• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

ভিনগ্রহী

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: শুক্র, ২৯/০৬/২০০৭ - ১০:১৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এপ্রিল ১৭, ২০০৩ তারিখে লেখা দেখতে পাচ্ছি। সচলায়তনে প্রথম প্রকাশিত, নাকি? পাঠকের কর্তব্য মন্তব্য করা।

‘আলবাত!’ গদাম করে একটা কিল বসালেন মামা পুরানো নড়বড়ে একটা টেবিলের ওপরে, যার এপাশে আমরা তিনজন বসে, আমাদের রোজকার সান্ধ্য গাড্ডায়, আমাদের পাড়ার গর্ব, সেই দি আদি তেলোত্তমা রেস্তোরাঁয়। তেলোত্তমার কর্ণধার, যে এককোণায় পড়ে থেকে কেবল টাকাপয়সা গোণে, সেই কলিমুদ্দি কাউন্টারের মোমবাতির আবছায়ায় বসে ঝিমুচ্ছিলো, কিলের শব্দে সে লাফিয়ে উঠে চারপাশে খোঁজ করতে লাগলো কী যেন, বোধহয় ভেবেছে তার দোকানে বুশ-ব্লেয়ারের বোমা এসে পড়েছে।

‘ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে!’ গর্জে উঠলেন মামা।

আমাদের তিনজনের ছয়টা হাতে একটা বিদেশী পত্রিকা পালাক্রমে ঘুরছিলো, যেটাতে অনেক তথ্য এবং ছবি বিশ্লেষণ করে ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা সম্পর্কে ব্যাপক তুলো ধুনে দেয়া হয়েছে। কবে কোন গ্রহে খাল পাওয়া গেছে, যেখানে নাকি ভিনগ্রহী প্রাণীরা গন্ডোলা চালাতো, কোন উপগ্রহে দানবাকৃতি পায়ের ছাপের ফসিল পাওয়া গেছে, তার মানে বড় গোছের কোন ভিনগ্রহী সেখানে আদ্যিকালে ব্যাপক হাঁটাহাঁটি করেছে, বহুদূর থেকে বিচিত্র সব রেডিও সিগন্যাল এসেছে পৃথিবীতে, এর মানে হচ্ছে ভিনগ্রহীরাও পল্লীগীতি আর সাবানের বিজ্ঞাপন শোনে --- ইত্যাদি। কিন্তু কোন বিজ্ঞজনোচিত বিশ্লেষণের ধারেকাছে না গিয়ে কেন মামা এমন অন্ধের মতো ঘুষোঘুষি শুরু করে দিলেন, সেটা নিয়ে আমাদের মধ্যে কানাঘুষা চলতে থাকে।

আমাদের সেই বিজবিজের মধ্যেই মামা আবার হুঙ্কার দ্যান, ‘শুধু তাই না, তারা পৃথিবীতে প্রায়ই আসে!’

এবার আমাদের কেমন কেমন যেন লাগে। এটা কি একটু বেশি বাড়াবাড়িই হয়ে যায় না? ভিনগ্রহীদের আনাগোনা নিয়ে অতটা নিশ্চিত হওয়াটা কি মামাকে সাজে? তাদেরকে ভিনগ্রহের আঙিনাতে চরতে দেয়াই কি শ্রেয় নয়? খাল কেটে কুমীরকে আপ্যায়ন করা কি অনুচিত নয়? আর এ কথা রটে গেলে উন্নত বিশ্বের চোখে আমাদের ভাবমূর্তিরই বা কী হবে? দাতারাই বা কী বলবেন?

মামা এবার পাগলাটে চেহারা করে হাসেন। ‘এমনকি,’ ধোঁয়া ছাড়েন তিনি, ‘--- আমাদের পরিচিত অনেকেই হয়তো ভিনগ্রহ থেকে আমদানি করা!’

পরিচিতদের নামে এমন ধোঁয়াটে কুৎসা রটানোয় এবার আমরা চেতে যাই। ‘বললেই হলো!’ গর্জে ওঠে শিবলি। আমি আর রেজা মুখে আলুপুরি গুঁজে দিয়ে ওর হুঙ্কারে শামিল হই।

মামা হাসেন। ‘ওরে মুখ্যুরা, বিশ্লেষণ করতে শেখ!’ শ্লেষ মেশানো গলায় বলেন তিনি।

আমরা ঘাবড়াই না। ‘যেমন?’

‘ভিনগ্রহীদের তো আর চেহারা দেখে তফাৎ করতে পারবি না, তাই না? তারা যখন উদ্যোগ নিয়ে এতো এতো আলোকবর্ষ পেরিয়ে পৃথিবীতে আসতে পেরেছে, নিশ্চয়ই সামান্য মানুষের রূপ ধরে ঘোরাঘুরি করার সামর্থ্য তাদের আছে। যে রাঁধতে জানে, সে কি আর চুল বাঁধতে জানবে না?’ সিরিয়াস চেহারা করে বলেন মামা। ‘তারা নিশ্চয়ই তাদের ওই উদ্ভট সিড়িঙ্গে পোকামাকড়ের মতো চেহারা নিয়ে মানুষের সমাজে মিশতে চাইবে না। চাক্কা সাবান ফোটো সুন্দরীদের মতো চালচলন নিশ্চয়ই তাদের মানাবে না, তাই না? --- তাদের চেহারা, আকার, সবই হবে সাধারণ মানুষের মতো। কিন্তু তাদের আচরণের কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্য, যা আমাদের কাছে অস্বাভাবিক মনে হতে বাধ্য, সেসব থেকেই তাদেরকে আলাদা করে চেনা সম্ভব।’

এমন ধোঁয়াটে কথাবার্তার পরও আমরা ঘাবড়াই না। ‘যেমন?’

‘যেমন ধর  তোরা কেউ আমাদের পাড়াতুতো গোয়েন্দাটাকে পানি খেতে দেখেছিস?’

এবার আমরা ঘাবড়ে গিয়ে মুখ চাওয়াচাওয়ি করি। ‘গুল মোহাম্মদ ভাই?’ আমতা আমতা করে বলি আমি। ‘না তো --- কেন?’

মামা চেয়ারে হেলান দেন। ‘এই তো --- এখানেই তোদের স্থূল মগজ মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। চাঙা কর সেটাকে, চাবি ঘোরা, স্টার্ট দে, দরকার হলে লাথি মার! গাধার দল, বিশ্লেষণ করতে শেখ! --- কেন আবার? গুল মোহাম্মদ পানি খায় না!’

আমি কথাটা মানতে পারি না। স্থূল মগজের ওপর উপরোক্ত অত্যাচারগুলো না করেই আমি বলি, ‘আমরা কেউ পানি খেতে দেখিনি বটে, কিন্তু তার মানে এই না যে গুল মোহাম্মদ ভাই পানি খায় না। আমরা তো তাকে বাথরুমও করতে দেখিনি, তাই বলে কি তার “বড় বাইরে” পায় না?’ বিশ্লেষণ করি আমি।

মামা অসন্তুষ্ট ভঙ্গিতে মাথা নাড়েন। ‘আরে গাধা, ওটা তো রেখে ঢেকে পাওয়ার জিনিস। পাড়ার লোককে দেখিয়ে বড় বাইরে পাওয়ার নমুনা তো পাড়ার পাগলটারও নেই। পানি খাওয়ার কথা আলাদা। লোকে হরদম পানি খায়, নইলে চা খায়, নইলে অন্য কিছু খায়। ধর, খুব গরমেও যখন লোকে ঢকঢক করে ডাব খায়, পানি খায়, কোক খায় --- বেল আর আখের শরবত খায়, তখনও গুল মোহাম্মদ কোন কিছু পান করে না! টিকিটিকি যেমন পানি না খেয়ে থাকে, গুলুও তেমনি পানি না খেয়ে থাকে।’

আমরা এবার আরো ঘাবড়ে যাই। তাই নাকি?

গুল মোহাম্মদের পানাভ্যাসের ব্যাপারে রেজা কিংবা শিবলিকেও খুব একটা নিশ্চিত দেখায় না, অর্থাৎ তাকে কখনো গুলঞ্চি বার অ্যান্ড রেস্তোরাঁতেও দেখা যায়নি। কাজেই আমরা একযোগে আমতা আমতা করতে থাকি।
আমি তবুও দুর্বল একটা যুক্তিকে সেটার নিজের পায়ে দাঁড় করাতে চাই, গুলঞ্চি ছাড়াও অনেক বার আছে ঢাকা শহরে। ‘গুল মোহাম্মদ ভাইয়ের যা চালচলন, এমনও তো হতে পারে, সে পাঁড় মাতাল, বাংলা-কেরু-ধেনো ছাড়া আর কোন কিছু তার মুখে রোচে না --- হতে পারে না এমনটা?’

মামা মুচকি হেসে জানান, গুল মোহাম্মদকে সেসবও কখনো পান করতে দেখা যায়নি। কে জানে, কথাটা সত্যি হতেও পারে, কারণ আমিও তাকে কখনো বোতলবিলাসিতা করতে দেখিনি।

শিবলি হঠাৎ বিড়বিড় করে বলে, ‘ঐ যে আসছে গুলু! দ্যাখ দ্যাখ!’

আমরা ঝট করে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি, আসলেই তো, সামনে রাস্তায়, গুল মোহাম্মদ মাথায় একটা তেলতেলে সবুজ টুপি আর কাঁধে একটা এই-সাবানের-যুগে-অযথা-ময়লা ঝোলা চাপিয়ে এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে খুবই সন্দেহজনক ভঙ্গিতে কলিমুদ্দির দোকানের দিকে এগিয়ে আসছে। চলতে চলতে সে হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়ে পেছনে ঘাড় ঘুরিয়ে কি যেন দেখলো, তারপর আবার পা টিপে টিপে এগিয়ে এলো।

রেজা বললো, ‘মনে হয়, ব্যাটা এখানেই আসবে।’

আমি হঠাৎ এবার মামাকে বহুদিন পর বাগে পেলাম। ‘ঠিক আছে মামা, দেখি আপনার বিশ্লেষণের জোর। গুলু ভাই যদি এখন পানি না খায়, তাহলে সে যে পানি খায় না, কথাটা মেনে নেবো আমি।’

শিবলি মাথা দোলায়, ‘আমিও।’

রেজা চোখ গরম করে আমার দিকে তাকায়, তারপর ‘আমারও মনে ছিলো এ ভাবনা, ব্যাটা কেমনে পারিলো জানতে’ গোছের একটা ভঙ্গি করে সায় দেয়।

মামা রাজি হন, নিঃশব্দে।

গুল মোহাম্মদ দোকানের পাশ দিয়ে চলে যায়, ভেতরে ঢোকে না প্রথমটায়। তারপর হঠাৎ পিছিয়ে এসে সট করে দোকানে ঢুকে পড়ে সে। দোকানের ভেতরটায় একবার জুলজুল করে চোখ বুলিয়ে নিয়ে একেবারে ভেতরে এক কোণায় গিয়ে বসে, তারপর টুশকি দিয়ে বেয়ারা জুম্মনকে ডাকে।

আমরা আড়চোখে চেয়ে থাকি।

পরবর্তী দশ মিনিটে গুল মোহাম্মদ এদিক ওদিক তাকিয়ে গোয়েন্দাসুলভ রহস্যময় ভঙ্গিতে চপাচপ গোটা আষ্টেক আলুপুরি শেষ করে ফ্যালে, তারপর ঝোলা থেকে একটা নোটবই গোছের কি একটা বের করে হিজিবিজি কাটে, তারপর সেটাকে আবার ঝোলাবন্দি করে, হাতের উল্টোপিঠে মুখ মুছে বিকট একটা ঢেঁকুর তুলে সে আবারো চারপাশটায় নজর বুলিয়ে নিয়ে চোরের মতো পা টিপে টিপে বেরিয়ে যায়। যাওয়ার সময় কলিমুদ্দিকে কী একটা ইশারা করে সে, কলিমুদ্দি একটা বিশাল জাবদা খাতা বিরস মুখে খুলে কী যেন লিখতে থাকে।

কিন্তু মামার কথা ঠিক, গুল মোহাম্মদ পানি খায়নি। আটদশটা পুরি খেলে যে পরিমাণ পিপাসা পাওয়ার কথা, তাতে এক লিটার পানি খাওয়াটাও বিচিত্র কিছু নয়। আর ব্যাটা দিব্যি পানি না খেয়ে গটগটিয়ে বেরিয়ে গেলো? গুল মে কুছ কালা হ্যায়।

শিবলি মাথা নাড়ে, ‘গুলু ভাই পানি খায় না!’

রেজা সায় দেয়।

আমি তবু অবিশ্বাসীদের দলে থেকে যেতে চাই, ‘হয়তো সে খুব স্বাস্থ্যবাতিকঅলা। থাকে না কিছু লোক? বাড়ির বাইরে ফোটানো পানি ছাড়া পানি খায় না --- এমনই হয়তো?’

মামা বিকট চেহারা করে আমার দিকে তাকান, কিন্তু রেজা মীরজাফরের মতো পোঁ ধরে, মামাকে মুখ খুলতে দেয় না সে, নিজেই ফোঁপরদালালের মতো ফরফর করে ওঠে, ‘সে ধরনের লোকেরা কখনো বাড়ির বাইরে পুরি খায় না রে বোকচন্দর --- আর তারা নিজেদের সাথে সবসময় ফোটানো পানির গ্যালন বয়ে বেড়ায়।’

মামা একটা সন্তুষ্ট হাসি দ্যান।

আমি মনমরা হয়ে বলি, ‘আচ্ছা মানলাম, গুল মোহাম্মদ পানি খায় না।’ বলতে বলতেই আমার চোখ পড়ে টেবিলের ওপর পড়ে থাকা ম্যাগাজিনটার দিকে, আর মনে পড়ে যায় আমরা কী নিয়ে কথা বলছিলাম।

‘কিন্তু গুল মোহাম্মদের পানি খাওয়া না খাওয়ার সাথে ভিনগ্রহে প্রাণের কি সম্পর্ক?’

মামা আবার চটে যাওয়া ভাবটা চেহারায় আমদানি করেন। ‘বিশ্লেষণ!’ খেঁকিয়ে ওঠেন তিনি।

শিবলি নাক গলায়, ‘আপনি কি বলতে চান, গুল মোহাম্মদ একজন এলিয়েন?’

মামা আঙুল খাড়া করেন, ‘এগজ্যাক্টলি!’

রেজা আবার মামার দালালি করতে থাকে, হতভাগাটা, ‘হয়তো গুল মোহাম্মদ এমন কোন গ্রহ থেকে এসেছে, যেখানে পানি নেই। হয়তো পানি জিনিসটা ঐ গ্রহের জীবদের জন্যে খুবই ক্ষতিকারক, হয়তো পানি খেলে তাদের জটিল কোন ব্যারাম হয় --- হয়তো তারা এ কারণে পানিকে এড়িয়ে চলে!’

মামা আবার মাথা দোলান। ‘এগজ্যাক্টলি!’

রেজা হাঁক দেয়, ‘জুম্মন, পুরি আন তো!’ মামা আপত্তি করেন না।

গুল মোহাম্মদকে ভিনগ্রহী ভাবতে আমার কোন আপত্তি নেই, সে তো আমার তালুই নয়, কেন তার হয়ে বৃথা ওকালতি করে যাবো? তাছাড়া লোকটার কাজকারবারও তো ঠিক পৃথিবীর মানুষের মতো নয়। সবসময় কাঁধে ঝোলা, মাথায় টুপি, চোরের মতো হাবভাব ---।

শিবলিও সুর তোলে, ‘হ্যাঁ, লোকটা যেন কেমন ---।’ পুরি দিকে হাত বাড়ায় সে।

আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। একটা পুরি তুলে নিয়ে গালে দিয়ে বলি, ‘কোন গ্রহ থেকে এসেছে এই ব্যাটা? কি মামা, আপনার কী ধারণা? নেপচুন? ইউরেনাস?’

মামা মাথা নাড়েন, ‘সৌরজগতের কোন গ্রহ না-ও হতে পারে। সৌরজগতের বাইরেও অনেক গ্রহ রয়েছে, সেখান থেকে আসতে পারে। তাদের মানা করার কেউ তো নাই ---।’

আমরা এই বহির্জাগতিকদের আনাগোনায় চিন্তিত হয়ে বিমর্ষ মুখে পুরি চিবাই। গুল মোহাম্মদের ওপরে মেজাজটা বিষিয়ে যায় আমার। ব্যাটা ফাজিল, ঘরবাড়ি ছেড়ে অ্যাতো দূরে এসে ঘাঁটি গেড়েছে, আবার গোয়েন্দা সেজে মশকরা করা হচ্ছে!

মামা ফুস করে বিড়ির ধোঁয়া ছেড়ে বলেন, ‘আর, কলিমুদ্দিকে হিসাব থেকে বাদ দিচ্ছিস কেন তোরা?’

আমরা প্রায় বিষম খাই। ‘কলিমুদ্দি? সে-ও পানি খায় না?’ সাথে সাথে ঘাড় ফিরিয়ে দেখি কলিমুদ্দি বিশাল একটা মগে করে চুকচুক শব্দে চা খাচ্ছে।

মামা হাসেন। ‘আরে গাধা, মাছের আলু আর মাংসের আলু এক করে ফেলিস না। কলিমুদ্দি পানি খায়। কিন্তু ---’, বিড়িটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখেন মামা, ‘--- পুরি খায় না!’

আমরা তাজ্জব বনে যাই। মনে করার চেষ্টা করি, আসলেই কলিমুদ্দিকে কখনো পুরি খেতে দেখেছি কি না। পুরি হাতে, কিংবা পুরি মুখে কলিমুদ্দি, আমাদের সেই মধুর দৃশ্য স্মরণে আসে না। নদী কভু নাহি করে নিজ জল পান। কলিমুদ্দি তাই নিজ পুরি নাহি খান?

একটা সমাধানের জন্যে আমরা চুপচাপ তাকিয়ে থাকি মামার দিকে, নিজেদের মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা স্থূল মগজগুলোকে আর খাটাতে ইচ্ছে করে না।

মামা ভুরু নাচান। ‘কী বুঝলি?’

রেজা গড়গড়িয়ে বলতে থাকে, ‘কলিমুদ্দি এমন কোন গ্রহ থেকে এসেছে, যেখানে পুরি খুব খতরনাক জিনিস।’

আমি আবার বিদ্রোহ করি, ‘তাহলে ও পুরির ব্যবসা করে কেন?’

রেজা দাঁত খিঁচিয়ে বলে, ‘ছদ্মবেশ, গাধা কোথাকার!’

শিবলি সম্মতি দিয়ে আরেক প্লেট পুরির জন্যে জুম্মনকে ডাকে।

মামা এবার জুম্মনের দিকে মনোযোগ দিয়ে তাকান, চোখে কঠোর ঢুলুঢুলু দৃষ্টি। তারপর কোন কথা না বলে একখানা সপ্রশ্ন ইঙ্গিতচুকচুকে দৃষ্টি ঝাড়েন আমাদের দিকে।

জুম্মন কী খায় না? জুম্মনকে আমি পুরি চিবাতে দেখি প্রায়ই, আর সেদিন দেখলাম খুব ডাঁটে একখানা হলুদ প্লাস্টিকের সানগ্লাস চোখে এঁটে টম ক্রুজের মতো ভাব নিয়ে টেরচা হয়ে দাঁড়িয়ে পাড়ার দোকান থেকে কোলা কিনে খাচ্ছে। তাহলে? সশব্দে ভাবতে থাকি।

মামা গম্ভীর হয়ে আমার ভাবনার জবাবে বলেন, ‘জুম্মন ইকোলোকেশন করতে পারে।’

আমার তো দাঁতকপাটি লেগে যাওয়ার যোগাড়। ইকোলো--- কী যেন?

মামা আবার বলেন, ‘ইকোলোকেশন  ধ্বনিনির্দেশ। মানে বুঝলি না? শব্দের মাধ্যমে কোন বস্তুর অবস্থান নির্ণয়। বাদুড় যা করে, তিমি-ডলফিন যা করে, উচ্চ কম্পাঙ্কের শ্রবণোত্তর শব্দতরঙ্গের প্রতিফলিত রূপ বিশ্লেষণ করে বস্তুর প্রকৃতি ও অবস্থান বুঝে ফেলতে পারে, রাডারের মতো --- সোজা বাংলায়, জুম্মন অন্ধকারে দেখতে পায়।’

জুম্মনের এই চমকপ্রদ বিজ্ঞানজর্জর ক্ষমতায় --- যার সাথে খাওয়াদাওয়ার কোন সম্পর্ক নেই, যা পানি ও পুরি থেকে একেবারেই মুক্ত --- আমাদের তাক লেগে যায়, আর মামার এই জটিল বক্তৃতায় আমার মাথা ঘুরতে থাকে। কিন্তু যথারীতি আমি গলা উঁচাই, ‘আপনি বুঝলেন কিভাবে?’

মামা হাসেন, আর মাথায় টোকা দেন, অর্থাৎ, বিশ্লেষণ।

‘দাঁড়া, হাতেনাতে প্রমাণ করে দেখাই। অ্যাই জুম্মন,’ হাঁক ছাড়েন তিনি, জুম্মন কাছে এসে দাঁড়াতেই বললেন, ‘ঐ কোণা থেকে আমাকে একটা কাঁচের গ্লাস এনে দে তো। খবরদার, ইস্টিলের গ্লাস আনবি তো থাপ্পড়!’

আমরা কলিমুদ্দির কাউন্টারের মোমবাতি থেকে বহুদূরে, সভ্যতার আলো বিবর্জিত মিশমিশে অন্ধকারে ডুবে থাকা দোকানের কোণাটার দিকে তাকিয়ে থাকি। জুম্মন সেখান থেকে নিমেষের মধ্যে একটা ময়লা সবজেটে কাঁচের গ্লাস ছোঁ মেরে নিয়ে আসে। মামা সেটা হাতে নিয়ে মিষ্টি করে হাসেন।

আর রেজা, নির্লজ্জ চাটুকারের মতো, মামার সমর্থনে ফিজিক্সের ঠাকুরমার ঝুলি খুলে বসে। ‘কাঁচ আর স্টিল, দু’টার বৈশিষ্ট্য দু’রকম। কাঁচ যেভাবে আলট্রাসোনিক ওয়েভকে প্রতিফলিত করবে, স্টিল সেভাবে করবে না। কাজেই অন্ধকারেও জুম্মন ঠিকই বুঝে ফেলেছে কোনটা কি। সে হাতড়ে বেড়ায় নি, যেমনটা হয়তো একজন পৃথিবীবাসী করতো --- স্পর্শের মাধ্যমে, কিংবা ওজনের আন্দাজে বোঝার চেষ্টা করতো আগে, কোনটা কাঁচ আর কোনটা ইস্পাত। যেহেতু জুম্মন ইকোলোকেশনে সক্ষম, সে একবারেই গোটা কাজটা নিখুঁতভাবে করে ফেলেছে --- হাতড়ায়নি, হোঁচট খায়নি, সময় নষ্ট করেনি। খুব সম্ভবত জুম্মন যে গ্রহ থেকে এসেছে, সেখানে দৃশ্যমান আলোর পরিমাণ খুব কম, যেখানে শব্দতরঙ্গ দিয়েই বাদুড়ের মতো দেখার কাজ করতে হয় ---।’

আমি আর শিবলি শিউরে উঠি, খানিকটা জুম্মনের খ্যামতার কথা ভেবে, আর খানিকটা রেজার তেলবাজ বুদ্ধিজীবী সাজার নমুনা দেখে, নিজের মগজটাকে লাথি মেরে মেরে একেবারে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটিয়ে আর খাটিয়ে বেড়াচ্ছে, ব্যাটা ফাজিল। আমার একবার মনে হলো, জুম্মন সেই আদ্যিকাল থেকে এই অন্ধকার দোকানে কাজ করছে, আর কয়টা গ্লাসই বা আছে এখানে, সব তো ওর মুখস্থ হয়ে যাবার কথা, কিন্তু এ ব্যাপারে নিজের মুখ খোলার সাহস হলো না।

ওদিকে মামা বিমল একটা হাসি দ্যান। ‘এগজ্যাক্টলি!’ একটা স্নেহমাখা দৃষ্টি উপহার দ্যান তিনি রেজাকে, আর আমার দিকে তাকান চোখটাকে লাল করে কটমটিয়ে।

এমন ভিনগ্রহের আবহাওয়ায় আমরা পুরির স্বাদ হারিয়ে ফেলি, কেমন যেন লাগে সেটা। পুরির স্বাদের সাথে জড়িত এক ও অদ্বিতীয় সুরেশ কারিগরের কথা মনে পড়তেই আমরা ঝট করে ঘাড় ফিরিয়ে তার দিকে তাকাই। সুরেশ একমনে পুরি ভাঁজছে, আর মাঝে মাঝে গাঁজার কল্কি তুলে দম দিচ্ছে।

আমরা এবার মামার দিকে তাকাই একযোগে।

মামা হাসেন। ‘এই তো লাইনে এসেছিস। সুরেশও।’

রেজা কিন্তু এইবার তেলের শিশি হারিয়ে ফেলে। ‘কী করে সুরেশ?’

‘সুরেশের গাঁজার গন্ধ পেয়েছিস কখনো?’

মামার গাঁজাগুরি গপ্পের ঠ্যালায় সুরেশের কল্কিস্থ গাঁজার হদিশ পাইনি আমরা অ্যাদ্দিন, কিন্তু আজ এতো কিছু ঘটে যাচ্ছে, আমরা তার সাথে তাল মেলানোর জন্যেই নাক উঁচিয়ে নিঃশ্বাস নেই। নাহ, কিছু নেই। শুধু আলুপুরির মনপ্রাণ চাঙা করা গন্ধ, আর মামার বিড়ির উৎকট ঝাঁঝ।

‘গাঁজার গন্ধ তো বেশ কড়া, অথচ সুরেশের কল্কি থেকে কোন গন্ধ আসে না। তার মানে কী?’ মামা জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখেন।

‘তার মানে এটা গাঁজা না?’ এবার আমি মুখ খুলি।

‘কখনোই না।’ মামা মাথা নাড়েন।

‘নিশ্চয়ই এটা এমন কোন পদার্থ, যেটা পুড়িয়ে এমন কোন গ্যাস বেরোয়, যার কোন গন্ধ নেই, আর যেটা না নিলে সুরেশ বসাক পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে টিকতে পারবে না!’ রেজাও টেবিলে কিল মারে, চামচা কাঁহিকা। ‘ঐ কল্কি ছাড়া সুরেশ শ্বাস নিতে পারবে না, আর এর জন্যেই ওকে কখনো কল্কি ছাড়া দেখা যায় না!’ বিশ্লেষণের চূড়ান্তে পৌঁছে যায় সে, এবং আলগোছে আরেক প্লেট পুরির অর্ডার চলে যায় ইকোলোকেশনের তত্ত্বাবধানে, মানে জুম্মনের কাছে।

আমরা নিজেদের বিশ্লেষণ, এবং কখনো কখনো মামার পথনির্দেশনায় পরবর্তী আধঘন্টায় আরো অনেক ভিনগ্রহীকে সনাক্ত করি। কনস্টেবল বাচ্চু মিয়া, যে কি না হঠাৎ হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে, এবং মাঝে মাঝে বহুদূরে চলে যেতে পারে নিমেষের মধ্যে। টেলিপোর্টেশন, নাম জুগিয়েছে রেজা। এর খুব কড়া উদাহরণও রয়েছে হাতে। পাড়ায় রাতে টহল দেয়ার দায়িত্ব বাচ্চু মিয়ার, কিন্তু কাজের সময় তাকে কখনোই দেখা যায় না, অতএব অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার ক্ষমতাকে আমরা অস্বীকার করতে পারি না। আর গত পরশুদিন মাঝরাতে চোর ধরা পড়েছে নান্টুদের বাড়িতে, নান্টুরা সেই চোরকে একদফা কচুয়া ধোলাই দিয়ে বেঁধে রেখে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তাকে সোপর্দ করার মতলবে বাচ্চু মিয়ার খোঁজে বেরিয়েছিলো। নিয়মানুযায়ী এই পাড়ার গন্ডির মধ্যেই তাকে খুঁজে পাওয়ার কথা, কিন্তু নান্টু আর নান্টুর বড় ভাই তাকে বহুদূরে, চল্লিশ মিনিট খোঁজাখুঁজির পর পাশের মহলার একটা পানের দোকানের সামনে কাচ্চু খেলারত অবস্থায় খুঁজে পেয়েছে। ডিউটি ফেলে পাশের পাড়ার ক্রীড়াজগতে অনুপ্রবেশের অভিযোগ করায় বাচ্চু মিয়া অম্লানবদনে জানিয়েছে, সে দু’মিনিট আগেও পাড়ার মোড়ে টহল দিচ্ছিলো। টেলিপোর্টেশনের এমন টাটকা আর মজবুত নমুনা আর বোধহয় পাওয়া যাবে না।

সাংবাদিক বদিউল হুদাও এমনি আরেক ভিনগ্রহী। তাকে আজ পর্যন্ত কেউ ক্যামেরায় ফিল্ম কিংবা ব্যাটারি রিলোড করতে দেখেনি। যদিও বদিউল হুদা একবার ছবি তোলা শুরু করলে শ’খানেকবার ক্যামেরা নিয়ে টেপাটেপি না করে থামে না, কিন্তু তাকে কেউ নিজের চোখে ফিল্ম পাল্টাতে দেখেনি, ব্যাটারিও না। অথচ তার ছবি ঠিকই পত্রিকায় ছাপা হয়। তার এই ক্ষমতার জন্যে রেজা কোন শব্দ অবশ্য খুঁজে পায়নি, কিন্তু আমরা মেনে নিয়েছি, যা-ই হোক না কেন।

মামা আমাদের হাত থেকে ম্যাগাজিনটা ছিনিয়ে নিয়ে, সেটাকে নিজের ব্যাগে পুরে, উঠে দাঁড়ালেন।

‘এইসব ছাইপাঁশ না পড়ে একটু বিশ্লেষণ করতে শেখ।’ শেষবারের মতো আমাদের মগজের বদনাম গেয়ে বিল মিটিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে যান তিনি, বিড়ি টানতে টানতে।

আমি আর শিবলি তারপর বিশ্লেষণ করতে বসি। এরকম গাঁজাখুরি গল্পে সায় দিয়ে যাবার অসাধারণ ক্ষমতার জন্য প্রথমেই রেজাকে সনাক্ত করলাম বহুদূরে তেলচুকচুকে কোন গ্রহের বাসিন্দা হিসাবে, যাদের তেলের ভান্ডার কখনো ফুরোয় না। এতক্ষণ দিব্যি মামার চাপায় ঝাড়ি জোগাচ্ছিলো ব্যাটা, তাই আমরা দু’জনে বাগে পেয়ে কষে গালমন্দ করতে থাকি ওকে। ক্ষমতাসীন মন্ত্রী মাজনুল দুহা যেভাবে রাজাকারদের তেল দিয়ে বেড়ান, সেই ঘৃণ্য আচরণের সাথে রেজার চাটুকারিতার তুলনা দিই আমরা।

রেজা প্রথমটায় কিছু বলে না, খানিকক্ষণ গুম হয়ে থেকে আমাদের ঝাড়ি শোনে, তারপর হঠাৎ খুব কাতর গলায় বলে, যেমনটা বহুদূরের তেলুয়া গ্রহের লোকজনের মুখে মানায়, ‘আচ্ছা, তোরা কি কেউ মামাকে বিড়ি ধরাতে দেখেছিস?’

আমি হাসি। ‘বেকুব পেয়েছিস আমাকে? রোজ ভুস ভুস করে বিড়িসিগারেট টানে ব্যাটা!’

রেজা চিন্তিত মুখে বলে, ‘উঁহু, সেটা বলছি না। সিগারেট তো সে খাচ্ছেই সমানে, এই এতক্ষণেই তো অনেকগুলো খেলো, কিন্তু কখনো তাকে বিড়িতে আগুন ধরাতে দেখেছিস?’

এবার আমরা একটু টলে উঠি। তাই তো, দেখেছি কি? মামার হাতে আগুন, আগুনের মুখে বিড়ির ডগা, এমন কোন দৃশ্য? আমাদের মনে পড়ে না।

রেজা পাংশু মুখে বলে, ‘আচ্ছা শোন, এখানেই আশেপাশে তো একগাদা ম্যাচের পোড়া কাঠি পড়ে থাকার কথা, তাই না? চল খুঁজে দেখি।’

আমার আমাদের চারপাশে আবছা অন্ধকারের দিকে তাকাই। এর মধ্যে কিভাবে ম্যাচের পোড়া কাঠি খুঁজে বের করবো?

কিন্তু অন্ধকার আমাদের তদন্তের জন্যে কোন সমস্যা নয়। রেজা হাঁক ছাড়ে, ‘অ্যাই জুম্মন, দ্যাখ তো, এখানে আশেপাশে ম্যাচের কাঠি আছে কি না?’

জুম্মন হেলেদুলে কাছে আসে, উবু হয়ে চারপাশের ঘন অন্ধকারে মনোযোগ দিয়ে দ্যাখে, কী দ্যাখে ও-ই জানে, তারপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে একটা বেকুবমার্কা হাসি দেয়। ‘না বাইজান, নাই তো!’

জুম্মনের ইকোলোকেশনে সন্তুষ্ট হয়ে রেজা বিড়বিড় করে, ‘মনে হয়, মামা এমন কোন গ্রহ থেকে এসেছেন, যেখানকার প্রাণীরা নিজেদের খেয়ালখুশিমতো যেকোন জিনিসের একটা বিশেষ অংশের তাপমাত্রা অনেকখানি বাড়িয়ে দিতে পারে, বুঝলি? এতো বেশি তাপমাত্রা যে জিনিসটার ঐ অংশে আগুন ধরে যায় --- মাইক্রোওয়েভ দিয়ে যেমনটা করা যায় ---।’ তারপর আরো কী কী সব বকতে থাকে সে।

আমি আর শিবলি আনন্দিত চিত্তে এ প্রস্তাবে সায় দিই। মামা নিঃসন্দেহে এই গুলচাপা শুনিয়ে শুনিয়ে রেজার মাথাটার তাপমাত্রা অনেকখানি বাড়িয়ে দিয়ে গেছেন। তাই ওর গরম মাথাটা মামার বিড়ির মতো জ্বলে ওঠার আগেই আমরা পাশের টেবিল থেকে এক জগ পানি নিয়ে রেজার মাথায় চটজলদি ঢেলে দিই।


মন্তব্য

আরিফ জেবতিক এর ছবি

:আচ্ছা,আপনারা কেউ হিমুকে বিমর্ষ লেখা লিখতে দেখেছেন?
: নাতো!

:একজন লেখক ,সে তো কখনো হাসির গল্প লিখবে,কখনো মনখারাপ লেখা লিখবে,তাই না?
:তাই তো!

:একজন লেখক সে তো মাঝে মাঝে খারাপ লিখবে তাই না?হিমুকে কখনো খারাপ লিখতে দেখেছেন?
:না তো:

:তাইলে কি দাড়ালো ?
:হিমু ভাই এলিয়েন?

হায় হায়,একটা এলিয়েন কেমনে সচলায়তনে ঢুকে গেল?এলিয়েন রেজিষ্ট্রেশনের আমন্ত্রন পেল কিভাবে?

-----------------------------------
কিস্তিমাতের যুদ্ধ শেষে,সাদাকালো ঘুটিগুলো এক বাক্সেই ফেরত যাবে...

হিমু এর ছবি
সজারু এর ছবি

আপনার মাতুলের সহিত একমত।
আমার একখানা পালিত ভূত আছে যাহা দূতের কাজ করে, এই বিষয় যত কম বলা ততই ভাল।

_________________________

সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র

_________________________

সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র

নজমুল আলবাব এর ছবি

এই লোক কেমনে এত ভালো লিখে? চার বছর আগেই এইটা লিখছে? আরেব্বাবা...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- অর উপর জ্বিনের আছর আছে আলিবাবা ভাই। বিশ্বাস না হয় বদ্দারে জিগান। বদ্দা অরে নিয়া একবার হুজুর সায়দাবাদীর কাছে গেছিলো। কথা মিছা হইলে পয়সা ফেরত।
_________________________________
<স্বাক্ষর দিমুনা, পরে জমিজমা সব লেইখা লইলে!>

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

হিমুর মাথায় মাঝে মাঝে পানি ঢালা হয়, এই গল্প সে কথায় কথায় বলছিলো।
বিষয়টা এতদূর পর্যন্ত গড়াইছিলো তা কিন্তু সে চাইপা গেছে তখন।
-----------------------------------------------
গাধারে সাবান দিয়া গোসল দেয়ানোটা গাধাপ্রীতির উজ্জ্বল নমুনা হতে পারে; তবে ফলাফল পূর্বেই অনুমান করা সম্ভব, গাধার চামড়ার ক্ষতি আর সাবানের অপচয়।

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- তাইলে বুঝেন এবার! আমি তো আবার রেফারেন্স ছাড়া কথা বলি না, দেখলেনই তো! ;)
_________________________________
<স্বাক্ষর দিমুনা, পরে জমিজমা সব লেইখা লইলে!>

সুমন চৌধুরী এর ছবি

এপ্রিল ২০০৩?....সেই সময় আরেক্টা কি জানি লিখছিলা....দুলকি পারভিন..রামায়ন আজাদ..এদের কথা ছিল
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

অমিত আহমেদ এর ছবি

একটানে পড়ে ফেললাম... চরম লেখা!
আরও চাই, আরও!

************************
আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

বরাবরের মত জঠিল! লেগে রহো।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

কনফুসিয়াস এর ছবি

খাসাধারণ হইছে!

-যা দেখি তা-ই বলি...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

ঝরাপাতা এর ছবি

এতো এতো মজার আইডিয়াগুলান আসে কেমনে?
_______________________________________
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

দ্রোহী এর ছবি

হিমু হইলো একটা আজিব জিনিষ।

ব্যাটার নিজের জীবনের ঘটনাগুলোর সাথে বেশ খানিকটা গাঁজা মিশিয়ে আমাদের সামনে পরিবেশন করে।

যেহেতু, ব্যাটা নিজেই আজিব, সুতারাং তার লেখাগুলো হয় অসাধারণ!!!

ব্যাটার প্রতিভায় আমার খুব ঈর্ষা হয়!! কেন হয় তা ওই ব্যাটা ছাড়া সবাই বুঝতে পারবেন।
__________
কি মাঝি? ডরাইলা?

মূলত পাঠক এর ছবি

কী সব লেখেন মিয়া!

সুবোধ অবোধ এর ছবি

^:)^ ^:)^ ^:)^

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।