সিকোয়েন্স ঃ 1
সময় ঃ সকাল
চরিত্র ঃ শহীদ, রিয়া
স্থান ঃ বাংলাদেশ অফিস
ব্যাক টু ক্যামেরা রিভলভিং চেয়ারে বসে আছে শহীদ।
টেবিলের ওপর দু হাত দিয়ে তাল দিচ্ছে সে।
ডাড ডাড ডারা ডারা ডা ডারা ডারা ডা ডারা ডারা ডা
ডাড ডাড ডারা রারা রাররররররররর ডা।
(থিম মিউজিক। এরপর এটা বিভিন্ন দৃশ্যে বাজবে।)
দরজায় নকের শব্দ শোনা যায়।
শহীদ ভয়েস)ঃ কাম ইন।
ক্লোজআপে একটু করে দরজার ফাঁক দিয়ে মাথা বাড়ায় রিয়া।
রিয়া অবাক।
রিয়ার ভিউ পয়েন্টে শহীদ। (এই প্রথম শহীদকে দেখা যায়)
হেলান দিয়ে চেয়ারে রাজকীয় হালে বসে রয়েছে শহীদ। মুখে মুচকি হাসি। যেন কু্য করে চেয়ার দখল করেছে।
রিয়াঃ আপনি এই চেয়ারে?
শহীদঃ চেয়ারটা তো আমার হবেই। শুধু ইংল্যান্ড থেকে একটা চিঠি আসার অপেৰা।
রিয়াঃ চিঠিটাতো অন্যরকমও হতে পারে।
শহীদঃ অন্যরকম মানে?
রিয়াঃ কোম্পানি অন্য কাউকে কান্ট্রি ম্যানেজার করে পাঠালো।
শহীদঃ করলেই হলো। (রেগে চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে যায়)। গত একমাস ধরে কান্ট্রি ম্যানেজারের কাজ করে যাচ্ছি আমি। সাপস্নাইয়ারদের ম্যানেজ করছি আমি। তিন বছর ধরে আমার প্রমোশন ডিউ। আর হঠাৎ করে একজনকে পাঠালেই হলো।
রিয়াঃ আপনি রেগে যাচ্ছেন কেন? আমি একটা আশংকার কথা বলছিলাম।
শহীদঃ স্যরি। কিন্তু আমি খবর পেয়েছি সেরকম কিছুই ঘটতে পারে। সেজন্যই মনের কষ্টে এসে এখানে বসেছি। (রিয়ার কাছে এসে হাত ধরে)। তুমি আমার সাথে থেকো রিয়া পিস্নজ। যেই আসুক। আমি তাকে ফেলে দেবো। আফটার অল এই অফিস আমার বাবার হাতে গড়া। আমার একটা রাইট আছে। (গলা নামিয়ে রিয়ার কাছে এসে নরম গলায় বলে) তুমি আমাকে সাপোর্ট দিও।
রিয়া কিছু বলে না। সে নিরূপায় ভঙ্গিতে শুধু হঁ্যাসূচক মাথা দোলায়।
সিকোয়েন্স ঃ 2
সময় ঃ সন্ধ্যা
চরিত্র ঃ জাকির, সিকিউরিটি অফিসার
স্থান ঃ ইংল্যান্ড অফিস
মিউজিক ঃ থিম মিউজিক
ব্যাক টু ক্যামেরা লং শট। লম্বা করিডোর দিয়ে দুলকি চালে হেঁটে চলেছে মোটা-সোটা এক সিকিউরিটি অফিসার। তার কোমর থেকে বিভিন্ন রকম চাবির ঝুটা ঝুলছে।
দরজাগুলো খুলে ভেতরটা দেখে তালা দিচ্ছে।
মিড শট। একটা দরজা খোলে সিকিউরিটি।
সিকিউরিটির ওভার দি শোল্ডার শটে রম্নমটা দেখা যায়। আলো জ্বলছে।
উল্টাদিকে চেয়ার ঘুরিয়ে বসে আছে জাকির। ওর হাত-পায়ের অংশ দেখা যায়।
ভয়েস) সিকিউরিটিঃ সিকিউরিটি হিয়ার। ইটস্ টাইম টু গো হোম।
ভয়েস) জাকিরঃ ওহ। শিওর। গিভ মি এ মিনিট পিস্নজ।
জাকিরের মুখ ক্যামেরায় দেখা যায় না।
সিকিউরিটি জবাব পেয়ে হেঁটে পরের দরজায় যায়।
সিকোয়েন্স ঃ 3 (টাইটেল সিকোয়েন্সঃ এই দৃশ্যে পাত্র-পাত্রী, কলা-কুশলীর নাম দেখা যাবে)।
সময় ঃ রাত
স্থান ঃ জাকিরের লন্ডনের বাসা
চরিত্র ঃ জাকির
ক্যামেরার ঠিক সামনে টেলিফোন রাখা। দূরে দরজা খুলে জাকির ঘরে ঢোকে। জাকিরের পা থেকে কোমর পর্যনত্দ দেখা যায়। ও হেঁটে টেলিফোন পর্যনত্দ আসে। টেলিফোনের আনসারিং মেশিন অন করে। মেসেজগুলো বাজতে থাকে। (ছবির টাইটেলগুলো শুরম্ন হয়)।
মেসেজ 1ঃ (পুরম্নষ কণ্ঠ) ঃ হাই জ্যাক। উই আর গোয়িং ফিশিং সানডে। ইফ ইউ আর ইন্টারেস্টেড টু জয়েন আস দেন কল মি এসাপ।
বাথরোব পরে জাকির বাথরম্নমের দিকে যায়। পেছন থেকে জাকিরের পুরো শরীর দেখা যায়। ক্যামেরা ফলো করে। ও শাওয়ার ছাড়ে।
মেসেজ 2ঃ (নারী কণ্ঠ)ঃ হ্যালো জ্যাক ডার্লিং। দিস ইজ আন্টি জিল। রিমেমবার টু ডে ইজ থার্টিনথ্ জানুয়ারি। উই ফাউন্ড ইউ অন দিস ডে। ইউ ওয়ার সাচ এ লাভলি কিড। গিভ মি এ কল হোয়েন ইউ কাম ব্যাক।
মেসেজটা শুনতে গিয়ে শাওয়ারের কলটা বন্ধ করে জাকির। মনোযোগ দিয়ে শোনে। জাকির ফ্ল্যাশব্যাকে দেখতে পায় একটা গাড়ির মধ্যে একটা 3/4 বছরের বাচ্চা ও ওর বাবা বসা। গাড়িটা প্রচন্ড শব্দে উল্টে যাচ্ছে। জাকিরের ক্লোজআপ। ও ভীষণ কষ্টে কুঁকড়ে যাচ্ছে। মেসেজ 3 বাজে।
মেসেজ 3ঃ (পুরম্নষ কণ্ঠ)ঃ জ্যাক। আই থিংক ইউ উইল লাভ দিস নিউজ। ইটস্ অলমোস্ট ফাইনাল। ইউ আর গোয়িং টু বাংলাদেশ এজ আওয়ার কান্ট্রি ম্যানেজার। কনগ্রাচুলেশান।
জাকিরের ক্লোজআপ। শাওয়ার থেকে অবিরল পানির ধারা ওর মুখের মধ্যে পড়ছে। ও চোখ বুঁজে আছে।
সিকোয়েন্স ঃ 4
সময় ঃ দিন
স্থান ঃ রোকেয়াদের বাড়ির সাথে ভূষিমালের দোকান
চরিত্র ঃ রোকেয়া, মা ও দোকানদার।
কিশোর দোকানদারটা ক্যাশবাঙ্রে সামনেই বসে ছিল।
'বাইর হ' হারামজাদা। চোর। বাইর হ' আমার দোকান থাকি' শব্দ শুনেই ও পেছনে তাকিয়ে দেখে একটা হাতে ধরা বড় দা। রোকেয়া দা হাতে ঠিক ওর পেছনে দাঁড়িয়ে আছে।
ও ভয়ে পড়ি মরি দৌড় দেয়। রোকেয়া হতাশ হয়ে বসে পড়ে।
রোকেয়ার মা ঢুকে দোকানে।
মাঃ সব মানুষরে তাড়াই দিলে তুই দোকান চালাইবে কিতা করি?
রোকেয়াঃ ইটা আগোরটা তাকি বড় চোর। দুই দিনে 1000 টাকা চুরি করছে।
মাঃ হায় আলস্নাহ। তোমার দুনিয়াত বালা মানুষ কিতা একটাও নাই নি?
রোকেয়া মুখটাকে অভিমানী করে বসে থাকে। যেন সব রাগ তার সৃষ্টিকর্তার ওপর।
মাঃ রাগ করিস না। আমার একটা কথা শোন। তোরে বিয়া দিয়া একটা ঘর জামাই আনি। নিজোর মানুষ ছাড়া ব্যবসা চলে নি?
রোকেয়াঃ বিয়াতো আমি ছোট থাকতেউ দিছলায়। তারপরে আর হি জামাইর চেহারা দেখছো নি।
মাঃ তোর বাপে বিয়া মাতিয়া রাখছিলা। বিয়া তো আর অইছে না তোর।
রোকেয়াঃ আর বিয়া! ইতা বাদ দেও। লাগতো নায় বেটা মানুষ। দরকার অইলে আমি নিজে দোকানো বইমু।
রোকেয়া উঠে চলে যায়। মা একা বসে থাকে।
সিকোয়েন্স ঃ 5
সময় ঃ দিন
স্থান ঃ বাংলাদেশ অফিস
চরিত্র ঃ শহীদ, রিয়া ও জাকির।
নিজের টেবিলে বসে আছে শহীদ। অভ্যাসবশতঃ টেবিলে তাল ঠুকছে। তবে এবারের তাল বেশ বিষন্ন।
ধীর পায়ে রিয়া ঘরে ঢোকে।
রিয়াঃ চলেন নতুন বসের সাথে দেখা করে আসি।
শহীদঃ আমি তোমাকে বলে রাখি এ কাজটা ভালো হলো না। এর ফল ভালো হবে না।
রিয়াঃ আগে দেখেন নতুন বস কেমন?
মাঃ সে কে? হু ইজ হি। উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। (শহীদ উঠে দাঁড়ায়)।
কাট্ঃ জাকিরের অফিস।
জাকির বসা থেকে ওঠে দাঁড়ায় স্বাগত: জানাতে।
জাকিরঃ হ্যালো এভরিবডি। আই এ্যাম জাকির রহমান। ইউ ক্যান কল মি জ্যাক অর জাকির। যা আপনাদের সুবিধা হয়।
রিয়াঃ (অবাক হয়) আপনি তো বাংলাও বলতে পারেন।
জাকিরঃ আই ওয়াজ বর্ন হিয়ার। বাট এ্যাকসিডেন্টালি আই ওয়াজ আউট অব টাচ উইথ এনি বেংগলি। সো মাই বেঙ্গলি ইজ নট দ্যাট গুড। কিন্তু আমি সব কথা বুঝতে পারি।
রিয়াঃ যাক বাঁচা গেলো। আমি হচ্ছি রিয়া তাসমিন। কাস্টমার রিলেশন্স ম্যানেজার। উনি শহীদুল হক। ডেপুটি কান্ট্রি ম্যানেজার।
জাকিরঃ টেক ইউর সিট পিস্নজ। (সবাই বসতে থাকে) মি: শহীদ ডোন্ট বি আপসেট। আই নো ইউর ব্যাকগ্রাউন্ড। আই নো ইউ ওয়ার ওয়েটিং ফর দি প্রমোশন। বাট আই ওয়াজ অলসো ডেসপার্টে ফর দি পোস্ট। নাথিং অফিসিয়াল। ব্যক্তিগত কারণে।
রিয়াঃ ইন্টারেস্টিং। যদি কিছু মনে না করেন তবে আমরা কি জানতে পারি? হোয়াট ইজ দি কজ?
জাকিরঃ লেট মি অর্ডার কফি ফর ইউ। (জাকির ইন্টারকমে কথা বলেঃ কফি ফর টু অব আওয়ার সিনিয়র কলিগস্)। এই পোস্টিংটা আমার জন্য বড় একটা সুযোগ ছিল। আই ওয়ান্ট টু সার্চ মাই রম্নটস।
শহীদঃ বাট ইটস্ এ বিজি অফিস। এন্ড ইউর পোস্ট ইজ ভেরি ইম্পর্টেন্ট। আই ডোন্ট থিংক ইউ উইল গেট টাইম টু মেক প্রাইভেট এডভেঞ্চার। (শহীদের কথায় স্পষ্টত: বিরাট একটা খোঁচা)
জাকিরঃ ইউ মেইড এ ভেরি গুড পয়েন্ট মিঃ শহীদ।
জাকির আসত্দে আসত্দে মাথা দোলায়। ক্যামেরা জাকিরের মুখে চার্জ করে। জাকিরের মুখে বিষণ্ন হাসি।
ঘরে কফি আসে।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন