কিছু সুখী লোক আছেন, তাঁরা ভোরবেলাই প্রাতকৃত্য সেরে যা কিছু ঝরাবার ঝরিয়ে সারাদিনের জন্য ঝরঝরে তাজা হয়ে যান। এই ক্যাটেগরির লোকেরা সারাদিন ফূর্তিতে থাকেন, লোকজনের সাথে হাসিঠাট্টা করেন, দোকানদারের সাথে দরাদরি কম করেন, ফকিরকে হাসিমুখে ছেঁড়া দু'টাকার নোট দিয়ে দ্যান, অফিস থেকে ঘরে ফেরেন হাসিমুখ নিয়ে। বাকি লোকজন তা পারেন না। আমি বাকির খাতায় নাম লিখিয়েছি এখানে এসে। কবির মতোই নীরব হয়ে গেছে আমার কোষ্ঠ। ভয় পাচ্ছি, ব্যাপারটা দৈনিক থেকে সাপ্তাহিকের দিকে গড়াচ্ছে কি না ভেবে। "একবার বসা হয়ে গেলে কমপক্ষে তিনদিন তার রেশ থাকে শরীরে।"
যাই হোক, এই কয়দিন ভূতের মতো ক্লাস করলাম। জার্মান প্রফেসররা কী খান সকালে, জানার বড় ইচ্ছা। টানা চারঘন্টা কেবল কয়েক ঢোঁক পানি খেয়ে কথা বলেই চলেছেন একেকজন। ছাত্ররা অনেকে ঘুমিয়ে পড়ে। প্রফেসর ক্লাউডি এখানকার বেশ নামকরা লোক, ছোট্টখাট্টো মানুষ, একদম প্রফেসরসুলভ আপনভোলা চেহারা, সমানে একটা ব্ল্যাকবোর্ডে লেখেন আর আরেকটা ব্ল্যাকবোর্ড পানিতে ন্যাকড়া ভিজিয়ে মোছেন আর চুষনি বুলিয়ে শোষেন, তাঁর চমৎকার ক্লাসে বসে দেখলাম আমার পড়শি হাতে মুখ রেখে বেশ মনোযোগ দিয়ে ঘুমাচ্ছে। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষের দিকে আমি দুহাতের ওপর মাথা রেখে বেশ দক্ষতার সাথে বসে বসে ঘুমাতাম, কিন্তু এদের কাছে আমি শিশু।
নবায়নযোগ্য শক্তির বেশ ডাকসাইটে লোকজন কাসেলে শিক্ষকতার সাথে জড়িত। তাঁদের পড়ানোর ভঙ্গিটা বেশ চমৎকার, আর মজার ব্যাপার হচ্ছে বেশির ভাগ শিক্ষকের পড়ানোর ধরন প্রায় একই রকম। প্রেজেন্টেশনগুলি দুর্দান্ত হয়, পুরনো দিনের প্রফেসররা অবশ্য ট্র্যান্সপারেন্ট শিট দিয়ে কাজ চালিয়ে দেন, আর ক্লাউডির মতো কয়েকজন কেবল চক-ব্ল্যাকবোর্ড। ক্লাস শেষে একটা ওয়েবসাইটের লিস্ট দিয়ে দেয়া হয়, সেখানে সেদিনকার ক্লাসের লেকচার স্ক্রিপ্ট দেয়া থাকে, ছাত্ররা সেখান থেকে নামিয়ে নিয়ে দেখতে পারে। প্রত্যেক কোর্সের জন্য আলাদা একটা মেইলগ্রুপ খোলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইলব্যবস্থায়, কোর্স সংক্রান্ত যাবতীয় কথাবার্তা সেখানে জানিয়ে দেয়া হয়। দেখি আর দীর্ঘশ্বাস ফেলি। ভাবি, হয়তো ক্লাস শেষে বাড়ি ফিরলে হবে। হয় না। দেরি হয়, দেরিতে হয়।
মন্তব্য
হিমু ভাই আপনের ঠিকানাটা দেন এক কিলো ইসবগুল এখনি পাঠায়ে দেই ডিএইচএল কইরা
ইসবগুলের ভুষি অমৃত সমান
কষা রোগী খেয়ে হয় কাজে বেগবান।
হাঁটুপানির জলদস্যু
বদ্দার সাথে আরো কয়েকদিন থাকলে আপনি কাঠিন্য থাইকা বাইর হইতারবেন না। সসেজ ভাজি দিয়া ওয়াইন খাইতে থাকলে পেট আর কয়দিন সহ্য করবো?
আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
আহারে সসেজ ভাজা অমৃত সমান
কষার সহিত তার কী বা রিলেশান?
হাঁটুপানির জলদস্যু
শীতের কথা বললেন না?
**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
এখনও ভালোমতো পড়েনি শীত।
হাঁটুপানির জলদস্যু
নির্জলা চায়ের মজা অমৃত সমান
আমি খাই তুমি খাও আপনিও খান।
হাঁটুপানির জলদস্যু
মুচমুচা সিরিজ!
ক্যামেরাটা জোগাড় করে নিন দ্রুত!
প্রথম একটা দুইটা সেমিস্টার আজাবের মতো যাবে। তারপর সহ্য হয়ে যাবে। ভোরে উঠাটা আজও রপ্ত করতে পারলাম না। তবে গভীর মনোযোগে ক্লাস করছে এই ভঙ্গীতে গালে হাত দিয়ে ঘুম দেয়াটা রপ্ত করতে পেরেছি। পাশের ছাত্র অবশ্য টের পেয়ে যায় খোৎ খোৎ করে নাক ঢাকার শব্দে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আমি এক উইন্টার সেমিস্টারে সকাল সাড়ে আটটায় শুরর এক কোর্স নিয়েছিলাম। ক্লাস করেছিলাম সাকুল্যে ২/৩ টা। পরে পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের সময় বাদ দেই। ক্লাস হইতে ঘুম সর্বদাই উত্তম।
ক্লাসে ঘুমের কাহিনী বলি। দেশে থাকতে খুব ভালো ক্লাসনোট তুলতাম, ঘুমানোর সুযোগ পেতাম না। দেশের বাইরে এসে সেই ঘাটতি সুদে আসলে পুষিয়ে গেছে। বিশেষ করে দুপুরের পরের ক্লাসগুলোতে প্রথম বেঞ্চিতে বসেই স্যারের চোখের দিকে তাকিয়ে একসময় বেমালুম ঘুমিয়ে যেতাম। অনেকবারই চোখ খুলেই দেখেছি স্যার মোটামুটি আগ্রহের সাথে তাকিয়ে আছেন। পাত্তা না দিয়ে আবারো ঘুম। ইচ্ছা করেই কি ঘুমাই! চোখ খুলে রাখা যায় না যে!
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
হেঃ হেঃ হেঃ
আমিই সবার সেরা। আমি অতি কষ্টে চোখ খুলে ঘুমানো অভ্যাস করে ফেলেছি। কয়েকদিন আগে চোখ খোলা রেখে দুহাতের উপর মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে পাশের দেয়ালে বাড়ি খেয়ে একটা বিতিকিচ্ছিরি কান্ড করে ফেলেছি।
কি মাঝি? ডরাইলা?
নতুন মন্তব্য করুন