বাস্তব মনে হয় কী করে! গল্পের খন্ড খন্ড অংশ গুলো পত্রিকায় পড়েছি বলে? টিভির খবরে দেখেছি বলে?
আপাতত, মনেমনে ঠিক করে রেখেছি অনেকদিন পর এই সব ঘটনা প্রবাহ বিস্মৃত হয়ে গেলে আপনার এই গল্প গুলো আবার পড়ে দেখবো, তখনও কি এতটা বাস্তব মনে হয় কিনা।
মাঝখানে প্রায় তিন-চার মাসের একটি গ্যাপ দিলেও আবার নিয়মিত লিখছেন দেখে ভালো লাগছে। আপনার লেখা পড়ার অপেক্ষায় থাকি।
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
ঝাঁঝাঁ , হিমু দা।
অনেক দিন পর হিম্ভায়ের গপ্প পেলাম
facebook
চলিত ঘটনাকে নিয়ে এমনভাবে যে লেখেন গল্পগুলো!! মনে প্রশ্ন জাগে ক্যাম্নে লেখেন?
____________________________
ক, গ উভয়ই
গল্প দারুণ!
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
হু, মগবাজার হোক আর কাওরানবাজার... দুইটাই বাজারি মাল
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
অর্থাৎ বাজারে স্বার্থতুতো ভাই
বাংলা ছোটগল্পে বাংলাদেশের রাজনীতি কীভাবে এসেছে, তা বিশ্লেষণে আগামী দিনের পাঠকের ভরসা হবে এ গল্প, এবং এরকম আরো কিছু আপনার লেখা গল্প।
আহবান জানানোর পর নিজেই পথিকৃতের ভূমিকা পালন করলেন, অভিনন্দন রইল। আমাদের অন্যান্য গল্পকারদের দিকে উৎসাহ ভরে তাকিয়ে রইলাম।
গল্পটি প্রত্যাশা মতই হয়েছে। তবে যেমনটা উল্লেখ করেছেন, ভাষাটা ঠিক উত্তরবঙ্গের নয়, বৃহত্তর রংপুর এবং দিনাজপুরের একাংশের বলা যেতে পারে। উত্তরবঙ্গের অন্যান্য অঞ্চল যেমন, রাজশাহী, বগুড়া বা পাবনার আঞ্চলিক ভাষা একেবারেই অন্যরকম। সাদুল্লাপুরকে হাদুল্লাপুর হিসেবে উপস্থাপিত করায় এক ধরনের বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে, বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলেই "স' কে "হ" উচ্চারণ করলেও গাইবান্ধাবাসীর এই দোষ নেই। তারা অবশ্য অনেকটা "সাদুল্যাপুর" এর মত উচ্চারণ করে।
সাদুল্লাপুর সাদুল্লাপুর, আর হাদুল্লাপুর হাদুল্লাপুর।
"দোষ"?
****************************************
তথাকথিত দোষ, আমরা যেমন সোনা রে হোনা, শালা রে হালা বলি, এই আর কি।
ইয়ের ল্যাঞ্জাকে কি আপনারা হাকা বলেন, আব্দুল্লাহ ভাই?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ঠিক যেমন কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদে মুখর হয়েছিল সারা বিশ্ব, কিন্তু বিশ্বজিতের খুনিদের ফাঁসির প্রতিবাদে মুখরিত হবেনা একটি পাখিও। শান্তি আলোচনা চালিয়ে যাওয়া বা শান্তির আলোচনার পথ রোধ করা সবসময়ই সিলেক্টিভ, ঠিক যেমন মানবতা সিলেক্টিভ। ভিক্টিম এর অবস্থানের সেনসিটিভিটি এবং ক্রিমিনালের ছত্রছায়ার উপর নির্ভর করে সমাজ, রাষ্ট্র এবং মানবাধিকারবাদীদের ভূমিকা পাল্টে যায়।
সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোকে ভিন্ন দৃষ্টি (যে দৃষ্টিতে ভেবে দেখতে আমরা অনেকেই পারিনা) থেকে প্রাণ দেয়াতে আপনার জুড়ি নেই।
শব্দ পথিক
কিছুদিন আগে 'শখের মেলা রাংতা'র 'আকাশলীনা' স্টল থেকে মাহবুব আজাদের 'ছায়াগোলাপ' বইটা কিনেছিলাম। যদিও এর অনেকগুলো গল্পই সচলায়তনে আগেই পড়েছি। তবুও.....
যাহোক, যেটা বলতে চাই, এই বইয়ের লেখক পরিচিতির একাংশে লেখা আছে, 'অনলাইন লেখক সমাবেশ সচলায়তনে তিনি নিয়মিত লেখক।' দীর্ঘদিন লেখক সচলায়তনে বড্ড অনিয়মিত ছিলেন। ইদানিং আবার....
লেখকের প্রতি অনুরোধ, কথাটার সত্যতা বজায় রেখে নিয়মিত লিখলে পাঠক সময়োপযোগী প্রয়োজনীয় কিছু লেখা পেতে পারে। যেমন এই লেখাটি। ধন্যবাদ লেখককে।
খাঁটি একটা কথা বলেছেন। এজন্য আপনাকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ
গল্পটা আপাততঃ সুন্দর শান্তিময় সমাপ্তিতে।
কিন্তু ৫ তারিখের পর এই গল্পের বাকী অংশটাও লিখতে হবে মনে হয়। তখন ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে থাকা পার্টিগুলো কোন চেহারায় এসে দাঁড়াবে, সেইটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
নতুন মন্তব্য করুন