প্রবাসে দৈবের বশে ০১০

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: শুক্র, ১৯/১০/২০০৭ - ৮:৩৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


রাতে ঘুমানোর সময় কিভাবে যেন একটা বাংলাদেশ সুট করে ঢুকে পড়ে আমার সিনথেটিক লেপের ভেতরে। আপত্তি করি না।

ভোরবেলা অ্যালার্মের শব্দে জেগে উঠি আমি, জেগে ওঠে বাংলাদেশও। হি হি শীতে কাঁপতে কাঁপতে হীটার ছাড়ি, বাংলাদেশ মিলিয়ে যায় বাইরের অন্ধকারে।

এখন শরতের শেষ, হু হু পাহাড়ি বাতাসে গাছের পাতাগুলি ছিঁড়ে খসে পড়তে থাকে পথের ওপর, আমি শুনতে পাই একটা বাংলাদেশ আমার চলার সাথে তাল মিলিয়ে হাঁটছে সেই পাতাগুলির ওপর।

কাসেলের আকাশে রোদ ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু যখনই রোদ ওঠে, তখনই আমার ছায়ায় গুটিসুটি এসে জমা হয় আরেকটা বাংলাদেশ।

ট্রামে বাসে হাঁটা পথে একের পর এক বাংলাদেশ এসে ঘিরে ধরে আমাকে, তারা নিঃশব্দে হাঁটে আমার পাশে, হয়তো তাকায় আড়চোখে।

মাঝে মাঝে হাতের উল্টোপিঠে আর শার্টের হাতায় কয়েকটা বাংলাদেশকে মুছে ফেলি। আরো কয়েকটা বাংলাদেশ নির্বিকার এসে জমা হয়।


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

কওকি ! রাইতে হিটার বন্ধ রাখো !

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

এইটা হচ্ছে ডেস্কে বসে রিপোর্ট বানানো লেখা।
এই লেখা জার্মানি না এসেও লেখা যায়।
তার ওপর লেখা মাত্র এক স্ক্রিন। হিমুর লেখা এক স্ক্রিন বা এক পর্দাদৈর্ঘ্য মানে ভীষণ ফাঁকি দেয়া অপচেষ্টা।

এই সিরিজে আমরা কবিতা চাই না। চাই নতুন আসা এক বাঙালির চোখে জার্মান সমাজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবন।

(হিটার বন্ধ করে ঘুমানোই ভালো। হিটার ছাড়লে ঘরে হিউমিডির জন্য পানি ভর্তি পাত্র রাখা দরকার। )
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

কনফুসিয়াস এর ছবি

শোমচৌ-এর সাথে একমত নেই।
এই সিরিজে সবই আসুক। ফোঁটায় ফোঁটায় জমতে থাকুক বাংলাদেশ।
-----------------------------------
যা দেখি তা-ই বলি...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

মাশীদ এর ছবি

আমিও শোমচৌ এর সাথে একমত নই।
ভাল লাগল খুব। কয়েক ফোঁটা বাংলাদেশকে অনুভব করলাম। এই সিরিজে আমি এরকমই চাই। সুদূর জার্মানিতে থাকা এক বাঙালির চোখে যেভাবে ধরা পড়ছে তার জীবন। আর আমাদের চাওয়া-পাওয়ার জন্যই তো শুধু লেখা নয়।


ভাল আছি, ভাল থেকো।


ভাল আছি, ভাল থেকো।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

ভাল্লাগছে ... চলুক ... না দৌড়াক ...

দ্রোহী এর ছবি

হিমু

লেখাটা সত্যিই অসাধারণ হয়েছে! আমি মুগ্ধ!


কি মাঝি? ডরাইলা?

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অনুগল্প হয়ে গেছে!

বিবাগিনী এর ছবি

তিনদিন পরে চলে যাচ্ছি হিমুর ই আশেপাশে কোথাও।যেতে একটুও মন চাচ্ছে না।বারবার জর্জরিত হচ্ছি একটা প্রশ্নে।একাকিত্বের বিলাস কি আসলেই আমার সাধ?এমন একটা সময়ে এইরকম একটা মন নিংড়ানো লেখা দিয়ে আমার মনটা আরো বেশি করে ভিজিয়ে দিলেন কেন হিমু?খুব রাগ লাগছে আপনার উপরে!

‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

‌‌::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::

অমিত আহমেদ এর ছবি

মনটা খারাপ হয়ে গেল!
পোড়ার কপাল!


ভালবাসি, ভালবাসি, ভালবাসি তোমায়!
ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

সৌরভ এর ছবি

হিমু ভাই যাই লিখে, পড়ার পর মন ভালো হয়ে যায়।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

হিমুর লেখা পড়ে আনন্দ পাই। কিন্তু এই লেখাটা ভিন্ন ধরনের। একটা অসামান্য ব্যাপারকে অতি সামান্য কিছু উপমায় ধরানোটা অসামান্য হয়ে উঠেছে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

হিটার রাইতে বন্ধ রাখাই ভালো...



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

বিপ্লব রহমান এর ছবি

মাত্র ছয় প্যারায় কী অসাধারণ বাংলাদেশ! চলুক...


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।